#অদ্ভুত_তোমার_নেশা
#লেখিকা_লায়লা_আঞ্জুমান_ইতি
#পার্ট____________২৬
।
।
।
।
মিমি চলে যাওয়ার পর বিভোর এর মুখে গম্ভীর ভাব জোড়ো হলো ।পুরোনো কিছু সৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলো,হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো,তাকিয়ে দেখলো কুহুর ফোন দেখেই বিভোরের ঠোটে এক রাজ্য হাসি দখল করে নিলো,বিভোর কল রিসিভ করল,কুহু বলল,
– হ্যালো
– ভালোবাসি
– হুম ভালোবাসি খুব খুব ভালোবাসি এবার শুনুন
– বল
– কি করছেন
– কি করব, তোমার কি ভালো লাগছে না
– বুঝলেন কিভাবে
– বুঝতে পেরেছি বলার প্রয়োজন নেই
– ভালো কথা আমি ফ্রেন্ডের সাথে একটু বাহিরে যাই যাব
– না
– ঠিক আছে রাখি
– আরে কুহু শোনো
– হুম
– আমি আসছি
– সত্যি
– হুম
– ওকে তাড়াতাড়ি আসেন
– রেডি হও আসছি
কুহু আলমারির কাছে গিয়ে একটা নীল শাড়ি রঙের শাড়ি বের করলো, তখনি কুহুর ফোন বেজে উঠলো,অপরিচিত নাম্বার দেখে কুহুর ভ্রু কুচকে গেল, তারপর রিসিভ করে বলল,
– হ্যালো কে বলছেন
– আমি
– আমি টা কে
– আ আসলে ওই যে লিফট দিয়ে ছিলাম
– ওহ আপনি, আপনি নাম্বার কোথায় পেলেন
– পেয়েছি, আপনি আমার সাথে দেখা করতে পারবেন একটু কথা ছিল
– যা বলার এখন বলুন দেখা করতে পারব না
– ওকে বায়
– হুম
কুহু ফোন কেটে দিল, কহুু ভাবতে লাগল,লোকটা হঠাৎ ফোন করলো কেন আর কি বলতে চায় বেশ সন্দেহ জনক না বিভোর আসলে বলা দরকার। কুহু গিয়ে রেডি হয়ে নিলো,আয়নার সামনে নিজেকে দেখছিল হঠাৎ নিজের কোমড়ে খুব পরিচিত হাতের ছোয়া পেলো,কুহু বলল,যাবেন না।বিভোর বলল,এখন আর ইচ্ছে করছে না বাহিরে যাওয়ার।কুহু বলল,তো কি ইচ্ছে করছে।বিভোর বলল,রোমান্সের মুড হয়েছে। কুহু বলল,আচ্ছা শুনুন।বিভোর বলল,পরে বল।কুহু বলল,ইম্পর্ট্যান্ট। বিভোর বিরক্ত হয়ে বলল, কি হয়েছে।
কুহু বলল,আসলে ওই লোকটা ফোন করে ছিল।বিভোর অবাক হয়ে বলল,কোন লোকটা।
কুহু বলল,ওই যে ওই লোকটা আমাকে সাহায্যে করে ছিল যে যার সাথে হঠাৎ হঠাৎ দেখা হয়ে যায়।বিভোর বলল,তোমার নাম্বার কোথায় পেল আর কেনই বা কল করলো।কুহু বলল,বলল যে আমাকে দেখা করতে কি যেন বলবে।বিভোর বলল,
– তুমি কি বললে
– আমি তো দেখা করব না বলেছি
– লোকটাকে আমার আগের থেকেই সন্দেহ হচ্ছিল
– কিন্তু কেন
– কুহু শোনো
– হুম
– ওই ছেলেকে কল করে বল তুমি দেখা করতে চাও
– কেন বলব
– আহা বল আমিও তোমার সাথে যাব কিন্তু দূর থেকে দেখবো
– কিন্তু
– যা বললাম তা কর
– ঠিক আছে কিন্তু আমার ভয় করছে
– আরে পাগলি আমি আছি তো
নির্জন জায়গা কুহু দাড়িয়ে আছে আশেপাশে মানুষ ও কম, হঠাৎ এক গাড়ি এসে থামলো গাড়ি থেকে ওই ছেলেটা বের হলে তারপর কুহুর কাছে এসে দাড়িয়ে বলল,
– কেমন আছেন
– ভালো আপনি
– আমিও
– এমন নির্জন জায়গায় কেন ডেকেছেন
– আসলে আপনার সাথে কথা ছিল
– বলুন আমাকে বাড়ীও ফিরতে হবে
– আমার আপনাকে খুব ভালো লাগে, বলতে পারেন ভালোবেসে ফেলেছি
– আপনি এইসব কি বলছেন
– যা বলছি ঠিক বলছি
– আমি ম্যারিড আপনি তো জানেন
– জানি তো কি হয়েছে, আমার কাছে অনেক টাকা পয়সা আছে তোমার হাসব্যান্ড বিভোরের থেকেও বেশী
– তো আমি কি করব, আপনাকে ভালো ভেবে ছিলাম,কিন্তু আপনি
বলেই কুহু চলে আসতে নিলেই, ছেলেটা কুহুর হাত ধরে ফেলে তারপর রেগে বলল,হুম কি ভেবেছো চলে যেতে পারবে অনেক ভালো সেজে থেকেছি বাট নাও ইনাফ, আমার না বিভোরের প্রত্যকটা জিনিসের প্রতি খুব লোভ, ওর আনন্দ আমার হজম হয় না, ওর যা কিছু আছে সব কিছু আমার চাই ওকে কষ্টে জর্জরিত দেখতে আমার ভালো লাগে। কুহু অবাক হয়ে বলল,কি সব বলছেন আপনি। ছেলেটা বলল,ভালো সেজে ভেবে ছিলাম মিমির মতো তোমাকেও বশ করে ফেলব কিন্তু তা হলো না তাই জোর করে হলেও ছিনিয়ে নেব আর কখনোও বিভোর তোমাকে দেখবে না।কুহু বলল,আপনি কি মাহমুদ। মাহমুদ বাকা হেসে বলল,ইয়েস বেবি জানো দেখি।
হঠাৎ মাহমুদের হাত থেকে বিভোর কুহুর হাত সরিয়ে এক ঘুষি দিয়ে মাহমুদকে দূরে ফেলে দিল।মাহমুদ দূরে সরে অবাক হয়ে তাকালো ওদের দিকে। বিভোর রেগে মাহমুদকে বলল,ভুলেও কুহুর দিকে নজর দিবি না এর পরিণতি একদম ভালো হবে না।মাহমুদ উঠে বলল,তোদের দেখে নেব দেখি কত দিন ভালো থাকিস । বলে মাহমুদ ওখান থেকে চলে আসলো।কুহু অবাক হয়ে গেল,বিভোরের দিকে তাকিয়ে বলল,আপনার বন্ধু এতটা খারাপ বিশ্বাস করুন আমি বুঝতেও পারি নিই উনার এইসব ভালো ব্যবহারের মাঝে এতটা নোংরামি লুকিয়ে আছে।বিভোর কুহুকে জরিয়ে ধরে বলল,আমি তোমাকে ভুল বুঝি নিই কুহু এসব বাদ দাও ও বারাবাড়ি করলে ওর অবস্থা খারাপ করে দেব এখন ভুলে যাও।কুহু বলল,উনি যদি আপনার কোনো ক্ষতি করে।বিভোর বলল,কিছু করতে পারবে না চল এখন।
জীবন চলতে থাকলো জীবনের গতিতে, বিভোর কুহু মেতে আছে নিজেদের সুখের সংসার নিয়ে।
কুহু গাল ফুলিয়ে বসে আছে কখন বিভোর ফিরবে, কাজের জন্য এক সপ্তাহ হতে আসলো বিভোর বাহিরে, কুহু বাড়িতে একা, কাজের খালাকে কাজ শেষ করে আর বাড়ীতে যেতে দেয় না, কুহুর সাথে থাকে।বিভোরের আজ ফিরে আসার কথা বিকেলে কিন্তু এখন রাত ১০ টা বাজে বিভোরের আসার খবর নেই,তার উপর আজ ওদের বিয়ের এক বছর হলো।কুহু আনমনে বলতে লাগল,উনার কি মনে নেই আজ আমাদের বিয়ের এক বছর পুরোন হলো।হঠাৎ কলিং ব্যাল বাজতেই কুহুর চিন্তা ভাবনার সমাপ্তি ঘটলো,কুহু তাড়াতাড়ি আয়নার সামনে গেল, নিজেকে ঠিক করে দৌড়ে নিচে নেমে মুখে বিরাট এক হাসি টেনে দরজা খুললো।
দরজার ওপাশে বিভোর দাড়ানো, বিভোর মুখে হাসি টেনে ভিতরে ঢুকলো, কুহু বিভোরকে বলল,আপনার এত দেরি হলো কেন।বিভোরে বলল,আর বল না এত কাজ বায় দ্যা ওয়ে আজ তুমি এত সেজেছো কেন আমি আসার খুশিতে নাকি।কুহুর মুখের হাসি সেকেন্ডে উধাও হয়ে গেল।মলিন মুখ করে বলল,আপনার মনে নেই।বিভোর ভাবনায় ডুবে বলল,কেন আজ কি কোনো স্পেশাল ডেয় নাকি।কুহু মুখে এক রাজ্য রাগ নিয়ে বলল,জানি না।বলেই কুহু চলে যেতে নিলেই বিভোর কুহুর হাত ধরে এক হেচকা টানে নিজের বুকে নিয়ে বলল,অভিমান করলে তো তোমাকে আরও কিউট দেখায়।কুহু বলল,ছাড়ুন আমাকে আমার আপনার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।বিভোর মুচকি হেসে বলল,কেন তুমি কি ভেবেছো আমি ভুল গেছি এটা কি সম্ভব এত স্পেশাল একটা ডেয় আর আমি ভুলে যাব।বিভোরের কথা শুনে কুহু মুচকি হাসলো।
চলবে…..
ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 💙