#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_২৫_অন্তিম_পর্ব
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা।
,
৫ দিন পর,
বাড়িতে বিয়ের ঝোড় পড়েছে।
সবাই নানান কাজে ব্যাস্ত,
নায়লা রহমান নিজ হাতে পুরো বাড়ির সাজের দায়িত্ব নিয়েছে,
আবির খান, আর বাবর চৌধুরী মিলে বাহিরের কাজ সামলাচ্ছে।
এতো তোড়জোড় এর মাঝে, এতো আনন্দের মাঝে আজিজ রায়হান যেন সুস্থ হয়ে যাচ্ছে,
আজ ওদের বিয়ে,
চার জন কে অসাধারণ সুন্দর দেখাচ্ছে।
–কারোর নজর না লাগুগ আমার ছেলে মেয়ের উপর(নায়লা রহমান)
–তোমার সন্তান আমরা কোন কু নজর চাইলেও লাগতে পারবে না (নীল)
–হুম নীল ভাইয়া ঠিক বলেছে মা(পৃথুলা)
সমস্ত নিয়ম আর সমস্ত বিধি মেনে চার জনের বিয়ে সম্পন্ন হলো ।
বাড়িতে খুশি আর আনন্দের সমাহার।
সত্যি আজ সঠিক রুপে পূর্ণতা পেলো ভালোবাসা গুলো
।
ভালোবাসলে ঠিক প্রিয় মানুষের হাত ধরে এভাবেই কাটিয়ে দিতে হয় সব বাঁধা বিপত্তি।
।
।
।
একটি ফুলে সজ্জিত খাটে বঁধু সাজে বসে আছি আমি।
সামনে ইয়া বড়ো একটা ঘোমাটা৷
আজ কেন জানি না প্রচুর নার্ভাস লাগছে।
কেমন ঘামছি আমি এই শীতে,
এতো নার্ভাস কখনো ফিল হয় নি।
প্রয়নের সাথেই তো থাকছি কিন্তু আজ কেন জানি না একটু বেশি ভয় কাজ করছে ভেতরে।
এতো সতো ভাবছি এর মধ্যে হটাৎ প্রেয়ন দরজা খুলে আসলো,
এবার হার্টবিট যেন ২× জোরে বাজছে।
ভয় হচ্ছে আমার সাথে কেমন যেন লাগছে।
–পৃথু।
আজ প্রেয়নের গলার শুর যেন আরো বেশি মায়াবি লাগছে।
পৃথু বলেতো উনি সব সময় ডাকেন কিন্তু এমন তো কখনো শুনি নি।
আল্লাহ এগুলা কি হচ্ছে আমার সাথে,
উনি এক দু পা করে আমার দিকে এগিয়ে এলেন।
আমার ঘোমটা টা খুলে দিলেন,
আমি হাবলার মতো তাকিয়ে আছি ওনার দিকে,
আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে একটা টানে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন আমাকে,
–সকাল থেকে পাগলের মতো দেখছি তোমায় এতো যে ইচ্ছে হচ্ছিলো একটু ছুয়ে দেখতে কিন্তু পারি নি শুধু নিয়মের জন্য।
এখন সময় নয়ম শেষ আমার বাঁধাও শেষ।
আই ওয়ান্ট উ পৃথু।
মায়া এবং নেশা মিশ্রিত কন্ঠে কথাটা বললেন উনি৷
এবার আমার হার্টবিট নিশ্চিত উনি শুনতে পাচ্ছেন,
–ভালোবাসিস আমায়,
–অনেক বেশি।
–কখনো ছেড়ে যাবি না তো?
–জীবন থাকতে না।
উনি আমার থেকে গয়না গুলো খুলে নিলেন।
ওনার সাথে পাড়ি দিলাম ভালোবাসার এক রঙিন জগৎ।
পূর্ণ পূর্ণিমার রাতে নাম পেলো তাদের ভালোবাসা।
।
।
।
–রাইমা৷
–জি৷
–দেখো চাঁদ টাকে সুন্দর তাই না।
–হুম।
–কিন্তু আমার চাঁদ থেকে না।
–আচ্ছা আমি আপনার চাঁদ।
–তার থেকেও বেশি কিছু৷
–নীল একটা কথা বলবো।
–হুম বলো।
–ভালোবাসি।
–কি বললে!
–বললাম ভালোবাসি।
–রাইমা সত্যি বলছো।
নিজের কানকে বিশ্বাস হচ্ছে না এটা তুমি বলছো।
–সত্যি খুব বেশি ভালোবাসি।
–আমিও।
সারাটা রাত দু’জনে চাঁদের আলোতে গল্প করেছে সত্যি ভালোবাসা অসাধারণ হয়।
।
।
।
১ বছর পর,
–নীল জলদি হসপিটাল আসুন আপুর প্রচুর পেইন উঠেছে।
–এই তো মাত্র ৫ মিনিট আমি এক্ষুনি আসছি।
উত্তেজিত অবস্থায় ছটফট করছে পৃথুলা।
প্রেয়ন পৃথুলাকে পাজকোলে করে গাড়িতে বসালো।
ওরা হসপিটালের উদ্দেশ্য রাউনা হলো,
হসপিটালে পৌঁছে,
পৃথুলাকে সার্জারী করতে নেওয়া হলো,
প্রেয়ন একটি বেঞ্চে বসে পড়লো,
–ভাইয়া চিন্তা করবেন না কিছু হবে না।
–জানি না রাইমা তেমার বোনকে নিয়ে ভয় হয়।
ওর মুখটা দেখেছো কেমন চুপসে গেছে।
–চিকন মানুষ দের এমন একটু হয় ওটা কোন বিষয় না আপনি চিন্তা করবেন না।
নীল দৌড়াতে দৌড়াতে হসপিটালের ভেতরে প্রবেশ করে,
প্রেয়ন আর রাইমাকে বসা দেখে ছুটে যায়,
–ভাই ভাবি কেমন আছে?
–সার্জারী করতে নেওয়া হইছে। জানি না রে কি হবে।
–এমন বলছো কেন ভাই প্রে করো।
ভেতর থেকে সমানে পৃথুলার চিৎকার শুনতে পাচ্ছে সবাই।
রাইমা শুধু হাঁটাচলা করছে।
নীল ও স্থির নেই।
প্রেয়ন তো পাথর হয়ে গেছে।
পৃথুলার এক একটা চিৎকার প্রেয়নের হৃদয় টাকে ক্ষত বিক্ষত করে চলেছে,
কিছু সময় পর,
–মি.খান অভিনন্দন আপনার ছেলে হয়েছে।
ডক্টর প্রেয়নের কোলে তার ছেলেকে দিলো।
আনন্দে চোখ থেকে পানি পড়ছে প্রেয়নের।
–আমার স্ত্রী।
–আল্লাহর রহমাতে সুস্থ আছেন।
–রাইমা৷
রাইমা এগিয়ে বাবুটাকে কোলে নিলো।
নীলও।
তার পর প্রেয়ন বাবুকে কোলে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো,
চোখ দুটো বন্ধ করে শুয়ে আছে পৃথুলা।
প্রেয়ন গিয়ে পৃথুলার পাশে বাবুটাকে নিয়ে বসলো,
–পৃথু,
প্রেয়নের ডাক শুনে পৃথুলা চোখ মেলে তাকালো,
–আমাদের বাবু।
–আমাদের বাবু (ছল ছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
–হুম।
আমি বাবুটাকে কোলে নিলাম।
প্রেয়ন আমার হাতের উপর শুইয়ে দিলো বাবুটাকে,
কি নিষ্পাপ এ মুখটা।
আমি আলতো চুমু দিলাম বাবুটার কপালে।
–ভালোবাসি পৃথু৷
–আমিও।
,
,
৫ বছর পর,
–আরাব বাবা তুমি এতো দুষ্টামি কেন করো ছোট মায়ের কথা শুনতে হয়।
–না তুমি পঁচা আমাকে শুধু খেতে বলো।
–আচ্ছা এই এক বার বাবা আর বলছি না।
–বনুকে আমার কোলে দেও তাহলে,
–তুমি পারবে বনুকে (পৃথুলা)
–হ্যাঁ পারবো দেও না ছোট মা।
–আচ্ছা আপু দে ওর কোলে,
–এদিকে এসো বসো,
আরাব গিয়ে সোফায় বসে পৃথুলা আরাবিকে আরাবের কোলে দেয়,
(আরাব প্রেয়ন পৃথুলার ছেলে আর আরাবি ১ বছরের মেয়ে নীল রাইমার)
–আরাব বাবা দেখো ছোট বাবা তোমার জন্য কি এনেছে। (নীল)
–চকলেট
–হুম নিয়ে যাও।
–চকলেট গুলো খুব সুন্দর বাবাই।
প্রেয়ন গিয়ে আরাবি কে কোলে নেয়।
–আল্লাহ মেয়েটা আমার বড়ো হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
–নজর দিও না মা বাবার ভালো কথা বাচ্চাদের সমস্যার কারন হয়।
–হুম তাও ঠিক আরাবি মা আরাবি,
বাবুটা খিল খিল করে হাসছে প্রেয়নের দিকে তাকিয়ে,
–ভাই তুমি জানো এখনো নিজেকে সিঙ্গেল মনে হশ মনেই হয় না একটা বউ সাথে দুটো বাচ্চা আছে আমার (নীল ভাব নিয়ে কথাটা বললো)
–বাবা বুড়ো ব্যাটা চুলে কলপ দিয়ে নিজেকে কচি মনে করার সখ হচ্ছে নাকি (রাইমা)
–ও মা এখনো বাসার সামনে মেয়েদের লাইন লেগে যাবে ভাব নিয়ে দাঁড়ালে হুম।
–নেও হইছে তোমার কপালে দিন শেষে ওই রাইমাই আছে।
–সেটাই তো কথা।
–মার খাবা।
–না তুমি ভালো মানুষ বড়ো ভাই আপুর সামনে মারতে চাও।
প্রেয়ন পৃথুলা এগুলা দেখে হাসতে হাসতে খুন।
–ভাই তোরা থাম আর কতো হসাবি (পৃথু)
–ভাবি বোন একটা তোমারি ছিলো।
–হ্যাঁ পাগল হয়ে বিয়ে কিন্তু তুমি করেছিলা ভাই।
–তা অবশ্য ঠিক।
–হুহ। (রাইমা)
–তোরা কি শুরু করলি আমার দাদু ভাই আর দিদি ভাই কই? (নয়লা রহমান)
–এই তো মা।
মা নামাজ পড়ে এসে আরাব আর আরাবির কপালে ফু দিয়ে ওদের নিয়ে বসে।
দাদি দাদা রা ওদের খুব প্রিয়।
এর মতো ফ্যামেলি মোমেন্ট আর আছে বলো।
,
রাতে,
আরাব কে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে চুল বাঁধছি।
পেছন থেকে প্রেয়ন এসে কোমড় জড়িয়ে ধরলেন,
–পৃথু,
–হুম।
–তোর আমার ভালোবাসার একটা নাম আছে জানিস।
–কি নাম?
–#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
–আচ্ছা তাই নাকি।
–হুম। এ সুতো কখনো ছিঁড়বে না।
কথাটা বলেই উনি আমার ঘাড়ে নুখ ডুবালেন।
পাড়ি দিলাম ভালোবাসার সাগর।
_____________সমাপ্ত______________
(গল্পটা আমার লেখা প্রতিটি গল্পের মধ্যে খুব প্রিয়। আমি নিজ থেকেই ফিল করি এাট।
গল্পটা লিখেছি সব থেকে বড়ো গল্প আমার সব গুলো গল্পে ২০ এর উপরে পর্ব নেই।
এটাই প্রথম।
আসা করি পুরোটা গল্প আপনাদের মনের মতো করাতে সক্ষম হয়েছি।
ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
যদি কখনো হারিয়ে যাই অন্য কিছুর মাঝে খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
অনেক অনেক ভালোবসারা আমার পক্ষ থেকে সবার জন্য 💖💖💖)