তোর আসক্তি পাগল করেছে আমায় পর্ব-৩৬+৩৭

0
2609

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_৩৬
.
.পরিবেশ এখন খুব ঝকঝকে হয়ে আছে। চারিদিকে খুশির বাতাবরন বইছে। এখন যেদিকে তাকাও না কেনো দেখতে পাবে ঝলমলে রোদের মত মিষ্টি হাসি। বাড়ির ড্রইং রুমে সবাই চাঁদের হাট বসিয়ে রেখেছে। তাদের কাছে এখন একটাই উপলক্ষ আর সেটা হল বিয়ে নিয়ে। তারা বিয়েতে কি কি করবে না করবে। কি ভাবে হবে। এই সব নিয়েই এখন তাদের মধ্যে চলছে জল্পনা কল্পনা। বেলা সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতেই ওদের দেখছিল। সে খুব খুশি বিয়ে নিয়ে সবার মনে একটা করে প্ল্যান করা থাকে। আর সাঁঝ তাকে আবার ও বিয়ের জন্য প্রোপোজ করেছে। তাদের বিয়ের কয়েক মাস হয়ে গেলেও এখনও তাদের বিয়ে নিয়ে এখনও কেউ জানে না। আর সাঁঝ একজন গভর্নমেন্ট লিডার তাই ওর বিয়ে তো জাঁকজমক ভাবেই হবে তাইনা। তাই আবারও নতুন করে তাদের বিয়ের আয়োজন নিয়ে সে খুবই আনন্দিত। আগেরবার তাকে তুলে জোর করে বিয়ে করেছে। তখন সে নিজেও রেগে ছিল সাঁঝ এর ওপর। তাই এইবার বিয়েটা মন ভোরে উপভোগ করতে চায়। নীচে নেমে সব একসাথে হয়ে যায়। শুরু হয় আবারও তাদের আলোচনা। একটু পরেই তারা বেরোবে তাদের আউটডোর প্রি-ওয়েডিং ফটোশুট এর জন্য।
.
. এদিকে সাঁঝ বিয়ের জন্য সব কিছু অ্যারেঞ্জমেন্ট করে ফেলেছে। একটু পরেই সবাই একসাথে বেরোবে সাঁঝ ও চাইছে না এবারে কোনো রকম কোনও কিছু কম রাখতে। সব কিছুই সে বেলার মন পছন্দ করতে চাইছে। আজ থেকেই তাদের বিয়ের দিনের শুরু একের পর এক তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হতে যাচ্ছে। আজকের তাদের ফটোশুট দিয়ে।

—————

তারা এখন এসেছে সবাই শুট করার জন্য। আজ তারা কাবন পার্ক এসেছে আউটডোর ফটোশুট করে সাতোরি তে লাস্ট কিছু ইনডোর শুট নিয়ে আজকের প্রোগ্রাম শেষ করবে। এখানে সাঁঝ সব কিছু অ্যারেঞ্জমেন্ট করিয়ে রেখেছে ।আজকে এখানেই পুরো পার্কটা সাঁঝ বুকিং করে নিয়েছে। তাই এখানে তারা ছাড়া আর কোনো পাবলিক নেই। ড্রেস ডিজাইনার মেকআপ আর্টিস্ট ক্যামেরা মান এবং বাকিরা সবাই আছে। তাদের এই শুট এর জন্য। প্রত্যেক এর জন্য পাঁচটা করে ড্রেস রাখা হয়েছে। তারা এই ড্রেস এর সাথে ফটোশুট করবে। ছেলেরা রেডি হয়ে বাইরে চলে এসেছে। তারা আসতে আসতে একে একে ক্যামেরার সামনে ট্রায়াল দিতে থাকে। যতক্ষণ না মেয়ে গুলো রেডি হয়ে আসছে তারা ততক্ষণ তাদের কিছু প্রোট্রেট তুলতে থাকে।
.
. বেদ ব্লু ফেডেড জিন্স। হোয়াইট শার্ট। আর তার ওপরে ব্লু ব্লেজার পড়েছে। তার সাথে মিলিয়ে ব্রাউন কালার এর মেসি হেয়ার। হাতে ঘড়ি। চোখে গ্লাস। ব্যাস। একের পর এক নিজের পোজ দিতে ব্যস্ত। পার্ক এর চারিদিকে সুন্দর সুন্দর মনোরম দৃশ্যের সাথে নিজে আরো বেশি মুড নিয়ে ফটো তুলে যাচ্ছে। অন্য দিকে নিশান হলুদ টিশার্ট ব্লু ফেডেড শর্ট জিন্স পরে আছে। চুল গুলো কে কিছুটা কপালে রেখে আর বাকি গুলো পিছনে হাত দিয়ে ধরে ক্যামেরার সামনে নিজের বোল্ডনেস এর পোজ দিচ্ছে। ওম পার্ক এর রোড এর মাঝে চেয়ার নিয়ে বসে আছে। পিছনের ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাথে মিলিয়ে নিজে ফটো তুলে যাচ্ছে। সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট কালো কোর্ট। আরেক দিকে গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সারিফ এক হাতে গ্লাস নিয়ে দাঁতে রেখে চোখ গুলো কোনা চোখে দেখছে ক্যামেরার দিকে। ওয়াইন কালার এর প্যান্ট সাদা শার্ট আর তার ওপরে ওয়াইন ব্লেজার। এক হাতে পকেটে রেখে গাছের সাথে লেগে এক পায়ের সাথে এক পা দিয়ে দাঁড়িয়ে পোজ দিচ্ছে। আকাশ গ্রে কালার শুট পড়েছে। দু হাত পকেটে রেখে দাঁড়িয়ে আছে। এদের এখানে এখনও সাঁঝ এসে পৌঁছাইনি।
.
. এদিকে সারা বেদ এর সাথে ম্যাচিং ড্রেস পড়েছে।ব্লু স্লিভলেস লং গাউন পড়েছে। তার সাথে মেসি হেয়ার। আর তার সাথে পারফেক্ট মেকআপ । সারা আসতে বেদ এগিয়ে আসে সারার দিকে হাত বাড়িয়ে নিয়ে যায় নিজেদের ফটো তুলতে। বেদ এর হাতে একটা ছাতা। বেদ সারার কোমর চেপে রাখে নিজের সাথে। সারা বেদ এর গলা জড়িয়ে ধরে মুখ হালকা স্লাইড ওপরের দিকে রেখে চোখ বুজে আছে। আর এদিকে ক্যামেরাম্যান তাড়াতাড়ি করে তাদের ফটো তুলতে থাকে।
.
. এদিকে শান্তা বেরিয়ে আসে একদম বোল্ডনেস নিয়ে সেও নিশান এর সাথে মিলিয়ে ড্রেস পরেছে। হলুদ অফসোল্ডার রাফেল্ড টপ। আর তার সাথে হট প্যান্ট। সামনের কিছু চুল নিয়ে ওপরে বান করা আর বাকি গুলো ছাড়া আছে। আর তার সাথে খুব সুন্দর মেকআপ । শান্তা কে আসতে দেখেই নিশান গিয়ে শান্তা কে হাত ধরে নিয়ে এগিয়ে যায়। নিশান শান্তা কে কোমরে ধরে কোলে তুলে নেয়। নিশান তার দিকে তাকিয়ে আছে। আর মুখে এক ঝলক হাসি নিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে হাতে আছে রঙের গোলা।
.
. জাকিয়া বেরিয়ে আসে ব্ল্যাক কালার এর গর্জিয়াস গাউন পরে। মাথায় ফুলের ক্রাউন পরা। তার সাথে মানানসই মেকআপ করা। ওম জাকিয়ার কাছে এগিয়ে এসে পিছন থেকে জাকিয়া কে কোমরে হাত রেখে টেনে সামনের দিকে নিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। ওম নিজের মুখ উঁচু করে জাকিয়ার কপালে নিজের ঠোঁট ঠেকায়। আর সাথে সাথে ক্যামেরার ক্লিক এর শব্দ হয়।
.
. রুহি এসে সারিফ এর পিছনে দাঁড়িয়ে নিজের মুখ কিছুটা সামনে ঝুঁকিয়ে সারিফ এর মুখের দিকে মিষ্টি হেসে তাকাতে থাকে। দু হাত দিয়ে কোমর জড়িয়ে নেয়। আর সাথে সাথে সারিফ পিছনে ঘুরে যায়। আর সাথে একটা ক্যানডিড ছবি উঠে যায়। ওয়াইন কালার এর রাফেল্ড ওয়ানপিস পরেছে। সারিফ হাত টেনে সামনে নিয়ে আসে। রুহি নিজের পায়ের ওপর ভর দিয়ে সারিফ এর শার্ট টেনে নিজের দিকে টেনে নেয় কিছুটা পিছে হেলে গিয়ে।
.
. আলিয়া বেরিয়ে নিজের মত করে একপাশে গিয়ে বেঞ্চ এর ওপরে বসে পড়ে। সাথে সাথে আকাশ এসে পাশে বসে। গ্রে কালার গাউন পরে আছে। চুল গুলো কে কার্ল করা গাউন এর ঝালোর কিছুটা দূরে পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। আকাশ আলিয়ার হাত ধরে টেনে তুলে কিছুটা দূরে নিয়ে হাত ধরে ঘুরিয়ে দেয়। আলিয়ার মুখে আছে একটা মিষ্টি হাসি। আর এক হাত রয়েছে নিজের ড্রেস এর ওপরে।
.
. এদিকে সবাই সবার জোড়া নিয়ে ফটো তুলতে আছে অন্য দিকে এখনও সাঁঝ আর বেলার দেখা নাই। তাদের দুজন কে এখনও কেউ দেখেনি। কিছুক্ষণ পরই বেরিয়ে আসে সাঁঝ। পুরোই সাদা গেটআপ। সাদা ফেডেড জিন্স। সাদা শার্ট। আর তার ওপরে সাদা কোর্ট। চুল গুলো স্পাইক করা।চোখে গ্লাস। হাতে প্লাটিনাম এর ঘড়ি। পায়ে সাদা লোফার। আর তার সাথে মন কাড়া লুক। ব্যাস। আর কি চাই। সাঁঝ পিছনে ঘুরে হাত বাড়িয়ে দেয়। সাথে সাথে হাতের ওপর হাত রেখে বেরিয়ে আসে বেলা। পিঙ্ক গর্জিয়াস ফুল স্লিভ হাইনেক গাউন পরে আছে। মাথার চুল গুলো হালকা ভাবে নিয়ে পাপ করে বাঁধা। আর বাকি চুল গুলো কার্ল করা। মাথায় ডাবল চেন এর মাঝে খুব সুন্দর একটা টিকলি পরা। দু হাতের মাঝে ওড়না ধরে এগিয়ে আসে। সাঁঝ বেলা কে নিয়ে চলে যায় লেক এর দিকে। লেকের পানিতে পদ্ম ফুল ফুটে আছে সাথে আছে শ্যাওলা। স্বচ্ছ কাঁচের মত পানিতে যেনো এগুলো আরো বেশি সুন্দর করে তুলেছে। লেক এর পাশে গাছের সাথে একটা দোলনা করা আছে। যেটা লতা পাতা আর কাগজ ফুল দিয়ে সুন্দর ভাবে মুড়িয়ে রাখা আছে। সাঁঝ বেলা কে নিয়ে এগিয়ে এসে বেলা কে ওই দোলনার মাঝে বসিয়ে দেয়। আর সে পিছন থেকে বেলা কে দোল দিতে থাকে। বেলা ও দু হাতে দোলনার দড়ি ধরে পিছন মুড়ে সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে খিল খিল করে হেসে ওঠে। ওদের এই রকম হাঁটতে দৌড়াতে এক্সপ্রেশন দেখে বোঝা দুষ্কর যে তারা আসলেই পোজ দিচ্ছে নাকি তারা তাদের মাঝে ডুবে আছে। তাই ফটোগ্রাফার তাড়াতাড়ি করে ওদের প্রত্যেক টা মুহূর্তের ফটো তুলতে থাকে। ওদের আর এক্সট্রা করে কোনো পোজ দিতে হয় না। ওরা যেটা করছে সেটাই খুব সুন্দর ফটো হয়ে যাচ্ছে। সাঁঝ বেলা কে দোলনা থেকে কোলে তুলে নেয়। এগিয়ে যায় লেক এর দিকে। লেক এর মাঝ বরাবর খুব সুন্দর ভাবে ডেকরেট করা আছে। চারিদিকে ফুল দিয়ে সাজিয়ে রাখা। সাঁঝ বেলা কে নিয়ে ওখানে চলে যায়। বেলা আর সাঁঝ সেখানে গিয়ে একে অপরের দিকে পিঠ করে পিঠে পিঠ লাগিয়ে বসে। আর সামনের দিকে তাকিয়ে দুজন দুজনের হাতে হাত রেখে স্মাইল করে। ফটোগ্রাফার ওদের দুজনের এই রকম মুড দেখে হড়বড়িয়ে যায়। আর ওদের প্রতিটা মুভমেন্ট এর ফটো তুলতে থাকে।
.
. সবাই একসাথে খুব মজা করে ফটোশুট শেষ করে একসাথে ডিনার করে বাড়ি ফেরে হইচই করে। তারা আজ ভীষণ ক্লান্ত। সারাদিনের ফটোশুট এর জন্য তারা সবাই আজকে প্রাণ ভোরে একে অপরের সাথে মজা করেছে। আজ যেনো কেউ কারোর মধ্যে ছিল না।

————-
.
. সকালে উঠেই সব ছেলে গুলো আলোচনা করতে বসে গেছে। আজ যেনো তাদের গুরুত্ব পূর্ণ আলোচনা চলছে। যেই মেয়ে গুলো তাদের দিকে দেখছে বা তাদের কাছে যাচ্ছে অমনি চুপ হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপার টা খটকা লাগাই তারা সবাই মিলে গিয়ে বেলা কে চেপে ধরে। সব কটা মিলে ওখানে আসতে সব চুপ হয়ে হাসতে হাসতে একে একে কেটে পড়ে।
.
. আকাশ বেদ নিশান ওম সারিফ সবাই মিলে স্টাডি রুমে সাঁঝ এর কাছে আসে। সাঁঝ তার কিছু ইম্পপটেন্ট কাজ করছিলো। সেখানে এসে সব গুলি হাজির। সাঁঝ ওদের দিকে তাকাতেই দেখে সব গুলো কেমন একটা লুক নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
.
–“ভাই বলছিলাম কি একটা কথা ছিল। সারিফ আমতা আমতা করে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে ভ্রু কুঁচকে তাকাতে সব গুলো তাকে চারিদিকে থেকে ঘিরে ফেলে। তাদের এই কাজে সাঁঝ বোঝে কিছু তো গণ্ডগোল আছে তাই সবার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকায়।
.
–” ভাই বলছিলাম কি আর দুদিন পরেই তো আমাদের বিয়ে তাই মানে.. সারিফ বলে ওঠে।
.
–” হুম তো। সাঁঝ জিজ্ঞেস করে ওঠে।
.
–“না মানে জিজ আসলে বলছিলাম কি বিয়ের আগে আমরা একটু আনন্দ করে নিতে চাই। ওম বলে ওঠে।
.
–” মানে? সাঁঝ ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।
.
–“আসলে আমরা একটা ব্যাচেলর পার্টি রেডি করেছি। কাল থেকেই তো অনুষ্ঠান শুরু তাই আর কি। নিশান বলে ওঠে।
.
–” এরপর তো আমাদের বিয়ে হয়ে যাবে। আর তখন আমাদের জীবন কেমন হবে জানিনা তাই আর কি। আকাশ বলে ওঠে।
.
–” তো এখানে আমি কি করতে পারি। সাঁঝ সবার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
–“না মানে আমরা সব কিছু রেডি করে নিয়েছি। ওখানে শুধু তুমি এলেই হবে। বেদ বলে ওঠে।
.
–” আই অ্যাম স্যরি। আমি এইসব পার্টি তে নেই। সাঁঝ এক কথায় নাকচ করে দেয়।
.
. আর তার সাথে সাথে শুরু হয় বাকিদের মেলোড্রামা আর ব্ল্যাক মেইল। শেষে সাঁঝ কোনো উপায় না দেখে রাজি হয়ে যায়। এতক্ষণ সব গুলো মেয়ে মিলে দরজার আড়াল থেকে দাঁড়িয়ে সব কিছু শুনে নেয়। তারা আসতে আসতে কেটে পড়ে ওখান থেকে সব গুলো ড্রইং রুমে গিয়ে আলোচনা করতে থাকে। ছেলে গুলো আসতেই সব চুপ হয়ে যায় আর কোনো কথা বলে না কেউ।

————-

রাত সাতটার দিকে সাঁঝ রেডি হতে থাকে পার্টিতে যাওয়ার জন্য। আর বেলা বেডে বসে বসে দেখছে সব কিছু কিন্তু কোনো কথা বলছে না। এদিকে সাঁঝ ও রেডি হতে হতে কয়েকবার বেলা কে দেখে নিয়েছে। তাই ভ্রু কুঁচকে বেলার দিকে তাকিয়ে ইশারা করে কিন্তু বেলা মাথা নাড়িয়ে কিছু না বলে। সাঁঝ রেডি হয়ে নিয়ে বেলার দিকে এগিয়ে যায়। বেলা কে নিজের সাথে জড়িয়ে রেখে বেলার ঠোঁটে আলতো করে চুমু খায়। আসলে এটা এখন প্রতিদিন এর রুটিন হয়ে গেছে সাঁঝ বাড়ি থেকে কোথাও বেরোনোর আগে বেলার ঠোঁটে চুমু খেয়ে বেরোনো।
.
–“কোথায় যাওয়া হচ্ছে শুনি এত হট সেজে। বেলা ভ্রু কুঁচকে বলে। যদি ও বেলা জানে সাঁঝ কোথায় যাচ্ছে।
.
–” আসলে আজকে একটা পার্টি আছে। মানে… সাঁঝ কে পুরোটা বলতে না দিয়ে বাইরে থেকে চিৎকার করে ডেকে ওঠে ভাই।
.
. সারিফ এসে সাঁঝ কে টেনে নিয়ে বেরিয়ে যায় কোনো কথা বলতে না দিয়ে। সে জানত তার ভাই ঠিক বলে যাবে। তাই তাড়াতাড়ি করে টেনে নিয়ে গেলো। মেয়ে গুলো কে বললে তাদের কি থড়ি না যেতে দেবে। আর না করতে দেবে কোনো ব্যাচেলর পার্টি। তাই সব গুলো মিথ্যে বলে বেরিয়ে যায় বাড়ি থেকে।
.
. বেলা নিচে নামতে সব গুলোই এসে চেপে ধরে।
.
–“বেলা এটা হতে দেয়া যায়না। ওরা আমাদের মিথ্যা বলে চলে গেলো পার্টি করতে। রুহি বলে ওঠে।
.
–” হুম সেই বিয়ে কি ওরা একা করছে নাকি যে ওরা একা একা ব্যাচেলর পার্টি করবে। সারা রেগে বলে ওঠে।
.
–“আমরা সরকারি নাকি যে আমাদের কোন পার্টি হবে না। জাকিয়া বলে ওঠে।
.
–” একদমই তাই এর একটা বিহিত হতে হবে। ওরা ছেলে বলে কি সব করতে পারবে। শান্তা বলে ওঠে।
.
–” কখনো না। ওরা যেমন পার্টি করতে গেছে আমরাও তেমন পার্টি করব। ওদের আমরা দেখিয়ে দেবো আমরা ও পারি। আমি এখুনি সব অ্যারেঞ্জমেন্ট করছি। বেলা রাগে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে ওঠে।

————-

.
. চারিদিকে লাইটিং করা পার্টি থিম সাজিয়েছে পুরো। পার্টি সং বাজছে ফুল ভলিউমে। চারিদিকে জিখমিকি আলো জ্বলছে। পাশের কাউন্টার এর সামনে গ্লাস সাজিয়ে রাখা। আর তারা সাথে সাথে মৃদু মৃদু আগুন এর খেলা চলছে। চারিদিকে মিলিয়ে পুরো পরিবেশ টা একদম রমরমিয়ে উঠছে ।সব মেয়ে গুলো একসাথে রেডি হয়ে নামছে সব গুলো পার্টি ড্রেস পরেছে শর্ট। আর ব্ল্যাক কালার এর। তারা একসাথে নেমে নিচে এসে দাঁড়ায়। সামনে টেবিল এর ওপরে থাকা শ্যাম্পেন এর বোতল তুলে নিয়ে বেলা কাউন্ট করে বোতল খোলে আর চারিদিকে সবার গায়ে ছিটাতে থাকে।
.
. সবাই একসাথে হাতে গ্লাস তুলে নিয়ে একে অপরের সাথে টুইস্ট করে খেতে থাকে আর তার সাথে নাচ । ফুল ভলিউমে পার্টি সং এর সাথে মাতাল করা নাচ নাচতে থাকে। একে অপরের কোমর জড়িয়ে ধরে তো কখনো একে অপরের হাত ধরে ঘুরিয়ে দিয়ে। আবার একসাথে হাত উঁচু করে লাফিয়ে লাফিয়ে নাচতে থাকে।
.
. সব গুলো পুরো মাতাল হয়ে গেছে। একের পর এক গ্লাস ফাঁকা করে। আর একে অপরের সাথে গলা জড়িয়ে কোমর জড়িয়ে নাচতে থাকে ফুল ভলিউম মিউজিক এর সাথে। অনেক দিন পর এত আনন্দ করতে পারছে একসাথে। কেউ কারোর হুসে নেই। এখন সব নাচে মত্ত।
.
. এদিকে ছেলে গুলো ও মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বাড়ির ভিতর ঢুকেই সাঁঝ এর মাথা ঘুরে যায়। পুরো বাড়ি দেখে। চারিদিকে পার্টির মত করে সাজানো হয়েছে। আর এখন বাড়িতে পার্টি চলছে। সামনের দিকে তাকাতেই সাঁঝ এর মাথা পুরো খারাপ। কারণ সামনে টেবিলের ওপর দশ বারোটা ওপর বোতল খালি করে রাখা আছে। আর তার পাশে কিছু গ্লাস এখনও ভরা আছে। সব মেয়ে গুলোর হাতে গ্লাস আছে। কারোর খালি হয়ে যেতে টেবিল থেকে গ্লাস তুলে নিচ্ছে।
.
. এদিকে সাঁঝ এর পিছন পিছন বাকি গুলো ও টলতে টলতে বাড়ি ঢোকে। আর সাথে সাথে চোখ বড় বড় হয়ে যায়। তাদের নেশা যেনো চড়ে গেছে। নিশানা চোখ কচলে আরো ভালো করে দেখছে সামনে কি চলছে। সবাই যেনো এখনও ভূত দেখার মত করে চমকে আছে।
.
–“ভাই এখানে পার্টি চলছে? নাকি আমরা এখনও বাড়ি যায়নি। বেদ চোখ বড় বড় করে বলে ওঠে।
.
. বেলারা সবাই দেখে যে ছেলে গুলো ফিরে এসেছে। আর তাদের দেখে তারা অবাক হয়ে গেছে। বেলা টলতে টলতে এগিয়ে এসে টেবিল এর ওপরে এক পা তুলে দিয়ে কিছুটা ঝুঁকে গ্লাস তুলে নেয়। এক চুমুক খেয়ে নিয়ে সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে ।
.
–“কি কেমন লাগছে আমাদের পার্টি? হুম আমাকে মিথ্যে বলেছিলেন আপনি। আপনারা সবাই পার্টি করতে গেছিলেন। বেলা বলে ওঠে।
.
–” একদম তোমরা সবাই পার্টি করতে গেছিলে তাই এখন আমরাও পার্টি করছি। শান্তা এগিয়ে এসে বলে ওঠে।
.
–“আপনি আমাকে মিথ্যা কথা বলতে পারলেন। আপনি পার্টি করতে গেছিলেন। সেখানে নিশ্চয়ই অনেক ভালো ভালো মেয়ে ছিল। আমি এখন কি করব। আমি আর এখানে থাকবো না চলে যাব। বলেই হঠাৎ করেই হাতের গ্লাস টা নিচে ফেলে দেয় ছুড়ে। সাথে সাথে গ্লাস ভেঙে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আর বেলা টেবিলের ওপর উঠে বসে পড়ে কান্না করতে শুরু করে.।
.
. সাথে সাথে বাকিরা ও তাই করে ।সাঁঝ কোনো কথা না বলে এগিয়ে আসে বেলার দিকে। বেলা কে ধরতে গেলে বেলা সরে যায়। সাঁঝ কোনো কথা না বলেই বেলা কে কোলে তুলে নেয়। সে এক দৃষ্টিতে বেলার দিকে তাকিয়ে আছে। বেলা এখনও ঠোঁট ফুলিয়ে কেঁদে চলেছে।
.
. এদিকে বাকিরা একে একে কাছে গেলে কেউ আবারো নাচতে শুরু করে তো কেউ আবার কেটে পড়ে ওখান থেকে।
.
. সাঁঝ বেলা কে কোলে নিয়ে রুমে চলে আসে। বেলা দু হাত দিয়ে সাঁঝ এর গলা জড়িয়ে রাখে। এখনও ঠোঁট ফুলিয়ে ফুলিয়ে কাঁদছে। বেলা কে বিছানায় বসাতে গেলে সে আরো জোরে সাঁঝ এর গলা জড়িয়ে নেয়।
.
–“তুমি খুব পঁচা। তুমি একটুও ভালো না। আমাকে একটুও ভালোবাসো না। বেলা কাঁদতে কাঁদতে বলে ওঠে।
.
–” তা হটাৎ করে তোমার একটা কেনো মনে হলো। আর একটু আগে তো আমাকে তো আপনি আপনি করছিলে। সাঁঝ বেলার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
–“তুমি আমাকে না বলে কেনো চলে গেলে কেনো আমাকে মিথ্যা বললে। ওখানে তুমি নিশ্চয়ই মেয়েদের সাথে নাচ করেছ। বেলা সাঁঝ মুখের ওপর মুখ এনে চোখ টেনে টেনে বলে ওঠে।
.
–” আমি তোমাকে মিথ্যা বলিনি।আমি তো তোমাকে বললাম আমি পার্টি তে যাচ্ছি। আর আমার কিছু বলার আগেই তো সারিফ টেনে নিয়ে গেলো। তাই বলতে পারিনি। কিন্তু তুমি এটা বল তুমি এটা কেনো খেয়েছ। সাঁঝ বেলার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর ভাবে বলে ওঠে।
.
–” আমার তো খুব রাগ আর কষ্ট হচ্ছিলো। তুমি আমাকে বলে যাওনি। আর তারপর ওখানে গিয়ে মেয়েদের সাথে নাচবে ভেবে আমার খুব রাগ হচ্ছিলো তাই আমিও পার্টি করেছি। তুমি তো আমাকে আর ভালোবাসো না। ঠোঁট ফুলিয়ে বলে ওঠে বেলা।
.
–“আমি মেয়েদের কাছে যায়নি। আমি তো জানি আমার একটা পাগলি আছে তাই। আর কে বললো আমি তোমাকে ভালোবাসি না। সাঁঝ ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।
.
–” ওহ ভালোবাসো ।তাহলে আমাকে এখন আদর করো।আমি এখন তোমাকে খেতে চাই। বেলা তার মুখ একদম সাঁঝ এর মুখের সাথে লাগিয়ে নেশা ভরা কন্ঠে বলে ওঠে।
.
. বেলা সাঁঝ এর গলার কাছে হাত এনে অস্থির হাতে সাঁঝ এর শার্ট এর বোতাম খুলতে লাগে। এদিকে সাঁঝ এর অবস্থা আরও কঠিন একই বেলার নেশা ভরা মাতাল আওয়াজ আর তার ওপর অক্ষয় বেলা কে দেখতে আরো নেশাময় লাগছে। যা দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না সাঁঝ। আর তার সাথে বেলার এই কাজ সাঁঝ এর বুকের মাঝে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতক্ষণ নিজেকে সামলে চুপ করে থাকলেও এবার আর নিজেকে রুখতে পারে না। দু হাত দিয়ে বেলা কে জাপটে ধরে নিজের সাথে। বেলার ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে তীব্র নেশাগ্রস্ত এর মত করে বেলার ঠোঁট শুষে নিতে থাকে। বেলা সাঁঝ এর সাথে তাল মিলিয়ে সে ঠোঁটের মাঝে ডুবে আছে। আর এক হাত দিয়ে সাঁঝ এর শার্ট এর বোতাম গুলো খুলে ফেলে। সাঁঝ বেলার ঠোঁট ছেড়ে বেলা কে বিছানায় ফেলে। সাঁঝ নিজের শার্ট খুলে ফেলে বেলার ওপরে উঠে আবারো মেতে ওঠে বেলার ঠোঁটের মাঝে। এক হাত দিয়ে বেলার কাঁধের থেকে ড্রেস সরিয়ে দেয়। ঠোঁট থেকে মুখ তুলে গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। আসতে আসতে বেলার শরীর থেকে সমস্ত ড্রেস খুলে ফেলে। আর দুজন একে অপরের মাঝে বিলীন হয়ে যায়। তারা ডুবে যায় একে অপরের ভালোবাসার মাঝে।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে…

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_৩৭
.
.আজ রওশন ম্যানসনে পুরো সাজসাজ রব উঠেছে চারিদিকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর লোকেদের কাজ চলছে। গার্ডেন সাইটে সাজানো হয়েছে আজকের মেহেন্দি আর সঙ্গীত এর জন্য। সকালে ম্যাহেন্দি আর সঙ্গীত। বিকেলে হলুদ ও সন্ধেবেলা বিয়ে।। পুরো অ্যারেঞ্জমেন্ট হয়ে গেছে। গার্ডেনে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। রং বিরং এর ছাতা আর বিভিন্ন ফুল দিয়ে পুরো ডেকরেট করা হয়েছে পুরো গার্ডেন টা কে । আর পুরো গার্ডেন এর মাঝে খুব সুন্দর করে পাঁচটা স্টেজ মত সাজিয়েছে। সব গুলো ফুল দিয়ে লাভ এর মত শেপ বানিয়েছে। তার মাঝে বসার জন্য জায়গা করা। প্রতিটা স্টেজ এর ওখানে লাভ শেপ এর ওপর যে যার নাম লেখা আছে। অন্য দিকে খাবার এর আয়োজন। অন্য দিকে ড্রিংক এর ব্যবস্থা আছে। গেটের মুখের খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। ওখানে ও ম্যাহেন্দি ও সঙ্গীত শেরিমানি ও বাকিদের নাম লেখা আছে খুব সুন্দর ভাবে। পুরো গ্র্যান্ড ওয়েডিং চলছে।
.
. পার্লার থেকে মেয়ে এসে সবাই কে রেডি করছে। সব মেয়ে গুলো কে আজকে খুব সুন্দর করে লুক দেয়া হয়েছে। শান্তা পরেছে লাইট গ্রিন কালার এর খুব সুন্দর ডিজাইনার ল্যাহেঙ্গা। টপ টা অফ সোল্ডার। ওড়না এক দিকে কাঁধের ওপর দিয়ে রাখা। চুল গুলো কে সামনে থেকে ডিজাইন করে একদিকে এনে মেসি বিনুনি করা। আর তার সাথে অর্কিড এর ফুল দিয়ে পুরো চুল টা কে জড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কানে মাল্টিলেয়ার এর ইয়ারিং যেটা কাঁধ পর্যন্ত ছুয়ে আছে। আর মুখে রয়েছে মানানসই মেকআপ।
.
. জাকিয়া লাইট পিঙ্ক কালার এর ল্যাহেঙ্গা পরেছে। যার পুরোটা খুব সুন্দর কাজ করা ওড়না এক সাইটে কাঁধের ওপরে রাখা। চুল গুলো কে কার্ল করা। মাথায় পিঙ্ক কালার এর ফুল আর মতির কম্বিনেশন এর টিকলি। গলায় ও সেম কম্বিনেশন এর চোকার পরা। আর দু হাতে ওই একই কম্বিনেশন এর পরা। আর তার সাথে মিলিয়ে পারফেক্ট মেকআপ।
.
. সারা পার্পেল কালার এর টাই-ডাই ল্যাহেঙ্গা যেটা পুরোটাই থ্রি-ডি ফ্লোরাল ফুল এর ডিজাইন করানো। স্লিভলেস টপ। গলায় খুব সুন্দর পাথরের নেকলেস। আর চুল গুলো কার্ল করানো। আর তার সাথে আছে খুব সুন্দর মেকআপ ।
.
. রুহি রয়্যাল ব্লু জ্যাম্পস্যূট পরেছে। টপ টা অফ সোল্ডার। আর এর ওপরে পুরোটা গোল্ডেন অ্যাপলিগ এর ওপরে গোল্ডেন স্টোন বসানো। কানে খুব সুন্দর একটা টপ পরা। চুল গুলো কে কার্ল করে এক সাইটে রাখা। আর তার সাথে মুখে পারফেক্ট মেকআপ করা।
.
. আলিয়া লাইট পিচ কালার ল্যাহেঙ্গা পরেছে। ওড়না টা খুব সুন্দর পিছন থেকে সামনে এনে রাখা। মাথার চুল গুলো কে খুব সুন্দর স্টাইল এর বান করে তার সাথে ফুল দেয়া। মাথায় রেড আর পিঙ্ক কম্বিনেশন এর ফুলের টিকলি আর গলায় সেম কম্বিনেশন এর চোকার। হাতে ও সেম ব্রেসলেট পরা। তার সাথে আছে মানানসই মেকআপ।
.
. বেলা সবার থেকে একদম আলাদা লুক নিয়েছে। পুরোটাই মারাঠি গেট আপ। হেবি ধূতি স্টাইল শাড়ি পরেছে লাইম কালার এর। পুরোটাই গর্জিয়াস। চুল গুলো কার্ল করানো। মাথায় সাদা স্টোন এর টিকলি পরেছে গলায় খুব সুন্দর স্টোন নেকলেস। কোমরে ও খুব সুন্দর স্টোন এর ওয়েস্টকোট পরেছে যার সাথে মাল্টিলেয়ার এর ঝুরি ঝুলছে। চোখে গ্লাস। ও মুখে পারফেক্ট মেকআপ। পায়ে সাদা স্ট্রাপড স্টিলেটো। ব্যাস একদম আলাদা লুক।
.
. সবাই রেডি হয়ে গেছে। এবার সব এক এক করে গার্ডেন এর দিকে আসছে। এদিকে ছেলেরা ও সব রেডি হয়ে আছে তারা ও সব ওদের সাথে মিলিয়ে ড্রেস পরেছে।

————
গার্ডেন সাইট এখন মিউজিক এর সাথে ডান্স করছে অন্য পাশে রয়েছে ঢাক ঢোল এর ব্যবস্থা। সব একসাথে বাজাচ্ছে আর তার সাথে নাচ ও রয়েছে। মেয়ে গুলো রেডি হয়ে নিচে আসতে দেখে সব গুলো নাচ শুরু করে দিয়েছে সাঁঝ এর চোখ বেলার দিকে পড়তে কয়েক সেকেন্ড পুরো থমকে যায় তারপরেই ছুটে যায় বেলার দিকে। সবার সামনে গিয়ে কোলে তুলে নেয় বেলা কে। আর সাথে সাথে চারদিকে থেকে সিটি আর চিৎকার ভেসে আসে। আর বাকি মেয়ে গুলো ও দৌড়ে গিয়ে যে যার সাথে নাচ শুরু করে দেয়।সবাই একসাথে খানিকক্ষণ নেচে নিয়ে যে যার সিটে গিয়ে বসে পড়ে।
.
. একে একে ম্যাহেন্দি শুরু হয়। আর তার সাথে তো রয়েছে নাচ গান। মেয়ে গুলো বসে বসে ম্যাহেন্দি করছে। আর তার সাথে ছেলে গুলো ওদের জন্য পারফর্ম করছে।
.
. 🎶 সাডি গালি ভুল কেভি আয়া কারোজি, 🎶 এই গানে নিশান ওম আর বেদ পারফর্ম করে। ওদিকে শান্তা সারা জাকিয়া বসে বসে ওদের সাথে নাচে তাল মিলিয়ে যাচ্ছে।
.
. অন্য দিকে সবাই নাচের দিকে গেলেও সাঁঝ বেলার কাছে বেলার পাশে বসে আছে। বেলা কোনা চোখে দেখতেই বেলার গালে একটা টপ করে চুমু খেয়ে নেয় সবার সামনেই। সাঁঝ ও বেলার হাতের সাথে হাত মিলিয়ে নিজের হাতে বেলার নাম লিখছে ডিজাইন করে। সাঁঝ এক মুহূর্ত ও ছাড়তে চাইছে না। সব কিছু ও বেলার সাথে মিলে করতে চায়। এদিকে সারা শান্তা জাকিয়া রুহি ম্যাহেন্দি করতে করতে উঠে যায়। ছেলেদের কে ডান্স ফ্লোর থেকে ঠেলে সরিয়ে দেয়। তার পরে ইশারা করে মিউজিক চেঞ্জ করতে বলে দেয়।
.
.🎶 মেইনে হোঠোসে লাগায়ি তো হাঙ্গামা হো গ্যায়া। 🎶
.
.শান্তা রুহি সারা জাকিয়া পারফর্ম করছে। ছেলেদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে। এতক্ষণ ওরা নাচ করার সময়ে মেয়ে গুলো ক্ষেপাচ্ছিল।তাই এখনও মেয়ে গুলো ও ওদের দেখিয়ে দিচ্ছে। ওদের শেষ হতে না হতেই। ওম বেদ সারিফ নিশান ও স্টেজ উঠে আসে। এবার মেয়ে গুলোর দিকে এগিয়ে যেতে যেতে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶 মাহিয়া সে সা~বা সা~বা 🎶
.
. পুরোটা গানের সাথে ওম জাকিয়া সারা বেদ সারিফ রুহি আর শান্তা নিশান পুরোটাই একসাথে পারফর্ম করে। একে অপরের সাথে আরো বেশি চিপকে গিয়ে। এদিকে সাঁঝ বসে বসে বেলার সাথে দুষ্টুমি করে। বেলা ও বসে বসে ওদের নাচের সাথে তাল মিলিয়ে যাচ্ছে। আসলে যারা সব সময়ে তাদের জগত ডুবে থাকে। তাদের কানে মিউজিক গেলে চুপ করে বসে থাকতে পারে না। গানের তালে তালে ঠিক তাদের পায়ের ও হাতের তাল উঠে যায়। নিজেদের স্থির রাখতে পারে না। আর এটাই বসে বসে সাঁঝ ইনজয় করছে আর মাঝে মাঝে সবার চোখের আড়ালে বেলার কোমরে নিজের হাত দিয়ে স্লাইড করে যাচ্ছে। যার জন্য বেলা মাঝে মাঝে কেঁপে কেঁপে উঠছে। আর রাগী চোখে সাঁঝ এর দিকে তাকালে সাঁঝ মিষ্টি করে হেসে চুমু খেয়ে নিচ্ছে গালে। তাই বেলা মুখ বন্ধ করে সহ্য করে যাচ্ছে সব কিছু। এদিকে আবারো মেয়ে গুলো ছেলে গুলো ঠেলে সরিয়ে দেয়। আবারও গান শুরু হয়।
.
. 🎶 কিউটিপাই 🎶
.
. গান শুরু হতে রুহি গিয়ে বেলার হাত টেনে নিয়ে আসে সাঁঝ এর থেকে ছাড়িয়ে। এবার শুরু হয় আসল নাচ বেলার আসতে না আসতে এবার পুরো স্টেজ কাঁপাতে থাকে সব কটা মিলে বেলা এতক্ষণ বসে বসে নাচের সাথে তাল মিলিয়ে যাচ্ছিলো। এবার সে ছাড় পেয়েছে তাই মন ভোরে নেচে যাচ্ছে। এবার বেলা গিয়ে তার দিয়া আলিয়া কে টেনে আনে। এবার শুরু হয় অনেক গুলো গানের একসাথে ম্যাশআপ।
.
. 🎶 ও মাখনা ভে মাখনা, 🎶 আজা নাচলে নাচলে মেরি ইয়ার তু নাচলে 🎶বাম ডিগি ডিগি বাম বাম 🎶মুন্ডা থোড়া অফ বিট হে 🎶তাল সে তাল মিলা 🎶
.
. সব গুলো মেয়ে একসাথে নেচে যাচ্ছে এদিকে সাঁঝ বসে বসে বেলার প্রতিটা মুভমেন্ট দেখে যাচ্ছে যে এখনও পুরো পুরি ভাবে নাচে মত্ত হয়ে আছে। এদিকে ওম এসে জাকিয়া কে টেনে নেয় বেদ সারা কে আকাশ আলিয়া কে সারিফ রুহি কে আর নিশান শান্তা কে। মাঝে থেকে বেলা ছুটে গিয়ে সাঁঝ এর বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এদিকে সব গুলো জোড়া একসাথে কাপল ডান্স শুরু করে।
.
. 🎶 দুনিয়া 🎶 (ফ্রম লুকাছুপি)
.
. সব একসাথে ডান্স করছে একে অপরের সাথে মিলে রোমান্টিক মুড নিয়ে। দূর থেকে ওদের দেখে মনে হচ্ছে যেনো ওরা একে অপরের মাঝে এখন ডুবে আছে। ওদের চারপাশে এখন কি হচ্ছে না হচ্ছে সেদিকে ওদের কোনো খেয়াল নেই। তারা আপন মনে নিজের ভালোবাসার মধ্যে বিলীন হয়ে আছে। সবার হাততালির শব্দ ওদের ঘোর কেটে যায়।
.
. ওদের শেষ হতে সব গুলো গিয়ে এবার বসে পড়ে অনেক ক্ষণ দিয়ে তারা নাচাকোদা করছিলো এখন পুরো হাপিয়ে গেছে। এদিকে সবার বসে যেতে সাঁঝ বেলার হাত ধরে স্টেজ নিয়ে আসে। আর সাথে সাথেই সব গুলো চিৎকার করে ওঠে।
.
. 🎶 রাবতা 🎶 জারা জারা 🎶 মারিজে-ইষ্ক 🎶তু জারুরি🎶
.
. এই রোমান্টিক চার গানের সাথে বেলা আর সাঁঝ এর পারফরম্যান্স যেনো তাদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বেলা সাঁঝ এর প্রতিটা স্টেপ প্রতিটা মুভমেন্ট। তাদের এক্সপ্রেশন সব কিছু মিলিয়ে। তারা যে এত রোমান্টিক তারা তাদের ডান্স না দেখলে বুঝতে পারতো না ওখানে কেউ। যখন সাঁঝ বেলা কে ঘুরিয়ে তার কোমরে হাত রেখে একদম উপরে উঁচু করে তুলে ধরে। তার তার সাথে লাগিয়ে যখন ওপর থেকে নিচে নামাতে থাকে। তখন কার পুরো মুহূর্ত টা। আর যখন সাঁঝ সামনের দিকে ঝুঁকে গিয়ে বেলা কে নিজের কোমরে সাথে জড়িয়ে নিয়ে সে বেলার দিকে নেশাগ্রস্ত ভাবে তাকিয়ে আছে। যখন বেলা কে হাত দিয়ে ঘুরিয়ে দেয় আর বেলা ছুটে আসে সাঁঝ এর দিকে আর সাঁঝ ঠিক কোনো কিছু ক্যাচ করার মত বেলা কে ধরে নেয়। নিজের পিঠের সাথে বেলা রেখে দু বেলার দু হাত নিজের কোমরে রেখে ওই অবস্থায় বেলা কে তুলে নেওয়া। তাদের এই প্রত্যেক টা রোমান্টিক মুভমেন্ট ওখানে সবাই কে অবাক করে দেয়।
.
. সব শেষে একসাথে সবাই মিলে পাগলামি মাতালামি করে সবাই একসাথে নাচ করে। তারা প্রথম থেকে আর শেষ পর্যন্ত পুরো ম্যাহেন্দি আর সঙ্গীত পুরো মাতিয়ে রেখেছিলো।

————-
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ম্যাহেন্দি আর সঙ্গীত অনুষ্ঠান হয়েছিলো। তার পর সব নিজেরা একটু বিশ্রাম নেয়। কারণ বিকেলে আবারো হলুদ এর শেরিমেনি আছে। তাই আবারো নতুন ভাবে সব কিছু সাজানোর তোড়জোড় চলছে। সব রেস্ট নিয়ে তৈরী হতে গেছে। আর বেলা এসে ড্রইং বসেছে। সবার মধ্যে আলাদা উত্তেজনা থাকলেও বেলার মধ্যে তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। কারণ বেলার হলুদ ইন্টারেস্ট থাকলে ও সে সেটা মানতে পারবে না। কারণ বেলার হলুদে অ্যালার্জি আছে ।তাই সে চুপচাপ বসে আছে। আর আজকের দুপুরে ফাংশন এর মুহূর্ত গুলো নিজের ফোনে দেখছে যেগুলো ভিডিও করা হয়েছে।
.
. সব গুলো মেয়ে হলুদ ল্য্যহেঙ্গা আর তার সাথে হলুদ ফুলের জুয়েলারি পরেছে। হাত গুলো ম্যাহেন্দি রাঙা হয়ে আছে আর তার সাথে আছে পারফেক্ট মেকআপ । ছেলে গুলো ও ওদের সাথে মিলিয়ে কাঁচা হলুদ আর সাদা কম্বিনেশন এর পাঞ্জাবী আর জিন্স পরেছে।
.
. তাঁরা সবাই মিলে গিয়ে হলুদ খেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বেলা গিয়ে ওদের গায়ে হালকা হালকা করে হলুদ ছুঁয়ে এসেছে। তার পরে সবাই মিলে একসাথে খেলা শুরু হতে বেলা ওখান থেকে পালিয়ে আসে। সাঁঝ ও ওখানে ছিল বেলা চলে আসতে সে ও বেলার সাথে চলে আসে।
.
. নিশান হলুদ নিয়ে শান্তা এর পিছনে ছুটে যায়. এক হাত বাড়িয়ে কোমরে ধরে নিজের কাছে টেনে আনে। শান্তা কে নিজের বুকের ওপর চেপে ধরে হাতে থাকা হলুদ নিয়ে মুখে থেকে গলা পর্যন্ত স্লাইড করতে থাকে। শান্তা ও কম কিসে। সে ও নিজের মুখের থেকে হলুদ নিয়ে নিশান এর ঘাড়ে লাগিয়ে দেয়।
.
. অন্য দিকে ওম জাকিয়া কিছুটা আলাদা। জাকিয়া তার হাতের থাকা হলুদে ভরা পিছকারি নিয়ে ওম এর পিছনে ছুটে চলেছে। কারণ একটু আগে তাকে নিচে ফেলে তার ওপর উঠে পুরো হলুদ করে ছেড়ে দিয়েছে। তার মুখের একটুও কোথাও বাকি নেই। দেখে মনে হচ্ছে যে হলুদ এর প্যাক লাগিয়েছে মুখে।
.
. সারা আর বেদ একে অপর কে নিচে ফেলে মারপিট করে হলুদ লাগিয়ে দিচ্ছে কেউ কাউকে ছাড়ছে না। দুজন পুরো কুস্তি করার মত করে হলুদ মাখা করছে। চারিদিকে তাদের দেখে হেসে যাচ্ছে কিন্তু তাদের এদিকে কোনো কিছু খবর নেই তারা তো একে অপরের হলুদ মাখা করতে আছে।
.
. অন্য দিকে আকাশ আলিয়া। আকাশ কিছুটা বোল্ড হলেও আলিয়া হল লজ্জা কন্যা। সে লজ্জা মাখা চোখে একবার করে আকাশ কে দেখে আবারো চোখ নামিয়ে নেয়। অনেক কষ্টে সে কাঁপা কাঁপা হাতে আকাশ কে হলুদ লাগিয়ে দিয়েছে।
.
. সারিফ আর রুহি এরা দুজনেই এগ্রেসিভ। এদের দুজনের মধ্যে কোনো লজ্জা কাজ করছে না। দুজন একসাথে বিভিন্ন রকম রোমান্টিক মুড নিয়ে হলুদ মাখানো করছে আর ক্যামেরার সামনে পোজ দিচ্ছে।
.
. এদিকে বেলা রুমে এসে গায়ে থেকে ওড়না বিছানায় খুলে রেখে কাবার্ড এর দিকে এগিয়ে যায়। নিজের ড্রেস চেঞ্জ করবে বলে। কাবার্ড এর সামনে গিয়ে হাত রাখতে। নিজের ঘাড়ের ওপর উষ্ণ নিশ্বাস পায়। সাঁঝ পিছন দিকে থেকে এসে ওকে পিছন দিকে থেকে জড়িয়ে ধরেছে। বেলার কাঁধের ওপরে সাঁঝ এর নিশ্বাস পড়ছে। আর তার সাথে ঠোঁটের স্লাইড। বেলা চোখ মুখ চেপে বন্ধ করে নেয়। সাঁঝ তার হাত নিয়ে বেলার উন্মুক্ত পেটে স্লাইড করে। বেলা চমকে ওঠে চোখে খুলে। নিচের দিকে তাকাতেই দেখতে পায় সাঁঝ এর হলুদ আবির। বেলা কে সামনের দিকে ঘুরিয়ে দু হাত উঁচু করিয়ে ধরে। সাঁঝ আসতে আসতে আবির হাতে বেলার গালে গলায় হাত স্লাইড করতে থাকে। আর বেলা নেশাগ্রস্ত ভাবে সাঁঝ এর চোখে দেখতে থাকে। সাঁঝ হাতে আবির নিয়ে নিজের গালে মাখে। হাত টা আবারও বেলার পেটে রেখে। সাঁঝ নিজের মাথা নিচে করে নিজের গাল বেলার গাল এর সাথে লাগিয়ে স্লাইড করতে থাকে। সাথে সাথে সাঁঝ এর গালে থাকা হলুদ আবির বেলার গালে লেগে যায়।
.
. আজকে আমাদের হলুদ। তাই তোমাকে হলুদ মাখানো হবে না এটা তো হতে পারে না তাই না। অরিজিনাল হলুদ না হোক হলুদ এর কাজিন তো। এতেই কাজ হবে। বেলার দিকে নেশাময় চোখে তাকিয়ে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
. বেলা কোনো কিছু না বলে মাথা নিচু করে হেসে ফেলে। সাঁঝ বেলার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বেলা কে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে…
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন রি-চেক করা হয়নি।
সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন।