#Psycho_behind_the_mask🎭
#Part_3
#Writer_Nusrat🌺
“একি আপনি এগিয়ে আসছেন কেনো??দেখুন আপনি একদম এগুবেননা বলে দিলাম৷ তাহলে কিন্তু আমি আপনাকে কিডন্যাপ করে মেরে তারপর গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দিবো৷
আরিশার কথা শুনে আরিয়ান দু কদম পিছিয়ে গেলো৷
“আরেহ্ মেয়ে মানুষেরও এতো সাহস৷ তবে সাহস থাকলে কী হবে আস্ত বোকা একটা মেয়ে তুমি৷ কিডন্যাপ কী কেউ কাউকে জানিয়ে করে নাকি৷ আর তাছাড়াও তুমি বাংলাদেশে গঙ্গা পাবে কোথায় থেকে৷ গঙ্গায় যেতে হলে তো ইন্ডিয়ায় যেতে হবে৷
.
“সে যাইহোক৷ গঙ্গা আর পদ্মা তো একটাই৷ পদ্মায় ভাসিয়ে দিবো আপনাকে৷
.
“সে গুড়ে বালি৷ এবার বলো কোন সাহসে তুমি আমার ফুল ছিঁড়েছো৷জানো এই ফুলগুলো আমার কতটা প্রিয়৷ (চোখ মুখ শক্ত করে)
.”
“আরে সামান্য ফুলিতো ছিঁড়েছি৷ এতে এত রাগ করার কী আছে৷ আমারও প্রিয় ফুল তাই ছিঁড়ে মাথায় দিয়েছি৷ দাঁড়ান আমি এখুনি যেখানের ফুল সেখানে রেখে দিচ্ছি৷
.
এখন রাখলে কী ফুল আবার আগের মতো হয়ে যাবে নাকি৷ আর ফুলযে কানে লাগিয়েছো একদমই সুন্দর লাগছেনা তোমায়৷ বিশ্বাস না হলে আয়নায় গিয়ে দেখো৷
.
আরিশা আরিয়ানের কথা শুনে মুখ ফুলিয়ে নিচে চলে গেলো৷ ওরা কী শুধু মানুষকে ইনসাল্টই করতে জানে নাকি? গিয়ে সোজা মেঘলার রুমে ঢুকলো৷ মেঘলা আরিশাকে দেখে ফিক করে হেসে দিয়েছে৷
“আরিশা এরকম জোকার সেজেছিস কেনো৷
.
হাউ ডেয়ার ইউ৷ আমি জোকার৷
.
“আমি তোকে সেটা কখন বললাম৷ তোকে শুধু বলেছি জোকার সেজেছিস কেনো৷
আরিশা আয়নার সামনে দাঁড়ালো৷ওর চুল এলো মেলো হয়ে আছে তার মধ্যে দুই কানে দুইটা মাইক ফুল লাগিয়েছে৷ যেন মনে হচ্ছে কানের উপর শিং গজিয়েছে৷
.
“ইয়া খোদা আমায় এরকম রানু মন্ডলের মতো লাগছে৷ রানু মন্ডল বলতেই আরিশার মনে হয়ে গেলো শাওনের কথা৷ শাওনকে সেদিন হিরো আলম বলেছিলো আর আজ সে নিজেই রানু মন্ডল হয়ে গেছে৷ কথাটা ভেবেই হেসে ফেললো আরিশা৷
.
হেই লেডিস্ হোয়াটসঅাপ??
কী হয়েছে আরিশা তোমায় এমন দেখাচ্ছে কেনো৷
.
আমি জানিনা জিজু বিকেলে ঘুম থেকে উঠে ছাদে গিয়েছিলাম আর এই ফুলগুলো লাগিয়েছিলাম কিন্তু দেখো একদম সুন্দর লাগছেনা আমায়৷
.
দাঁড়াও সুন্দর লাগার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি৷ রিফাত আরিশার চুল আছড়িয়ে সব চুল এক পাশে এনে রেখে দিয়েছে৷ তারপর যে পাশে চুল নেই সেই পাশে মাইক ফুল গেঁথে দিয়েছে৷ মেঘলার লিপস্টিক এনে ঠোঁটে লিপস্টিক ও লাগিয়ে দিয়েছে৷
“ওয়াও তোমায় এই সামান্য সাজেই খুব সুন্দর লাগছে আরিশা৷
.
থ্যাংক ইউ৷ বাই দ্যা ওয়ে জিজু তুমি কিন্তু খুব সুন্দর করে চুল আছড়াও৷
.
“তোমার জিজুকে জিজ্ঞেস করে দেখো সে কয়বার চুল আছড়ায়৷
আরিয়ানের কন্ঠ শুনে দরজার দিকে তাকালো আরিশা৷ আরিয়ান দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷
“লিসেন আমার জিজু অনেক হ্যান্ডসাম ওকেহ্৷
.
হ্যা সেটাতো দেখতেই পাড়ছি৷ ভাইয়া তুই কিন্তু পার্লারের কাজ নিতে পারতিস৷ তোর সাজানো দেখে লোকজনে খুশি হয়ে তোকে নবেল দিতো৷
.
আরে আমাকে কী একটু বেশিই সুন্দর লাগছে নাকি৷(ভাব নিয়ে)
.
একদম না পুরাই জোকার লাগছে৷ আগেই সুন্দর লাগছিলো৷
আরিশা মুখ ফুলিয়ে চলে গেলো৷ এই ছেলেটা সব সময় টিজ করে আমায়৷ আমার বাড়ি যাও চান্দু তারপর দেখাবো কত ধানে কত মরিচ হুহ৷
🏘️🏘️🏘️🏘️🏘️
আরিশারা তাদের বাড়িতে চলে এসেছে চার ঘন্টা হলো৷ আরিশা শাওয়ার সেরে ছাদে গিয়ে দাঁড়ালো চুল শুকাবে বলে৷ বেলা তখন ৪টা বাজে৷ ছাদে দাড়িঁয়ে যেন সে আলাদা একটা প্রকৃতি দেখছে৷ আজকের প্রকৃতিটা খুব সুন্দর৷ আরিশা মনের সুখে প্রকৃতি দেখছে আর গান গাইছে,,দেখো আমারি খুশিতে ওই বাগানে ফুল ফুটে,সেই খুশিতে সূর্যটাও মুচকি হেসে উঠে৷
“লিসেন না তোমার হাসিতে বাগানে ফুল ফুটবে আর না সেই খুশিতে সূর্যটাও মুচকি হাসবে৷
এরকম টিজ মার্কা কথা শুনে পিছনে তাকালো আরিশা৷ তারপর ব্রু কুচকে বললো,,
“এই আপনার কী কোন কাজ নেই৷ শুধু শুধু আমাকে টিজ করেন কেন আজব৷ আপনার জন্য একটা গানও শান্তিতে গাইতে পাড়িনা আমি৷
.
গান গাইবে তো ভালো কথা কিন্তু তাই বলে এমন গান৷ একটু রোমান্টিক গান গাও শুনি৷
.
ট্যাকা পড়ছে৷কথাটা বলে আরিশা চলে যেতেই রিফাত মেঘলা আর ওর কিছু মেয়ে কাজিনরা চলে এসেছে৷ কারও হাতে গ্লাস কারও হাতে প্লেট কারও হাতে বাটি৷ আরিশা কিছুই বুঝতে পারছেনা তাই বললো
“একি এসব কী৷
.
“আজ ছাদে বসে গান গাওয়া হবে আর এগুলো খাওয়া হবে৷ নতুন নতুন বিয়ে হয়েছে একটু মজা তো করতেই হবে৷ (প্রিয়া)
.
তা মেনুটা কি৷
.
মেনুটা হলো পাকোড়া৷ বিকেলে পাকোড়া খাওয়ার টেষ্টই অন্য রকম৷ (শিমু)
.
চলো চলো সবাই আসন পেতে বসে পড়ো৷ (মেঘলা)
মেঘলার কথা অনুযায়ী সবাই ছাঁদে বসে পড়েছে৷
আরিয়ান ছাঁদ থেকে চলে যেতেই সবাই এনে ওকে সবার মাঝখানে বসিয়ে দিলো৷ আর সবার আগে গান আরিয়ানই গাইবে বল স্লোগান দিতে থাকলো৷
আরিয়ান না না করছে৷ তবুও কে শুনে কার কথা বাধ্য হয়েই গিটার নিয়ে সুর তুলল,,,
দিল ইবাদাত কার রাহা হে,দারকানে মেরি সুন
.
তুজকো মে কারলো হাসিল,লাগি হে ইয়াহি ধুন৷
.
জিন্দেগী কি শাখ সে লুন,কুচ হাসি পাল মে চুন
.
তুজকো মে কারলো হাসিল,লাগি হে ইয়াহি ধুন৷
.
জো ভি জিতনে পাল জিয়ো,উনহে তেরি সাঙ্গ জিয়ো,
.
জো ভি কাল হো আব মেরা,উসে তেরে সাঙ্গ জিয়ো৷
.
জো ভি সাসে মে ভারো,উনহে তেরে সাঙ্গ ভারো,
.
চাহে জো হো রাসতা,উসে তেরে সাঙ্গ চালো৷
.
দিল ইবাদাত কার রাহা হে,দারকানে মেরি সুন্
.
তুজকো মে কারলো হাসিল, লাগি হে ইয়াহি ধুন৷
.
জীন্দেগী কি শাখ সে লুন,কুচ হাসি পাল মে চুন,
.
তুজকো মে কারলো হাসিল, লাগি হে ইয়াহি ধুন৷৷৷৷৷৷
.
আরিশা আরিয়ান গান গাওয়ার সময় এক দৃষ্টিতে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলো৷ আরিয়ানও তাকিয়ে ছিলো ওর দিকে৷ আরিশার আরিয়ানের চোখ দুটি যেন কেমন চেনা চেনা লাগছে৷কোথায় দেখেছে দেখেছে কিন্তু মনে করতে পারছেনা৷ আরিশা আরিয়ানের দিকে আরেকবার তাকালো চোখের দিকে নয় বুকের দিকে৷ আরিয়ান ব্লু শার্ট পড়েছে তার মধ্যে আবার কয়েকটা বোতামও খুলা যার জন্য আরিয়ানের সাদা বুক দেখা যাচ্ছে৷ তবে আরিশা এটা ফলো করছেনা৷ আরিয়ানের বুকে কিছুর ট্যাটু করা আছে সেটার দিকে ফলো করছে ভালো মতো দেখতে পারছেনা সে বাতাসের কারনে৷ বাতাস একবার ওর শার্ট বুকের উপর রাখছে তো আবার সরাচ্ছে৷ আরিয়ান বিষয়টা ফলো করে গিটার রেখে ওর শার্টের বোতাম লাগিয়ে নিয়েছে৷ আরিশার মনে কেমন যেন খটকা লাগছে৷
★★★★
বিকেলে আনন্দ ফুর্তি করে সবাই ঠিক করেছে কাল শপিং করতে যাবে৷ তাই সকাল হতেই আরিশা রেডি হওয়া শুরু করে দিয়েছে৷ রেডি হয়ে নিচে গেলো৷ তারপর সবার সাথে শপিংয়ে চলে গেলো৷ শপিংয়ে গিয়ে আরিশা ইচ্ছে করেই আরিয়ানের সাথে সাথে হাঁটছে৷ হ্যান্ডসাম ছেলে দেখে লুইচ্চা মেয়েরা চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে৷ এর সাথে একটু হাঁটলে মেয়েরা মনে করবে আমি ওর বউ আর সবাই জ্বলবে হাহা হেহে কী মজা৷
আরিশাকে হাসতে দেখে আরিয়ান জিজ্ঞেস করলো হাসছে কেনো??
“দেখেন মেয়েরা কীভাবে লুচির মতো ফুলছে৷ এদের অবস্থা দেখে না আমার একটা গান মনে পড়েছে৷
.
কী গান৷
.
শুনবেন দাঁড়ান বলছি,,
.
“লগে হামসে জ্বালতি হে,জ্বালতি হে ইস বাত পে৷
.
“কিউ ইতনি জাদা খুব সুরাত লাগতাহে হাম সাথ মে৷
“ওমা তাই৷ না আমাদের এক সাথে সুন্দর লাগছে, আর না ওরা জ্বলছে৷ ওরা তো হাসছে৷ এটা ভেবে যে তোমাকে আমার সাথে জোকারের মতো লাগছে৷
.
এই একদম মিথ্যা কথা বলবেননা৷ ওরা যদি হাসতো তাহলে তো দাঁত বেড় করতো৷ কিন্তু চেয়ে দেখেন এরা কীরকম কাল নাগিনের মতো নাক ফুলাচ্ছে৷ মানে ওদের জ্বলন হচ্ছে৷
চলবে♥️