গল্প :- অপ্রত্যাশিত সম্পর্ক
পর্ব :- ০৫
Writer :- Kabbo Ahammad
.
.
.
-: আম্মু কাথা দাও! খুব শীত করছে। (মিরা)
হে আল্লাহ বলে কি আম্মু কোথা থেকে এলো!
তারপর মোবাইলটা দিয়ে মিরার দিকে তাকিয়ে দেখি শীতে ঠক ঠক করে কাঁপছে সে। তার শরীরে কম্বলটাও নেই। কারণটা হলাম আমি। আসলে রাতে ঘুমানোর সময় আমি মিরার কম্বলটাই নিয়ে নিয়েছিলাম।
কি করবো কম্বলতো একটাই দিছে।
তখন আমি মিরাকেও কম্বলের একটা অংশ দিয়ে ডেকে দিলাম। কিন্তু কম্বল দিতেই কি বিপদ!
এই মেয়েতো দেখছি কম্বল টানাটানি শুরু করে দিছে। এভাবে ঘুমানো যায় নাকি? এইবার উপায়?
কোনো উপায় না পেয়ে আমি কোলবালিশ হটিয়ে আমিই মিরার কাছাকাছি চলে গেলাম। এবার হয়তো আর কম্বল টানাটানি হবে না। আবার ভয়ও করছে যদি সকালবেলা আমি মিরার আগে ঘুম থেকে উঠতে না পারি তখন কি হবে…?
হঠাৎ কিছুক্ষণ পর মিরা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে।
হায়! হায়! মিরা হয়তো আমাকে কোলবালিশ ভেবে জড়িয়ে ধরেছে।?
মিরা আমাকে এমনভাবে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে রেখেছে যে, আমি নড়া তো দুরের কথা আমার শ্বাস নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে।
আমি কিছুক্ষণ নড়াচড়া করে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু সে চেষ্টা বৃথা।
আর আমি মিরাকে জোর করেও সরাতে পারছি না। কারণ যদি মিরা উঠে যায় তাহলে সমস্যা।
আমাকে হয়তো সারা রাত রুমের বাহিরে ঠান্ডায় কাটাতে হতে পারে। তাই আমি আর মোচড়া মুচড়ি না করে ঐ ভাবেই শুয়ে রইলাম।
যাক যা হয়েছে ভালোই হয়েছে নিজে থেকে তো কখনো মিরাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর সাহসও করতে পারতাম না। কপাল জোরে আজকে যখন সুযোগ পেয়েছি। তাই হাত ছাড়া করাটা বোকামী হবে।
তখন আমিও মিরাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলাম।
আমার কি যে ভালো লাগছে। কিন্তু এই ভালো লাগার জন্য সকালে হয়তো অনেক বড়ো দাম দেওয়া লাগতে পারে আমার।
সকালে ঘুম ভাঙ্গলো কারো গোঙ্গানির আওয়াজে।
আর সেই সাথে বুকের উপর ভারী কিছু একটা অনুভব করলাম আমি। চোখ খুলে তাকাতেই দেখি মিরা আমার বুকের উপর মাথা রেখে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। মনে মনে একটু খুশিই হলাম।
করণ হলো যে মিরার আগে আমার ঘুমটাই ভাঙ্গলো।
কিন্তু পরক্ষণেই সব খুশি উরে গেলো। যখন আমি বুঝতে পারলাম যে। ঐ অস্ফুট গোঙ্গানিটা মিরার মুখ থেকেই আসছে। খেয়াল করে দেখলাম মিরা খুব কাঁপছে। আমি যখন ওকে ধরলাম বুঝতে পারলাম মিরার প্রচন্ড জ্বর এসেছে। কারণটা হয়তো এখানকার আবহাওয়া। তাছাড়া কালকে তো অর্ধেক রাত আমার করণে ঠান্ডায় শুয়ে ছিলো।
হে আল্লাহ এখন আমি কি করি। মিরার কপালে হাত দিলাম। জ্বরটা বোধহয় একটু বেশিই।
তাই আমি মিরাকে আমার বুক থেকে নামিয়ে পাশেই একটা বালিশে মাথাটা রেখে শুইয়ে দিলাম।
এতো সকালে কার কাছে যাবো। তাই জলদি করে একটা পাত্রে পানি নিয়ে আসি। আমার আসলে এই কাজে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। যতটুকু পারি সেটাই করছি। প্রথমে আমি মিরার মাথায় কিছুক্ষণ পানি দিলাম। তারপর কিছুক্ষণ জলপট্টি দিলাম।
এখন জ্বরতো কিছুটা কমলো। কিন্তু এসব করতে গিয়ে মিরার কাপড় ভিজিয়ে ফেললাম। এই অবস্থায় মিরাকে ভেজা কাপড়ে রাখা যাবে না। তারপর আমি মিরার কাপড়চোপড় চেন্জ করার ব্যবস্থা করলাম।
আর কিছুক্ষন পর যখন মিরা চোখ খুললো। তখন আমি বললাম।
–কেমন আছো এখন?
মিরা শুয়া থেকে উঠে বসতে বসতে বললো।
—আলহামদুলিল্লাহ্ অনেকটাই ভালো এখন।
তারপর হঠাৎ সে নিজেকে দেখে থমকে গেলো। কারণটা হলো মিরা যে শাড়িটা পরে ঘুমিয়েছিলো এটা না এখন সে অন্য একটা শাড়ি পরে আছে।
তখন মিরা আমার দিকে অগ্নি চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে বললো।
—আমার ড্রেস! শাড়িটা কে চেঞ্জ করলো??
–আসলে……..
—আমার আগেই বুঝা উচিত ছিলো। তোমার সাথে এখানে আসাই ঠিক হয়নি। আর আজকে তুমি সুযোগ পেয়ে..উু.হ. উু..??
–আরে মিরা তুমি কিসব…
—ঠাস.. ঠাস…..
আমার কথাটা বলার আগেই দুই গালে দুটো থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। আর বলতে লাগলো।
—তোমার থেকে আমি এমনটা আশা করিনি নীলয়। আমি ভাবতেও পারছিনা তুমি আমার সাথে এমন বেঈমানি করবে। তুমি এক্ষুণি আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও। আমি তোমার মুখও আর দেখতে চাই না। বের হও ঘর থেকে??
–আরে মিরা এসব কি বলসো তুমি। আগে আমার কথাটা…….
ঠাস……………আরেকটা থাপ্পড় বসিয়ে বললো।
—তুমি এই ঘর থেকে বের হবে না আমিই চলে যাবো।???
তখন আমি গালে হাত দিয়ে পিছনে ফিরতেই দেখালম আলিশা হাতে নাস্তা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
হয়তো সবকিছুই দেখেছে। তারপর আমি আলিশাকে পাশ কাটিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম।
•••এখন মিরা আর আলিশার কথোপকথন চলছে।
—কি হয়েছে আপনি উনাকে এইভাবে মারলেন কেন?(আলিশা)
—তুমি জানো ও আমার সাথে কি করেছে?(মিরা)
—তিনি যাই করে থাকুন ওনাকে এইভাবে চড় মারা তোমার ঠিক হয়নি। আর তোমার তো ওনাকে মাথায় করে রাখা উচিত। এমন স্বামী সবার ভাগ্যে জুটে না।(আলিশা বললো)
মিরা হঠাৎ অবাক হয়ে বললো।
—মানে! তুমি কি বলতে চাচ্ছো.?
—তোমার কি মনে আছে যে গত রাতে তোমার জ্বর এসেছিলো?
—হুমম..
—হুম তুমি জানো মিঃ নীলয় যখন সকালে দেখেন যে। তোমার জ্বর, তখন থেকে সে তোমার সেবা করেছেন। উনি হয়তো সবটা সামলাতে পারছিলেন না। তাই এতো সকালেই আমাকে ফোন করে ডেকে পাঠান।
ওনি তোমাকে নিয়ে ভীষণ চিন্তায় ছিলেন। এটা ওনার ব্যবহার দেখেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম।
আর আমি যখন আসি তখন তোমার জ্বর অনেকটাই কমে গেছিলো। কিন্তু তোমার কাপড় পানিতে ভেজা ভেজা হয়ে গেছিলো। তখন মিঃ নিলয় আমাকে বলে তোমার কাপড়টা বদলিয়ে দিতে। তারপর আমি তোমার শাড়িটা বদলিয়ে দিয়ে। মিঃ নীলয়কে এখানে রেখে তোমাদের জন্য আমি নাস্তা আনতে নিচে গেলাম। আর………..
তখনি আলিশাকে থামিয়ে দিয়ে মিরা বললো।
—তারমানে তুমি আমার কাপড় বদলিয়ে দিয়েছিলে??
—হ্যাঁ..! কিন্তু কেন…?
মিরা এবার মনে মনে ভাবছে।
ছিঃ এটা আমি কি করলাম। নীলয়কে কিছু বলতে না দিয়েই এতোকিছু বলে দিলাম! তার উপর আবার থাপ্পড়ও মেরে দিয়েছি। নীলয় এখন আমাকে নিয়ে কি ভাবছে কে জানে..? ছিঃ কিভাবে আমি এটা করতে পারলাম??
এদিকে আমি…..
নাহ্ শুধু শুধু সবকিছু এইভাবে মেনে নেয়া যায় না। আমাকে তো কথা বলার কোনো সুযোগ ই দিলো না তার উপর আবার থপ্পড়ও দিয়ে দিলো আলিশার সামনে। কোনো রকম কারণ ছারা। আমারই ভুল হয়েছে। মিরা তো আমাকে ভালোবাসবে অনেক দূরের কথা। সেতো আমাকে নূন্যতম বিশ্বাসও করে না।
মিরাকে এখন থেকে মিরার মতোই থাকতে দেওয়া উচিত।
আমি মনে হয় বিয়ে করে ওর জীবনটা আরো বিষিয়ে দিয়েছি। আর সেই সাথে আমার জীবনটাও শুধু শুধু মিরার সাথে মিশিয়ে শেষ করে দিচ্ছি। ড্রয়িং রুমে সোফাতে বসে বসে এসব কিছুই ভাবছিলাম। তখনি করো ডাকে বাস্তবে ফিরলাম। ঘুরে দেখি মিরা দাঁড়িয়ে।
মিরা হয়তো কিছু বলতে চাচ্ছে কিন্তু ইতস্তত করছে..
তারপর আমি শুকনো গলায় বললাম।
–কিছু বলবে?
—আসলে.. তখনকার জন্য আমি স্যরি। আমি ভেবছিলাম যে তুমি আমার সাথে…….
–থাক থাক আর কিছু বলতে হবে না। যেটা হয়ে গেছে তো হয়ে গেছে। আর আমি আজকে অন্য একটা জয়গায় যাবো। তুমি না হয় আলিশার সাথে ঘুরতে বের হয়েও।
—কোথায় যাবে?
–সেটা জেনে তুমি কি করবে..? আমার প্রয়োজন পরছে তাই যাচ্ছি। তাছাড়া আমি তোমার সাথে না থাকলে তুমি হয়তো আরেকটু কমফোর্টেবল ফিল করবে।
—তুমি এমন করে কথা বলছো কেন?
কিছুনা..
তারপর আমি বেড়িয়ে এলাম। আসলে এখানে আমার এক কলেজ ফ্রেন্ড থাকে। ভালো একটা চাকরিও পেয়ে এখানেই সেটেল হয়ে গেছে। অনেকদিন ধরে ওর সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। গতকালকে হঠাৎ করেই সে আমাকে ফোন দিলো, হয়তো কোনোভাবে জানতে পেরেছে যে আমি এখানে এসেছি। তাই ওর বাসায় যাওয়ার কথা বললো। প্রথমে ভাবছিলাম মিরাকেও নিয়ে যাবো।৷ কিন্তু…….
যাইহোক।
ওর দেওয়া ঠিকানায় পৌছে গেলাম। দরজায় দাঁড়িয়ে কলিংবেল টিপতেই ভেতর থেকে একজন মেয়ে বেরিয়ে আসলো। মেয়েটি আমার দিকে কিছুক্ষণ ভালো করে দেখে বললো।
—কি চাই? কাকে চাই? এখানে কেন এসেছেন? আপনাকে তো চিনিনা?
বাব্বাহ্ এ মেয়েটার একসাথে এতোগুলো প্রশ্ন শুনে আমি ভিরমি খেয়ে গেলাম। সাধারণত পাগল ছাড়া কেউ একসাথে এতোগুলো প্রশ্ন করে না। তখন আমি বললাম।
–রাসেল! আমি হলাম রাসেলের বন্ধু। ও নিশ্চয়ই এখানেই থাকে?
মেয়েটি অকপটে জবাব দিলো।
—না রাসেল নামের কেউ থাকে না এখানে?
–কিন্তু ঠিকানাটা তো এটাই!
—আরে আশ্চর্যতো বাড়ি বয়ে এসে একে তো এই সময়ে ডিসটার্ব করছেন। তার উপর আবার কিসব ভুলভাল বকছেন। যানতো এখান থেকে।
মেয়েটির এমন ব্যবহারের পর আর এখানে থাকা যায় না। তাই যেই আমি উল্টো পথ ধরবো। তখন পিছন থেকে কেউ একজন আমার নাম ধরে ডাকলো।
আমি পিছন ফিরে দেখতে পেলাম। রাসেল দাঁড়িয়ে আছে দরজায় ঐ মেয়েটার পাশে।
—আরে কোথায় যাচ্ছিস তুই?(রাসেল)
–না.. মানে ঐ মেয়েটাতো বলছিলো রাসেল নামে কেউ এখানে থাকে না। তাই আমি ভাবলাম…..
—তুই ভাবলি আমি তোকে ভুল ঠিকানা দিছি, তাইতো।
তখন খেয়াল করে দেখলাম। মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। তখন আমি বললাম।
–কিন্তু কে এই মেয়েটা?
—কিহ্ তুই ওকে চিনতে পারছিস না?
তখন মেয়েটি পাশে থেকে বলে উঠলো।
—ভাইয়া তোর প্রানের বন্ধু আমাকে চিনবে কি করে। আমি ওনার কেউ হই নাকি…?
এবার আমি মেয়েটার দিকে একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম। খুবই চিনা চিনা মনে হচ্চে। কিন্তু ঠিক মনে করতে পারছি না। তখন মেয়েটি বলে উঠলো।
—এখনো চিনতে পারছিস না ভাইয়া!?
আমি হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। তখন রাসেল বলে উঠলো।
—আরে এটা আমাদের ডলি।
–ডায়া..লি.।
আমি তো আমার চোখকে বিশ্বাসই করতে পারছি না। সেদিনের সেই ছোট্ট মেয়েটা আজ এতো বড় হয়ে গেছে। এটা ডলি….?
—তা নয়তো কি। তুইতো দেখছি আমাকে ভুলেই গেলি ভাইয়া।(ডলি)
–আরে আরে তুকে কি করে ভুলতে পারি মিষ্টি পরী। আমি আসলে তুকে চিনতে পারছিলাম না। কিন্তু তুইতো আমাকে চিনেছিস। তাহলে তখন এমন করলি কেন??
—তোমার তো সেই সকালে আসার কথা ছিলো।
এখন কয়টা বাজে দেখেছো।? তুমি জানো তোমার জন্য আজকে আমি নিজের হাতে রান্না করেছিলাম।(ডলি)
–সত্যি!!
তুই রান্না করেছিস! তুইতো দেখছি অনেক বড় হয়ে গেছিস।☺
—শুধু বড় না। ও যথেষ্ট বড়ো হয়ে গেছে ওনি পরশুদিনই ও বিয়ের পিরিতেও বসতে চলছে।(রাসেল)
–কিহ্! ডলির বিয়ে!
—হুমম?।(রাসেল)
ডলি দেখলাম নিজের বিয়ের কথা শুনে লজ্জা পেয়ে গেছে। তখন আমি বললাম।
–বাহরে! ডলি তুই লজ্জা পেতেও শিখে গেছিস?
ডলি তখন রেগে গিয়ে বললো।
—এই তোরা আমার পিছনে না লেগে। এখন খেতে চল অনেকক্ষণ না খেয়ে আছি। তারপর আমরা ভেতরে গেলাম। আংকেল-আন্টির সাথে কথা বললাম। আর রাসেলের ওয়াইফের সাথেও কথা হলো। তারপর খাবার খেতে বসে পড়লাম। খাবরটা খুবই ভালো হয়েছে। আমার একমাত্র বোন বানিয়েছে বলে কথা।
(আসলে ডলি আমার কাছে আমার আপন বোনই) খাবার খাওয়ার এক পর্যায়ে ডলি প্রশ্ন করে ফেললো।
—ভাইয়া তোমার মিরার কি খবর?
কথাটা শুনেই আমার কাশি হয়ে গেলো। আসলে ডলি যদিও বয়সে ছোট ছিলো। কিন্তু এক নম্বরের পাকা বুড়ি ছিলো। আমি যে মিরার পিছনে ঘুরতাম সেটাও জানতো। তখন রাসেল বললো।
—ডলি কি হচ্ছে টা’কি। চুপচাপ খা। এসব পরেও জানতে পারবি।
তারপর খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমি,ডলি, ডলির বর রাসেল ছাদে এলাম আড্ডা দেওয়র জন্য। অনেকদিন পর আমরা সবাই এইভাবে একসাথে আড্ডা দিচ্ছি। তখন আমাদের সাথে ভাবিও যোগ দিলেন।(রাসেলের বউ) আড্ডার এক পর্যায়ে ডলি আবারও মিরার কথা তুললো। তখন আমি তাদের এটাই বলি যে মিরার সাথে আমার এখন বিয়ে হয়ে গেছে। তখনি ডলি বল উঠলো।
—তাহলে ভাবীকে নিয়ে এলে না কেনো?
–এমনিই।
—কিন্তু আমার বিয়ের দিন তোমাকে কিন্তু ভাবীকে নিয়ে আসতেই হবে?(ডলি)
তখন আমি একটা হাসি দিলাম। আর মনে মনে বলতে লাগলাম। আমি বললে কি মিরা আমার সাথে কোথাও একা আসবে..? সে তো আমাকে বিশ্বাসই করেনা। সব সময় এটাই ভাবছে যে। আমি জোরপূর্বক তাকে কিছু করে বসবো।
তবে সে যাই হোক রাসেলদের বাড়িতে আমার সময়টুকু ভালোই কাটলো। রাতে ওদের বাড়িতে খাওয়া দাওয়ার পর তবেই তারা আমাকে ছারলো। রাসেলদের বাড়ি থেকে বের হয়েই সোজা খালামনির বাসায় পৌঁছে গেলাম। বাড়ি ফিরতে একটু দেরিই হয়ে গেলো। বাড়িতে ডুকতেই দেখি খালামনি চিন্তিত হয়ে সোফায় বসে আছেন। আমাকে দেখতে পেয়েই কাছে এসে বলে উঠলেন।
—কোথায় ছিলি তুই এতোক্ষণ…?
আমি বাসায় এসে দেখতে পেলাম না। সারাদিন বসে রইলাম তোর ফিরার কোনো নামগন্ধ নেই।
জানিস কতোটা চিন্তা হচ্ছিলো আমার। আর তোর ফোন বন্ধ কেন…?
–ফোন বন্ধ মানে..!! এইতো আমার ফোন।
ফোনটা পকেট থেকে বের করতেই দেখি ফোনটা সুইচট অফ। অফ!ফ হয়তো চাপ পরে ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো।
—কিন্তু তুই কোথায় গিয়েছিলি?(খালামনি)
–আমার এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলাম।
—নীলয় তোর কি আক্কেল বলে কিছু নেই।
এখানে তো বউ নিয়ে ঘুরতে এসেছিলি। আর তুই বউকে ঘরে রেখেই বন্ধুর বাসায় ঘুরে এলি। জানিস তোর জন্য বউমা কতোটা চিন্তা করছিলো?(খালামনি)
হঠাৎ খালামণির কথা শুনে আমার খুবই অবাক লাগছে। আমার জন্য চিন্তা করছে, তাও নাকি আবার মিরা।
এসবই ওর খালামনির কাছে ভালো সাজার নাটক। যেমনটা বাড়িতে করেছিলো হানিমুনের ব্যাপারটা নিয়ে।
তখনি কোথা থেকে যেন, মিরা এসে হাজির। আর নেকামি করে বলতে লাগলো।
—কোথায় ছিলে তুমি সারাদিন। তোমাকে এতোগুলো ফোন দিলাম আর ফোনও ধরছিলে না। আচ্ছা ছারো এইসব। চলো খাবে চলো।
তখন খালমনিও বললেন
—হ্যাঁ..!! চল। জানিস তোর জন্য বউমা না খেয়ে বসে আছে।
উফ্..মিরার এই ভালো মানুষির নাটকগুলো আমার কাছে জাস্ট অসহ্য লাগছে। আমি তখন বললাম।
–খালামনি আমি খাবো না। আমি খেয়ে এসেছি। তোমরা খেয়ে নাও। আমি ঘরে গেলাম।
—কিন্তু মিরা…….
খালামনি মিরাকে নিয়ে কিছু একটা বলতে চাইছিলেন। কিন্তু আমি না শুনেই রুমে চলে এলাম…..
.
.
চলবে..…………………♥
.
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টতে দেখার অনুরোধ রইলো)