#Mr_সাইকো_লাভার
#লাবিবা_ওয়াহিদ
“বোনাস পার্ট”
.
.
আনিলা- সে যাই হোক এখন বল এতো আনন্দের কারণ কি।
নিশা- দুইটা আছে কোনটা দিয়ে শুরু করবো বল।
আনিলা- তোর যেটা ভালো মনে হয় সেটাই বল।
নিশা- স্বপ্নে দেখসি ওই ফ্যালফ্যাল থুক্কু ফারান রে কেলাইসি ইচ্ছা মতো।
আনিলা- ওয়ায়ায়াট! সিরিয়াসলি?
নিশা-
সি সি সিরিয়াসলি
ই ই ইয়ায়া রাব্বি।
মাগো আমার শান্তি!
আনিলা- উফফফ আবার শুরু করলি?
নিশা- আচ্ছা আচ্ছা বলতাসি, ভোরেই স্বপ্ন দেখছি তাইতো খুশিতে নাচতাসি শুনেছি ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয়। যদি সত্যি সত্যিই ওই বদমাশ টারে কেলানি দিতে পারি আমি কালা চাশমা + লুঙ্গি ডান্স দিবো।
আনিলা- সেগুড়ে বালি ওই আশা জম্মের মতো ছাইড়া দে আই নো তোর এতো সাহস নাই।
নিশা- ওই ব্যাটারে যদি চড় দিতে পারি তাহলে এই ব্যাটারে কেলানি দিতে পারবো ভাবলি কি করে?
আনিলা- আচ্ছা আচ্ছা এখন দ্বিতীয় টার কথা বল।
নিশা- ২য় টা হলো আমার সেই সাইকো ক্রাশের একটা সূত্র পেয়েছি KO R(Rapist) Killer!
আনিলা- তুই জানলি কেমনে?
নিশা- ওই আজ সকালে ফোনে নিউজে দেখলাম আর কি।
আনিলা- তবে দেখিস ওই লোকটা ১০০% বুইড়া কাক্কুই হবে তাই ক্রাশ খেতে যেয়ে বাশ নিস না।
মুহূর্তেই নিশা মুখ গোমড়া করে ফেলে এবং বলে,”অলয়েজ নেগেটিভ বলিস কেন?”
আনিলা- আরে নেগেটিভের কি আছে হতেও তো পারে।
নিশা- আরেকবার আমার ক্রাশ রে নিয়া নেগেটিভলি কিছুই বইলা দেখিস দেন দেখ তোরে কি করি।
আনিলা- ক্রাশরে পূজা কর যাইয়া।😒
নিশা ভেংচি কেটে ফ্রিজ থেকে পুডিং টা নিলো। তারপর পিস পিস করে বাচ্চা মেয়েটার জন্য নিলো। আর এক পিস আনিলা কে দিলো টেস্ট করানোর জন্য। আনিলা এক চামচ খেতেই চোখ কপালে তুলে ফেলে। আনিলার এমন রিয়েকশন দেখে তো নিশার হাত পা অলরেডি কাপাকাপি লাগিয়ে দিয়েছে। আনিলা কিছুক্ষণ পর হেসে বলে,”ইয়ায়ায়ায়ার সেইরকম টেস্ট হইসে নিয়ে যা পছন্দ হবে।”
নিশা- সত্যিইইই?
আনিলা- বিশ্বাস না হলে নিজে খেয়ে দেখ।
নিশা তাই করলো নিজে খেয়েই বিশ্বাস করলো। নিশার এমন কাজে আনিলা ভেংচি কাটে। তারপর দুই বান্ধুবি মিলে সেই বাচ্চা মেয়েটার বাসার সামনে আসে। তারপর কাপা কাপা হাতে কলিং বিল টিপ দেয়। কিছু সেকেন্ডের মধ্যেই একজন মহিলা দরজা খুলে আর আনিলা নিশার দিকে ভ্রু কুচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে তারপর বলে,”আপনাদের তো চিনতে পারিনি কি চান আপনারা?”
নিশা- আসলে আন্টি আমরা গত সপ্তাহেই আপনাদের পাশের ফ্লাটে উঠেছি। আর সেদিন আপনাদের বাসার সেই বাচ্চা মেয়েটাকে দেখলাম তাই জন্যই এখানে আসা।
মহিলা- ওহ আচ্ছা।
তারপর মহিলাটি বলে তাদের ভেতরে আসতে কারণ নিশা আর আনিলাকে তার ভালো লেগেছে সাথে তাদের ব্যবহার আচরণও। মহিলাটি নিশা আর আনিলাকে সোফায় বসতে দিয়ে নিজেও বসে।
মহিলা- এখন বলো নাম কি তোমাদের?
নিশা- আমি নিশা রহমান সবাই নিশু বলে ডাকে।
আনিলা- আমি আনিলা ইসলাম।
মহিলা- বাহ খুব সুন্দর নাম তো তোমাদের আমি মিহানি হালদার। আর যেই বাচ্চা মেয়েটার কথা বললে সে আমার একমাত্র মেয়ে আফিয়া।
নিশা- ওহ।
মিহানি- দাড়াও আমি আফিয়াকে ডেকে দিচ্ছি।
বলেই আফিয়াকে ডেকে আনে। আফিয়া নিশা আর নিলাকে দেখে ভ্রু কুচকে তাকায় এবং বলে,”মাম্মা এই আপু গুলো এখানে কি করছে?”
মিহানি- ওনারা তোমার আপু হয় সোনা যাও হাই বলো আর দেখো তোমার জন্য গিফট।
আফিয়া- গিইইইফট??? কোথায় আপি আমার জন্য তুমি সত্যি সত্যি গিফট এনেছো?
নিশা- হুম এই নাও এটা খেয়ে দেখো।(বলেই হাতে থাকা বক্সটা এগিয়ে দেয়।)
আফিয়া বক্সটা নিয়ে খুলে খুশি হয়ে বলে,”মাম্মা দেখো আপু টা আমার ফেভারিট পুডিং নিয়ে এসেছে। আমি চামচ নিয়ে আসি।”
বলেই দৌড়ে চলে গেলো কিচেনে। মিহানি হেসে বলে,”আসলে আমার মেয়েটা অচেনা দের সাথে মিশে না আমার কথা ছাড়া। দেখো না আমি বললাম আর সাথে সাথে তোমাদের সাথে মিশে গেলো।”
নিশা- হুম বুঝেছি। আচ্ছা আমরা আবার বিকালে আসবো এখন ভার্সিটি যেতে হবে নইলে লেট হয়ে যাবে।
মিহানি- ও আচ্ছা ঠিক আছে সাবধানে যেও।
আনিলা- জি।
বলেই নিশা আর আনিলা বেরিয়ে গেলো ভার্সিটির উদ্দেশ্যে। ক্লাসের কাছাকাছি যেতেই খেয়াল করে সেখানে মেয়েরা অনেক বেশি জমা হয়ে আছে। তাদের ঠেলে ঠুলে অনেক কষ্টে ভেতরে ঢুকে এবং ভেতরে যা দেখে তা দেখে তো চোখ কপালে।
নিশা- আপনি?
ফারান- হুম আমি কেন কাকে আশা করছিলে?
নিশাকে ফারান চিনে এটা ভেবে তো সব মেয়ে হা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
নিশা- আপনি এখানে কি করছেন?
ফারান- ওই প্রিন্সিপাল ম্যাম আমায় বলে যেনো তোমায় তার কেবিনে যেতে বলি আমিও তার কথা মতো ক্লাসে আসি তোমায় ডাকতে।
ফারানের কথায় আরও অবাক হয়ে যায় সবাই।
নিশা- ওহ আচ্ছা থ্যাংকস আমার উপকার করে আমায় উদ্ধার করসেন এখন আপনি আসতে পারেন!!!
ফারান কিছু না বলে মুচকি হেসে সাইড কাটিয়ে চলে যায় ক্লাস থেকে। এমন সময়ই কানাকানি শুরু।”এই মেয়েটা কে রে যার জন্য ফেমাস ক্রাশ বয় আমাদের ক্লাসে আসে?মেয়েটাকে তো একদম ছ্যাসড়া ছ্যাসড়া লাগছে এর সাথে কেমনে কথা বলে ফারান? তার কি বিবেকে বাধে না? কি আছে এই মেয়ের মাঝে যার জন্য এই মেয়ের সাথেই কথা বললো আর কারো দিকে চোখ ফিরেও তাকালো না।” এমন অনেক ধরণের কথাই বলছে সবাই। নিশার এসব সহ্য হয় না তাই বাধ্য হয়ে বেরিয়ে চলে গেলো প্রিন্সিপালের কাছে। সেখানে গিয়ে ম্যামকে বলে,”ম্যাম আমায় কি ওই ফর্মটার জন্য ডেকেছেন?”
– কোথায় না তো। হ্যাঁ তোমায় আমি ডাকতাম কিন্তু ফারান আগে থেকেই ফর্মটা নিয়ে গেছে।
নিশা- ওয়ায়ায়ায়াট!!! ম্যাম আপনি ওনাকে কেন দিয়েছেন???
– এই বিষয়ে ফারান একটু এক্সপার্ট বেশি তাই তাকে কিছু কাজ দেওয়া হয়। তুমি এক কাজ করো ফারানের কাছ থেকেই সেটা কালেক্ট করে নাও।
বলেই ম্যাম নিজের কাজে মন দিলো। নিশার মাথায় তো আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। এই ফর্ম ১ মাসের মধ্যে কমপ্লিট করে জমা দিতে না পারলে নিশার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে সেখানে ফারানের কাছে সেই ফর্ম! এর মানে কপালে বড়সড় দুঃখ আছে।
এসব ভাবতেই ভাবতেই কেবিন থেকে বেরিয়ে আনমনে হাটতে থাকে এমন সময়ই কে যেনো নিশা কপালে একটা কাগজ চেপে চলে যায়। কাগজটা কপাল থেকে খুলে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। তাই কাগজ টা রেগে যেই ছিড়তে নিবে ওমনি দেখে কাগজটায় কিছু লেখা দেখতে পেলো। তাই না ছিড়ে লেখা গুলো পড়তে শুরু করে।”নিজের ফর্ম বাচাতে হলে এখনই পার্কিং সাইডে আসো নইলে তোমার ফর্ম মনে করো শেষ!!”
এইটা দেখে নিশাকে তো সেইরকম ভয় ঝেকে ধরে। তাই দৌড়ে পার্কিং সাইডে গেলো। তারপর সেখানেও একটা চিরকুট পেলো। সেটায় লেখা,”ডানদিক থেকে বামদিকের বড় দরজায় এসে নক করো।”
ফারানের কথা অনুযায়ী নিশা তাই করে। নক করতেই ভেতর থেকে ফারান বলে,”কাম ইন।”
নিশা ভেতরে গিয়ে রাগী কন্ঠে বলে,”প্রব্লেম কি আপনার আ….
নিশাকে আর বলতে না দিয়ে ফারান বলে,”আমাদের মুখের উপর কথা বললে তোমার ফর্ম….(হাতে দেখিয়ে)
নিশা- না না না সরি আর হবে না।(শালা একবার হাতে ফর্ম টা পাই তারপর দেখ তোর কি হাল করি। আমায় দিয়ে খাটানো তাইনা?)
,
,
,
,
,
চলবে!!!