#Three_Gangsters_Love.
#Sumaiya_Moni.
#Part_22.
অপারেশন থিয়েটারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে সবাই। সবার চোখে পানি বিদ্যমান। রিমি,সিমি,নিধি,ইশা ফাহিমের চিন্তায় ভেঙ্গে পড়েছে। সাব্বির ইশাকে সামলানোর চেষ্টা করছে। কারণ ইশার এই অবস্থায় ভেঙ্গে পড়লে চলবে না। বাচ্চা ও নিজের ক্ষতি হতে পারে। আলতাফ চৌধুরী রিমি,সিমি,নিধিকে সান্তনা দিচ্ছেন। মাঝে মাঝে সান্তনা দিতে গিয়ে নিজেও কেঁদে ফেলে। রুদ্র,শুভ্র,অভ্র রা এখানে নেই। ওরা বডিগার্ড দের নিয়ে বাহিরে গেছে।
ইশা এই প্লান করেছিল। যাতে রুদ্র,অভ্র,শুভ্র রা ওদের সুন্দর ভাবে প্রপোজ করতে পারে। বলতে পারে ওদের মনের কথা গুলো। আর এ কয়দিন ইশার কথা মতোই ওরা রিমি,সিমি,নিধিদের সাথে এমন বিহেভ করেছে। যাতে ওদের ভালোবাসা টা ওরা বুঝতে পারে। আর তার জন্য ইশা,সাব্বির রিমি,সিমি,নিধি দের সামনেই রোমাঞ্চ করার জন্য এক জন এরেক জনার কাছা কাছি থাকত। যাতে ওদের মনের মধ্যে রুদ্রদের জন্য কিছু ফিল হয়। কিন্তু আজকে ওদের সাথে এমনটা হবে সেটা কেউ বা জানত? কিছুক্ষণ আগেই সাব্বির আর ইশা যখন নিচে আসে তখন ফাহিমকে রুদ্র ও রিমির পায়ের কাছে পড়ে থাকতে দেখে। বাম হাতের বাহু থেকে গলগল করে তাজা রক্ত বের হচ্ছিল। গুলির শব্দ শুনেই বডিগার্ড রা ভেতরে এসে চার দিক ছুটা-ছুটি করতে লাগলো। খোঁজার চেষ্টা করছে কে একটু আগে ফায়ারটা করেছে? কিন্তু তারা খুঁজে পায়নি।
যখন রুদ্র,অভ্র,শুভ্র রা রিমি,সিমি,নিধি দের এক হাতে ওদের হাত রেখে ডান্স করছিল।তখনি কিছু বোঝার আগেই ফাহিম এসে তিন জনকেই এক সাথে থাক্কা মেরে নিজেও ফ্লোরে পড়ে যেতেনিলে গুলি এসে ফাহিমের বাহুরে লাগে। ফাহিম লুটিয়ে পড়ে ফ্লোরে। সবার চোখে,মুখে ছিল তখন আতঙ্ক। দেরি না করে হাসপাতালে ভর্তি করায় ফাহিমকে । তখনো ওর বাহু থেকে রক্ত ঝড়ছিল।
এক ঘন্টা হতে চললো। এখনো ওটি থেকে ডাক্তার বের হয়নি । ক্ষনে ক্ষনে ভয়ের পরিমান সবার মনে আরো বেশি দানা বাঁধছে। তড়িৎগতিতে রুদ্র, অভ্র,শুভ্র হাসপাতালে এসে ওটির সামনে এসে দাঁড়ায়। রিমি রা তখনো কান্না করছিল বিধায় রুদ্র এক ধমকে চুপ করিয়ে দেয়। ওরা চুপ হয়ে যায়। চোখ থেকে পানি পড়া বন্ধ হয় না। কিভাবেই বা বন্ধ হবে? ওদের জীবন বাঁচাতে গিয়েই তো আজ ফাহিম মরতে বসেছে। শুভ্র কিছুটা দূরে একজন বডিগার্ডের সাথে কথা বলছি। এটা দেখে সাব্বির ওর কাছে আসে। শুভ্র ফোন কেঁটে দিতেই সাব্বির জিজ্ঞেস করে,
-“ভাই খবর…..।”
বাকিটা বলার আগেই শুভ্র গম্ভীর কন্ঠে বলে,
-“যে লোকটা আমাদের সুট করেছিল,তাকে খুঁজে পেয়েছি। কিন্তু কার লোক সেটা বলেনি। তাই শেষ…।”
সাব্বির আরো কিছু জিজ্ঞেস করতে নিলে এর আগেই ডাক্তার ওটি থেকে বের হয়।
রুদ্র ডাক্তারকে ফাহিমের কথা জিজ্ঞেস করলে। ডাক্তার বলে,
-“গুলি বের করা হয়েছে। তিনি এখন বিপদমুক্ত । এক ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফিরবে।” এটুকু বলেই তিনি চলে যায়।
ডাক্তারের কথা শুনে সবাই চিন্তা মুক্ত হলো। মনের উপর থেকে সবার পাথর সরে গেছে। ফাহিমকে ওটি থেকে বের করে কেবিনের বেডে শুইয়ে দেওয়া হয়। রিমি,সিমি,নিধি,ইশা কেবিনে গিয়ে জ্ঞানহীন অবস্থায় ফাহিমকে দেখে রুদ্রদের সাথে বাড়িতে চলে আসে।
আলতাফ চৌধুরী,অভ্র,শুভ্র রয়ে যায় হাসপাতালে । বাড়িতে এসে ফ্রেশ হয়ে কোনো রকম খেয়ে নেয় সবাই। ইশা,রিমি,সিমি,নিধি হাসপাতালে যেতে চাইলে রুদ্র নিষেধ করে। সকালে যেতে বলে। রুদ্র কিছুক্ষণ পর হাসপাতালে চলে আসে। এবং আলতাফ চৌধুরী সহ অভ্র,শুভ্রকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। রুদ্র একাই থেকে যায় হাসপাতালে। সাথে কিছু বডিগার্ডদের নিয়ে। অভ্র,শুভ্রও ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে হাসপাতালে চলে আসে। আজ ওরা তিন ভাই হাসপাতালে থাকবে ফাহিমের সাথে। এরি মধ্যে ফাহিমের জ্ঞান ফিরলে ও’কে জিজ্ঞেস করে ঐ লোকটিকে ও কিভাবে দেখেছিল।
তখন ফাহিম জানায় যখন লাইট বন্ধ হয় তখন লোকটিকে একটি নিচের রুমের জানালা থেকে বের হতে দেখে। এটা ধরা পড়েছিল পাঁচ নাম্বার টিভিতে। ফাহিম তখন এটা দেখে দৌঁড়ে নিচে আসতে নিলেই তারি মাঝে ঐ লোকটি পিস্তল তাক করে ধরে। আর তখনি ফাহিম ওদের ধাক্কা দেয় ওদের। আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পর ডাক্তার এসে আরেকটি ঘুমের ঔষধ দিয়ে যায় ফাহিমকে। ফাহিম আবার ঘুমিয়ে যায়।
রুদ্র,শুভ্র,অভ্র সেখানকার একটি সোফার সাথে দেলার দিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে। তখন প্রায় ১২টা ছুঁই ছুঁই । কেবিনের বাহিরে বডিগার্ড রা দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে।
সকাল হতে চললো। আস্তে আস্তে ভোরের আলো চার দিক ছড়িয়ে পড়েছে। নয়টার দিকে রিমি,সিমি নিধি,ইশা,সাব্বির ও আলতাফ চৌধুরী হাসপাতালে আসে ফাহিমকে দেখতে। ফাহিম তখন ঘুমানো ছিল। কিছুক্ষণ বসার পর ফাহিম ঘুম থেকে ওঠে। রুদ্র,অভ্র,শুভ্র সারা রাত জাগার কারণে বাসায় চলে আসে। রিমি,সিমি,নিধি,ইশা ফাহিমের সাথে থাকে। সাব্বির ফাহিমকে ধরে উঠিয়ে বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসিয়ে দেয়। নিধি ফাহিমকে খাবার খাইয়ে দিচ্ছে। সবাই টুক,টাক কথা বলছে ফাহিমের সাথে। ফাহিমের বাহুতে গুলি লেগেছিল। যার কারণে ফাহিমের বেশি একটা সমস্যা হয়নি। দুপুরের দিকে সাব্বির একা থাকে । বাকিরা বাসায় চলে যায়। রাতে থাকে রুদ্র,অভ্র,শুভ্র রা তিন জন। আবার সকাল হলেই ওরা সবাই আসে। এভাবেই কেটে যায় এক সপ্তাহ। ডাক্তার বলেছিল এক সপ্তাহ পর ফাহিমকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবে। তাই তারা এক সপ্তাহ পরই বাসায় নিয়ে আসে ফাহিমকে। ডান হাতের বাহুতে গুলি লাগার কারণে ফাহিম নিজের কাজ গুলো বেশি করতে পারত না। যেগুলো করতে সাহায্য করত সাব্বির। আস্তে আস্তে ফাহিম আরো সুস্থ হয়ে যায়। এখন নিজের কাজ করতে পারে। মাঝে মাঝে ব্যাথা অনুভব করে হাতে। ড্রইংরুমে বসে সবাই গল্প করছিল। সবাই কথা বললেও ফাহিম চুপ ছিল। ফাহিম দেখছে! সবার দিকে মাথা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। বেশি দেখছে রুদ্র,অভ্র,শুভ্র দের। এই এক সপ্তাহ ওরা তিন জন রাতে ফাহিমের সাথেই থেকেছে। সাব্বির আলতাফ চৌধুরীকে থাকতে দেই নি। সবার এতটা যত্নে আজ ফাহিম সুস্থ বলা যায়। তাই ফাহিম সবার কাছে নিজেকে ঋনি মনে করে। ফাহিম বুঝতে পারে এই বাড়ির একেকটা মানুষ ফাহিমকে কতটা ভালোবাসে। সাব্বিরের মতো নিজের ছোট ভাই হিসাবে ও’কে দেখে। ওর কাছে ভাবতেই ভালো লাগে ফাহিমও এই বাড়ির একজন সদস্য হয়ে গেছে। যে কিনা আগে চুরি করতো। আজ সে একটি সুন্দর পরিবার পেয়েছে। চোখ ভিজে ওঠে ফাহিমের । তাদের আগচড়ে হাতের উল্টো পিঠে চোখ মুছে ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে তুলে।
সবাই আড্ডা দেওয়ার এক পর্যায় একজন বডিগার্ড বাড়ির ভেতরে এসে রুদ্রদের বলে বাহিরে একজন লোক ভেতরে আসতে চায়। সাথে একজন মহিলা ও একটি মেয়েও ছিল। তাদের সাথে দেখা করার জন্য । রুদ্র প্রথম না করলে। অভ্র ভিতরে আসার অনুমতি দেয়। বডিগার্ড সাথে করে নিয়ে আসে সেই তিন জনকে। বাড়ির ভেতরেই পা রাখতেই নিধি থমকে যায়। আস্তে করে সোফায় ওঠে দাঁড়ায়। সবাই অবাক হয়ে যায়। নিধিকে এভাবে ওঠে দাঁড়াতে দেখে। কিন্তু রিমি,সিমি চিনতে পারে এরা তিন কে? মুহূর্তের মধ্যে নিধির মুখ থেকে ‘মামা’ শব্দটি বেরিয়ে আসে। দৌঁড়েই তাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। লোকটি মানে আলি হোসেন নিধিকে দেখেই অশ্রুশিক্ত চোখে নিধিকে তার বুকের সাথে জরিয়ে ধরে। নিধি কেঁদে দেয়। কিছুক্ষণ জরিয়ে ধরার পর আলি হোসেন নিধির মাথায় হাত রেখে নরম স্বরে বলে,
-“কেমন আছিস নিধি?”
নিধি মাথা ওঠিয়ে উত্তর দেয়,
-“ভালো মামা,আপনি কেমন আছেন?”
-“ভালো রে মা! তোরে দেখে মনটা আরো ভালো হয়ে গেছে।”
নিধি ওর মামি জরিনা বেগম ও মামাত বোন ফারিনকে জড়িয়ে ধরে। কিছুক্ষণ আতিবাহিত হবার পর নিধি তাদের সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দেয়। আলি হোসেন, জরিনা বেগম তার ভাগ্নিকে সুখি থাকতে দেখে তারা অনেক খুশি হয়ে যায়। আলি হোসেন তখন তাদের পরিবারের কথা বলে। তার একটি মুদি দোকান ছিল। সেই দোকান কয়দিন আগে ঋন এর কারণে বিক্রি করে ঋন শোদ করে। এখন তারা অসহায় হয়ে পড়ে। জরিনা বেগমের অহংকার যায় সব মুছে স্বামীর অবস্থা দেখে। আলি হোসেন কাল নিধির সাথে দেখা করতে আসে এতিম খানায়। তখনি জানতে পারে ওরা এতিন খানা থেকে দুই বছর হয়েছে চলে গেছে। এতিম খানার ম্যাম আলি হোসেন কে নিধি যেখানে কাজ করে সেখানের ঠিকানা দেয়। আলি হোসেন সেখানে গিয়ে স্টাফদের সাথে কথা বলে জানতে পারে নিধির বিয়ে হয়ে গেছে। থ্রি গ্যাংস্টার, চৌধুরী পরিবারের ছেলের সাথে। নিজের দূরদষার সময় নিধির কাছে আসাটা খুব দরকার ছিল। তাই তিনি চলে আসে। জরিনা বেগম নিধিকে ছোট কাল থেকেই সহ্য করতে পারত না। তাই আলি হোসেনকে বলে এতিম খানায় পাঠিয়ে দেয়। আর আজ? ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস। নিধির কাছেই আসতে হলো সাহায্যের জন্য। আলি হোসেন তার ব্যবসার কথা বলে।আলতাফ চৌধুরী বডিগার্ডদের দিয়ে দোকানের ঋনের টাকা পরিশোদ করায়। এতদিন পর তারা এসেছে বিধায়, অভ্র তাদের এখানে কয়দিন থাকতে বলে। আলি হোসেন রাজি না থাকলেও,জরিনা বেগম রাজি হয়ে যায় থাকার জন্য।
-“মামা,ইফাদ কোথায়? ও’কে নিয়ে আসেন নি কেন?” নিধি প্রশ্ন করেন আলি হোসেন কে।
-“ও’তো মাদ্রাসায় থেকে পড়ে। তাই ইফাদকে নিয়ে আসতে পারি নাই।”
-“ও,তুই কেমন আছিস রে ফারিন?”
-“ভালো আছি আপু,তুমি কেমন আছো?”
-“ভালো।”
নিধি ফারিনকে অভ্রকে দেখিয়ে বলে,
-“ওটা তোর দুলাভাই। যা কথা বলে আয়।”
ফারিন এক গাল হেসে বলে,
-“আইচ্ছা ।”
ফারিন অভ্রকে দুলাভাই বলে ডেকে কথা জুড়ে দেয়। সাথে রুদ্র ও শুভ্র কথা বলছে। সবাই সবার সাথে কথা বলছি। কিন্তু এদিকে এক জনার মনের মধ্যে প্রেমের ঘন্টি ভেজে গেছে। আর সে কেউ না! আমাদের ফাহিম ভাইয়া জি! হ্যাঁ! ফারিনকে দেখে তার মনের মধ্যে প্রেমের নদী বয়ে যাচ্ছে বলা যায়। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে ফারিনের দিকে। আর এদিকে ফারিন তাকিয়ে আছে রুদ্রের দিকে । কেন জানি ওর চোখ বার বার রুদ্রের দিকেই যাচ্ছে। এই দৃশ্যটা আবার রিমি লক্ষ্য করেছে। তখনি ওর নজর পড়ে ফাহিমের উপর। ফাহিম তো আগে থেকেই তাকিয়ে আছে ফারিনের দিকে। একবার রুদ্র। একবার ফারিন। আর একবার ফাহিমের দিকে তাকাচ্ছে রিমি। ঠিক বুঝতে পারছে না কী হচ্ছে এখানে। রিমি আনমনে ওঠে রুদ্রের পাশে এসে বসে।ওর সেটা খেয়াল নেই যে রুদ্রের পাসে বসেছে। কিন্তু রুদ্র অবাক। হঠাৎ করে ওর পাশে বসাতে রুদ্র ওর দিকে তাকায়। কপালে ভাজ দেখতে পায় রিমির। রিমির চোখকে অনুসরন করে সামনে তাকিয়ে দেখে অভ্রের শালি তাকিয়ে আছে ওর দিকে। রুদ্র চোখ সরিয়ে রিমির দিকে তাকায়। রিমির মুখের এক্সপ্রেশন দেখে রুদ্রের বুঝতে বাকি থাকে না কেন রিমি ওর পাশে এসে বসেছে।
ভালো একটি আইডিয়া পেয়েছে রুদ্র। যার দরুণ রিমি নিজেই রুদ্রের কাছে আসতে বাধ্য হবে। রুদ্র ইচ্ছা করেই এখন ফারিনের দিকে তাকাচ্ছে। এবার রিমির কপাল আরো কুঁচকে যায়। রুদ্র হাসে সেখান থেকে ওঠে চলে যায়। সাথে অভ্র,শুভ্রকে ইশারা করে যায় ওর সাথে যেতে। ওরা দু’জন ও চলে যায় রুদ্রের সাথে। নিধি ওর মামা,মামিকে একটি গেস্ট রুমে নিয়ে যায়। তাদের ফ্রেশ হতে বলে। ফারিনকে অন্য রুমে নিয়ে যেতে চাইলে ফাহিম ইশারায় নিধিকে ডাক দেয়। নিধি ফারিনকে দাঁড়াতে বলে ফাহিমের কাছে আসে।
-“কী?”
-“কানে,মুখে কথা হোনো(শোনো)।”
নিধি ফাহিনের মুখের দিকে ঝুঁকে। ফাহিম আস্তে করে বলে,
-“ভাবি তোমার বোইন ফেরান…..।
-“ফারিন! ”
-“হ ফারিন রে আমার সাথে সেটিং করাইয়া দেও। মোর জম্মের পছন্দ হইছে তোমার বোইনরে।”
নিধি রাগে ফায়ার কথাটা শুনে। হাত উঠিয়ে ফাহিমের গালে চড় দিতে গেলেই সাথে সাথে আদর করে খুশি মুডে বলে,
-“এটা তো খুশির খবর। মামার সাথে তোমার আর ফারিনের বিয়ের ব্যাপারে আলাপ করব।”
-“না ভাবি,আগে মুই তোমার বোনের সাথে প্রেম করতে চাই। হেরপর বিয়া করমু। সাব্বির ভাইয়ের মতো আগেই বিয়া করমু না।”
সাব্বির তখনি পাশ দিয়ে বলে ওঠে,
-“ফাহিম আমার নামে কিছু একটা কইলো মনে হইতাছে।”
ফাহিম তাড়াতারি করে বলে,
-“কই,কিছু কই নাই। তোমার কান এত শুনে ক্যা? যাও রুমে গিয়া বাচ্চা কিভাবে পালবা সেটা ভাবো গা।”
ইশার রাগ হয় ফাহিমের কথা শুনে। সোফা থেকে ওঠে দাঁড়িয়েই চিল্লিয়ে বলে,
-“বাচ্চা পালা শিখতে বলছিস। তোর ফারিনের সাথে প্রেম,পাডা দিয়ে ভেটে তোকেই খাইয়ে দিবো।”
ফাহিম,নিধি গেছে শক্ত হয়ে। আলতাফ চৌধুরী অনেক আগেই চলে গেছে। সাব্বিরও কথাটা শুনেও হা হয়ে রয়।রিমি,সিমি বুঝতে পারছে না ইশার কথা। ফাহিম,নিধি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে ফারিন ওদের থেকে অনেকটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়িটার চারদিক তাকিয়ে দেখছে। তার মানে ফারিন শুনতে পারেনি। ফাহিম আবার ইশার দিকে তাকিয়ে বলে,
-“নিজেরা তো বিয়া কইরা চাঙ্গে ওইঠা বইসা রইছো। অন্যদেরও প্রেম,বিয়া করতে মন চায় না নাকি?”
-“তাহলে তুই ঐ কথাটা বললি কেন?”
-“তো কী কমু? বাচ্চা কিভাবে পিডাইবেন সেইটা ভাবতে কমু?”
-“ফাহিম।” ইশা রেগে বলে।
ফাহিম তখন ঢং করে বলে,
-“জি জি জি….।”
ফাহিমের ঠং করা কথা শুনে রিমি,সিমি,নিধি ও সাব্বির হাসছে।
-“এই শুনেন ভাবি? মোর সাথে লাগতে আসবেন না। নয়তো বিনা কারণে মাটিতে গড়াগড়ি খাবেন হু।”
ইশা কপাল কুঁচকে বলে,
-“মাটিতে গড়াগড়ি খাবো কেন?”
-“মোর ইংলিশ শুইনা হাসতে হাসতে গইড়া,গইড়ি।”
এবার ইশাও হেসে দেয়। এই ছেলের সাথে রাগ হয়ে থাকবে যে, সে একটা বোকা।
ফাহিম ইশাকে ঢং দেখিয়ে বলে,
-“হি,হি,হি এবার রুমে যানগা। মোর ভাবির লগে মোরে ইম্পারিট বেটার নিয়া কথা কইতে দেন।”
ইশা এবার হাসতে হাসতে সাব্বিরের কোলে শুয়ে পড়ে। রিমি,সিমি,নিধি হেসে কুটি কুটি। সাব্বির কিছুটা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।ওদের হাসি দেখে ফারিনও সেখানে উপস্থিত হয়। ফাহিম ফারিনকে দেখে কিছুটা লজ্জা পায়। ফারিন নিধিকে জিজ্ঞেস করে,
-“আপু হাসছো কেন? কী হইছে?”
-“আমি কই।” ফাহিম এক গাল হেসে বলে।
-“আপনি এই!” হাত জাগিয়ে বলে ফারিন।
-“আরে মুই ওইটা কই নাই। মুই কইছি। আমি বলি তারা হাসে ক্যা?”
-“বলেন।”
-“আমার ইংলিশ শুনে। আহেন আমরা পরিচিত হইয়া নেই। মাই নাম্বার ইন দ্যা ফাহিম। মিউর(ইউর)” চুলের উপর হাত বুলিয়ে ভাব নিয়ে বলে।
ওরা তো আরো জোরে জোরে হাসতে লাগলো। ফারিন প্রথমে আস্তে করে সোফায় বসল। তারপরই জোরে জোরে হাসতে লাগলো।
গেছে! ফাহিমের ইজ্জত ধুলয় মিশে গেছে। সেটা আর বুঝতে বাকি নেই ফাহিমের। মুখ চুপশে যায় ফাহিমের। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি চলে যাবে ঠিক বুঝতে পারছে না ফাহিম। লজ্জায় পরান ওর যায় যায়।
.
.
.
.
.
.
Continue To……..