#চন্দ্রপ্রভা_রজনী
#পর্বঃ১২
লিখাঃসামিয়া খান
অনেকটা জোর করেই দুর্বা সকাল সকাল দিহানের বাড়ী থেকে এসে পড়েছে।আজকে তার একটা ইম্পরট্যান্ট ক্লাস আছে যা এটেন্ড না করলেই নয়।এজন্য এত তাড়াহুড়ো করে আসা।আসার সময় শুধু মাহসিন আর দিহার সাথে দেখা করে আসতে পেরেছে।মায়া দিহান তখনো ঘুমে ছিলো।
ফ্ল্যাটের দরজার লকে চাবি ঘুরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো দুর্বা।
আরিয়ানকে দেখে নিজেকে যথেষ্ট শান্ত রেখেছে দুর্বা।সোফার উপর পায়ে পা তুলে বসে আছে আরিয়ান। তার স্থির দৃষ্টি দুর্বার দিকে।খুব স্বাভাবিক ভাবে নিজের হাতে থাকা ব্যাগটা সোফার উপর রাখলো দুর্বা।হাসি মাখা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
“স্যার কফি খাবেন নাকী গ্রীন টি?”
“কফি দিতে পারো।”
কথাটাগুলো বলার সময় গলার স্বর বেশ ঠান্ডা ছিলো আরিয়ানের।আগের হাসিটা বজায় রেখে দুর্বা কিচেনের উদ্দেশ্য পা বাড়ালো।
মায়ার রুমটা আরিয়ান নিজের হাতে সাজিয়েছিলো।সব মায়ার পছন্দের জিনিস দিয়ে।গত দুই দিন ধরে যে এই রুমটা অব্যবহৃত তা বেশ বুঝতে পারছে আরিয়ান।বুকের ভিতর ফাঁকা লাগছে তার।মায়াকে যে পর্যন্ত নিজের চোখে না দেখছে সে পর্যন্ত থাকতে পারছেনা সে।
“স্যার আপনার কফি।”
নিঃশব্দে দুর্বার হাত থেকে কফির মগ নিলো আরিয়ান এবং আয়েশ করে তাতে একটা চুমুক দিলো।
“মায়া কোথায় দুর্বা?”
“যেখানে ওর থাকার কথা।”
“দিহান এর কাছে?”
“জানিনা আমি।”
“তুমি জানো দুর্বা বলো।”
“আমি সত্যিই জানিনা।”
“কালকে রাত কই ছিলে তুমি?”
“এক ফ্রেন্ডের বাসায়।”
“কোন ফ্রেন্ড বলো আমি খবর নিচ্ছি।”
“আপনি আমার অভিভাবক না যে এত প্রশ্ন করছেন।আপনাকে এত উত্তর দিতে আমি বাধ্য নই।”
স্বাবধানে নিজের কফি মগটা টেবিলের উপর রাখলো আরিয়ান।তারপর বলতে শুরু করলো।
“তোমার মনে হয় দুর্বা আমি অনেক লোভী একটা মানুষ।কিন্তু আদৌ কী আমি লোভী?আমার এত চাওয়ার পিছনের গল্পটা শুনতে চাও?আমি যখন ক্লাস এইটে পড়ি তখন বাবার বিজনেসে অনেক বড় লস হয়।আমাদের বাড়ী,গাড়ি সব নিলামে বিক্রি হয়ে যায়।পুরো নিঃস্ব তখন আমরা।একটা ছোট বাসা ভাড়া করে থাকতাম।পরিবারের সদস্য ছিলো পাঁচজন কিন্তু রুম ছিলো দুটো। সারাজীবন বিলাসবহুল বাড়ীতে থেকে হুট করে ওই ছোট দুটো রুমে নিজেদের মানিয়ে নিতে খুব কষ্ট হতো।এমনও দিন গিয়েছে ভাত তো ছিলো কিন্তু তার সাথে খাওয়ার মতো ভালো তরকারি থাকতো না।গরম ভাত পেঁয়াজ আর কাঁচা মরিচ ডলে খেয়েছি।রিশা ছোট ছিলো এগুলো খেতে পারতো না।না খেতে খেতে পেটে শুকিয়ে গিয়েছিলো একদম।ভালো কাপড় ছিলোনা, পায়ে দেওয়ার মতো ভালো জুতো ছিলোনা।আমাদের পাশের বাসার লোক তখন বাসা চেঞ্জ করলো।তাদের ফেলে যাওয়া জুতো পরে আমরা স্কুলে যেতাম কারণ জুতোর অভাব ছিলো।টানা দুই বছর কষ্ট করার পর বাবার এক বন্ধু বাবাকে টাকা ধার দিলো।যার ফলে আবার নতুন করে সব শুরু হলো।আমাদের দিন ফিরেছে হয়তো কিন্তু ওই দুই বছরের স্মৃতি কখনো মুছে যাবেনা।তখন থেকেই একটা জিদ ছিলো যে নিজের কাছের মানুষকে কখনো কষ্ট পেতে দিবোনা।যদি আমার হসপিটাল ইস্টাব্লিসড না হয় তখন?তাহলে কী আমি মায়াকে সর্বোচ্চ সুখ দিতে পারতাম?”
“টাকা দিয়ে কী সুখ হয় স্যার?”
“শুধু ভালোবাসা দিয়েও কী সুখ হয়?”
“প্রশ্নটা অনেক জটিল স্যার।সুখ বস্তুটা কী তা আদৌ কেও দেখেছে বা উপভোগ করেছে বলে আমার মনে হয়না।”
“যার সুখের জন্য এতকিছু করছি তাকে যদি না পাই তো কেমন হবে?”
“স্যার প্রত্যেক পুরুষের জন্য জোড়া হিসেবে আল্লাহ কাওকে না কাওকে তৈরী করেছে।আপনার জন্য তা সুবাহ ম্যাম।মায়াকে ভুলে যান।”
কফির মগটা টেবিলের উপর রাখলো আরিয়ান।থমথমে গলায় বললো,
“ভালোবাসার মানুষকে অন্যের সাথে দেখলে আমার শরীর জ্বলে।তাকে কীভাবে আমি ভুলে যাই।মায়া যে আমার রন্ধে রন্ধে।”
,
,
,
আজকে সকালে খাবার টেবিলে নিজের মেয়েকে দেখতে না পেয়ে বেশ অবাক হলো মাসুদ।সচরাচর দিহা খাবার এর জন্য কখনো লেট করেনা কিন্তু আজকে কী হলো তা বুঝতে পারছেনা।
“দিহা মা কই আফিয়া?”
ব্রেডে বাটার লাগাতে লাগাতে জবাব দিলো আফিয়া।
“দিহান এর বাড়ীতে গিয়েছে।”
“কবে সকালে?”
“হুম সকালে গিয়েছে। কয়েকদিন ওখানে থাকবে।আজকে আমি আর সুবাহ আরিয়াবকে নিয়ে যাবে।তুমি কী যাবে আমাদের সাথে?”
“পাগল পেয়েছো নাকী?আমার ওতো সময় নেই যে তোমার ছেলেকে দেখতে যাবো।যাচ্ছো ভালো কথা একটা বিষয়ে খেয়াল রেখো আরিয়ান এর যাতে কোনো অসস্মান না হয়।”
“কী হবে একদিন দিহানের জন্য গেলে?ছেলে হিসেবে না গেলে কিন্তু নিজের ভাইয়ের ছেলে হিসেবে তো দেখতে যেতে পারো।”
“ওসব সম্পর্কের দোহাই আমাকে দিবেনা।ভাই মারা গিয়েছে পঁচিশ বছর কিন্তু আমি এখনো ভুলতে পারিনা সে আমার অধিকার থেকে আমাকে বঞ্চিত করেছে।”
“ওগুলো তোমার ভ্রম।”
“কোনটা ভ্রম আর কোনটা সত্যি তা খুব ভালোভাবে জানি।মাত্র পাঁচ বছর এর ছেলের জন্যও তো কিছু রেখে গিয়েছিলো না।কবে না কবে ছেলে বিয়ে করবে তার বউ আসবে তার জন্য সব রেখে গেলো।মানসিক সমস্যা না থাকলে এটা কেও করতে পারে?”
“মাসুদ এটা ভুলে যেওনা সে তোমার মৃত ভাই।আমি ভেবেছিলাম তুমি তার ছায়া হবে কিন্তু এখন দেখছি তোমার অন্তরে বিষ ছাড়া আর কিছু নেই।সময় থাকতে ভালো হও।তা নয় শূন্য হাতে থাকতে হবে সারাজীবন। ”
,
,
,
সকাল এগারটা বেজে পাঁচ মিনিট।এখনো ঘুমাচ্ছে দিহান।মায়া কেবল গোসল করে বের হলো।অনেকদিন পর খুব আরামের ঘুম দিলো মায়া।কোন চিন্তা নেই কোন ঝামেলা নেই।আজকে তার বিবাহিত জীবনের প্রথমদিন।অথচ তার মনেই হচ্ছেনা।
মায়াকে রুমে আসতে দেখে উঠে বসলো দিহান।হালকা হাসি দিয়ে বলল,
“শুভ সকাল বিবিজান।”
প্রতিউত্তরে মায়াও একটা স্নিগ্ধ হাসি হাসলো দিহানকে দেখে।
“শুভ সকাল।”
“শুভ সকাল তা না হয় বুঝলাম মায়ামতি। কিন্তু তুমি এত লজ্জা পাচ্ছো কেনো?”
“কই না তো?”
“জানো আমি প্রায় অনেক মুভিতে দেখি যে বাসর ঘর বা বিয়ের পরদিন সকালে উঠে বর বউকে জিজ্ঞেস করে রাত কেমন কাঁটলো?ঘুম কেমন হলো ব্লা ব্লা।এসব থার্ড ক্লাস কথাবার্তায় এত রাগ লাগে।রাতের চর্চা দিনে কেনো করতে হবে?”
“তাহলে আপনি এখন কী করছেন?”
“আমি তো বিষয়টা বুঝাচ্ছি তোমাকে।”
“হুহ।আপনি ঘুম থেকে উঠেই এত কথা বলছেন কীভাবে? ”
“কারণ আমি ঘুম থেকে উঠেছি প্রায় দুই ঘন্টা আগে।এতসময় শুয়ে ছিলাম।আজকে সব শ্যুটিং সব কাজ অফ করিয়েছি।হাজার হোক নতুন নতুন বিয়ে করেছি তো।”
এমন সময় দরজায় কেও নক করলো।মায়া যেতে নিলে দিহান তাকে থামিয়ে নিজে গিয়ে দরজা খুলে দিলো।দরজার ওপাশে একজন সার্ভেন্ট আর জিকজ্যাক দাড়িয়ে আছে।দিহানের দিকে একবার দৃষ্টিপাত দিয়ে জিকজ্যাক মায়ার দিকে হাঁটা ধরলো।মায়া খেয়াল করলো জিকজ্যাক বেশ আভিজাত্য ভঙিতে তার দিকে হেঁটে এগিয়ে আসছে।যেনো খুব গম্ভীর সে।মায়ার পায়ের কাছে এসে তার দিকে বেশ আবেগপ্রবণ দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে।মায়া একটু হেসে কিছুটা ভয় এর সহিত তাকে কোলে তুলে নিলো।
“বাহ তোমাকে পেয়ে জিকজ্যাক আমাকে ভুলে গেলো?এই তুমি কী যাদু করো?”
“নকশা করেন কেনো এত আপনি?”
“আমি নকশা করিনা এমনি।আচ্ছা আজকে বিকালে শাড়ী পড়ে রেডি থেকো।মা,সুবাহ,আরিয়ান আসবে।”
চলবে,,,
#চন্দ্রপ্রভা_রজনী
#পর্বঃ১৩
লিখাঃসামিয়া খান
আরিয়ান এর মেজাজ বেশ ফুরফুরে লাগছে সুবাহ এর কাছে।সকাল সকাল যেনো কোথায় গিয়েছিলো সেখান থেকে এসে সুবাহকে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছে সবার সামনে।জিনিসটা বেশ লজ্জা লাগছিলো শ্বশুর শ্বাশুড়ীর সামনে।আরিয়ানকে দু একবার নিষেধ করেছিলো কিন্তু আরিয়ান শুনেনি।পরম যত্নে সুবাহকে খাইয়ে দিয়েছে।
সেই শুরু। তারপর থেকে সুবাহার সাথে নানা বিষয়ে কথা বলে চলেছে।হসপিটালে না গিয়ে সুবাহার সাথে গল্প করছে।সুবাহার মাথায় তেল দিয়ে দিয়েছে।এসব কিছু সুবাহার কাছে স্বপ্নের মতো লেগেছে।এই যেমন কালকে রাতেও চিন্তা করেছে যদি সে আরিয়ান এর বুকে মাথা দিয়ে বই পড়তে পারতো এবং আরিয়ান পর যত্নে তার মাথায় বিলি কেঁটে দিবে।আবেশে ঘুম চলে আসবে সুবাহার।
বিষয়টা এখন আর স্বপ্ন নেই।আরিয়ান সুবাহ এর মাথায় পরম যত্নে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে এবং তার বুকে মাথা দিয়ে বই পড়ছে সুবাহ।
“ঘুম আসছে সুবাহ?”
“হুম খুব।”
“তাহলে ঘুম দেও।”
“এখন ঘুম দিলে চলবে। একটু পরে তো দিহান ভাইয়ার বাসায় যেতে হবে।”
“আচ্ছা হঠাৎ করে তোমার ভাইয়ার বাসায় কেনো যেতে হবে?”
কথাটা শুনে মুখ আরিয়ানের বুক থেকে মাথা তুললো সুবাহ।তার দিকে তাঁকিয়ে ঠোঁট টিপে হাঁসছে।
“কী হলো? হাঁসছো কেনো?”
“আচ্ছা একটা কথা বলি।সিক্রেট কথা।”
সুবাহ বেশ ফিসফিস করে কথাটা বললো।তার ভয়েজ টোন এর সাথে মিল রেখে আরিয়ান বলল,
“কী সিক্রেট কথা?”
“দিহান ভাই না কালকে বিয়ে করেছে।”
কথাটা শুনে একটুও বিচলিত হলো না আরিয়ান।বরং হাসিমুখে আবার সুবাহকে নিজের বুকে টেনে নিলো।
“তা বিয়ে করলো কিন্তু তোমাকে বললো না কেনো?”
“বিয়ে করেছে তো কালকে রাতে।মনে হয় একটার সময়।”
“এত রাতে কেও বিয়ে করে নাকী?”
“করে তো দিহান ভাই করেছে।এটা কাওকে আবার কিন্তু বলিয়েন না তা নয় ভাবীর ক্ষতি হবে।”
“তোমার ভাবীর নাম কী?”
“এখনো জানিনা। আজকে বিকালে একবারে দেখবো।এখন ছাড়েন গোসল করবো।”
“আচ্ছা সুবাহ কালকে তুমি আমার কাছে একটা জিনিস চেয়েছো ওটা কী এখনো চাও?”
“কী?”
“একটা বাবু।”
“আপনি দিবেন!”
“হুম দিবো তো কারণ তুমি এখন আমার কাম্য বস্তু পাওয়ার একমাত্র রাস্তা।”
“মানে?”
“মানে বুঝতে হবেনা। যাও গোসল দেও।”
,
,
,
জিকজ্যাকের দৈনন্দিন জীবন দেখে হা করে তাঁকিয়ে আছে মায়া।বেশ স্মার্ট একটা বিড়াল ও। এবং ওর সবকিছু টাইমমতো হয়।খাওয়া গোসল সহ সব।চেয়ার টেবিলে বসে খায়।এবং এমনভাবে খাবার খায় যে এক বিন্দুও বাহিরে পরেনা।
খাওয়ার পরে এক সার্ভেন্ট টিস্যু দিয়ে মুখ মুছিয়ে দেয়।গলায় সবসময় একটা কালো রঙের লকেট থাকে।সাদা শরীরে কালো লকেট যা অদ্ভুত রহস্য লাগে মায়ার কাছে।জিকজ্যাকের নিজস্ব বড় একটা রুম আছে।মোট কথা এ বাড়ীর অন্যতম সদস্য জিকজ্যাক।
“জিকজ্যাকের মধ্যে এতো কী দেখো বিবিজান?”
“এত ডিসিপ্লিন মেইন্টেন করে কীভাবে এ বিড়াল?”
“উহু মায়াবিল ওকে বিড়াল বলো না ওর রাগ উঠে।”
“বাহ বিড়ালেরও রাগ হয় নাকী আবার?”
“হয়তো।প্রত্যেক প্রাণীর মধ্যে ভালোবাসা, রাগ দুঃখ সব অনুভূতি থাকে।”
“আচ্ছা মানলাম।কিন্তু এখন আপনি আমাকে মায়াবিল বলে ডেকেছেন।”
“হুম তাতে কী হয়েছে?”
“আমাকে কয় নামে ডাকেন?”
“বউ এর বাচ্চা বউ। এগুলো ভালোবাসার নাম।”
“হুম।”
কথাটা বলে মায়া বেশ চুপচাপ হয়ে গেলো।মাথা নিচের দিকে দিয়ে রেখেছে।কিছুসময় নিরবতা পালন করার পর মুখ খুললো,
“আমাদের দেখা হয়েছে মাত্র পাঁচদিন এর মধ্যে বিয়ে হয়ে গেলো।ভালোবাসা বলে আদৌ কিছু আছে আমাদের মধ্যে?”
“সত্যি কথা বলতে মায়া আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা থাকলেও তোমার পক্ষ থেকে তা একশ ভাগের অর্ধেক।এখনো ভালোবাসতে পারোনি আমাকে।”
“তাহলে আমাকে বিয়ে করেছেন কেনো?”
“এই প্রশ্নের জবাব আমিও জানিনা।দেখো মায়া আমাদের মধ্যে মানসিক ভালবাসা হওয়ার আগে হয়তো শারীরিক ভালোবাসা হয়েছে কিন্তু বিশ্বাস করো আমাদের মধ্যে একদিন প্রচুর ভালোবাসা হবে।আসলে আমাদের বিয়েটা এরেঞ্জ ম্যারেজ টাইপ। ”
“আমাকে পড়তে দিবেন আবার?”
“অবশ্যই। খুব তাড়াতাড়ি তুমি আবার স্টাডি শুরু করবে।”
“আমার একজন ভালোবাসার মানুষ ছিলো।”
“তা তো আমি আগে থেকেই জানি।ওটা নিয়ে আমি ভাবছিনা।আচ্ছা তোমাদের ব্রেকআপ হয়েছিলো কয়দিন আগে?”
“তেত্রিশ দিন আগে।”
“হুম গুড।তাহলে তুমি বিয়ে করেছো এতে তোমার দোষ দেখছিনা।কারণ তেত্রিশ আগেই সে ব্যক্তি তোমার জীবন থেকে চলে গিয়েছে।মায়ামতি জানো জীবনটা উপভোগ করলে কিন্তু অনেক সুন্দর।এন্ড ট্রাস্ট মি!আমার সাথে তোমার জীবনটা সুন্দর হবে।আমি সেই চেষ্টা রাখবো।”
“দিহান আমার বাবা আমাকে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে ছয় মাস আগে।”
“এ বিষয়ে আমরা পরে কথা বলবো।এখন চলো তোমাকে রেডী করিয়ে দিবো।”
“কেনো আমার হাত আছে তো?”
“আরে বউকে শাড়ী পড়িয়ে দিলে বউ খুশী হবে।আর বউ খুশী হলে সৃষ্টিকর্তা সহায় হবে চলো না মায়াবিল।”
“কচু।বাহিরের মানুষ আপনার এগুলো দেখলে ভাববে কুয়ারা ঢং করি আমরা।”
“বলুক তুমি চলো।”
একটা গোল্ডেন কালার এর শাড়ী পড়ে আছে মায়া।চুলগুলো হাত খোঁপা করা।মুখে ভারী কোনো প্রসাধনী নেই।শুধু ঠোঁটে হালকা কালার এর লিপস্টিক।চুলে সুগন্ধি বেলী ফুল।বারান্দার রেলিঙ ধরে গেটের দিকে তাঁকিয়ে আছে মায়া।এখান থেকে গেট স্পষ্ট দেখা যায়।একটা কালো রঙ এর গাড়ী গেট দিয়ে প্রবেশ করলো।গাড়ীটাকে চিনে মায়া।এই গাড়ীতে চড়ে আরিয়ান এর সাথে বেশ কয়েকবার ঘুড়েছে সে।
গাড়ীর দরজা খুলে সামনে তাঁকিয়েই আরিয়ান মায়াকে বারান্দায় দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পেলো।তার সাজগোছ বলে দিচ্ছে সদ্য বিবাহিত সে।মায়ার দিকে তাঁকিয়ে একটা ত্যাচ্ছিলের হাসি হাঁসলো আরিয়ান।
অবশেষে সে যা চিন্তা করেছিলে সেটাই হলো।দুই একবার নিজের ডান হাত মুঠো করে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিলো সে।আর এদিকে মায়া একদম নির্বিকার যেনো সে কাওকে চিনেই না।কিন্তু মনের ভিতর একটা প্রশ্ন খচখচ করছে সব জানার পর দিহানের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে।
চলবে,,,