#Ayesha
#ArrangedMarraige
পর্ব-19+20
ফাহাদ: কি
আমি: কামর দিচ্ছেন কেন?
ফাহাদ: এটাকে লাভ বাইট বলে
আমি: ব্যাথা পাই তো
ও ওর কপালের সাথে আমার কপাল লাগিয়ে 2জনেই চোখ বন্ধ করে আছি।।
আমি: এইবার যাওয়া দরকার
ফাহাদ বালিশের পাশ থেকে ফোন টা নিয়ে আমাকে দেখালো 2টা বাজে
ফাহাদ: শাড়ি পড়েই যাবে না চেঞ্জ করে
আমি: চেঞ্জ করেই যাবো
ফাহাদ: ঠিক আছে।।
ফাহাদ উঠে দাড়ালো আমি আমার জামা নিয়ে ওয়াশরুম চলে গেলাম।।
2 মিনিট পরে বের হয়ে দেখি সে বিছানায় বসে আছে 2টা হাত মুঠো করে কপালে লাগিয়ে মাথা নিচু করে নিচে তাকিয়ে আছে।
আমি ওর কাঁধে হাত দিতেই উঠে দাড়িয়ে টিশার্ট টা টান দিয়ে দাড়ালো।।
ফাহাদ: অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পর
আমি শাড়ির আঁচল টা তার হাতে ধরিয়ে দিলাম আর আমি কোমরের সাইড টা নিলাম।।
আমি: ভালো করে ধরেন।।
ও আমি মিলে শাড়ি টা ভাজ করলাম।।
আমি: কি করবো শাড়িটা?
ফাহাদ: রেখে দাও ব্যাগ এ যাওয়ার সময় দিয়ে যাবো।।
আমি ওর ব্যাগ এ শাড়িটা রেখে ব্লাউজ পেটিকোট আলমারিতে রেখে দিলাম।।
আমি: যাচ্ছি
ফাহাদ: শুনো (আমার দিকে এগিয়ে এসে, আমার চুলের বেন্ট টা আমার হাতে দিল) চুল বাঁধ
আমি কোপা করে বেন্ট দিয়ে আটকে দিলাম
ফাহাদ: যাও ঘুমাও, সকালে ডেকে দিও
আমি: হুমম ( ও আমাকে জড়িয়ে ধরলো, আমার মুখে 2হাত দিয়ে ধরে কপালে কিস করে, আমার হাত ধরে রুম পর্যন্ত দিয়ে আসলো)
আমি শুয়ে শুয়ে শুরু থেকে এই পর্যন্ত ভাবছি। 1মাসের পরিচয়ে কতটা চিনে গেলাম তাকে, কত আপন হয়ে গিয়েছি। আমাকে কষ্ট পেতে দেখে সে কতটা কষ্ট পায় তার প্রমাণ তো পেলামই।। এইসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে যাই।।
11টা মা ডেকে গেছে উঠিনি আমরা 3জনেই ইচ্ছামত ঘুমাচ্ছি।। বুবু এসে টেনে 3জনকে তুলে দিল। বললো তারাতারি গোসল করে নিতে সকাল সকাল পরে মানুষ এসে যাবে।। বাড়ি ভর্তি মানুষ সবাই দৌড়াদৌড়ি করছে।। ফারিয়া আর খাদিজা নিচ থেকে ওদের জামা নিয়ে এসে ফাহাদের ওয়াশ রুমে ঢুকে গেল। আমি ফাহাদকে ডাকছি এই ছেলের উঠার নামেই নেই, 2বার ডেকে গেছি বলছে 5মিনিট, ওর 5মিনিট শেষ হতে হতে ওরা 2জন গোসল করে চলে আসছে।।
আমি আমার জামা নিয়ে ঢুকে পরলাম, 20মিনিট পরে বের হলাম।। এখনো সে ঘুম।। আমি চুলে বাধা টাওয়াল টা আর আমার জামা ওরনা ওর রুমের বারান্দায় শুকাতে দিলাম।।
দরজা জানালা খুলে দিলাম, জানালা থেকে পুরো রোদ টা ওর মুখে পড়ছে, ও রোদ থেকে নিজেকে বাঁচাতে বাম কাত হয়ে শুয়েছে।।
আমি ওর মাথার পাশে বসলাম, ভিজা কয়টা চুল হাতে নিয়ে ওর কানের কাছে সুড়সুড়ি দিলাম তাও উঠে না। এইবার চুল গুলো ওর কান বরাবর ধরে রেখেছি, এই বার না উঠে যাবে কই? কিছুক্ষন চুলের পানি ওর কানের ভিতর যেতেই এক লাফে বসে পরলো, ও রাগী রাগী ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকাতে চাচ্ছে কিন্ত কানে পানি ঢুকার কারণে পারছে না।। ও বালিশ থেকে কভার খুলার চেষ্টা করছে
আমি: কভার খুলছেন কেন? বালিশের কভার দিয়ে পানি বের করবেন? বলেই হাসে দিসি।
ও কোনো উত্তর না দিয়ে আমার ওরনা নিয়ে ওর কান মুছার চেষ্টা করছে, কানের ভিতর কাপড় দিচ্ছে যেন পানি বের হয়ে যায়।।
আমি: ভাল্লাগছে না?
ফাহাদ: তোমাকে আমি পরে দেখে নিব আগে পানি টা বের করি
আমি: কয়টা বাজে খেয়াল আছে? 12টা বাজে। কত বড় মুখ করে বলছিলেন সকালে ডেকে দিও।। উকিলবাবুর 12 টার আগে ঘুমাই ভাঙ্গে না সে নাকি সকালে উঠবে।।
ফাহাদ আমাকে এক টানে শুয়ে দিল আমার উপর উঠে
ফাহাদ: কে বললো সকালে ঘুম ভাঙ্গে না? আমি 9টায় উঠে সায়েমের সাথে বাজারে গেসি, বাজার এনেছি, ঘুমিয়েছ তো তুমি নাক ডেকে ডেকে।। আরামের ঘুম টা ভাঙলে এখন তোমাকে কি শাস্তি দেয়া যায় বল?
আমি: আমি কিন্ত আবার কানে পানি দিব
ফাহাদ: আচ্ছা? আগে আমার থেকে ছাড় পাও তারপর
আমি: মাআ
মা বলতেই ও আমাকে ছেড়ে দিল আমি এই সুযোগে দৌড়ে চলে আসলাম
ফাহাদ: আর একবার পাই সুধ স্বরূপ উশুল করবো।।
আমি নিচে যেয়ে দেখি বুবু, খাদিজা আর ফারিয়া 3জন মিলে কাটা চামচ দিয়ে শশার দাগ কাটছে।। আমি ওদের পাশে বসতে চাইলাম কিন্তু মা ডেকে নিয়ে গেল।।
মা: সবাই বাইরের কাজে ব্যাস্ত আব্বাজী উঠলে ওকে খাবার গুলো দিবি, সকালে অনেক কষ্ট করেছে বেচারা
আমি: তুমি দিও আমি বাইরের কাজ করবো।
মা: হ্যাঁ আমি তো জানি তুমি কত কাজের
আমি এই অপমান নিতে পারলাম না।।
আমি রান্না ঘর থেকে সব গুলো খাবার এনে টেবিলে রাখছি, এর মধ্যে উনি হাজির।
ফাহাদ: আমার খাবার গুলো প্লেটে করে টিভির রুমে নিয়ে আসো
আমি: একটা প্লেটে 4টা রুটি আর একটা বাটিতে ভাজি, সেমাই, ডিম চপ, হালুয়া, সমুচা , চা এইগুলা নিয়ে ওর সামনে রাখলাম
সে এইগুলো দেখে হা হয়ে আছে
ফাহাদ: এই কতদিন খুব জামাই আদর হয়েছে, আমি আর পারবো না, তুমি রুটি আর ভাজি রেখে বাকি গুলো নিয়ে যাও প্লিজ
আমি: জামাই হবেন আর জামাই আদর পাবেন না তা কি করে হয়? এইসব গুলো শেষ করবেন
ফাহাদ: আগেই জামাই হই তারপর আদর, তুমি অন্তত এমন করো না
আমি: নো নো সব শেষ করেন, কথা কম বলেন
ও অসহায় মুখ করে তাকিয়ে আছে, একটু একটু করে সব গুলো খেয়ে রাখছে, রুটি আর ভাজি গুলোই খাচ্ছে যা সবটা।
আমি: আপনি নেশা টেশা করেন নাকি?
ফাহাদ: (খাবারের সামনে থেকে মুখ তুলে আমার দিকে তাকালো) তোমার এমন কেন মনে হলো?
আমি: এই বয়সে এমন স্লিম কেন?
ফাহাদ: তোমার চোখে আসলেই সমস্যা, আমি যা আছি ঠিক আছি, আজ পর্যন্ত কেউ এই কথা বলেনি তুমি বলদ ছাড়া।। আজ পর্যন্ত বাইরের চা পর্যন্ত খাইনা আর তুমি কি না আমাকে এত বড় অপবাদ দিয়ে দিলা।।
আমি: আপনি কিন্ত কথায় কথায় আমাকে অপমান করেন
ফাহাদ: আরে রাগ কর কেন? আমি তো আদর করে বলি পাগলী
আমি: হুমম।।
ফাহাদ: আমার খাওয়া শেষ এইবার আমি যেইগুলো বাকি রেখেছি তা শেষ করে ফেল তো
আমি: কিই? খাবারের কি অভাব পরেছে যে আপনার খাওয়া খাবার, খেতে হবে
ফাহাদ: এই পণ কত দিন থাকে দেখব
আমি খাবার গুলো টেবিলে ঢাকা দিয়ে বাইরে চলে আসলাম, ও শুয়ে শুয়ে নিউজ দেখছে।।
সারাদিনের খাটা খাটনির পর বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই রাজ্যের ঘুম।।
10টা বাজে কেউ ডাকেনি আমি নিজে নিজে উঠেই নিচে গেলাম। সবাই ব্যাগ পত্র গুচাচ্ছে
আমি: সবাই ব্যাগ গুচাচ্ছ যে? আবার কোথাও যাবে নাকি?
মা: প্রথমে আসতে চাস না আসলে যেতে চাস না, বাসায় যাওয়া লাগবে কাল মনে নেই?
আমি: 2ঈদ ছাড়া আর দাদার মৃত্যুবার্ষিকী ছাড়া তো আসাও হয় না, ডিসেম্বরের শীত ও আসতে পারিনা।। আগেই ভাল ছিল সবাই ছোট ছিলাম এক সাথে গ্রামে থাকতাম।।
মা: আগের দিন বাঘে খাইসে যা এইবার ব্যাগ রেডি কর সকালে গাড়ি
ইস আর 2দিন থাকলে ভালই হতো।। আমি ফাহাদের রুম থেকে আমার জামা গুলো আনতে যাই, রুমের পাশে যেতেই শুনা যাচ্ছে কারোর সাথে ফোনে কথা বলছে
+সাইফ তুমি যেভাবেই হোক কালকের দিনটা হ্যান্ডেল কর আমি পরশু অফিস এসে কথা বলবো
+ হ্যা আমি নিব এই কেস টা, তুমি ফাইল রেডি রাখো। ভাক্টিমের কনফেশন নিয়ে রাখো
+ ঠিক আছে রাখছি
আমি ততক্ষনে কাপড় এনে ওর সামনে দাড়িয়ে আছি ও এত টাই সেরিয়াস ছিল যে আসে পাশের কিছু খেয়াল নেই।।
আমি: কিছু হয়েছে?
ফাহাদ: আবার একটা ধর্ষণ, কি হচ্ছে দেশে? একটার পর একটা খুন, ধর্ষণ।। আমার মাথা কাজ করছে না। আমি যেইভাবে হোক ওদের ফাঁসির জোর দাবি করবো।।
আমি: কাল চলে যেতে হবে
ফাহাদ: হেঁ জানি ওরা গাড়ি করে যাবে তুমি আমার সাথে যাবে
আমি: আমরা তো গাড়ি করে গেলেই পারি
ফাহাদ: আবার কবে দেখা হবে জানিনা তাই লাস্ট সময় টা একটু তোমার সাথে থাকবো
আমি: হুমম
আমি চলে আসলাম রাতে খেয়ে শুয়ে পরেছি, ভোরে মা এসে তুলে গেল।।
চলবে
#Ayesha
#ArrangedMarraige
পর্ব-20
আমি ওর দিয়া গোলাপি ড্রেস টা পরলাম। পুরোটা গাওয়ান সিস্টেমের, অনেক লং, অর্নার এক পাশে চিকন পাড় অন্য পাশে সুতার ঘন কাজ।। আমি জামা টা পড়ে আয়নার সামনে দাঁড়ালাম, নিজেকে দেখে নিজেই ক্রাশ খাচ্ছি।। ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক দিলাম মুখে হালকা পাউডার দিয়ে গোল্ডেন কালার হিজাব পরে নিলাম।।
আমি ফাহাদের রুমে যেয়ে দেখি ও জুতার ফিতা বাধছে।। আমি ওর সামনে দাঁড়ালাম ও হালকা তাকিয়ে আবার জুতা ফিতা বেধে উঠে দাড়ালো।।
আমি বুঝলাম না আমাকে কি খারাপ লাগছে? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখি না ঠিকই তো আছে।।
আমি: খুব খারাপ লাগছে?
ফাহাদ: আমি ভয় পাচ্ছি ভালো করে তাকাতে
আমি: কেন
ফাহাদ: যদি আজ যাওয়া টা ক্যান্সেল হয়ে যায়
আমি: লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিলাম
ফাহাদ: আমার সামনে এসে কিছুক্ষন তাকিয়ে বললো, একদম গোলাপি গোলাপি লাগছে।।
আমি: ইশ কি সব ভাষা
ফাহাদ: হয়েছে হয়েছে এইবার বের হই সবাই ওয়েট করছে।।
আমরা নিচে নেমে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলাম আমি ফাহাদের সাথে বাইকে যাচ্ছি।। বাকিরা গাড়ি করে, ফারিয়া ওদের সাথেই যাচ্ছে। ওকে নেত্রকোনা থেকে ফাহাদ নিয়ে যাবে।।
1ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে আসার পর ফাহাদ হটাৎ রাস্তার পাশে গাড়ি থামালো,
ফাহাদ: নামো
আমি নেমে দাড়ালাম, চারপাশ ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখছি।।
সারা রাস্তার পাশে সারিবদ্ধ ভাবে গাছ লাগানো, যতদূর চোখ যায় ততদূর রাস্তা।। হালকা ঠান্ডা বাতাস আসছে।। শীত শীত ভাব অনেক টা।। রাস্তা দিয়ে 2/1টা গাড়ি ও যাচ্ছে।।
মা দের গাড়িটা আরো 15মিনিট আগে আমাদের ক্রস করে চলে গেছে।।
ফাহাদ: আয়েশা
আমি: ওর ডাকে আমি ওর দিকে মুখ ঘুরিয়ে হু বললাম
ফাহাদ: এতদিন অনেক জ্বালিয়েছি বলে রাগ করো নি তো?
আমি: (ওর কথা শুনে অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম) রাগ করবো কেন?
ফাহাদ: যদি খারাপ লেগে থাকে সরি
আমি: কি বলছেন কিছুই বুঝতে পারছিনা কোন সব?
ফাহাদ: পরশু রাতের কথা
আমি: মানে কি এইসবের
ফাহাদ: (আমার কাছে এসে আমার কাঁধে হাত রেখে বলল) পরশু যা হয়েছে আমার মনে হয় একটু বেশি হয়ে গেছে।। আমি জানিনা আমার কি হয়েছিল…..
আমি: আপনি এইসব বলার জন্য আমাকে আপনার সাথে এনেছেন?
ফাহাদ: আমি ভেবেছিলাম হয়ত তোমার খারাপ লেগেছে তাই কথা গুলো বলা দরকার….
আমি: এই চিনলেন আমায়?
ফাহাদ: আয়েশা প্লিজ ভুল বুঝ না আমি কিন্তু নিজের মধ্যে অপরাধ বোধ থেকেই কথা টা বলে ফেলেছি…
আমি: (ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম) ব্যাস অনেক হয়েছে, আমি আর কিছু শুনতে চাইনা।। আমি বাসায় যাবো
ফাহাদ: আয়েশা
আমি: আপনি নিয়ে যাবেন, না আমি একা চলে যাবো?
ফাহাদ: আয়েশা আমার কথা টা ঠিক মত শুন
আমি: আর কি শুনবো? এইসব বলে নিজে সাধু সেজে আমাকে অপরাধী বানিয়ে দিলেন? হ্যাঁ আমারই দোষ বিয়ের আগে কারোর এত টা কাছে যাওয়া উচিত হয় নি।। কি করবো বলেন, ভুল তো মানুষই করে আমি ও হয়ত বাঁধা না দিয়ে অনেক বড় ভুল করছি, আমাদের মধ্যে তেমন কিছু এখনও হয় নি,, আপনি চাইলে বিয়েটা ক্যান্সেল করে দিতে পারেন।। আমার এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই।।
আমার কথা শেষ হতেই ফাহাদ এসে আমার গালে ওর হাতের সবটা শক্তি দিয়ে থাপ্পড় দিয়েছে আমি ঢাল সামলাতে না পেরে অনেক টা পিছিয়ে গেছি।।
ও আবার আমার কাছে এসে আমার 2বাহু শক্ত করে ধরে,,
আমি ওর থাপ্পড়ে আর এইভাবে হাত শক্ত করে ধরায় ব্যাথা কেদে দিসি।।
ফাহাদ: এত বড় সাহস কি করে হয় তোর? বিয়ে ক্যান্সেল করার কথা মুখ থেকে কিভাবে বের করলি? আর কি বললি কারোর এত টা কাছে মানে? তুই আমার কাছে এসেছিস তোর হাজব্যান্ডের কাছে, আজ হাতে কলমে সাক্ষী নেই বলে আমাকে অন্য কারোর সাথে মিলাতে পারলি? আমি কি জন্তু জানোয়ার নাকি মাঝ পথে রেখে চলে যাবো? তোকে আমি মরে গেলেও আমার থেকে আলাদা করবো না, আমার থেকে তুই আমার রক্তে মিশে আছিস বুঝলি?
আমি: আচ্ছা? এইজন্য এইসব বলতে পারলেন? নিজে দোষ স্বীকার করেছেন তারমানে সব মাফ তাইনা?
ফাহাদ: এইবার কিন্ত ভুল বুঝছ
আমি: কোনো ভুল না আপনি আপনার জায়গায় ঠিক আছেন আমি আমার জায়গায়।।
আমি ওর হাত সরিয়ে নিজের মত সামনে রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছি।। গাড়ি আসলে গাড়ি থামিয়ে ওই গাড়ি করে নেত্রকোনা চলে যাবো কোনভাবে, টাকা চাইলে আমার কানে 1জোড়া দুল আছে ওইগুলো দিয়ে দিব তাও ফাহাদের সাথে আমি কিছুতেই যাবো না।।।
হটাৎ ফাহাদ পিছন থেকে আমার হাত ধরে ওর সামনে দাঁড় করলো
ফাহাদ: কি ব্যাপার ঐদিকে কোথায় যাচ্ছ? গাড়িতে উঠ
আমি ওর হাতের দিকে তাকিয়ে ওর হাত এক ঝটকায় সরিয়ে দিলাম
আমি: অনেক দয়া করছেন আর না প্লিজ।। আমি একাই যেতে পারবো আমাকে যেতে দিন
ফাহাদ: আচ্ছা শান্ত হও প্লিজ।। (ও মাথায় হাত দিয়ে মাথা ঠান্ডা করার চেষ্টা করলো) আমি সরি আমার কথা টা এইভাবে বলা উচিত হয় নি।। আমি সরি আয়েশা আমার ভুল হয়েছে প্লিজ ফরগিভ মী প্লিজ
আমি: কিসের ভুল আর কিসের ক্ষমা? আপনি যা করেছেন একদম ঠিক করেছেন।।
ফাহাদ: না আমি অনেক বড় অন্যায় করেছি আর কখনো এমন ভুল হবেনা। একবার জাস্ট একবার, প্রথম এবং শেষ বারের মতো মাফ করে দাও প্লিজ
আমি কাদতে কাদতে রাস্তার ঘাসের উপর বসে পড়েছি।।
আমি: কি এমন হয়েছিলো ফাহাদ যার জন্য আপনি আমাকে রাস্তায় এইগুলো বলা দরকার হলো? আপনি তো বলে মাফ পেয়ে গেছেন কিন্ত আমি তো নিজের কাছে অপরাধী হয়ে গেলাম।।
ফাহাদ: (আমার সামনে বসে আমার চোখের পানি মুছে আমাকে জড়িয়ে ধরলো) মাফ করে দে বউ আর কখনো বলবো না, এইজন্য যা শাস্তি দেয়ার দে তাও আমাকে ছেড়ে যাবার কথা বলিস না, আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না।। কষ্ট করে এই বুড়া জামাইকে সহ্য করিস।।
আমিও ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম
আমি: ভালোবাসি
ফাহাদ: (আমার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমার দিকে তাকিয়ে বলল) কি বললে আবার বল
আমি: ভালোবাসি
ফাহাদ: আগেইন
আমি: ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি
ফাহাদ: (আমাকে আবার জড়িয়ে ধরলো এমন ভাবে ধরেছে যেন ওর বুকের ভিতর নিয়ে চলে যাবে) সত্যি আয়েশা আমি খুব খুব খুব খুশি।। এখন মনে হচ্ছে আমি কোনো ভুল করিনি, এই কথা গুলো না বললে তোমার মুখ থেকে ভালোবাসি কথা টা শুনতে পারতাম কি না সন্দেহ।।
আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে উঠে দাড়ালাম
আমি: ঠিক করেছেন তাইনা? আমি কতটা কষ্ট পেয়েছি ভেবেছেন? ভাবেন নি, ভাবলে তো বলতে পারতেন না।। আমি আর আপনার সাথে কথা বলবো না আপনি খুব খারাপ খুব।।
আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম, ও আবার কাধে হাত রেখে ওর সামনে দাঁড় করলো
ফাহাদ: আর তো কিছুক্ষন এখন রাগ করে থাকলে পরে কিন্তু আফসোস করবা, বলবা ইস কেন তখন রাগ দেখলাম একটু ভালো করে কথা বললেই হতো আরো কত কি ভাববে।।
আমি: মুটেও না, কোনো আফসোস করতাম না
ফাহাদ: হাগ কর
আমি: ওর দিকে তাকালাম
ফাহাদ: একটা টাইট হাগ কর
আমি: আমি একটু আগের ঘটনা ভুলিনি
ফাহাদ: আচ্ছা জমিয়ে রাখ নেক্ট আসলে রাগ ভাঙিয়ে দিব।।
আমি: দরকার নেই
ফাহাদ: আমার আছে
আমি: আমার নেই
ফাহাদ: আছে
আমি: নেই
ফাহাদ: বার বার ভুল করবো আর ক্ষমা চাইবো আর তুমি ক্ষমা করবা বুঝছ?
আমি: আমি এত মহান না
ফাহাদ: আমার সাথে থাকতে থাকতে হয়ে যাবে
আমি: থাকবো না আপনার সাথে
ফাহাদ: বেধে রাখব।। অনেক কথা হইসে একবার জড়িয়ে ধর প্লিজ যাওয়ার আগে তোমার শরীরের স্মেল টা নিয়ে যেতে চাই।।
আমি: (ওকে জড়িয়ে ধরলাম হালকা করে কিন্তু ও এত শক্ত করে ধরেছে ও না চাইলে ছুটার উপায় নাই)
হয়েছে ছাড়েন রাস্তা এটা।। ও আমার কানের কাছে এসে বলল ভালোবাসি পিচ্ছি বউ।।
আমি: হুমম
ফাহাদ: বল
আমি: আমিও
ফাহাদ: আমিও কি? সুন্দর করে বল ফাহাদ আমি তোমাকে ভালোবাসি
আমি: ছাড়েন তো
ফাহাদ: ছেড়ে দিব আগে বল
আমি: ভালোবাসি আমার উকিলবাবুকে।।
ও আমায় ছেড়ে আমার কপালে কিস করে আমার হাত ধরে যেতে যেতে বললো
ফাহাদ: অনেক রাগ দেখা যায় আমার বউএর
আমি: এমন কথা শুনলে কার মাথা ঠিক থাকে
ফাহাদ: হইসে এখন চলেন
গাড়ির কাছে চলে আসছি, ও গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট আমি ওর কাঁধে হাত রেখে বসলাম।।
ফাহাদ: আর বেশি দিন কষ্ট করতে হবেনা
আমি: কিসের?
ফাহাদ: এইযে এইভাবে বাইকে করে যাওয়া লাগবে না আমি গাড়ি কিনছি জানুয়ারিতে, এর পর থেকে কোথাও গেলে আমাকে ফোন দিলেই যেখানে ইচ্ছা সেখানে নিয়ে চলে যাব।। আমার অনেক দিনের শখ লং ড্রাইভে যাবো ফার্স্ট তোমাকে নিয়েই যাবো
আমি: আমার গাড়িতে দম বন্ধ লাগে। আপনি বরং বাইক টা আমাকে নিয়ে ঘুরার জন্য রেখে দিয়েন।।
ফাহাদ: বমি টমি কর নাকি?
আমি: ট্যাবলেট খেলে নাও করতে পারি
ফাহাদ: (শুকনো মুখ করে বললো) ও
1ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম নেত্রকোনা।। ও আমার হাত ধরে উল্টা হাতে চুমু খেল
ফাহাদ: ভালো থেকো আর আমাকেও ভালো রেখো
আমি: হুমম বলে সরে দাড়ালাম
ও মার ফোন দিয়ে বললো ফারিয়াকে রাস্তায় পাঠাতে।।
ফারিয়া আসা পর্যন্ত ফাহাদ আমাকে ওর সাথে থাকতে বললো।। কিছুটা দুর থেকে দেখা যাচ্ছে ফারিয়া হাতে ব্যাগ নিয়ে আসছে।। ফারিয়া ফাহাদের কাছে ব্যাগ দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো
ফারিয়া: আসি ভাবী ভালো থেকো
আমি: তুমিও অনেক ভাল থেকো।।
চলবে