অপ্রত্যাশিত পর্ব দুই.

0
1705

অপ্রত্যাশিত
পর্ব দুই…
#মুনতাহা
.
বুঝতে পারছিনা কথা বলব নাকি কেটে দেবো। অন্য দিকে আবির হ্যালো হ্যালো করেই যাচ্ছে। হঠাৎ করে আবির বললো…
আবির : তাহা?
আমি: ( ওর কন্ঠ শুনে কোনো কথা বলতে পারছি না )
আবির : তাহা তুমি কি ভয় পাচ্ছো?
আমি : ন..না ভয় পাবো কেন…
আবির : তাহলে কথা বলছো না কেন? চুপ করে আছো কেন?
আমি : আপনার কন্ঠটা শুনছিলাম..(কথা বলেই চুপ হয়ে গেলাম। কি বলছি এসব…..)
আবির : বোনের বরের কন্ঠ শুনতে খুব ভালো লাগে?
(মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল..)
আমি : কিসের বর হুম? বিয়ে হয়নি এখনো ওকে?
আবির : হবে তো।
আমি : খচ্চর পোলা ( আস্তে করে )
আবির : কিছু বললে তাহা?
আমি : না। এখন রাখছি আপু আসলে ফোন দিতে বলব।
আবির : আচ্ছা রাখো আর আমার বউটার খেয়াল রেখো। বায়
আমি : হুহ.. bye
আবার মন খারাপ হয়ে গেল। এই ছেলেটা ইচ্ছা করে আমাকে কষ্ট দিচ্ছে।
এরপরে রাতে যখনই মিতুকে ফোন দিতো তখনই মিতু বিভিন্ন অযুহাতে ফোনটা আমার কাছে দিয়ে চলে যায়। ব্যাপার টা কেমন যেন লাগতো কিন্তু আমার ওতো ভেবে কাজ নেই। আমি আবিরের সাথে কথা বলি।যতই হোক ভালোবাসি তো।
আমি বরাবরই একটু বেশি কথা বলি। আমি বকবক করি আর আবির শোনে আর ফোন রাখার সময় বলে,” তুমি সত্যি বাচাল”..
বিয়ের আর দুই দিন বাকি আছে। ভাবছি আবির কে সব বলব কিনা। দোটানায় পড়ে গেছি কি করব এটা ভেবে। নাহ, আমাকে বলতেই হবে যা আছে কপালে..
রাতে আবির কে ফোন দিলাম।
আবির: হ্যালো কে?(ঘুমের ঘোরে)
আমি : আমি তাহা। আপনার সাথে কিছু কথা আছে..
আবির : অনেক ঘুম পাচ্ছে তাহা। কাল কথা হবে.
আমি : নাআআ আমি এখনই কথা বলব( রেগে বললাম )
আবির : আচ্ছা আচ্ছা এতো রাগ করছো কেন ছোট্ট শালিকা..
আমি : আচ্ছা আপনি কি কিছুই বোঝেননা?( কেদেঁ কেদেঁ )
আবির : কি বুঝবো বলোতো?
আমি : আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি…
আবির : আচ্ছা বুঝলাম এখন ঘুমাও।
আমি : ( কান্না করতেই আছি )
আবির : তাহা তোমার বোন এসব শুনলে কষ্ট পাবে। পাগলামি করোনা। অনেক রাত হয়েছে এখন ঘুমাও…।
আমি : (চুপ)
আবির : এখন এসব বলে কি হবে বলো? এসব চিন্তা বাদ দিয়ে বিয়েতে কিভাবে সাজবে সেটা ঠিক করো, কেমন? আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে.. বায় পাখি..
আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন কেটে দিলো…
আবির ঠিকই বলেছে মিতু শুনলে সত্যি কষ্ট পাবে। আমাকে শক্ত হতে হবে।বাবা মারা যাবার পর থেকে মিতুর বাবা মানে ছোট চাচা ই আমাদের অভিভাবক। ওর জন্য আমাকে এইটুকু সহ্য করতেই হবে। তাছাড়া মিতুও বিয়ে নিয়ে অনেক অনেক স্বপ্ন দেখছে, সেটা ভেঙে দিতে পারবনা। চোখের পানি মুছে ঘুমাতে গেলাম কিন্তু ঘুম আর আসছে না।।
পরের দিন গায়ে হলুদের জিনিস নিয়ে আবিরদের বাড়িতে গেলাম। যতটা সম্ভব ওর থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছি। হঠাৎ একটা ছেলে এসে..
ছেলেটা:হাই আমি সোহেল।
আমি : আমি তাহা
সোহেল: তুমি ভাবির বোন তাইনা?
আমি : জ্বী ( যদিও কথা বলতে বিরক্ত লাগছে )
সোহেল : শাড়ি পরে তোমাকে বেশ মানিয়েছে..
আমি : জ্বী ধন্যবাদ..
খেয়াল করলাম আবির রাগি ভাব করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। সেটা দেখে আরও বেশি করে সোহেলের সাথে কথা বলছি আর হাসছি..
আবির : (কাছে এসে ) সোহেল, মামি তোকে ডাকছে।
সোহেল : আচ্ছা তাহা থাকো আমি আসছি..
আমি :আচ্ছা ঠিক আছে
সোহেল : ভাই তোর শালিকা কিন্তু বেশ….
আবির : যাবি তুই??( রেগে বলল)
সোহেল : আরে যাচ্ছি তো..
( সোহেল চলে যাওয়ার পর আমিও চলে আসছিলাম)
আবির : ওর সাথে কিসের এতো গল্প? (রেগে )
আমি : কেন ভাইয়া কোন সমস্যা? ছেলেটা কিন্তু ভালো..
আবির : কাল রাতে কি বলছিলা?
আমি : ওসব বাদ দেন। আমি ভুলে গেছি সব। ভুলে বলে ফেলছি।
আবির : ভেবে বলছো তো?
আমি : হ্যাঁ। যেটা সম্ভব না সেটা নিয়ে না ভাবাই ভালো.. তাইনা ভাইয়াআআআ???
আবির : এর শাস্তি পরে পাবা.. mind it..( বলেই চলে গেল )
আমি : ভাবছি কি বলে গেল খচ্চরটা..
সন্ধ্যায় সবাই চলে আসলাম বাড়ি। পরশু বিয়ে। সারাদিন ভাবছি কি করব, মনে হচ্ছে এখনই চলে যাই কিন্তু সেটা করা যাবে না..
রাতে যা হলো সেটা আমরা কল্পনা ও করিনি….
চলবে…..