First love…..
Samira Afrin Samia (nipa)
Part: 29 +30( last)
আজ রাতে পার্টির জন্য পুরো বাড়ি সাজানো হচ্ছে। এত বড় করে তো বার্থডে পার্টি দেওয়ার কথা না। মনেই হচ্ছে না এখানে কোনো বার্থডে পার্টি হবে।মনে হচ্ছে এটা যেন কোনো ব্যালেন্টাইন পার্টি।সব কিছু রেড কালার। কেক, ফ্লাওয়ার, বেলুন, নেট এমনকি ক্যান্ডেল গুলো ও রেড কালারের। বার্থডে পার্টিতে তো সব কিছু এভাবে রেড কালারের দেয় না। যাই হোক আমার কি।উনার মনে হয় রেড কালার অনেক পছন্দ। বাসা সাজানোর কাজ প্রায় শেষ। সেই কখন আসছি একবার ও আমার রুমে গেলাম না। আর উনি কোথায় কতক্ষণ হলো দেখি না।
ঐ রিয়ার সাথে না তো?
একা একা বকবক করতে করতে নিচ থেকে আমার রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে যা দেখলাম। এখন তো ইচ্ছে হচ্ছে সামনে যা পাই তাই ভেঙ্গে ফেলি।
রিয়া আর উনি বেডের উপর উঠে বালিশ নিয়ে বাচ্চাদের মত মারামারি করছে।
ইসস কতো পীরিত।। আমি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি তার কোনো খেয়াল নেই। উনারা নিজেদের মত ঝগড়া করেই যাচ্ছে।
আমি ও আর কিছু না বলে চুপচাপ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দেখছি।
রিয়াঃ তানভীর তুমি ও না একটু ও বদলাও নি ঠিক আগের মতই রয়ে গেলে। হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে গেল। এবার তো থামো।
আমিঃ আমার সামনে তো জীবনেও এভাবে হাসে নি।আজ এত হাসার কি আছে। আগের মত রয়ে গেল মানে। আগে ও কি আমার বেডে এভাবেই ঝগড়া করেছে। তোর হাসি আমি বের করছি দাঁড়া তুই অন্য একটা মেয়ের সাথে এতো কিসের হাসাহাসি। আর রিয়ার বাচ্চা আমি তোর দাঁত ভেঙ্গে দিব।(মনে মনে)
কি হচ্ছে আমার বেডে।আর বালিশ গুলো নিয়ে এমন করছেন কেন?
তানভীরঃ (সামিহার কথা শুনে ওর দিকে তাকালাম। রাগে পুরো লাল হয়ে গেছে। ও যা মেয়ে আল্লাহই জানে আজ রিয়াকে কি করবে। বেড থেকে নেমে দাঁড়ালাম)
সামিহা তুমি।
তুমি কখন আসছো?
আমিঃ আমি কখন আসছি?( আদুরে সুরে)
আপনি যখন রিয়ার সাথে দুষ্ট মিষ্টি ঝগড়ায় ব্যস্ত ছিলেন তখন আসছি।
রিয়াঃ সামিহা আসো।তানভীরটা এত পাগল কি বলবো। আমার সাথে এখনও ছোট বাচ্চাদের মতো লেগে থাকে।
তানভীরঃ বেশি কিছু বলোনা রিয়া। তাহলে তোমার কপালেই দুঃখ আছে। (মনে মনে)
আচ্ছা আমি এখন নিচে যাই। গিয়ে দেখি বাসা সাজানোর কাজ কতটুকু হলো।
(রুম থেকে বের হতে নিলাম)
আমিঃ কোথায় যাচ্ছেন আপনি?( উনার সামনে এসে দাঁড়িয়ে) রিয়া আপু উনার সাথে আমার কিছু কথা আছে। আপনি একটু বাহিরে যাবেন প্লিজ।
তানভীরঃ (রিয়া কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে চলে গেল।এভাবে তাকিয়ে আছে কেন। মনে হচ্ছে কাঁচা খেয়ে ফেলবে)
কি কথা বলবে বলো?
আমিঃ ঐ মেয়েটা আমাদের রুমে কি করছিল।আপনি ওকে নিয়ে আমার রুমে কেন আসছেন। আমি কয়েক দিন বাসায় ছিলাম না বলে কি যা খুশি তাই করবেন।
তানভীরঃ এটা আমার রুম।এখানে রিয়া আসতেই পারে। তাতে তো তোমার কোনো প্রব্লেম হওয়ার কথা না।
আমিঃ (উনার একদম কাছে গিয়ে উনার শার্ট এর কলার ধরে)আপনার রুমের গুষ্ঠী কিলায়।আমার প্রব্লেম হওয়ার কথা না তো কার প্রব্লেম হওয়ার কথা। রিয়া কেন অন্য কোনো দিন যদি আর কোনো মেয়ের সাথে দেখি একদম খুন করে ফেলব।আমার রুমে যদি আর কোনো দিন রিয়া আসে তাহলে কিন্তু রুমে আগুন লাগিয়ে দিব।আর এক বার হেসে হেসে রিয়ার সাথে কথা বলতে দেখলে দাঁত ভেঙ্গে দিব মনে রাখবেন।
(রুম থেকে বের হয়ে নিচে চলে আসলাম)
তানভীরঃ (মাথায় হালকা ঝাঁকি দিয়ে মুচকি হেসে)
পাগলী বউ আমার। আমাকে এতো ভালোবাসে অথচ স্বীকার করে না। আমাকে অন্য একটা মেয়ের সাথে দেখে এতটা রেগে গেল। নিজের ভালোবাসার ভাগ দিতে চায়না। কিন্তু ও যে আমাকে ভালোবাসে তা ও তো বলে না।
বিকেলে…..
সব আয়োজন শেষ।গেস্টরা আসতে লাগলো। পুরো বাড়িতে খুজেও সামিহা কে কোথাও পেলাম না। কোথায় গেল মেয়েটা। তুহির রুমে গিয়ে দেখি তো তুহির সাথে কিনা।
আমিঃ তুহি তুমি তো দেখনি তোমার ভাইয়া কেমন ভাবে ঐ শাঁকচুন্নি টার সাথে হেসে হেসে বালিশ নিয়ে ঝগড়া করছিল। আমার তো ইচ্ছে করছে ঐ রিয়ার সব চুল ছিড়ে নেই।
তুহিঃ আরে ভাবী রিয়া তো ভাইয়ার ফ্রেন্ড। আর ফ্রেন্ডের সাথে তো একটু আকটু ঝগড়া করতেই পারে।
আমিঃ আরে রাখো তোমার ফ্রেন্ড। ফ্রেন্ড হলে রিয়া ঐ দিন কলেজে আমাকে সতীন বললো কেন।ও কি মি.উল্লুক কে আমার থেকে কেড়ে নিতে চাইছে?
তুহিঃ মি.উল্লুক!! তুমি কি ভাইয়া কে মি.উল্লুক বলে ডাকো?
আমিঃ মি. বলে সম্মান দিতে যাবো কেন।শুধু উল্লুক বলি।(জিহ্বায় কামড় দিয়ে.. কি বলে ফেললাম)
তুহিঃ প্রব্লেম নেই ভাবী।ভাইয়া সত্যিই একটা উল্লুক। অনেক রাগী।
আমিঃ বদমেজাজি, আস্ত একটা জলহস্তী,মুখ পুড়া বান্দর,ইংরেজের বংশধর, গোমড়া মুখো।একটু হাসলে মনে হয় বাপ দাদার সম্পত্তি কমে যাবে আর….
তুহিঃ (হঠাৎ করে দরজার দিকে চোখ যেতেই দেখি ভাইয়া দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে) ভাবী আমি মামনির কাছ থেকে আসছি। একটু কাজ আছে। প্লিজ ভাবী….
আমিঃ আরে দাঁড়াও না তোমার ভাইয়ার আরো অনেক নাম আছে ওগুলো তো শুনে যাও।
তানভীরঃ হুম আর কি কি নাম আছে?(তুহিকে ইশারায় চুপ থাকতে বললাম)
আমিঃ আরো.. একটা ঝগড়ুটে কাক… কাক না কাক তো কালো হয় তোমার ভাইয়া তো কালো না।তাই ঝগড়ুটে বক। কি হলো তুহি বার বার দরজার দিকে কি দেখছো।
(এটা বলে পিছন ফিরে উনাকে দেখে আমি তো পুরো যাই যাই অবস্থা। এতক্ষণ ধরে উনি আমার কথা গুলো শুনছিল।আল্লাহ গো এই উল্লুকটা আজ আমার বারোটা বাজাবে)
তানভীরঃ(সামিহার কথা শুনে হেসে দিলাম। এমন এমন সব কথা বলে যা শুনে না হেসে পারা যায়না)
আমিঃ omg হাসি টার উপর ক্রাশ খাইছি। উনাকে এত কিছু বললাম। সব কথা শুনে নেওয়ার পর ও হেসে দিল রাগ করলো না।(মনে মনে)
তুহিঃ( ভাবীর দিকে হা করে তাকিয়ে আছি। একবার ভাবীর দিকে দেখছি তো আর একবার ভাইয়ার দিকে।এটা কি আমার ভাইয়া?
ভাবী ভাইয়াকে এতকিছু বললো তা শুনে ভাইয়া রাগ না করে হাসছে)
তানভীরঃ কি যেন বলছিলে। আবার একটু বলো না প্লিজ। নিজের এতো সুনাম তাও আবার তোমার মুখে ভাবতেই অবাক লাগছে। তোমার মুখে আমার এত প্রশংসা আজ প্রথম শুনছি।
আমিঃ মাথা ঠিক আছে তো প্রশংসা কই করলাম?
আমি তো আপনাকে…. ( না থাক আর বলবো না। চুপ কর সামিহা। এতো কথা বলিস কেন?)
তুহিঃ ( ভালোয় ভালোয় আমি কেটে পড়ি। এক দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে)
ভাবী আমি যাই আমার কিছু কাজ আছে।
আমিঃ তুহি….. এই তুহিটা ও হয়েছে ভাইয়ের মত একদম সার্থপর।
এখন পরিস্থিতি এড়াতে হবে। কিছু একটা বলে এখান থেকে কেটে পরতে হবে।(মনে মনে)
আপনি এখানে কেন আসছেন। পার্টির জন্য রেডি হবেন না।
তানভীরঃ পার্টি রাতে এখনও অনেক টাইম আছে। এখন তো আমি তোমার মুখ থেকে আমার প্রশংসা গুলো শুনবো।
কি কি নাম দিছেন আমার।
আবার একটু প্রথম থেকে বলেন না মিসেস সামিহা তানভীর চৌধুরী।(সামিহাকে আমার কাছে এনে ওর কোমরে হাত দিয়ে একদম আমার মুখের সামনে নিয়ে আসলাম)
আমিঃ (ওরে আল্লাহ কি হচ্ছে এসব। উনি এসব কি করছেন। আমি তো মরেই যাবো।উনার ছোঁয়াতে পুরো শরীরে কাটা দিয়ে উঠলো)
তানভীরঃ কি হলো বলো আর কি কি নাম দিছো আমার…
রিয়াঃ তানভীর কোথায় তুমি?
তানভীর……
তানভীরঃ( হঠাৎ করে রিয়া চলে আসাতে সামিহা কে ছেড়ে একটু দূরে সরে দাঁড়ালাম)
রিয়াঃ স্যরি গাইস আমি মনে হয় রং টাইমে চলে আসছি।
তানভীরঃ আরে তেমন কিছু না। কেন আসছো বলো।কোনো কাজ ছিল কি?
রিয়াঃ তোমার জন্য এই কোট টা সিলেক্ট করেছি। দেখতো এটাতে তোমাকে কেমন লাগবে।
আমিঃ শাঁকচুন্নি আমার জামাইয়ের জন্য তুই কেন কোট সিলেক্ট করবি।আমি কি মরে গেছি। দাঁড়া তোকে তো আমি মজা দেখাবোই।(মনে মনে)
ও গো শুনছেন। আপনি তো বলেছিলেন আপনি আজ আমার শাড়ির সাথে ম্যাচিং কালারের পাঞ্জাবি পড়বেন। (উনার হাত ধরে কথা গুলো বললাম)
তানভীরঃ রিয়াকে দেখে এতোটা জ্বলছে সামিহা। ও গো,হে গো করে কথা বলছে। আবার আমার হাত ও ধরে ফেললো।
আমিঃ হে গো চলুন আমার সাথে। আমি আপনার জন্য পাঞ্জাবি সিলেক্ট করে রাখছি।
তানভীরঃ( আমি শুধু হা কারে সামিহার কান্ড দেখে যাচ্ছি।সামিহা আমার হাত ধরে রিয়ার সামনে থেকে এক প্রকার টেনে নিয়ে আসলো)
সন্ধ্যায় পার্টিতে…….
আমিঃ আল্লাহ সব গেস্ট এসে গেছে। আমি বাড়ির বউ হয়ে এখনও নিচে যেতে পারলাম না। লোকজন কি বলবে। (শাড়ি ঠিক করতে করতে সিরি দিয়ে নিচে নামছি)
তানভীরঃ সামিহা কোথায় এখনও নিচে আসলো না কেন।কি করছে এখনও?
(হঠাৎ সিরির দিকে তাকিয়ে দেখি সামিহা শাড়ীর কুচি ঠিক করতে করতে নিচে নামছে।
গোল্ডেন কালারের সফট জর্জেট শাড়ী। গোল্ডেন পাড়ের সাথে স্টোনের কাজ।হাতে লাল চুরি,কানে ঝুমকো,ডায়মন্ডের ছোট একটা নাক ফুল, চুল গুলো খোঁপা করে রাখছে চোখের সামনে কিছু চুল এসে আছে। সামিহা কে বরাবরের মত আজ ও খুব সুন্দর লাগছে। আমি চার পাশে চেয়ে দেখি সবাই সামিহার দিকে তাকিয়ে আছে)
আমিঃ( নিচে এসে চারপাশে ভালো করে দেখে নিলাম রিয়া কোথাও আছে কি না।মনে হয় শাঁকচুন্নিটা এখনও নিচে আসেনি। এসেই তো আবার আমার ভোল-বালা জামাইয়ের সাথে চিপকে যাবে। ঐ শাঁকচুন্নি আসার আগেই আমি উনার কাছে চলে যাই)
রিয়াঃ তানভীর আমি রেডি দেখতো আমাকে কেমন লাগছে।
আমিঃ (শাঁকচুন্নির নাম না নিতেই শাঁকচুন্নি হাজির। আমি উনার কাছে গিয়ে উনার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছি। উনি তো হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।হয়ত মনে মনে ভাবছিলেন রিয়ার সাথে এভাবে হাত ধরে দাঁড়াবে)
এভাবে হা করে তাকিয়ে আছেন কেন। মুখে মশা ডুকে যাবে তো। মুখ অফ করেন লোকে কি বলবে।
রিয়াঃ (রিয়া আমাদের কাছে এসে) তানভীর তোমাকে যা লাগছে। পাঞ্জাবিতে তোমাকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগে।
আমিঃ আমি রিয়ার কথা শুনে ভালো করে উনার দিকে একবার তাকিয়ে দেখলাম। সত্যিই তো উনাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে। এমনিতেই এতো সুন্দর তার উপর গোল্ডেন কালারের পাঞ্জাবি একদম ফুটে উঠছে।সব সময় উনার হাতে একটা ঘড়ি থাকবেই। আজও আছে।
আমি উনাকে আমার দিকে ফিরিয়ে চোখ থেকে একটু কাজল নিয়ে উনার কানের পিছনে দিয়ে দিলাম।
রিয়াঃ এটা কি করলে তুমি?
আমিঃ আপনি বুঝবেন না। এতো লোকের ভীরে কেউ যদি উনার উপর নজর লাগায়। এই কালো টিকা দিয়ে দিলাম এতে করে আর কারো নজর লাগবে না।
তানভীরঃ (চুপচাপ দাঁড়িয়ে সামিহার কান্ড দেখছি আর হাসি চেপে রাখছি)
রিয়াঃ তানভীর চলো ঐ সাইডে যাই। (তানভীরের হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগলো)
আমিঃ( এটা তো দেখছি শাঁকচুন্নি নাম্বার ওয়ান। আমার সামনে আমার স্বামীর হাত ধরে। দেখেছে উনি আমার সাথে দাড়িয়ে আছেন।তার পর ও উনাকে ঐ দিকে নিয়ে যেতে চাইছে)
উনি এখন কোথাও যাবেন না। একটু পরেই কেক কাটা হবে।
রিয়াঃ আরে একটু পরেই এসে পড়বো। চলো তো তানভীর। (উনাকে নিয়ে চলে গেল)
আমিঃ রাগে এখন আমার ইচ্ছে হচ্ছে এই শাঁকচুন্নিটার চুলে আগুন লাগিয়ে দেই।
তুহিঃ কি হলো ভাবী। তোমার পাখিটাকে অন্য কেউ উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আমিঃ( রাগী লুক নিয়ে তুহির দিকে তাকালাম)
তুহিঃ আমার দিকে এভাবে তাকালে কি হবে। আমি যা দেখছি তা ই তো বলছি। শুনছি রিয়া আপু নাকি ভাইয়াকে ভালোবাসতো।ভাইয়াকে বিয়ের জন্য প্রোপজাল ও দিছিল। কিন্তু ভাইয়া রাজি হয়নি। মনে হয় রিয়া এখনও ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। তাই তো এখনও বিয়ে করেনি।
ভাবী তোমার ভালোর জন্যই বলছি তোমার পাখিটাকে দেখে রেখো।
আমিঃ তুহির কথা শুনে তো আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।এই রিয়া তো দেখছি আমার সতীন হওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগছে। আল্লাহ গো এখন আমার কি হবে। এই শাঁকচুন্নি তো আমার সংসার ভেঙ্গে দিবে। (মনে মনে)
তুহিঃ কি হলো কি ভাবছো।যা করার তারাতারি করো।পরে কিন্তু দেরি হয়ে যাবে।
চলবে……..
first love…..
Samira afrin samia (nipa)
Part: 30(last part)
আমিঃ কোথায় গেলেন উনি। ঐ রিয়াটাকে ও তো দেখছি না। শাঁকচুন্নিটা উনাকে নিয়ে আবার কোথায় চলে গেল।
ঐ তো পেয়ে গেছি। দাঁড়া রিয়ার বাচ্চা আজ তোকে মজা দেখাচ্ছি।
আমি ওয়েটারের থেকে একটা কোল্ড ডিংক্স নিয়ে সোজা কিচেনে চলে গেলাম।
কোথায়, কোথায়…?
এই তো পেয়েছি।
কোল্ড ডিংক্সে ইচ্ছে মত লবণ ঢেলে চামিচ দিয়ে নাড়িয়ে কোল্ড ডিংক্সে লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিলাম।
গ্লাসটা হাতে নিয়ে ডেভিল মার্কা একটা হাসি দিলাম।
শাঁকচুন্নি এবার তুই কোথায় যাবি।ডিংক্সটা খাওয়ার পর বুঝতে পারবি এই সামিহা কি জিনিস।
রিয়া আপু এই কোল্ড ডিংক্সটা আপনার জন্য।খেয়ে নিন। অনেকক্ষণ ধরে এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কিছুই তো নিলেন না। তাই এটা আপনার জন্য আনছি।
রিয়াঃ অহহ সামিহা ইউ আর সো সুইট।বাট তানভীর ও তো কিছু নেয়নি। তানভীর তুমি এটা নেও আমি অন্য কিছু নিয়ে নিব।(গ্লাসটা তানভীরের হাতে দিয়ে)
আমিঃ (হায় হায় উনি এটা খেলে তো….)
আরে না আপু এটা আপনার জন্য আনছি। আপনি খান।
তানভীরঃ (সামিহা আমাকে এই কোল্ড ডিংক্সটা খেতে দিচ্ছে না কেন?
নিশ্চয় কোনো গন্ডগোল পাকিয়েছে)
রিয়াঃ তানভীর তুমি এটা নেও।
(ওয়েটার এদিকে এসো।ওয়েটারের থেকে একটা ডিংক্স নিয়ে)
সামিহা এবার তো কোনো প্রব্লেম নেই। আমি ও খাচ্ছি দেখো।
আমিঃ (অবশেষে এই শাঁকচুন্নিটা লবণ মেশানো ডিংক্সটা আমার জামাইকে ই খেতে দিল।এটা তো উনাকে খেতে দেওয়া যাবে না। কি করবো এখন আমি।
ইচ্ছে করে উনার হাতে ধাক্কা দিয়ে উনার হাতের গ্লাসটা রিয়ার উপর ফেলে দিলাম)
সরি,সরি আমি একদম বুঝতে পারিনি। আসলে পায়ের সাথে শাড়িটা আটকে গেছিল। তাই পড়ে যেতে নিছিলাম উনাকে ধরতে গিয়েই ধাক্কা লেগে গ্লাসটা আপনার উপর পড়ে গেল।আপনি ড্রেস চেঞ্জ করে আসুন।ইসস একদম দেখিনি। সরি রিয়া আপু।
তানভীরঃ (ইচ্ছে করে আমার হাত থেকে গ্লাসটা রিয়ার উপর ফেলে দিয়ে এখন কত নাটক করছে। রিয়ার উপর ও এতটা জেলাস ফিল করছে যার কারনে রিয়াকে আমার সাথে দাঁড়াতে পর্যন্ত দিচ্ছে না। আমাকে অন্য কারো সাথে দেখলে ওর রাগ হয়। এতো নাটক না করে এটা সরাসরি বলে দিলেই তো হয়।
আস্ত একটা পাগলী)
আমিঃ (রিয়া ড্রেস চেঞ্জ করতে উপরে চলে গেল। এই ফাঁকে আমি উনাকে নিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম)
চলেন যাই কেক কাটবেন।
তানভীরঃ এখনই!
রিয়া এসে নিক তার পরই না হয় কেক কাটব।
আমিঃ বার্থডে আপনার। কেক কাটবেন আপনি।রিয়াকে দিয়ে কি করবেন?
ওহ বুঝছি সবার আগে রিয়াকে কেক খাওয়াতে চান তাই তো।
রিয়ার সাথে এতো কিসের ভাব আপনার। সব সময় চিপকে থাকেন ওর সাথে। একটু দূরে দূরে থাকতে পারেন না।
তানভীরঃ আমি রিয়ার সাথে চিপকে থাকি?
আমিঃ তা নয়তো কি।কখনও হাতে হাত রেখে হেসে হেসে কথা বলা। আবার কখনও বালিশ নিয়ে ঝগড়া করা। ড্রেস সিলেক্ট করে দেওয়া। ও নিজে না খেয়ে আপনাকে খাওয়ানো। সারাক্ষণ উনাকে রিয়ার সাথে দেখা যায়। লুচ্চু কোথাকার।
তানভীরঃ (একটু রাগ করার ভাব নিয়)
আমার যার সাথে ইচ্ছে তার সাথে কথা বলবো।শুধু রিয়া কেন পৃথিবীতে যে কয়টা মেয়ে আছে সবার সাথে হেসে হেসে কথা বলবো। হাত ধরে পার্কে ঘুরতে যাবো তাতে তোমার কি। তুমি তো আমাকে ভালোবাস না।আমার সাথে থাকতে চাও না। তাহলে এখন আমার স্ত্রীর অধিকার দেখাচ্ছ কেন।রিয়ার সাথে হেসে কথা বললে তোমার তো কোনো প্রব্লেম হওয়ার কথা না।
ওহ লোকে বলবে তোমার হাজবেন্ড ক্যারেক্টার লেস এই ভয় পাচ্ছ তো। ভয় পেওনা কেউ যাতে তোমাকে কিছু না বলতে পারে আমি সেই ব্যবস্থাই করবো। তুমি আমার কাছ থেকে চলে যেতে চাইলে যেতে পারো।আমি তোমাকে আটকাবো না।তুমি নিজেই তো বলেছিলে তুমি আমাকে কোনো দিন ও ভালোবাসতে পারবে না। কিন্তু রিয়াকে দেখো। রিয়া আমাকে ভালোবেসে আমার জন্য সব কিছু করতে পারবে।
আমিঃ উনার কথা গুলো শুনে চোখ দিয়ে এমনিতেই পানি পড়তে লাগলো। আমি উনাকে ভালোবাসি এটা কি মুখে বলে বুঝাতে হবে। উনি কি কিছুই বুঝেন না। আমি যদি উনাকে না ভালোবাসতাম তাহলে কি এখানে আসছি।
তানভীরঃ ডোজটা কি বেশি হয়ে গেল। ইসস কান্না করে দিছে। অনেক কষ্ট পেয়েছে। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না। কিন্তু কি করবো কথা গুলো এভাবে না বললে তুমি কোনো দিনই তোমার মনের কথা আমার কাছে প্রকাশ করবে না। তোমাকে পাওয়ার জন্য এখন তো তোমাকে একটু কষ্ট দিতেই হবে। আমি প্রমিস করছি এখন তোমাকে যতটা কষ্ট দিচ্ছি। এর থেকে হাজার গুণ বেশি ভালোবাসা দিয়ে তোমার কষ্ট গুলোকে ভুলিয়ে দিব।(মনে মনে)
আমিঃ এখানে আর এক মূহুর্ত ও থাকতে পারবো না। এখানে থাকলে উনার সামনেই কান্না শুরু করে দিব।উনার কথা গুলো শুনে অনেক কষ্ট হচ্ছে। সব দোষ তো আমারই। আমি ও তো উনার ভালোবাসার কোনো গুরুত্ব দেইনি। দিনের পর দিন উনার ভালোবাসাকে অবহেলা করে গেছি। উনার ও তো তখন এমনই কষ্ট হয়েছে। আমি রুমে চলে আসলাম। চোখের পানি গুলো অঝোরে ঝরেই যাচ্ছে।
মামনিঃ কিরে আজ কি কেকটা কাটবি না?
গেস্টরা আর কতক্ষণ ওয়েট করবে তারাতারি কর।আর সামিহা কোথায় ওকে তো কোথাও দেখতে পাচ্ছি না।
তানভীরঃ মামনি সামিহা রুমে গেছে মনে হয়।
মামনিঃ আমি ওকে নিয়ে আসি।
তানভীরঃ( মামনি গিয়ে সামিহা কে কাঁদতে দেখলে প্রব্লেম হয়ে যাবে)
না মামনি তুমি এখানেই থাকো আমি সামিহা কে নিয়ে আসছি।
রুমে গিয়ে দেখি সামিহা বেডে উপুড় হয়ে শুয়ে কাঁদছে।
সামিহা নিচে চলো কেক কাটবো।
আমিঃ আপনি যান আমি যাবো না।
তানভীরঃ দেখো নিচে সব গেস্টরা ওয়েট করছে। এখন নিচে চলো পরে না হয় রুমে এসে আবার কান্না করে নিবে।
আমিঃ (বেড থেকে উঠে উনার সামনে গিয়ে)
কি পেয়েছেন কি।আপনি যখন যা বলবেন আমাকে তখন তাই করতে হবে নাকি।রিয়া আপনার সব কথা শুনলে ও আমি শুনবো না। কেক কাটবেন কাটেন আমাকে যেতে বলছেন কেন।রিয়া তো আছেই ওকে নিয়েই কেক কাটুন।
তানভীরঃ (সামিহার মুখে হাত দিয়ে)
একদম চুপ আর একটা বললে খুব খারাপ হয়ে যাবে। তুমি কি নিজের পায়ে হেঁটে নিচে যাবে নাকি আমি তোমাকে কোলে করে নিচে নিয়ে যাবো। তুমি চাইলে আমি তোমাকে কোলে নিয়ে নিচে যেতে পারি।
আমিঃ আমি নিচে যাবো না আপনি রিয়াকে নিয়ে যান।
তানভীরঃ শেষবারের মত বলছি তুমি যাবে নাকি আমি তোমাকে কোলে করে নিয়ে যাবো। (যেই কোলে তুলতে যাবো)
আমিঃ দাঁড়ান দাঁড়ান আমি নিজেই যেতে পারবো। আপনাকে এত কষ্ট করতে হবে না।
নিচে আসার পর কেক আনা হলো। কেকটা লাল কালারের লাভ আকারের ছিল। কেকটার মধ্যে লিখা ছিল। ❤Happy marriage anniversary❤
samiha? tanvir
আমি উনার দিকে তাকালাম।
আজ তো আপনার বার্থডে।
তানভীরঃ কে বলেছে তোমাকে?
আমিঃ কে বলেছে মানে রিয়াই তো কলেজে বলেছে।
তানভীরঃ তুমি কি ভুলে গেছ আজ কয় তারিখ।আচ্ছা আমি তোমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছি। আজ ২০ এ মার্চ।আমাদের marriage anniversary
আমিঃ সত্যিই তো আমাদের marriage anniversary আমার তো খেয়ালই ছিল না। তাহলে রিয়া আমাকে কেন বললো আজ উনার বার্থডে।রিয়া কি আমাকে এই সারপ্রাইজের কথাই বলছিল।
রিয়াঃ কি হলো সতীন কোন ভাবনায় ডুবে গেলে।(সামিহার কানের কাছে গিয়ে)
তানভীর এখন কি তোমরা কেক কাটবে নাকি আমিই একা একা কেটে নিবো।
সতীন এই বারই কেক কেটে নেও।সামনের বার হয়ত তোমার জায়গায় আমি থাকতে পারি। (সামিহার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে)
আমিঃ রিয়ার কথা শুনে ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।কি বলছে এসব সামনের বছর আমার জায়গায় ও থাকতে পারে মানে।
কেক কাটার পর রাতে ডিনার করে সব গেস্টরা চলে গেল। আমি রুমে চলে আসলাম। বেডে বসে ভাবছি রিয়া মেয়েটা ভালো নাকি খারাপ?
তানভীরঃ( রুমে এসে দেখি সামিহা বেডে বসে আছে। আমি ওকে কিছু না বলে টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। ফ্রেস হয়ে এসে দেখি সামিহা এখনও ওভাবেই বসে আছে)
ঘুমাবে না?
নাকি বসে বসে ভাবছো আমাকে আজ কিভাবে বেড থেকে তাড়াবে। চিন্তা করো না আমি আজ সোফায় শুবো।
আমিঃ উনার কথা শুনে অপলক দৃষ্টি নিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।এই কিছু দিনের মধ্যে উনি এতটা চেঞ্জ হয়ে গেলেন। আগে তো সারাক্ষণ ভালোবাসি ভালোবাসি বলে মাথা খেত।আর এখন ভালোবাসি বলবে তো দূর ভালো করে দুটো কথা ও বলেন না। রিয়ার সাথে থাকলে তো ভালোই থাকেন। কিন্তু আমার সামনে আসলেই এভাবে উনার মুড অফ হয়ে যায় কেন।উনি কি আমাকে এখন আর ভালোবাসেন না।
তানভীরঃ আমি জানি তুমি অনেক কষ্ট পাচ্ছো।কিন্তু আমার ও যে কিছু করার নেই। তোমাকে বুঝাতে হবে তুমি যে আমাকে কতটা ভালোবাসো।বালিশ নিয়ে সোফায় চলে গেলাম। সামিহার চোখে পানি দেখে আমি নিজকে ঠিক রাখতে পারবো না। এখন যদি সামিহা বুঝতে পারে আমি ওকে ঠিক আগের মতই ভালোবাসি।তাহলে ও কোনো দিন মুখ ফুটে বলবে না ও যে আমাকে ভালোবাসে।
কিছু দিন পর…..
তুহিঃ ভাবী আজ নাকি রিয়া আপু ভাইয়াকে প্রপোস করবে।
আমিঃ কি!!! আমি উনার ওয়াইফ এটা জানা শর্তে ও রিয়া উনাকে প্রপোস করবে। আমি আজ এই রিয়াটাকে আস্ত রাখবো না। লুচ্চু মেয়ে একটা আমার জামাইয়ের সাথে লাইন মারতে চায়।আমার সতীন হওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগছে। আজ ওর একদিন কি আমার একদিন। এমন শিক্ষা দিব যা জীবনে ও ভুলবে না।
রিয়া উনাকে নিয়ে কোথায় গেছে তুমি কি জানো?
তুহিঃ হুম ভাবী তুমি চলো আমি তোমাকে নিয়ে যাই।
সন্ধ্যায় তুহি আমাকে একটা রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেল।রেস্টুরেন্টটা পুরো ফাঁকা কেউ নেই।
তুহিঃ ভাবী রিয়া আপু আজকের সন্ধ্যার জন্য পুরো রেস্টুরেন্টটাই বুকড করে নিতে। এখানেই হয়ত ভাইয়াকে প্রপোস করবে।
আমিঃ উনি কোথায়? কোথাও তো দেখতে পাচ্ছি না।
তুহিঃ চলো ঐ সাইডে গিয়ে দেখি।
আমিঃ(ওদিকে গিয়ে দেখি রিয়া উনার হাত ধরে বসে আছে। রিয়া একটা চামিচ দিয়ে উনাকে খাইয়ে দিচ্ছে।আর উনি ও চুপ চাপ খেয়ে যাচ্ছে। মনে হয় কয় জন্ম ধরে না খেয়ে আছে। রিয়া ওর পার্স থেকে ছোট একটা বক্স বের করে উনার দিকে তাকিয়ে কি যেন বলছে।রিয়া বক্সটা খুলে একটা রিং বের করে হাতে নিলো।
আমি আর এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। উনার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। উনার দিকে তাকিয়ে)
কি করছেন এখানে। লজ্জা করে না ঘরে বউ রেখে এখানে এসে অন্য একটা মেয়ের হাত ধরে এভাবে বসে থাকতে।
তানভীরঃ তুমি এখানে কি করছো?
(তুহির দিকে তাকিয়ে)তুহি ওকে এখান থেকে নিয়ে যা।
আমিঃ ওহ আমি এখানে এসে আপনাদের ডিস্টার্ব করে ফেললাম নাকি?
রিয়াঃ সামিহা তুমি যা ভাবছো তেমন কিছু না।
আমিঃ আপনি চুপ থাকেন। আপনার মত মেয়েরা মেয়ে সমাজের কলঙ্ক। উনার বউ আছে এটা জানা সত্বেও উনার সাথে রিলেশনে যেতে আপনার লজ্জা করে না। নিজে একটা মেয়ে হয়ে অন্য আর একটা মেয়ের সংসার ভাঙ্গছেন। কেমন মেয়ে আপনি। আমার হাজবেন্ডের থেকে দূরে থাকবেন। তা না হলে ভালো হবে না বলে দিলাম।
তানভীরঃ তুমি রিয়াকে এসব কেন বলছো।তুমি তো আমাকে ভালোবাস না স্বামী হিসেবে মান না। তাহলে রিয়ার সাথে রিলেশন করা বা না করাতে তোমার কিছু আসে যায় না।রিয়াকে এসব বলার তোমার কোনো অধিকার নেই।
আমিঃ আপনি একটা কথা ও বলবেন না। কে বলেছে আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আপনাকে যদি না ই ভালোবাসতাম তাহলে কি আপনার কাছে আবার ফিরে আসতাম। রিয়াকে তো এতক্ষণ শুধু মুখে বলেছি এখন তো ওর চুল ছিঁড়বো। (রিয়ার দিকে যেতে লাগলাম)
তানভীরঃ( সামিহা কে ধরে)কি করছো তুমি?
আমিঃ ছাড়ুন আমাকে আমি আজ এই শাঁকচুন্নিটার সব চুল ছিড়ে ফেলবো। এই পেত্নীটা আপনার উপর কালো জাদু করেছে। যে আপনি আমাকে ভালোবাসি ভালোবাসি বলে সারা দিন মাথা খেতেন।এখন ভালোবাসি বলবেন তো দূর ভালো করে আমার সাথে কথা ও বলেন না। এই কয়েক দিনে এমন কি হলো যার কারনে আপনি আমাকে ভুলে গেলেন। নিশ্চয় রিয়া আপনার উপর জাদু করেছে।
তানভীরঃ তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?
আমিঃ এমন বোকার মতো প্রশ্ন করছেন কেন।বললাম ই তো আমি আপনাকে ভালোবাসি।আপনি বুঝেন না আপনাকে রিয়ার সাথে দেখলে আমার কেন খারাপ লাগে। আপনি আমার সাথে কথা না বললে কেন আমার কোনো কিছুই ভালো লাগে না। আপনি আমাকে ইগনোর করলে আমার কান্না চলে আসে।( উনার হাত ধরে কান্না করতে করতে কথা গুলো বললাম)
রিয়াঃ এই মেয়ে একদম কাঁদবে না। তোমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসো মাঝ থেকে আমাকে কত কথা শুনতে হলো।তোমাদের গল্পে আমাকে ভিলেন হতে হলো।হাজবেন্ডকে এতই ভালোবাসো তাহলে ওকে একা ছেড়ে চলে গেছিলে কেন।এই তোমার ভালোবাসা। খুব তো আমাকে শাঁকচুন্নি বলছো তুমি কি তুমি তো নিজে একটা পেত্নী। পেত্নী না হলে কি এত ভালো একটা ছেলেকে কেউ এত কষ্ট দেয়।।আমি যখন তানভীরকে প্রপোস করছিলাম তখন ও আমার প্রপোজাল একসেপ্ট করলে তোমার মত স্টুপিড মেয়ে ওর লাইফে আসতো না। এখন কান্না অফ করো তা না হলে দুটো থাপ্পড় দিব।পিচ্চি একটা মেয়ে ও আসছে আমার চুল ছিড়তে।
আমিঃ কাঁদতে কাঁদতে হা করে রিয়ার কথা গুলো শুনছি। কি বললো কিছুই বুঝলাম না সব মাথার উপর দিয়ে গেল।
তানভীরঃ স্যরি রিয়া আমাদের জন্য তোমার কত কষ্ট করতে হলো।প্লিজ রিয়া সামিহার কথায় তুমি কিছু মনে করো না। কখন কাকে কি বলতে হয় এটা ওর একদমই জানা নেই। তুমি ওর কথায় রাগ করো না। তুমি না থাকলে হয়ত সামিহা কোন দিনও বুঝত না ও আমাকে ভালোবাসে।
রিয়াঃ আরে কি যে বলো। ওর মত একটা পাগলীর কথায় রাগ করে পারা যায় নাকি।আমি তো ওকে আমার ছোট বোন মনে করি। সারাক্ষণ শুধু বাজে পেচাল পারে কাজের কথা কিছুই বলে না। পেত্নীদের মত এর ঘাড় মটকাবে ওর চুল ছিঁড়বে এসব নিয়েই থাকে। কলেজে যেদিন ওর সাথে ফাস্ট দেখা হয়েছিল ঐ দিনই বুঝেছি ও তোমাকে কতটা ভালোবাসে।।তোমার সাথে আমাকে দেখে ও কতটা জেলাস ফিল করছিল তা ওর চোখে ভাসছিল।
আমিঃ রিয়া আপুর সব কথা শুনে আমি অবাক হয়ে দাড়িয়ে আছি। আমি রিয়া আপুকে এতটা ভুল বুঝছি। রিয়া আপুর সাথে কতটা খারাপ ব্যবহার করেছি। কত কথা শুনিয়েছি।
তানভীরঃ কি হলো এভাবে হা করে দাড়িয়ে না থেকে রিয়াকে সরি বলো।রিয়া তোমার আর আমার জন্য কত কিছু করেছে আর তুমি রিয়ার চুল ছিড়তে গেছিলে।
আমিঃ রিয়া আপু আমি না বুঝে আপনাকে অনেক কিছু বলেছি। আপনার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করছি। প্লিজ আপু আমাকে হ্মমা করে দিবেন। আমার কোনো আপু নেই যদি থাকতো তাহলে ঠিক আপনার মতই হতো। যে ভালোবেসে ছোট বোনের ভুল গুলো ধরিয়ে দিত।আপনি আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
রিয়াঃ তুমি যা করছো তার জন্য তো তোমাকে শাস্তি পেতেই হবে এত সহজে তো আমি তোমাকে হ্মমা করবো না।
তানভীরঃ রিয়া আসলে সামিহা বুঝতে পারেনি। ওর হয় আমি সরি বলছি।
রিয়াঃ এসব বলে কোনো লাভ হবে না। আমি তো সামিহা কে শাস্তি দিবই।আর ওর শাস্তি হলো ওকে সারা জীবন তোমার সাথে থাকতে হবে। তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসতে হবে। আর কোনো দিনও তোমাকে ছেড়ে যেতে পারবে না।
আমিঃ( রিয়া আপুকে জড়িয়ে ধরে) আপু তুমি অনেক ভালো। তোমাকে এতো গুলা ভালোবাসা দিলাম। তুমি আমাদের সাথে থাকবে। আর লন্ডনে যেতে পারবে না। আমি তোমাকে কোথাও যেতে দিব না।
রিয়াঃ আরে দাঁড়াও দাঁড়াও সব ভালোবাসা আমাকে দিয়ে দিলে তুহিকে কি দিবে। আমাকে এখানে আনার প্লেনটা তো তুহিই ছিল। তুহিই তো ফোনে আমাকে তোমাদের কথা বলেছে।
আমিঃ (তুহির দিকে তাকিয়ে) তুহি তুমি!!!
তুহিঃ ভাবী ইয়ে মানে…
তানভীরঃ থাক আর মানে মানে করতে হবে না। এখন সবাই বাসায় চলো।
(সামিহার দিকে হাত বাড়িয়ে) ম্যাডাম আপনি ও চলেন।
আমিঃ একটা হাসি দিয়ে মূহুর্তের মধ্যেই উনার হাতটা ধরে ফেললাম। এ হাত আমি আর কখন ও ছাড়বো না।সারা জীবন উনার হাত উনার পাশে থাকবো। কোনো মান অভিমান আমাদের মাঝে আসতে দিব না। আমার শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত উনার সাথেই কাটাবো।
সমাপ্ত…….