you are only my queen part-37+38

0
3630

#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 37

বিয়ের দিন

আমাদের তিনজনকে সাজানো হচ্ছে।আজকে আমি রুদ্রের দেওয়া লেহেঙ্গা পরেছি। সারা আর সামিয়া বাবা মায়ের সাথে বিশাল আর ভাবিনের বাবা মা এসে কথা বলল।সারার বাবা মাও মেনে নিল।কারন তাদের না মেনে উপায় নেই।
সারা আর সামিয়াকে বিশাল আর ভাবিনের মায়ের দেওয়া লেহেঙ্গা পরেছে।
আমাদের তিনজনের সাজ শেষ হতেই আমাদের রুমে আমার দুইভাই আসলো।
আমাকে দেখে আমার দুইভাই আমার কাছে এসে আমাকে কালো টিকা লাগিয়ে দিল আর দুইজনেই আমাকে একসাথে জড়িয়ে ধরল আর কান্না করে দিল।
আমিঃতোমাদের কি আমার সাজ নস্ট করার প্লেন আছে?(কান্না করে)
সারাঃআমরা তো আর কেউ না তাই আমাদের জন্য কারোর খারাপ ও লাগে না।
বড়ভাইয়াঃতোদের জন্য খারাপ লাগার কি আছে?তোরা তো আমাদের সাথেই থাকবি।
আমিঃহুম।
ছোটভাইয়াঃআজকে আমার মিস্টিকে অনেক সুন্দর লাগছে।
আমিঃদেখতে হবে না কাদের বোন।
বড়ভাইয়াঃহুম এখন নিচে চল। একটু পরেই সন্ধ্যা হয়ে যাবে।
আমিঃতোমাদের ও আজকে খুব সুন্দর লাগছে।
বড়ভাইয়াঃচল এবার সবাই নিচে যাই।
আমিঃতোমরা সবাই যাও আমি আসছি।
ছোটভাইয়াঃতারাতারি আয়।
আমিঃহুম।
ভাইয়ারা যেতেই আমি রুদ্রকে কল ব্যাক করলাম।
আমিঃহ্যালো.
রুদ্রঃ…………………
আমিঃএই রে মনে হয় ভ্যাম্পায়ার হালা আবার ক্ষেপছে!!এখন কি করি??(মনে মনে)
আমিঃসরি রাজা মশাই। আসলে ভাইয়ারা ছিলো। তাই ধরতে পারি নি তোমার কল।
রুদ্রঃতোমরা হলে কখন পৌছাবে???
আমিঃএই তো একটু পরেই বের হব।
রুদ্র আর কিছু না বলে কল রেখে দিল।
আমিঃযা কি হল!!!!!!এখন আবার আমাকে ওই ভ্যাম্পায়ার বজ্জাতের রাগ ভাঙাতে হবে।
আমি আর কিছু না ভেবে নিচে গেলাম।
আজকে আমার দুইভাই আমার সাথে মিলিয়ে শেরওয়ানী পরল।

আমি আজকে গাঢ় লাল কালারের লেহেঙ্গা পরেছি।চুলগুলো একসাইডে নিয়ে এনে গর্জিয়াসভাবে বেনি করা।তারপর মাথায় ওরনা টা আটকানো।ভারী মেকআপ আর ভারী গহনা।

আমার ভাইয়ারা আজকে লাল কালারের শেরওয়ানী পরেছে।একদম হিরোদের মতো লাগছে।
বিশাল আর ভাবিন সোনালি কালারের শেরওয়ানী পরেছে।
আর সামিয়া আর সারা গোল্ডেন কালারের লেহেঙ্গা।

আমরা বের হয়ে পরলাম হলের উদ্দেশ্যে। আমাদের বিয়ের জন্য ঢাকার সবচেয়ে বড় হল বুক করা হয়েছে।
আমরা পৌছে গেলাম।আমরা যার যার গাড়ি থেকে নেমে দাড়াতেই আমাদের ওপর ফুল পরা শুরু হল।
আমরা হলে গিয়ে দেখি রুদ্ররা হলে পৌছে গিয়েছে।
আমি রুদ্রকে দেখে হা হয়ে গেলাম।নীল কালারের শেরওয়ানীতে রুদ্রকে একদম সেই লাগছে।
রুশা আর মেহেকেও সেই লাগছে।
দেখতে দেখতে আমাদের বিয়েও হয়ে গেল।
রুদ্র আমার সাথে তেমনভাবে কথা বলে নি।
আমি বিদায়ের সময় আমার ভাইয়াদের ধরে অনেক কান্না করলাম।আমার ভাইয়ারাও কান্না করলো।
বড়ভাইয়াঃআমাদের বোনটাকে দেখে রেখ রুদ্র।(কান্না করতে)
ছোটভাইয়াঃওকে কোনদিনও কস্ট দিয় না।
রুদ্রঃআমার জীবন থাকতে আমি ওকে কোনদিনও কস্ট দিব না।
রুশা আর মেহেকও অনেক কান্না করল।

in khan vila

সকল নিয়ম কানুন শেষ করে আমাকে রুদ্রের ঘরে নেওয়া হল।
আমাকে রুদ্রের ঘরে দিয়ে সবাই চলে গেলো।
আমি বিছানায় না বসে বারান্দায় চলে গেলাম।কিছুক্ষন পর রুদ্র এসে আমাকে না পেয়ে বারান্দায় গেল।
আমি বুঝতে পেরে বললাম।
আমিঃআজকেও আমার ওপর রাগ কতে থাকবে??
রুদ্র এবার পিছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল
রুদ্রঃউহুম আমি তোমার ওপর রাগ করে নেই।
আমিঃচল না ছাদে যাই।
রুদ্রঃচল।
তারপর রুদ্র আমাকে কোলে করে ছাদে নিয়ে গেল।
আমরা দোলনায় বসলাম।রুদ্র আমার কোলে মাথা রাখল।
রুদ্রঃআমাকে কখনো একা রেখে কোথাও যাবে না।অবশ্য আমি তোমাকে যেতে দিবও না।
আমি কিছু না বলে শুধু হাসলাম।
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আমাদের দুইজনের জন্য সামনে অনেক বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।

ডাইরিটা এখানেই শেষ হয়ে গেল।ডাইরিটা বুকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমিয়ে গেল রুদ্রাণী।
একটু পরে রুদ্র রুদ্রাণীর রুমে এসে রুদ্রাণীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল
রুদ্রঃতুই আমার মতো দেখতে হলেও তোর স্বভাব ঠিক তোর মায়ের মতো।
রুদ্রাণীঃবাবা তুমি কাদছো কেন??
রুদ্র তারাতারি চোখ মুছে বলল
রুদ্রঃতুই ঘুমাস নি?
রুদ্রাণীঃনা।জানো না ভাইয়াকে ছাড়া আমার ঘুম আসে না।
ফারানঃআমি তো জানি আমার টুকু আমাকে ছাড়া ঘুমাতে পারে না তাই তো আমি চলে এসেছি।
তাকিয়ে দেখে ফারান দাঁড়িয়ে আছে।
রুদ্রঃতোর বোনকে তুই সামলা।আমি গেলাম।

ফারান আর রুদ্রাণী আমার আর রুদ্রের ছেলে মেয়ে।ফারানের বয়স ১৬ আর রুদ্রাণীর বয়স ১২।ফারান দেখতে একদম আমার মত হলেও স্বভাব একদমি রুদ্রের মতো। আর রুদ্রাণী দেখতে রুদ্রের মত হলেও স্বভাব একদম আমার মত।

চলবে………………..

#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 38(extra)

রুদ্রাণীর রুম থেকে রুদ্র ছাদে চলে গেলো।
আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো।ঠিক তখনি কেউ তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল।
রুদ্র বুঝতে পারলো কে তাকে জড়িয়ে ধরেছে।
রুদ্রঃতুমি কখন এলে???(অবাকের সুরে)
এই বলেই আমাকে সামনে এনে জড়িয়ে ধরল।
আমিঃআমি তো একটু আগেই আসলাম।
এসে রুদ্রাণীর রুমে গিয়ে দেখি ফারান আর রুদ্রাণী ঘুমিয়ে আছে।তাই তাদের আর ডাকলাম না।
রুদ্রঃআমাকে বলতে পারতে আমি এয়ারপোর্টে গাড়ি নিয়ে যেতাম। (রেগে)
সবকিছুতেই তোমার ছেলেখেলা।
এই বলে রেগে রুমে চলে গেলো।
আমিঃসব কিছু পরিবর্তন হলেও এই ভ্যাম্পায়ারের রাগের কোন পরিবর্তন হল না।
আমি আর কিছু না ভেবে রুমে গেলাম।গিয়ে দেখি আমার রাজা মশাই মুখ কালো করে বসে আছে।
আমি গিয়ে রুদ্রের পাশে বসলাম।
আমিঃসরি।আর এমন হবে না।আসলে আমি সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য……..
আমি আর কিছু বলার আগেই রুদ্র আমার ঠোট জোড়া দখল করে নিল।
আমিও আর কিছু বললাম না।কারন আমি জানি এই মশাইয়ের যখন রাগ হয় তখনি এই কান্ড ঘটায়।
প্রায় ১০ মিনিট পর আমাকে ছাড়ল।
আমি ছাড়া পেয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলাম।
রুদ্রঃতুমি তো জানো আমার রাগ কমানোর উপায় এটাই।
আমিঃদুই ছেলেমেয়ের বাবা হয়েও আর ঠিক হলা না।
রুদ্রঃকি করবো বল তুমি তো দিন দিন আরও সুন্দর হয়ে যাচ্ছ।তাই তো আমারও নিজেকে কন্ট্রোল করা সম্ভব হচ্ছে না।
আমিঃআচ্ছা হয়েছে হয়েছে।চল এখন বাবা মার সাথে দেখা করে আসি।
এই বলে আমি বাবা মার সাথে দেখা করে তাদের খাবার খাইয়ে রুমে চলে আসলাম।
আমিঃতা এই তিনদিন তোমার কেমন কাটলো?
রুদ্রঃখুবই বাজে ভাবে কেটেছে..(বাচ্চাদের মতো মুখ করে)
আমি কিছু না বলে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি।
রুদ্রঃতা লন্ডনে এই তিনদিন তোমার কেমনে কাটলো?রুশা আর মেহেকরা কেমন আছে?
আমিঃভালো আছে।আর তাদের বেবিরা আর আমার ভাইয়ারাও ভালো আছে।
তারা সবাই তোমাদের কথা বলল।
রুদ্রঃআচ্ছা বাদ দাও।তুমি অনেক টায়ার্ড। আজকে ছাড় দিলাম কিন্তু কালকে থেকে আর ছাড় দিচ্ছি না।
আমি মুচকি হাসলাম।তারপর রুদ্র আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেল।

সকালে…….

আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি রুদ্র আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমিঃকি দেখছো?
রুদ্রঃকিছু না।
আমিঃউঠ তারাতারি।ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেতে এসো।নাহলে অফিসের দেরি হয়ে যাবে।
রুদ্র আমাকে একটা কিস দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল।
আমিও ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম।গিয়ে দেখি কাজের বুয়া নাস্তা রেডি করে দিয়েছে।
আমি নিচে যেতেই ফারান আর রুদ্রাণী আমাকে জড়িয়ে ধরল।
রুদ্রাণীঃতুমি কখন এলে মা??
আমিঃকালকে রাতে।তা কেমন আছিস তোরা?
ফারানঃকালকে এলে আর তুমি এখন আমাদের সাথে দেখা করলে??
আমিঃআরে তোরা তো ঘুমিয়ে ছিলি।তাই তোদের আর বিরক্ত করি নাই।
রুদ্রাণীঃও আচ্ছা।
রুদ্রঃসব আদর শুধু মাকেই আমি তো কেউ না।
তারপর দুইজন গিয়ে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরল।
তারপর মা বাবাও আসলো। আমরা সবাই মিলে নাস্তা করে নিলাম।তারপর রুদ্র অফিসে চলে গেলো। বাবা আর মা তাদের কোন ফ্রেন্ডের বাসায় গেছে।
আসুন এবার ফারান আর রুদ্রাণী সম্পর্কে কিছু জেনে নেই।

ফারান খান সুপ্ত।এবার ১০ম শ্রেণির ছাত্র।স্কুলের ক্রাস বয়।যেমন চেহারা তেমন ভাব।সহজে কারোর সাথে কথা বলে না।দেখতে একদম আমার মতো।রুদ্রের থেকেও বেশি রাগি,বদমেজাজী আর জেদি। বোন আর ফ্যামিলি ওর সব।স্কুলের ফাস্ট বয়।

রুদ্রাণী খান সুপ্তা।এবার ৭ এ পড়ে।দেখতে খুবই সুন্দরী। কিন্তু একদম শান্ত আর মিশুক।রুদ্রাণীও ভালো ছাত্রী।

কিন্তু ওরা দুইজনেই ভ্যাম্পায়ার।কিন্তু এটা তাদের দুইজনের কেউই জানে না

আমি কফি নিয়ে আমার রুমের বেলকনিতে বসে আছি।এমন সময় রুদ্রাণী আমার রিমে এসে আমার সামনে বসলো।
আমিঃকিছু বলবি?
রুদ্রাণীঃহুম।আচ্ছা মা এই ডায়েরিটা দেখো তো?
আমিঃতুই এইটা কই ফেলি??(ভ্রু কুচকে)
ফারানঃসেটা পরে বলবো। আগে বল তুমি আর পাপা যদি ভ্যাম্পায়ার হও তাহলে আমরাও তো ভ্যাম্পায়ার। তাই না???
আমিঃহুম।
রুদ্রাণীঃআচ্ছা এবার পরের কাহিনী টা বল?
আমিঃকিসের কাহিনী?
ফারানঃডায়রির পরের কাহিনী..
আমিঃতোরা জেনে কি করবি?
ফারানঃ বল না মা…..
আমিঃআচ্ছা শুন তাহলে।

চলবে…….!