#আপনিময়?তুমি [ An unexpected crazy love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Mêhèr ]
Part: 08……….
লাইব্রেরীতে ঢুকে দেখে জানালার ধারে কেউ একজন প্যান্টের পকেটে হাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে……আনহা এগোতেই আচমকা বাতাসে সব কাগজ উড়ে আনহার মুখের উপর পরে….. আর জানালার তিব্র আলোতে নিজের মুখ থেকে কাগজ সরাতেই খুব চেনা একটা মুখ দেখতে পায়…
আনহা: ইহান……. [ বেশ অবাক হয়ে ]
ইহান:…… [ পকেটে হাত দিয়ে আনহার দিকে ফিরে ]
[ দুজনেই দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। ইহানের ইচ্ছে করছে ছোটবেলার মত আনহাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সবটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। তাই নিজের ইচ্ছেটাকে সংযত করল। আর আনহার ইচ্ছে করছে ইহাননের মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে….. “আমি তোর খারাপ চাই নারে পিচ্চি… ” কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারল না ]
তখনি আনহার সকালের কথা মনে পরে যখন ইহান আনহাকে অপমান করেছে….
আনহা: তুই এখানে কি করছিস….. ???
ইহান: আপনি এখানে কেন…?? [ বেশ অবাক হয়ে ]
আনহা: আমি এখানে কেন মানে কি?? তুই এখানে কেন তাই বল???
ইহান: আপনি আবার আমার পিছু নিয়েছেন। ???
আনহা: একটা থাপ্পড় দিয়ে মাথা ফাটাই দিব…..
ইহান: জি…. [ একটু কনফিউজড হয়ে ]
আনহা: মানে…. দাত ফেলে দিব….
ইহান: ওওও…..
আনহা: তা তুই কি করছিস এখানে….??
ইহান: আমি পরতে এসেছি….. আপনি..???
আনহা: আমি পরাতে এসেছি..……
তারপর আনহা কোনো কথা না বলে একটা চেয়ারে গিয়ে বসে পড়ল। বইয়ের পাতায় মুখ ডুবিয়ে বার বার ইহানের দিকে তাকাচ্ছে। ইহান এটা ভালোই বুঝতে পেরেছে আনহা তাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে চায়। তাই ও আনহাকে কিছু বলার সুযোগ দিলোই না বরং উল্টে একটা মুড নিয়ে বসে পড়ল যাতে আনহা চাইলেও ওর কিছু বলতে না পারে। ]
[ বেশ কিছুক্ষন যাবার পর আনহা আর চুপ থাকতে পারল না। ]
আনহা: ইহান…… সরি অয়ন আহমেদ… Am I right……
আনহার মুখের অয়ন নামটা শুনের ইহানের বুকের ভিতর একটা মোচর মারে…… প্রচন্ড রাগ উঠে আনহার উপর….. কারন অয়ন নামটা সবার আর আনহার জন্য সে শুধুই ইহান।।।
আনহা: কি হল কিছু বলছো না কেন??? আমি তোমার সিনিয়র তাই তুমি বলছি এখন কি আপনি করে বলতে হবে….. [ বেশ রেগে মুড নিয়ে ]
ইহান এই কথা শুনে টেবিলের নিচে একটা কলম নিজের হাতের মধ্যে ঢুকিয়ে মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে রাখল…… ইহানের হাতের সাথে হৃদয় থেকেও রক্ত পরছে চোখ লাল হয়ে গেছে। ওর ইচ্ছে করছে গিয়ে আনহার গলাটাই টিপে দেবে………..
আনহা: কি হল কিছু বলুন…..
এবার ইহান পায়ের উপর পা তুলে হাত গুলো গুজে নিয়ে আনহার দিকে তাকায়…..
ইহান: [ বিশ্বাস করুন আনহা যদি আপনাকে সন্মান না করতাম আর যদি ভালো না বাসতাম তবে আজ এখানেই শেষ করে দিয়ে যেতাম। আমার সাথে আপনার সর্ম্পক ঠিক কি বুঝিয়ে দিয়ে যেতাম…… মনে মনে ]
আনহা: কি হল এভাবে না তাকিয়ে কিছু বলুন….
ইহান: কি শুনতে চান বলুন??? [ বেশ বিরক্তি নিয়ে ]
আনহা: আপনি এখানে কেন???
ইহান: বলতাম তো পরতে এসেছি । প্রিন্সিপাল স্যার আমাকে একজন টিচার ঠিক করে দিয়েছেন তা আপনি এখানে…..
আনহা: মানে??? স্যার আমাকে তোকে পরাতে বলছে……
ইহান: ও তারমানে আপনি আমার টিচার….. [ বেশ অবাক হয়ে ]
আনহা: তারমানে ওকে আমাকে পরাতে হবে….?? [ বিড়বিড় করে ]
এটা দেখে ইহান বাকা হাসে…..
আনহা: আমি তোকে পরাবো না…. ???
ইহান: আমিও আপনার কাছে পরতে চাইনা….
আনহা: তাইলে স্যারকে বল……
ইহান: আমি পারব না।
আনহা: তাইলে যে বললি পরবি না???
ইহান: যে আমাকে পরাতে চায় না তার কাছে কিভাবে পরব….
আনহা: মানে….???
ইহান: আমার পরতে সমস্যা নেই যদি আপনি পরান…
আনহা: [ হায় আল্লাহ আমি প্রিন্সিপাল স্যারকে কিভাবে না করব। আর আমার চেয়েও ভালো স্টুডেন্ট আছে এখানে তাহলে ইহানের জন্য আমাকেই পেল। এটা কি সত্যি কাকতালীয় ]
ইহান: [ কুকি…. আপনি কেন বুঝেন না আপনাকে চাইলেও আমাকে পরাতে হবে আর না চাইলেও। শুধু শুধু সময় নষ্ট। আর আমি চাই না ভার্রসিটির সময়টুকুতে আমি ছাড়া অন্য কেউ আপনার পাশে থাকুক। তা সে আদ্র হোক বা অন্তি…… বাকা হেশে ]
আনহা: আমার কাছে পরতে সমস্যা যদি না থাকে তবে আমারো সমস্যা নেই….. ?
ইহান: আচ্ছা তাহলে বসুন……..
[ তারপর ইহান আনহাকে একটা ম্যাথ বই দিলো আর আনহা একটা ম্যাথ বের করে ইহানকে বোঝাতে লাগল……
আনহা: এইখানে আমরা দেখতে পাই…. [ তখনি আদ্রের কল আসে৷৷ ]
স্কিনে আদ্র নামটা দেখতেই ইহানের মাথা গরম হয়ে যায়…..
আনহা: আদ্র তুমি একটু ওয়েট কর আমি আসছি। আর একটা কথা আমি না আসা পর্যন্ত কোথাও যাবে না ওকে…. [ বলে ফোন কেটে দেয় ]
আনহার কথা শুনে ইহানের অবস্থা খারাপ।
ইহান: [আমাকে ছেড়ে আদ্রের কাছে যাবেন….. ]
আনহা: আচ্ছা বোঝানো শেষ আমি এখন আসি
[ বলেই উঠে যেতে নেয়। তখনি আনহার ওড়নায় টান খায়। আনহার বুকটা কেপে উঠে। আনহা নিজের সাথে ওড়নাটা চেপে ধরে পিছনে ইহানের দিকে তাকায় ]
[ ইহান নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল ওর থেমে যাওয়া দেখে আনহার দিকে তাকিয়ে একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নেয়…. তারপর আনহার ওড়নার দিকে তাকিয়ে ওর টেবিলের পিন থেকে আনহার ওড়না ছাড়িয়ে দেয়…. আনহা কিছু না বলে চলে যেতে নেয় কিন্তু মেঝেতে কিছু থাকার কারনে পরে যেতে নেয় আর ইহান ততক্ষনাত আনহাকে ধরে ও নিজেও পিছলে দুজনে একসাথে পরে যায়। ঘটনার আকসিকতায় ইহানের নিজেই কিছু বঝতে পারে না…….
ইহান নিচে পরে যায় আর আনহা ইহানের বুকের উপর ঠাস করে পরে। প্রচন্ড ব্যাথা পায় ইহান নিজের বুকে। চোখ মুখ খিচে নিজেকে সামলায় ইহান…. নিজের বুকের উপর আনহাকে পরতে দেখে ইহান মাটিতে মাথা রেখে একটা নিশ্বাস নেয়। আর আনহা ভয়ে ইহানের শার্ট খামচে আছে। আর ওর চুল গুলো ইহানের মুখে…..
কিছুক্ষন এভাবে থাকার পর আনহা ইহানের থেকে সরে আসে…….কিন্তু ইহান নিজেকে সামলাতে পারে না…. কলমের পিন হাতে ঢোকার কারনে রক্ত বের হতে থাকে….
ইহানের হাতে রক্ত দেখে আনহা পাগল হয়ে যায়। নিজের ওড়নার কিছুটা ছিড়ে ওর হাতে বেধে দেয়…..
আনহা: কি করেছিস এসব কি করে হল…. [ উত্তেজিত হয়ে প্রলাপ বকতে থাকে। কিন্তু ইহান স্হীর চোখে আনহাকে দেখতে থাকে৷……
আনহা: হয়ে গেছে…. এবার আমি যাই…..
[ তখনি ইহান আনহার হাত ধরে ]
ইহান: আমি কিছু বুঝিনি আনহা [ মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে ]
আনহা: কি????
ইহান: আপনি যা করেছেন…. সেটা কি ছিল???
আনহা: মানে…..
ইহান: আসলে অংকটা আমি বুঝিনি আরেকটু বুঝিয়ে দিন….
আনহা: আমার তো…..
ইহান: প্লিজ…..
আনহা: আচ্ছা দেখি…….
,
,
,
,
,
তারপর আনহা ইহানকে ম্যাথ বোঝায় কিন্তু কিসের অংক……
.
.
.
.
.
বিগত ৩ ঘন্টা যাবত আনহা ইহানকে অংক বুঝিয়ে যাচ্ছে কিন্তু কাকে বোঝাবো হাজারবার অংক বোঝানোর পরও ইহান কিছুই বুঝলো না। আর কি বুঝবি আনহা যখন অংক বুঝায় তখন ইহান আনহাকে দেখতে ব্যস্ত…… এবার আর আনহা পারে না।
আনহা: ওই তোর মাথায় কি গবর ছাড়া কিছুই নাই নাকি??? ছোট বেলার চেয়েও বেশি গাধা হয়ে গেছিস। আচ্ছা এই মাথা নিয়ে তুই সব জায়গায় গোল্ডেন রেজাল্ট কিভাবে করলি…??? আচ্ছা সত্যি করে বল তুই কি নকল করে অংক পাশ করেছিস…. ???
ইহান: জানিনা। আমি আপনার পরা বুঝতে পারছি না নাকি আপনি বোঝাতে পারছেন না….
আনহা: সে যাই হোক আমি আজ আর পারব না বাকিটা কাল বোঝাবো…. [ বলেই ব্যাগটা নিয়ে বেড়িয়ে আসে আর ইহান আনহার পিছনে ]
আনহা: ইসসস আদ্র হয়ত চলে গেছে… [ বলে দ্রুত সেদিকে যায় ]
[ আনহা ভার্রসিটির মাঠে গিয়ে দেখে আদ্র বসে বসে ওয়েট করছে…..
আনহা: তুমি এখনো যাওনি??
আদ্র: আমার বুড়িটা থাকতে বলেছিল আর আমি যেতে পারি…..
আনহা: হুমম তাই বলে এতক্ষন….
আদ্র: ছাড়ত… কেন থাকতে বলেছ তাই বলো??
আনহা: তোমার সাথে বাসায় যাব বলে [ বেবি ফেস করে ]
আদ্র: চল ঘুরতে নিয়ে যাব….
আনহা: না দেরি হয়ে গেছে… বাসায় চল….
তখনি ইহান আসে….. আদ্র ওকে দেখে কিছুটা বিরক্ত হয়…..
ইহান: আপনি কি ওনার সাথে যাবেন আনহা….
আনহা: হুমম কেন???
ইহান: না এমনি….
আদ্র: চল আনহা আমার বাইকে দিয়ে আসি….
আনহা: আবার বাইক…???
ইহান: আনহা আপনি…..
আদ্র: তুমি কিছু বলবে অয়ন…. আনহাকে কি তুমি দিয়ে আসবে…
ইহান মাটির দিকে তাকিয়ে আবার আনহা দিকে তাকায়….
ইহান: জি না [ একটা মুড নিয়ে ] আমি ওনার থেকে কাল পরার টাইম জানতে এসেছি….
আনহা: কাল ভার্রসিটির পর…..
আদ্র আনহার হাত ধরে বাইকে বসিয়ে দেয়….
আদ্র: তাহলে বায় ইহান.. সরি অয়ন কাল কথা হবে অর্নির সাথে…. [ তারপর বাইক স্টার্ট দিয়ে চলে যায় ]
আনহা: কাল ঠিক সময় আসব…..
তারপর ওরা দুজন ইহানের চোখের আড়াল হয়ে গেল…. আর ইহান স্হীর চাহনিতে ওদের যাওয়া দেখল…….
ইহান: হুমম দেখা তো হবেই কিন্তু কখন সেটা দেখার বিষয় আপনি আমার আনহাকে আমার সামনে থেকে বাইকে নিয়ে গেলেন এখন আমার কি করা উচিত…. ??? আসলেই কি করব….. [ কান্নার সুরে ]
তারপর কিছুক্ষন ভাবলো…..
ইহান: ওকে আনহা…. কাল আপনার সাথে দেখা হবে আমার…. কিন্তু….. [ বাকা হেশে আনহার ওড়নাটায় চুমো খেয়ে ]
,
,