#তোমায়_ভালোবাসি_খুব💜
#Part:11🥀
#Writer: #TanjiL_Mim💜
.
.
🍁
“ইশার বিয়ের শপিং করতে সবাই এসেছে আমি,অগ্নি, শাশুড়ী মা,নীলা,রনি সাথে নীলার বাবা মা’!!সবাই একের পর এক শাড়ি ইশার গায়ের জড়িয়ে দিচ্ছে বিশেষ করে শাশুড়ী মা’!!এই মুহূর্তে ইশার মায়ের ভালোবাসা দেখে আমার চোখ দুটো পানিতে ভরে যাচ্ছে’!!মায়ের কথা খুব মনে পরছে খুব ‘! আমার বিয়ের শপিং এর সময় আম্মু এমন করেছিলো’!!সাথে আব্বুও আর সাথে রুহান তো আছেই এই মুহুর্তে তাদের কথা খুব মনে পরছে আমার’!!চোখের সামনে শুধু আম্মু আব্বু আর রুহানের মুখগুলোই ভেসে আসছে আমার’!!মনে মনে শুধু একটাই কথাই মাথায় আসছে……
“কবে সব ঠিক হয়ে যাবে”আমিও আবার আম্মু আব্বুকে জড়িয়ে ধরতে পারবো’!!হর্ঠাৎই শাশুড়ী মায়ের ডাকে আমার ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসলাম’!!তারপর এক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে চোখের পানি মুছে চলে আসলাম ওনার সামনে’!!আমি সামনে আসতেই শাশুড়ী মা খুশি মনে আমায় ইশার পাশের চেয়ারে বসালেন তারপর দোকানদারকে বললেন কিছু শাড়ি দেখাতে’!!
“দোকানদারও কিছু শাড়ি দেখাতে শুরু করলো’!!আমি মনে মনে প্রচন্ড বেগে খুশি হলাম’!!!
____________________
“এদিকে অগ্নি তাকিয়ে আছে নেহার দিকে তার সাথে রনিও’!!রনি ভিতরে ভিতরে কি ভেবে হাসছে সে’ নিজেও জানে না’!!আর নীলার তো সহ্যই হচ্ছে না নেহার হাসিমাখা ফেসটা দেখে’!!
“শাশুড়ী মা একটা সুন্দর শাড়ি দিয়ে বললেন এটা পরে আসতে’!!আমিও ওনার কথা মতো শাড়ি নিয়ে চললাম চেঞ্জিং রুমে’!!!আর আমার সাথে আসলো ইশা সাথে নীলাও’!!কারন ওরাও তো শাড়ি পরবে’!!তারপর আমরা তিনজনেই খুব সুন্দর করো শাড়ি পরে চলে আসলাম’!!সবাই আমাদের দেখে হা হয়ে তাকিয়ে রইল’!!আমরা তিনজনই আস্তে আস্তে সবার সামনে আসলাম’!!
“নীলা একদম অগ্নির কাছে যেতে যেতেই পড়ে যেতে নিলে সাথে সাথে অগ্নি ধরল নীলাকে’!নীলাকে ধরে অগ্নি বলে উঠলঃ
——-“আস্তে হাঁট এক্ষুনি তো পড়ে যেতিস’!!
“এদিকে নীলা মনে মনে শয়তানী হাসি দিয়ে বললো আমি তো এটাই চেয়েছিলাম অগ্নি বেবি তুমি আমায় ধরবে’!!অগ্নি তাড়াতাড়ি নীলাকে ছেড়ে দেয়’!!
“এদিকে নীলার আম্মু বললঃ
——-“চোখ কোথা থাকে তোর শাড়ি পড়েছিস আস্তে হাঁটলেই তো হয়’!!!
“এমন সময় শাশুড়ী মা বলে উঠলঃ
——-“থাক আর বকিস না প্রথম বার তাই হয়তো পড়ে গেছে’!!
“এদিকে আমি অগ্নি আর নীলা কান্ড দেখে ভিতরে ভিতরে কষ্ট পেলেও বাহিরে তা প্রকাশ করলাম না’!!অদ্ভুত বিষয় এই নীলাকে কেন যে আমি অগ্নির পাশে সহ্য করতে পারছি না কে জানে’!!তারপর ভিতরে ভিতরে হাজারো কথা বলে নিজেকে সামলে নিলাম আমি’!!তারপর আবার সবাই মিলে শপিং এ মনোযোগ দিল’!!হর্ঠাৎই রনি আমার সামনে এসে বললোঃ
——-“তোমায় কিন্তু সকালের শাড়ির থেকেও এখনের টায় বেশি সুন্দর লাগছে,,ইউ আর সো বিউটিফুল এন্ড কিউট’!!
”রনি কথা হালকা হেঁসে বলে উঠলামঃ
——”থ্যাংক ইউ ভাইয়া’!!এই বলে পাশ কেটে চলে আসলাম আমি’!!কে জানি না এই রনিকে আমার একদম পছন্দ হয় না এত প্রশংসা আমার একদমই সহ্য হচ্ছে না’!!
___________________
“এদিকে অগ্নি দেখলো নেহা রনির সাথে হেঁসে কথা বলছে যেটা তার মটেও ভালো লাগে না’!!পরক্ষনেই কিছু মনে করে মাথা থেকে ঝেরে ফেললো বিষয় টা’!!!শপিং শেষ করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেল আমাদের বাসায় ফিরতে’!!তাই প্রায় সবাই ক্লান্ত হয়ে যে যার রুমে’ চলে গেল’!!
“রাতঃ ৯:০০টা……..
সবাই ডিনার শেষ করে যে যার রুমে চলে গেল’!!আজকে অগ্নি খাবারের ওখানে যাই নি একটা বাহানা নিয়ে আজকে সে রুমেই খাবার খাবে সবাইকে বলেছে আর শাশুড়ী মা বলে দিয়েছে কালকে থেকে ইশার বিয়ে সকল কাজ শুরু করা হবে’!!সবাই প্রায় বিষয়টা নিয়ে খুব খুশি’!!!সব কাজ শেষ করে রুমে আসতে একটু দেরি হয়ে গেল আমার’!!আর অতিরিক্ত ব্যস্ত থাকার কারনে অগ্নিকেও খাবার দিতে পারলাম না আমি’!!না জানি অগ্নি রেগে বোম হয়ে গেছে কিনা’!!কিছু খাবার নিয়ে রুমে ঢুকলাম আমি’!!কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার অগ্নি রুমে নেই’!!হয়তো ওয়াশরুমে গেছে’!!এই ভেবে খাবারগুলো বিছানার পাশে থাকা একটা টেবিলের উপর রাখলাম আমি’!হর্ঠাৎই বিছানার উপর থাকা একটা শপিং ব্যাগের দিকে চোখ গেলো আমার’!!আর ব্যাগের উপরে লেখা এটা “তোমার প্রিয়সী”!!আমিও খুশি মনে ব্যাগটা হাতে নিলাম’!!ব্যাগটার ভিতরে ছিল একটা সুন্দর শাড়ি তার সাথে সুন্দর সুন্দর কিছু কসমেটিকস’!!আমি জিনিসগুলো দেখে খুব খুশি হলাম কারন ওগুলো দেখতে খুবই সুন্দর’!!কিন্তু কেন জানি একটা খটকা লাগছে অগ্নি আমায় শাড়ি গিফট করেছে তাও আবার এত পাতলা একটা শাড়ি’!!অগ্নি তো শাড়ি পছন্দ করে করে না তাহলে শাড়ি দিল কেন??হর্ঠাৎ ব্যাগের ভিতর একটা চিঠি পেলাম আমি যেখানে লেখাঃ
——-“ইশার গায়ে হলুদের দিন কিন্তু অবশ্যই এটা পরবে….’!!
“আমি লেখাটা পড়ে হালকা হাসলাম তারপর সব জিনিসপএ ঘুছিয়ে আলমারিরে রাখলাম’!!এমন সময় পিছন থেকে অগ্নি বলে উঠলঃ
——“এতক্ষণ পর মহারানীর আসা হলো’!!
“অগ্নির কথা শুনে পিছনে তাকালাম আমি’!!তার দিকে তাকাতেই পুরো হা হয়ে তাকিয়ে আছি আমি’!!এই মুহূর্তে অগ্নির চুলগুলো ভেজা আছে হয়তো শাওয়ার নিয়েছিল’!!!চুলগুলো দিয়ে এখনো পানি পরছে…..সাথে একটা টাওজার আর একটা টিশার্ট পড়া উনি’!!
——–“ওভাবে তাকিয়ে আছো কেন??
“হর্ঠাৎ অগ্নির এমন কথা শুনে পুরল ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম’!!!তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বললামঃ
——-“না কিছু না আপনার জন্য খাবার নিয়ে এসেছি বসুন’!!নেহার কথা শুনে অগ্নি বিছানায় বসে পরল’!!
“অগ্নি বসতেই নেহা থাকে খাইয়ে দিল’!!তারপর আর কি রোজ কারের মতো অগ্নি নেহাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরল’!!!!
___________________
“দেখতে দেখতে কেটে গেল দু-দিন’!!আজকে ইশার গায়ে হলুদ’!!সন্ধ্যার পরেই ইশার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হবে’!!পুরো বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে’!!ইশাকেও খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে’!!ইশাকে সাজিয়ে দিয়ে আমিও চলে আসলাম রুমে’!!রুমেই ঢুকেই দেখলাম অগ্নি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তৈরি হচ্ছে’!!আজকে অগ্নি একটা ব্লাক রঙের পাঞ্জাবি পড়েছে,, চুলগুলো রোজ কারের মতোই সুন্দর করে সাজানো তার,অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে’!!আমার তো চোখই সরছে না’!!আমি একটা ভাব নিয়ে অগ্নির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললামঃ
——-“উরে জামাই আপনাকে তো সেই দেখাচ্ছে……
“অগ্নি নেহার কথা শুনে অবাক হয়ে বললোঃ
——-“কি???
——–“আরে সুন্দর লাগছে বুঝতে পারছেন না’!!
——-“সেটা নয় তার আগে কি বলছো…….
——–“কি বলছি……
——–“একদম কথা ঘোরাবে না,,আবার বলো কি বলেছো’!!
——–“আশ্চর্য কি বলেছি বলে আপনাকে সেই দেখাচ্ছে’!!
———“আবার মিথ্যা বলছো সত্যি কথা বলো না হলে কিন্তু…….. (সামনের দিকে এগোতে এগোতে)
———“না হলে কী আর বললাম তো কি বলছি,,আর আপনি এই ভাবে এগোচ্ছেন কেন ওখানে দাঁড়িয়ে কথা বলুন না……(পিছনের দিকে যেতে যেতে)
——–“কেন কাছে আসলে কি করবে……
——-“কি করবো মানে আর আমি এমন কিছু বলি নি যে আপনি রেগে আমার কাছে আসবেন’!!
——-“ও এর মানে আমি শুধু রেগে গেলেই কাছে আসি’!!
——–“দেখুন অগ্নি আপনি তৈরি হয়ে গেছেন এখন আমাকেও তৈরি হতে হবে তাই প্লিজ এভাবে এগোবেন না’!!
“কিন্তু অগ্নি কি শোনার পাএ এগোতে এগোতে এক পর্যায়ে দেয়ালের সাথে লেগে গেছি আমি’!!আমি আমার অনেকটা কাছে এসে বললঃ
——-“আগে বলো কি বলছো’!!
——-“বললাম তো আমি বলছি আপনাকে সেই দেখাচ্ছে’!!
——–“আবারো মিথ্যা বলছো এই বলে অগ্নি অনেকটাই জুকে পরল আমার দিকে সাথে সাথে আমি চোখ বন্ধ করে চেঁচিয়ে বলে উঠলামঃ
——-“আমি বলছি জামাই আপনাকে সেই দেখাচ্ছে’!!এই বলে শক্ত করে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইলাম আমি’!!
“এদিকে অগ্নি নেহার কথা শুনে মুচকি হেঁসে নেহার চোখের দিকে একবার তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল’!!
___________________
“বেশকিছুক্ষন যাবৎ কারো কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চোখ খুলে তাকালাম আমি’!!আশ্চর্য অগ্নি হয়তো চলে গেছে’!!তারপর রুমের মুচকি হেঁসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিলাম’!!তারপর সেদিনের সেই ব্যাগ বের করে শাড়িটাকে দেখলাম কেন জানি না শাড়িটাই মন টানছে না আমার’!!কিন্তু অগ্নি তো এটাই পরতে বলেছিল আমায়’!!তারপর আমিও আর কিছু না ভেবে শাড়িটা পড়ে নিলাম’!!
“আয়না নিজেকে দেখে কেমন যেন লাগছে আমার শাড়িটা অসম্ভব রকম পাতলা’!!আচ্ছা এটা কি সত্যি অগ্নি দিয়েছে আমায়’!!তারপর সব গয়না গুলো পড়ে নিলাম চুলগুলো ভেবেছিলাম খোপা করে দিবো কিন্তু এখন যেহেতু শাড়িটা এতো পাতলা তাই চুলগুলো খুলে দিলাম’!!তারপর সব গয়না গুলো পড়ে তৈরি আমি’!!!
“আস্তে আস্তে শাড়ির কুঁচি ধরে রুম থেকে বেরোলাম আমি’!!কেমন অসস্তি লাগছে আমার’!!তারপর সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামবো এমন সময় কেউ কোলে তুলে নিল আমায় আচমকা এমনটা হওয়াতে আমি ভয়ে ঘাবড়ে গিয়ে তার হাত শক্ত করে ধরে ফেললাম’!!
“এদিকে অগ্নি অসম্ভব ভাবে রেখে গেছে নেহার সাজ দেখে’!!যার কারনে নেহা সবার সামনে আসার আগেই তাকে কোলে তুলে নিয়ে উপরে উঠছে’!!
“এদিকে অগ্নির রক্ত মাখা লাল চোখ থেকে ভয়ে পুরো শরীর কাঁপছে আমার’!!কিন্তু বুঝতে পারছি না অগ্নি এতটা রেগে কেনো গেছে’!!আমি তো তার পছন্দ করা শাড়ি পরেছিলাম’!!
__________________________________________
___________________
“এদিকে অগ্নি কোলে তুলে এনে আমায় রুমে নিয়ে এসে ঠাস করে বিছানায় ফেলে দিয়ে রেগে বললোঃ
——–“এগুলো কি পরছো(দমক দিয়ে)
“আমি অগ্নির দমক শুনেই পুরো কেঁপে উঠে বললামঃ
——–“না মানে আপনি তো……
“অগ্নি আমার দুই বাহু চেপে ধরে বললঃ
——-“কি আমি’!!তোমার সাহস কি করে হলো এতো পাতলা একটা শাড়ি পড়ে নিচে গেছো,,কে বলেছে তোমায় এ শাড়ি পরতে……Answer me…(দমক দিয়ে)
“অগ্নির কথা শুনে আমি যেন অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে গেছি’!!অগ্নির কথা শুনে তো মনে হচ্ছে এগুলো উনি দেন নি তাহলে দিল কে……….
___________________
“এদিকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রনি বলে উঠল আমি দিয়েছি’!!আমি জানতাম অগ্নি তোমার এই সাজ পছন্দ করবে না’!!কিন্তু আফসোস হলো তুমি সবার সামনে যাওয়ার আগের অগ্নি তোমায় নিয়ে গেল’!!!কিন্তু তাতে আমার কোনো আফসোস নেই আমি যেটা চেয়েছিলাম সেটা তো হয়ে গেলো’!!এখন বাকিটা অগ্নি বুঝে নিবে এই বলে রহস্যময়ী হাসি দিলো রনি……….
!
!
!
!
!
#চলবে………………
🖤[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!]🖤
#TanjiL_Mim❤️