তোর আসক্তি পাগল করেছে আমায় পর্ব-২২+২৩

0
2813

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২২

–“টুসুন বেবী তুই এখানে। কবে ফিরেছিস?বেলা আনন্দ উত্তেজিত বলে ওঠে।
.
–” বেলা । পিছন থেকে ডেকে ওঠে।
.
–“দিয়া তুই। কেমন আছিস। বেলা আলিয়া কে জড়িয়ে বলে ওঠে।
.
. এদিকে তিনজন একসাথে জড়িয়ে আছে। বেলা জড়িয়ে ধরে লাফালাফি করছে আনন্দ উত্তেজনায়। এদিকে সবাই অবাক হয়ে দেখে যাচ্ছে ওদের কে। ওম বেদ রুহি অবাক হয়ে একবার সামনে আর একবার নিশান এর দিকে দেখছে। যে এই মুহূর্তে হ্যাবলার মত সামনে তাকিয়ে আছে।
.
–“বেদ ।আমি যা দেখছি তুই ও কি তাই দেখছিস। ওম বেদ কে ধাক্কা দিয়ে বলে ওঠে।
.
–” হুম আমিও দেখছি তাই। সকালের সেই মেয়েটা। বেদ গালে হাত দিয়ে বলে ওঠে।
.
. সারা জাকিয়া সারিফ সাঁঝ অবাক হয়ে দেখছে ওদের সামনে দাঁড়ানো বেলা আলিয়া আর টুসুন নামের মেয়েকে।
.
. নিশান তো আকাশে উড়তে শুরু করেছে। হাত টা আপনা আপনি গালে চলে গেছে। চোখের সামনে আবারো সেই হাওয়া আর ফুল পড়ছে। গিটার ভায়োলেন বাজছে। লাইক দিনের আকাশে তারা দেখার মত অবস্থা নিশান এর।
.
. বেলা ওদের কে নিয়ে সবার দিকে এগিয়ে আসে। টুসুন সামনে এগোতে দেখে সকালের সেই ছেলে মেয়ে গুলো। আর সেই ছেলেটা আবারও তার দিকে ক্যাবলার মত তাকিয়ে আছে। টুসুন রাগী চোখে তাকালে ও সেই আগের মত তার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
–“মিষ্টি কে এনারা? জাকিয়া জিজ্ঞেস করে।
.
–“এ হলো শান্তা শান টুসুন। আমার কাজিন। আমার পিপিন একমাত্র বেবি। কানাডার বাসিন্দা। বলেই বেলা হেসে ফেলে।
.
–“আর এটা হলো আমার দিয়া। তোমরা তো সবাই চেন। আলিয়া কে জড়িয়ে বলে ওঠে।
.
–” মেরি জান আমাকে এটা বল তুই বিয়ে করলি কবে আর আমাকে একবার ও জানালি পর্যন্ত না। আমি আজকে তোকে সারপ্রাইজড করতে এসে নিজে সারপ্রাইজড হয়ে গেছি। মুখ বেকিয়ে বলে ওঠে।
.
. এদিকে সাঁঝ বিড়াল চোখে দেখে যাচ্ছে যা হচ্ছে। পকেটে হাত রেখে বেলার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে ইশারা করে। বেলা একবার দেখে চোখ সরিয়ে নেয়।
.
–“আমি তো বাড়ি গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে তোকে পেলাম না তোর মামী বললো তোর নাকি বিয়ে হয়ে গেছে। আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম সোজা মাটিতে। আমি তো ভেবেছি তোর ওর মা কাম মামী তোর সাথে কোনো বুড়ো ভাম এর সাথে বিয়ে দিয়েছে। বাই দ্য ওয়ে। তোর বর কোথায় নিশ্চয়ই কোনো থুরথূরে বুড়ো ভাম হবে। সালা মেরে স্বর্গে পাঠিয়ে দেবো আমার বেবি কে বিয়ে করা দেখিয়ে দেবো। টুসুন চোখ মুখ মটকে হাত মুঠো করে বলে ওঠে।
.
–“হোয়াট! বুড়ো? সবাই একসাথে চিৎকার করে ওঠে।
.
. এদিকে বেলা সবার মুখ দেখছে আর টুসুন সবার চিৎকার করায় বড় বড় চোখ কিরে ফেলেছে আর বাকিরা তো বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে।
.
. সাঁঝ তো হ্যাচকা টান মেরে বেলা কে নিজের বুকের ওপর এনে ফেলে। বেলার কোমরে হাত রেখে নিজের সাথে জড়িয়ে রাখে। এদিকে এইরকম একটা অ্যাকশন এর জন্য বাকি গুলোর মুখে হাসি ফুটে ওঠে আর শান্তার মুখ বড় হা হয়ে যায়।
.
–“লাইক সিরিয়াসলি বুড়ো ভাম। সাঁঝ ভ্রু নাচিয়ে বলে ওঠে।
.
. শান্তা মাথা নাড়া দেয়। তার অবাক হয়ে প্রশ্ন চোখে তাকায়।
.
–” তোমার মেরি জান এর বুড়ো ভাম হাজব্যান্ড। সাঁঝ বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
. এদিকে সবাই সাঁঝ এর এমন কথা শুনে চিৎকার করে হেসে ওঠে। আর শান্তা বোকার মত দাঁড়িয়ে আছে। সাঁঝ হেসে এক হাত শান্তা কে টেনে নিজের সাথে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে বলে ওঠে।
.
–” আধিঘরওয়ালি মে হুঁ তেরি জান কি হাজব্যান্ড। পাসান্দ আয়ে কেয়া ।
.
–” হুম । সরি। মুখ ফুলিয়ে বলে ওঠে শান্তা।
.
. এদিকে সবাই এত হাসাহাসি হলেও নিশান সেই একই পোজে দাঁড়িয়ে আছে।বেলা সবাই এর সাথে শান্তা কে পরিচয় করিয়ে দেয়।
.
–“বাই দ্য ওয়ে তুমি বিদেশে থেকে শাড়ি ওয়াও। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–“আসলে জিজ বেলার অনেক পছন্দের হল শাড়ি। আর আজকে বেলা কে সারপ্রাইজড করার জন্য পড়েছিলাম। ও সব সময়ে আমাকে শাড়ি পরে দেখতে চেয়েছিল। শান্তা হেসে বলে ওঠে।
.
–“ওহ ।হেসে বলে ওঠে সাঁঝ। তার মানে তোমার শাড়ি পছন্দের মনে মনে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
. এদিকে নিশান এর সামনে এসে দাঁড়াতে নিশান এর ফেস রিয়্যাকশান দেখে অবাক হয়ে গেছে। সাথে সবাই অবাক হয়ে আছে। এতক্ষণ পর এবার সবাই খেয়াল করলো নিশান কে। আর এদিকে শান্তা বিব্রত বোধ করছে। নিশান এর দৃষ্টি দেখে যেনো খানিক লজ্জা ও পাচ্ছে কিন্তু কেনো বুঝতে পারছে না। নিশান এর দিকে তাকিয়ে জীব ভেঙায়।
.
–“তোমাকে খুব সুন্দর লাগে জীব ভেঙালে। নিশান ঘোরের মধ্যে বলে ওঠে।
.
–” হোওও।সবাই বলে ওঠে এক সাথে।
.
.
. 🎶 তুম ভি হো মে ভি হু
পাস আও তো কেহদু
আখির কিউ পাল মে ইউ
দিয়ানা মে হো গেয়া 🎶
.
. নিশান ওর সামনে দাঁড়ানো শান্তার হাত টেনে নিজের সাথে লাগিয়ে নেয়। কোমরে হাত রেখে ঘোরাতে থাকে। সে নিজেও বুঝতে পারছে না সে কি করছে। পুরো যেনো নেশায় বুঁদ হয়ে গেছে। শান্তা নিজেকে ছাড়াতে চাইলে ও পারে না। আর এদিকে বাকি গুলো সরে গিয়ে বসে বসে চোখের সামনে হওয়া রোমান্টিক সিন দেখছে।
.
. 🎶 তুমে জো মেইনে দেখা
তুমে জো মেইনে জানা

তুমে জো মেইনে দেখা
তুমে জো মেইনে জানা
জো হুস থা বো তো গেয়া
বাদান কি এ খুশবু জাগানে লাগে জাদু
তো হো কে বেকাবু দিল খো গেয়া 🎶
.
. নিশান শান্তা কে ঘুরিয়ে দিয়ে দূরে সরে গিয়ে দু হাত দু দিকে দিয়ে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶 তুমে জো মেইনে সোচা
তুমে জো মেইনে মানা
তুমে জো মেইনে দেখা
তুমে জো মেইনে জানা
জো হুস থা বো তো গেয়া 🎶
.
. নিশান হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে গালে হাত দিয়ে শান্তা এর দিকে তাকিয়ে আছে মিষ্টি হাসি নিয়ে। সবাই মিলে হাত তালি দিয়ে ওঠে এতেই ঘোর কেটে যায় নিশান উঠে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসছে আর মাথা চুলকাচ্ছে।
.
–“ইয়ার নিশান বেবি । এটা কখন হল কি করে হল আর কোথায় হল। বেলা উত্তেজিত হয়ে নিশান এর কাছে গিয়ে বলে ওঠে।
.
–” জানি না বাস হয়ে গেলো। ইনোসেন্ট ফেশ বানিয়ে বলে ওঠে।
.
. বাকিরা হেসে ওঠে বেদ ওম বেলা রুহি একসাথে নিশান কে জড়িয়ে ধরে। আর এদিকে দাঁড়িয়ে থাকা সারা জাকিয়া সারিফ সাঁঝ আলিয়া হেসে ওঠে। আর শান্তা বিরক্ত রাগী বিব্রত হয়ে তাকিয়ে আছে। এদের এই মাঝে মাঝে যে যার জুড়ির হাসি মুখ খানি দেখছে মুগ্ধ চোখে আর ইশারায় কথা হচ্ছে। সারিফ কোনা চোখে রুহি কে দেখছে। ওম আর জাকিয়া ইশারা করে কথা বলছে। বেদ মাঝে মাঝে সারা দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে দিচ্ছে। আর সাঁঝ তার এইসব কোনো লুকাছুপা সে বেলার দিকে দুষ্টু চোখে তাকিয়ে আছে আর বেলা তাকাতে ঠোঁটের ইশারা করে চুমু মত করছে।
.
–“ইয়ার আমাদের নিশান বেবি ও প্রেমে পড়েছে শেষ পর্যন্ত। তাও যেমন তেমন ভাবে নয় একেবারে গভীর ভাবে ডুবে হাবুডুবু খাচ্ছে। হায়। বেলা লাফিয়ে বলে ওঠে।
.
–” দেখ টুসুন নিশান কিন্তু তোকে প্রেম নিবেদন করে দিয়েছে। তাই ওকে একদম ঝুলিয়ে রাখবি না তাড়াতাড়ি নিজের গলায় ঝুলিয়ে নিবি। নিশান আমাদের লাকি বয়। বেলা ভাব নিয়ে শান্তা কে বলে ওঠে।
.
. সবাই এই কথাতে হেসে ওঠে। আর নিশান এবার সরাসরি তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
.
–“বলছিস তাহলে। শান্তা বলে ওঠে।
.
–” একদম ।বলেই হেসে ওঠে।
.
–“ওকে ।বলে শান্তা এগিয়ে এসে নিশান গালে একটা চুমু খেয়ে নেয়।
.
. নিশান এর চোখ গুলো পুরো বড় বড় হয়ে গেছে মনে হচ্ছে এখুনি বেরিয়ে আসবে। আর সাথে বাকিরা ও অবাক হয়ে গেছে শান্তা এর কাজ দেখে। নিশান ঠাস করে মেঝেতে পড়ে যায়। আর সাথে সবাই চিৎকার হেসে ওঠে।
.
.
–” আচ্ছা আচ্ছা অনেক হয়েছে হাসাহাসি এবার কাজের কথায় আসি আমাদের জ্যামিং শুরু করতে হবে। কালকে আমাদের নতুন ভাবে সং প্রেজেন্ট করতে হবে। কালকে স্বয়ং আর এম আসছে। ওম বলে ওঠে বাকিদের উদ্দেশ্য করে।
.
–” ইয়াহ রাইট। আমাদের সং তুলতে হবে। বেদ বলে ওঠে।
.
–“ইয়ার কাল যদি আমরা ঠিকঠাক ভাবে প্রেজেন্ট করতে পারি তাহলে আমাদের সাথে আর এম গ্রুপ রেকর্ড করবে রুহি এক্সাইটেড হয়ে বলে ওঠে।
.
–“ডোন্ট ওয়ারি। হয়ে যাবে সব। বেলা হেসে বলে ওঠে।
.
–“হোয়াট আর এম। সাঁঝ খানিকটা চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
. এদিকে সবাই খুব অবাক হয়ে গেছে সাঁঝ এর এমন চিৎকার করাতে। এতক্ষণ সবাই হাসি খুশি হয়ে গল্প করছিলো কিন্তু সাঁঝ এমন চিৎকার আর ফেশ রিয়্যাকশান যা ভয় রাগ বিস্ময় মিশে থাকা দেখে সবাই অবাক হয়ে যায় বিশেষ করে বেলা।
.
–“হ্যাঁ আর এম কিন্তু কি হয়েছে আপনি এমন চিৎকার করে উঠলেন কেনো। বেলা জিজ্ঞেস করে ওঠে।
.
. এদিকে সাঁঝ এর মাথার রগ ফুলতে শুরু করেছে। মুখের এক্সপ্রেশন চেঞ্জ হতে শুরু করেছে। চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে দেখে মনে হচ্ছে রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে। সাঁঝ কোনো কথা না বলে দুম দাম করে উঠে চলে যায়। আর এদিকে সবাই অবাক হয়ে রয়ে যায়। হটাৎ করে সাঁঝ এর যে কি হল কেউ বুঝতে পারছে না।

————-

–“ম্যাম কাজ হয়ে গেছে। ফোন কানে দিয়ে একজন লোক বলে ওঠে।
.
–” সব ঠিকঠাক মতো হয়েছেতো। দিশা ফোনের এপার থেকে বলে ওঠে।
.
–” ইয়েস ম্যাম আপনি চিন্তা করবেন না সব প্ল্যান মাফিক হয়ে গেছে। বিশ্রী হেসে বলে ওঠে।
.
–” ওকে মিস্টার মিশ্র আপনি আপনার পেমেন্ট পেয়ে যাবেন। দিশা বলে ওঠে।
.
–” ম্যাম পেমেন্ট নয় আমি প্রফেসর এর পোস্ট টা চাই। মিশ্র বলে ওঠে।
.
–” ওকে হয়ে যাবে। দিশা বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
. ফোন রেখেই খানিক ক্ষণ শয়তানি হেসে ওঠে। সামনে পড়ে থাকা বেলার ছবি টা ধরে আগুনে ধরে। বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
–“কাল তোর খেলা শেষ হবে বে…লা । খুব গান গাওয়ার ইচ্ছে না। আর তোর গান খুব ভালোবাসে সাঁঝ তাই না। কালকে সব কেড়ে নেবো তোর থেকে। সাঁঝ তোকে খুব ভালোবাসে না। দেখবি ওই সাঁঝ কালকে তোর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তোকে ঘৃণা করবে। তাড়িয়ে দেবে সাঁঝ। সেই ব্যবস্থা করে রেখেছি। আর না হবে তোর গান গাওয়া আর না হবে বাঁচা। কালই তুই ভবলীলারসাঙ্গ হয়ে যাবি। আর তারপরেই হবে সাঁঝ আমার। শুধু আমার। বলেই বিশ্রী ভাবে হেসে ওঠে দিশা।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে….

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২৩

–“বেলা । সুইটহার্ট । সাঁঝ মৃদু স্বরে ডেকে যাচ্ছে বেলা কে।
.
–” উ..মম। বেলা ঘুম ঘুম গলায় বিরক্তি ভাবে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ এর বুকের ওপর ঘুমিয়ে আছে বেলা। দু হাতে সাঁঝ কে জড়িয়ে রেখে আছে। সকাল বেলায় রৌদের আলো পড়তে সাঁঝ এর ঘুম ভেঙে যায়। শুধু সকাল বলে নয় তার আরো একটা কারণে ঘুম ভেঙ্গে গেছে। সে চিন্তিত হয়ে আছে। তাই বেলা কে টেনে তোলার চেষ্টা করছে কিন্তু সেতো ঘুমিয়ে যাচ্ছে। সাঁঝ এবার বেলা কে জড়িয়ে নিয়ে উঠে হেলান দিয়ে বসে। বেলা কে জড়িয়ে রেখে সোজা করে বসায়। মুখ টা উচু করে তুলে ধরে। মুখের উপর থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে নাকে বাইট বসিয়ে দেয় একটা।
.
–“উমম । জিন্দেগি কি হচ্ছে এটা সকাল সকাল কামড় কেনো। বেলা মৃদু চিৎকার করে বলে ওঠে পিট পিট করে তাকিয়ে ওঠে।
.
–” আমার কিছু কথা বলার আছে তোমাকে। সাঁঝ একদম সিরিয়াস হয়ে বলে ওঠে।
.
–“ওকে । বেলা মুখ কাচুমাচু করে বলে ওঠে।
.
–” জান বলছি যে। তোমার এই আজকের প্রোগ্রাম টা ক্যানসেল করলে হয় না। না মানে বলতে চাইছি যে সামনে তোমার এক্সাম যদিও মিউজিক নিয়ে তাই ওদিকে এখন কন্সেনট্রেট করলে ভালো হয় না। আর তাছাড়া আমাদের কোম্পানী তো রয়েছে তাহলে বাইরে কেনো। সাঁঝ বোঝানোর মত করে বলে ওঠে।
.
–” সাঁঝ ওটা তোমার কোম্পানী। আমাদের নয়। আর তাছাড়া আমাদের ট্রাস্ট বোর্ড চেঞ্জ হয়েছে সেখানে আর.এম পুরোটাই ওনার তাই আমাদের সাথে রেকর্ড করতে চাইছেন। এর থেকেও তো আমরা আমাদের লক্ষে পৌঁছাবো আর তাছাড়া এগুলো আমাদের এক্সাম এর সাথে সিলেক্ট হবে। বেলা ও কৈফিয়েত দেয়ার মত করে বলে ওঠে।
.
–“আচ্ছা আমি তো তোমার নাকি। তাহলে এস. আর কোম্পানী তোমার নয় কেনো। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ এর বলা আমি তো তোমার নাকি কথায় বেলা অনেক খুশি হয়েছে। চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে যায়। কিন্তু সাঁঝ এর মুখে কিছু একটা দুশ্চিন্তা ফুটে আছে। বেলা বুঝতে পারে সমস্যা টা কি নিয়ে।
.
–” কিছু কি হয়েছে? আর আপনার আর. এম কে নিয়ে কি সমস্যা? বেলা দু হাত দিয়ে সাঁঝ এর গলা জড়িয়ে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে বেলার মুখের দিকে তাকিয়ে। বেলা যে তার মনের দুশ্চিন্তা ধরতে পেরেছে সেটা সাঁঝ বুঝতে পারে।
.
–” আর এম আমার বিজনেস রাইভ্যাল। রনি মেহতা। হটাৎ করে তোমাদের সাথে প্রোগ্রাম করতে চাইছে এতদিন তো ওর এইসব নিয়ে কোনো ইন্টারেস্ট ছিল না। নিশ্চয়ই কোনো প্ল্যান আছে রনির। আমার সাথে রনি ও ব্যাঙ্গালোর লিডার শিপ এর জন্য ফাইট করে ছিল। আর এখন তোমার ইউনিভার্সিটি তে। সেই জন্য বলছি। সাঁঝ চিন্তিত মুখে বলে ওঠে।
.
–“আচ্ছা ঠিক আছে আমি আর. এম থেকে দূরে থাকবো। আর আমার সাথে ওম বেদ রুহি নিশান ও তো আছে। ওরা ও তো আশা করে আছে এই রেকর্ড এর জন্য। বেলা সাঁঝ এর দুশ্চিন্তা কম করার জন্য বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে বেলা কে নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে। বেলা যতো বুঝাক কেনো তাকে সে তো জানে নিশ্চিত কোনো প্ল্যান বানিয়ে রেখেছে এই আর. এম।

—————-

–“দেখো তুমি সাবধানে থাকবে….
.
–” আর. এম থেকে দূরে থাকবো। মনে আছে আমার। তুমি বাড়ি থেকে গাড়িতে আসতে আসতে এতবার বলে ফেলেছ যে আমার মুখস্ত হয়ে গেছে। বেলা সাঁঝ কে পুরো কথা বলতে না দিয়ে বলে ওঠে।
.
. ইউনিভার্সিটি গেটের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ভিতরে বসে আছে সাঁঝ বেলার হাত শক্ত করে ধরে।
.
–” আচ্ছা ঠিক আছে তুমি সাবধানে থাকবে। আর আমি এসে তোমাকে নিয়ে যাব। সাঁঝ বেলার কপালে চুমু দিয়ে বলে ওঠে।
.
–” ওকে এবার আমি যেতে পারি। বেলা মাথা নাড়িয়ে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে বেলা কে শক্ত করে জড়িয়ে বেলার ঠোঁটে আলতো একটা চুমু দিয়ে ছেড়ে দেয়। বেলা গাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। যতক্ষণ না পর্যন্ত বেলা চোখের আড়াল হয়ে যায় সাঁঝ দাঁড়িয়ে দেখতে থাকে। তার পর সাঁঝ ও বেরিয়ে যায় গাড়ি নিয়ে।

—————-

বেলা বেদ ওম রুহি নিশান স্টেজ দাঁড়িয়ে আছে। ইউনিভার্সিটি অডিটোরিয়ম রুমে এখন ইউনিভার্সিটি প্রিন্সিপাল প্রফেসর স্যার ম্যাম বসে আছে আর গেস্ট সিটে বসে আছে আর এম অর্থাৎ রনি মেহতা। এক সাইটে সারা জাকিয়া টুসুন দাঁড়িয়ে আছে ওরা বেদ ওম নিশান এর সাথে এসেছে। পুরো প্রোগ্রাম কভার করা হবে তাই দূর থেকে ক্যামেরা সেট করা আছে। একজন মুখে মাস্ক মাথায় টুপি আর পুরো ব্ল্যাক গেট আপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
.
. বেলা বেদ ওম রুহি নিশান নিজেদের পজিশন নিয়ে নেয়। শুরু করে প্রোগ্রাম আজকে সিলেক্ট হলে ওদের রেকর্ডিং চান্স পাবে। বেলা নিজের জন্য আর বাকিদের পারফরম্যান্স খারাপ করতে পারে না তাই পুরো কন্সেনট্রেট করে। গিটার নিয়ে টিউন প্লে করতে থাকে।
.
. 🎶 সাঁস মে তেরি সাঁস মিলি ত
মুঝে সাঁস আয়ি মুঝে সাঁস আয়ি
মুঝে সাঁস আয়ি

সাঁস মে তেরি সাঁস মিলি ত
মুঝে সাঁস আয়ি মুঝে সাঁস আয়ি
মুঝে সাঁস আয়ি 🎶
.
. বেলা চোখ বন্ধ করে গেয়ে ওঠে। গান টা এত টা ফিল দিয়ে গেয়েছে। সব সাঁঝ এর সাথে কাটানো মুহূর্তে গুলো ভাবতে ভাবতে। গানের প্রতি দরদ টা আরো বেশি করে পড়ছে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে তার করা পাগলামি গুলো সাঁঝ এর করা পাগলামি গুলো।
.
. 🎶 রুহ নে ছু লি জিসম কি খূশবু
তু জো পাস আয়ি তু জো পাস আয়ি
তু জো পাস আয়ি
.
. বেদ সারা দিকে তাকিয়ে গেয়ে ওঠে। তার চোখের সামনে ভাসছে সারা সাথে প্রথম দেখা। সারা লজ্জা পেয়ে মুচকি হাসা কোনা চোখে তাকানো। সব কিছুই তার চোখের সামনে স্লাইড করছে এই রোমান্টিক গানের সাথে।
.
. 🎶 সাঁস মে তেরি সাঁস মিলি ত
মুঝে সাঁস আয়ি মুঝে সাঁস আয়ি
মুঝে সাঁস আয়ি🎶
.
. গেস্ট সিটে বসা আর এম অর্থাৎ রনি বেলার দিকে এক কমনীয় মোহনীয় দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। বেলা কে পা থেকে মাথা পর্যন্ত স্ক্যান করে যাচ্ছে। ব্ল্যাক জিন্স । ব্লু অফ শোল্ডার টপ। চুল গুলো সাইট পনিটৈইল করা। কপালের ওপর ছোটো ছোটো চুল পড়ে আছে। মুখে চোখ বোলানোর পর ঠোঁটের কাছে থেমে যায় ওয়াইন কালার লিপস্টিক পড়া এতেই বেশ আকর্ষণীয় লাগছে। রনি বেলার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে নিজের ঠোঁটের ওপর জীব বুলিয়ে নেয়।
.
. 🎶 কাবতাক হোস সামহালে কই
হোস উড়ে তো উড় জানে দো🎶
.
. পাশে থেক ওম গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶 দিল কাব সিধি রাহ চালে হে
রাহ মুড়ে তো মুড় জানে দো 🎶
.
. বেলা আবার গেয়ে ওঠে
.
. 🎶 তেরি খেয়াল মে ডুব কে আকসার
আচ্ছি লাগি তানহায়ি
সাঁস মে তেরি সাঁস মিলি ত
মুঝে সাঁস আয়ি মুঝে সাঁস আয়ি
মুঝে সাঁস আয়ি🎶
.
. বৃষ্টির মধ্যে দু হাত ছাড়িয়ে ভিজে যাচ্ছে বেলা। আকাশের দিকে মুখ করে ঘুরছে। হটাৎ পিছন দিকে থেকে বেলা কে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মুখ ঘষতে থাকে। আর বেলা ছাড়াতে গেলে বেলা কে ঘুরিয়ে নিজের দিকে করে নেয়। বেলা ঘুরে চোখ খুলে তাকায়। রনি তার দিকে কামনা ভরা চোখে তাকিয়ে আছে এক ঘোর লাগা দৃষ্টি। বেলার মুখ উচু করে ধরে সারা মুখে কিস করতে থাকে রনি। এক হাত দিয়ে পিট আর পেটে স্লাইড করে যাচ্ছে।গলায় থেকে মুখ তুলে আসতে আসতে বেলার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রনি। আর বেলা পিছিয়ে যাচ্ছে।
.
. হটাৎ হাত তালির শব্দে রনির ঘোর কেটে যায়। চোখ ঘুরিয়ে দেখতে থাকে অডিটোরিয়াম রুমে বসে আছে পাশে প্রিন্সিপাল প্রফেসর স্যার ম্যাডামরা বসে আছে। সামনে স্টেজ বেলারা সব দাঁড়িয়ে আছে। ও তার মানে সে এতক্ষণ বেলা কে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিল। সে বেলা কে নিয়ে এতক্ষণ স্বপ্নের মধ্যে রোমান্স করছিলো। সেটা বুঝতে পারে রনি। তার আরো আগ্রহ বেড়ে যায়। এবার যেনো রনি আরো বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ে বেলা কে কাছে পাওয়ার জন্য।
.
. এদিকে স্টেজ দাঁড়িয়ে আছে বেলা ওম বেদ নিশান রুহি । বাকিরা সবাই হাততালি দিচ্ছে। সবার মুখে হাসি ফুটে আছে।
.
–“রেনবো ব্র্যান্ড রাইট? তো আমরা কি কন্ট্রাক্টড সাইন করতে পারি। তোমাদের পারফরম্যান্স দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। রনি হেসে বলে ওঠে।
.
–” থ্যাঙ্কস স্যার সবাই এক সাথে বলে ওঠে।
.
.বেলা শুধু চুপচাপ দেখে যাচ্ছে আর রনি কে পর্যবেক্ষণ করছে। সাঁঝ বলেছিলো এর থেকে দূরে থাকতে কোনো প্ল্যান করে এখানে এসেছে। কিন্তু এত ভালো মানুষের মত কথা বলছে। তার দিকে কোনো স্পেশাল ভাবে দেখেনি বা কথা বলার চেষ্টা ভি করে নি তাহলে। আসলে বেলা যখন গাই ছিল তখন চোখ বন্ধ ছিল পুরো টা সময়ে তাই বেলা জানে না রনি তার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে রোম্যান্স ও করে নিয়েছে মনে মনে। বেলার ফোন বেজে উঠতে বেলা হল থেকে বেরিয়ে পাশের রুমে ঢুকে যায়।
.
. ফোন রিসিভ করতে না করতে ওপারে থেকে সাঁঝ এর উত্তেজিত আওয়াজ শুনতে পায়।
.
–“হ্যালো! তুমি ঠিক আছো তো।
.
–” হ্যাঁ রে বাবা আমি ঠিক আছি। বেলা হেসে বলে ওঠে।
.
–“আমি তোমার বাবা নয়। তোমার বর। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” হুম হুম জানি তো। বেলা হেসে ফেলে।
.
–“তোমার হয়ে গেছে কি? আমি তাহলে আসছি। তোমাকে নিতে। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” ওকে । আমাদের হয়ে গেছে। রাখছি। বলে ফোন কেটে হেসে ফেলে বেলা।
.
. বেলা পিছন ঘুরতে চমকে যায়। বেলার পিছনে রনি দাঁড়িয়ে আছে। মুখে ফুটে আছে বাঁকা হাসি। বেলা পিছনে সরে যেতে গিয়ে পড়ে যেতে নিলে বেলার কোমর আকড়ে ধরে রনি। বেলার কোমরে হাত রেখে নিজের দিকে টেনে আনে বেলা কে। আর বেলা হঠাৎ এমন হওয়ায় পুরো বেকুব বনে গেছে। মুখের ওপর চুলে এসে পড়েছে। রনি এক হাতে বেলার কোমরে রেখে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। আর এক হাত দিয়ে বেলার মুখের ওপর থেকে চুল সরিয়ে দেয়। পিছন থেকে তাদের কে দেখে মনে হচ্ছে একে অপরের মধ্যে ডুবে আছে মনে হচ্ছে কিস করছে। দরজার বাইরে থেকে এতক্ষণ এই পুরো ভিডিও টা করছিলো কেউ। এবার সরে যায়।
.
. এদিকে বেলার মুখে হাত রাখতে বেলার ঘোর কেটে যায় ধাক্কা দিয়ে রনি কে সরিয়ে দেয় নিজের থেকে বেলা। চোখ মুখ পুরো শক্ত হয়ে গেছে বেলার। তার সাঁঝ এর কথা গুলো বারবার মাথায় আসছে। “দূরে থাকবে” রনি থেকে। “তোমার গায়ে যেনো কেউ হাত না দেয়” বেলার কানে বাজছে বারবার এগুলো। আর তার সাথে বেলার চোখ লাল হতে শুরু করে হাত দুটো মুঠো করে নেয়। রনি কিছু বলতে তার দিকে এগিয়ে আসতে নিলে বেলা পাশ কাটিয়ে বাথরুমে চলে যায়।
.
–“উফফ । তোমাকে পুরো আগুন লাগছে। তোমার শরীর টা সত্যি আমার কল্পনার থেকেও অনেক নরম তুল তুলে। তোমাকে জড়িয়ে ধরতে খুব ইচ্ছে করছিলো। তোমার ওই কোমর মুখ উফ। আমি পাগল হয়ে যাব। তোমাকে তো এবার আমি আমার করে নেবো যে কোনও উপায়ে। তোমার সাথে সাঁঝ এর কাটাকাটি ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সাঁঝ তোমার থেকে এবার দূরে চলে যাবে। তখন আমি তোমাকে পেয়ে যাব বেবি। রনি তার যে হাত বেলার মুখে আর কোমরে রেখেছিলো ওই হাত দুটো নিয়ে নিজের মুখে আর ঠোঁটে বুলিয়ে বলে ওঠে।

——————

সাঁঝ কার ড্রাইভ করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে বেলা কে ভেবে। বেলার সাথে কাটানো মুহুর্ত। আর বেলার পাগলামি । বেলার করা রাগ ঝগড়া তুইতুকারি করা তাকে। রেগে গিয়ে নাক ফুলিয়ে তাকানো। লজ্জা পেয়ে মুচকি হাসি কোনা চোখে তাকানো। আর দুষ্টুমি গুলো এইসব গুলো ভাবতে ভাবতে বেলার ইউনিভার্সিটি এর দিকে যাচ্ছে।
.
. পাশের পড়ে থাকা ফোন টা হঠাৎ আলো জ্বলে বেজে ওঠে। আননোন নাম্বার থেকে একটা ভিডিও ক্লিপ এসেছে। সাঁঝ ফোনটা নিয়ে ভিডিও ক্লিপ টা ওপেন করে। সাথে সাথে বাজ পড়ে মাথায়। গাড়ি জোরে ব্রেক করে দেয়। চোখে থেকে যেনো আগুন এর গোলা বেরোচ্ছে। মাথার রগ গুলো ফুলে উঠেছে। দাঁত মুখ খিঁচে আছে হাত মুঠো করে গাড়ির স্টেয়ারিং এর ওপরে জোরে ঘুষি মারে। ফোনের স্ক্রিন এর ওপর জল জল করছে বেলা আর রনির ছবি যেখানে বেলার কোমর চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে রেখেছে। অন্য টা তে বেলার কোমরে হাত রেখে বেলার মুখের ওপর থেকে চুল সরিয়ে দিচ্ছে। আর তার পর চোখে মুখে হিংস্র হয়ে ওঠে। কারণ এখন পিছন থেকে দেখা যাচ্ছে আর এটা মনে হচ্ছে যেনো তারা চুমু খাচ্ছে।
.
. সাঁঝ ফোন টা ছুড়ে ফেলে দেয় গাড়ির স্টেয়ারিং এর ওপর জোরে জোরে হাত দিয়ে বাড়ি মারতে থাকে। চোখ মুখ পুরো হিংস্র থেকে হিংস্র হয়ে উঠছে। গাড়ি স্টার্ট করে জোরে ড্রাইভ করতে থাকে। চোখ মুখ পুরো টক টকে লাল হয়ে আছে।

—————-

ওম বেদ নিশান সবাই একসাথে অডিটোরিয়াম রুমে বসে আছে রনি এর সাথে কথা বলছে আর মাঝে মাঝে বেলার ফোন ট্রাই করে যাচ্ছে কিন্তু ফোন বেজে বেজে কেটে যাচ্ছে কিন্তু কেউ ধরছে না। সবাই কথা বলতে থাকলেও তাদের মুখে চোখে চিন্তার ছাপ ফুটে আছে।
.
.
. এদিকে বেলা ওয়াশরুমে ঢুকে ইচ্ছা মত নিজের মুখে পানি দিচ্ছে। রনির ওই স্পর্শ যেনো তার গায়ে কাঁটার মত বিধছে। জালা জালা করছে যেখানে যেখানে স্পর্শ করেছ তাকে। মুখ ঘোষে ঘোষে লাল হয়ে গেছে তবুও বেলা থামছে না। তার বারবার মনে পড়ছে ওই চোখের দৃষ্টি ওই স্পর্শ আর এতেই যেনো আরো বেশি করে তার গায়ে জালা পোড়া শুরু হয়েছে। তার সাঁঝ এর কথা মাথায় ঘুরছে “তোমাকে যেনো কেউ না স্পর্শ করে। তুমি শুধু আমার” বেলা মুখ ঘোষে পুরো রক্তের মত লাল করে ফেলেছে। কোমরে কাছে টপ গুটিয়ে নট বেঁধেছে। উন্মুক্ত থাকা পেটে ও ঘোষে ঘোষে পানি দিচ্ছে। ফোর্সা পেট পুরো লাল হয়ে গেছে কোথাও ছোড়ে গেছে। অতিরিক্ত ঘোষার ফলে। এদিকে যে পাশে থাকা ফোন টা রিং হয়ে যাচ্ছে সেদিকে বেলার হুস নেই। তার পরে মাথায় আসে সাঁঝ তাকে নিতে আসছে। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে ড্রেস ঠিক করে নেয়। ওয়াশরুমে থেকে বেরোতে বেলা আতকে ওঠে পুরো রুমের চারিদিকে আগুন লেগে গেছে জ্বলতে শুরু করে দিয়েছে।
.
. বেলার দম আটকে আসছে। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। কোনোরকম করে দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়। দরজা খুলতে গেলে দেখে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ হয়ে আছে। বেলা চারিদিকে ঘুরতে থাকে না সব দরজা জানালা বন্ধ। আর এদিকে আগুনের রেস বাড়তে থাকে। চারিদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। বেলার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে গড়িয়ে বেলা চিৎকার দিতে নিয়ে ও পারছে না। তার মাথা ঘুরছে চোখের সামনে ভেসে আসছে সেই দৃশ্য যেখানে তার বাবা মা গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করার জ্বলে গিয়েছিলো। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। বেলা কোনোরকম করে মাঝখানে এসে হাঁটু মুড়ে বসে পড়ে কারণ রুমের চারিদিকে আগুন ছাড়িয়ে গেছে। বেলার চোখ মুখ রক্ত শূন্য হয়ে গেছে। দম নিতে পারছে না। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বড় বড় করে দম নিচ্ছে। চোখের থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। চোখে ওপরে ভেসে আসছে তার আর সাঁঝ এর সুন্দর সুন্দর দৃশ্য গুলো আর তারপরই চোখ ঝাপসা হয়ে যায় পুরো অন্ধকারে ঢেকে যায়। আসতে আসতে বেলা ঢোলে পড়ে যায় মেঝেতে। চোখের থেকে শেষ বিন্দু পানি গড়িয়ে পড়ে। মুখ থেকে অতি কষ্টে অস্পষ্ট ভাবে উচ্চারিত হয়।
.
–“সাঁ…ঝ ।

—————

বেদ নিশান ওম রুহি সারা জাকিয়া শান্তা সবাই এবার বেলা কে খুঁজতে বেরোয়। সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে চারিদিকে খুঁজতে লেগে গেছে বেলা কে। এদিকে বেলা একদম অডিটোরিয়াম এর অপোজিট সাইট রুমে বন্দি হয়ে আছে যার জন্য কেউ খুঁজে পাচ্ছে না। আর ওদিকে সাধারণত কেউ যায় না। পুরো ইউনিভার্সিটি ছান মারতে শুরু করেছে সবাই। কিন্তু বেলার দেখা নেই। ওদের সাথে রনি ও চিন্তিত হয়ে খুঁজছে।
.
. সাঁঝ গাড়ি নিয়ে ইউনিভার্সিটি ঢুকে পার্কিং করে ছুটে বেরিয়ে যায়। চারিদিকে থেকে সবাই তাকে দেখতে আছে। কিন্তু সাঁঝ এর সেদিকে কোনো হুস নেই। তার এই মুহূর্তে চোখ মুখ দেখে সবাই ভয় পেয়ে আছে কেউ কাছে আসে না। সাঁঝ মিউজিক বিল্ডিং এ ঢুকেই রনি কে দেখতে পায়। সাঁঝ সেদিকে গিয়ে সরাসরি রনি মারতে থাকে। হটাৎ এমন আক্রমণে রনি হকচকিয়ে গেছে। হটাৎ এমন হওয়াতে সে বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে তার সাথে।
.
. এদিকে সাঁঝ তাকে পুরো হিংস্র ভাবে মারতে থাকে। সবাই চারিদিকে ছুটে এসেও কেউ সাঁঝ এর থেকে রনি কে আলাদা করতে পারে না। যে ছাড়াতে যাচ্ছে তাকেই ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে।
.
–“এখন কেমন লাগছে মিস্টার রনি মেহতা। আমাকে খুব অপমান করেছিলে তাই না। এবার দেখ তুমি আজ এই হিংস্র বাঘ এর থেকে বাঁচতে পার কি না। আজকে তুমি এখানেই শেষ হবে। খুব শখ ছিল না বেলা কে পাওয়ার এবার বোঝ কেমন মজা লাগে। দিশা ওদের থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে মনে মনে শয়তানি হেসে বলে ওঠে।
.
. দিশা সাঁঝ এর পিছন পিছন এসেছে এখানের বিনোদন দেখতে নিজের চোখে বেলার অপমান আর মৃত্যু দেখতে কিন্তু অপমান টা দেখা হল না। কিন্তু বিষ তো ভোরে দিয়েছে সাঁঝ এর মনে এটাই বা কম কি।
.
–“এখানে তোমার শেষ বেলা চলছে। আর ওদিকে একজন পুড়ে ছাই হচ্ছে। বলেছিলাম না তোকে পুড়িয়ে মারার কথা দেখ কথা রেখেছি। আমি কখনো আমার কথার খেলাপ করি না। আমি যা বলি তা করে দেখায়। তোকে মারার মজা টা আমি কি করে ছাড়ি বল। তোর জন্য আমি সাঁঝ কে পেয়েও হারিয়েছি। আবারও তুই সাঁঝ এর জীবনে ফিরে এসেছিস তাও একেবারে বিয়ে করে নিয়েছিস। তোর জন্য আমার ভাই কে হারাতে হয়েছে। শুধু মাত্র তোর জন্য আজ আমি আমার ভাই এর কোনো খবর জানি না সে বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে সেটাও জানি না। তোকে কি করে আর বাঁচিয়ে রাখি বল। আজই তোর দিন শেষ। এখন তুই পুড়ে ছাই হয়ে যাবি। আর তার পরে সাঁঝ সারাজীবন এর জন্য আমার। দিশা মনে মনে হেসে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ রনি কে মেঝেতে ফেলে মারতে আছে। চারিদিকে লোক দাঁড়িয়ে আছে। জায়গা টা পুরো ভিড় জমে গেছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবাই দেখে যাচ্ছে। কেউ কাছে আসছে না।
.
. বেদ ওম নিশান ছুটে এসেছে সাঁঝ এর কাছে। তারা এতক্ষণ থেকে বেলা কে খুঁজছিল কিন্তু হঠাৎ সাঁঝ কে দেখতে পেয়ে তার কাছেই আসছিল কিন্তু তারপরেই দেখে রনি এর সাথে মারপিট লেগে গেছে। ওরা এসে ও ছাড়াতে পারে না।
.
–“জিজ বেলা কে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নিশান অসহায় হয়ে বলে ওঠে সাঁঝ কে।
.
. নিশান এর কথা শেষ হতে না হতে সাঁঝ এর হাত থেমে গেছে। ঘুরে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে নিশান এর দিকে। নিশান এতক্ষণ এর কথা বলে তারা কোথাও খুঁজে পায়না সেটা। সাঁঝ কোনো কথা না বলে অডিটোরিয়াম রুমের দিকে ছুটে যায়। পর পর সব রুম গুলো খুঁজতে থাকে আর বেলার নাম নিয়ে চিৎকার করে ডাকতে থাকে। এদিকে সাঁঝ এর সাথে বাকিরা ও ছুটতে থাকে। সাঁঝ পাগল এর মত এই রুমে ওই রুমে করতে থাকে। অডিটোরিয়াম রুম পেরিয়ে অপোজিট সাইট ঢুকে যায়। তারপর পর পর রুম গুলো চেক করতে থাকে। শেষের রুমের সামনে গিয়ে দেখে তালা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।
.
. সাঁঝ ফিরে আসতে নিয়ে ও কি মনে আবার ও ফিরে যায় রুমের সামনে। ধাক্কা দিতে থাকে রুমের দরজায়। লাথি মেরে জোরে দরজা খুলে ভেঙে পড়ে। সাথে সাথে একটা আগুনের হাউলি বেরিয়ে আসে চারিদিকে ধোঁয়া ভোরে যায়। সাঁঝ এক পাশে হয়ে যায়। ধোঁয়া কমে যেতে সাঁঝ ঘুরে এসে দরজার সামনে দাঁড়ায়। সাথে সাথে তার পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে যায়। যেনো পুরো আকাশটা তার মাথার ওপর ভেঙে পড়েছে।
.
–“বেলা…… সাথে সাথে এক চিৎকার করে ডেকে ওঠে হাঁটু মুড়ে বসে পড়ে সাঁঝ। তার পুরো দুনিয়া টা যেনো অন্ধকার হয়ে আসছে।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে….
.
.ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন রি-চেক করা হয়নি। সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন।