#Mr_সাইকো_লাভার
#লাবিবা_ওয়াহিদ
“পার্ট ০৩
.
.
.
বলেই আনিলা নিশুর পিছে ধাওয়া করে আর নিশুও দৌড় দেয়। দৌড়ে দুজনেই ড্রয়িং রুমে চলে আসে এমন সময়ই নিশুর খালামনি আয়েশা বলে,”এই চুপ চুপ চুপ নিউজ টা দেখতে দে।”
খালামনির কথা শুনতেই নিশু আর আনিলাও টিভির দিকে তাকায়। টিভিতে বলে,
– আজ আরিফা নামক সেই মেয়ের ধর্ষক কারীর লাশ পুলিশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করেছে। তার মাথা টা পাওয়া যায়নি শুধু দেহটা পেয়েছে পুলিশ। আর শরীরের ক্ষত বিক্ষত গুলো দেখে পুলিশ জানিয়েছে নদীর মাছ তার দেহের এমন অবস্থা করেছে। এই পর্যন্ত ১৮টা লাশ একইভাবে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কে মারছে এই ধর্ষকদের তা এখন পর্যন্ত কেউ জানতে পারেনি।
এই নিউজ শুনে সবাই ভয় এবং অবাক হলেও নিশু মনে মনে অনেক খুশি হয়েছে কারণ ধর্ষক কারীর বুক ফুলিয়ে ঘুরাঘুরি নিশুর একদম সহ্য হয়না। তাদের জন্যই মেয়েদের গায়ে দাগ লাগে। নিশুর তো মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় এদের খুন করতে আর আজ কেউ একজন তার এই ইচ্ছা টা পূরণ করে দিলো। যে করেছে তাকে মন থেকে এত্তো এত্তো ধন্যবাদ জানালো।
খালামনি- মাগো মা দেখেছিস কতো ভয়ংকর?
আনিলা- হ্যাঁ খালামনি তাই তো দেখছি এ তো পুরোই সাইকো। মাথায় হয়তো গন্ডগোল আছে।
নিশু- ওই চুপ কর। যে করেছে সে এখন থেকে আমার ক্রাশ সো ওরে নিয়ে কোনোরকম নেগেটিভ কিছু বললে তোকে আমি ময়লার ডাস্টবিনে বন্দি করে রাখবো।
আনিলা- গরুর লেজ করবি তুই।
রাইসা- ওহ স্টপ!! তোমরা সবসময় এতো ঝগড়া করো কেন বাচ্চাদের মতো বলোতো?
নিশু- ওরে আমার বুড়িটা আসছে রে…!
রাইসা- মোটেও আমি বুড়ি না। আমি তোমাদের চেয়েও ছোট হয়ে চুপ থাকি কারো সাথে ঝগড়া করিনা বুঝলে?
আনিলা- হুম হুম বুঝেছি বড় আপু এখন চলেন খেয়ে নিবো।
খালামনি- হুম সেই ভালো তোরা সকাল সকাল যা শুরু করেছিস বাপ্রে। তোদের জ্বালায় ঠিকমতো বসাই যায়না।
খালামনির কথায় নিশু আর আনিলা দুজনই ভেংচি কাটে। তারপর সবাই মিলে খাওয়া সেরে নেয়। বিকালে আনিলা আর নিশু মিলে চলে যায় ফ্লাট দেখতে আর বুকিং সহ বিভিন্ন ফর্মালিটি শেষ করতে। ফ্লাট টা ৮ম ফ্লোরে।
এইদিকে,,
Tumhaari tasveer ke sahaare
Mausam kai gujaare
Mausami na samjho
Par ishq ko humaare
Gar ishq se hai milaPhir dard se kya gilaIss dard mein zindagi khush-haal haiYe dooriya filhaal hai
Khairiyat puchhoKabhi to kaifiyat puchhoTumhaare bin deewane kaKya haal hai
Dil mera dekhoNa meri haisiyat puchhoTere bin ek din jaiseSau saal hai
ফারান গান শেষ করতেই রেডিওর মেয়েটা বলে, “ধন্যবাদ মিস্টার ফারান চৌধুরি আপনার মাধ্যমেই আজ না হয় এই শো শেষ করছি। তা দর্শকবৃন্দ আজকের মতো এখানেই সমাপ্ত আবার দেখা হবে পরের সপ্তাহে নতুন গেস্ট কে নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং JagoFM 2.07 এর সাথেই থাকবেন ধন্যবাদ।”
মেয়েটার কথা শেষ হতেই ফারান বেরিয়ে আসে। ফারান বেরোতেই আদন,আদ্র আর আফনাদ এসে হাজির।
আদন- কিরে কেমন হলো?
ফারান- একদম বোরিং একটা শো। এদের কে বলে বলতো এইসব শো…..
ফারান কিছু বলতে নিতেই আদ্র ফারানের মুখ চেপে ধরে বএল,”আরে ভাই আস্তে আস্তে এইখানে কিসব বলছিস। এরা মিডিয়াকে হাতের মুঠোয় রাখে তাই আপাতত চুপ থাক।”(ফিসফিসিয়ে)
ফারান নিজের মুখ থেকে আদ্রের হাত সরিয়ে বলে,”রাখ তোর মিডিয়া। এদের ভয় পাই নাকি আমি? অল নো হু এম আই ওকে? এখন চল ভালো লাগছে না।”
আফনাদ- কোথায় যাবি এখন?
ফারান- আগে বেরোই দেন ডিসাইড করবো কোথায় যাওয়া যায়।
আদন- ওকে ডান।
তারপর ৪বন্ধু মিলে বেরিয়ে পড়ে।৪ জন মিলে রিডিও অফিস থেকে বেরিয়ে চলে যায় তাদের নিজস্ব আড্ডাক্লাবে। ৪জনই আজ ঠিক করেছে পিসিতে ভিডিও গেইম খেলবে।এতোক্ষণে তাদের পরিচয় দিয়ে দেই।
(ফারান হলো আপনাদের হিরো যার জন্য আপনারা এতোদিন চিল্লিয়েছেন। টপ বিজনেসম্যান এর একমাত্র আদরের ছেলে ফারান চৌধুরি। দেখতে ইরানি ছেলেদের মতোই। যেই দেখবে সেই যেনো চোখ দিয়ে গিলে খাবে।আপাতত মাস্টার্স কমপ্লিট করছে সাথে একজন ফিউচার সিঙ্গার। আর আদ্র,আফনাদ আর আদন হলো ফারানের কলিজার টুকরা বেস্টফ্রেন্ডস। একমাত্র ছেলে হওয়ায় আদরে বাদর ফারান। নাইট ক্লাব গার্লফ্রেন্ড চেঞ্জড তার জম্মগত অভ্যাস। তবে সেগুলায় তার ইন্টারেস্ট নাই। ফারান ইনিয়ে বিনিয়ে কোনো কথা বলা বা শোনা পছন্দ করে না যা বলবে ডিরেক্টলি কে কি বললো তাতে তার কোনো যায় আসে না। ফারানের অহংকারও হাই লেভেলের যাকে বলে ওভার।)
,,
নিশুর ফ্লাট পছন্দ হতেই নিশু তার বাবাকে কল করে জানিয়ে দেয়। নিশুর বাবা আফরান রহমান নিশুর কথা শুনে আনিলার বাবার সাথে যোগাযোগ করে আজকের মধ্যেই ফ্লাট কেনার যতোরকম ফর্মালিটি আর বিল আছে সব করে দেয়। তারপর নিশুকে ফোন করে জানিয়ে দেয় যেনো ফ্লাট সাজাতে ফার্নিচার শোরুমে গিয়ে যেনো পছন্দমতো সব কিনে নেয়। নিশু আর আনিলা তাতেই সম্মতি জানায়। নিশু আর আনিলা ফ্লাট ছেড়ে চলে যায় ভালো একটা ফার্নিচার শোরুমে। সেখান থেকে নিজেদের পছন্দের ফার্নিচার কিনে নেয়। তারপর সেগুলো বাসায় পৌঁছে দেওয়া ছাড়াও অন্যান্য কাজ সেরে চলে যায় শপিংমলে। সেখানে যে যার মতো জরুরি জিনিসপত্র কিনে খালামনির বাসায় চলে যায়। কালই ফ্লাটে গিয়ে উঠবে দুজন আজ তারা খালামনির বাসাতে থাকবে।
খালামনি- কিরে ফ্লাট কেনা হলো?
নিশু- হ্যাঁ খালামনি সব ডান কালই ফ্লাটে গিয়ে উঠবো।
নিশুর কথায় খালামনির হাসি উড়ে গেলো। সে মুখ গোমড়া করে বসে রইলো কোনো কথা বললো না। নিশু তা দেখে আয়েশা আক্তারের পাশে গিয়ে বসে এবং বলে,”ওহ কাম অন সুন্দুলি মামুনি কেন এমন করছো বলোতো? আমি কি হারিয়ে যাবো নাকি? প্রতিদিন তোমাদের সাথে দেখা করে যাবো। আর তুমি কি চাও রাইসা পড়ায় ফাঁকি দিক? দেখছো না এই ১সপ্তাহে কেমন পড়াশোনা করেনি। এখন যদি পার্মানেন্টলি থাকি তাহলে তো আরও পড়বে না। আর যাই হোক রাইসার কথা টা তো ভাবো।”
আয়েশা আক্তার কিছুই বলেনা। তাই নিশু আরও কিছুক্ষণ বুঝিয়ে তাকে রাজি করায়। তারপর নিশু আর আনিলা মিলে রুমে চলে যায়।
,
,
,
,
ফারান বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে দূরের ল্যাম্পপোস্ট এর আলোয় রাঙানো রোডের দিকে এক মনে তাকিয়ে আছে আর হাতে থাকা সিগারেট টা কিছুক্ষণ পর পর টেনে আকাশের দিকে মুখ দিয়ে ধোয়া উড়াচ্ছে। ফারান সচরাচর স্মোক করে না কিন্তু মাঝে মাঝে টুকটাক খায়। হঠাৎ তার সেদিনের সেই মেয়েটার কথা মনে পড়ে।(হ্যাঁ শপিংমলের সেই ছেলেটা ফারানই ছিলো।) মেয়েটার ওমন রাগী ফেসের কথা মনে পড়তেই একটা মুচকি হাসি দেয়।
▪️
সকালে,,
নিশু ঘুমোচ্ছে এমন সময়ই মনে হলো কেউ তার ডান গালে খুব জোরে চড় মারে। নিশু ধড়ফড়িয়ে উঠে গালে হাত দিয়ে। উঠে দেখে আনিলা দাত কেলিয়ে নিশুর দিকে তাকিয়ে আছে।নিশুর বুঝতে বাকি রইলো না যে চড়টা আনিলাই তাকে মেরেছে। নিশু রেগে বলে,”সকাল সকাল কি বোবা ভূতের কেলানি খাইসোস? এভাবে চড় দিলি কেন ছেমড়ি?”
আনিলা- আরে আমি ইচ্ছা করে দিয়েছি নাকি তোর গালে একটা মশা বসছিলো তাই….
নিশু- তাই তুই সেই মশাকে মারতে আমায় চড় মেরে দিলি?
আনিলা- আরে হ্যা হ্যা তাই।
নিশু- তোর কি আমারে কচি খোকা মনে হয় যে তুই যা বলবি আর আমি তাই বিশ্বাস করে নিবো আমি জানি তুই কালকের শোধ আজকে নিছোস।
আনিলা- কাল তুই আমার সাথে যা করেছিস সেটা এই একটা চড় দিয়ে উশুল সম্ভব না ওকে?
নিশু ভেংচি কেটে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আনিলা প্রায় রেডি। তাই নিশুও কিছু না বলে রেডি হয়ে নিজের লাগেজ নিয়ে একসাথে নিচে নেমে আসলো।
,
,
,
,
,
,
চলবে!!