ফুল শর্য্যায় ছ্যাকা পর্ব-১২

0
1035

গল্পঃ #ফুল_শর্য্যায়_ছ্যাকা
লেখকঃ #রাইসার_আব্বু
#পর্ব_১২
— আমি বিল দেওয়ার জন্য যখনি, ক্যাশ কাউন্টারে যাবো।তখনি , হোটেলের যে রুমটাতে পার্টি, হচ্ছে সে রুম থেকে কথার কন্ঠ ভেসে আসছে।অনিচ্ছা সত্বেও, রুমের ভেতর যা শুনলাম তা মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না, কথা বলতেছে ” এইযে আপনারা যাকে, দেখছেন”, মিঃ সজিব, মুখোশের আড়ালে একজন রাসকেল, মেয়েদের সাথে প্রেম করে তাদের জীবন নষ্ট করাই এর পেশা।একমাএ এই নর্দমার কীটের জন্য, আমি পবিএ ভালবাসাকে অবহেলা করেছি।আমার স্বামীকে কষ্ট দিয়েছি, জানিনা কখনো সে ক্ষমা করবেনা, ।”

— সুইট হার্ট Are you ok. ( সজিব)

— হ্যাঁ , আমি ঠিক আছি এখন। ঠিক তো তখন ছিলাম না, তোর মিথ্যা ভালবাসার মোহে পড়ে , “রাজকে, কতই না কষ্ট দিয়েছি, “।

—- “কি বলছো,, সুইর্ট হার্ট। এই বলে সজিব, কথার গালে হাত রাখতে গেলো, ”

— ঠাস! ঠাস! don.t touch me, Rascel, তোর মতো লুচ্চার, ইন্দুর গন্ডায় লজ্জা করেনা বউ রেখে অন্য মেয়ের সাথে প্রেমের নাটক করিস! ঘরে ফুটফুটে একটা রাজকন্যার মতো, মেয়ে রেখে লুচ্চামি করতে লজ্জা করেনা,।এই বলে ঠাস! ঠাস! করে আরো দুইটা থাপ্পর দিলো।

— রুমে পিনপিনে নীরবতা বিরাজ করছে! সবাই নিঃসতব্দ হয়ে কথায় দিকে তাকিয়ে আছে।

— কি বলছো এই সব, “কথা,পাগল হলে নাকি, তুমি ভুল ভাবছো আমাকে, আমি বিয়ে করিনি,। আমি শুধু তোমায় ভালবাসি। (সজিব)

— ছিঃ লজ্জা করেনা, নর্দমার কীর্ট। বউ রেখে, রাজকন্যার মতো একটা রেখে এমন মিথ্যা কথা বলতে।

— অপর্ণা, রিচি মামনীকে নিয়ে ভেতরে আয়!

— বাহিরে থেকে কে যেনো রুমে ডুকছে,, সবাই দরজায় দিকে তাকিয়ে আছে। ঠক্ ঠক্ শব্দ করে ছোট্ট রাজকন্যার মতো মেয়ে মায়ের সাথে হোটেল রুমে আসতেই! সজিব ভ্রু কুচঁকে তাকালো অর্পণার দিকে। সজিব ক্ষানিকটা বিস্মিত হয়ে বলেই ফেললো! অর্পণা তোমরা এখানে?

— অপর্ণা কিছু বলতে যাবে তখনি, ” কথা, বলতে লাগলো চিনতে পেয়েছেন তাহলে? অর্পণাকেও তো আপনি টাকার লোভে বিয়ে করেছেন। লজ্জা করেনা, তোর তুই ও তো একটা মায়ের গর্ভে জন্ম নিয়েছিস। এখনো সময় আছে, নিজেকে শুধরে নে! আর কখনো তোর মতো লুচ্চাকে যেনো আমার সামনে না দেখি!

— জানিনা, ” রাজ আমায় ক্ষমা করবে কিনা, তবুও আমার সাম্বীর সাথে কাটানো সেই স্মতিগুলো নিয়েই বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিবো! যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন,আমার স্বামীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে যাবো। যার বুকেই থাকুক, সে যেনো ভালো থাকে। “সজিব,কখনো অর্পণাকে কষ্ট দিসনা! তোর কাছে অনুরোধ। কথাগুলো ” কথা, বলে শেষ করতে না করতেই,দেখি সবাই হাততালি দিচ্ছে।

— কথা চোখ মুছতে মুঁছতে হোটেল রুম থেকে বের হতেই কার সাথে যেনো ধাক্কা লাগলো !

— কথা, ধাক্কা খেয়ে মাথাটা তুলে তাকাতেই, কথার চোখে অশ্রুকণা এসে বিড় করে। কারণ, ধাক্কাটা রাজের সাথে লাগে, কথা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো, আমি তোমায় দেখতে পারিনি। ব্যথা পেয়েছো, আমি তো ক্ষারাপ তাই না, আমার স্পর্শ পাপ। যদি ব্যথা পেয়ে থাকে ক্ষমা করে দিয়ে!

— রাজ, মাথাটা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলো,!

— রাজ, তোমার স্মৃতিগুলো আমায় প্রতিনিয়ত কষ্ট দিচ্ছে। আমি একমূহুতের জন্য শান্তিতে থাকতে পারছিনা! তুমি যাওয়ার পর একটি রাত শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি।পারিনি দুটি আখি এক করতে। আমার প্রতিটা নিঃশ্বাস শুধু তোমার নাম যপে। তোমাকে ছাড়া,আমি মরেই যাবো। আমি আর পারছিনা, তুমি আমায় গলা টিপে হত্যা করো, নইলে তোমার পায়ের নিচে একটু জায়গা দাও। আমি কখনো, তোমার কাছে স্ত্রীর অধিকার চাইবো না। চাকরানী করে হলেও তোমার ঘরে একটু ঠাই দাও। তুমি অপরিচিতাকে বিয়ে করো,আমি কিছুই বলবোনা, তাও তোমার থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ো না!

— কথায়, এমন কথা শুনে মনে হচ্ছে কলিজায় টুকরাটাকে বুকে জড়িয়ে নেই,। কিন্তু না একটা এতিম, ছোটলোক কখনো, কথার যোগ্য না,।কথার দিকে চেয়ে দেখি কাদঁছে।

— তাই ভাবলাম এখানে থাকলে নিজেকে ঠিক রাখতে পারবো না! তাই যেই পিছন ফিরতে যাবে ঠিক তখনি,দেখি, অপরিচিতা, আর রাইসা।

— রাইসাকে কুলে নিয়ে, অপরিচিতাকে বললাম চলো গাড়িতে, আর তোমরা কেনো আসছো,? তোমাদের না গাড়িতে বসতে বলছিলাম।

! – রাজ তোমার লেট হচ্ছিল তাই!

— আচ্ছা চলো! এদিকে গাড়িতে উঠতে সময় পিছন দিকে তাকাতেই বুকটা কেঁপে ওঠলো, কথা এখনো দাঁড়িয়ে কাঁদছে। অনিচ্ছা সত্বেও গাড়িতে ওঠলাম।চোখের কোণে অস্রুকণা এসে বিড় করছে। মনে মনে ভাবছি! কথার সাথে এমনটা করা কি ঠিক হচ্ছে!

— বাসায় আসতেই দেখি ফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বাজছে।

— তাই ফোনটা তুলতেইন, দোস্ত পাখিকে আমাদের বাসায় নিয়ে এসে পড়েছি। পাখির তো কেউ নেই! পাখি তোকে ফোন দিয়ে বলতে বললো! (রিসান)

– আচ্ছা দোস্ত, পাখি তোর কাছেই নিরাপদ থাকবে! আর মা তো আছেই!

– হুম! মা’ই পাখিকে নিয়ে যেতে বলছে! আর শুন জিসান! মা তোকে আসতে বলেছে কতদিন তোকে দেখেনা!

— আচ্ছা দোস্ত! আসবো, মাকে বলিস পায়েস রান্না করতে!

— আচ্ছা! ওকে এখন রাখি।

— রিসান! রাজকে বলছো? (পাখি)

— হুম বলেছ!

— ও!! ভালো।

— রিসান! বাসায় গিয়ে দরজা লক করতেই!

— রিসানের মা!! দরজা খুলে পাখিকে দেখেই বলতে লাগলো ” রিসান, আমি তোর কেউ না তুই পারলি না জানিয়ে, বিয়ে করে নিয়ে আসতে? আমি কি মরে গেছি।

— মা! কি সব বলছো?

—-তোর বাবা মারা যাওয়ার পর কত কষ্ট করে তোকে লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ করেছি! এই মূল্য এভাবে দিলি?

— মা, আমি বিয়ে করিনি!

— তাহলে, এই মেয়ে কে?

— মা, বলতে দিবে তো কে? এর আগেই তুমি কি সব বলছো? (রিসান)

— আচ্ছা বল!

—- ভেতরে আসবো না এখানই থাকবো?

— আয় বাবা,ভেতরে আয়

– মা, এই হচ্ছে পাখি, আমাদের পাশের বাসায় থাকতো!

— ওমা! পাখিকে কই পাইলি! আর পাখি মা, তোর মাথার বেন্ডেজ কেনো?

— রিসান! তোর কি হয়েছে বাবা! তোর হাতেও ব্যান্ডেজ। আল্লাহ আমার বাবাটার কি হয়েছে। রিসান বাবা, বলছিস না কেনো কি হয়েছে?

— মা, একসেডেন্ট হয়েছিল ছোট্ট একটা, মা চিন্তা করোনা! তোমার দোয়াতে কিছু হয়নি!

— পাখি! মা কাদঁছে কেনো?

— আন্টি আমার মা তো আগেই মরে গিয়েছে। আর কিছুদিন আগের বাবাটাও মারা গিয়েছে।

— কে বলেছে, তোর মা মরে গিয়েছে! আমি না তোর মা আমি কি মরে গেছি?

– পাখি, মা মা বলে রিসানের মাকে জড়িয়ে ধরছে।আজ পাখির অনেক শান্তি লাগছে, অনেকদিন পর মা ডেকে আত্মাটা শান্ত করলো।

— রিসান চেয়ে চেয়ে দেখছে! আর ভাবছে পাখি যদি সারাজীবন এ বাড়িতে থাকতে তাহলে কতইনা ভালো হতো!

— এদিকে রাজের ঘুম আসছেনা চোখ বন্ধ করলেো কথার মুখটা ভেসে ওঠছে। রাজ মনে মনে ভাবছে, কথা কি এখনো রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। এ কথা ভেবে,, মামা – মামীকে সবকিছু বললো।

— রাজ বাবা তুমি যা করছো ঠিকই করছো, আমরা সবটা জেনেছি। তোমাকে অনুরোধ করার মতো কিছু নেই। আর হ্য বাবা আমরা যাচ্ছি দেখি অপরিচিতা এখনো রাস্তায় কিনা।( মামা)

— “মামা, একটা অনুরোধ করবো?

— হ্যাঁ করো! বাবা।

— মামা কথাকে আপনাদের বাসায় নিয়ে যাবেন, একা একা ফ্লাটে থাকে।

— আচ্ছা বাবা, অবশ্যই। তুমি এইসব নিয়ে আর চিন্তা করোনা। আর আমাদের, মেয়ের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তোমার সাথে যা হয়েছে তা ঠিক হয়নি। আমরা জেনে শুনে তোমার জীবনটা নরকে ঠেলে দিয়েছি!( মামা)

— কি বলছেন মামা! আপনারা আমার বাবা মায়ের মতো। ক্ষমা চেয়ে ছেলেকে ছোট করবেন না।

— সত্যি বাবা! তুমি একটা হীরের টুকরা ছেলে। আমার মেয়েটা, তোমাকে চিনতে ভুল করেছে! আচ্ছা বাবা দেখি কথা বাসায় না ওইখানেই আছে! এই বলে ফোনটা রেখে দেয়।

— রাজের ঘুম আসছে না, তাই তাড়াহুড়া করে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে হোটেলের কাছে গেতেই দেখি হোটেলের বাহিরে একটা মেয়ে, ছোট শিশুর মতো হাটুগেড়ে বসে আছে! গাড়ি থেকে নেমে এক’পা দু ‘পা করে কাছে যাওয়ার আগেই, আষাড়ের আকাশ গর্জন দিয়ে,বারি বর্ষণ নামলো বৃষ্টির সাথে হিমহিম বাতাস শরীলকে নাঁড়া দিচ্ছে।

— কথায় চেয়ে একটু দূরের দাঁড়িয়ে আছি, আজকের বৃষ্টির সাথে কিসের যেনো আওয়াজ হচ্ছে। আর পারছিনা কলিজাটা ফেটে যাচ্ছে! চোখ দিয়ে রক্তের মতো অশ্রু বেড়োতে লাগলো বৃষ্টির পানির সাথে চোখের পানি মিশে যাচ্ছে। আর পারছিনা হঠাৎ মামা আর মামী গাড়ি নিয়ে কথায় কাছে গেতেই,

— বাবা, আমি আর বাচতে চায়না, যে জীবনে আমার স্বামীকে পাবোনা এই জীবন রেখে লাভ কী বলো!

– কথা, মা আমার পাগলামি করিস না বাসায় চল।

— বাবা, আমাকে কষ্ট পেতে দাও, যতটা কষ্ট আমার স্বামীকে দিয়েছি তার থেকে বেশি কষ্ট পেতে চায়। আল্লাহ যেনো আমায় তার চেয়ে বেশি কষ্ট দেয়।

— এদিকে এইসব বলতে বলতে কথা সেন্স লেন্স হয়ে যায়। কথাকে মামা মামী বাসায় নিয়ে আসার মতো, কথায় সেন্স ফিরে।

— কথায় সেন্স ফিরতেই, রাজ বলে কেঁদে দিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরে। বাবা, মা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?

— মা আমাদের বাসায়।

— মা গাড়ি ঘুরাও, তোমাদের সাথে যেতে পারবোনা। আমার স্বামীর সাথে বিয়ের পর যে ফ্ল্যাটে ছিলাম ওই ফ্ল্যাটেই থাকতে চায়। আমার স্বামীর স্মতি গুলো নিয়েই বাঁচতে চাই এই বলে রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে, রাজের সার্ট শরীলের সাথে জড়িয়ে কান্না করতে লাগলো।

— এদিকে ভিঁজে কাপড়ে বাসায় আসতেই দেখি, আমার রুমের লাইট জ্বালানো। ডেন্স চেন্জ করে রুমে ডুকতেই শুনি, অপরিচিতা কান্না করছে আর রাইসাকে বুঝাচ্ছে,, মামনী তোমার বাবা তোমার জন্য আইসক্রিম আনতে গিয়েছে,।তুমি ঘুমিয়ে পড়ো,তোমার বাবা এসে পড়বে।

— না মামনী, আমার আইসক্রিম চায়না, আমি খেলনা চায়না, বাবাইকে এনে দাও। বাবাইকে তুমি কি বকা দিয়েছো? তুমি পঁচা আমার বাবাই ভালো। মম বাবাই কে এনে দাও বাবাই কে ছাড়া বাঁচবোনা। মম, বাবাই কে এনে দাও বাবাইকে এনে দাও বলছে।আর অপরিচিতা রাইসাকে বুকে নিয়ে কান্না করছে। মনে মনে ভাবছি, আল্লাহ এ কোন খেলায় ফেললে আমায় কি করবো আমি?

— মম, বাবাই এসেছে, এই বলে অপরিচিতায় বুক থেকে দৌঁড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো, বাবাই কোথায় গেয়েছিলে আমাকে ছেড়ে। আর কখনো কোথাও যেয়োনা তুমি গেলে আমি মরে যাবো বলে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।

— না মামনি,কোথাও যাবোনা, আমার রাজকন্যা টাকে ছেড়ে, চলো এখন ঘুমাবো।

— রাইসাকে বুকে নিয়ে শুয়ে আছি, মনে হচ্ছে শরীলে জ্বর আসবে, হঠাৎ কপালে কারো হাত আবিষ্কার করলাম।

— রাজ, তোমার গাঁ তো জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে।

— না, তুমি গিয়ে শুয়ে পড়ো। না রাজ, তোমাকে এভাবে রেখে।

— মম, তুমি ও আমাদের সাথে থাকো, (রাইসা)

— এদিকে, অপরিচিতা মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। চোখ দুটি লেগে আসছে শরীলে কাপঁনি দিয়ে জ্বর আসছে। অনেক শীত লাগছে হঠাৎ মনে হচ্ছে কেউ জড়িয়ে ধরে আছে শক্ত করে। কারো গরম শ্বাস প্রশ্বাস টের পাওয়া যাচ্ছে।
ঘুম, ঘুম চোখে তাকাতেই দেখি,অপরিচিতা!

— মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছেনা, শরীলে খুব জ্বর এসেছে অনুভব করতে পারছি।তবুও বলতে লাগলাম” অপরিচিতা একি করছো? প্লিজ ছেড়ে দাও আমায়।এদিকে অপরিচিতা আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে! শরীলটা কাঁপুনি দিয়ে উঠছে। মনে হচ্ছে অপরিচিতার গরম নিঃশ্বাস সব আমার মুখের উপর পড়ছে। অপরিচিতাকে সরাতে গিয়েও আর সরাতে পারলাম না! মনে হচ্ছে কারো ঠোঁঠ আমার ঠোঁঠের সাথে মিশে যাচ্ছে।এভাবে কিছুক্ষণ থাকার পর । মুখটা সরাতে গিয়েও সরাতে পারলাম না!মনে হচ্ছে আমি অন্য কোনো রাজ্যে আছি। তার পর আরকিছু মনে নেই।

— সেন্স ফিরতেই দেখি! হসপিটালের বেডে। ,মাথাটা নিয়ে নড়তে পারছিনা, ।

— আমি এখানে কেনো?

— রাজ, তুমি দু’দিন সেন্সলেন্স ছিলে। আল্লাহর কাছে অসংখ্য শুকরিয়া, যে তোমার সেন্স ফিরেছে। ( অপরিচিতা)

—হঠাৎ! কারো হাতের ছোঁয়া পেলাম। মিটি,মিটি নয়নে তাকাতেই দেখি, রাইসা।

— বাবাই, তুমি দু’দিন কথা বলোনি কেনো? জানো বাবাই মম অনেক কান্না করেছে তোমার জন্য। বাবাই, বলো আমাকে আর মমকে ছেড়ে কোথাও যাবেনা? আর মমকে কষ্ট দিয়োনা বাবাই, মম কান্না করলে আমার খুব কষ্ট হয়! ( রাইসা)

— এদিকে, অপরিচিতারর দিকে তাকাতেই দেখি! মাথা নিঁচু করে আছে, মনে হয় কিছু একটা বলবে ।

—“রাজ”সেদিন যা হয়েছে তার জন্য ক্ষমা প্রাথী । আর আমি যা করেছি সব তোমাকে বাঁচানোর জন্য করেছি। তোমার শরীল ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল কোনো কিছুতেই গরম হচ্ছিল না। তাই তোমাকে বাচাঁতে তোমাকে জড়িয়ে ধরা আর ঠোঁঠের সাথে ঠোঁঠ মিশানো ছাড়া কোনো উপায় ছিলোনা।আমি জানি অনেক বড় অপরাধ করেছি, প্লিজ ক্ষমা করে দিয়ো এছাড়া আমার হাতে আর কোনো অপশন ছিলো না।

–অাচ্ছা ঠিক আছে। তবে পরবর্তীতে এমন কিছু করোনা।

— অপরিচিতা মাথা নিচু করে অপরাধীর ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে। চোখ মুখ লজ্জায় লাল হয়ে আছে!

— বাবাই! বাসায় কখন যাবে? মম, ওই মম বাবাইকে কখন বাসায় নিয়ে যাবে? ( রাইসা)

— হুম, মামনি তোমার ডক্টর আঙ্কেলকে বলেই তোমার বাবাইকে বাসায় নিয়ে যাবো।

— এদিকে ডাক্তার কে বলে যখনই রিলিজ হয়ে ডাক্তারের রুম থেকে বের হচ্ছি, হঠাৎ মামা – মামীকে দেখে বুকটা কেঁপে ওঠে। সেদিন বৃষ্টিতে ভিজে কথার কিছু হয়নি তো?
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

— এইযে নার্স, উনারা এখানে কেনো?

— স্যার! উনাদের মেয়ে অসুস্হ তাই। (নার্স)

— ওহ আচ্ছা সিস্টার ধন্যবাদ আপনাকে।

— হসপিটাল থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠলাম অপরিচিতা আর রাইসাকে। কিন্তু মনে হচ্ছে হসপিটালে নিজের জীবনটা রেখে এসেছি। কলিজাটা ফেটে যাচ্ছি কথার সেদিন বৃষ্টিতে ভেজার কথা মনে পড়তেই।চোখের কোনে বিন্দু বিন্দু জল এসে বিড় করছে।

— বাবা, রিসান? পাখিকে তুই কী ভালবাসিস?

— মা কি বলছো? পাখি আমার ভালো বন্ধু। এছাড়া আর কিছুনা! ( রিসান)

— রিসান বাবারে তুই আমার সন্তান ছেলের মুখ দেখেই বুঝতে পারি, ছেলের মন কি চাই!

— মা, তুমি ও না। আচ্ছা মা, বলো তো, মায়েরা এতো ভালো হয় কেনো সন্তানের মুখ দেখেই সব বুঝে যায়। (রিসান”)

— এদিকে রিসান আর তার মা যখন কথা বলছিলো, পাখি ওয়াসরুম থেকে বের হতেই সব শুনে ফেলে। পাখি আর কিছুনা বলে তার রুমে চলে যায়।

— কিছুক্ষণ পর রিসান! ‘ হাই পাখি মুখটা ওমন বাংলার পাঁচ বানিয়ে রাখছো কেনো?

— না কিছু হয়নি, এমনেই ভালো লাগছে না।

— ওহ্! বুঝেছি পাখির একটা সাথী লাগবে। আমাকে বইলো আমার বন্ধুটার জন্য রাজপুএ এনে দিবো।

— পাখি মনে মনে ভাবছে, ছেলেরা সত্যি মনের মাঝে শত কষ্ট চাপা দিয়েও হাসতে পারে। ” আল্লাহ তাদের অদ্ভূত এক ক্ষমতা দিয়েছে”।

–এই কি ভাবছিস মনে মনে।

— না কিছুনা।

— আমি ভাবছি তোকে প্রপোজ করমু বউ বানাবো হা হা হা ( রিসান)

— রিসান,, মজা করা বন্ধ করবি?

— আচ্ছা বাদ দে। এখন বল তোর কেমন ছেলে পছন্দ। কেমন রাজপুএ লাগবে?(রিসান)

— “আমার কোনো রাজপুএ লাগবে না রাজ হলেই চলবে”! কথাটা বলেই জিবে কামড় দিলো পাখি

— কোন রাজ?

— না কোনো রাজ নয় মজা করছি তোমার সাথে রিসান।

— পাখি, প্লিজ মিথ্যা বলোনা, আমি দেখতে পেয়েছি তোমার চোখ সত্য লুকাচ্ছে।প্লিজ সত্যটা বলো?

— হ্যা রিসান, তোমাকে বলা দরকার। তাহলে শুনো যখন তোমার সাথে এস.এস.সি পাশ করে বাবার সাথে শহরে এসে পড়ি। শহরে এসে একটা কলেজে ভর্তি হয় আর কলেজের প্রথমদিন নবীনবরণ অনুষ্টানে একটা ছেলেকে ভালো লেগে যায়। তার পর বন্ধুত্ব কখন যে তাকে নিজের থেকে বেশি ভালবেসি ফেলি তা নিজেই জানতাম না। অনেক ভালোবাসতাম তাকে।সত্যি বলতে তার সবকিছুই ভালো লাগতো। প্রতিরাতেই তাকে নিয়ে অজস্র স্বপ্ন দেখতাম। স্বপ্নের রাজকুমার ছিলো সে।নিজের হৃদয়ের সবটুকু ভালবাসা দিয়ে ভালোবেসে ছিলাম তাকে। এই কথাগুলো বলেই থেমে গেলো পাখি, তার চোখ দিয়ে নিরবে অশ্রু ঝরছে।

— রিসান! পাখির চোখের জল মুছে দেওয়াতে পাখি অনেকটা অবাক হলো!

— তার পর কি হলো বলো? (রিসান)

— আমি এতটা ভালবাসার পরও রাজ আমাকে কখনো ভালোবাসেনি! সে আমাকে বন্ধু ছাড়া কখনো কিছুই ভাবেনি। ” রাজের সব ভালবাসা ছিল কথা আপুর জন্য। আর আমার ভালবাসা কথা আপুর প্রতি রাজের ভালবাসার কাছে অতি নগণ্য।

– সবাই, চায় তাদের ভালবাসার মানুষটা যার বুকেই থাকু।কিন্তু রাজকে কথা আপু কষ্ট ছাড়া কিছু দেয়নি। জানো রিসান শুধু রাজকে প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর তার বাড়ির সামনে বাসা নিয়েছিলাম।ওর হাসি খুশি মুখটাই আমার সারাদিন ভালো থাকার কারণ ছিল।
পরে একদিন শুনি যে রাজ কথা আপুর সুখের জন্য নিজের ভালবাসাকে বিসর্জন দিয়ে কথা আপুকে ডির্ভোস দিয়েছে। সেদিন নিজের অজান্তেই কেঁদে ফেলেছিলাম। ভাবছিলাম আমার ভালবাসা দিয়ে রাজের কষ্ট মুছে দিবো। কিন্তু আমার ভাগ্য যে এতটাই খারাপ, রাজের জীবনে অপরিচিতা ম্যাডাম আসে। সাথে একটা রাজকন্যা যে কিনা অল্পদিনের মেহমান। কি সুন্দর করে রাজকে বাবাই বাবাই বলে ডাকে, তার ডাক শুনে যে কারোর মন ভরে যাবে। তাই আর ভালবাসার দাবি নিয়ে দাঁড়ায় নি রাজের সামনে। কেড়ে নিতে চায়নি একমেয়ের শেষ ভরসাটুকু। ছিনিয়ে নিতে পারিনি এক নিশপাপ শিশুর মুখ থেকে বাবা ডাক কেড়ে নিতে। জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসতাম যাকে তার থেকে দূরে সরে আসি।

— ভাবছি, বাকীটা জীবন তার স্মৃতিটুকুই আকঁড়ে ধরে বেঁচে থাকবো। কথাগুলো বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললো কথা।

— রিসান, আসছিল তার মনের কথা পাখিকে বলতে কিন্তু এখন যে চোখের পানি ঝরানো ছাড়া কোনো উপায় নেই। পাখি যে তাকে বন্ধু ভাবে। এখন যদি তার ভালবাসার কথা বলে তাহলে বন্ধুত্বটাও নষ্ট হবে। এতোদিন পর ভালবাসার মানুষ কে বন্ধু হিসেবে পেয়েছে তাতেই অনেক।

–আচ্ছা পাখি, প্লিজ কান্না করোনা। আল্লাহ যা করেন তা ভালোর জন্যই করেন।এখন ঘুমাো ভালো লাগবে। (রিসান)

— হুম! ঠিকআছে, বলে পাখি শুয়ে পড়লো রিসান মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। পাখির কাছে রিসানের স্পর্শ কেমন কেমন লাগছে, সরিয়ে দিতে চেয়েও কেনো জানি সরাতে মন চাচ্ছে না।

— মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে, পাখি ঘুমিয়ে যাই। রিসান পলকহীন নয়নে তাকিয়ে আছে পাখির দিকে। অার মনে মনে ভাবছে ঘুমালে মানুষ কে এতোটা সুন্দর লাগে তা হয়তো জানা ছিলনা। এদিকে চাদের আলোতে পাখির মুখে যেনো মায়াবী আভা বের হচ্ছে। রিসানের খুব করে মন চাচ্ছে, পাখির কপালে ভালবাসার সর্প্শ একেঁ দিতে। কিন্তু না! তা সম্ভব নয়। এগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে রিসান, ভাবতেই পারেনি।

— সকালে পাখি, চোখ খুলতেই দেখে রিসান, পাখির বুকে শুয়ে আছে। পাখির মেজাজ ৪২০ হয়ে গেছে। রাগ মাথায় চড়ে গেছে, রিসান কে সে ভালো ভাবতো , আর রিসান! রিসান কে বুক থেকে সরাতে চাচ্ছে কিন্তু পাখিকে রিসান আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। পাখি খানিকটা বিরক্ত হয়ে, রিসান, ওই রিসান?

— রিসান কিছুটা বিড়বিড় করে বলছে পাখি শুনতে পারছেনা!!

— পাখি অনেকটা রিসানের কথা শুনতেই অনেকটা অবাক হলো “”””
চলবে…..