অনুর উপাখ্যান পর্ব-১৫

0
1848

গল্প : অনুর উপাখ্যান
পর্ব : ১৫

আয়নায় নিজেকে দেখে অনু অপলক চেয়ে আছে । অনেক সুন্দর লাগছে তাকে । নিজেকে এখন পরিপূর্ন রমনী মনে হয় তার । নীল আর কালোর মিশ্রনে প্রাইডের সুতির শাড়িতে অনুকে দারুণ মানিয়েছে ! শাড়িতে অনুকে সুন্দর লাগে বলে যে অনু শাড়ি পরেছে, তা নয় । বরং অনুর কোনো জামা নেই । বাধ্য হয়ে তাই তাকে বারো মাস শাড়ি পরতে হয় ।জামা নেই শুনতে কেমন যেনো কানে লাগছে, তাই না ? আসলে, মারুফ তাকে কোনো জামা কিনে বা বানিয়ে দেয় না । বিয়ের পর খুব শখ করে অনু একটা জামা বানিয়েছিল । জামা পরে মারুফের সাথে বাহিরে গেলে মার্কেটে একজন মারুফকে জিজ্ঞেস করে যে, তার সাথের মেয়েটা কি তার বড় ভাই মুনিরের মেয়ে নিপা ? তখন মারুফ রাগ করে উত্তর দেয় : ‘আমনের কি মিয়া চোখ নষ্ট ? এইডা আমার বউ ।’ ব্যাস, তখনই বাসায় চলে এসে মারুফ প্রথমে ঘরের দরজা বন্ধ করে । পরে অনুর গা থেকে নতুন জামার গলার কাছে ধরে দু’হাতে টেনে ছিড়ে ফেলে । এমন ভাবে ছিড়ে যে, সেটা আর যেনো অনু পরতে না পারে । সেদিন থেকে অনুর জামা পরা বন্ধ । অবশ্য নিহান যখন পেটে ছিল তখন, তার পরের এক বছর সে বাসায় ম্যাক্সি পরেছে । কিন্তু, এখন শাড়ি পরতে হয় অনুকে ।

— আপা, কোথাও যাইবেন ? রেখা জিজ্ঞেস করল ।

— না, কই যাব ? এমনি একটু চুল বেণী করছি । তরকারি সব গরম করা শেষ ?

— জি আপা, গরম কইরা টেবিলে খাবার দিয়া রাখছি ।

— ঘরের জানালা বন্ধ করে দাও, নইলে ঘরে বিড়াল ঢুকবে ।

— আইচ্ছা দিতাছি ।

— রেখা, আমি নিহানকে নিয়ে ছাদে গেলাম, তুমি বালতি মগ নিয়ে আসো । গাছে পানি দিতে হবে ।

— ঠিক আছে আপা, আসতেছি ।

এই একটা জায়গা অনুর অনেক পছন্দের । আসরের নামাজের পর অনু নিহানকে নিয়ে ছাদে চলে আসে । এখানে সে ছোট একটা বাগান করেছে । তার প্রিয় ফুল গোলাপ, বেলি, আর একটা কামেনী গাছ রেখেছে । বাগানের প্রায় সবটুকুই গোলাপ দিয়ে ভরা । আগে ছাদে কেউ খুব একটা আসতো না । কিন্তু, এখন সবাই আসে বাগান দেখার জন্য ।

— আপা এই যে নেন বালতি । রেখা বলল।

— ঐ যে ঐ দিকে কল আছে পানি ভরে নিয়ে আসো।

অনু খেয়াল করল রেখা বেশ ভালো করে সেজে এসেছে । ফর্সা হওযার অপচেষ্টা করতে গিয়ে মুখে পাউডার ভাসছে । চোখে কাজল ও দিয়েছে । রেখার চেহারায় কেমন যেন একটু উপজাতি ভাব আছে । কাজলটা ওকে মানাচ্ছে না । বরং কাজল ছাড়া এমনিতেই যেটুকু ভালো দেখায় । তবে, এখানে আসার পর রেখার স্বাস্হ্যের ভালোই উন্নতি হয়েছে ।

— কি ব্যপার রেখা হঠাৎ সাজলে যে ? অনু জিজ্ঞেস করল ।

— এমনি আপা, কিছু না ।

— শোনো রেখা, তোমার তো স্বামী আছে । তুমি তার আমানত । কাজেই যতটুকু পারো নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করবে । নইলে কিন্তু তোমার গুনাহ হবে ।

— আপা যে কি কন ! এ গুলা কি এখন কেউ মানে ? ঢাকার অবস্হা জানেন আপনে ? ঢাকার মাইয়ারা কেমনে চলে ?

— এ্যাই ! থামো রেখা । ঢাকার মেয়ে মানে ? আমার জন্ম ঢাকায় । আমার বাবার ঢাকায় নিজের বাড়ি আছে, গাড়ি আছে । সেই আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি তখন আমার আব্বু প্রথম গাড়ি কিনেছেন । সেই বাড়ির মেয়ে হয়ে আমি তো এমন না । বরং আমার ননদ সীমা মফস্বলের মেয়ে হয়ে তোমাকে তিন বার বেঁচে আবার কিনতে পারবে । সব দোষ শুধু ঢাকার মেয়েদের, না ?

— না মানে, আপনে ঢাকার মেয়ে ? জানতাম নাতো ।

— এখন জানলে তো ? কাজেই আমার কাছে ঢাকার গল্গ করতে আসবে না আর ।অনু একটু হেসে কথাটা বলল ।

— স্লামালাইকুম চাচি । কেমন আছেন ?

— ওয়াআলাইকুমুস সালাম ।

অনু পিছন ফিরে দেখে বড় ভাবির ছোট ছেলে টিপু এসেছে । টিপু কথা বলছে অনুর সাথে কিন্তু, চোখ হচ্ছে রেখার দিকে । এভাবে তাকানোর কারণ কি ? তা দেখার জন্য ঘুরতেই অনু দেখল রেখা তার বুকের এক পাশ থেকে শাড়ির আঁচল সরিয়ে পেট ও বুক বের করে রেখেছে ।

— কি রেখা তোমার পানি দেয়া হয়েছে গাছে ? রাগ চেপে অনু বলল ।

— জি আপা হইছে ।

— ঠিক আছে তুমি বালতি নিয়ে নিচে যাও । গিয়ে ঘরের সব লাইট জ্বালিয়ে দাও । আমি আসছি একটু পর ।

রেখা নিচে গেলে টিপুর দিকে তাকিয়ে অনু জিজ্ঞেস করল :

— টিপু কিছু বলবে তুমি ? আর এভাবে সালাম দেয়া কই শিখেছ ? উচ্চারণ হয় না ।‘আসসালামু আলাইকুম’ হবে ।

— ঠিক আছে চাচি আর ভুল হবে না ।

— রেখার স্বামী আছে , ওর বচ্চাটা বেঁচে থাকলে নিহানের চেয়ে বড় হতো । অথচ, রেখা আমার বড় হওয়া সত্বেও; ওরে আমার তুমি করে বলতে হয় । দুনিয়ার কি নিয়ম ! তাই না টিপু ?

—জি চাচি ।

বুদ্ধি করে টিপুকে রেখা সম্পর্কে সব জানিয়ে দিলো অনু । যেনো রেখার কাছে না ঘেষতে পারে । এবার ধোলাই দিতে হবে রেখা কে । মঈন ঠিকই বলেছিল, এই মহিলা কাজ করার মতো না ।

— রেখা শোনো, তুমি কি জানো টিপুর বয়স কত ? পনেরো হবে । আমার বিয়ের সময় মানে মাত্র তিন বছর আগে কত ছোট ছিল ও ! বিড়ালের বাচ্চার মতো আমার সামনে দিয়ে ঘুরত । ছেলেটা হঠাৎ করে লম্বা হয়ে গেছে ।

— তাই ! ওরে দেখলে বুঝা যায় না ।

— বুঝবে আর কটা দিন যাক । সবই আস্তে আস্তে বুঝতে পারবে আশা করি ।

সাইন্স নিয়ে পড়তে গিয়ে যদি এক দিন ও ক্লাস না করা যায় তবে কি হয় ? কীভাবে পাস করবে সে ? মারুফের তাতে আসে যায় না । ভর্তির টাকা দিয়েছে, পরীক্ষার ফী দিবে ব্যাস। কিন্তু, ক্লাস করা যাবে না । আর অনুর পক্ষে লেখাপড়া ছাড়া থাকা সম্ভব না । আমার ছেলে বড় হয়ে বলবে : আমার মা ইন্টার পাস । ইস ! ছেলে নিশ্চয় তখন লজ্জা পাবে বলতে ? আর তার বাবা ? আদৌ মেট্রিক পাস করেছে কিনা সন্দেহ আছে অনুর ।বিয়ের আগে শুনেছিল ছেলে গ্র্যাজুয়েট । আর বিয়ের পর শুনেছে এ বাড়ির লেখাপড়ার দৌড় মেট্রিক পর্যন্তই ! অনুকে তাই বি, এসসি পাস করতেই হবে । তার নিজের জন্য; নিহানের জন্য ।

রাতের খাবার শেষ করে ঘরে যেতেই মারুফ কাছে ডাকল অনুকে । কিছুক্ষণ ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলছে :

— তুমি কি আরো হুগাইছো নাকি ?

— কই নাতো ! আর আমি কি শুকনা নাকি ? বলেন স্লীম ফিগার আমার । দেখেন না কত সুন্দর লাগছে আমাকে ?

— হ, স্লীম না ছাই । হুগাইয়া প্যাট দিয়া হাড্ডি বাইর অইয়া গেছে । কেমন দেহা যায় তোমারে ! মাইয়া মানুষ অইব জাস্তি বডি । যেইহানে ধরমু; সেইহানেই সুখ পামু ।

— কী ! পেট দিয়ে আবার হাড্ডি বের হয় কীভাবে ? এটা কেমন ভাষা ? আপনার নতুন নতুন রুপ আর কত দেখতে হবে আমাকে ? খবিশ প্রানী কোথাকার ! সরেন ঘুমাতে দেন আমাকে । অনু রেগে বলল ।

— সরবো মাইনে ? এদিকে আইয়ো । মেজাজ কিন্তু খারাপ অইতাছে ।

— ছি : আস্তে বলেন । পাশের রুমে মঈন আছে না ? ও শুনলে লজ্জা পাবো না আমি ?

অনুকে কাছে টেনে কিছুক্ষণ স্পর্শ করেই মারুফ সরে যেতে যেতে বলতে লাগল ।

— না, লাভ নাই । কিছু অইব না । ডাক্তার আমার দেহান লাগবই ।

— মানে কি ? কী বলেন এসব ? আর সরে গেলেন কেনো ? সমস্যা কি বলবেন তো ?

— অনু, আমার জানি কি অইছে । শরীলে কোনো চাহিদা কাজ করতেছে না । প্রমান তো পাইলাই তুমি । শুধু শুধু তোমারে কষ্ট দিলাম । কি করতাম আমি কও ?

— শোনেন, প্লিজ মন খারাপ করবেন না । আপনি কি ইচ্ছে করে অসুখ বানিয়েছেন ? আমি কিছু মনে করি নি । সব ঠিক হয়ে যাবে ।কাল ডা: জামাল ভাইকে অবশ্যই দেখাবেন । সব কিছু খুলে বলবেন তাকে । আমার বিশ্বাস ঠিক হয়ে যাবে ইনশা’আল্লাহ ।

— আইচ্ছা চলো ঘুমাই এহন । মারুফ ঐ পাশ ফিরে শুয়ে পড়ল ।

অনু কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইল । এক দীর্ঘ নি:শ্বাস ছেড়ে বালিশে মাথা রাখল । চোখের কোণ বার বার ভিজে যাচ্ছে তার । এক সময় অনু গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল । ঘুমের সাথে তার চোখের পানির কূপটা ও যেনে পানি দেয়া বন্ধ করে দিলো ।

— রেখা, এই রেখা । দরজা খোলো । আইছি আমি । মারুফ নিচু সুরে ডাকছে ।

— খাড়ান খুলতাছি । কেমনে আইলেন আপনি দুলাভাই ? আপা টের পাইবো না তো ?

— আরেহ না , আমি এত কাঁচা কাজ করি না । আমার এক দাঁতের সমান বুদ্ধি ও অনুর নাই । ও আমারে অনেক ভালো জানে । আর এহন অনু উঠতো না । চিন্তা কইরো না ।

— অন্য কেউ জানবো নাতো ? মঈন ভাই ?

— না, জানতো না । আর জানলে ওরে ও ভুলায় দিবা । সমস্যা কি ?

— ইস ! শরম করে না আমার ?

— আহো তোমার শরম আমি ভাইঙা দেই ।

মারুফের আজকে সকালে ডা: জামাল ভাইয়ের কাছে যাওয়ার কথা । বেচারার জন্য মায়া লাগছে । তবে কি বয়সের কারনে তার এই সমস্যা হচ্ছে ? চিন্তা করা বাদ দিয়ে তাড়াতাড়ি কিচেনে গেল সে । গিয়ে অনু চমকে উঠল । রেখা ভেঁজা চুল ছেড়ে দিয়ে দু’টো ডিম ভাজি দিয়ে ভাত খাচ্ছে ! অনুকে দেখে রেখা ভাত লুকানের চেষ্টা করল ।

— আরে রেখা খাও তো । আমার বাসায় ডিমের অভাব নেই । খাও তুমি । যখন যা লাগে পেট ভরে খাবে । এ কথা বলে অনু মারুফের জন্য নাস্তা রেডি করছে ।

মনের মধ্যে অনুর হাজারটা প্রশ্ন । নিজের সাথেই কথা বলছে সে । রেখা এত সকালে গোসল করল কেনো ? তবে কি সে কারো সাথে রাতে শারীরিক সম্পর্ক করেছে ? কার সাথে করেছে ? কে সে ? মারুফ হতে পারে ? না, সে তো অসুস্হ । অনু নিজে তার প্রমান দেখেছে কাল রাতে । যে মানুষটার অনুর মতো এত সুন্দর বউ কাছে পেয়ে ও কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না, সে একাজ করতেই পারে না । তবে বাকি রইল মঈন । আচ্ছা মঈন কি এত খারাপ ? অবিবাহিত পুরুষ মঈন, রেখা যদি স্বেচ্ছায় দেয়, তবে কি মঈন না করবে ? কিন্তু, ওর চোখ দেখে তো কখনো এমন মনে হয়নি অনুর । ধুর ! এমনও তো হতে পারে রেখার পিরিয়ড হয়েছে তাই গোসল করেছে ।

আজ সারাদিনই অনুর মন খারাপ । মারুফকে ডাক্তার কি বলে কে জানে ? যদি খারাপ কোনো অসুখ হয়ে থাকে ? তবে অনুর তো কষ্ট হবেই, কিন্তু তার চেয়ে বেশি কষ্ট যে মারুফের হবে । এটা নিশ্চই মেডিসিনের সাইড ইফেক্ট হবে । অনু নামাজে সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার জন্য দোয়া করে ।

লোহার গেট টা একটু পর পর শব্দ হচ্ছে দেখে অনু বিরক্তি নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে দেখে, রেখা আর টিপু রসে ডুবে গল্প করছে । এই টিপুর সাথেই তবে কি এসব হচ্ছে ? কিন্তু, লোহার গেট তো রাতে তালা দেয়া থাকে । গেটের চাবি অবশ্য ডাইনিংরুমে ঝুলানো থাকে ।
আচ্ছা কতটা চালাক হলে এমন ভাবে গেট খুলে যে, আমরা কেউ টেরই পাই নি ! আর বড় ভাবির তিন ছেলের মধ্যে দু’টোই এত খারাপ ! এখন যদি ভাবির কাছে অনু সব বলে দেয়, তবে ভাবি উল্টো অনুকেই বকা দিবেন । আর সব যেহেতু অনুমান মাত্র, তার কাছে কোনো প্রমান নেই । কাজেই অনু চুপ থাকাই ভালো মনে করল ।

দুপুরে মারুফ খেতে আসতেই অনু কাছে গিয়ে খুব আস্তে ধীরে মারুফকে জিজ্ঞেস করল :

— কী বলেছে ডা: জামাল ভাই ? মেডিসিন দিয়েছে কোনো ?

— বলছে এই রোগের কোনো চিকিৎসা নাই ।অপেক্ষা করতে কইছে । ঠিক অইতে ও পারে, আবার নাও অইতে পারে ।

মারুফের কথা শুনে অনুর খুব কান্না পাচ্ছে । নিজের চেয়ে মারুফের কষ্টে তার বেশি খারাপ লাগছে । কি শান্তনা দিবে মারুফকে ? তবুও বলল :

— নিহানের আব্বু, চিন্তা করবেন নাতো । কিছুই হয়নি আপনার । আমি আপনার পাশে আছি না ? এত ভয় পান কেনো ? শোনেন, আপনার উচিত একদম মানসিক ভাবে ফ্রেশ থাকা । কারণ, এটা মনের উপর অনেকটা নির্ভর করে ।

— হুম, বুঝতাম পারছি ।

রাতে কিচেনে অনু কাজ করেই যাচ্ছে । সে চাচ্ছে না তার কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হোক । কারণ, এখন যদি মারুফ আবার কাল রাতের মতো আচরণ করে ? তবে তো সে না করতে পারবে না । কিন্তু, তার যে এতে অনেক কষ্ট হয় সেটা কীভাবে বুঝাবে মারুফকে ? বিয়ের সাথে সাথে প্রেগন্যান্ট হওয়া, নিহানের জন্ম সব মিলিয়ে সে বিবাহিত জীবনের পরিপূর্ণতা কি এতদিন বুঝেনি তেমন । কিন্তু, এখন সে উনিশ বছরের পূর্ণ রমনী । তার মন এখন সুখের নাগাল পেতে চায় । অথচ ভাগ্যের কি খেলা ! স্বামী থাকতে ও তার বিধবার জীবন পার করতে হবে !

আস্তে করে অনু ঘরে ঢুকল যেনো মারুফ টের না পায় । কিন্তু, মারুফ টের পাবে না মানে ? সে তো জেগেই আছে ! অনুকে দেখে বলল:

— কই ছিলা এতক্ষণ ? ঘুমাইবানা ? আমি বইসা আছি তোমার জন্য ।

— কেনো বসে আছেন ? ঘুমান আপনি । আমিও ঘুমাব এখন । খুব ঘুম পাচ্ছে ।

— ঘুমাইবা তো জানি, আগে এদিকে আহো ।

— কেনো ? আপনার না সমস্যা ? বাদ দেন তো । আপনার মন খারাপ দেখলে কষ্ট হয় আমার ।

— হওক কষ্ট, কাছে আইয়ো । যদি চেষ্টা না করি তয় কেমনে জানমু ঠিক অইছে কিনা ?

এরপর আর কি বলতে পারে অনু ? কাল রাতের মতোই সবকিছু ঘটল । আজও অনু শরীরের যন্ত্রনায় কাঁদছে । অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু, ঘুম আসছে না তার । ঐ পাশ ফিরে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে সে । হঠাৎ মারুফের নাড়াচাড়া টের পেয়ে অনু ঘুমের ভান করে রইল । যদি মারুফ আবার তাকে স্পর্শ করতে চায় ? এই ভয়ে অনু চুপ করে শুয়ে আছে । কিন্তু, অনুর ধারনা ভুল প্রমান করে মারুফ চোরের মতো আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নেমে দরজা খুলে বের হয়ে গেল। অনু সাথে সাথে উঠে বসলো ।এত রাতে মারুফ কোথায় গেল ? অনু তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে মারুফের পিছু নিলো ।

চলবে……

✍? নায়না দিনা