অত্যাচারী বউ
লেখকঃ আবু সাঈদ সরকার
পর্বঃ ৪
মায়াঃ আচ্ছা আমার বিয়ের পর সাঈদ এর কী হবে….
।
ধুর আমিও না তাকে নিয়ে আমার চিন্তা ভাবনা কিসের…
।
দেখতে দেখতে প্রায় ৯ দিন কেটে গেলো কাল ডিভোর্স পেপার চলে আসবে কিন্তু এই কয়েক দিন এ আমার মনটা মনে হয় সাঈদ এর কাছে বন্দি হয়ে গেছে..
।
মায়াঃ বাইরে থেকে ফিরতে একটু বেশিই রাত হয়ে গেছে তাই বাসায় ডুকতেই যা দেখলাম….
।
পুরো বাসাটা ঘুট ঘুটে অন্ধকার…
।
কোথাও আলোর মুখটাই দেখা যাচ্ছে না বাসার সবাই কোথায় চলে গেলো…
।
ঠিক তখনি…
।
সাঈদঃ হ্যাপি বার্থডে টু ইউ মায়া……
।
মায়াঃ ইসস আজ তো আমার জন্ম দিন ছিলো আর আমিই ভুলে গেছিলাম….
।
সাঈদঃ আপনি ভুলে গেলেও আমি কিন্তু ভুলে যাই নি…
।
মায়াঃ ?????
।
।
সেদিনের রাত টা ভুলে যাওয়ার মতো ছিলো আমার লাইফের সব থেকে ভালো একটা দিন ছিলো কিন্তু তার পরের দিন যে এতটা ভয়ানক দিন আসবে সেটা কোনো দিন কল্পনাও করতে পারি নি….
।
।
পরের দিন …
।
সকাল বেলা এসে আকাশ ডিভোর্স পেপার গুলো দিয়ে চলে গেছে শুধু মাএ অপেক্ষা সাইন করানোর….
।
দেখতে দেখতে সকাল ১২ টা বেজে গেছে…
।
মায়াঃ এই কাগল গুলোতে সাক্ষর করে দিন…
।
।
সাঈদঃ কীসের কাগজ এ গুলো…
।
মায়াঃ ডিভোর্স পেপার..
।
সাঈদঃ মানে কী…
।
মায়াঃ আপনাকে আমাক ডিভোর্স দিতে হবে যাতে আমি আকাশের সঙ্গে বিয়ে করতে পারি…
।
সাঈদঃ এটাই কী আপনার শেষ ইচ্ছে একটু ভেবে দেখুন না প্লিজ…
।
মায়াঃ ওত ভাবার সময় নেই আপনি সাইন করে দিয়ে যেখানে ইচ্ছে চলে যেতে পারেন…
।
সাঈদঃ আমার যাওয়ার মতো কোনো জায়গা তো নেই…..
।
মায়াঃ তো আমি কী করবো….
।
সাঈদঃ কিছু না তার পরে না চাইতেও সাইন করে দিলাম…
।
মায়াঃ এই যে শুনুন…
।
সাঈদঃ হ্যা বলুন…
।
মায়াঃ কোথায় যাবেন কিছু ভাবলেন…
।
সাঈদঃ এখান থেকে অনেক দুর যেখানে গেলে সব কষ্ট গুলো ভুলে নতুন করে বাঁচা শিখতে পারবো….
।
।
মায়াঃ একটু দাড়ান…
।
তার পর লোকার থেকে পাচ লাখ টাকা বেড় করে…
।
এই নিন এগুলো রাখুন…
।
সাঈদঃ থাক এসবের দরকার নেই…
।
মায়াঃ রাখলে সমস্যা টা কোথায় মনে করেন এটাই আমার শেষ স্মৃতি হয়ে রবে আপনার কাছে….
।
সাঈদঃ আচ্ছা তার পর টাকা গুলো সোজা রেলস্টেশনের উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম…
।
।
রেলস্টেশনে এসে ট্রেন উঠতেই ট্রেনের টিটি…
।
টিটিঃ স্যার আপনি কোথায় যাবেন…
।
সাঈদঃ যত দুর এই ট্রেন যাবে তত দুরে…
।
মায়াঃ সাঈদ যাওয়ার পর থেকে বাসাটা খালি খালি মনে হচ্ছে আগের মতো আর কিছু নেই সব হা হা কার করছে…
।
কেনো জানি না বার বার মনে হচ্ছে আমি আমার জীবনের সব চাইতে বড় ভুলটা করে ফেলেছি…..
।
পরের দিন…
।
মায়াঃ মনটা কেমন যানি সাঈদ এর জন্য ছটফট করছে এই তো সামনে থাকলে ইচ্ছে মতো বোকতাম কিন্তু এখন তো সেটাও সম্ভব না…
।
সুন্দর করে সেজে গুজে কাজি অফিসে চলে আসলাম কেনো না আজ আমার আর আকাশের বিয়ে….
।
।
বারান্দায় বসে আকাশের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম কিন্তু সে এখনো আসছে না কেনো…
।
ঠিক তখনি মনে হলো আকাশ ভিতরে কারো সাথে কথা বলছে সেটা দেখতে যখন ভিতরে যাচ্ছিলাম তখন যা শুনলাম…
।
আকাশঃ হুম জানি তো…
।
অচেনা কন্ঠেঃ আকাশ তুই এই মেয়েটাকে বিয়ে করবি তোর মাথা নষ্ট নাকি শুনেছি মেয়েটার নাকি একটা বিয়ে হয়েছে…
।
আকাশঃ চুপ কর আস্তে বল আসলে আমি তো সিরিয়াস তাকে বিয়ে করছি তুই মেয়েটাকে দেখছিস সেই লেভেলের মাল একটা এত দিন অপেক্ষা করেছিলাম তার শরীরটাকে ভোগ করার জন্য যখন সুযোগটা আসছে তাহলে দেরি কেনো বিয়ে করে শরীরটাকে যখন ভোগ করা শেষ হয়ে যাবে তখন রাস্তায় ছুরে ফেলে দিবো চাইলে তোরাও রাত কাটাতে পারিস আমার কোনো আপওি নেই ।
অচেনা কন্ঠেঃ যাক তাহলে কথায় বাড়িয়ে লাভ নেই দ্রুত কাজটা সেরে ফেল আর কথাটা যেনো কেউ না জানতে পারে…
।
আকাশঃ টেনশন নিস না আমরা তিনজন ছাড়া কেউ জানবে না এবার চুপচাপ বাইরে চলে আর এমন ভাব নেয় যেনো কিছুই জানিস না তোরা…
।
।
মায়াঃ কথা গুলো শুনার পর পা থেকে মাটিটা সরে গিয়েছে আকাশ এত দিন মিথ্যা ভালোবাসার অভিনয় করে এসেছে আমার সঙ্গে…..
।
আর আমি তার মিথ্যা ভালোবাসার জালে জরিয়ে নিজের জীবনটাকে ধব্বংস করে ফেললাম….
।
এই বিয়েটা আর সম্ভব না…
।
আজ বুঝতে পারলাম আমার জন্য সাঈদ এ পারফেক্ট ছিলো কিন্তু আমি তাকে তো হারিয়ে ফেললাম সেখান থেকে বেড়িয়ে এসে সোজা সাঈদের বাসায় চলে আসলাম ভেবেছিলাম সে তার বাসায় আসবে কিন্তু না সে আসে নি তার পর থেকে প্রত্যকটা দিন তাকে সব জায়গায় পাগলের মতো খুজেছি কিন্তু কোথাও পেলাম না….
।
দেখতে দেখতে পাচটা বছর কেটে গিয়েছে আজও তার খোজ টুকু পেলাম…
।
বাবার শেষ ইচ্ছে ছিলো আমি যেনো একটা জব করি তাই বাবার শেষ ইচ্ছে টা পুরণ করতে একটা কোম্পানিতে জব করছি…
।
শুনলাম আজ নাকি us থেকে বড় অফিসার আসছে তাই সবাইকে ভালো কাপড় চুপড় পড়ে আসতে বলেছে আমাদের অফিসের বস….
।
।
বিকেল ৪ টা সবাই us থেকে আসা স্যার এর অপেক্ষা করছে….
।
।
ঠিক তখনি প্লেন থেকে যাকে নামতে দেখলাম তা দেখে নিজের চোখকে নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যাকে এত দিন পাগলের মতো খুঁজেছি সে এখন ঠিক আমার সামনেই us থেকে বড় অফিসার টা আর কেউ নয় সাঈদ…..
।
।
সাঈদঃ পাচ বছর পর নিজের দেশে ফিরলাম তাও আবার সুবাদে কত স্মৃতি জরিয়ে আছে এ দেশের মাটিতে…
।
এত দিনে মনে হয় মায়ার বাচ্চারা হাঠতে শিখে গিয়েছে….
।
মায়ার পরে কাউকে বিয়ে করা আমার সম্ভব ছিলো না তাই আর কোনো দ্বিতীয় বিয়েটা করা হয় নি..
।
।
মায়াঃ আমি সত্যি কী সাঈদকে দেখছি নাকি মনের ভুল না আমি সত্যি দেখতে পাচ্ছি তাকে…
।
সে আগের থেকে অনেকটা চেনজ হয়ে গেছে আগের মতো আনস্মার্ট নেই মুখে সেই হাসি টা নেই সময়ের সাথে সব বদলে গিয়েছে হয়তো এতদিনে আরেকটা বিয়ে করে সুখেই রয়েছে আর তাছাড়া বিয়ে করবে নাই বা কেনো আমি তো কম খারাপ ব্যবহার করি নি….
।
।
তার পর সবাই মিলে তাকে ভিতরে নিয়ে আসলো একে একে সবাই পরিচয় হচ্ছিলো ঠিক তখনি..
।
চলবে