তুই যে আমারই পর্ব-২৮+২৯

0
5670

#তুই_যে_আমারই
#আঁখি আজমীর নুরা
part 28
শেষ পর্যন্ত লাল দলই জিতে। যার সম্পূর্ণ ক্রেডিট একমাত্র আয়াজই। খেলা শেষে আয়াজ আর আঁখি বাড়ি ফিরতেই আঁখি বলে উঠলো…
-আয়াজ ভাইয়া অনেক তৃষ্ণা পেয়েছে।
-আয়াজ সাথে সাথেই চোখ লাল করে তাকালো।
-আঁখি আয়াজের এমন চোখ রাঙ্গানো দেখে যেনো অবাক হয়ে গেলো। কারণ সেতো খারাপ কিছু বলেনি। তাহলে এমন করে তাকানোর কি আছে। তাই ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো আমি কি ককোনো ভভুল করেছি?
-আয়াজ এবার দাঁতে দাঁত চেপে বলল আমি তোর ভাই লাগি।
আয়াজের এমন প্রশ্নে আঁখি যেনো পুরোই আহাম্মক হয়ে গেলো। মানে এটা কেমন কথা। জন্মের পর থেকেই তো তুই হারামজাদারে আমি ভাই ডেকে আসছি। আর আজ কিনা বলে আমি তোর ভাই লাগি? তো তুই আমার ভাই নাতো কি? নাকি তুই মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা কোনো এলিয়েন। জ্বীনে টিনে ধরে নাইতো। বেটা বজ্জাত।
-কি হলো। কি ভাবছিস?
আয়াজের ডাকে ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে এসে বলতে লাগলাম..
-কককই কি ভাববো।
-সেটায়? তো এবার বল আমি তোর কোন জন্মের ভাই লাগি?
-আব ইয়ে ভভাইয়াই তো। ছছোটো থেকেই তো ভভভাইয়া ডডডাকি।
-তখন ডাকতিস এক রিজনে। আর এখন?
আয়াজ ভাইয়ার প্রশ্নের আগামাথা কিছু না বুঝে হাবার মতো তাকিয়ে আছি। আর আয়াজ বলল..
–লিসেন, তখন তুই জানতিস না যে আমি তোর হাসবেন্ড। তাই ডাকতিস! কিন্তু এখনতো সব জানিস? তাহলে হোয়াই আর ইউ কলিং মি ভাইয়া…

এবার আমার সবকিছু জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। কেন এই পোলা আমাকে চোখ রাঙ্গাচ্ছে।
–আআসলে অনেক পুরোনো অভ্যাসতো তাই।
-সেটা আমার দেখার বিষয়না। নেক্সট টাইম থেকে যদি ভাইয়া ডেকেছিসতো মেরে মাটিতে পুঁতে দিব।
-ওওকে।
-তারপর আয়াজ আইসক্রিম কিনে এনে আমার মুখের সামনে ধরলো?
–নে ধর
-আইসক্রিম ককেন?
-এই আইসক্রিম দেখেইতো তোর তৃষ্ণা পেয়েছিলো। এতো বকা পেয়েছিস? তোর আগে আমার জন্ম। তোর সব চিন্তা আমার মুখস্থ।
-কি ছেলেরে বাবা, সব কিছু কিভাবে যেনো বুঝে যায়। শালা খাটাশ।
—মনে মনে গালি দেওয়া অফ করবি।

আমি চোখ বড় বড় করে তাকালাম। কি ছেলেরে বাবা, এখন কি মনে মনে গালি দিয়েও কি শান্তি পাবোনা।

বাসায় এসে লম্বা একটা সাওয়ার নিলাম। ঘুড়ি উড়িয়ে হাত পায়ে একেবারে ময়লার গানি হয়ে আছে। কেমন যেনো খুতঁ খুঁত করছে। নিচে নামতে যাবো কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে যেতে তার আগেই আয়াজ আমাকে ধরে ফেলল। কজ বারিটা আয়াজের সাথেই খেয়েছি।

–শুঁটকি মাছের মতো শরীর পলিথিনের সাথেও বারি খেলেও নিজেকে সামলাতে পারেনা। নিচে পরে যাস।
–এহ আপনি পলিথিন?
-তা কখন বললাম?
-মাত্রই তো বললেন।
-ওটাতো জাস্ট উপমা দিয়েছি। ডাম্বো কনেকার। আর তুই আবার গোসল করছিস কেন? সকালেই না করলি। আবার এখন কিসের জন্য করেছিস? শরীরে অসুখ বাঁধানোর কোনো চিন্তা ভাবনা আছে নাকি।
–আরে আমিতো খেলে আসলাম তাই ময়লা হয়েছে এ জন্য গোসল করে ফেলেছি।
-কেন হাত মুখ ধুয়ে ফেললে হয়না। ফাযিল মেয়ে।

আমি বেচারি মাথাটা নিচু করে আছি। এরপর আয়াজ আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। আয়াজ যেতেই একটা স্বস্থির নিশ্বাস ফেললাম। যাক ভালোই কাটলো এরপর পুরোদিন।

পরেরদিন বিকেলে যখন ফ্লাইটে উঠেছি শুরুতে বেশ এক্সাইটেড থাকলেও পরে ভয়ে জান বেরিয়ে যাচ্ছে। কারণ এই প্রথম বার প্লেনে উঠেছি। প্লেন যখন টেক ওভার করছে আমি ভয়ে রীতিমতো বেশ জোড়েই আওয়াজ করে কেঁদে উঠলাম।

আয়াজ আঁখিকে ওভাবে কান্না করতে দেখে বুঝতে বাকি রইলো না বেচারি ভয় পাচ্ছে। তাই চট করে টেনে বুকের সাথে শক্ত করে ধরে জড়িয়ে আছে। আর সুরা পরে আঁখির মাথায় কয়েকটা ফুঁ দিয়ে দিলো।

এর মধ্যে আর প্লেনে খুব একটা কথা হয়নি। ভালোই ভালো কক্সবাজার আসলাম।

এসেই রিসোর্টে উঠলাম। আমি আর আয়াজ এক রুমে আর আজিফা ইফাজ অন্য রুমে। আমাদের রুমটা বুকিং দেওয়া হয়েছে তার পাশেই বিশাল একটা করিডোর। করিডোর থেকে সমুদ্রটা যেনো সুস্পষ্ট। আমার খুশি আর দেখে কে? খুশিতে আয়াজ ভাইয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
-আয়াজ ভাইয়া দেখ দেখ কতোবড় বিচ।
-আবার ভাইয়া?
-এই না না সরি সরি। ভুলে বলে ফেলছি।
-মনে থাকে যেনো
-কত্তো সুন্দর। চলো চলো সমুদ্র যাবো।
-নাহ এখন না। আগে ফ্রেস হো রেস্ট কর দেন সমুদ্র যাওয়া হবে তার আগে।
-মনটাই যেনো খারাপ হয়ে গেলো।
-মুখটাকে বানিয়ে কোনো লাভ নেই। যা বলেছি তার নড়চড় হলে, হাতটা উঠিয়ে দেখালো যে চর পরবে।
-আমি আর কথা না বাড়িয়ে ঢুকে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে বের হলাম। আমি বের হতেই আয়াজ টাওয়েল নিয়ে বাথরমে ঢুকলো। মনে হয় সাওয়ার নিবে।

আমি বিছানায় সটান হয়ে শুয়ে চোখ দুটো অফ করে আছি। আয়াজ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আঁখি বিছানায় এলোমেলো হয়ে শুয়ে আছে।
চলবে

#তুই_যে_আমারই
#আঁখি আজমীর নুরা
part 29
কিরে এভাবে শুয়ে আছিস যে?
আয়াজ ভাইয়ার গলার আওয়াজ শুনতেই চোখটা খুলে দেখলাম
কোমড়ে টাওয়াল জড়ানো। চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। অসম্ভব কিউট লাগছে। লোমশ ভরা বুকটা পানিতে ভিজার ফলে বুকের সাথে লেপটে আছে। আমি যেন আরেক দফা ক্রাশ খেলাম। এই ছেলেটা এতো সুন্দর কেন? একটু কম সুন্দর হলে কি হতো। যতবার দেখি ততবার প্রেমে পরি। আমি হা করে মুগ্ধ নয়নে আয়াজের বুকের দিকে চেয়ে আছি। আমাকে অমন করে তাকিয়ে দেখতে দেখে আয়াজ বলল
-কি হলো অমন করে কি দেখছিস? ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো..
আয়াজের এমন প্রশ্নে আমি হকচকিয়ে গেলাম। তাই কথা কাটানোর জন্য বললাম, কই কিছু নাতো।
-হুম? কিছুতো দেখছিলি!
-আমি এবার আমতা আমতা করতে লাগলাম।
আয়াজ আর কিছু না বলে হোটেলের শেইফকে খাবার অর্ডার করলো। কিছুক্ষণ পরই খাবার আসতেই আয়াজ খাবার রিসিভ করে, আমার সামনে চেঞ্জ করতে যাবে অমনি দিলাম এক চিৎকার।
-আয়াজ কানে হাত দিয়ে তেজি গলায় বলল.. এই মেয়ে তোর সমস্যা কি? এমন চেচাচ্ছিস কেন? কানটাতো একেবার ফাটিয়ে দিলি। ঠাসস করে কয়েকটা দিলে গলার আওয়াজ চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে।
আমি আয়াজের ধমক খেয়ে এবার যেনো কাচুমাচু হয়ে গেলাম। তাই বিড়াল ছানার মতো মাথা নিচু করে চুপটি করে বসে আছি।

আয়াজ আর কিছু না বলে চেঞ্জ করে জামা পরে নিলো। দেন আমার পাশে বসে এক প্লেটে খাবার মেখে আমাকেসহ একসাথে দুজনই খেয়ে নিলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করেই লাগেজের জামাগুলো গুছিয়ে একদিকে রেখে দিলাম। আয়াজ বসে বসে ল্যাবটপে কি যেনো করছে। আমি কি করবো কিছু খুঁজে না পেয়ে ডিভানের এক কোণে বসে আছি।

আয়াজ নিজের কাজ শেষ করে ল্যাবটপটা অফ করে দিয়ে বিছানায় এসে টেবিল ল্যাম্পটা জ্বালাতে জ্বালাতে বলল কিরে বসে আছিস যে? শুয়ে পর..
আমিও আর কিছু না বলে শুয়ে পরলাম। কিছুক্ষণ পর আয়াজও পাশে এসে শুয়ে পরলো। মিনিট কয়েক যেতেই অনুভব করলাম আয়াজ আমার দিকে আসছে। তাই চট করে আয়াজের দিকে ফিরতেই আয়াজ আমাকে টান দিয়ে বুকে নিয়ে নিলো। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো..
-নো মোর ওয়ার্ড। চুপচাপ ঘুমো। আমিও আর কিছু না বলে ঘুমানোর জন্য চোখ দুটো অফ করে নিলাম।

সকালে,
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আয়াজ ভাইয়া আজিফা আপু ইফাজ ভাইয়া সবাই একসাথে নাস্তা করে নিলাম। তারপর সবাই মিলে চলে গেলাম বিচে। আমিতো সমুদ্র দেখেই খুশিতে লাফিয়ে উঠি। আমাকে আর পাই কে? একদম দৌড়ে নেমে গেলাম পানিতে।
–আরে আরে দাঁড়া আস্তেধীরে।
কে শুনে কার কথা। পানির ঢেউয়ের সাথে আমিও তাল মিলিয়ে সাঁতরাতে লাগলাম। আয়াজ ও নেমে পরলো। যখন সমুদ্র থেকে ঢেউ আসে তখনই আমি আয়াজকে জড়িয়ে ধরে ঢেউয়ের উপর লাফ দিতে যায়। আর ঢেই আমাদের তার বুকের ভাসিয়ে নেই। এভাবে কই ঘন্টা পার হয়ে যায় জানিনা।

একসময় আয়াজ বলে উঠে অনেক হয়েছে। আর না। উঠ এবার। কিন্তু আমার মনে হয় নেমেছি যে ১০মিনিট ও হয়নি। আসলে কখন যে সময়টা পার হয়ে যায় নিজেও বুঝতে পারিনা। কিন্তু আমার একটাই কথা আমি উটবো না। যা বলার বলুক গে। হুম! আমি আরো কিছুক্ষণ থাকবো। তাই বললাম।

-নাহ আমি উঠবো না।
আয়াজ চোখ লাল করে থাকালো আমার দিকে। আমি ওদিকে পাত্তা না দিয়ে আয়াজ থেকে কিছুটা দূরে সরে গেলাম।
আয়াজ আবারো বলল..
–আঁখি ভালোই ভালোই উঠ। নয়তো!
-নয়তো কি?
-কান ধরে উঠাবো।
–এহহ আসছে! কান ধরে উঠাবো। শালা তুই কোন দেশের হনুমান যে তুই কান ধরে উঠাবি আর আমি উঠবো [মনে মনে] উমম নাহ আমি আরো সাঁতার কাটবো।
-এবার আয়াজ আমার দিকে তেড়ে আসতেই আমি পানির মধ্যে দৌড়াতে লাগলাম। আর আয়াজ আমার পিছে আমাকে ধরার ট্রাই করছে। শেষ পর্যন্ত জয়টা আয়াজেরই হলো। যতই হোক পুরুষ মানুষের সাথে অন্তত পেরে উঠা পসিবল না। আয়াজ আমাকে ধরেই কোলে উঠিয়ে ফেললো। আর বলল
-বড্ড সাহসী হয়ে গেছিস? ভয় করেনা আমাকে? পুচকি একটা মেয়ে এখনই এতো অবাধ্য? কিছুদিন পর যখন ডাকঢোল পিটিয়ে বউ বানাবো তখন কি করবি?
-তো? আমি কি বলেছি নাকি আমাকে বিয়ে করেন? আমিতো পুচকি.. তো এই পুচকিকে কেন বিয়ে করছেন? একটা এডাল্ট মেয়ে ডেকে বিয়ে করে নেন। মানা করেছি নাকি।
-এডাল্ট মেয়ে বিয়ে করলে তুই খুশি হবি নাকি?
-মেরে ফেলবো একদম আপনাকে? আপনি শুধুই আমার বর। অন্য কোনো মেয়েকে বিয়ে করেছেনতো একদম মেরে ভুত বানিয়ে দেবো।
-তাই। তাহলে আমি ভুত হয়ে প্রতি রাতে তোকে ভয় দেখাবো।
-নো প্রবলেম। ভুত হোক রাক্ষস হোক আমারইতো বর। হিহিহিহি…
-পাগলী… বলেই নাকের সাথে নাক ঘষে দিলো।
-এটা আবার কি?
-আদর
-কেমন আদর।
-তোর এতো বুঝতে হবে না।

কথা বলতে বলতে কখন যে রিসোর্টে ফিরে এসেছি টেরই পাইনি।
হোটেলে ঢুকেই আগে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম। আর চুলে শ্যাম্পু লাগাতে লাগলাম। কারণ সমুদ্রের লবণ পানিতে চুলগুলো লাসার মতো হয়ে আছে। হটাৎ শ্যাম্পুর ফেনা চোখে পরার কারণে চোখদুটো ভিষণ জ্বলছে। যার জন্য কিছুই দেখছিনা। আআআআ করে লাফাতে লাগলাম যেকারণে গায়ের থেকে টাওয়ালটা পরে যায়। সারা গায়ে কিছুই থাকেনা যাকে একেবারে বলতে গেলে বলে বিবস্ত্র। ভিষণ জোরে জোরে চেচাতে লাগলাম কজ আমি পানির ট্যাব খুঁজে পাচ্ছি না। আয়াজ আমার এমন চেচানোতে ভিষণ ভয় পেয়ে যায়। তাই দরজার কাছে এসে বারি দিয়ে বলতে লাগে কি হয়েছে। আমি শুধুই চেচিয়ে যাচ্ছি। নিজের গলার আওয়াজে নিজেই অন্যের কোনো আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি না। এবার আয়াজ জোরে জোরে ধাক্কা আর লাথি মেরে দরজাটা খুলে ফেলে।

ভিতরে ঢুকেই আমাকে দেখে কিছুটা শক খেলেও পরক্ষণেই যেনো বিষয়টা তার জন্য স্বাভাবিক কিছু হয়ে। আর আমাকে এমন চোখ ধরে লাফানো দেখে বুঝে যায় যে চোখে ফেনা পরার কারণে জ্বালা করছে। তাই চট করে পানি নিয়ে আঁখিকে মুখ ধুয়ে দেয়। আঁখির চোখে জ্বালা কমতেই সামনে তাকিয়ে দেখে আয়াজ। তাই মুচকি হেসে একটা কৃতজ্ঞতার হাসি দিলো। কিন্তু নিজের দিকে চোখ পরতেই আআআআআআআআআআআআআআআআআ…
আয়াজ যেনো আগে থেকেই জানতো এমন কিছু একটা হবে তাই আগেবাগেই কানে হাত চেপে ধরে ছিলো। আঁখির চিৎকার থামতেই আয়াজ নিচে থেকে টাওয়েলটা নিয়ে আঁখিকে আলতো করে জড়িয়ে দিলো।

আর আঁখি সেতো লজ্জায় রীতিমতো কাঁপছে। মুখ দিয়ে কোনো কথায় বের হচ্ছনা। মনে হচ্ছে জীবনের শ্রেষ্ঠ লজ্জা আজকে পেয়েছে। পারছেনা শুধু মাটি ফাঁক করে ঢুকে যেতে। আর দাঁড়াতে পারছিনা। মাথাটা ঘুরে পরে যেতে নিতেই আয়াজ শক্ত করে জড়িয়ে ফেলে নিজের সাথে। ইতিহাসে হয়তো এই প্রথম আমিই কোনো মেয়ে হবো যে কিনা লজ্জার চোটে বেহুঁশ হয়ে গিয়েছে।

আয়াজ এবার পরলো মহা বিপদে। একেতো এই মেয়ের সারা শরীর সাবানে মাখা আর অন্যদিকে বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে। তাই আর না পেরে ওই অবস্থাতেই কোনোরকম গোসল করিয়ে রুমে এসে ড্রেস পরিয়ে দেয়।

আর মনে মনে ভাবছে এইটুকুতেই বেহুঁশ। যদি জানতো আমি যে বাসায় আঁখির রুমে সিসিটিভি ক্যামেরা ফিট করে রেখেছি সর্বদা নজরে রাখার জন্য আর আমি ডেইলি ড্রেস চেঞ্জ করা থেকে শুরু করে সকল পারসোনাল কাজ দেখি না জানি শুনলেই না একেবারে কোমায় চলে যায়। আল্লাহ বাসর ঘরে কি হবে কে জানে? ভেবেছিলাম আজকে এই ঘটনার পর বলবো। কিন্তু নাহ বলা যাবেনা। বাপরে বাপ এই মেয়ের বিশ্বাস নাই। আর এই জন্যই ওয়াশরুমে আঁখিকে এমন অবস্থায় দেখেও কোনো অবাক হয়নি। যেনো এটা তার জন্য নরমাল একটা ব্যাপার। আয়াজ ভাবছে আচ্ছা এই মেয়ে যদি এসব জানে তখন কি হবে।

আরে দূর যাই হবার হবে। কোনো ব্যাপার না। আমারইতো বউ। পরপুরুষ তো আরনা। নিজের বউকে নিজে দেখেছি সমস্যা কোথায়? পর নারীকে তো আর দেখিনি। অধিকার আছে আমার। শরীয়ত মোতাবেক তিনবার কবুল বলে বিয়ে করছি। হুমম? আমার হক আমি দেখেছি কার কি। ভেবেই নিজেকে নিয়ে নিজে গর্ববোধ করছে।
চলবে