অন্তরালে ভালোবাসা পর্ব-০৪

0
5361

#অন্তরালে_ভালোবাসা
#পর্ব:৪
#তাসনিম_জাহান_রিয়া

সবাই হো হো করে হাসা শুরু করলো। আবার বোতল ঘুরানো হলো এবার থামলো রিয়ান ভাইয়ের সামনে। সবাই অধির আগ্রহ অপেক্ষা করছে রিয়ান ভাই কী নিবে? সাহেল ভাই উৎ পেতে আছে রিয়ান ভাইকে ফাঁসানোর জন্য।

তিতাস ভাইয়া মজার সুরে বলে কীরে রিয়ান ভয় পেলি নাকি?

সাদ্দাত রহমান রিয়ান কাউকে ভয় পায় না।

তাহলে বল কী নিবি?

ডেয়ার নেওয়া যাবে না কারণ তোদের মতো হারামি কী করতে বলে তার ঠিক নাই? ট্রুথ।

সাহিল ভাইয়া উৎসাহের সাথে বলল, তোর গার্লফ্রেন্ড নাম বল?

আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড নাই। থাকলেও তোদের বলতাম না কারণ তোদের ওপর বিশ্বাস নাই।

আহির ভাইয়া ভ্রু নাচিয়ে বলে, গার্লফ্রেন্ড না থাকলেও ভালোবাসার মানুষ তো ঠিকই আছে।

সেটা তো তোরো আছে।

সবাই একসাথে চিৎকার করে বলে, জাতি জানতে চায় কে সেই লাকি গার্ল যে জাতির ক্রাশের ভালোবাসার মানুষ হয়েছে।

আমি ঠাট্টার সুরে বলি, হুম ভাইয়া বলেন কে সেই আনলাকি গার্ল যে আপনার মতো একটা যমরাজকে ভালোবাসে।

আমি নাম বলবো না।

তিশা কাঁদো কাঁদো গলায় বলে, ভাইয়া নাম না বলে বর্ণনা তো দিতেই পারেন।

সে আমার শ্যামলতা। আমি প্রেমে পড়েছি তার বাচ্চামো স্বভাবে। তার টানাটানা চোখে হারিয়ে যায় আমি। তার খোলা চুলের ঘ্রাণ আমাকে মাতাল করে। তার ঠোঁটের নিচের কুচকুচে কালো তিল আমাকে আসক্ত করে তার প্রতি। তার ঝংকার তুলা হাসির শব্দে আমি হারিয়ে যায় সুখের রাজ্যে। তার ঠোঁটের কোনের এক চিলতে হাসি আমাকে এনে দেয় পৃথিবীর সব সুখ। তার মায়াবী মুখের দিকে সারাজীবন তাকিয়ে থাকলেও আমি এক বিন্দু ক্লান্ত হবো না।

রিয়ান ভাইয়ের কথাগুলো শুনে এক ঘুরের মাঝে চলে যায়। সবার হাত তালির শব্দে ঘুর কাটে।

সাহেল ভাইয়া চিৎকার করে বলে, বাহ মামা তোমাদের প্রেম তো একেবারে মাখো মাখো।

ভাইয়া আপনার মনে এতো আবেগ আছে সেটা আপনাকে দেখে বুঝা যায় না।

মুখ দেখে তুই মানুষের মনে আবেগ আছে নাকি তুই বলে দিতে পারিস?আমার ভালোবাসাটা এক তরফা। সে আমাকে ভালোবাসে কিনা জানি না।

কেনো ভাইয়া আপনি আপনার ভালোবাসার কথা তাকে বলেননি।

না বলা হয় ওঠেনি। একটা কথা কী জানো তিশা আমি যদি তাকে বলি আমি তোমাকে ভালোবাসি। সে ভাববে আমি তার সাথে মজা করছি।

এমন মেয়েও পৃথিবীতে হয়। সত্যিই মেয়েটা অনেক বোকা।

আহির ভাইয়া আমার মাথায় চাটি মেরে বলে, মেয়েটা ঠিক তোর মতো বোকা।

আমি আহির ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে একটা ভেংচি কাটি।

পুনরায় বোতল ঘুরানো হলো এবার থামলো আমার সামনে। আমি দ্বিধায় পড়ে গেলাম কী নিবো? অনেক ভেবে চিন্তে বললাম, ডেয়ার।

তিশা লাফিয়ে ওঠে।

আমি রিয়াকে ডেয়ার দিব।(চিৎকার করে)

চিৎকার করার কী আছে? ষাঁড়ের মতো না চিৎকার করে ডেয়ার দে।

তিশা শান্ত হয়ে বলে, তোর ডেয়ার হলো তুই এখানের যেকোনো একটা ছেলেকে প্রপোজ করবি।

এটা কোনো ব্যাপার নাকি।

হাঁটো গেড়ে কিন্তু।

ওকে।

আহির ভাইয়া একটু ওঠে দাঁড়ান।

কেনো?

আগে দাঁড়ান পরে বলছি।

আহির ভাইয়া ওঠে দাঁড়াতেই আমি হাঁটু গেড়ে বসে পড়ি।

আই লাভ ইউ।

আহির ভাইয়া আমার দিকে আহাম্মকের মতো তাকিয়ে আছে। আমি আয়ান ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ মারি। আয়ান ভাইয়া হাসি মুখে বলে,

আই লাভ ইউ টু।

আমি আড় চোখে একবার তিশার দিকে তাকায়। তিশার মুখটা দেখার মতো হয়েছে। আবার বোতল ঘুরানো হলো এবার থামলো তিশার সামনে। তিশা কোনো কিছু না ভেবে বলে,

ডেয়ার।

তিশাকে আমি ডেয়ার দিব।

আমি তিশার দিকে তাকিয়ে একটা সয়তানি হাসি দেয়। তিশা আমার দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে। এই অসহায় মুখে বলছে,

প্লিজ রিয়া ওল্ঠা পাল্টা কিছু দেইস না।

আমি তিশার কথা পাত্তা না দিয়ে গলাটা পরিষ্কার করে বললাম,

তোর ডেয়ার হলো তুই এখন আহির ভাইয়াকে কিস করবি।

না।

হ্যাঁ।

না।

হ্যাঁ। তুই যদি ডেয়ার পুরণ না করিস তাহলে আমি আন্টিকে বলে দিব তুই ঐদিন কী করছিলি?

আরে বাবা আমি বদ্র মেয়ে সবার কথাই শুনি।

তাহলে যা কিসটা করে আয়।

তিশা আস্তে আস্তে আহির ভাইয়ার দিকে এগিয়ে যায়। ঠিক আহির ভাইয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আহির ভাইয়ার কলার টেনে আহির ভাইয়ার গালে টুপ করে একটা চুমু দিয়ে দেয়। আহির ভাইয়া তিশার কোমড় জড়িয়ে ধরে। আমরা সবাই আস্তে আস্তে ছাদ থেকে কেটে পড়ি। সবাই সবার জন্য বরাদ্দকৃত রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ি। আমি শুয়ে পড়তেই আপু এসে আমার পাশে শুয়ে পড়ে।

আপু তুই অনেক খুশি তাই না।

হুম আদ্রিয়ান না অনেক ভালো।

আরেব্বাস এখনো বিয়ে হলো না এখনি বরের প্রতি এতো ভালোবাসা।

চুপ সয়তান মেয়ে। আমি কিন্তু তোর বড় বোন।

তো কী হয়ছে?

কিছু না।

আপু তুই এখান থেকে চলে গেলে তোকে অনেক মিস করবো।

আমিও।

আপু আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমিও আপুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ি।

————————————–

আপুর গায়ে হলুদের হলুদ নিয়ে যাচ্ছিলাম। তখনি শাড়ির সাথে পা ভেজে হোচট খেয়ে পড়ে যেতে নিলে কেউ আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি।

চলবে…..