#Three_Gangsters_Love.
#Sumaiya_Moni.
#Part_14.
খাবার টেবিলে খাবার খেতে বসেছে সবাই। কিছুক্ষণ আগেই রুদ্র,শুভ্র,অভ্র অফিস থেকে এসেছে। রিমি,সিমি,নিধি সারা দিন ইশা,সাব্বির, ফাহিমের সাথে সময় কাঁটিয়েছে । সারা দিন ওদের সাথে আড্ডায় মেতে ছিল। হাসা-হাসি,ফান-মাস্তি তো আছেই। আর এখন ভেজা বেড়ালের মতো মাথা নিচু করে খাবার খাচ্ছে। ফাহিম বাদে সবাই আছে। কিছুক্ষণ পর ফাহিম এসে টেবিলে বসে পড়ল। সাব্বির সবার সাথে কথা বললেও ফাহিমের সাথে কথা বলেনি আজ সারাদিন । ফাহিম খাবার টেবিলে বসে সাব্বিরের উদ্দেশ্যে বলে,
-“ভাই,মোর লগে তুমি কথা কও না ক্যা? মুই তোমারে লরি মানে স্যরি কইছি না। হেরপরও তুমি মোর লগে কথা কও না কিল্লাই?”
সাব্বির চুপ চাপ খেয়েই যাচ্ছে । ফাহিম করুন স্বরে আবারও বলে,
-“তোমার রাগ এহনো(এখনো) কমে নাই। আরে ভাই তুমি তো জানই আমি পলের ঘরে পল। ইয়া বড় পল । তুমি হেরপরও রাগ হইয়া থাকবা?”
সাব্বির এখনো চুপ ।
আলতাফ চৌধুরী বললেন,
-“সাব্বির! ফাহিম এত করে বলছে। তারপরও তুই চুপ করে আছিস কেন? ওর সাথে কথা বল।”
সাব্বির ফাহিমের দিকে তাকিয়ে বলে,
-“তুই পল মেনে নিছোস?”
-“হ ভাই মানসি।”
-“ঠিক আছে যা! মাফ করে দিলাম।”
কথাটা শুনে ফাহিম সেই খুশি । তখনি ইশা বলে,
-“পল! পল মানে কী?”
সাব্বির বলার আগেই রুদ্র খেতে খেতে বলে,
-“পল মানে ভালো। এটাও জানিস না।”
কথাটা শুনেই সাব্বির,ফাহিম,আলতাফ চৌধুরী হাসতে লাগলো। আর এদিকে রিমি শক্ত হয়ে গেছে। পলের আসল মিনিং জানতে পারলে আজ রিমির কেল্লাফতে।
রুদ্র ভ্রু কুঁচকে মেকি রাগ নিয়ে বলে,
-“হাসছিস কেন? আমি কী ঠিক বলিনি?”
সাব্বির হেসে হেসে বলে,
-“ভাই তোমাকে কে বলেছে পল মানে ভালো? আরে পল মানে তো….।” বলার আগেই হাসতে শুরু করলো।
-“মানে কী বল? দাদু তুমি বলো?” রুদ্র খাওয়া বন্ধ করে বলে।
আলতাফ চৌধুরী হাসি থামিয়ে বলে,
-“পল মানে হচ্ছে,বোকা,বলদ।”
রিমি শেষ! খাবার গলার মাঝে আটকে গেছে। রুদ্র দাঁত কটমট করে রিমির দিকে তাকায়। রিমি শক্ত হয়ে বসে রয়। গলায় খাবার আটকে গেছে পানিও খেতে পারছে না। চোখ তুলে উপরের দিকে তাকাতেও পারছে না।
-“রিমি আজ তিমি হয়ে যাবে!” খাবার মুখে তুলে মনে মনে বলে সিমি।
-“আজ তু তো গেয়া কামসে।” নিধি বলে মনে মনে।
রুদ্র জেদ্দ নিয়ে খাবার খাচ্ছে। রিমি যে বসে আছে তো বসেই আছে।
সবার খাওয়া শেষ । একে একে টেবিল ছেড়ে সবাই ওঠে যে যার রুমে চলে যায়। শুধু রিমি,সিমি,নিধি ড্রইংরুমে বসে আছে।
-“বোইন আমারে বাঁচা বোইন। আমি রুমে যামু কেমনে? রুমে গেলেই রুদ্র আমাকে ভর্তা বানিয়ে ফেলবে। কিছু একটা কর তোরা ।” রিমি কান্না ফেস নিয়ে বলে।
-“আগে বলার সময় মনে ছিল না। এখন আমি কী করব হু?” সিমি বসে।
-“এমন করে বলিস না। কিছু তো একটা কর।”
-“এটা বলার সময় ভাবা উচিত ছিল। পরে যখন জানতে পারবে তখন কী হবে তোর!” নিধি বলে।
-” তখন মাথায় এটা আছিলো না রে বোন। প্লিজ কিছু একটা কর তোরা।” ওদের হাত ধরে ভয় নিয়ে বলে রিমি।
-“কিছু করার নেই রে বোইন আমাগো। জানি না রুমে গেলে আমার কপালে কোন করল্লা ভাজা আছে।” সিমি বলে।
-“ঠিক!…..”.
ডাক পড়েছে নিধির। উপর থেকে চিল্লিয়ে অভ্র নিধিকে ডাকছে।
-“আমি যাই। বাঁইচা থাকলে কাল সকালে দেখা হবে রে বোইন। বাই ।” বলেই নিধি সিঁড়ি বেয়ে উপরে যেতে লাগলো ।
-“তুই……।” রিমি বাকিটা বলার আগেই সিমির ডাক পড়ল উপর থেকে । শুভ্র ডাকছে সিমিকে।
-“ঐযে! বাঘে গর্জন দিছে। আমি যাই ।” বলেই সিমি চলে যায় ।
রিমি কান্না ফেস নিয়ে সোফায় বসে পড়ে। কিভাবে যাবে রুমে বুঝতে পারছে না। কান্না পাচ্ছে প্রচুর । বার বার মনে মনে বলছে,”কেন যে পল বলতে গেলাম ।”
-“রিমি………।”
ডাকটা শুনেই বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠল রিমির। রুদ্র ডাকছে ও’কে। সিঁড়ির কাছে গিয়েও আবার ফিরে এসে সোফায় বসে। উপরে যেতে ইচ্ছে করছে না। কী করবে যেতে যে হবেই। ঢোক গিলে এক পা দু পা করে সিঁড়ি চড়তে লাগলো। শেষের সিঁড়িতে এসে থেমে যায়। ভয়তে চোখ জোড়া পিটপিট করছে ওর। মনে সাহস নিয়ে দুই তিনটা ঢোক গিলে রুমের পর্দা সরিয়ে রুমে পা রাখে রিমি। রুদ্রকে রুমে দেখতে পাচ্ছে না রিমি । তখনি খট করে একটি শব্দ হয়। রিমি পিছনে ঘুরে তাকায়। সঙ্গে সঙ্গে শকড হয়ে যায় । কালো গেঞ্জি,কালো ট্রাউজার ও হাতে কালো রঙের পিস্তল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রুদ্র। দেখতে যেমনি সুন্দর লাগছে তেমনি ভয়ংকরও লাগছে। রিমি ভয়তে শাড়ি খাঁমচে ধরে। রুদ্র পিস্তলটি ওর সামনে ঘুরাতে ঘুরাতে নরম স্বরে বলে,
-“আমাকে বলদ বলেছিলে না?”
রিমির কাপা কাপি শুরু।
রুদ্র আবার বলে,
-“পল বলেছিলে তাই তো!”
রিমি চুপ…।
রুদ্র চট করেই রিমির সামনে এসে কোমড়ে হাত রেখে ওর সাথে মিশিয়ে নেয় । রিমি অনবরত কাঁপছে। ভয়ে চোখের পলকও বার বার পড়ছে। রুদ্র তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রিমির দিকে তাকিয়ে পিস্তলটি রিমি কপাল থেকে স্লাইড করতে করতে ওর ঐ কাঁপা কাঁপা ঠোঁটের কাছে এনে থামে। চিবিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,
-“এই ঠোঁট দিয়ে পল শব্দটা উঁচ্চারন করেছিলে না। এখন এই ঠোঁট জোড়ার শাস্তি হবে।”
কথাটা বলেই রুদ্র ওর আয়ত্তে নিয়ে নিলো রিমির ঠোঁট জোড়া ।রিমি চোখ জোড়া খিঁচে বন্ধ করে নেয়। ছাড়ানোর কথা তো দূরে থাক। নড়াচড়াও করতে পারছে না রিমি।
.
.
.
সিমি রুমে ঢুকে দেখে শুভ্র বিছানায় বসে ল্যাপটপ নিয়ে কী যেনো করছে। মাথা নিচু করে শুভ্রর সামনে দাঁড়ায়। শুভ্র সিমিকে দেখে ল্যাপটপ বন্ধ করে পাশে সরিয়ে হাত ধরে টেনে ওর কোলের উপর বসায় সিমিকে। সিমি অবাক! শুভ্র সিমির গলায় হাত রেখে মুগ্ধ চোখ তাকিয়ে নেশাক্ত কন্ঠে বলে,
-“ভুলে যেও না তুমি আমার ওয়াফ! তোমার সাথে সব কিছু করার রাইট আমার আছে। তবে,তোমার পারমিশন ছাড়া উহু!” মাথা দুলিয়ে না বলে শুভ্র ।
আস্তে আস্তে সিমির গলা উঁচু করে ঠোঁট জোড়া এক করে দেয়।
.
.
নিধি রুমে ঢুকে বিছানার সামনে এসে দাঁড়ায়। এদিক সেদিক তাকিয়ে অভ্রকে খুঁজছে। যে কিনা একটু আগে ডেকে গুষ্টি উদ্দার করেছে। এখন কোথায় গেলো । পিছনে ফিরতেই আচমকা অভ্রর মুখমুখি হয়। পিছিয়ে যেতেই নিধি ধাপ করে বিছানায় চিৎ হয়ে পড়ে যায়। অভ্র হাসে। নিধির বুক ধড়ফড় করছে। ভয় পেয়ে গিয়েছিল অভ্রকে আচমকা সামনে দেখে। দু হাতের কনুই ভর দিয়ে ওঠতে নিলে অভ্র এক পা বিছানার উপর উঠিয়ে হাঁটুর উপর হাত রেখে টেডি হাসি দিয়ে বলে,
-“ভয় পেয়েছো ?”
-“শালা ছেঁচড়া! ভয় দেখিয়ে বলে ভয় পেয়েছো।” মনে মনে নিধি।
অভ্র ডান হাত বাড়িয়ে নিধির গলায় হাত রেখে ওর মুখের সামনে নিয়ে আসে। নিধির কপাল কুঁচকে যায়। অভ্র নিধির গালে আলতো করে চুমু দিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,
-“যা বলার জোরে জোরে বলো। মনে মনে বললে আমি শুনতে পাবো না।”
কথাটা বলেই অভ্র নেশাতুর দৃষ্টিতে নিধির দিকে তাকায়। নিধির কঁপাল আরো কুঁচকে যায়। অভ্র নিধির ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যেতে নিলে নিধি মাথা পিছনে সরাতে থাকে । অভ্র যত আগাচ্ছে নিধি তত পিছাচ্ছে। এক পর্যায় অভ্র নিধির গলার কাছ থেকে হাত সরিয়ে দেয়। নিধি আবারও ধাপ করে পড়ে যায় বিছানায়। অভ্র সোজা হয়ে দাঁড়ায়। তারপর নিধির দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বলে,
-“কেমন দিলাম?”
নিধির কিছুটা রাগ হচ্ছে । ওঠে বসে।
অভ্র দুই হাতের তালু ঘষে বাঁকা হেসে বলে,
-“যেটা কেউ সেচ্ছায় দিতে চায় না। সেটা জোর করে নিতে হয়।” বলতে দেরি নিধির ঠোঁটে কিস করতে দেরি নেই অভ্রের।
.
.
.
সকালে…..
সাব্বির ওর রুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মাথা আঁচড়াচ্ছিল আর গুন গুন করে গান খাচ্ছিল।
-“ভালোবাসি হয়নি বলা,তবুও ভালোবাসি। পাশা পাশি হয়নি চলা,তবুও পাশাপাশি । তোমায়…….।”
বাকিটা গাওয়ার আগেই ফাহিম রুমে ঢুকে গালে হাত দিয়া অবাক হওয়া ভঙ্গিতে বলে,
-“ও খোদা! ওয়া কও কী ভাই? তুমি কও না ক্যা, ইশ আফারে যে ভালোবাসো । আর পরেরটা কী কইলা। পাশাপাশি হাঁটো নাই। কালকেই তো তুমি আফার পিছু পিছু হাঁটছিলা। এত তাড়াতারি ভুইলা গেলা।”
সাব্বির রাগি ভঙ্গিতে ফাহিমের দিকে তাকায়। এটা যে একটা গান,সেটা ওই গাধাকে কে বোঝাবে?
-“ভাই মোর কথা ঠিক আছে না। ”
সাব্বির রাগী কন্ঠে বলে,
-“গান আর কথা বলার মধ্যে যে একটা ডিসটেন্স আছে সেটা কী তুই বুঝতে পারিস না ?”
-“ধুর ভাই! ওটা ডিসটেন্স টা ডিসিশন হইবো।”
সাব্বির ঠাস করে ওর কপালে হাত দিল।
ফাহিম এটা দেখে বলে,
-“ভাই কপালে মশা মারলা নাকি?”
-“ওই! তুই রুম থেকে বাইর হইয়া যা।” তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলে।
-“এই একটা তোমার সমেস্যা(সমস্যা)। কিছু হলেই রুম থেকা বাইর হইয়া যাইতে কও। মোর কাছে এইডা একসের ডিসটাপিচিং লাগে।” কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বলে ফাহিম।
ওরে ইংলিশ রে! সাব্বির শুনেই বেহুস। বিছানায় ধপ করে বসে পড়ল সাব্বির। এত বার বারন করার পরও ফাহিম ইংলিশ বলা থামাচ্ছে না । এমন ইংলিশ শুনে সাব্বিরের নিজেকে নিজেরি পিটাতে মন চাইছে।
সাব্বিরকে বিছানায় বসে পড়তে দেখে ফাহিম কাঁধে হাত রেখে বলে,
-“ভাই,আপনার কী শরীর টাইট লাগতাছে? বইয়া পড়লেন ক্যা। ওয়াটিং আনমু আপনার জন্য?”
সাব্বির আর সহ্য করতে পারছে না। কিভাবেই বা করবে? টায়ার্ড এর জাগায় টাইট,আর ওয়াটার এর জাগায় ওয়াটিং বলে ফেলছে ফাহিম । সুস্থ মানুষও অসুস্থ হতে বাধ্য এমন ইংলিশ শুনে । আর সাব্বির তো সেই আগে থেকেই সহ্য করে আসছে। আর একটা জীনিস কতই বা সহ্য করা যায় বলুন?
সাব্বির স্লো মোশনে ঘাড় ঘুরিয়ে ফাহিমের দিকে তাকায়। চেহারাতে রাগের আভা। ফাহিম কপাল কুঁচকে ছোট একটা ঢোক গিলে। বুঝতে পারে আজকের ইংলিশও উল্টা-পাল্টা বলেছে। এখন পড়েছে মহা বিপদে। এত বলার পরও কেন যে ইংলিশ বলে। বেচারা ভাবছে।
সাব্বির দাঁত কিড়মিড় করে বলে,
-“এত বার কইলাম তুই ইংলিশ কবি না। তারপরও তোর ইংলিশ বলা অফ হয় না। খালি ভুল-ভাল ইংলিশ কস। তোরে আজকা ঠেঙ্গা দিয়া পিঠাইয়া ইংলিশ বলা বের করে দিমু ।”
কথাটা বলতে দেরি,ফাহিমের দৌঁড় দিতে দেরি নেই । এক দৌঁড়ে হল রুমে চলে আসে। সবাই তখন হল রুমের সোফায় বসে ছিল। সাব্বির, ফাহিমকে দৌঁড়ানি দিয়েছে । তাও আবার মারাত্মক দৌঁড়ানি। সোফার চার দিক থেকে গোল গোল ঘুরছে। সবাই ওদের কাণ্ড দেখছে। ফাহিমকে তখন আলতাফ চৌধুরী ডাকতে পাঠিয়েছিল। এখন সাব্বিরও ফাহিমের দৌঁড়ানোর দৃশ্য দেখে সবাই হতবাক । সুযোগ বুঝে সাব্বির আলতাফ চৌধুরী লাঠিটা নিয়ে নেয়।
-“দাঁড়া হারামজাদা! তোরে আজকে শেষ কইরাই হালামু।” সাব্বির দৌঁড়াচ্ছে আর বলছে।
-“ভাই মাফ চাই! দাদু মোরে বাঁচাও দাদু। ইশ আফা,ভাই,ভাবিরা। মোরে বাঁচান।” দৌঁড়াচ্ছে আর করুন স্বরে বলছে।
-“তোরে আজকা কেউ বাঁচাতে পারব না।”
-“ও দাদু মোরে বাঁচাও।”
-“সাব্বির থাম,হয়েছে কী বল?” আলতাফ চৌধুরী বলে।
-“তুমি আমাকে থামতে বোলো না দাদু। আজকে ওর দিন শেষ। ”
-“সাব্বির! থেমে যা বলছি। স্টপ।” রুদ্র ধমকের স্বরে বলে।
রুদ্র বলার সাথে সাথেই সাব্বির থেমে যায়। ফাহিম রুদ্রের পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়। অভ্র সাব্বিরকে জিজ্ঞেস করে,
-“ফাহিমকে মারতে চাইছিস কেন? কী করেছে ও?”
-“কী করে নাই ও কও। ওরে এত বার কইছি । ইংলিশ বলবি না,ইংলিশ বলবি না। কিন্তু ফাহিম্মায় আমার কথা শুনে নাই। বার বার ইংলিশ কয়। তাও আবার ভুল। ওর ইংলিশ শুনলে মনডায় চায়…..।” দাঁত কটমট করে বলে।
-“ভুল ইংলিশ বলে? কী এমন ইংলিশ বলেছে যে তোর রাগ হচ্ছে?” শুভ্র বলে।
-“ও ডিসগাস্টিং এর জাগায় ডিসটাপিচিং বলে। টায়ার্ড এর জাগায় টাইট বলে। ওয়াটার এর জাগায় ওয়াটিং বলে। এখন কও ভাই। এই সব ইংলিশ কী মানষে(মানুষে) শুনতে পারে?”
হাইরে ইংলিশ! সাব্বিরের কথা শুনে রিমি,সিমি, নিধি,ইশা মুখ টিপে হাসছে। আলতাফ চৌধুরী ও রুদ্ররাও মুচকি হাসে। সাব্বির রাগী চোখে তাকিয়ে আছে ফাহিমের দিকে । ফাহিম সাব্বিরের দিকে তাকিয়ে পিছনে ঝুঁকে বসে।
রুদ্র বলে,
-“এতে রাগার কী আছে? ওর মন চায় এভাবে ইংলিশ বলতে বলুক না। তাতে তুই এত রাগিস কেন?”
ওরে ফাহিমের হাসি দেখে কে? কথাটা শুনে ফাহিম বেশ খুশি। দাঁড়িয়ে কলার উঁচু করে ভাব নিয়ে বলে,
-“রুদ্র ভাই পরমিশন দিছে। এখন আমার ইংলিশ বলা ঠেকায় কে?”
-“দেখছেন ভাই। পারমিশন রে পরমিশন বানিয়ে দিছে।”
সিমি নিচের দিকে তাকিয়ে একটু জোরেই হেসে দেয়। সিমির টোল পড়া গাল দুটি দেখে শুভ্র মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। সিমির দিকে তাকিয়ে বলে,
-“সাব্বির,ফাহিমকে বাঁধা দিস না। ইংলিশ ও’কে বলতে দে।”
কথাটা শুনে সিমি শুভ্রর দিকে তাকায়। চোখা চোখি হতেই সিমি লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নেয়।
সাব্বির বুঝতে পেরেছে। তাই শুভ্রর দিকে তাকিয়ে বলে,
-“ভাই রা কইছে দেইখা। আর নাইলে তোর খবর আছিলো ।”
আলতাফ চৌধুরী বলে,
-“ফাহিম তুই ইংলিশ কোথা থেকে শিখলি? কে শিখিয়েছে তোকে?”
-“কেন মোগো শিমু আফায়। শুক্রবার দিন রমনা পার্কের পাশে যে একটা চিপা গল্লি আছে না,ঐ খানে শিমু আফায় মোগো সবাইরে এক সাথে ইংলিশ শিখায়। সপ্তাহে দশ টাকা কইরা নেয়। হের কাছ থেকা আমি মেলা ইংলিশ শিখছি।” হাসি হাসি মুখে বলল ফাহিম।
-“খুব সুন্দর ইংলিশ শিখায় তোমার শিমু আফায়।” হেসে হেসে বলে ইশা।
-“হয় ইশ আফা হাচা কইছেন আপনে।ভালো ইংলিশ শিখায়।”
-“একবার বলেছি আমার নাম ইশ না ইশা।” দাঁত কটমট করে বলে ইশা।
-“চুল,চুল আফা।” দু হাত জাগিয়ে বলে ফাহিম।
ইশা ভ্রু কুঁচকে বলে,
-“কী চুল? স্টুপিড কোথাকার।”
-“মাইনকার পো! ঐটা চুল না কুল হইবো কুল।” সাব্বির রাগ নিয়ে চোখ বন্ধ করে বলে।
এবার সবাই উঁচু স্বরে হাসতে লাগলো। হল রুম থেকে শুধু হাসির আওয়াজের প্রতিধ্বনি হচ্ছে। ফাহিম বোকার মতো তাদের দিকে তাকিয়ে মাথা চুলকাচ্ছে।
.
.
.
.
.
.
Continue To……