#You_are_mine
#Poly_Anan
#part_14
ঈশার হাত ধরে ঘরে ডুকতেই কিছু কথা ভেসে আসে ঈশানের কানে।নিজের রাগ নিয়ন্ত্রন করে ঘরের ভেতর ডুকে।ঈশান চুপ চাপ ঈশার হাত ধরে এক কোনায় গিয়ে দাঁড়ায়।ঈশানের মা তাদের দেখে এগিয়ে আসতে নিলে ঈশান হাত দিয়ে ইশারা করে না আসতে, আর চুপ থাকতে বলে।
এদিকে ঈশানের জেঠিমা লিপি এক মনে বকেই যাচ্ছে ঈশাকে উদ্দেশ্য করে ঈশানের মা কে।কথার মাঝে মাঝে কিছু অকথ্য ভাষা তিনি ব্যবহার করছেন যার কারনে ঈশানের মেজাজ পুরোপুরি পুরি বিগড়ে যায়।
“কিরে আমি বলেছিলাম মাহমুদা এই মেয়ে ভালো না, এইসব রাস্তার মেয়ে।নিলোতো নিলো তোর ছেলেটাকে হাত করে নিলো। আর ফিরে পাবিনা তোর সরল সোজা ছেলেটাকে।এই মেয়ে ভালোনা তার চালচলন দেখেই আমি বুঝে ফেলেছি কিন্তু তোর ছেলেতো বুঝেনা সে তো ওই মেয়ের রুপে পাগল।তাই বলি কি ওই মেয়েকে যে কোরে হোক ঈশানের চোখে শত্রু তৈরি কর! দরকার পড়লে আমি তোকে সাহায্য করবো।কেন যে এইসব মেনে নিচ্ছিস তুই!আমি হলে আগেই ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতাম।
” হ্যা মা ঠিক তুমি কেন এখনো জেঠিমা কে সহ্য করছো আমি হলে আগেই সুসম্মানে চলে যেতে বলতাম না হলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতা।(রেগে)
ঈশানের কথা পেছনে ঘাড় ঘুরে তাকায় লিপি। ঈশানকে দেখেই সে যেন ৪৪০ ভোল্টের শক খায়। দুই তিনটা ঢোক গিলে মাহমুদার দিকে তাকায়।
“কি হলো আপনার কথা থেমে গেছে কেনো? বলুন বলুন আমি শুনতে চাই আপনি ঠিক আর কি কি বলবেন?(এগিয়ে এসে)
মাহমুদা ঈশানের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলে,
” ঈশান তুই এইসব কানে নিচ্ছিস কেন?যা বাইরে থেকে এসেছিস ফ্রেশ হয়ে নে। একসাথে খাবো?!
“মা একদম জেঠিমাকে বাচাতে কথা ঘুরাবেনা। উনি এইসব বলে গেলো আর তুমি শুনে নিলে কিভেবে?
মাহমুদা ঈশান কে চুপ থাকতে ঈশারা করে। কিন্তু ঈশান আরো রেগে লিপির সামনে দাঁড়ায়..
” এই আপনার সমস্যা কি এই বাড়িতে এখনো পড়ে আছেন কেন।বুঝলাম আপনি বউ দেখতে এসেছেন বউ দেখতে অন্যরা ও এসেছে তারা তিন ৩/৪ ঘন্টা পর আবার চলে গেছে আর আপনি দুই সাপ্তাহ এখানে পরে আছেন। কি বউ দেখা হয় নি আপনার।ঈশা এদিকে আসো(ঈশাকে উদ্দেশ্য করে)
ঈশা গুটি গুটি পা ফেলে ঈশানের সামনে দাঁড়ায় ঈশান এখন কি করতে চাইছে তার ঠিক মাথায় ডুকছেনা।ঈশাকে আস্তে হাটতে দেখে ঈশান ধমকে বলে,
“জোরে হাটা যায় না পায়ের চার্জ কি শেষ নাকি!
ঈশা এবার দ্রুত ঈশানের পেছনে দাঁড়ায়। ঈশান আবার তাকে টেনে লিপির সামনে দাড় করায়!!
” দেখুন আমার বউয়ের চোখ টানা টানা তার উপরের পাপড়ি গুলো বেশ বড়।চোখে কাজল দিলে তো আর কথাই নেই আমি খুন হয়ে যাই সেই চোখের দিকে তাকিয়ে.. (লিপিকে উদ্দেশ্য করে ঈশার চোখ দেখিয়ে)
নাক দেখুন একটুও বোচা না। নাকটা দেখলেই ইচ্ছে করে টেনে দিতে যদিও টেনে দি টমেটোর মতো নাকটা লাল হয়ে যায়।আর নাকের নোজ পিনটা দেখছেন আমি নিজে পছন্দ করে কিনে দিয়েছি।নোজ পিনটা তার নাকে একদম মায়াবী ভাবেই আছে।
ঠোঁটটা দেখুন.! ঠোঁটের সম্পর্ক কিছুই বলার নেই বর্ননা করেও শেষ হবে না..তার ঠোটেঁর পাশের তিলের দিকে তাকালে আমি দিনে হাজার বার খুন হই।
ঈশানের এইসব বর্ননায় ঈশা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় সে এইসব কি বলছে কি করছে কিছুই তার মাথাউ বোধগাম্য হচ্ছে না।তবে মনে মনে বেশ লজ্জা পাচ্ছে।
“আমার বউয়ের থূতনিটা দেখুন!থূনির মাঝে ওই গর্তটা একদম ভাল্লাগে আমার। যদি এর মাঝে একটি তিল থাকতো পুরো জমে যেতো।
চুল দেখুন কোমর সমান।সিল্কি চুল এইসব কিন্তু পার্লারে গিয়ে করেনি ওর চুল নেচেরাল।
তার হাইট দেখুন একদম বুক বরাবর আমার কাছে এটাই পারফেক্ট হাইট। সে সহজেই আমার হার্ড বিট শুনতে পায়!
আপনার আর কি দেখা আছে! বলুন! উওর দিন একদম বর্নণা করে দিয়েছি।
লিপি চুপচাপ ঈশানের দিকে তাকিয়ে থাকে আর মনে মনে হাজারটা গালি দেয়।
” আপনি এমন করছেন কেনো ঈশাকে নিয়ে আপনার সমস্যাটা কোথায়? উওর দিন!(চিৎকার দিয়ে)
“তোদের এই পিরিতি কতদিন থাকে আমিও দেখে নিবো..!
লিপি রেগে কথাটি বলেই নিজের রুমে গিয়ে দরজা আটকে দেয় আর কাকে যেন ফোন করে!
এদিকে ঈশানের রাগ অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে।ঈশা ঈশানের রাগ থামানোর কথা কিন্তু ঈশানের রাগ সম্পর্কে আগেই তার যথেষ্ট ভালো ধারণা হয়ে গেছে তাই ভয়ে চুপ চাপ মাহমুদার পেছনে গিয়ে দাড়ায়। এদিকে ঈশান ভাঙ্গার মতো কিছুনা পেয়ে দোড়ে গিয়ে ডাইনিং টেবিলের সামনে গিয়ে কাচেঁর জগটি ছুড়ে মেঝেতে ফেলে।
মাহমুদা ঈশাকে তার পেছনে লুকিয়ে থাকতে দেখে বলে,
” বোকা মেয়ে হাজবেন্ডের রাগ উঠলে স্ত্রী ঠান্ডা করে আর তুই পালাচ্ছিস কেন?
“না মা আমি পারবো না।আপনার ছেলে রেগে গেলে আর জ্ঞান বুদ্ধি হারিয়ে ফেলে কখন আবার আমাকেই তুলে আছাড় মারে!
” আরে পাগলটা এবার সব ভেঙ্গে ফেলবে তাড়াতাড়ি যা তুই পারবি রাগ থামাতে!
“যাবো?(ভয়ে ঢোক গিলে)
” আরে যা!
ঈশা ঈশানের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,
“চলুন ঘরে যাবো এখানে ভাল্লাগছেনা (ঠোঁট উলটে)
” ঈশা আমার সামনে থেকে সরে যাও। আমার মাথা কিন্তু খুব গরম কখন তোমায় আবার নিজের অজান্তে আঘাত করে দেবো নিজেও যানিনা।
ঈশা ঈশানে ডান হাতটা টেনে উপরে নিতে থাকে আর বলে,
“চলুন তো দুপুর হয়ে গেছে ফ্রেশ হয়ে আমরা কিছু খাবো! তারপর আমাকে ঘুরতে নিতে হবে!
” এই তোমার এখন আবার ঘুরতে জেতে হবে এই কয়েক দিন কি কম ঘুরেছো?
ঈশা ঈশানকে রুমে এনে দরজা বন্ধ করে দেয়।
“না আমাকে আজকেও ঘুরতে নিতে হবে মানি না!
” আমি নেবো না আমার অনেক কাজ আছে!
ঈশা এবার ঠোঁট ফুলিয়ে কান্নার ভাব করে,
“আমাকে কোথাও কেন নিতে চাননা ওওওও অন্য গালফ্রেন্ডারা দেখে নেবে তাই বুঝি?
” ঈশা তুমি আমার রাগ কমানোর পরির্বতে বাড়িয়ে দিচ্ছো!(রেগে)
“আচ্ছা থাক এবার রাগ একদম কমে যাবে!
ঈশা টুপ করে ঈশানের হাতে একটি চুমু খায়।
“একটাতে রাগ কমেনা আরো লাগবে।
ঈশা এবার বাম হাতের উলটা পিঠে আরেকটি চুমু দেয়!
” এই একটায় হবে না আরো লাগবে।
ঈশা এবার রেগে ঈশানের চুল টেনে বলে,
“আরো দিলে বলবি এই কয়টায় হবে না হাজার টা লাগবে যা ভাগ তুই! (দাতে দাত চেপে)
“এই তুমি আমায় তুই তুকারি করছো কেন?(ভ্রু কুচকে)
” তুই বলার অধিকার আমার আছে!
“ও আচ্ছা তাই নাকি কে দিয়েছে এই অধিকার আপনাকে..?
” আমার সবটা যখন তোমাকে নিয়ে, তখন এই তুই তুমি আপনি সবাটাই আমার কাছে এক।কারন মানুষটাই আমার সম্মোধনে কি এসে যায়।
ঈশার কথা ঈশান ঈশাকে বুকে টেনে নেয়। মাথায় আলতো করে চুমু খেয়ে বলে,
“আমার পাগলি বউটা!
…..
পড়ন্ত বিকেলের ফুসকার স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে নিশি আর তার কাজিন৷ অনেক দিন হয়ে গেছে বন্ধুদের সাথে আর ফুসকা আড্ডা হয় না।লিমন তাহা ঈশা, নিশি প্রতিদিন ভার্সিটি শেষে ফুসকা ঝাল মুড়ি আড্ডায় মেতে থাকতো, কখনো বা লেকের পাড়ে পিৎজা ভাগাভাগির দিন গুলো মনে পড়তেই খা খা করে উঠে বুকের মাঝে। এখন সব হারিয়ে গেছে সব। হারানো টা, তবে থেকেই শুরু হয় যেদিন থেকে ঈশার জীবনে ঈশানের হস্তক্ষেপ শুরু।একে একে লিমন ঈশা দূরে সরে যায়। তারপর তাহা আরিফকে মেনে নেয়। তারপর থেকেই নিশি একা ভার্সিটিতে ও তেমন আসা যাওয়া করেনা।কিন্তু আজ যখন সমবয়সী কাজিন বায়না ধরলো ফুসকা খেতে যাবে তখন অতীত মনে পড়তেই বুক চিড়ে বেরিয়ে এলো দীর্ঘ শ্বাস।
লেকের দিকটায় আজ তেমন লোকজন নেই।শুক্রবার দিনটায় সবচে বেশি মানুষজন দেখা যায়।হুট করেই নিশির চোখে পড়ে রাসেলকে।ফোনে কার সাথে কথা বলতে বলতে লেকের দিকটা চক্কর দিচ্ছে।মোবাইল কান থেকে নামাতেই তার পাশে এসে দাঁড়ায় নিশি।
” হেই মি.রাসেল কেমন আছেন?
“হুম ভালো। কিছু বলবেন?
” ঈশার কি অবস্থা তার সাথে তো আমার একদম যোগাযোগ বন্ধ, জিজুর নাম্বার টাও নেই।
“হুম ভালো আছে। আমি বলবো ভাবিকে আপনার সাথে যোগাযোগ করে নিতে।
” আপনি কি খুব বিজি এখন?
“কেন?
” তাহলে চলুন ফুসকা খাই!(হাসিমুখে)
“সরি আপনি খান আমার ইচ্ছে নেই।
” আরে এমন করছেন কেন কেউ কোন জিনিস আবদার করলে ফেলতে নেই আপনি যানেন না!
“আমার ডিকশনারিতে কারো আবদার ইচ্ছে পূরনের শব্দ নেই।আমি আমার।(গম্ভীর কন্ঠে)
” ওহ আচ্ছা বুঝেছি আপনার মনে ওয়ালেট টা বাড়িতে রেখে এসেছেন ভুলে তাই বিল পে করার ভয়ে বড় বড় ডায়ালগ দিচ্ছেন!😒(আড় চোখে তাকিয়ে)
“হোয়াট,কি বললেন আপনি?আমার সাথে কি আছে আপনি যানেন, আমি যাথে যে টাকা নিয়ে ঘুরি আপনার হাজার টা ফুসকা বিলের দায়িত্ব আমি নিতে পারবো!(রেগে)
” তো নিয়ে নেন না বারন করেছে কে তাতে তো আমার সুবধাই হবে😁।
রাসেল বিড়বিড় করে কি যেনো বলে তারপর নিশির মুখের দিকে তাকিয়ে হুট করেই আবার গলার স্বর নামিয়ে নেয়।যার মুখে হাজার টা মায়ার ছাপ তার সাথে কখনো শক্ত কথা মুখে আসেনা।
” আচ্ছা চলুন আপনারা খাবেন আমি নাহয় একটু সেয়ার নেবো আপনাদের কাছ থেকে!(মুচকি হেসে)
“সিওর.. চলুন।(খুশি হয়ে)
ফুসকা স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বিভোর, রাসেল আর নিশি। এদিকে অনেক্ষন থেকে বিষয়টি লক্ষ্য করছে ঈশান আর ঈশা। তারাও আজ লেকের পাড়ে ফুসকা খেতে এসেছে।কিন্তু রাসেল আর নিশিকে এইভাবে দেখবে কল্পনাও করেনি তারা।ঈশান এর মাঝেই তাদের কিছু ছবি তুলে নেয়।
” চলো ঈশু ওদের হাতে নাতে ধরি শালা লুকিয়ে প্রেম করছে আর আমাদের কে বলছে না এটা তো মেনে নিতে পারিনা।
ঈশান আর ঈশা দুজনে এগিয়ে যায়।তারা দুজনে এখনো কথা মাঝেই আছে। রাসেল নিশির দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বলে ঈশান পেছন থেকে বলে,
“তারপর!
রাসেল কথাতে এতোই বিভোর তারপর শব্দটা কে বলেছে তার মাথায় ডুকে নি।নিশি ঈশানের দিকে তাকালে ঈশান চুপ থাকতে ঈশারা করে।
” এদিক দিয়ে আসলে অনেক দিন যাওয়া হয় না তাই একটু হাটতে বের হয়েছিলাম(রাসেল)
“তারপর (ঈশান)
” তারপর আর কি আ……!
কথাটা শেষ করার আগেই ঈশানকে দেখে পুরো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় রাসেল।
“কিরে তোরা!
” কেন আশা করিস নি বুঝি।
” না তা ঠিক না!
“তবে কি(ভ্রু কুচকে)
” দূর।
ঈশা দৌড়ে নিশিকে জড়িয়ে ধরে কত দিন পর তাদের দেখা দুজনের চোখ ছল ছল করে উঠে।
আড্ডা মাস্তি শেষে…..ঈশা নিশি আর তার কাজিন একা সামনের দিকটায় হেটে যাচ্ছে। রাসেল আর ঈশান তাদের পেছনে।ঈশান রাসেলকে ছবি গুলো দেখি বলে,
“এই ছবি আজ আন্টির কাছে যাবে।
” না ভাই প্লিজ এমনটা করিস না।মা আজ কয়েকদিন বিয়ের জন্য চাপাচাপি করছে আমি বারন করেছি তবুও বলছে আমার নাকি কোন মেয়ের সাথে সম্পক আছে! তুই তো যানিস আমার কোন সম্পর্ক নেই
“হ্যা আছে তো আমি যানি!
” ঈশান কি বলছিস এইসব পাগল হয়ে গেছিস।
“কেন নিশিকে তোর ভালোলাগেনা।
” লাগে কিন্তু বউ হিসেবে কখনোই না।
“রাসেল নিজের জীবনকে একবার সুযোগ দে। সাজিয়ে নে না সবটা।যাকে ভালোবাসতি তার বিয়ে হয়ে গেছে।আমরা চেয়েছিলাম ওকে আনতে তুই আনতে দিলি না এখন এইসব কেন?
” কিন্তু…
“কোন কিন্তু নয় বিয়ের জন্য প্রস্তুত হ।
রাতের মৃদু মন্দা বাতাস উপভোগ করতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে ঈশা…ঈশান পেছন থেকে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে।
” এখানে এতো রাতে দাড়িয়ে কি করছো!
“দেখছো না কি করছি!
,” আচ্ছা একটা কথা বলতো নিশি আর রাসেল দুজনকে এক করে দি কি বলো?
” আমারো তাই মনে হয়।!
“তাহলে চলো এবারের মিশন রাসেলের বিয়ে!
দীর্ঘ চল্লিশ মিনিটের মতো জ্যামে আটকে আছে রাসেল। তার দৈর্য্যর বাধ যেনো এবার ভেঙ্গে যাচ্ছে।রাসেলের বাবা একের পর এক ফোন দিয়েই যাচ্ছে সে কোথায় আসছে না কেন! তার মা ও ফোন করে দুই চারটা কথা শুনিয়ে দিচ্ছে তাদের বোঝাতে সে সক্ষম হচ্ছে না সে জ্যামে আটকে গেছে।প্রায় একঘন্টা আগেই রাসেলের বাবা রাসেলকে একটা ঠিকানা মেসেজ করে দেয় যাওয়ার জন্য। যাওয়ার আগে যেনো ভালো পোশাক পরে আসে।তার এইসব গুন্ডার বেশে থাকাটা একদম পছন্দ করেন না তিনি।রাসেল এখনো বোঝেনা তার বাবা কেন সবসময় এই কথা বলে ধমকি দেন।শাট আর জিন্সের মাঝে গুন্ডামির কি আছে। ছোট থেকেই সে বাবা কে ভীষন ভয় পায়। তাই বাবার কথা রাখতে বাড়ি থেকে পাঞ্জাবি পরে একদম ভদ্র বেশে সেই ঠিকানায় যাওয়ার উদ্দেশ্য বের হয়।কিন্তু সেই জ্যামে আটকে আছে দীর্ঘ চল্লিশ মিনিট।।
কিছুক্ষণ পর রাসেল সেই ঠিকানায় পৌছে যায়।বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তার বাবাকে ফোন করতেই তিনি বলেন সে যেনো বাড়ির ভেতরে ডুকে।রাসেল বিড়বড় করতে করতে বাড়ির ভেতরে বসার ঘরের সামনে যা দেখে তার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না।
#চলবে…..
#You_are_mine
#Poly_Anan
#Part_15
পাঞ্জাবির কলার ঠিক করতে করতে রাসেল যখন বাড়িটার বসার ঘরে ডুকে সে পুরো হতবম্ভ হয়ে যায়। নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে একবার দুই হাত দিয়ে দুচোখ কচলে নেয়।নাহ সে ঠিক দেখছে তার মনে ভ্রম নয়।ঈশান এগিয়ে এসে রাসেলের কাধেঁ হাত রাখে,এদিকে রাসেল ভাবতে থাকে
“এটা ভ্রম নয় এটা সত্যি? না সত্যি না সবাই একসাথে কি করে?(বিড়বিড় করে)
” আরে কি বিড়বিড় করছিস ভাই সামনে চল!
“এটা কার বাড়ি তোরা এখানে কেন বাবা মা তুই কি হচ্ছে এইসব! তুই পাঞ্জাবি পড়েছিস!তুই তো তেমন পাঞ্জাবি পড়িস না আজ কেন পড়লি? কি অদ্ভুদ!
” এতো বক বক করছিস কেন সামনে চল।
ঈশান টেনে রাসেলকে সবার সামনে দাড় করায়।তার নিজের কাছে নিজেকে বেক্কেল মনে হচ্ছে।সবাইকে দেখে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করা হলে এমন একজনকে তার চোখে পড়ে যাকে দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না।সে চায় নি কখনো দেখা হোক তার সাথে তবুও নিয়তি আবারো দেখা করিয়েই ছাড়লো!রাসের বুকের ভেতরটা হুট করেই মোচড় দিয়ে উঠে।অতিতের ভাবনা গুলো মস্তিষ্কে আরেকবার নাড়া দিয়ে উঠে।মুখের মাঝে আওড়াতে থাকে কয়েকটি শব্দ!
!রুপ এখানে!
ঈশান সবার কথার মাঝে রাসেলকে নিয়ে আলাদা এক রুমের ভেতরে ডুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।এদিকে রাসেলের যেন পৃথবী থমকে গেছে রুপ এখানে কি করছে আর তার বাবা মা রুপের সাথে কি! ঈশান পুরো রুমটা একবার পরখ করে রাসেলের সামনে দাড়ায়।
“লিসেন রাসেল তুই কি আমায় বিশ্বাস,ভরসা করিয়া। যদি করিস আশা করি আমার কথা গুলো মন দিয়ে শুনবি।
” ওকে।কিন্তু র…….
“তোর সব কনফিউশান আমি ভেঙ্গে দেবো তুই আমার কথাটা জাস্ট শোন।
” হুম।
“দেখ আমরা নিশির সাথে তোর বিয়ে ঠিক করেছি এবং আজ এংগেজমেন্ট!
” হোয়াট…!(চিৎকার দিয়ে)
“আসতে আসতে এতো চিল্লাছিস কেন আগে কথা শুন।আংকেল আন্টিরো নিশিকে বেশ পছন্দ নিশির বাবা মা ও রাজি।নিশিরা কিন্তু দুই বোন তাদের আর কোন ভাই নেই!কিন্তু আসল কথা হলো আজ যখন আমি সবটা ফাইনাল করছিলাম তখনি ঘরের সদর দরজা দিয়ে একটি মেয়ে ডুকে তাকে দেখে আমার ঠিক তোর মতোই অবস্থা হয়েছে কিন্তু আমি নিজেকে স্বাভাবিক রেখে আমার মতো করে আমি কাজ চালিয়ে যাই।
” রুপ এখানে কেন ভাই?
“রুপ নিশির চাচার মেয়ে!
” কি বলছিস আমি তবে এখানে কিছু তেই অত্নীয়তা করবোনা যেখানে রুপ আছে সেখানে সব কিছু বাতিল।
“আহ এতো রেগে যাচ্ছি কেন?রুপ এখানে থাকেনা সে তার হাজবেন্ডের সাথে চট্রগ্রাম শহরে থাকে।গতকাল নাকি এসেছে হাজবেন্ডের সাথে ওর বাড়িতে কিছু দিন থাকতে কিন্তু আজ আংকেল আন্টি ওকে আসতে বলেছে তাই সে এসেছে!সবচে বড় খবর কি যানিস? ভালোবেসে বিয়ে করলেই যে সবাই জিতে যায় আসলে কিন্তু ভুল।ভালোবেসে বিয়ে করলেও সেই ভালোবাসা টিকে থাকে কিছু সংখ্যাক মানুষের আর বাকিদের সম্পর্কে অতি শীঘ্রই ঘুণে ধরে যায়।
” বুঝলাম না বিষয় টা!
“রুপ সুখে নেই।তার হাজবেন্ড অন্য মেয়েদের সাথে মেলামেশা করে,রাতে ড্রিংস করে বাড়ি ফিরে মাঝে মাঝে নাকি রুপের গায়ে হাত তুলে। তবুও সে সবটা সয়ে গেছে কেন যানিস?কারন সে ভালোবেসে বিয়ে করেছে!রুপ তোর ভালোবাসা বুঝেনি ভুল করেছে আর সেই ভুলের মাশুল এখন দিচ্ছে।
রাসেল কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,
” কিন্তু আমি তো নিশিকে বিয়ে করবোনা!
” দেখ রাসেল আমি ভালো করেই যানি তোর মনে নিশির জন্য ফিলিং আছে ।না হলে আমার অবর্তমানে তুইও বার বার কেন নিশিকে ফোন করিস,তার সাথে দেখা করতে এতো টাল বাহানা দিস।তুই কি মনে করিস আমি যানিনা আমি তোর খোজ রাখিনা।
ঈশানের কথা শুনে রাসেল মাথা নিচ করে নেয় কেননা প্রত্যাকটা কথাই সত্যি।
“তুই এমন একটা ছেলে সে যত কাজেই ব্যস্ত থাকুক পেছনে আশে পাশের পরিস্থির উপলব্ধি করার জন্য তোর কান সব সময় খাড়া থাকে।কারন তুই সেই ভাবেই ট্রেনিং প্রাপ্ত।কিন্তু কাল কি হলো তুই ভেবে দেখ আমি তোর পেছনে দাড়িয়ে কথা পর্যন্ত বলেছি তোর খবর নেই কেউ তোর পেছনে।তাহলে নিশির সামনে থাকলে তুই কতটা বিভোর থাকিস ভেবে দেখ।
” আসলে ঈশান তোর প্রতিটা কথাই সত্য আমার নিশির জন্য মনে ফিলিংস আছে তবে কি যানিস কাল বিকেলে তোর মুখে নিশির সাথে বিয়ের কথাটা শুনে আমি কাল বেশ খুশি হয়ে ছিলাম।বলতে পারিস বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো বিষয়টা ছিল।কিন্তু আজ যখন যানতে পারলাম রুপ নিশির চাচার মেয়ে।শত কষ্ট হলেও আমার আর বিয়েটা করতে ইচ্ছে হচ্ছেনা।আমি কোন দিন নিশির কাছে কোন কথা লুকাবো না। এই কথাটা আমি এংগেজমেন্টের আগেই বলবো । তখন তার মনে ভাবনা থাকবে আমি নিশ্চই রুপ কে দেখাতে নিশিকে বিয়ে করেছি!কিংবা যত যাই হোক আশা করি তুই বুঝতে পারছিস।
“সব বাদ। তুই আগে নিশির সাথে কথা বল।একটা কথা বলি রাসেল অতীতটা ভুলে যা বর্তমান টাকে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে ভালোবেসে আগলে রাখ।তোর মন মস্তিষ্ক জুড়ে এখন শুধু নিশি থাকবে কোন রুপ নয়।সে তোর অতীর ছিল। যাস্ট এটাই।
রাসেল হুট করেই ঈশানকে জড়িয়ে ধরে।
” তোর মতো বন্ধু পাওয়া গর্বের বিষয়, সত্যি আজ আমার গর্ব লাগছে তোকে পেয়ে।
“আর তুই কি আমার কম নাকি। সকল বিপদে আপদে সবার আগে তো তুই হাত বাড়িয়ে দিস।
দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
ঈশান সবার সাথে আলাপ পরার্মশ করে যানায় এংগেজমেন্টের আগে নিশি আর রাসেলের কিছু আলাদা কথা হোক। তাই তাদের আলাদা কথা দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়।
ছাদের এক কোনে দাড়িয়ে আছে রাসেল আর নিশি।চারিদিকের বাতাসে বার বার নিশির অবাধ্য খোলা চুল গুলো বেশামাল উড়ছে নাকের সামনে দুই চার গাছি চুল বার বার ঠেকছে।রাসেল গভীর মনোজক দিয়ে নিশিকে একবার পরখ করে নেয়।ডার্ক নীল শাড়ি তার উপর গোল্ডেন পাড় গোল্ডেন কাজের একটি সিল্ক শাড়ি পরে তাকে বেশ
অপরুপাই লাগছে।
শাড়িটা দেখে মনে হচ্ছে কারিগর নিখুঁত হাতে তার জন্যই শাড়িটা তৈরি করেছে।ছোট ছোট চোখ দুটেতে একটু কাজলের ছোয়া যুগল ভ্রু বেশ মায়াবী লাগছে তাকে।ঠোট দুটোতে হালকা গোলাপি লিপস্টিকের ছোয়া। সেই ঠোঁট দুটো অনবরত কেঁপেই যাচ্ছে ভয়ে নাকি লজ্জায় কিছুই বুঝতে পারছেনা রাসেল।নিশির চোখ দূর আকাশের দিকে।দুই হাতের আঙ্গুলের সাথে শাড়ির আচঁলে একবার গিট দিচ্ছে আবার খুলে ফেলছে।
” নিশি আমার কিছু কথা ছিল(একটু উচ্চ শব্দে)
“হ্যা হু বলুন(ঘাবড়ে গিয়ে)
” কাল তো ঠিকি হেসে হেসে আমাকে বেশ অপদস্ত করেছেন তবে আমার সামনে আজ এতো কাপছেন কেন?আপনার কি ভয় লাগছে নাকি লজ্জা লাগছে?
“হু যানিনা।
” দেখি আমার দিকে তাকান। আমরা এখন বন্ধু শুধুই বন্ধু তাই নার্ভাস হবেন না। কি বলছি মন দিয়ে শুনুন।
“হ্যা আপনি বলুন আমি শুনছি।
ঈশান একে একে রুপ আর তার অতীত সম্পর্কে বলে।সে রুপকে পছন্দ করলেও রুপ তাকে পছন্দ করতো না সে তার ভালোবাসার মানু্ষটাকেই বিয়ে করে রুপ যাওয়ার পর আর এতো দিন কোন মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক করতে ইচ্ছে হয় নি।কিন্তু নিশিকে দেখার পর তার অতীতের ভাবনা ভুলে বর্তমানে যেতে চাইছে।আজ যখম যানতে পারলো রুপ নিশির চাচার মেয়ে তখন থমকে গেলো তার ভাবনা।
” নিশি একটা কথা বলি আমি যদি এখন তোমায় বিয়ে করি নিশ্চই তুমি ভাববে আমি রুপ কে দেখানোর জন্য তোমাকে বিয়ে করেছি।আমি যখন তোমার কেয়ার করবো তখনো তুমি ভাববে আমি রুপ কে দেখানোর জন্য কেয়ার করছি।যদি তোমার ভাবনায় এইসব আসে তবে সরি নিশি সম্পর্ক এই পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকুক।আমি আর সামনে যেতে চাইনা।আমি যাকে ভালোবাসি তাকে আমার সর্বোচ্চটা দিয়েই ভালোবাসি সে যদি আমার ভালোবাসার মূল্যই না বুঝে বার বার যদি অতীতের দিকে হিসেব কষে তবে থাক সবটাই থাক।বাকিটা তোমার মতামত তুমি ঈশানকে বলে দিও।আমি সত্যি যানতাম না রুপ তোমার কেউ হয়।আমি তো কাল থেকে খুশিতেই ছিলাম ঈশান বলেছে তোমার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করবে। এটা এমন ছিল যেন না চাইতেই পাওয়ার মতো।তোমার জন্য আমার মনে ফিলিংস আছে।কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমার ফিলিংস গুলো আবারো হেরে যাবে।
রাসেল চলে যেতে নিলেই পেছন থেকে নিশি হাত আটকে ধরে,
” আমি কি কিছু বলেছি, তবে চলে যাচ্ছেন কেন।যে ছিল সে অতীত! বর্তমানটা নিয়ে ভাবুন এবার।আর আমি কথা দিচ্ছি অতীত নিয়ে কোন দিন কথা বলবো না। এবার ভালোবাসবেন তো আমায়(ঠোঁট উলটে)
রাসেল কিছু সেকেন্ড নিশির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। যেকোন মেয়ে স্বামীর এতো বড় একটা সত্য যানার পর কয়েক দিন থমকে থাকে আর এই মেয়ে কয়েক সেকেন্ডে সিধান্ত নিয়ে নিল বাহ।
রাসেল নিশির দিকে তাকায়।আর প্রশ্ন করে
“তুমি ভালোবাসবে তো আমায়?
” আজীবন!আপনি শুধু আমায় আগলে রাখুন আমি আপনার ভালোবাসাটাই আগলে রাখবো।
রাসেল নিশিকে টেনে তার মাথাটা নিজের বুকের সাথে আগলে ধরে। ঠোঁট কামড়ে হাসছে সে।তার হারানো আশা ফিরে পেয়েছে।
এদিকে সিড়ি ঘরের দিক থেকে সবটা দেখছে ঈশা আর ঈশান। ঈশান ঈশার দিকে তাকিয়ে বলে,
“তোমাকে এই ভাবে কত বুঝালাম তুমি বুঝলেনা যদি বুঝতে তবে সবটাই সুষ্ঠ হতো।আর নিশিকে দেখো সে সবটা বুঝে রাসেল কে মেনে নিয়েছে।
“উহু, আপনাকে দেখলেই আমার ভয় করতো আর বিয়ে! আমার এইসব ভাবলে তখন দম বন্ধ হয়ে আসতো তাই বার বার পালিয়ে যেতাম।
” কেন এখন ভয় লাগেনা বুঝি! (ভ্রু কুচকে)
“না লাগে না। কাকে ভয় পাবো যাকে ভয় পাবো তার সাথে আজীবন থাকতে হবে তাই ভয় ডর সব বাদ।
” ওল্লে আমার গুলুমুলু বউটা কথা শিখেছে তাহলে।(গাল টেনে জড়িয়ে ধরে)
“আহ আপনি একটু বেশি রোমান্টিক তা কি আপনি যানেন!
” অবশ্যই যানি! আমার বউ আমি আদর করলেই রোমান্টিক হই আর যা হই তাতে তোমার কি!
“আপনি আমাকে ইদানীং বেশী জ্বালাচ্ছেন কথার ভাজে একবার জ্বালান আদরের নাম করে আরেক বার জ্বালান।
“তুমি জ্বলছো কেন সবটা সহ্য করো।
” ছাড়ুন তো নিশি আর রাসেল কি দুজনকে জড়িয়ে ধরে অজ্ঞান হয়ে গেছে নাকি ছাড়ার নাম নেই চলুন দেখে আসি।
“চলো..!
“আয় হায় আমার দেওরটার একি হলো।!
ঈশার কথা শুনে ছিটকে দূরে সরে যায় রাসেল আর নিশি।
” আমার শালীটার সাথে তুই কি শুরু করেছিস রাসেল।(ঈশান)
“ক্ক ক কই কি করেছি।
” চল নিচে চল দেরি হয়ে যাচ্ছে। বিয়ের দিন তারিখ ফাইনাল করতে হবে তো!(ঈশান)
“হ হুম চলো।
লজ্জায় রাসেল সবার আগে বড় বড় পা ফেলে চলে যায় নিজেকে এদের হাত থেকে বাচাঁতে এটা ছাড়া উপায় নেই।
অবশেষে এংগেজমেন্ট সেরে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হয়। পুরো সময়টাতে রাসেল আর রুপের দিকে একবারো তাকায় নি।বিষয়টা রুপ ভালো করেই লক্ষ্য করে।
রাত এগারোটার সময় ঈশা তার কাভার্ড জুড়ে সব শাড়ি জামা একে একে ফেলতে থাকে…!
রাসেলের বিয়ে উপলক্ষ্যে সে কি পড়বে কিছুই মাথায় ডুকছেনা। শাড়ি জামা গুলো আলমারিতে দেখতে দেখতে নতুন জামা গুলো তার কাছে এখন পূরনো লাগছে আসার সময় ঈশানকে বলেছে তাকে শপিং করিয়ে দিতে কিন্তু ঈশান কাটায় কাটায় জবাব দিয়েছে তার জামা কাপড়ের পেছনে আর একটা টাকাও খরচ করবে না ঈশান।
বিয়ের একমাসে সে নাকি একশটার উপর জামা পেয়েছে শাড়ি পেয়েছে এতো কিছু দিয়ে কি হবে।আর প্রয়োজন নেই শপিং এর। তখন থেকে মেজাজ গরম ঈশার।কাভার্ডের সব জামা শাড়ি এদিক সেদিক ছুড়ে মারছে কিছুই তার পছন্দ হচ্ছেনা।পুরো রুম জুড়ে ঈশার জামাকাপড়ের একটা স্তূপ তৈরি হয়েছে।রাগে জিদে তার ভীষন কান্না পাচ্ছে চোখের পানি টলমল করছে।একটা ওড়না ছুড়ে মারলে তা দরজা দিয়ে ডুকতে ঈশানের মুখে পড়ে।ঈশান ওরনাটা গলায় পেছিয়ে রুমে ডুকলে অবাক হয়ে যায়।
” আরে ঈশু কি করছো তুমি সব জামা বের করলে কেন?(অবাক হয়ে)
“আমি কি পড়বো বিয়েতে মনের মতো কিচ্ছু খুজে পাচ্ছিনা।(কান্নার ভাব করে)
” এতো জামার মাঝে তুমি বলো খুজে পাচ্ছো না পাগল তুমি?
“হ্যা আমি পাগল (রেগে)আমাকে শপিং করিয়ে সত্যি দিবে না (ঠোঁট উলটে)
” না দিবোনা এতো জামার মাঝেও আবার শপিং (সিরিয়াস ভঙ্গিতে)
“লাগবেনা তোমার শপিং। আমি এই রুমে আর থাকবো না লিজার সাথে ঘুমাবো আজ।
ঈশা পা বাড়িয়ে যেতে নিলেই পেছনে থেকে হাত টেনে মোচড়ে ধরে ঈশান।ঈশা তার সাথে থাকবেনা শুনেই মেজাজ বিগড়ে যায় ঈশানের।
” এই লিজার সাথে থাকবে মানে এই রুম থেকে গেলে পা ভেঙ্গে ফেলবো বলে দিলাম।(রেগে)
“ভাঙ্গলে ভাঙুন আমি লিজার সাথেই ঘুমাবো আপনার সাথে না (নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে)
” এই বিয়ের আগে কি কোথাও সাইন করেছো আমাকে ছাড়া ঘুমাতে আমি পারমিশন দিয়েছি(শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)
“বিয়ের আগে কি আমি কোথায় সাইন করেছিলাম যে আপনাকে ছাড়া ঘুমাতে পারবো না(নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করে)
” আমার তো মনে হয় প্রত্যাকটা স্বামীর এই অঙ্গীকার রাখা প্রয়োজন বিয়ের পর স্ত্রীরা দিনে যেখানে ইচ্ছে থাকবে রাতে ঠিক এসে চুপ চাপ স্বামীর বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়বে।
“হ্যা এমন অঙ্গীকার থাকলে কেউ আর বিয়ে করতো না।
” অবশ্যই করতো যেমনটা তুমি করেছো!
“আমি আবার কি করলাম!
” এখন সাইন করবে!
“মানে?
ঈশান পকেট থেকে ঈশার সামনে ধরে যেখানে লেখা ঈশানকে ছাড়া সে এক রাত ও কোথাও থাকতে পারবেনা।যদি থাকে তবে তার জন্য ঈশানের পানিশমেন্ট রেডি।
” আপনি পাগল হয়ে গেছেন(অবাক হয়ে ঈশা)
“আমি যানতাম তুমি এমনটাই করবে তাই নিচে বসে এই কাগজটা লিখলাম।আমি ভালো করেই যানি স্ত্রীরা কিছু পারুক আর না পারুক রাতে অন্য রুমে ঘুমোবার হুমকি দিবেই।আর তুমি যেহেতু ক্ষেপেছো তাহলে আজ আমায় এই হুমকি দিবে তাই চট পট কাগজটা তৈরি করলাম।নাও সাইন করো!
” করবো না।
ঈশার কথায় কোন কাজ হলো না ঈশান ঠিকি ঈশাকে দিয়ে সাইন করিয়ে নেয়।ঈশা রেগে বলে,
“আমি লিজার কাছেই ঘুমাবো!(রেগে)
” যাও না যাও, রাতে ঠিকি তুলে এনে আমার পাশে রেখে দেবো।(হেসে)
“পাগল (রেগে)
” তোমার জন্য (ঈশাকে জড়িয়ে ধরে).।
#চলবে…..