সাইকো_নীড় পর্ব-২১

0
3029

#সাইকো_নীড়
part : 21
writer : Mohona

.

নীড় : so no drama…. হা করো…
নীড় জোর করে খাইয়ে দিলো।
নীড় : ওজন কতো কিলো কমিয়েছো বলো তো….
মেরিন : …
নীড় : by the way sorry ….
মেরিন : ….
নীড় : জিজ্ঞেস করবেনা কেন sorry বলছি?
মেরিন : …
নীড় : না না সব মিথ্যা বলিনি। ওই physical relation এর কথা মিথ্যা বলেছিলাম। ওই টাত সাচের কথা মিথ্যা ছিলো…. 😅…
মেরিনের ইচ্ছা করছে ঠাটিয়ে নীড়কে থাপ্পর দিতে।
নীড় : কি হলো? কিছু বলো।
মেরিন : একটু একা থাকতে দিবেন প্লিজ?
নীড় : হামমম।
নীড় বেরিয়ে গেলো।

.

পরদিন…
নীড় : একি… তুমি নিচে শুয়ে আছো কেন বেড ছেরে? এর মানে তুমিই নিচেই ঘুমিয়েছিলে….?
মেরিন : …
নীড় : ঠান্ডা লেগে গেলে… উফফ। দেখি দেখ জ্বর ট্বর এলো কিনা?।
মেরিন : আপনার কি মনে হয়না যে আপনি একটু বেশিই ন্যাকামো করছেন…. যেমনটা আপনি নয় তেমন সাজছেন কেন?
নীড় : কোন গো snow white …. আগে কি কখনো care করিনি? তবে হ্যা… তোমাকে ভয়ংকর শাস্তি দিচ্ছিনা এটাই আলাদা । তবুও এটা বেশদিন স্থায়ী হবেনা my জান…. যাই হোক এখানে ৭দিন থেকে আমরা আমাদের বাসায় যাবো। ।
মেরিন : …
বলেই নীড় মেরিনের ২হাত নিয়ে তাতে মুখ গুজলো। মেরিন ভেবে পায়না যে নীড় ওর হাতে কিসের ঘ্রাণ নেয়? আর কেন এভাবে কিস করে? নীড় অনেরক্ষন ধরে মেরিনের হাতে কিস করলও আর ঘ্রাণ নিলো। এরপর ছারলো।
নীড় : i just love you… & i need you very badly….

কথা গুলো নীড় মেরিনের চোখে চোখ রেখে বলল। এক অন্যরকম নেশা কাজ করছে নীড়ের চোখে । আর নীড় মেরিনের চোখে অনেকটা কষ্ট দেখতে পাচ্ছে। নীড়ের নেশা থেকে বাচতে মেরিন চোখ ঘুরিয়ে নিলো।

মেরিন : আপনি কাউকে ভালোবাসতে পারেন না।
নীড় মেরিনের চিবুক ধরে নিজের দিকে ঘুরালো।
নীড় : যেদিন তুমি আমার চোখে কষ্ট দেখতে পারবে সেদিন আমাকে বুঝতে পারবে… ভালোবাসবে…
বলেই নীড় মেরিনের ঠোটে কিস করে চলে গেলো।

দেখতে দেখতে ৭দিন কেটে গেলো। নীড় মেরিনকে নিয়ে গেলো চৌধুরী বাড়িতে।

.

নিহাল : আমার মামনি এখন থেকে আমার বাড়িতেই থাকবে। এর থেকে ভালো আর কি হতে পারে? নীড়….
নীড় : হ্যা বাবা…
নিহাল : রাগটাকে control করো…
নীড় : sorry বাবা এটা সম্ভবনা। আসছি। ১টা মিটিং আছে।।
বলেই নীড় চলে গেলো।

ড্যানি : স্যার … স্যার…
নিহাল : হ্যা বলো…
ড্যানি : স্যার এইযে সব প্রমান… সেদিন রাতের…
নিহাল : দেখি…
নিহাল সব দেখলো।
নিহাল : নীড়ের গাড়ির সাথেই যে কবিরের গাড়ির accident হয়েছিলো সেটা পুলিশ আর মেরিন তো দূরের কথা… নীড়ও যেন না জানে… অপরাধবোধ ওকে কুরে কুরে খাবে। আর মেরিন জানলে….

.

বিকালে…
মেরিন : uncle আসবো?
নিহাল : আরে মামনি আসো…
মেরিন : uncle … আসলে… আমি আমাদের বাসায় চলে যেতে চাই।
নিহাল : এটা কি তোমার বাসা না?
মেরিন : …
নিহাল : বিয়ের পর তো তোমাকে এ বাড়িতেই থাকতে হবে। তাইনা?
মেরিন : …
নিহাল : কোনো সমস্যা হচ্ছে?
মেরিন : না না uncle তা না।
নিহাল : আমার ছেলেকে নিয়ে ভয়? ভয় নেই । ও তোমার সাথে এমন কোনো আচরন করবেনা।
মেরিন : আসলে…
নিহাল : দেখো তোমাদের বাসায় তুমি একা কি করে থাকবে বলো তো? আর কবির আর আমি তো সেদিন তোমার আর নীড়ের বিয়ের দিন ঠিকও করে ফেলেছিলাম… যদি accident টা না হতো তবে তুমি এতোদিনে এই বাড়ির বউ হয়েও যেতে।
মেরিন : ….
নিহাল : তবুও যদি তোমার uncomfortable লাগে তবে কালকে পরশু তোমাকে বাসায় পৌছে দিবো। আজই তো কেবল এলে… ২-৪দিন থাকো । তারপর না হয় যেও।
মেরিন : হামম।
মেরিন রুমে চলে গেলো।

.

পরদিন…
নীড় : snow… এ বাসায় থাকলে তোমার সমস্যা টা কোথায়? ওখানে একা থাকলে কতো ধরনের বিপদ হতে পারে জানো…
মেরিন : আপনার থেকে বড় বিপদ আমার জন্য আর কিছু নেই…
কথাটা শুনে নীড় বেরিয়ে গেলো। ১ঘন্টা পর ফিরে এলো। মেরিনের হাত ধরে টানতে টানতে নিচে নিয়ে গেলো।

মেরিন : কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? কি হ…
মেরিন দেখলো নিচে প্রেস-মিডিয়া সারিবদ্ধ ভাবে বসে আছে।
মেরিন : এসব কি?
নীড় : ভুলের সংশোধন… এটা আগেই করা উচিত ছিলো। করলে হয়তো সব ঠিক থাকতো। come with me…

নীড় : আমি প্রশ্নের জবাব দিতে পছন্দ করিনা… আর না কাউকে কৈফিয়ত দিতে পছন্দ করি । but its about me snow white … আমি চাইনা আমার snow white এর দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাক…

নীড় মেরিনের কাধে হাত রাখলো ।
নীড় : meet… মিস মেরিন বন্যা খান । আমার fiance… আমার love, আমার life… আমার সব কিছু। চোখ তুলে তাকানোর আগে আমার নামটা মনে করবে সবাই । নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের কলিজার দিকে যে নজর দিবে তার কলিজে বের করে ফেলবো। i repeat …. কলিজা বের করে ফেলবো । mind it…. the press conference is over.. all of you… out please ….

.

মেরিন : এসবের মানে কি ?
নীড় : তোমার safety…
মেরিন : সবার সাথে দুশমনি করে নিজের আর পরিবারের বিপদ বারাচ্ছেন … সেটা কি জানেন?
নীড় : বর্ষনের থেকে বিপজ্জনক কিছু নেই।
মেরিন : …
নীড় : তোমার মুখ দেখে মনে হচ্ছে কিছু বলতে চাও… বলো।
মেরিন : কিছুনা…
নীড় : বলতে বলেছি তো…
মেরিন : না মানে… আপনার কাকা-কাকী আর কাজিনরা কোথায়?
নীড় : কাকী তার kitty party , seminar নিয়ে ব্যাস্ত… নিরব-নির্ঝর আছে ওদের ভবের দুনিয়ায়… যখন মন চায় আসে। মন চাইলে abroad চলে যায়….
মেরিন : oh…
নীড় : কেন?
মেরিন : এমনিতেই…
নীড় : ন্যাহ… তুমি এমনিতেই জিজ্ঞেস করোনি…. এর পিছে কারন আছে। কারন এই পরিবার তোমাদের পরিবারের মতো নয় ।

২-৩দিন থেকে মেরিন বাসায় চলে গেলো।
⛈️⛈️⛈️
]

.

বর্তমান…
মেরিন join করলো। মুখে মাস্ক আর চোখে কালো চশমা পরলো।

দীপ্ত : নীড় ৭নম্বর রোগী। আজকে থেকে ও তোমার দায়িত্ব…
মেরিন : জী মামা…
দীপ্ত : আপাদত নীড়ের সামনে যেন তোমার চেহারাটা না আসে। সেটা খেয়াল রাখবে।
মেরিন : হামমম …

মেরিন ভেতরে গেলো।

ভম্বল মেরিনকে দেখে ভয় পেয়ে গেলো ।
ভম্বল : আআআ… ডাকাত… ডাকাত…
ভম্বল দৌড় সবার কাছে গেলো।

বিমল : এই তোর কি হয়েছে রে?
শ্রাবন : ও মনে হয় আকরাম পাগলকে দেখেছে…
নীড় : ইহিহিহি… আকরাম তো পাগলনা পাগলনা… পাগলের জাতগুষ্ঠি…. ইহিহিহি….
ভম্বল : আমি ডাকাত দেখেছি ডাকাত…

সবাই : ডাকাত?
ভম্বল : হ্যা হ্যা… ওই দেখো…
সবাই তাকালো। মেরিনকে দেখলো
সবাই : আআআ… ডাকাত ডাকাত। সবাই position নাও…

অভি : আমি বল দিয়ে মারবো…
শ্রাবন : আমি মার্বেল ছুরে দিবো। পিছলে পরে যাবে….
ভম্বল : কি মজা… কি মজা… এই নীড় তুই কি দিয়ে মারবিরে?
নীড় : pillow দিয়ে… ইহিহিহি … ইহিহিহি…

মেরিন : আমাকে দেখি সবাই পিটানোর plan করছে। কি করেছি আমি হামম হামম?
সবাই : কারন তুমি ডাকাত…
মেরিন : হাহাহা… কে বলল আমি ডাকাত? আমি তো তোমাদের বন্ধু …
সবাই : মিথ্যা কথা…. তাহলে তু্মি চোখ-মুখ ঢেকেছো কেন!!!
মেরিন : কারন আমার চোখে আর মুখে infection হয়েছে… আমি যদি এগুলো না পরি তবে তো তোমাদেরও infection হতে পারে… তাইনা? তাইতো আমি মাস্ক আর কালো চশমা না পরি তাহলে পচা পচা পোকা গিলো তোমাদের ওপর চলে যাবে… তবুও যদি তোমরা চাও তবে আমি এগুলো খুলেই ফেলছি…

সবাই : না…📢📢📢…

মেরিন : তোমরা কি আমার বন্ধু হবে?
সবাই : উহু উহু…
মেরিন : কেন কেন ? আমার সাথে বন্ধুত্ব করলে আমি তোমাদের সাথে মিলে ওই ডক্টর আকরামের band বাজাবো…

সবাই : সত্যি?
মেরিন : সত্যি সত্যি ৩ সত্যি। হবে আমার বন্ধু…?

সবাই : হামমম।
মেরিন : কে কে হবে আমার বন্ধু ?
সবাই : আমি আমি আমি….

মেরিন : আমার নাম… অরিন… তোমাদের নাম কি…? একে একে সবাই বলো তো….

সবাই একে একে বলল। কিন্তু নীড় কিছু বললনা।

মেরিন : কি হলো? তুমি তোমার নাম বলবেনা?
নীড় মাথা নেরে না করলো।
মেরিন : কেন?

ভম্বল হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে মেরিনকে সামনে ডাকলো ।
মেরিন : কি হয়েছে?
ভম্বল ফিসফিস করে
বলল : আসোনা…
মেরিন গেলো। ফিসফিস করে
বলল : বলোনা…
ভম্বল মেরিনের কানে কানে
বলল : নীড় কোনো মেয়েদের সাথে কথা বলেনা…
মেরিন : কিন্তু কেন?
ভম্বল : কারন ওর পুন্টুস রাগ করে…
মেরিন : ওওও । হামমম। thank you ভম্বল। এই নাও তোমার চকোলেট….
ভম্বল : hip hip hurray…
বাকীরা : আমাদের টা..?
মেরিন সবাইকে ১টা ১টা করে দিলো। last chocolate নিয়ে নীড় সামনে গেলো।

.

মেরিন : সবাই আমাকে নিজের নাম বলল। তুমি কেন বললে না?
নীড় : ….
মেরিন : কিন্তু আমি কিন্তু তোমার নামটা জানি…
নীড় : …
মেরিন : তোমার নাম নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। তাই তো…
নীড় মনে মনে : এই ডাকাত টা কি করে জানলো?
মেরিন : তোমাকে কি চকোলেট দেয়া ঠিক হবে…?
নীড় : পুন্টুস বলে দে তো যে অন্যকারো চকোলেট আমি নেইও না… huh…
মেরিন : পুন্টুস.. এই চকোলেট গুলোনা ভীষন yummy….. নীড় যখন নিবেই না তখন আমিই খেয়ে ফেলি…

নীড় মনে মনে : এটাতো দেখি ডাকাতের সাথে সাথে রাক্ষসও ।
মেরিন : খেয়েই ফেলি…
নীড় মেরিনের হাত থেকে চকোলেট নিয়ে দে দৌড়। কিছুটা দূর গিয়ে থামলো। মেরিনের দিকে ঘুরলো।

নীড় : ন্যান্যান্যান্যা ন্যান্যান্যান্যা….

মেরিনকে ভেংচি দিয়ে নীড় পালিয়ে গেলো।
মেরিন : কি অদ্ভুদ মায়া ভরা চেহারা? সে কি সত্যি আম্মু-বাবাকে খুন করেছে ? মেরিন… practically ভাব… সবসময় সেটা হয়না যেটা দেখা যায়… আর সেটাই হয় যেটা দেখা যায়না…. তবে সবটা জানতে হলে… নীড়কে সুস্থ করে ফেলা জরুরী… আর নীড়কে সুস্থ করতে হলে আগে নীড়ের সাথে friendship করাটা জরুরী…

.

অতীত…
[
⛈️⛈️⛈️
মেরিন : আফরিন… আরো patient আছে?
আফরিন : জী ম্যাম…
মেরিন : কি সমস্যা জানো?
আফরিন : মানসিক যন্ত্রনা…
মেরিন : সাথে কি কেউ এসেছে? নাকি একা?
আফরিন : না ম্যাম একা নয়। মনে হচ্ছে সাথে ছেলে এসেছে।
মেরিন : ok। আগে দেখো যে medical history সাথে এনেছে কিনা? আগে medical history টা দিতে বলবো।
আফরিন : sure mam…

আফরিন medical history দিয়ে গেলো।
দেখলো patient এর নাম নীলিমা আহমেদ চৌধুরী ।
মেরিন : পাঠিয়ে দাও।

আফরিন : sure mam…

পর মুহুর্তেই নীলিমা আর নাবিল ঢুকলো।
নাবিল : whats up sweety…
মেরিন : good… ভালো আছেন আন্টি?
নীলিমা : হামমম।
নাবিল : মামনি… মেরিনের মতো best psychiatris কোথাও পাবেনা। হ্যা হয়তো আরো বড় বড় ডিগ্রি ওয়ালা ডক্টর আছে । তবে মন দিয়ে treatment করার মতো মেরিনের মতো কেউ নেই।
নীলিমা : i know … তাই জন্যেই তো…
মনে মনে : তাই জন্যেই আমার ছেলেটা ওকে ভালোবেসেছে…

মেরিন : মিস্টার রায়হান আপনি বারিয়ে বলছেন… আপনারা বসুন…
২জন বসলো।
মেরিন : আন্টি আপনার কি সমস্যা?
নাবিল : মামনির… রাতে ঘুম হয়না। মাঝেসাঝে ২-১ঘন্টার জন্য ঘুমায় । তবে তা খুবই কম। মানসিক অস্থিরতা তো আছেই…
মেরিন : আর…
নাবিল : বলো মামনি…
নীলিমা বলল।
মেরিন : if you don’t mind…. আমি আন্টিকে hypnotize করতে পারি…. আমার মনে হচ্ছে আন্টি ঠিক মতো বলতে পারছেননা…. ঠিক মতো প্রকাশ কপতে পারছেন না…. মিস্টার রায়হান আপনি সাথে থাকতে পারেন… can i?
নাবিল : sure….

.

মেরিন নীলিমাকে hypnotize করলো। নানাধরনের প্রশ্ন করলো। নীলিমার সব জবাবেই মেরিন অনেক অবাক হলো। নীলিমা নিজের নাম নীলিমা নিহাল চৌধুরী বলেছে, স্বামীর নাম নিহাল আহমেদ চৌধুরী বলেছে, সন্তানের নাম নীড় বলেছে। এছারাও বাকী প্রশ্নের জবাবেও মেরিন just shocked হয়ে গিয়েছে । মেরিন নীলিমাকে নরমাল করলো। ছোট ছোট কিছু টেস্ট দিলো। তারা বেরিয়ে গেলো।

মেরিন : what is all this? নীলিমা আন্টির মনে কোথাও ই তো মিস্টার জহির রায়হানের কোন অস্তিত্বই নেই… তাহলে?

তখন রেগে আগুন হয়ে নীড় ঢুকলো।
নীড় : ওরা এখানে কেন এসেছিলো? 😤।
মেরিন : নীড় আপনি আমার personal life এ সবসময় মাথা ঘামান, এমনকি পরিচালনাও করেন। এতে আমার কিছুই করার নেই । কিন্তু প্লিজ আমার professional life এ please interfere করবেন না…
নীড় : যেখানে তুমিই সম্পুর্ন আমার সেহেতু তোমার personal & professional সব life এই আমি interfere করবো। got it… এখনই ২জনকে আ….
মেরিন : নীলিমা আন্টি ভীষন অসুস্থ….

.

চলবে…