আপনিময়?তুমি Part-20

0
1978

#আপনিময়?তুমি [ An unexpected crazy love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Mêhèr ]
Part: 20……..

.
.
.
ইহান: আপনি সত্যি আজ আমার #আপনিময়?তুমি হয়ে গেছেন। আর সেটা আপনি নিজেও জানেন না……………..,,

এভাবে অনেকক্ষন থাকার পর…..

ইহান: কিহল এতক্ষন তো বলছিলেন আমার কাছে আসতে চান না। আর এখন কিনা ছাড়তে চাইছেন না। ব্যাপারটা কি একটু বলবেন….

কথাটা শোনা মাত্রই আনহা ইহানকে ছেড়ে দিয়ে উঠে যেতে নেয়। কিন্তু ইহান ওকে আবার নিজের সাথে মিশিয়ে নিল…..

ইহান: আমি বলেছি বলেই কি ছেড়ে দিতে হবে…. আপনার কি কোনো অধিকার বোধ নেই নাকি…. মানে বোধ নেই জানি কিন্তু অধিকার বোধও কি নেই… [ আনহার খুব কাছে গিয়ে ]

আনহা: আমার কোনো অধিকার বোধ নেই তোর উপর তাই ছাড় আমাকে….

ইহান: এখনো এই কথা বলবেন…. এত কিসের ইগো আপনার যা নিজের মনের ডাক শুনতেও আপনাকে বাধা দিচ্ছে….

আনহা: কোনো ইগো নয়…. আমি ভালোবাসি না তোকে বুঝলি। আর তাই অধিকার বোধটাও দেখাতে চাই না।

ইহান: সত্যি।।। এখনো একটু ভালোবাসেনি আমাকে….

আনহা: নাহহ….[ ইহানের দিক থেকে মুখ ঘুড়িয়ে ]

ইহান আনহার মুখটা ঘুড়িয়ে নিজের দিকে আনল…..

ইহান: ভেবে বলছেন তো….

আনহা: ভাবার কিছুই নেই তো কি ভাববো।

ইহান: এর জন্য পরে আপনাকে পস্তাতে হবে কিন্তু ভেবে দেখবেন…..

আনহা:…….

ইহান: তারমানে হার মানবেন না আপনি। সেই ইগো নিয়ে বসে থাকবেন…. নিজের মনের কথাও শুনবেন না…. তাইত…..

আনহা:…….

ইহান: ঠিক আছে আনহা আপনার ইচ্ছাই পুরন হবে। যখন আমার কাছে ধরা নাই দিবেন নিজে থেকে তাহলে জোর করে চাইব না। কারন অনেক জোর করে ফেলেছি….

আনহা:……

ইহান: আপনি নিজের ফিলিংস নিজের মুখে না বলা পর্যন্ত আমি আপনার কাছে আসব না আনহা।

আনহা:….. [ অন্য দিকে মুখ ঘুড়িয়ে ]

ইহান: আপনি যা চান তাই হবে। তবে এর জন্য আপনাকে অনেক বড় মাসুল গুনতে হবে। এর পর আমি তখনি আসব যখন আপনি ডাকবেন…….

[ তারপর ইহান উঠে চলে গেল আর আনহা ইহানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল ]

আনহা: আমি কি সত্যি তোকে ভালোবেসে ফেললাম??? তাহলে তোকে কেন মেনে নিতে পারছি না??? আর কেনই বা তোর কাছে থাকতে চাই?? কেনই বা তোকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতে পারছি না। এটা কি শুধুই পিচ্চি ইহানের প্রতি টান…. নাকি তোর ভালোবাসার নতুন কোনো অনুভুতি যা আমাকে না চাইতেও বার বার তোর দিকে টানছে…. আমি কি সত্যি তোকে মেনে নিয়েছি স্বামী হিসেবে…. সত্যি কি আমি তোর #আপনিময়?তুমি হয়ে গিয়েছি…….
,,
,

,
,
,

,
,
,
,ইহান বাইরে আসতেই রাইসা ওর পথ আটকায়…..

ইহান: তোর কি হল পথ আটকালি কেন???

রাইসা:……

ইহান: রাস্তা ছাড় আমি যাব….

রাইসা: ওই মেয়েটাকে কেন নিজের বউ বললে তখন…..

ইহান: এটা আবার কেমন প্রশ্ন???

রাইসা: যেটা বলছি শুধু তার উওর দেও…..

ইহান: দেখ রাইসা। আনহার সাথে আমার বিয়েটা হঠাৎ করে হয়েছে কাউকে জানানো হয়নি। আর তাই তোকে কিভাবে জানাব…

রাইসা: তারমানে তুমি নিজে বিয়েটা করেছ তাইত…..

ইহান: তোর মনে হয় কেউ আমাকে জোর করতে পারে…..

রাইসা এবার কেদেই দেয়…..

রাইসা: কেন করলে আমার সাথে এটা…. কি দোষ করেছি আমি….???

ইহান: আজব তো আমি আবার কি করলাম তুই এসব কি বলছিস….

রাইসা: আমি তোমাকে এতটা ভালোবাসি এটা তুমি খুব ভালো করেই জানো তাহলে কেন করলে….???

ইহান: দেখ আমার আর আনহার বিয়েটা হয়ে গেছে এখন আর এগুলো বলে কি লাভ……

রাইসা: কি লাভ মানে…??? তোমার কি সত্যি আমার ফিলিংস এর কোনো দাম নেই ইহান। [ কান্না করতে করতে ]

ইহান: দেখ আমার এসব বলতে ভালো লাগছে না। আমার কাজ আছে যেতে দে।

রাইসা: আমার চেয়ে এখন কাজটা তোমার কাছে বড় হলো…..

ইহান: তুই কি এখনো বাচ্চা নাকি রাইসা। এখন তো বড় হয়ে গেছিস এখনো এসব কথার মানে কি???

রাইসা: আচ্ছা তা বিয়ের সময় একটা বার জানাতে পারলে না কেন [ নিজের চোখ মুছে ]

ইহান: সবটা অনেক তারাতারি হয়ে গেছে কাউকে বলার সুযোগ হয়নি তাহলে তোকে কিভাবে বলব….

রাইসা: আচ্ছা বুঝতে পেরেছি…. আর বলতে হবে না….

ইহান: রাইসা তুই…..

রাইসা: ছোটবেলা থেকে ভালোবাসার ভালো ফল দিলে তুমি আমাকে…

ইহান:…….

রাইসা: তুমি জানতে না এসব জেনে আমি কত কষ্ট পাব…..

ইহান: এখন এসব বলে কি লাভ যা হওয়ার হয়েছে। এখন বল কি করব আমি….??

রাইসা: আমি খুব দ্রুত আবার লন্ডন ফিরে যাব ইহান….. তাই আমাকে একদিন একটু টাইম দিবে….

ইহান: কিন্তু….

রাইসা: প্লিজ একটা দিন তো। তারপর আর কিছু বলব না তুমি না হয় তোমার মত থেকো। আজ সারাদিন প্লিজ……

কিছুক্ষন ভেবে…..

ইহান: আচ্ছা। কোথায় যাবি….

এইটা শুনে রাইসা একটা হাসি দেয়…..

রাইসা: চলো…..[ তুমি নিজেও জানো না আজ তোমার কি হাল করব। আমাকে কষ্ট দেওয়ার সবটা হিসেব আমি শুধে আসলে তুলব….. ]

[ তারপর ওরা দুজন গাড়ি করে চলে যায়। আর এতক্ষন যা যা হয়েছে তার সবটাই আনহা উপর থেকে দেখেছে। ও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না নিজের কানকে। কারন রাইসার কথায় এতটুকু স্পষ্ট রাইসার সব কথায় ইহানের সায় আছে। রাইসার কথা শুনে ইহান নিজেকে অপরাধী ভাবছে ]

ইহান রাইসাকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে আসে…

ইহান: কি খাবি বল….???

রাইসা: তুমি যা খেতে দিবে…..

ইহান: রাইসা….. [ বেশ বিরক্ত হয়ে ]

রাইসা: প্লিজ না ইহান……

ইহান: আচ্ছা। [ তারপর ইহান খাবার অর্ডার দেয়। ] কিরে খাচ্ছিস না কেন???

রাইসা: খাব না [ ভেংচি কেটে…. ]

ইহান: রাইসা দেখ???

রাইসা: খাইয়ে দেও।

ইহান: এইটা বেশি হয়ে গেল না….??

রাইসা: আমার উপর রাগতে পারবে… সত্যি ইহান তুমি কতটা বদলে গেছ তাও ওই মেয়েটার জন্য…….

ইহান: চুপ একদম চুপ…..

রাইসা: রাগ দেখাচ্ছ… এটা কিন্তু তোমার জন্য ভালো হবে না। ?

ইহান আর কিছু না বলে রাইসাকে খাইয়ে দিতে লাগল….

রাইসা: এইত গুড বয়। [ ইহান রাইসাকে খাইয়ে দেওয়াতে রাইসা ইহানের আঙুলে কামর দিয়ে চোখ মারল। আর ইহান দাতে দাত চেপে সহ্য করল ]

ইহান: [ আমি পারলে তোকে ???….]

রাইসা: এখন মনে মনে গালাগাল দিয়ে লাভ নেই। যা হওয়ার হয়েছে তাকদিরকে কে খন্ডাবে বলো….
,
,

,
,
,
,
,

,রাইসা: ওই আনহাই কি তোমার বউ নাকি???

ইহান: তোর কোনো সন্দেহ আছে???

রাইসা: না মানে আমি শুনেছি তোমার বউ নাকি তোমার ৫ বছরের বড় কিন্তু আনহাকে দেখে তো মনে হল না ওর বয়স এত হতে পারে। infact ওকে দেখলে এখনো একটু বাচ্চার ফেসের মতই মনে হয়…..

ইহান: এসব তোকে কে বলেছে???

রাইসা: তুমি আমায় নিয়ে না ভাবলেও আমি তো ভাবি জান। নাহলে কি…. [ চোখ মেরে ] তবে যাই বলো তোমার বউ দেখতে খুব কিউট আর সেইজন্য বয়সে বড় হয়েও বিয়ে করেছ…..

ইহান: বাজে কথা বন্ধ কর….. আমি আনহাকে…….

রাইসা: তুমি আনহাকে কি ভালোবাস তাহলে আমি??? আমি কি?? আমাকে কি কখনো ভালোবাসনি,???

ইহান: এই বাজে কথা বন্ধ কর…..

রাইসা: ওকে……
,

,

,
,
,
,
,
,
,

[ তারপর ইহান সারাদিন রাইসাকে ঘুরায়।আর রাইসার সব আবদার গুলো সহ্য করে….

ইহান: [ আর মাত্র কয়েকটা দিন তারপর সব ঠিক হয়ে যাবে….. ]
,
,
,

,
,,

,
,এদিকে আনহা এক মিনিট স্থীর থাকতে পারছে না। ইহানের সাথে আরেকটা মেয়েকে যেন সহ্য করতে পারছে না। ইহানের সাথে অন্য মেয়ের কথা ভাবতেই আনহার ধম বন্ধ হয়ে আসছে। তার পিচ্চি ইহানকে খুব বেশি ভালোবাসত আনহা। অন্য কারো জন্য ইহান পাগল হবে কখনো ভাবেনি। আর এখন তো ইহান তার হাসবেন্ড। মুখে স্বীকার না করলেও মন থেকে আনহা ইহানকে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছে….. খুব ভালোবেসে ফেলেছে সে ইহানকে। খুব করে চায় তাকে….. তাই ইহানের পাশে নিজেকে ছাড়া কাউকে কল্পনাও করা পসিবল না আনহার…….

,
,
,
,
এভাবেই অস্থিরতায় কেটে যায় আনহার…….. সারাদিনে ইহানকে। অনেকবার কল করেছে কিন্তু রিসিভ করেনি ইহান…… করবেই বা কি করে ইহানের ফোন তো রাইসার কাছে…… তাই এভাবেই অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে যায়…….

অনেক রাতে আনহার ঘুম ভেঙে যায়। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১টা বাজে…. আনহা তাকিয়ে দেখ ইহান এখনো আসেনি। তাই ও রুম থেকে বাইরে বেড়িয়ে যায়….. বাইরে বেড়িয়ে দেখে ওইপাশে একটা রুমে লাইট জ্বলছে…. আনহা বেশ কোতুহল নিয়েই রুমের দিকে যায়….

আর রুমে গিয়ে আনহা যা দেখতে পায় তাতে ওর পায়ের নিচের মাটি সরে যায়। ইহান বিছানায় আধো শোয়া হয়ে বসে আছে আর রাইসা গুটিশুটি মেরে ইহানকে জড়িয়ে ধরে কাদছে……..

এই দৃশ্য দেখে আনহার মাথাটাই বিগড়ে যায়।

আনহা: ও তারমানে আপনি আপনার কথা রাখলেন মি. ইহান।

আনহাকে দেখে ইহান দ্রুত রাইসাকে ছেড়ে দারায়।

ইহান: তুমি এখানে…….. [ বেশ অবাক হয় ]

আনহা: কেন অবাক হলেন বুঝি। অবাক হওয়ার কি আছে??? আমি আপনাকে হাসবেন্ড হিসেবে মানতে চাইনি তাই…….. ছি ইহান আমি ভাবতেও পারিনি……

ইহান: আনহা আপনি মাত্রাতিরিক্ত করছেন….

আনহা: আর তোমরা যা করছ তা বুঝি খুব ভালো… আমাকে লুকানোর কি দরকার ছিল । তুই রাইসাকে ভালোবাসিস তাহলে আমাকে বিয়ে না করে রাইসাকে করলেই তো পারতি…. অত্যন্ত আমাকে এসব দেখতে তো হত না।

ইহান:….. [ শুধু রাগে ফুসছে ]

আনহা: লজ্জা করে না এসব করতে। তার তোর বা কি দোষ দেব এই নির্লজ্জ বেহায়া মেয়েই তো তোকে নিজের দিকে টানছে…….

রাইসা: তুমি কিন্তু অনেক বেশি বাড়াবাড়ি করছ?

রাইসার মুখে এই কথা শুনে আনহার মেজাজটাই বিগড়ে গেল… ও গিয়েই রাইসার গালে খুব জোরে কষে একটা থাপ্পড় মারল। রাইসা ব্যলেন্স করতে না পেরে টেবিলের উপর গিয়ে পরে যায় যাতে ওর ঠোঁটটা কেটে যায়। ইহান দ্রুত গিয়ে রাইসাকে তোলে আর রাইসা ইহানকে জড়িয়ে ধরে কেদে দেয়……

এইটা দেখে আনহার রাগ আরো বেড়ে যায়…. ও রাইসাকে ইহানের বুক থেকে সরিয়ে দিয়ে আরেকটা থাপ্পড় মারতেই ইহান আনহার হাত ধরে নেয়….