#Mr_সাইকো_লাভার
#লাবিবা_ওয়াহিদ
“পার্ট ০২”
.
.
.
রাইসা দৌড়ে খালামনির কাছে গেলো এবং তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,”আম্মু দেখো আমার নিশু আপ্পু আমার জন্য কত্তোগুলা চকলেট দিয়েছে?”
খালামনি- হুম দেখলাম আর নিশু এতোগুলো চকলেট কি প্রয়োজন ছিলো?তুমি জানো না এই মেয়ে একবার চকলেট হাতে পেলে সব একসাথে সাবাড় করে ছাড়ে?
আমি- নাহ খালামনি আমার রাইসা বুনু প্রমিস করেছে যে এবার কম করে খাবে তাইনা রাইসু?
রাইসা- হুউউউউম আপু একদম ঠিক বলেছো।
খালামনি- আচ্ছা যদি প্রমিজ ভাঙ্গো তাহলে কিন্তু সব চকলেট আমি নিয়ে নিবো।
রাইসা- নায়ায়ায়ায়ায়া আমি কথা শুনবো সব খাবো না।
আমি- আচ্ছা এখন এগুলা তোমার মাম্মার কাছে জমা দিয়ে যা পড়তে বসো।
রাইসা- আচ্ছা আপু।
বলেই চকলেটের বক্স টা খালামনিকে দিয়ে রাইসা নিজের রুমে চলে গেলো। রাইসা চলে যেতেই খালামনি বললো,”তা ফ্লাট দেখলে?”
আমি- হ্যাঁ খালামনি একটা দেখেছি আর ভালোই লেগেছে। তাদের জানিয়েছি কাল গিয়ে সরাসরি দেখে আসবো।
খালামনি- ওহ আচ্ছা। তোরা কিন্তু আমার বাসাতে থেকেই পড়তে পারতি শুধু শুধু আলাদা থাকবি।
আমি- না খালামনি তোমাদের আর সমস্যায় ফেলতে চাইনা অনেক তো করছো আমাদের জন্য। আর এখানে আমি আনিলা থাকলে রাইসার পড়াশোনায়ও সমস্যা হতে পারে। আর তুমি চিন্তা করিও না তো প্রতিদিনই তো পারলে দেখা করে যাবো।
খালামনি- তোকে হাজার বুঝিয়েও কাজ হবে বেশ বুঝেছি যা ইচ্ছা কর তোরা।
বলেই অভিমান করে খালামনি চলে গেলো। আমি হাসলাম খালামনির এমন বিহেভে। তাই খালামনির রাগ ভাঙ্গাতে চুপি চুপি খালামনির জন্য কেনা এক ডজন চুড়ি আরেকটা নেকলেস তার রুমের কাবার্ডে রেখে আসলাম। তারপর আমি আর আনিলা মিলে রুমে চলে আসি ফ্রেশ হতে। রাত বাজে এখন ৯:২০ মিনিট। নিশু আর আনিলা শুয়ে শুয়ে ভার্সিটিতে এডমিশনের পরের ধাপ গুলো দেখছে। ১০টা বাজতেই দুজনের ডাক পড়ে। নিশু আর আনিলা দুজনই নিচে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে নেয়। নিশু খাওয়ার সময় খেয়াল করে যে তার খালামনি অনেক হাসিখুশি। তার মানে বোঝা যায় সে গিফট গুলো দেখেছে আর তাই তার মুখে বিশ্বজয়ের হাসি। নিশু কিছু না বলে মুচকি হাসে। তারপর যে যার রুমে চলে যায়।
রাতে,,
আনিলা নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছে আর নিশু রাগে যেনো ফেটে যাচ্ছে এমন অবস্থা।
নিশু- বজ্জাত পোলা তোর সেই এক ঘটনা বারবার চোখে ভাসছে আর আমার ঘুম হারাম করে ছাড়সে। চোখ বুঝলেই তোর লুতুপুতু ভেসে আসে। আর কোনো জায়গা পাইলি না শালা। তোরে আবার যদি পাই না রে আমার এই বালিশের কসম তোরে করলার সাথে জুনিয়র হহরলিক্স জুস খাওয়াবো সাদা বান্দার। এইসব পাগল ছাগল কোন থেকে উঠে আসে আল্লাহ? এদের লজ্জা শরম কি সব বুড়িগঙ্গায় বিসর্জন দিসে? কি অবস্থা পাবলিক প্লেসে…..আল্লাহ মাফ করো।
ভাবতে ভাবতেই নিশু ঘুমিয়ে পড়ে।
এইদিকে,,
-ভাই মাফ চাই দোয়াও চাই আমারে ছাড়েন আমি আর এমন করুম না।
লোকটা- আমি তো তোকে বলিনি যে তুই কিছু করেছিস তার মানে নিশ্চয়ই বড় কিছু করেছিস।
লোকটার কথায় ছেলেটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় আর ভাবতে লাগে এখন কি করবে। এমন সময়ই লোকটা হেসে বলে,”বল কি করেছিস নইলে…..”
বলেই লোকটার হাতে থাকা ছুড়িটা দিয়ে যেই আঙ্গুলে লাগাবে ওমনি ছেলে টা বলে,”বলছি বলছি আমায় কিছু কইরেরন না প্লিজ”(হাত জোরে করে)
– আচ্ছা তো এখন বল কি করেছিস।
– আসলে আমি একটা মেয়ে কে উঠিয়ে নিয়ে ধর্ষণ করেছিলাম।
ছেলেটার বলতে দেরি কিন্তু লোকটার ছেলেটার মাথা কাটতে দেরি হলো না। পাশে থাকা বড় দা দিয়ে গলা টা কেটে দেয়। আর লোকটা রেগে ফুসতে ফুসতে বলে,”আজ তোদের মতো কুলাঙ্কারের জন্য মেয়েরা সুরক্ষিত না এমন কি নিজের পরিবারের কাছেও না। তোদের লালসার জন্য একটা মেয়ের জীবন কেড়ে নিতে পিছপা হোস না তাইতো তোদের খুঁজে খুঁজে বের করে ভয়ানক মৃত্যু দিচ্ছি। ধর্ষিতা মেয়েরা সমাজের চোখে কলঙ্ক হবে আর তোরা বুক ফুলিয়ে ঘুরবি সেটা আমি সহ্য করবো না। এসে গেছে তোদের জম।”
বলেই সেই ছেলেটাকে ইচ্ছা মতো ক্ষত বিক্ষত করতে লাগে। তারপর মনের ঝাল মিটিয়ে লোকটা নিজের বাসায় চলে যায়। যেখানে খুন করে সেখানে এই পর্যন্ত ১৭টা খুন হয়ে গেছে।
সকালে,,
নিশু এলার্মের শব্দে ঘুম থেকে উঠে। তারপর ওয়াশরুম গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে। ফ্রেশ হয়ে এসেই চুপচাপ খাটের উপর গিয়ে বসে আর আনিলার ঘুমন্ত চেহারা আর আনমনে কিছু একটা ভাবছে। নিশুর মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি আসে। নিশু মুচকি হেসে টেবিলের দিকে যায় আবার আনিলার লাছে আসে।(মাঝে কি হচ্ছ্ব তা বলা যাবে না সিক্রেট)
নিশুর কাজ শেষ হতেই আনিলা কে জোরে জোরে ডাকতে লাগে আর বলে,”ওই আনিলা উঠ উঠ দেখ সানি ছোপড়া তোর জন্য বাইরে অপেক্ষা করছে তাড়াতাড়ি গিয়ে দেখ।”
নিশুর কথায় আনিলা লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে কোনোদিকে না তাকিয়ে বাইরে চলে যায় সানি ছোপড়া কে দেখতে। মেইন দরজার বাইরে গিয়ে দেখে সানি ছোপড়ার নাম ঠিকানাও নেই। আনিলা বেকুবের মতো এদিক ওদিক তাকাচ্ছে আর ভাবছে সানি ছোপড়া তো ইন্ডিয়ার আর ওই ইন্ডিয়ান ঢাকার বাংলাদেশে কি করবে? এর মানে নিশু তাকে বোকা বানালো? ভাবতে ভাবতে আশেপাশের মানুষের দিকে নজর গেলো আনিলার। তাকিয়ে দেখে সবাই আনিলার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হেসেই যাচ্ছে। যেই পথ দিয়ে যাচ্ছে সেই আনিলাকে দেখে হেহে করে হাসছে।
আনিলা- কি হলো সবাই আমার দিকে তাকিয়ে এমন হাসছে কেন?
আরও মানুষ জড়ো হয়ে হেহে করে হাসতে শুরু করে। আর সহ্য করতে না পেরে আনিলা চিল্লিয়ে বলে,”কি হইসে কি? আমায় কি চিড়িয়াখানার প্রাণী পাইসেন নাকি যে এভাবে পাবনার পাগলের মতো হাসছেন?”
সবাই সেই হাসতেই থাকলো। হঠাৎ পেছন থেকে নিশুর চিল্লিয়ে হাসার শব্দ পেলো। তা শুনে পেছন ফিরে দেখে নিশু পেটে এক হাত আর মুখে এক হাত দিয়ে মরার মতো হাসছে। আনিলা আরও অবাক হয় আর ১০০% নিশ্চিত হয় যে নিশুই কিছু না কিছু কান্ড ঘটিয়েছে।রাইসা বাইরে এসে আনিলাকে দেখে সেও হেহে করে হাসতে শুরু করে দেয়। তারপর হঠাৎ এক গাড়ির কাচে নিজের মুখ দেখে এক চিৎকার দিয়ে রুমে দৌড় দিলো। এবার তো নিশু আরও জোরে জোরে হাসতে শুরু করে কারণ নিশু আনিলার মুখে মার্কার পেন দিয়ে এটা সেটা এঁকেছে দাড়ি গোফও দিয়েছে সাথে আরও কিছু। প্রায় ১০মিনিট হেসে অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে নিশুও উপরে চলে আসে। এসে দেখে আনিলা ওয়াশরুমে ঘষে ঘষে কালি উঠানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছে। নিশু মুচকি হেসে টেবিলের ড্রয়ার থেকে কালি উঠানোর মেডিসিন টা আনিলাকে দিলো। আনিলা তা দেখে নিশুর থেকে কেড়ে নিয়ে কোনোরকম কথা না বলে মুখ ধোয়ায় মনোযোগী হলো। নিশুর তো এখনো প্রচুর হাসি পাচ্ছে কিন্তু এখন হাসলে নিশুর মহাবিপদ সেটা নিশু বেশ ভালো ভাবে জানে। আনিলা গাল ফুলিয়ে রুমে আসে এবং তোয়াল দিয়ে মুখ মুছতে লাগে। আনিলার মুখ মোছা শেষ হতেই যখন তোয়াল রাখে তখন নিশু আনিলার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে বেশি ঘষাঘষির কারণে পুরো মুখ লাল হয়ে আছে। তা দেখে নিশু আর হাসি থামাতে পারেনা ফিক করে হেসে দিলো।
নিশুর হাসি দেখে আনিলা তো রেগে বোম। তাই বিছানায় থাকা বালিশ আর কুসন গুলো ছুড়ে মারতে লাগে নিশু কে।
আনিলা- শয়তান ছেমড়ি সকাল বেলাই আমার মান ইজ্জত পুরা শেষ করে দিলি আর এখন জেবরার মতো হাসোস। তোরে তো আজ আমি খুজ করি নাই সেটা তোর ১৪পুরুষের ভাগ্য বজ্জাত মাইয়া। তোর উপ্রে ঠাডা পড়বে ঠাডা।(রেগে চিল্লিয়ে)
নিশু- আমার ১৪পুরুষের মধ্যে তুই একলাই মহিলা নাকি? আর শকুনের দোয়ায় গউ মরে না সোনা তাই শুধু শুধু বদদোয়া দিয়ে লাভ নাই।
আনিলা- তবে রে আজ তোরে ড্রেনে না চুবাইসি…
,
,
,
,
,
চলবে!!