#পরিণীতা
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ১৯
৩৭.
অর্ণব পরীকে ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখে। কারো আসার শব্দ পেয়ে ই আদি পরীকে ফেলে দিয়ে দূরে সরে যায়। অর্ণব পরীকে অভাবে পরে থাকতে দেখে দ্রুত কী উঠায়।অনেকটা উত্তেজিত হয়ে বলে,
–কী হয়েছে পরী। কীভাবে পরে গেলে।
আদিকে আমি ভালোভাবে চিনি কোনো প্রমাণ ছাড়া আঙ্গুল তুললে আমাকে ই ভুল বুঝাতে পারে অর্ণবকে প্লাস বাড়ির সবাইকে। তাই এখন বলাটা ঠিক হবে না। কথাগুলো মনে মনে বলে অর্ণব উওর দেয়।
—শাড়ির মধ্যে পা লেগে পড়ে গিয়েছি।
–দেখে হাটবে তো ব্যাথা পেয়েছো অনেক।
–না তেমন কিছু হয়নি।
অর্ণব পরীকে রুমে নিয়ে যায়। বেডে বসিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে,
–পরী তোমার কী এবাসায় থাকতে অসুবিধা হচ্ছে, হলে বলো আমরা অন্য কোথাও থাকবো।
–শ্বশুর শাশুড়ী নিয়ে সংসার করতে চাই অর্ণব স্বার্থে পরের মতো নিজের জন্য মা বাবা মনে কষ্ট দিতে চাই না। জানেন তো আমার মা বাবা নেই কিন্তু আমি আপনার মা বাবাকে নিজের মা বাবা হিসেবে ই মনে করি। আমি চেয়েছিলাম আমার একটা পরিবার হক, হয়েছে ঠিক ই কিন্তু একটু সমস্যা আছে আশা করি আপনি আমার পাশে থাকলে এই সমস্যা গুলো কিছু না।
–মা বাবা হিসেবে ই মনে করি কী, আমরা তোর মা বাবা ই। আমার মেয়ে নাই আমি চাই আমার দুই ছেলের বউ আমার মেয়ের মতো ই এবাড়িতে থাকুক।।।
অনিতা চৌধুরীএই কথাগুলো বলে রুমে ডুকলেন। পরী ফ্লোরে পরে ছিলো শুনে অনিতা বেগম এসেছিলো দেখতে। পরীর কথাগুলো শুনে অনিতে চৌধুরীর চোখে পানি এসে পড়ে, এই যুগে এমন মেয়ে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।।
আচ্ছা তোমরা কথা বলো আমি অফিসে যাচ্ছি।।। পরী তুমি মায়ের সাথে ই থেকো। মা আপনি পরীর খেয়াল রাখবেন। আমি যাই অফিসে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে। বলে ই অর্ণব চলে যায়। অনিতা বেগম পরীর সাথে কথা বলতে বসে পড়ে।
দুইমিনিট পর ই অর্ণব এর নম্বর থেকে পরীর ফোনে মেসেজ আসে। অভাগ হয়ে পরী ফোন হাতে নিয়ে মেসেজ চেক করে। মেসেজে লিখা ছিলো “” দরজার দিকে এমন ভাবে তাকাও যেনো মা না বুঝতে পারে।””
পরী উওরে লিখে”” কেনো””
লিখে ই আর চোখে তাকায়। অর্ণব দরজায় এসে একটা ফ্লাইং কিস দিয়ে আবার চলে যায়। পরী চোখ বড় বড় করে দরজার দিকে তাকায়।
–কী হলো পরী কেউ এসেছিলো কী এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।
পরীকে এভাবে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকতে দেখে প্রশ্নটা করে অনিতা।
–কিছু না মা।।
বেশ কিছুক্ষণ গল্প করে অনিতা চৌধুরী চলে যায়।।। পরী রুমের দরজা আটকে বসে থাকে। জানে আদি যেকোনো সময় রুমে ডুকে যেতে পারে।
৩৮.
অর্ণব বেশ কয়েকবার কল দিয়েছে। কী করে খেয়েছে কী না প্রায় সব ধরনের খুজ খবর ই অর্ণব রেখেছে।
রাতে তো পরীকে রান্না করতে হবে। সন্ধ্যা হয়ে গেছে, কিন্তু পরী এখন ও রুম থেকে বের হচ্ছে না আদির ভয়ে। আর কতো রুমে বসে থাকবে দুপুরের খাবার ও চম্পা রুমে দিয়ে গেছে।
সব চিন্তাকে বাদ দিয়ে বের হলো পরী যা ই হক কাজ না করলে শাশুড়ী কাছে অপ্রিয়ে হতে ও টাইম লাগবে না।
পরী রান্না ঘরে যেতে ই বেশ কিছুক্ষন অর্ণব বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ালো।
সুযোগ খুজতেছে আদি পরীর সাথে একটু কথা বলার। যেই আদি রান্নাঘরে ডুকার জন্য পা বাড়াতে যাবে ডিসিশন নিলো অমনি অর্ণব রান্না ঘরে ডুকে পড়লো।
–টিয়াপাখি
ডাকটা শুনতে ই পরী বুঝতে পারলো আর কোনো চিন্তা নেই। একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে অর্ণব এর দিকে তাকিয়ে বললো,
–এতোক্ষণ লাগলো আসতে।
পরীর পড়নে নেভি ব্লু কালারের শাড়ি, হাতে চুড়ি পড়েনি, শুধু একটা নাকে ছোট্ট একটা ফুল দেওয়া। শাড়ির আচলটা গুজে রেখেছে। চুলগুলো হাত খোপা করে রেখেছে সামনের ছোট্ট চুলগুলো বার বার মুখে এসে পড়ছে।
অর্ণব পরীর দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে, ঘাড়ে আলতো করে একটা কিস করে।
–আমি রান্না করছি এখানে ও আপনার এমন প্রেম প্রেম ভাব দেখাতে হবে।
–হাত দিয়ে রান্না করছো টিয়া পাখি। আমি হাতে ধরে রাখি নাই। যার মধ্যে প্রেম আছে সে সব জায়গায় ই প্রেম প্রেম ভাব দেখাতে পারে টিয়াপাখি।।।
–সরে দাড়ান কেউ আসবে।
–আসলে আসুক বিয়ে করা বউ আমার।
“”পরী””
কারো শব্দ শুনে অর্ণব পরী দুজনে ই পিছনে তাকায়।
–হুম বল।
–ভাইয়া মা আপনাকে ডাকে।
অর্ণব পরীর দিকে তাকিয়ে আবার ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে চলে যায়।
পরী ইরা দুজন ই অবাক হয়। ইরার সামনে এমনটা করায় পরী অনেক রেগে অর্ণব এর দিকে তাকায়।
পরীর এমন রেগে থাকতে দেখি অর্ণব বলে,
–আরে টিয়াপাখি রাগ করছো কেনো। এখন ই তো আবার চলে আসবো মা কী বলে শুনে আসি।
কথাটা বলে দ্রুত পায়ে হেটে চলে যায়। বেশ ভালো করে ই অর্ণব বুঝতে পেড়েছে ইরার সামনে চুৃমু খাওয়ায় এমন রাগ করেছে আরেকটুকু রাগানোর জন্য কথাটা বলে আসলো।
–পরী খুব সুখে আছিস দেখছি।
–তোর জ্বলে নাকি।
–আমি কষ্ট আছি তুই সুখে আছিস তোকে আমি সুখে থাকতে দিবো না। অর্ণবকে মা ডাকেনি আমি ইচ্ছে করে অর্ণবকে দূরে পাঠিয়েছি। পরী তুই কী ভালোই ভালোই এই বাসা থেকে যাবি নাকি আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করতে হবে।
চলবে।
[ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]