#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 36
এভাবে কেটা গেলো মেহেদী অনুষ্ঠান
আজ হলুদ,,
রুদ্র দের বাসা থেকে হলুদ এসে পড়েছে।সবাই আজ কে হলুদ শাড়ি পরেছে। কিছুক্ষন পর আমাকে হলুদ মাখানো শুরু হলো আমাকে হলুদ মাখিয়ে ভাইয়াদের ও মাখানো হলো,,,সেই হলুদ রুদ্র দের বাসায় পাঠানো হলো মেহেক আর রুশার জন্য,, ভাবিন আর বিশাল তো সারা আর সামিয়া কে ভুত বানিয়ে দিয়েছে হলুদ মাখিয়ে সবাই ওদের দেখে হাসতে হাসতে শেষ।
এই দেখে সামিয়ার বাবা সামিয়া কে বোকা ঝকা করেছিলো যে ওদের সাথে বেশি না মিশতে ওরা বড় পরিবারে ছেলে আমাদের কি ওদের সাথে মানায় তারপর আমরা সবাই ওর বাবা কে বুঝিয়ে ছিলাম যে ওসব কিছু না ভালোবাসা টাই বড়।।অনেক বুঝানোর পর ওর বাবা আমাদের বলল সামিয়ার বাবাঃতোমরা অনেক ভালো।।আল্লাহ তোমাদের আরো আরও ভালো করুক।
রাতের বেলা
আমাকে হলুদের অনুষ্ঠানের জন্য সাজানো হচ্ছে।
আমি একটা হলুদ কালারের সুতির লেহেঙ্গা পরেছি।চুলগুলো মাঝখান দিয়ে সিতা করে দুইপাশ দিয়ে র্কাল করে ছেড়ে দিলাম।মাথায় টিকলি,গলায় ফুলের হার,কানে ফুলের দুল।হালকা সাজ আর ওড়না টা একসাইডে ছেড়ে দেয়া।
সামিয়া সারা আজকে হলুদ আর পাতা কালারের মিক্স করা শাড়ী পরেছে। আর হালকা সেজেছে। চুলগুলা খোপা করেছে।কানে বড় ঝুমকা পরেছে।
আর ভাইয়ারে আজকে হলুদ কালারের পাঞ্জাবী পরেছে।বিশাল আর ভাবিন আজকে পাতা কালারের পাঞ্জাবী পরেছে।
চার জনকেই সেই লাগছে।
রুদ্ররা সবাই চলে এসেছে।আমার হিরো সাহেবকে আজকে সেই লাগছে।রুদ্রও আজকে হলুদ কালারের পাঞ্জাবী পরেছে।
রুশা আর মেহেককেও সেই লাগছে।
কিছুক্ষন পর হল রুমের সব লাইট অফ হয়ে গেল।আর লাইটের ফোকাস সিড়ির দিকে দেয়া হলো।
আমি আর আমার ভাইয়ারা নামছি।আমার দুইপাশে আমার দুইভাই।
আমি সারা রুমে চোখ বুলিয়ে রুদ্রকে খোজার চেষ্টা করলাম কিন্তু কোথাও পেলাম না।রুশা আর মেহেকেও পেলাম না।একটু পর হলরুমের দরজার দিকে লাইটের
ফোকাস দেয়া হল।
দেখলাম রুদ্র,রুশা আর মেহেক আসছে।
আমার ভাইয়ারা তো দুইজনকে দেখে হা হয়ে তাকিয়ে আছে।কিন্তু আমি রুদ্রের দিকে তাকালাম না।কারন আমার প্রচুর রাগ হচ্ছিলো। কি দরকার ছিল এত সেজে আসার।সব মেয়েরা রুদ্রকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে।
আমি রুদ্রের দিকে তাকাচ্ছি না দেখে রুদ্রের খুব রাগ হল। আমাদের ছয়জনকে স্টেজে বসানো হল।
রুদ্রকে আমার পাশে বসানো হলো।
রুদ্রঃকি হয়েছে জানপাখি আমার সাথে কথা বলছো না কেন??(রাগিভাবে ফিসফিস করে)
আমিঃএত সেজে আসার কি ছিল??(রাগিভাবে).দেখেছ সব মেয়েরা তোমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
আমার কথা শুনে রুদ্র হেসে দিল।
রুদ্রঃপাগলি একটা।
আমিঃ হুহহ।
রুদ্রঃতোমার দিকে ও তো সব ছেলেরা তাকিয়ে আছে।তারবেলায় কিছু না!!!!
আমি রুদ্রের দিকে রাগিভাবে তাকালাম।
রুদ্র আবার হেসে দিল।এবার আমিও হেসে দিলাম।
সামিয়াঃকি হয়েছে এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন??
বিশালঃআমি তাকিয়ে থাকব না তো কে তাকিয়ে থাকবে??(রেগে)
সামিয়াঃআপনার সাথে কথা বলাই বেকার।
এই বলে চলে যেতে চাইলে বিশাল হাত ধরে টান দিয়ে গালে একটা কিস করে চলে গেলো।
আর সামিয়া হা হয়ে রইলো।
আর অন্যদিকে
ভাবিন সারার পিছনে পিছনে যাচ্ছে।
সারাঃসমস্যা কি আপনার?
ভাবিনঃকোন সমস্যা নাই।
সারাঃতাহলে এভাবে পিছনে লেগে আছেন কেন?
ভাবিনঃআমার ইচ্ছা।
সারাঃধুর।।
আস্তে আস্তে আমাদের অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেল।
রুদ্ররা সবাই চলে গেলো।
আর আমরা সবাই ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।
আমি ফ্রেশ হয়ে রুমে আসলাম
হঠাৎ কে জেনো আমাকে টান দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।
আমি এমন টা হওয়াতে খুব ভয় পেয়ে যাই।চোখ তুলে দেখি রুদ্র আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
আমিঃকি হয়েছে হাসছো কেনো?
রুদ্রঃতোমায় দেখে হাসছি। এতো ভয় পাচ্ছো কেন আমি কি পরপুরুষ??
আমিঃহ্যা কারন এখনো আমাদের বিয়ে হয়নি।আর তাছাড়া তুমি এখন এখানে কেন??
রুদ্রঃসবাই তোমাকে হলুদ মাখিয়েছে আর আমি মাখাবো না তা কি করে হয়।
আমিঃ মানে?
রুদ্রঃমানে হচ্ছে আমি তোমাকে হলুদ মাখাবো।
রুদ্র আমাকে আর কিছু না বলতে দিয়ে আমার ঘাড়ে হলুদ মাখিয়ে দিল আর আমি কেপে উঠলাম।সারা গলায় মাখিয়ে দিচ্ছে। আর আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি চোখ বন্ধ করে আছি কারন ওর দিকে তাকানোর সাহস পাচ্ছি না।চোখ বন্ধ করে অনুভব করছি।আস্তে আস্তে রুদ্র আমাকে হলুদ মাখিয়ে দিচ্ছে।আমি বারবার কেপে উঠছি।রুদ্র আমার পেটে বার বার স্লাইড করছে আর হলুদ দিচ্ছে আমি কাপতেছি।
আমার এই কেপে উঠা বরাবরই রুদ্রের ভালো লাগে।রুদ্র আর কিছু না ভেবে এই কাপা কাপা ঠোট দেখেই আমার ঠোট এর সাথে চেপে ধরলাম।খুব যত্ন সহকারে কিস করতেছি আর ওর পেটে স্লাইড করে যাচ্ছে। আজ আর আমি বাধা দিচ্ছি না।অনেক্ষন কিস করার পর আমাকে ছেড়ে দিল।
আমি অনেক্ষন পর ছাড়া পেয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি। হঠাৎ আমার গাল রুদ্রর গালে ঘসা দিলাম
রুদ্র ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলো।
আমিঃবাহ রে তুমি দিছো আমি দিবো না।রুদ্র আমাকে জড়িয়ে ধোরলো আর বললো।
রুদ্রঃখুব ভালোবাসি তোমায়।কখনো ছেড়ে যেওনা বাচতে পারবো না।
আমিঃ ওর কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো আমি বলবাম না কখনো ছেড়ে যাবো না।অনেক ভালোবাসি তোমায়।
পরের দিন।।
আজ বিয়ে সকাল থেকেই খুব মন খারাপ আমার আজ এ বাড়ি থেকে চলে যেতে হবে ভাইয়াদের ছেড়ে
বিশাল – ভাবিন খুব চিন্তায় আছে, কিভাবে তাদের মা বাবাকে জানাবে সারা আর সামিয়ার ব্যাপারে।এই নিয়ে আমার কাছে আসে আর বলে।
বিশাল-ভাবিনঃতুই কিছু কর তোর কথা সবাই শুনে।
আমিঃ আচ্ছা দে কল তাদের সাথে কথা বলি দুই পরিবার কে একসাথে ভিডিও কল দিলো আর আমি তাদের সাথে কথা বলতেছি।
আমিঃআসসালামু আলাইকুম আন্টি আংকেল কেমন আছ?
বিশাল-ভাবিন এর বাবা মাঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম মা। আলহামদুলিল্লাহ্ আমরা ভালো আছি।মা আমরা অনেক চেয়েছিলাম তোমাদের বিয়েতে যাওয়ার জন্য কিন্তু আমরা যেতে পারলাম না তোমরা মন খারাপ করো না তোমার বউ ভাতে অবশ্যই আসবো।
আমিঃনা আন্টি আমি মন খারাপ করি নি।তোমরা অবশ্যই আসবে কিন্তু।আর আমার একটা কথা বলার ছিলো।
ওনারাঃ হ্যা মা বলো।
আমিঃআসলে এই কথা বলার জন্যই আপনাদের একসাথে কল দেওয়া।
ওনারাঃহ্যা হ্যা বলো
আমিঃআসলে বিশাল-ভাবিন আপনাদের বলতে ভয় পাচ্ছিলো।তাই আমি বলছি,,,আসলে বিশাল সামিয়াকে ভালোবাসে আর ভাবিন সারা কে।। মেয়ে দুটা খুবি ভালো অনেক মিষ্টি।তোমাদের পছন্দ হবেই।ওনারা কথা টা শুনে গম্ভীর হয়ে রইলো আর বললো বিশাল-ভাবিন কে দেও
আমি ঃএই নাও( মন খারাপ করে)
বিশাল-ভাবিনঃভয়ে ভয়ে হ্যা বলো
ওনারাঃফারিয়া যা বলছে সব সত্যি??(গম্ভীর হয়ে)
বিশাল-ভাবিনঃহ্যা (মাথা নিচু করে,,,)
ওনারাঃযাদের পছন্দ করিস ওরা কোথায়?
বিশাল-ভাবিনঃ ওরা এ বাড়িতেই আছে,, ফারিয়ার বিয়েতে এসেছে।
ওনারাঃ আমাদের সামনে আনো যাও
আমি গিয়ে সারা আর সামিয়া কে আনলাম।
আংকেল আন্টিদের সামনে বসালাম সবাই মাথা নিচু করে আছে
বিশালের মাঃ বিশাল-ভাবিন তোমরা বাহিরে যাও।
ওরা চলে গেলো
ভাবিনের মাঃমা তোমাদের নাম কি?
আমার নাম সারা।
আমার নাম সামিয়া।
ভাবিনের মাঃ আচ্ছা মা তোমাদের কি আর কাওকে পছন্দ হলো না,,,এই আমাদের বদমাশ হাড্ডী ছেলেদের পছন্দ হলো,,,,
বলি আমাদের ছেলেদের পছন্দ আছে বলতে হবে।কিছু মনে করো না না ওরা খুব জালিয়াছে না তোমাদের।। ওদের হয়ে আমি মাফ চাচ্ছি।
সারা- সামিয়া: না না আন্টি মাফ চাইবেন না।
ওনারাঃআন্টি নয় এখন থেকে মা বাবা বলবা আমাদের। ফারিয়ার মতো তোমরাও আমাদের মেয়ে।শুনো বিশাল-ভাবিন কে কিছু বলিও না ওদের সারপ্রাইজ দিবো,,,ওদের ডেকে আনো
বিশাল-ভাবিন আসলো
ওদের মা বাবাঃ একি তোমরা নাকি ওদের খুব জ্বালাও
বিশাল-ভাবিনঃ অবাক হয়ে না তো
ওনারাঃ মিথ্যা কেনো বলছো,,,,,
বিশালঃ না মা আমরা ওদের খুব ভালোবাসি(অসহায় ফেস করে)
ওনারাঃগম্ভীর হয়ে ঠিক আছে।
এবার আমরা হেসে দিলাম বিশাল-ভাবিন তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে
ওনারাঃসত্যি বউমা রা অনেক ভালো,,,, আমরা ফারিয়ার বউভাতে তোমাদের বিয়ের ডেট ফিক্স করবো ততোদিন কিন্তু বউমা দের জ্বালাবা না।
বিশাল-ভাবিনঃখুশি হয়ে ঠিক আছে।
বিশাল-ভাবিন এর মনের আশা আবশেষে পূরন হলো।।।৫জুটি তাদের ভালোবাসার মানুষ কে অবশেষে পাচ্ছে।
চলবে………..