বাঁধনহীন সেই বাঁধন অকারণ পর্ব-০১

0
944

#বাঁধনহীন_সেই_বাঁধন_অকারণ|১|
#শার্লিন_হাসান

“পরীক্ষার হলে শীস বাজানোর অপরাধে সবার ক্রাশ, আমার ও ক্রাশ রুদ্র স্যার আমায় চ’ড় মারে। অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার জন্য আমি নিজে মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।”
তখন রুদ্র স্যার গলা ছেড়ে বলেন,

-বে’য়াদব মেয়ে পারিবারিক শিক্ষার অভাব আছে? শিক্ষক হই আপনার। পরীক্ষার হলে এসেছেন বখাটেপনা করতে?

তার কথা কানে শ্রবণ করতে পারলাম না। মাথা ভনভন করে ঘুরছে এই বুঝি পড়ে গেলাম আমি। সত্যি তাই হলো। মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যেতে নিবো ঠিক তখনি রুদ্র স্যার এসে আমার হাত ধরে নিলেন। হল ডিউটিতে থাকা আরেকজন টিচার গিয়ে একজন মেয়ে দপ্তরিকে ডেকে নিয়ে আসলো।

ধরাধরি করে মেঘকে নিয়ে একটা রুমে যাওয়া হলো। যেখানে দুইটা বড় টুল একাসাথে করে তাকে বসানো হলো। পানির বোতল এনে মেঘকে পানি পান করানো হলো। কিছুক্ষণ পর মেঘ ঠিক হয়ে বসে। মাথাটা প্রচুর ধরে আছে তার। ঠিক তখনি একটা পরিচিত কন্ঠ কানে ভেসে আসলো। এতোক্ষণ চিন্তিত ছিলো রুদ্র। বুঝতে পারেনি চড়ের ঠেলায় মেঘ মাথা ঘুরে পরে যাবে। কেউই বুঝতে পারেনি বিষয়টা অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ঘটে গেছে। অবশ্য এতে মেঘের ও দোষ ছিলো। যা পেরেছে তাই লিখেছে। পাশ মার্ক উঠিয়ে তার এখন এক্সাম শেষ বসে,বসে কলম নিয়ে খোঁচাখুঁচি করছে। কখনো নিজের হাতের আঙুল দেখছে এরই মাঝে মুখ ফসকে শিস বাজিয়ে ফেলেছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো এতো স্টুডেন্টদের ভেতরে সে যে শিসটা বাজিয়েছে সেটা রুদ্র কীভাবে দেখলো? না ভাই এই লোক পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য। কলেজে এসেছে দুইমাস হবে। এখন তাদের ক্লাস টেস্ট চলছে। কয়দিন পর ইয়ার ফাইনাল শুরু হবে। আজকে লাস্ট এক্সাম তাও এক্সামের লাস্ট মূহুর্তে এসে অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনা।

-যে সময়টা এখানে ব্যায় হয়েছে সে সময়টা আপনাকে এক্সট্রা দেওয়া হবে এক্সাম দেওয়ার জন্য।

গম্ভীর কণ্ঠে বললো রুদ্র। রুদ্রের কথায় মেঘ চোখ তুলে তাকায়। কাঠকাঠ গলায় উত্তর দেয়,

-কিন্তু আমি খাতায় লিখবো টা কী? আমার লিখা শেষ হয়ে গেছে এখন শুধু এক্সট্রা সময় লস করে লাভ নেই। আমি কিছুই পারি না। যা লিখেছি তাতে যদি টেনেটুনে পাশটা মিলে। আর পাশ না করলে ও সমস্যা নেই। সামান্য ক্লাস টেস্টই তো।

মেঘের কথায় রুদ্র নিজের কপালে নিজে চাপড় মারতে মন চাইছে। আজকে তাদের লাস্ট কেমিস্ট্রি এক্সাম ছিলো যেটা রুদ্র নিজে হল ডিউটি দিতে এসেছে। দুইমাসে যা পড়িয়েছে তার মতে ব্যাকবেঞ্চার স্টুডেন্ট ও পাশ করে আসতে পারবে। কিন্তু সে তো কড়া গার্ড দেয়।

মেঘ উঠে দাঁড়াতে রুদ্র বলে,

-তাহলে আপনার খাতা জমা নিয়ে নিবো ? ঘন্টা পড়ে গেছে অলরেডি।

মেঘ মাথা নাড়িয়ে বেড়িয়ে আসে। হল থেকে বেড়িয়ে ক্যান্টিনে গিয়ে কোল্ড ড্রিং কিনে বাড়ীতে চলে আসে। আজকের ঘটনা সবটা তার মাথার উপর দিয়ে গেলো। সবচেয়ে বেশী আফসোস করছে রুদ্র হাতে চ’ড়টা খেয়ে ও নিলো? এই গম্ভীর মানব গলা ছেড়ে চিৎকার করেছে। উফফ ভাবা যায়? কিন্তু আমার গাল? মেঘের কান্না পাচ্ছে। সবার সামনে ইশশ! তার এতদিনের সন্মান শেষ ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে এই রুদ্র। তার মনে হচ্ছে এটা ক্রাশ না ছাই। জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল রুদ্রর উপর ক্রাশ খাওয়া।

জারিফ আনান চৌধুরী রুদ্র। এই কলেজের প্রফেসার। দুইমাস হয়েছে জয়েন করেছে। তবে ছেলেটার সাথে তেমন কথা হয়নি মেঘের। গম্ভীর প্রজাতির মানব সে। একবারে স্বল্পভাষী।
দুই মাসে রুদ্রর সামনেই যত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হয় মেঘ। এই তো একবার কম্পিউটার ল্যাবের সামনে রুদ্র ল্যাব থেকে বের হচ্ছিলো দরজার সামনে আসতে পেছন থেকে মেঘকে তার ফ্রেন্ড লিমা তড়িঘড়ি ভেতরে প্রবেশের জন্য ধাক্কা মারে। অল্পের জন্য রুদ্রর গায়ের উপর পড়েনি।

তার কয়েকদিন পর লাইব্রেরিতে বই আনার জন্য গিয়েছিলো মেঘ। সেখানে আরো কয়েকজন ছিলো তার ডিপার্টমেন্টের। টেবিলের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গিয়েছিলো ফ্লোরে। তার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো রুদ্র। উঠে দাঁড়াতে দেখে জু’তা ছিঁড়ে গেছে।

আরেকদিন বৃষ্টি হয়েছিলো। বৃষ্টির জন্য কিছুটা লেট হয়ে যায় কলেজ আসতে। তখন ও ক্লাস শুরু হয়নি বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। রুদ্র পাশের বিল্ডিংয়ের অফিস কক্ষ থেকে কলেজের বিল্ডিংয়ে যাওয়ার জন্য নেমেছিলো। তখন আবার কলেজের ভেতরে প্রবশ করার সময় কাছাকাছি জায়গায় এসে আচাড় খেয়ে পড়ে যায় মেঘ। সোটাও রুদ্রর সামনে। সেদিন আর ক্লাস করেনি মেঘ। কর্দমাক্ত কলেজড্রেস নিয়ে আবার বাড়ী চলে গেছে।

ভাবনার মাঝে তালুকদার বাড়ীতে এসে পৌঁছায় মেঘ। তাড়াতাড়ি ভাড়াটা দিয়ে এক দৌড়ে ভেতরে চলে যায় মেঘ। কলমবক্স সব ছুঁড়ে, কলেজের ক্রসবেল্ট ছেড়ে নাচতে,নাচতে পাশের রুমে যায়। যেখানে তার কাজিন মহল ব্যস্ত। আজকে রাতের হলুদ সন্ধ্যার জন্য। মারশিয়া জাহান মেঘের বড় ভাই মেহরাব তালুকদারের বিয়ে। সন্ধ্যর দিকে তারা সবাই ঢালা নিয়ে চৌধুরী বাড়ীতে যাবে। সেসব গোছগাছ গতকাল রাত্রেই তার কাজিনমহল করে নিয়েছে। আজকে সন্ধ্যায় তারা যাবে ঢালা দিতে।

******

চৌধুরী বাড়ীতে রুদ্র এসেছে বিকেলের দিকে। তার বোনের বিয়ের জন্য। এখানে রুদ্র খুব কমই আসে। সে তার নতুন বাড়ীতে থাকে একটা ফ্লাটে। রাখিকে বলেছে তার সাথে চলে যেতে। রাখির দাদীন কাকীমারা দেয়নি তাকে। একবারে বিয়ে দিয়ে তারপর যেখানে খুশি যাবে। রুদ্র ও আর না করেনি। মা ছাড়া মেয়ে থাকুক না কারের আদরে। সে তো ছোটবেলা থেকেই পাথর। নিজেকে সামলে নিয়ে গড়ে উঠেছে।

চৌধুরী বাড়ীর মেয়ের বিয়ে বলা কথা। পুরো বাড়ী ডেকোরেশন করা হয়েছে। যদিও বা বিয়েতে রুদ্রর বাবা থাকবে না। তাতে ও কোন আফসোস নেই রুদ্রের। শুধু ঘৃণা এবং অভিযোগের পাল্লাটা দিনদিন ভারী হচ্ছে তার। ছেলে মানুষ কেঁদে, কেঁদে অভিযোগ তো করতে পারবে না। কাঁদতে পারলেই হয়ত বা বুকে পুষে রাখা পাথরটার ওজন কমে যেতো। ছেলেদের কান্না করা বারণ এই সত্যিটাই নিজেকে পাথর গড়ে তোলার আসল কারণ।

মেঘ তার দুই কাজিন সাথে আছে তার বেস্টফ্রেন্ড হৃদ। মেয়ে বেস্টফ্রেন্ড লিমা। কাজিন মায়া,মোহনা।
তারা ঢালা নিয়ে চৌধুরী বাড়ীর উদ্দেশ্য রওনা হয়।
বিকেল ছয়টা বাজে চৌধুরী বাড়ীতে তারা পৌঁছায়। ঢালা দিয়ে রাখির সাথে দেখা করে নেয় মেঘ। হালকা নাস্তা করে তড়িঘড়ি তারা আবার চলে আসে। তাদের সাজতে হবে।

মেঘরা যাওয়ার পরপরই রুদ্রের গাড়ী ঢুকে চৌধুরী বাড়ীর গেট দিয়ে। একটু দরকারে সে বাইরে গিয়েছিলো। তার ভালোবাসার মানুষটাকে (আলিশা নূর) একনজর দেখার জন্য ছুটে গিয়েছিলো রুদ্র। রাখির বিয়ের পরপরই সে নিজেও বিয়েটা করে নিবে।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাজতে বসেছে মেঘ তার কাজিনদের সাথে। ছেলেদের হলুদ অনুষ্ঠান ছেলের সাজতে ওতোটা লেট হয়না যতটা না তার আত্মীয়স্বজনদের হয়। তবে মেহরাব তালুকদার বেশ ব্যস্ত। একজন স্কুল টিচার মেহরাব। তার কলিগদের সাথে কথা বলছে সে। তাঁদের আপ্যায়নে কোন ত্রুটি রাখছে না। মেহরাবের মা আফরোজা বেগম নিজেও অনেক ব্যস্ত। মহীউদ্দীন তালুকদার তার পুরোনো কয়েকজন বন্ধুর সাথে কথা বলায় ব্যস্ত। আত্মীয়স্বজন দিয়ে বাড়ী পুরো ভরপুর।

মেঘ সাজছে। খুব সুন্দর ভাবে সাজছে সে। তবে একজনের কথা তার ভীষণ ভাবে মনে পড়ছে। সে আর কেউ না তার একমাত্র ক্রাশ জারিফ আনান চৌধুরী রুদ্র। মেঘের ভাবনার মাঝে হৃদ আসে। মজারচ্ছলে বলে,

-ওই হোয়াইট মুরগির জন্য ভাবছিস? আরে ইয়ার এটা উইলোর অনুষ্ঠান মজা করবি,ডান্স করবি তা না কোথাকার কাকে নিয়ে ভাবছিস? তোকে নিয়ে তো উনি একবার ও ভাবছে না।

-পটলের বাচ্চা পটল আমি কখন বললাম রুদ্রকে থুড়ি রুদ্র স্যারকে নিয়ে ভাবছি? তোর কাজই হলো এনাকে নিয়ে আমায় পচানো। আর উনি মুরগি না তোদের সবার জিজু বুঝেছিস?

-এহ্হ জিজু! বেয়াদব গার্ল টিচারকে কীভাবে জিজু ডাকবো? অবশ্য আংকেল ডাকলে ডাকতে পারি তাকে নট ব্রাদার। ইউ নো টিচার ফাদারের সমান।

-ধুর অন্য সব টিচার ফাদারের সমান হলেও উনি কিন্তু ব্রাদারের মতো। দোস্ত মা*ল টা এখনো বিয়ে করেনি এর মানে কী বুঝেছিস?

হৃদের কাঁধে হাত রেখে কথাটা বলে মেঘ। মেঘের প্রশ্নে হৃদ বলে,
-এর মানে হোয়াট? বুঝিয়ে বল?

-বিয়ে করেনি আমার জন্য। বুঝেছিস এবার?

হৃদের গালে থাপ্পড় দেয় মেঘ। তখন হৃদ তাকে মুখ বাকিয়ে বলে,
-হু আর ইউ আলুর খোসা? বাঙ্গির ছিলকা সর এন্তে। তোরে তো হোয়াইট মুরগি চিনে নট।

-আরে চিনে। জন্মের আগে থেকে। শোন পটল রুদ্র জাতির আংকেল,ফাদার,টিচার যাই হোক তোদের কিন্তু জিজু। বুঝেছিস?

-বাঙ্গির বাচ্চা বাঙ্গি সর এন্তে। এতো পারুম না ফাদারকে ব্রাদার ডাকতে।

– যা হা*লা দূরে গিয়ে মর। তোর কাছে কিছু বলেও শান্তি পাই না। শুধু,শুধু এতোক্ষণ মুখ খরচ করলাম।

হৃদকে ধাক্কা দিয়ে মেঘ চলে আসে। তাঁদের এখানে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।

********

চৌধুরী বাড়ীতে এসে রুদ্রকে দেখে কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায় মেঘ। পরেই মনে পড়ে রুদ্রর দেওয়া চড়ের কথা। আপনাআপনি হাতটা গালে চলে যায় মেঘের। মেঘকে দেখে রুদ্র ব্রু কুঁচকায়। তখন মেঘ নেচে নেচে রুদ্রর সামনে আগ বাড়িয়ে কথা বলতে যাবে লিমা এসে তার হাত ধরে নেয়। তার সাথে হৃদ ও আছে। মেঘ মেকি হাসি টেনে সামনে তাকায়। রুদ্রকে দেখে লিমা,হৃদ সালাম দেয়। কিন্তু মেঘ চুপচাপ যখন সে নিজে সালাম দিতে যাবে তখন আবার তার মাঝে পোড়ন কেটে লিমা বলে,

-স্যার রাখি আপু আপনার কী হয়?

-আমার বোন। আর মেহরাব আমার বন্ধু ওর সাথে রাখির বিয়েটা হচ্ছে। বাট আপনারা এখানে?

-ওই আসলে…”

মেঘের কথার মাঝে হৃদ পোড়ন কেটে বলে,

-মেঘের ভাই মেহরাব তালুকদার। আর আমরা তো মেঘের বন্ধু। সেজন্য! আপনি তো স্যার মানুষ ফাদারের সমতূল্য এখন আপনার বোনকে ফুফি ডাকলে মনে হয় বেটার হবে?

-ফুফি ডাকবি কেন? তুই আমার বন্ধু। রুদ্র স্যারের সাথে পরিচয়ের আগে তুই আমার বন্ধু। এছাড়া মেহরাব ভাই যাকেই বিয়ে করতো ভাবি ডাকতি। এখন রুদ্র স্যারের বোনকে বিয়ে করেছে সেজন্য ভাবি ডাকবি। তো কী দাঁড়ায় সম্পর্কটা বুঝেছিস?

-কী দাঁড়ায়?

গম্ভীর কণ্ঠে বললো রুদ্র। রুদ্রর কন্ঠ শোনে হাসি থামিয়ে নেয় মেঘ। চট জলদি বলে উঠে,

-মানে দাঁড়ায় আপনি আমাদের বেয়াই মানে ভাই. নট ফাদারের সমতূল্য হ্যানত্যান। এখন থেকে আপনি আমাদের ভাই।

-মেঘের বাচ্চা ভুলে গেলি স্যার হয় স্যার।

-তুই চুপ থাক পটলের বাচ্চা পটল। এটা বিয়ে বাড়ী কলেজ না। কলেজ হোক আর যাই হোক জারিফ আনান চৌধুরী রুদ্র আমার ভাই-ই হয়। এখন হিসাবটা এটাই দাঁড়ায় যে….!!

-কী দাঁড়ায়?

আবারো উত্তর দেয় রুদ্র। মেঘ হাত ঝেড়ে বলে,

-বেয়াই আর বেয়াইন সো যে যাকে যেভাবে পারে পচাবে।

-জাস্ট শাট আপ। আপনি যেটা ভাবার ভাবতে পারেন আমি আপনাকে স্টুডেন্টের চোখেই দেখি এর বাইরে আর কিছু না।

-ধুর স্যার আপনি সম্পর্কের মূল্য বুঝেন না। তাহলে শুনুন আমার থেকে…”

– ডোন্ট ওয়ান্না টক।
রাগ দেখিয়ে কথাটা বলে রুদ্র। আর একমুহূর্ত ও দাঁড়ায়নি সে চলে যায়। রুদ্র যেতে হৃদ ও অন্য দিকে হাঁটা ধরবে মেঘ তাকে থামিয়ে দেয়।

-পটলের বাচ্চা কই যাচ্ছিস? স্যার যে আমায় অপমান করলো। তোরে কে বলছে ফাদার ব্রাদারের কথা তুলতি? রাখি আমার ভাবী হয় ভাবী ফুফি না। আর রুদ্র এখন আমার বেয়াই।

-সেজন্য বেয়াই পাত্তা দেয় না। গিয়ে দেখ তোর বেয়াই তলে,তলে কয়টা টেম্পু চালিয়েছে।

কথাটা বলে হৃদ সরে যায়। মেঘ সেদিকে তাকিয়ে বলে,

-এ্যা টেম্পু?

মেহরাব রাখির বিয়ে পড়ানো হয়। দুটি মানুষ একটা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়। খাওয়া দাওয়ার পালা শেষ করে বিদায়ের পালা। রুদ্র নিজে সবটা সামলানোর চেষ্টা করছে। যদিও তার দুই চাচা, কাজিনরা আছে।

এরই মাঝে মেঘের সাথে পরিচয় হয় আরেহী এবং শ্রাবণের। তারা রুদ্র এবং রাখির কাজিন। শ্রাবণ বেশী ভাব জমাতে চেয়েছিলো মেঘ পাত্তা দেয়নি।
বিয়ের কার্যক্রম শেষ হতে সবাই তালুকদার বাড়ীতে রওনা দেয়।

নতুন বউ তালুকদার বাড়ীতে আসতে কিছু নিয়ম কানুন ছিলো পালন হয়েছে।
আজকের দিনটা মেঘের কোনরকম গেছে। বেশী পন্ডিতি করতে গিয়েছিলো শুরুতে সেজন্য রুদ্র তাকে পাত্তাই দেয়নি।
মেঘ ভেবে পায়না রুদ্রর এতো ইগো কেন? এতো বেশী লয়্যাল দেখাতে যায় কেন? আচ্ছা রুদ্রর কোন গার্লফ্রেন্ড আছে?
না হতে পারে না। আমার সব ভাবনা চিন্তা পাগলামী সব এতোটাই তুচ্ছতাচ্ছিল্য? না রুদ্রর কেউ নেই সে আমার মতোই সিঙ্গেল।

(শব্দসংখ্যা-১৭০১)

#চলবে