#Marriage_With_Benefits_2
#Part_16
Writer:: Sanjida Nahar Shaanj
.
.
ঠিকই তোকে কি কখনও আমরা বাহিরের লোক ভেবেছি?(আভি আরিফের কাধে হাত দিয়ে)
থ্যাঙ্ক ইউ।(আরিফ আবারও চোখে জল ফেলে)
বাহ।এখন থ্যাঙ্ক ইউতে কোনো কাজ হবে না। সবাইকে ট্রিট দিবে।আমাকে অনেক কথা শুনিয়েছ।এখন তোমার পকেট খালি করার পালা আমার।(আরশি কোমরে হাত দিয়ে)
একদম ঠিক।ট্রিট দিবি কিনা বল।(আয়ুশ আরিফের কাধে হাত দিয়ে)
আচ্ছা।দিবো।(আরিফ হাসতে হাসতে)
অনেক হয়েছে ইমোশনাল কথা।এখন আবারও আসল কথায় ফিরি।(আমি)
আবার কি আসল কথা?(আভি ভ্রু কুঁচকে)
আমাদের চার জুটির আবার বিয়ে হবে!(আমি)
তা তো অনেক ভালো।(আরশি এক্সসাইটেড হয়ে)
আমরা সবাই আরশির দিকে😒
এমনি এমনি।(আরশি)
ওয়াও।আম্মু আব্বুর আবার বিয়ে হবে?আমরা আম্মু আব্বুর বিয়ে দেখবো?(আরাভ এক্সসাইটেড হয়ে)
আমরাও আম্মু আব্বুর বিয়ের ছবিতে থাকবো কি মজা?(আরাভি হাত তালি দিয়ে)
হুম।বাবা।কিন্তু এইটা এতো সহজ না।(আমি ওদের মাথায় হাত বুলিয়ে)
বিয়ে করবো!এতে আর কঠিন কি?(আভি ভাব নিয়ে)
ধারাও বলছি।তোমাদের ছেলেদের মানে আভি,,আয়ুশ,,আর জয়।তোমাদের আমাদের পরিবারের মানে আমার,,ছায়ার আর আরশির পরিবারের পারমিশন নিতে হবে তাদের রাজি করাতে হবে।যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা রাজি হচ্ছে আমাদেরও বিয়ে হচ্ছে না।(আমি ভাব নিয়ে)
বিয়ে কিন্তু হয়ে গেছে।(আভি হাসতে হাসতে)
হ্যা(ভেংচি দিয়ে)।যেইভাবে হইছে সেভাবে বিয়ে আমরা মানি না।তোমরা খালি ধরবে আর বিয়ে করবে এইটা হবে না।(আমি ভ্রু কুঁচকে)
কিন্তু আমি তো ধরি নি বরং আমাকে ধরা হয়েছে।(জয়)
সেটা ব্যাপার না।(আরশি)
কিহ?(জয়)
হয়েছে হয়েছে।এখন আবার আসল কথায় ফিরে আসা যাক।আমরা মেয়েরা বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বাড়িতে থাকবো।(আমি)
মানে?তোমরা তো তোমাদের বাড়িতেই আছো।এইসবের মানে কি?(আভি অবাক হয়ে)
মানে নরমাল। মেয়েরা বিয়ের আগে তো বাপের বাড়ি থাকে।আমরাও থাকবো।তোমরা আমাদের দেখতে যাবে।আমাদের পরিবারকে রাজি করিয়ে,,ধুমধাম বিয়ে করে এই বাড়িতে নিয়ে আসবে।নরমাল ভাবে।(আমি রক্ত চক্ষু দিয়ে)
এটা তো খুব সহজ।(আয়ুশ ভাব নিয়ে)
খুব সহজ না?তাহলে করে দেখাও।ধরে বেধে বিয়ে করতে সবাই পারে।এখন দেখ নরমাল ভাবে বিয়ে করা কতো কঠিন।(ছায়া আয়ুশ এর সামনে গিয়ে চোখে চোখ রেখে)
আয়ুশ শুকনো ঢোক গিলে।
আরিফ তুমিও আছো।আমি রাবেয়াকে নিয়ে যাচ্ছি বাসায়।(আমি)
কিন্তু আমি তো আর কাউকে ধরে বেধে বিয়ে করি নি।(আরিফ ঠোঁট ফুলিয়ে)
তাতে কি হয়েছে এখন করবে। তাও আমাদের সাথে।(আমি আরিফের কাধে হাত রেখে)
সবার জন্য আমিও ফেঁসে গেলাম।(আরিফ মাথা হাত দিয়ে)
আরাভ আর আরাভি। চলো আমার সাথে।তোমরা বাবা মায়ের বিয়ের আগ পর্যন্ত তুমি আমার সাথে থাকবে।(আমি ওদের হাত ধরে)
ইয়ায়!আমরা নানু বাড়ি যাবো।(বলেই আরাভ আর আরাভি এক্সসাইটেড হয়ে গেল)
কেনো?ওরা যাবে কেনো?(আভি অবাক হয়ে)
কেনো মানে?তোমরা যে ওদের ব্যবহার করে বুদ্ধি বের করবে তা আমি জানি।(আমি আভির আঙ্গুল দিয়ে)
কী বুদ্ধি বের করবো?আমরা কি এতো অপদার্থ নাকি?(আভি জোরপূর্বক হাসি দিয়ে)
তুমি কি বলছো নাকি জিজ্ঞেস করছো?যদি জিজ্ঞেস করে থাকো তাহলে হা।আর যদি বলে থাকো তাহলে বলবো নিজেকে ভালো করে চিনেছ।(আমি কোমরে হাত দিয়ে)
আমি আর পেরে উঠলাম না।(আভি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো)
ভাই।আমরা হার মানবো না।বিয়েই তো।করে দেখিয়ে দিবো।(আয়ুশ বুক বুলিয়ে)
বুক কম ফুলাও। ব্লাস্ট হয়ে যাবে।আগে করে দেখাও।(ছায়া আয়ুশ এক গাল ধরে)
দূর।
বলেই আয়ুশও বসে পড়লো।
এইদিকে জয় আর আরিফ অসহায়ের মতো দাড়িয়ে আছে।
আমরা হাসতে হাসতে শেষ।
বাবা,মা দাদু আমরা যাই।(আমি)
যা যা।বাড়ির বউ নিতে আমরাও আসছি।(দাদু)
আরমান আঙ্কেল এতো সহজে কিন্তু আমরা মেয়ে দিবো না!(কলি)
তা আমরা দেখে নিবো।(সুমাইয়া)
হুম।দেখে নিও।(জিসান)
দরকার হলে ছেলেদের দিয়ে মেয়েদের ভাগিয়ে নিয়ে আসবো।(আদি)
আমরা ভাগবো না।(ছায়া)
অনেক হয়েছে তর্ক বিতর্ক।এতো তর্ক বিতর্ক করলে আর শেষ হবে না।এখন চলা যাক।(আমি)
বলেই আমরা সবাই খান বাড়িতে চলে আসলাম।সেখানে ফুপি আর ফুফা আগে থেকেই ছিলো।
।
।
খান বাড়িতে
কী হয়েছে?(ফুপি)
কিছু না। তারা কাল আসবে মেয়েদের দেখতে।(কলি)
মেয়েদের দেখতে মানে?(ফুফা অবাক হয়ে)
মানে বাবা আমি বলছি।আসলে আবু ছেলেদের জব্দ করার একটা সেই আইডিয়া বের করেছে।
বলেই ছায়া ওর বাবা মাকে আমাদের প্ল্যান বুঝিয়ে দিলো।
বাহ।ভালো তো। কিন্তু এখন সমস্যা হলো একদিকে আমাদের মেয়ে দেখতে আসছে আরেক দিকে আমাদের ছেলে কোন দিকে যাবো আমরা?(ফুফা)
আমরা তো দুই দিকেই যাবো।তাড়াতাড়ি মেয়েকে বিদায় করলে বাঁচি।(ফুপি)
বাহ।মা তুমি দেখি আমার বিদায়ের আগে পর করে দিলে।মামী কিছু বলো।(বলেই ছায়া নেকা কান্না করতে করতে মাকে জড়িয়ে ধরলো)
আয় মা।আমি আছি না তোর দলে কোনো চিন্তা নেই।(বলেই কলি ছায়াকে জড়িয়ে ধরলো)
তোর আদর শেষ এখন আমার বৌমাকে নিয়ে এসেছিস?(ফুপি)
এই নাও তোমার বৌমা।(বলেই আমি আরশি কে সামনে দাঁড় করিয়ে দেই)
বাহ।কি সুন্দর বউ মা আমার!
বলেই ফুপি আরশির সাথে কথা বলতে শুরু করলো।
অন্যদিকে
আমি একজনকে ফোন করে রাবেয়াকে আনতে বলি।আর খালা কেউ বলি কালকে যেনো চলে আসে।
কিছুক্ষণ রাবেয়া চলে আসলো
রাবেয়া কেমন আসিস?(আমি রাবেয়াকে জড়িয়ে ধরে)
আলহাদুলিল্লাহ।তুমি?(রাবেয়া)
আমিও আলহাদুলিল্লাহ।তুই জানিস এখানে কেনো ডেকে এনেছি তোকে?(আমি)
নাহ।কেনো?(রাবেয়া)
তোর আর আরিফের বিয়ে দিবো বলে।(আমি মুচকি হেসে)
তুমি কি করে জানলে?(রাবেয়া অবাক হয়ে)
আমি অনেক কিছুই জানি।এখন তুই আমার কথা শুন আমি তোকে কি বলছি
পরেই আমি ওকে সব কথা খুলে বললাম।
কিন্তু আমার পরিবারকে?(রাবেয়া মন খারাপ করে)
আমরা আছি না।এক মেয়ের সাথে না হয় আরেক মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিবো।(কলি রাবেয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে)
হুম।একদম ঠিক ওরা আরিফের তরফের হলে আমরা তোর তরফ থেকে যাবো।(আমি)
ঠিক আছে।
বলেই রাবেয়া আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
।
।
পরেই হাসি ঠাট্টা করতে করতে আমরা সময় কাটালাম।আমি নিহাল ভাইয়াকে ফোন দিলাম।উনি এতো দিন বিদেশ ছিলো ডালিয়াকে নিয়ে।উনার সম্পূর্ন ব্যবসা উনি বিদেশ ট্রান্সফার করেছিলো।এতো দিনের সব খবরই উনি নিয়েছিলো আসতেও চেয়ে ছিলো কিন্তু ডালিয়া দ্বিতীয়বার মা হয়েছে।আর প্রেগনেট অবস্থায় ডক্টর একদম না করে দিয়ে জার্নি করতে।এক সপ্তাহ হবে ডেলিভারি হয়েছে।এইবারও ছেলে হয়েছে।এখন মা ছেলে দুজনই সুস্থ।কিছু দিন পরে দেশে আসবে।নিহাল অনেক খুশি হলো আমি ফিরে এসেছি বলে।ডালিয়া তো সেই কি কান্না ফোনে।অনেক কষ্ট করে ওকে থামিয়েছি। ও সেই আগের মতই আছে।আমাকে খুব মিস করছে আমিও ওকে খুব মিস করছি।এখন ওরা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে ফিরবে।
।
।
আমি গেলাম ঘুমাতে
আজ আরশি আর আমি এক সাথে ঘুমাবো। আরাভ আর আরাভি ওদের নানা নানীর সাথে ঘুমাবে।ছায়া আর রাবেয়া এক সাথে ঘুমাবে।
আরশি তোমাকে চিন্তিত মনে হচ্ছে?(আমি ওর কাঁধে হাত রেখে)
আমার মার কথা অনেক মনে পড়ছে।মা যতই খারাপ হোক মা তো মাই হয় না!আজ উনি থাকলেও তো কতো খুশি হতো।আমার বাবা এখন ভাই আর আমার তরফ থেকে আসবে।মা থাকলে বাবার কষ্ট হতো না। তাই না?আমি অনেক মিস করছি ভাবী মাকে?
বলেই আরশি আমাকে জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করলো।
আমার ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
।
।
অন্যদিকে
কী এক পেরা নিলাম।এখন আবার ওদের রাজি করাও দেখতে যাও।হেন তেন করো।আর ভাল্লাগেনা।(আয়ুশ পায়চারি করতে করতে)
তোদের তবু ভাবাও যায়।কিন্তু আমার কথা ভাব।আমার তো বাচ্চাও হয়ে গেছে।তবুও এখন এই সব করতে হচ্ছে।(আভি নখ কামড়াতে কামড়াতে)
আমি তো এইসবে আগেও ছিলাম না পিছু ছিলাম না। কিন্তু দেখো ফেঁসে গেলাম।(আরিফ সোফায় আসন পেতে বসে)
আর আমি তো এইসবের কিছুই বুঝতে পারছিনা।(জয় মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে আছে)
ওরে আমার নাতি গণ।এতো চিন্তা কেনো করছিস।বিয়েই তো করতে যাবি।যুদ্ধ তো আর না।(দাদু সোফায় বসে)
দাদু তুমি আস্থাকে চিনো না। ও নিশ্চয়ই কিছু না কিছু প্ল্যান করছে।(আভি)
তাতে কি যখন marriage with benefits করতে গিয়েছিলে তখন তোমাদের মর্জি ছিলো এখন marriage with love করবে এখন তো ওদের মর্জি থাকাটা স্বাভাবিক।(দাদু)
হ্যা।এইজন্যই ইচ্ছা মত টেনশন দিচ্ছে।(আরিফ)
আচ্ছা।জয় তুমি তো ওই বাড়িতে যেতে পারো।যতই হোক তোমার বাড়ি ওইটা।গিয়ে আমাদের সব প্ল্যান বলো।(আয়ুশ)
চেয়ে ছিলাম।কিন্তু আরশি না করে দিয়েছে।।বললো আজ যেনো তোমাদের বাড়ি থাকি।ভুলেও যেনো ওই বাড়িতে পারা না দেই।দিলে খবর খারাপ করে দিবে আমি খবর খারাপ করতে চাই না(জয়)
এইটাও আরেক।(আয়ুশ)
ওই চিন্তা করা বন্ধ কর।বুঝলি।যা হবার হবে।
বলেই দাদু উঠে গেলো।
কিছুক্ষণ পর আভির ফোনে একটা ফোন আসলো
আমি কল টা রিসিভ করে আসলাম।(আভি)
আচ্ছা।(আয়ুশ)
।
।
আচ্ছা।ঠিক আছে।আমি দেখছি।(আভি ফোনে)
।
।
সকালে
সবাই নিচে সোফায় বসে আছে।রোহান অত্যন্ত ক্ষেপে আছে।আয়ুশ চুপ করে সোফায় বসে আছে।
তুমি এখানে কি করছো তোমাকে কে জেল থেকে বের করছে।(রোহান)
চাচু আমি চাচীকে বের করেছি।(আভি)
কেনো? ও এতো কিছু করার পরেও কি করে ওকে বের করলি।(রোহান)
কারণ উনি উনার শাস্তি পেয়েছে।আর আস্থা ওকে মাফ করে দিয়েছে।কাল রাতেই ওই আমাকে ফোন দিয়ে বললো।(আভি)
কিন্তু,,(রোহান)
কোনো কিন্তু না আস্থা চায়।সব ভুলে একটা নতুন জীবন শুরু করতে।আর আমিও চাই।এখন চাচু তুমি প্লিজ চাচীকে মাফ করে দাও।আর আয়ুশ তুইও মাফ করে দে।(আভি)
ভাবী মাফ করে দিয়েছে।আমার আর কোনো অভিযোগ নেই।(আয়ুশ)
সবাই রোহানের দিকে তাকিয়ে আছে।সবাই রোহানের জবাবের অপেক্ষায় আছে।
ঈশানি গিয়ে রোহানের পায়ে ধরে কাদতে শুরু করলো
এইবারের মতো মাফ করে দাও আমাকে!আমার ভুলের জন্য আমি অনেক অনুতপ্ত।আমি নিজের বদলা নেওয়ার নেশাতে এতই মগ্ন ছিলাম যে তোমার ভালোবাসা বুঝতেই পারিনি।কিন্তু তোমার থেকে আলাদা হয়ে আমি বুঝতে পারলাম আমি তোমাকে কতো ভালোবাসি।তুমি যদি চাও আমি এখান থেকে চলে যাবো।আমি শুধু তোমার ক্ষমা চাই আর কিছু না।(ঈশানি কাদতে কাদতে)
রোহান ঈশানিকে বাহু ধরে তুলল
উঠো!আর কোনো দিন এমন খারাপ কিছু করবে না।এইটা তোমার পরিবার।এর খারাপ কিছু হলে তোমারও খারাপ হবে।সব সময় মনে রাখবে।(রোহান)
মনে রাখবো।কিন্তু তুমি আমাকে মাফ করে দিয়েছো?(ঈশানি)
হুম।
বলেই রোহান চাচু ঈশানি চাচীকে জড়িয়ে ধরলো।
আর সবাই মিলে হাত তালি দিতে শুরু করলো।
আভিও গিয়ে আয়ুশকে জড়িয়ে ধরলো।
থ্যাঙ্ক ইউ ভাই।(আয়ুশ আভিকে জড়িয়ে ধরে)
আভি মুচকি হাসলো।
আই লাভ ইউ সুমাইয়া।(আদি সুমাইয়ার হাত ধরে)
আই লাভ ইউ টু।(সুমাইয়া আদির দিকে তাকিয়ে)
এখন অনেক হয়েছে।সবাই তৈরি হও বাড়ির বউদের বাড়ি আনতে হবে।(দাদু সকলকে তারা দিয়ে)
আচ্ছা আচ্ছা।(সবাই)
।
।
খান বাড়িতে
আমরা সবাই উপর থেকে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ছেলেদের দেখছি।কাকে কেমন লাগছে।
আমি খুব কষ্ট করে নিজের হাসি লুকাচ্ছি।খুব হাসি পাচ্ছে আভির অস্বস্থি ভরা মুখ দেখে।কোনো মত নিজের হাসি কাবু করছি।
ভাবী মাও এসেছে!(আরশি অবাক হয়ে)
হুম।এখন উনি ভালো মানুষ হয়ে গেছে।আর আমিও উনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।(আমি আরশির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে)
থ্যাঙ্ক ইউ ভাবী।আমি গিয়ে মার সাথে কথা বলে আসি।
বলেই আরশি নিচে গেলো।
সবাই ঈশানি চাচীকে মাফ করে দিয়েছে।এখন উনার মুখে আমি যেই হাসি দেখি এইটা কোনো শয়তানী হাসি না।খুশির হাসি।সত্যিই একটা সময় আসে যখন মানুষ পরিবর্তন হয়।একটা সময় আসে যখন মানুষ ভালো পথে আসে।ঈশানি চাচীর জন্য আমি অনেক খুশি।উনি আরশি আর আয়ুশ এর মা হয়ে বিয়েতে সব দায়িত্ব পালন করছে।দেখেই ভালো লাগলো।
কিরে এখানে দাড়িতে থাকবি নাকি রেডি হবি।(খালা)
খালার কথা শুনে পিছনের উনার দিকে তাকালাম।
আজ খালাও এসেছে আমাদের সাথে।
হচ্ছি রিনা খান।এতো টেনশন নিও না।আচ্ছা বাচ্চারা কই সকাল থেকে দেখি না।নানা নানী পেয়ে মাকে ভুলে গেলো।(আমি অবাক হয়ে)
হ্যা।আর বাবাকে পেয়ে নানা নানিদের।দেখ নিচে যেই দেখেছে বাবা এসেছে ওমনি বাবার কাছে দৌড়।(খালা)
আমি তাকিয়ে দেখি সত্যি।আভির মধ্যে ওদের প্রাণ।বলতেই হবে আভির সাথে আমার এই বিষয় নিয়ে অনেক জ্বলে।বাচ্চারা ওর সাথে একটু বেশিই কাছের। ব্যাপার না।আমাকেও ওরা অনেক ভালোবাসে।তবে বলতে হবে আমার পরিবারটা অনেক কিউট।(আমি মনে মনে)
কিরে রেডি হতে যা।(খালা তাড়া দিয়ে)
আরে যাচ্ছি যাচ্ছি।
বলেই আমরা সবাই রেডি হতে গেলাম।
আমি মেরুন রঙের শাড়ি পড়েছি।মাথায় ঘোমটা দেয়া।ঘোমটার ভিতর দিয়ে চুল ছাড়া।চোখে হালকা কাজল।ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক।আমরা সবাই এক রকম করেই সেজেছি।শুধু শাড়ী ভিন্ন আরশির শাড়ি পিংক,,ছায়ার শাড়ি সবুজ আর রাবেয়ার শাড়ি বেগুনি।আর আমাদের এই রঙের শাড়ি পরার কারণ আমাদের হবু বররা।ওরাও এই রঙের পাঞ্জাবি পড়েছে।
কিছুক্ষণ পর আরাভ আর আরাভি এসে
ওয়াও।আম্মু তোমাকে কি বিউটিফুল লাগছে!(আরাভি)
একদম রানীর মতো।(আরাভ)
এখন মনে হলো তোমাদের?বাবাকে পেয়ে তো দেখলাম আমাকেই ভুলে গেছো।(আমি মন খারাপের ভান করে)
আরে আমার আম্মুকে কি আমরা ভুলতে পারি।
বলেই ওরা আমার গালে চুমু দিল।
ওরে আমার বাবা গুলো রে।
বলেই আমিও ওদের জড়িয়ে ধরি।
আস্থাকে কি খুশি লাগছে না!আমি কি এক ভুল করেছি।(কলি)
এখন আর পুরনো কথা বলে লাভ নেই।সব তো ঠিক হয়ে গেছে।(জিসান)
হুম।(কলি আস্থার দিকে তাকিয়ে)
চলো চলো এখন চলো।(ফুপি এসেই আমাদের তারা দিলো)
পরেই সবাই আমাদের নিয়ে গেলো।
।
।
নিচে আমরা বসে আছি।দেখেই বুঝতে পারছি ছেলেরা আমাদের দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে।
বাবা কাশি দিয়ে।
কী ছেলে এইগুলো মেয়েদের দিকে কি অসভ্যের মতো তাকিয়ে আছে!(জিসান)
দিলি তো নাক কেটে।(দাদু আভি ,আরিফ আর আরিফের কানে কানে)
আয়ুশ এর কান্না করার অবস্থা।
আপনাদের ছেলেও তো আমাদের মেয়ের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।(ঈশানি জয়কে উদ্দেশ্য করে)
তা তো করবেই।আপনাদের মেয়েকে সাজিয়ে এনেছেন দেখানোর জন্যই তো না।(ফুপি)
বাহ। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শুরু হয়ে গেছে।(আমি মনেমনে)
আচ্ছা।আবহাওয়া অন্য যাওয়ার আগে আমরা আসল কথায় আসি।(দাদু)
আস্থা এইসব কি শুরু করছো তুমি?(আভি মনে মনে)
তা আপনাদের বড়ো ছেলে কি করে?(জিসান একদম মেয়ের বাবার ভাব নিয়ে আভিকে উদ্দেশ্য করে)
আমাদের ছেলে ব্যবসা করে।(আদিও ভাব নিয়ে)
ব্যবসা করলে তো মানুষ পরিবারকে সময় দিতে পারে না।(কলি মাথা নেড়ে)
তা আপনার ছোটো ছেলে কি করে?(ফুফা আয়ুশকে উদ্দেশ্য করে)
আমাদের ছোটো ছেলে রাজনীতি করে।অনেক বড় একজন নেতা।(রোহান চাচু)
রাজনীতি তো ভালো না।মানুষ ভালো হয় না।(ফুপিও ঠোঁট উল্টে)
নাহ।মনে হচ্ছে না আমরা আমাদের মেয়েদের বিয়ে দিতে পারবো না।(খালা মাথা নেড়ে)
আচ্ছা আপনাদের ছেলে কি করে?(ঈশানি ভ্রু কুঁচকে জয়কে উদ্দেশ্য করে)
আমাদের ছেলে খুব বড়ো ডক্টর।(ফুপি ভাব ধরে)
কিসের ডক্টর?(রোহান ভ্রু কুঁচকে)
ব্রেনের ডক্টর।(ফুফা)
ব্রেনের ডক্টর কি আর মনের খবর বুঝবে?(ঈশানি)
হায় আল্লাহ।এইসব কি চলছে?আমার পরিবার এই সব কি করছে?আমি পাগল হয়ে যাবো মেয়ে দেখতে আসা কি এতো মুশকিল?আস্থা বিয়েটা এক বার হোক তারপর দেখো কি করি!।(আভি মনে মনে)
আমার যা ভালো লাগছে।আর আমাদের পরিবারও কি সুন্দর অভিনয় করে যাচ্ছে।আমার খুব হাসি পাচ্ছে।(আমি খুব কষ্টে নিজের হাসি আটকে)
।
।
চলবে,,,