ভালোবাসি পর্ব-১৭

0
5526

#ভালোবাসি
#পর্বঃ১৭
#Tanisha Sultana (Writer)

“শুনুন

” বলুন

“খাটের ওপর আপনার জন্য কিছু রেখে এসেছি দয়া করে ওগুলো পরে আসুন প্লিজ

” একটু পরে যায়

“নাহহ এখুনি যাবেন

” ওকে মহারানী

সায়ান তুলির কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে যায়। তুলি একটু হেসে চারপাশটা হেঁটে হেঁটে দেখছে। হঠাৎ কেউ তুলির মুখে স্পে দেয়। আর তুলি অঙ্গান হয়ে যায়।

সায়ান তুলির দেওয়া নীল শার্ট আর ঘড়িটা পরে ছাঁদে এসে দেখে তুলি নেই।

“তুলি কোথায় তুই? বেরিয়ে আয়

তুলির কোনো সারাশব্দ নেই। সায়ান এবার পাগলের মতো অবস্থা। এদিকওদিক ছুটোছুটি করে তুলিকে খুঁজতে থাকে। কোথাও তুলি নেই। সায়ান হাঁটু মুরে বসে কাঁদতে থাকে তখন সায়ান তুলির ভাঙা চুরি দেখে

” কেউ আমার তুলিকে কিডন্যাপ করেছে। কিন্তু কেনো? আমার তো কোনো শক্র নেই তাহলে

সায়ান পুলিকে বলে। আশেপাশে প্রচুর খুঁজে। কোথাও তুলি নেই

তুলির ঙ্গান ফিরতে তুলি নিজেকে কারো বুকে আবিষ্কার করে। কিন্তু এটা তো সায়ান না। সায়ানের স্পর্শ তুলি খুব ভালো করে চিনে। মানুষটা দেখার জন্য তুলি মাথা তুলে। তুলি রিককে দেখে ছিটকে দুরে চলে যায়। রিক সারা রাত তুলিকে দেখে কাটিয়ে দেয়। কিছুখন আগেই চোখটা লেগে গেছিলো।

“আপনি এখানে?
তুলি চারপাশটা দেখে বলে
” আমি এখানে কেনো?

রিক শার্ট ঠিক করতে করতে বলে

“আমি নিয়ে এসেছি

” মানে

“#ভালোবাসি তোমায়। তোমাকে অন্য কারো সাথে আমার জাস্ট সয্য হয় না। তাই তোমাকে সবার থেকে দুরে নিয়ে চলে এসেছি। এখন আর কেউ আমাকে আর তোমাকে আলাদা করতে পারবে না।

তুলি মাথায় হাত দিয়ে বসে। চোখ দিয়ে পানি পরছে।

” আপনি এটা না করলেও পারতেন স্যার। আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আমি একজনের স্ত্রী।

“মাই ফুট। তুমি আমার শুধু আমার

চেচিয়ে বলে রিক। তুলি কেঁপে ওঠে।
তুলির দুগালে হাত দিয়ে বলে

” আমি তোমাকে কতোটা ভালোবাসি তুমি বুঝতে পারছো না। কতোভাবে বুঝালাম তোমায়। পাগলের মতো তোমার পিছু ছুটলাম তাও তোমার মন পেলাম না। কেনো? সায়ান তোমার এতো অবহেলা করলো তবুও দিনশেষে তুমি তাকেই মন দিলে। কেনো তুলি? আমার দোষ কোথায়?

“স্যার আমি আপনার পায়ে পরি আমাকে যেতে দিন প্লিজ। সায়ান আমার জন্য চিন্তা করছে। আমার মা তো পাগল হয়ে যাবে আমার চিন্তায়। প্লিজ স্যার

তুলি রিকের পা ধরে। রিক তুলিকে উঠিয়ে বলে

” আমরা বিয়ে করে। একটা বেবি নিয়ে তোমার পরিবারের সামনে যাবো। তখন আর কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না

তুলি রিকের থেকে দুরে গিয়ে চিৎকার করে বলে

“এসব কিসের পাগলামি শুরু করছেন আপনি? আমি সায়ানকে ভালোবাসি। ও আমার স্বামী। আপনি কেনো আমাদের সংসার ভাঙতে চাচ্ছেন।

” তোতা পাখি চিৎকার করো না প্লিজ। ফ্রেশ হয়ে নাও আমি খাবার নিয়ে আসছি।

রিক বেরিয়ে যায়। দরজা বন্ধ করে দিয়ে যায়। তুলি সারারুম তন্নতন্ন করে খুঁজেও পালানোর মতো কোনো ফাঁকা খুঁজে পায় না

“কোথায় আপনি সায়ান। আমাকে নিয়ে যান প্লিজ। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।

তুলি কান্না করতে করতে বলে।

সায়ান পাগলের মতো এখানে ওখানে ছুটাছুটি করছে। সায়ানের পরিবারের সবাই ঢাকা চলে এসেছে। তুলির মা অনবরত কান্না করে যাচ্ছে। সায়ান ক্লান্ত হয়ে তুলির ছবি হাতে নিয়ে বসে পরে৷ সায়ানের মা সায়ানের কাঁধে হাত রাখে

” মা আমি তুলিকে কোথায় খুঁজবো। ও কি যানে না আমি ওকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারি না। আমি ওকে প্রমিজ করেছি কখনো ও কে বকবো না। তারপরও এমটা কেনো হলো

“আল্লাহর ওপর ভরসা রাখ। ঠিক খুঁজে পাবি তুলিকে

সায়ান মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে।

দুই হাঁটুর মধ্যে মুখ গুঁজে বসে আছে তুলি। দরজা খোলার শব্দে মাথা তুলে তাকায়। রিক খাবার নিয়ে তুলির কাছে বসে। রুটি টুকরো করে ভাজি দিয়ে তুলির মুখের সামনে ধরে

” খেয়ে নাও

“আমাকে যেতে দিন প্লিজ।

তুলি কেঁদে বলে। রিক জোরে তুলির গালে একটা থাপ্পড় মারে আর তুলি ছিটকে পরে যায়। ঠোঁট কেঁটে রক্ত বের হয়।

” আর একবার যদি যেতে দিতে বলো তো এর চেয়ে খারাপ কিছু হবে।

রিক বেরিয়ে যায়। ভুল করে ফোন ফেলে যায়। তুলি ফোনটা হাতে নিয়ে সায়ানের ফোনে ফোন দেয়। দুইবার রিং হওয়ার পরে সায়ান ফোন তুলে।

“সায়ান সায়ান আমাকে নিয়ে যাও প্লিজ

” তুলি কোথায় তুই? একবার বল আমায়

“আমি যানি না। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে প্লিজ নিয়ে যাও

” তুই শান্ত হ তুলি। আমি থাকতে তোর কিচ্ছু হবে না। তুই চারপাশটা দেখে বল কোথায় তুই

“আমাকে রুমে আটকে রেখেছে। এই রুমে আলোবাতাস ঢোকারও জও নেই

রিক তুলির হাত থেকে ফোনটা নিয়ে যায়

” সায়ান ভাই

“রিক তুই

” হুম আমি। বলছিলাম কি ডিভোর্স পেপারটা পাঠিয়ে দেবো সাইন করে দিও। আর হ্যাঁ আরেকটা বিয়ে করে নাও কারণ তুলি আমার শুধু আমার

“রিক ভাই আমার। আমার তুলিকে প্লিজ ছেড়ে দে। প্লিজ রিক

রিক সায়ানের আকুতি মিনতি শুনে না। ফোন কেটে দেয় আর সিম অফ করে দেয়। তুলি কাঁদতে কাঁদতে বসে পরে।

সায়ান পাগলের মতো দৌড়ে বের হয়। সায়ানের বাবা আটকে দেয়

” কোথায় যাচ্ছো এখন

“বাবা আমার তুলি আজ আমার সাথে কথা বলছে। ওকে রিক ধরে নিয়ে গেছে। খুব কাঁদছিলো। খুব কষ্ট আছে ও।

” কোথায় আছে

“জানি না বাবা। আমি তুলিকে ফিরিয়ে আনবোই

সায়ান বেরিয়ে যায়।

রিক তুলির জন্য অনেক গুলো ড্রেস নিয়ে আসে

” কোনটা পরবে তুমি

তুলি একমনে তাকিয়ে আছে

“এই তুলি বলোনা

তুলি সবগুলো ড্রেস ফেলে দেয়।

” আমার এসব কিছু চায় না। শুধু সায়ানকে চায়। আমি সায়ানের কাছে যাবো। জোর করে কিছু পাওয়া যায় না। কেনো জোর করছেন। আমি কখনো আপনাকে ভালোবাসবো না

“ভালোবাসতে হবে না আমার সাথে থাকলেই হবে

নাম্বারের লোকেশন দেখে সায়ান পুলিশ নিয়ে ঢাকার থেকে কিছুটা দুরে নদীর পার পর্যন্ত চলে যায়। আশেপাশেই রিকের বাড়ি।

” পুলিশ ওই বাড়িটাই হবে

“চলেন

পুলিশ পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে। সায়ান বাড়ির দরজা খুলেই চমকে ওঠে

চলবে