#Mr_সাইকো_লাভার
#লাবিবা_ওয়াহিদ
“পার্ট ১৭”
.
.
রিদি- ওই ছ্যাড়ি তুই ওই মেয়ে কে বললি কেন যে তোদের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে? আচ্ছা সত্যি সত্যিই কি??
নিশা- পাগল না পেট খারাপ? ওই ফ্যালফ্যাল রে বিয়ে করুম তাও আমি লাইক সিরিয়াসলি?
ওইটা তো অনলি মেয়েটারে শিক্ষা দিতেই বলসি।ওই মেয়ের সাহস অনেক যে আমাকে সবার সামনে চড় মেরেছে আমায় অপমানও করেছে এতো সহজে ওই ছেমড়ি রে ছেড়ে দিবো? নেভার ওরে আমি লাথি মেরে ড্রেনে না ফেলসি…..
বলেই নিশা রিদি আর আনিলাকে রেখেই ব্যাগ নিয়ে হনহন করে চলে গেলো।
রিদি- কে জানে এই মেয়ে কি বিপদ টেনে আনে।
আনিলা- ওর উপ্রে বিলিভ রাখ তেমন কিছুই হবে না।
ফারান ফোন টিপতে টিপতে হাটছে আর প্রিয়া ছ্যাসড়ার মতো ফারানের পিছে লেগে আছে। নিশা দূর থেকে বিষয় টা দেখে ভাবে,”দাড়া এখন তোরে উচিত শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো।”
বলে নিশা ফারানের কাছে এসে প্রিয়াকে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে ফারানের গলা জড়িয়ে ধরে বলে,”জানু আমার না খুব খিদে পেয়েছে চলো না একসাথে রেস্টুরেন্ট এ যাই।”
নিশার এমন আচরণে ফারানের হতভম্বের মতো চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে নিশার দিকে। ফারান কখনো ভাবেনি নিশা কখনো তাকে জানু বলে এন্ট্রি নিবে। আর ভাবার কথাও না যার সাথে সারাদিন ঝগড়া ছাড়া কোনো কথাই হয়না সে হঠাৎ এমন করলে মনে হয় অবাকের কারণে হার্ট এট্যাক করে ফেলবে। প্রিয়া রেগে বলে,”এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হয় আমার ফারানকে জানু বলে ডাকার?”
নিশা- আরেক টা চড় খেতে না চাইলে এখান থেকে ভাগো।
প্রিয়া- থ্রেড দিচ্ছো আমায়?
নিশা- যা ইচ্ছা ভেবে নিতে পারো নাও বাই চলো বেইবি।
বলেই ফারানকে টেনে টুনে কেন্টিনে নিয়ে আসে।
ফারান- এই মেয়ে এভাবে টানো কেন?
নিশা এদিক ওদিক তাকিয়ে চেক করলো প্রিয়া আছে কি না। যখন দেখলো নেই তখনই হাত ঝাড়ি দিয়ে ছেড়ে দিলো।
নিশা- আমার ঠ্যাকা পড়ে নাই আপনাকে টানার বাই!!
বলেই নিশা বাসায় চলে গেলো ফারানকে কেন্টিনে রেখেই। ফারান আগের মতোই হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রয় আর ভাবে,”এই মেয়ের মাথায় কখন কি চলে সেটা বোঝা আমার দ্বারা সম্ভব না ওহ গড!!
বিকালে,,
নিশা আফিয়ার জন্য পুডিং করছে আর পাশে আফিয়া “পুডিং পুডিং” করে হাত তালি দিচ্ছে আর লাফাচ্ছে। আফিয়ার এমন বাচ্চামো দেখে নিশা হেসেই যাচ্ছে। তারপর প্রায় অনেকক্ষণ পর আফিয়া কে নিয়ে নিশা রুমে আসে। তারপর গরম পুডিং টা আফিয়ার হাতে দিয়ে বলে,”এটা ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে খাবা কেমন?”
আফিয়া- ঠিক আছে নিশুপু তুমি এত্তোওঅঅঅঅঅঅ গুলা ভালো ইয়েএএএএএএ।
বলেই পুডিং টা নিয়ে বাসায় চলে গেলো। আফিয়ার এমন এক্সাইটমেন্ট দেখে আনিলা নিশা দুজনেই হাসলো। আফিয়া বাসায় এসে দেখে ফারান এক বাক্স চকলেট নিয়ে সোফায় বসে আছে। ফারানকে দেখতেই আফিয়া পুডিং টা রেখেই “ফিফু ভাইয়াআয়ায়া”বলে ফারানের দিকে দৌড় লাগায়। ফারান হেসে আফিয়া কে কোলে নেয় তারপর বলে,”কোথায় ছিলো আমার বোন টা? জানো কতো মিস করেছি তোমাকে?”
আফিয়া- আমি বিশ্বাস করি নায়ায়ায়া।(অন্যদিকে ফিরে)
ফারান- কেন করো না শুনি একটু।
আফিয়া- আমায় মিস করলে তো আমার বাসায় আসতে কিন্তু আসো নি তুমি হুহ!
ফারান- ওওওও বাবা এই জন্য বুঝি আমার আফিয়া ডার্লিং রাগ করে আছে?? সরি সোনা সময় পাইনি।
আফিয়া গাল ফুলিয়ে অন্যদিকে ফিরেই থাকে কোনো কথা বলে না।
ফারান- আচ্ছা ঠিক আছে দেখো কানে ধরেছি আর এমন হবে না।(কানে হাত দিয়ে)
আফিয়া আড়চোখে তাকিয়ে দেখে আসলেই ফারান কান ধরেছে কিনা। তারপর যখন দেখে কান ধরেছে তখন ফারানের দিকে ফিরে বলে,”সত্যি তো?”
ফারান- ৩ সত্যি।
আফিয়া- না ৩ সত্যি তে বিশ্বাস করি না বলো ১৪ সত্যি?
ফারান- আচ্ছা বাবা ১৪ সত্যি এবার তো হাসেন ম্যাডাম??
এবার আফিয়া হাসে। আফিয়ার হাসি দেখে ফারানও মুচকি হাসলো। তারপর আফিয়াকে নিচে বসিয়ে ফারান জিজ্ঞেস করে,”তা আফি পাখি কোথায় গেছিলে?”
আফিয়া- নিশুপুর বাসায়?
ফারান- নিশু কে?
আফিয়ার মা ট্রে তে করে খাবার সাজিয়ে আনতে আনতে বলে,”ওইযে আমাদের পাশের ফ্লাটের এক মেয়ে। ওইযে তোমায় বললাম না! নিশু খুব ভালো মেয়ে আফিয়াকে নিজের বোনের মতো আগলে রাখে।”
ফারান- ওওওও আচ্ছা।
আফিয়ার পুডিং এর কথা মাথায় আসতেই চট করে গিয়ে পুডিং টা ফ্রিজে রাখতে যেই যাবে ওমনি ফারান ডেকে বলে,”হাতে ওটা কি আফি আমার কাছে নিয়ে এসো।”
ফারানের কথা মতো আফিয়া ফারানের কাছে পুডিং টা নিয়ে যায়। ফারান পুডিং দেখতেই লোভ সামলাতে না পেরে চামচ নিয়ে পুডিং ফুঁ দিয়ে চোখ বুঝে খুব তৃপ্তি করে খেতে লাগলো।
আফিয়া বলে,”গরম টা খেলে তো মজা পাবা না।”
ফারান- পুডিং মানেই আমার কাছে পুরোটাই মজা। খুব টেস্ট কে বানালো?
আফিয়া- নিশুপু।
ফারান- ওহ তাহলে তাকে আমার তরফ থেকে থ্যাংকস জানিয়ে দিও।
আফিয়া- ঠিক আছেএএএ।
তারপর দুজন মিলে অনেক আড্ডা দিতে লাগলো। প্রায় ৩দিন চলে যায় মাঝে দিয়ে শুক্রবার যাওয়াতে ভার্সিটি বন্ধ ছিলো। আজ হবে ছোট কম্পোটিশন। এর মাঝে থেকেই সিলেক্ট হবে কে কে ফাইনালে যাবে। প্রিয়া চেয়েছিলো নিশা যেনো কোনোভাবেই ফারানের সাথে জিততে না পারে তাই নিশার পানির বোতলে উম্মাদ করার ড্রাগস মিশিয়ে দেয়। এটা আবার নিশা দেখে ফেলে এবং মনে মনে একটা শয়তানি হাসি দিলো তারপর ভাবে,”এই পানীয় টা কার পেটে যাবে সেটা আল্লাহ আগে থেকেই ঠিক করে রাখসে।”
এবার শুরু হলো পারফর্মেন্স। একে একে সবাই তাদের ডান্স দেখালো। কিন্তু প্রিয়া নিজের নাচ দেখাতে গেলেই তার মাথা কেমন ঝিমঝিম করে উঠে, চারদিকে ঝাপসা দেখছে। প্রিয়া মাতালের মতো উল্টা পাল্টা হেটে স্টেজে আসলো তারপর সে নিজে না নেচে তার পার্টনারকে নাচাচ্ছে আর মুখে গান বলছে,”বাম ডিগডিগ বাম ভাম, বাম ডিগডিগ বাম ভাম।”
সবাই প্রিয়ার এমন গান শুনে হেসেই চলেছে আর নিশা তো হাসতে হাসতে বসেই পড়েছে। ফারানও খুব হাসছে। জাজ রা এমন নাচ দেখে টেবিলে অনেক জোরে বাড়ি দিয়ে বলে,”স্টপ ইট!!”(চিল্লিয়ে)
জাজদের কথায় ছেলেটা থামলেও প্রিয়া থামে না। সে তো ধুরুম ধারুম নেচেই যাচ্ছে। এক জাজ ম্যাম জোরে চেঁচিয়ে উঠতেই প্রিয়া রেগে এসে ম্যামের চুল টেনে টেনে অবস্থা খারাপ করে ছেড়েছে। পরে অনেক কষ্টে প্রিয়াকে ছাড়িয়ে ঘন্টাখানেক পরপরই প্রিয়াকে টিসি দিয়ে বের করে দিয়েছে ভার্সিটি থেকে। প্রিয়া এখনো উম্মাদ আবিজাবি বলেই যাচ্ছে। মোট কথা কোনো ড্রাগস নেওয়া মেয়েকে তারা ভার্সিটি তে রেখে ভার্সিটির পরিবেশ নষ্ট করতে চায়না।
নিশা তো ভেতরে ভেতরে শয়তানি হাসি দিচ্ছেই। নিশার এমন হাসি কেউ বা দেখলেও ফারান বেশ ভালো করে লক্ষ্য করেছে আর নিশা যে কিছু অঘটন ঘটিয়েছে সেটা তার মন তাকে বারবার বলছে।
নিশা ভার্সিটির ছাদে দাঁড়িয়ে হেহে করে হেসেই চলেছে প্রিয়ার ওমন কাহীনি দেখে। তারপর মনে করে ঘন্টাখানেক আগের ঘটনা।
ফ্লাসবেক,,,!!!
প্রিয়া ড্রাগস মিশিয়ে চলে যেতেই নিশা আস্তে করে প্রিয়ার ব্যাগ থেকে তার পানির বোতল টা নিয়ে আর নিজের টা নিয়ে ওয়াশরুম দৌড় দিলো। নিশা তখনো জানেনা প্রিয়া কি মিশিয়েছে। তবে এটা শিউর ছিলো খারাপ কিছুই মিশিয়েছে তাই প্রিয়ার বোতলের পানি গুলো ফেলে নিজের বোতলের ড্রাগস মেশানো পানি প্রিয়ার ভেতরে ঢেলে দেয়। তারপর হলরুমে খুব সাবধানে প্রিয়ার ব্যাগে বোতল টা রেখে দেয়। প্রিয়া কিছুক্ষণ পরই বোতল থেকে পানি খায় তারপর তার সেই অবস্থা।
,
,
,
,
,
চলবে!!!