#ভুলিনি_তোমায়?
#Nishat_Tasnim
#এক্সট্রা পার্ট
উনি মুহূর্তে রেগে গিয়ে আমাকে ওয়ালের সাথে চেপে ধরে বললেন,,”কী বলছি,তুমি বুঝো না?এমন সেজেছো কেনো?কোনোদিন তো সাজতে দেখি নি,,,সবসময় বিধবা সেজে থাকতে।নিশ্চয় ওদের কাছ থেকে তোমার রুপের প্রশংসা শুনতে এমন সেজেছো তাই না?”
আমি অবাক চোখে উনার দিকে চেয়ে রইলাম।তখনই পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো,,”ছিঃ দোস্ত,,তুই তো দোস্ত নামের কলঙ্ক।কোথায় আমরা এসেছি আমাদের আপ্যায়ন করবি তা না করে উল্টো তোরা কিচেনেও চিপকায় আছোস।শেইম অন ইউ,ইয়ার।”
উনি সঙ্গে সঙ্গে আমাকে ছেড়ে দিয়ে সরে দারালেন। উনি মেকি রাগ দেখিয়ে বললেন,,”শাট আপ নেহা,,ফাজলামি বাদ দে, তুই এখানে কেনো এসেছিস সেটা বল,কিছু লাগবে??”
মেয়েটি একটু ভাব নিয়ে বললো,,”বাহ,বাহ,,,কথা কাটানো হচ্ছে।এই আগে এইটা বল তুই এমন আমিষ হইলি কবে?তুই তো আস্ত একটা নিরামিষ ছিলি।”
উনি নরম কন্ঠে বললেন,,”দেখ তুই যেমন ভাবতেছিস বিষয়টা তেমন নয়।”
এদিকে আমি আড়ালে চোখ মুছে স্বাভাবিক হয়ে নিলাম।
আমি মেয়েটার দিকে তাকতেই মেয়েটা উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠলো,,”কী হলো ভাবী?আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো?”
আমি একটু হাসার চেষ্টা করলাম, কোনো রকম হেসে বললাম,,”কিছু না,আপু।আসলে আমার চোখে কী যেনো পরেছিলো সেটাই উনি বের করছিলেন আর আপনি অন্য কিছু ভেবেছিলেন।”
মেয়েটা কেমন করে যেনো তাকালো।দেখে মনে হলো বিষয়টা উনার একটুও বিশ্বাস হয় নি।
মেয়েটি কিছু বলবে তার আগেই উনি আপুটিকে টেনে খাওয়ার জন্য নিয়ে যেতে লাগলেন। আপুটি আমাকেও উনার সাথে জোর করে নিয়ে আসলেন।
খাবার টেবিলে বসে সবাই খেতে লাগলেন।আমিও উনাদের সাথে বসেছি উহু বসেছি বললে ভুল হবে উনারা জোর করে আমাকে আর এহসানকেও একসাথে বসিয়েছেন।এহসানের রান্না যে এতো মজা তা তো জানতামই, কারন উনি প্রতিদিন আমাকে নিয়ে রান্না করতেন। কিন্তু আজকের রান্না টা একটু বেশিই মজা ছিলো। খাবার খাওয়ার সময় তখনকার ওই ছেলেটার দিকে চোখ পড়তেই দেখলাম কেমন বাজে নজরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমার কেমন অস্বস্তি করতে লাগলো।এদিকে সবাই খাবার খেয়ে প্রশংসার বন্যা করতে লাগলেন।
উনাদের মধ্যে একজন বলে উঠলো,,”রান্না তো দারুন হয়েছে।কে রেধেঁছে??”
কেউ কিছু বলার আগেই উনি বলে উঠলেন,,”কে আবার?আমার বউ। কত কষ্ট করে সকাল সকাল উঠেই তোদের জন্য রান্না বসিয়েছে।”
উনার কথা শুনে আমি মুখ তুলে অবাক চোখে উনার দিকে তাকালাম।আমি কিছু বলবো তার আগেই সবাই আমার প্রশংসা করতে লাগলো।আমি আর কিছু বললাম না,চুপচাপ খেয়ে নিলাম।
সবার খাওয়া শেষ হতেই আমি সব কিছু নিয়ে যেতে লাগলাম তখন আমাকে দুজন আপুও হেল্প করতে লাগলেন। ভ্যাসিনে সব রাখতেই একজন আপু আমাকে বলে উঠলো,,”এহসান তোমাকে খুব ভালেবাসে, তাই না?”
উনার কথায় আমি কিছুটা অবাক হয়ে বললাম,,”কেনো আপু?”
আপুটা একটু তাচ্ছিল্যের সুরে বললেন,,”আরে তোমাদের ভালোবাসা দেখে বললাম।এই যে এহসান নিজে রান্না করে বললো তুমি রান্না করেছো।এখন এটা বলো না যে তুমি রান্না করেছো,কারন আমি খুব ভালো করেই এহসানের রান্না চিনি।”
আমি চুপ করে রইলাম।তখনই অন্য আপু খোচা মেরে বললেন,,”তুই চিনবি না তো কে চিনবে?আফটার অল এক্স গার্লফ্রেন্ড বলে কথা।”
আপুটির কথা শুনে আমি চমকে উঠলাম।গার্লফ্রেন্ড মানে?তার মানে আপুটি উনার গার্লফ্রেন্ড।আমার ভেতর কেমন ধক করে উঠলো। আমি চুপচাপ কাজ করতে লাগলাম। আমার খুব রাগ হতে লাগলো। শব্দ করে সবকিছু করতে লাগলাম।তখনই উনি নায়লা, নায়লা বলে ডাকতে ডাকতে কিচেনে ডুকলেন।
উনি আপুদের দিকে একবার ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আমাকে বললেন,,”তুমি এখানে?ঔষধ খেয়েছো?জানি খাও নি।চলো ঔষধ খাবে।”
আমি জবাব দিলাম না।নিজের মতো কাজ করতে লাগলাম।উনি আরো কয়েকবার ডেকে যখন জবাব পেলো না তখন আমাকে টেনে রুমে নিয়ে যেতে লাগলেন।
উনি ঔষধ নিয়ে আমাকে খাওয়াতে আসলেন,আমি উনার হাত থেকে নিয়ে নিজে নিজে খেতে লাগলাম।উনি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললেন,,”কী হয়েছে?”
আমি শান্ত কন্ঠে বললাম,,”নীল কালার জামা পড়া আপু টা আপনার কে হয়?”
উনি একটু ভেবে বললেন,,”ও মিথি।ওর নামে মিথিলা,, কেনো কী হয়েছে?”
আমি শক্ত গলায় বললাম,,”উনি নাকী আপনার গার্লফ্রেন্ড??”
উনি একটু লজ্জা ভাব নিয়ে বললো,,”আসলে বিষয়টা তেমন নয়। একবার ডেয়ার হিসেবে মিথি আমার দুইদিনের জন্য গার্লফ্রেন্ড হয়েছিলো। ”
উনার ভাবভঙ্গি দেখে আমি রাগে ফেটে পড়লাম।উনাকে ধাক্কা দিয়ে উঠে বারান্দায় চলে গেলাম। উনি আমার পিছন পিছন আসলেন।আমার কাধে হাত দিয়ে বললেন,,”কী হয়েছে?তুমি এমন করছো কেনো?”
আমি উনার হাত ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।উনি আবারো হাত রাখতেই আমি আবারো সরিয়ে দিলাম। এবার উনি আমাকে শক্ত করে ধরে ওয়ালের সাথে চেপে ধরে বললেন,,”ভাবতে পারো,,আমার দুইদিনের গার্লফ্রেন্ডের কথা শুনে তোমার এমন লাগতেছে,,তাহলে তোমার দুইবছরের বয়ফ্রেন্ডের কথা শুনে আমার কেমন লেগেছে??”
.
.
.
চলবে???