#Psycho_behind_the_mask🎭
#Part_1
#Writer_Nusrat🌺
বিয়ে করবেনা ভালো কথা বাসর তো করতেই পারো রাইট?৷আমার কী মনে হয় জানো তুমিও এটাই চাইছো৷ হুম তুমি যদি আজ আমায় বিয়ে না কর তাহলে কিন্তু আমি বিনা বিয়েই বাসর সেরে নিব৷সেটাই করবো যেটা করা উচিৎ নয়৷ যা হবে সেটার জন্য কিন্তু তুমিই দায়ী থাকবে এখন ভেবে দেখো কী করবে৷তাই তারাতাড়ি কবুল বলে ফেলো৷
কবুল বলা মুহুর্তেই মেয়েটি চিৎকার করে উঠলো৷ নিজেকে ভালো ভাবে দেখে বুঝতে পারলো এটা নিতান্তই একটা স্বপ্ন ছিলো৷এই স্বপ্নটা প্রায়ই দেখে সে৷ তাই অতশত চিন্তা না করে ঘুমিয়ে পরলো৷ কাল বোনের বিয়ে তাই আজই একটা সেই ঘুম দিতে হবে৷
★★★★
সব সময় শুনেছি কনে কিডন্যাপ হতে৷ কিন্তু কখনো শুনিনি বর কিডন্যাপ হতে৷ কিন্তু আজ বর কিডন্যাপ হয়েছে৷ কনের বোন আরিশা নিজের বোনের হবু বরকে বিয়ে বাড়ি আসার আগেই দলবল নিয়ে কিডন্যাপ করেছে৷
বিয়ে বাড়িতে হট্টগোল পড়ে গেছে বর আসছেনা কেনো বর আসছেনা কেনো?? শেষে জানা গেলো বর কোথায় চলে গেছে৷ মেঘলা (কনে) তো মহা আনন্দ৷ কিন্তু সেটা কারও কাছে প্রকাশ করছেনা৷ বরের পরিবার আর কনের পরিবারের একপ্রকার ঝগড়া শুরু হয়ে গেছে৷ কনের বাবা তো সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে এই ছেলের সাথে উনার মেয়ের বিয়ে কিছুতেই হবেনা৷ ওরা যাতে চলে যায়৷ বরের বাবাও একপ্রকার অপমানবোধ করে চলে গেলেন সবাইকে নিয়ে৷
মেঘলার বাবা মেঘলার দিকে এগিয়ে এসে ক্ষমা চাইলেন,,
“মা রে আমাকে ক্ষমা করে দে৷ আমি তোর জন্য সুপাত্র আনতে পারিনি৷ তোর কোন পছন্দ থাকলে বল আমি তার সাথেই তোকে বিয়ে দিবো৷ যদিও তোর মতামত আগে নেওয়াই উচিৎ ছিলো৷
.
মেঘলা একটু লাজুক হেসে বললো,বাবা আমি একজনকে ভালোবাসি৷ আর সেও আমায় ভালোবাসে. তুমি যদি বলো তাহলে আমি তাকে বলতে পারি৷
.
“হুম৷
★★★★★
অন্ধকার একটা রুমে হাত পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে মেঘলার হবু বর শাওন৷আর ছোটার জন্য ছটফট করছে৷ওর সামনেই চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে একটা ভাব নিয়ে বসে আছে আরিশা৷ যেন সে প্রধান মন্ত্রী৷
“ওই চিকনা তোকে কী মেরে ফেলবো নাকি৷ এভাবে ছটফট করছিস কেনো৷জাস্ট দু’ঘন্টার জন্য কিডন্যাপ করেছিলাম৷ কিন্তু তোর কপাল ভালো তোকে আর এক মিনিটের জন্যও বন্দী করে রাখবো না৷ যে কাজের জন্য বন্দী করেছিলাম সে কাজ হয়ে গেছে৷
কথাটা বলে আরিশা শাওনের হাতের পায়ের বাঁধন খুলে দিলো৷
.
ওই এখন কই যাবি৷??
.
কেনো মেঘলাকে বিয়ে করতে যাবো৷ ওকে বিয়ে করে সাথে নিয়ে তবেই আমি বাড়ি ফিরবো৷
.
“কচু করবে৷ এতক্ষনে বিয়ে ভেঙে গেছে৷ আর এখন যদি আমাদের বাড়িতে যাসনা তাহলে সবাই ঝাড়ু পেটা করবে৷ তাই এখান থেকে সোজা তোর নিজের বাড়ি যাবি৷ তা নাহলে সারা জীবন এখানেই বন্দী করে রাখবো৷ দেখলিই তো আমার কত বড় গ্যাং৷ আর চান্দু সবাইকে গিয়ে বলবা তোমার একজনের সাথে দেখা করার খুব দরকার ছিলো তুমি তার সাথেই দেখা করতে গেছিলা৷ তুমি এই বিয়ে করতে পারবানা৷যদি সত্যি কথা বলিস তাহলে তোর হাড়গোড় একটাও আস্ত থাকবেনা মাইন্ড ইট৷
“কেনো আমি কী তোমাকে ভয় পাই নাকি৷ আমি এখান থেকে তোমাদের বাড়িতেই যাবো আর সবাইকে সব সত্যি কথা বলে দিবো৷ আর এটাও বলবো যে তুমি একটা গুন্ডি৷”
.
ওই নিজেকে আয়নায় দেখেছিস চিকনা৷ তোর চাইতে তো হিরো আলম চাচাও সুন্দর আছে৷ কী দেখে যে আমার বাবা তোকে পছন্দ করেছে সেটা বাবাই জানে৷ তুই তো আমার কথা শুনলি না দাঁড়া আমার শাঙ্গ-পাঙ্গ চ্যালা_ব্যালাকে ডাকছি৷
ওই তোরা কে কোথায় আছিস একটু ভিতরে আয়তো ব্যাটাকে একটু সাইজ করতে হবে মনে হচ্ছে৷
শাওন একটা ঢুক গিললো, না জানি মেয়েটা কী করে৷ আপাতত ওর কথা শুনাই ব্যাটার৷
“প্লিজ আমাকে এখান থেকে যেতে দাও আমি তোমার বোনকে বিয়ে করবোনা৷ আর সত্যিটাও কাউকে বলবোনা৷ এখানে প্রচুর মশা আমি মশার কামড় খেতে চাইনা৷
.
আচ্ছা ঠিকাছে যেতে দিব কাউকে কিন্তু বলবিনা৷ যা বলেছি সেটা যেন মাথায় থাকে আর যদি কাউকে বলিস তাহলে তোকে আমি তুলে নিয়ে গিয়ে মশার ডেরায় ছেড়ে দিয়ে আসবো৷
.
না ঠিকাছে দরকার নেই৷ আমি বাঘের ডেরায় ও যেতে চাইনা আর মশার ডেরায় ও যেতে চাইনা৷ আমি বাড়ি যেতে চাই৷
.
চিন্তা মাত কারো৷ আমার লোক তোমায় পৌঁছে দিয়ে আসবে৷
.
আরিশা মনে মনে হাসছে৷শাওনের ভয়ার্ত চেহারা দেখে৷ এতোটা বোকা মানুষ কীভাবে হয় সেটাই ভাবছে৷
★★★★
আরিশা নিজের বাড়ি গিয়ে দেখলো ওদের বাড়ি একেবারে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে৷ বেশ ভালোই বুঝতে পারছে নিস্তব্ধতার কারণ৷ আরিশা সোজা গিয়ে ওর রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো৷ কাল সকালের আগে দরজা খুলবেনা সে৷
🏜️🏜️🏜️🏜️
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আরিশা গিয়ে ওর বাবার সামনে দাঁড়ালো৷ বাবা আরিশার দিকে মুখ তুলে তাকালেন৷
“আরিশা কোথায় ছিলে তুমি৷??
আরিশা আগে থেকেই মাথায় মিথ্যা উত্তর সাজিয়ে রেখেছিলো তাই চট করে বলে ফেললো,আসলে বাবা খুঁজ নিয়ে দেখছিলাম শাওনকে পাওয়া যায় কি না৷ আর খুঁজতে খুঁজতে অনেক টায়ার্ড হয়ে গেছিলাম তাই এসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম স্যরি৷
.
আর খুঁজে লাভ নেই৷ ওকে পাওয়া গেলেও ওর সাথে মেঘলার বিয়ে দিবোনা৷ আর শুনো আজ রিফাতের ফ্যামিলি আসছে মেঘলাকে দেখার জন্য৷ তাই তোমার মা অনেক আয়োজন করেছে৷ একটু গিয়ে কাজে হেল্প করো৷
আচ্ছা বাবা৷
★★★★
আরিশা ওর মাকে রান্নার কাজে হেল্প করে বোনের কাছে আসলো বোনকে হেল্প করবে বলে৷ গিয়ে দেখলো মেঘলা ফোনে কথা বলতেছে আর হাসতেছে৷ আরিশা ব্যাপারটা বুঝে মেঘলার কান থেকে ছোঁ মেরে ফোনটা নিয়ে নিলো৷
“এই যে আমার উড-বি জিজু৷ আজ যে বউয়ের সাথে কথা বলতে পারছোনা? সব ক্রেডিট কিন্তু আমার৷ তাই বিয়ের পর আমার ক্রেডিট আমাকে কড়ায় গন্ডায় বুঝিয়ে দিবে বলে রাখলাম৷
.
“কী বলছো তুমি শালিকা? তোমার ক্রেডিট মানে??
.
“বাহ্ রে আমিই তো ওই শাওইন্নারে কিডন্যাপ করেছি৷ যাতে আপু ওকে বিয়ে না করে৷ কিন্তু দেখো আজ আপুর বিয়ে না হওয়াতে তোমরা দুজন কত হাসি খুশি আছো৷ যদি বিয়ে হয়ে যেত তাহলে তোমরা তিনজনই কষ্ট পেতে৷ জানো তো আমি বাবাকে অনেক বুঝাতে চেয়েছি বাট বাবার আমার কথা শুনার কোনো ইন্টারেস্টই নেই৷ তাই বাধ্য হয়েই ওকে কিডন্যাপ করতে হলো৷ আমার আপু আমায় সব সময় হাসি খুশি রেখেছে আজ আমিও আপুর হাসির কারণ হতে পেরেছি বলে নিজেকে খুব হাল্কা লাগছে৷
.
আমার শালিকা আমার এত বড় উপকার করলো তাকে তো কিছু দিতেই হবে সে যা চাইবে তাই হবে৷ বলো কী চাও
.
এখন না আরো পরে৷ আগে জিজু হও তারপর আমার চাওয়া আমি বুঝে নিবো৷ আর হ্যা তারাতাড়ি চলে আসবা৷ এখন ফোন রাখছি আপুকে রেডি করাতে হবে৷ বাই৷ “”
আরিশা ফোনটা কেটে মেঘলার দিকে তাকিয়ে দেখলো মেঘলা ওর দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে৷
” কী হয়েছে আপু আমি কী কোন ভুল করে ফেলেছি?
মেঘলা আরিশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলে৷
“না বোন তুই কোনো ভুল করিসনি৷জানিস আমি কতটা খুশি৷ এট লাস্ট আমি আমার ভালোবাসার মানুষটিকে পেতে যাচ্ছি তাও তোর জন্যে৷ আই এম রিয়েলি প্রাউড অফ ইউ বোন৷
.
তোমায় খুশি দেখে আমারও খুব খুশি লাগছে৷ এবার ছাড়ো তো রেডি হতে হবে৷
.
রান্নার কী খবর??
.
ওসব নিয়ে তোমায় ভাবতে হবেনা৷ রান্না প্রায় শেষ৷ আমি মাকে রান্নার কাজে হেল্প করে তবেই তোমার কাছে এসেছি৷ এবার কোন শাড়ি অর্নামেন্টস পড়বে সেগুলো তারাতাড়ি বেড় করে ফেলো তো রেডি হতে হবেতো তোমায়৷
আরিশা খুব সুন্দর করেই মেঘলাকে সাজিয়েছে৷ সব কাজ শেষ এবার শুধু মেহমান আসার পালা৷
আরিশা আগে থেকেই মেইন ডোরে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ ওরা আসার সাথে সাথেই যেন দরজা খুলে দিতে পারে৷ সে নখ কামড়াচ্ছে আর চারিদিকে চোখ বুলাচ্ছে কোন ত্রুটি আছে কী না৷
চলবে♥️