#আপনিময়?তুমি [ An unexpected crazy love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Mêhèr ]
Part: 13………
ইহান: আমি জানি আনহা আপনার সাথে ওইরকম আচরন করে আমি অন্যায় করেছি। কিন্তু ভালোবেসে কোনো অন্যায় করিনি। কারন মানুষের ফিলিংস কোনো কিছুর জন্য সীমাবদ্ধ নয়। ভালোবাসা ধর্ম বর্ন জাত কিছুই মানে না…. সেখানে আমার দোষটা কই আনহা……. আমিও তো শুধু আপনাকে চেয়েছি……………
,
,
,
,
,
,
,
,
আনহা নিজের রুমে বসে কাদতে থাকে। তার জিবনের সবচেয়ে বড় কষ্টটা আজ আনহা পেয়েছে….. তাকে ধোকা দেওয়া হয়েছে। তার সমস্ত ভালোবাসা আবেগ আকাঙ্ক্ষা এক মুহুর্তেই ইহান নিজের সত্যিটা জানিয়ে শেষ করে দিয়েছে….. আনহার পবিত্র ভালোবাসাকে কলুষিত করেছে…….
আনহা: কেন করলি তুই এমন ইহান??? যেই মানুষের উপর আমি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতাম সেই তুই আমার সবচেয়ে দুর্বল জায়গায় আঘাত করে আমার বিশ্বাসটাই ভেঙে দিলি…… আমার পক্ষে তোর সাথে থাকা আর সম্ভব নয়। আমি চলে যাব। এতদিনের মানুষের কথার ঘা আমার কানে লাগত কিন্তু তোর দেওয়া ঘা আমার হৃদয়ে আঘাত করেছে……….
,
,
,
,
,
,
রাত প্রায় ১২টা…….
ইহান তখন থেকে নিজের বাড়ির ছাদে দাড়িয়ে আছে….. আর নিজের করা কাজগুলোর কথা ভাবছে। ইহান খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে যে আর যাই হোক যা হয়েছে এর পর আনহা কোনো মতেই ইহানের সাথে থাকবে না।
ইহান: আমি জানি আনহা এর পর আপনি আমার সাথে থাকতে চাইবেন না। কিন্তু আমি তো আপনাকে ছাড়া নিজেকে কল্পনাও করতে পারব না আনহা…… এখন আপনি যদি আদ্রের কাছে ফিরে যেতে চান তবে……..
……… আর কিছু ভেবে পায় না ইহান…….
ইহান: I am sorry anha but i can’t Leave you……. আমি জানি অতিতে আমি অনেক ভুল করেছি কিন্তু আমার পক্ষে অতিতের ভুলের জন্য আমার বর্তমান আর ভবিষ্যত কোনোটাই নষ্ট করা সম্ভব না…… আমি আপনাকে চাই আনহা। তা সে যেভাবেই হোক। তার জন্য যদি আপনাকে জোর করে নিজের কাছে থাকতে বাধ্য করতে হয় তবে আমি তাই করব। কিন্তু তবুও আমার সেই আপনিকেই চাই….…….
……………….
ইহান: যদি ভালোবাসা দিয়ে আমি নিজের ভালোবাসা নাই পাই। তবে এবার অধিকার দিয়ে আমি আমার অধিকার আদায় করব। আমি আপনার হাসবেন্ড এবার আপনাকে সেটা বুঝতে হবে। আর আপনাকে বাচলেও আমার সাথে বাচতে হবে মরলেও আমার সাথেই….. আমি আমার #আপনিময়?তুমিকে,,,, নিজের থেকে আলাদা হতে দেব না। দরকার হলে আমার কঠোর রুপটা আপনাকে দেখতে হবে…………….
,
,
,
,
,
,
,তারপর ইহান রুমে যায়। রুমে গিয়ে দেখে আনহা কাদতে কাদতে ফ্লোরেই শুয়ে পরেছে। শীতে বারবার কেপে উঠছে আনহা। ইহান গিয়ে আনহাকে কোলে তুলে নেয়। ইহানের ছোয়ায় আনহার ঘুম ভেঙে যায়…..
আনহা: কি করছিস তুই ছাড় আমাকে…. ??? [ ইহানের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে আনহা ]
ইহান গিয়ে আনহাকে খাটে রাখে তখনি ইহানকে ধাক্কা মেরে নিজের থেকে সরিয়ে দিতে চায়। কিন্তু পারেনা বরং আনহাকে দুরে যেতে দেখে ইহান ওকে আরো কাছে টেনে নেয়।
ইহান: আপনি ভুলে যাবেন না আনহা এখন কিন্তু লুকানোর মত আমার মাঝে কিছু নেই যা জানার সবটাই জানা হয়ে গেছে। তাই বলছি শান্ত হয়ে থাকুন নাহলে সত্যি সত্যি এর মাসুল আপনাকে দিতে হবে……
আনহা: কেন করছিস তুই এরকম। আর কি চাই তোর……
ইহান: চাওয়া আমার একটাই। তাও সেটা অনেক আগে থেকেই। সেটা হচ্ছেন আপনি শুধু পার্থক্য হচ্ছে আগে আপনাকে চাইতাম কিন্তু এখন আপনার মাঝে নিজের ওয়াইফকে চাই……..
আনহা: সেটা কোনোদিন ও সম্ভব না। আমি তোর সঙ্গে কোনোদিন ও থাকব না।
ইহান: সেটা আপনার ব্যপার…. আমার এসব জেনে কাজ নেই। যাই হোক খেয়েছেন……
আনহা:…….
ইহান: আপনার চোখ মুখ বলেই দিচ্ছে আপনি কিছু খাননি….. আমি আসছি….
[ বলেই ইহান খাবার আনতে চলে গেল। তারপর খাবার এনে আনহার সামনে দিল। কিন্তু আনহা তা ছুয়েও দেখবে না ইহান তা জানে….. তাই ইহান নিজেই আনহাকে খাইয়ে দিতে গেল………
ইহান: দেখুন আনহা আমার এই জিনিসটা একদম পছন্দ না। আর আপনিও খাবার নষ্ট করা পছন্দ করেন না তাই বলছি খেয়ে নিন……..
আনহার দিকে খাবার তুলে দিতেই আনহা তা ফেলে দিল। এটা দেখে ইহানের প্রচন্ড রাগ উঠে…… ইহান আনহার দুগাল চেপে ধরে খাবারটা মুখে দিতেই আনহা তা ফেলে দেয়…..
ইহান: আপনি কিন্তু অতিরিক্ত করছেন আনহা। আপনি কাল থেকে কিছুই খাননি…. না খেলে শরীর খারাপ হবে….. ???
আনহা: শরীর খারাপ না মরে যেতে চাই আমি……
ইহান: কেন মরে যেতে চাইছেন আদ্রের কাছে যেতে দিচ্ছি না বলে……..
আনহা: হমম…. তাই। আমি আদ্রের কাছেই যেতে চাই কিন্তু তুই যেতে দিতে চাস না। তাই তোর সাথে থাকার চেয়ে মরেই যাওয়াই ভালো…… ???
ইহান: ও তাই নাকি…. তা ভালো। আচ্ছা তারমানে আপনি বলতে চাচ্ছেন আদ্রের কাছে যেতে না দিলে নিজেকে শেষ করে দিবেন……
আনহা: হুমম…..
ইহান: ওকে…… [ বলেই খুব রেগে বেড়িয়ে যায় রুম থেকে তারপর কিছু একটা এনে আনহার সামনে দেয়। ]
আনহা: এসব কি???
ইহান: আমি আপনার স্বামী তাই আপনার ইচ্ছের দাম দিতে চাইছি….
আনহা: মানে….
ইহান: মানে স্বামী হিসেবে স্ত্রীর ইচ্ছে পুরন করা আমার কর্তব্য। আপনি দুটি ইচ্ছার কথা বলেছেন……
১. আদ্রের কাছে আপনাকে যেতে দেওয়া।
২. আর দুই আপনাকে মেরে ফেলা…..
জানেন তো আমি হৃদয়হীন নই যে স্ত্রীর ইচ্ছে অপুর্ন রাখব আবার coward নই যে নিজের স্ত্রীর ইচ্ছে পুরন করার জন্য তাকে পরপুরুষের হাতে তুলে দেব। তাই স্বামী হিসেবে আমার চয়েজ ২ নাম্বারটা। কারন আমি আমার স্ত্রীর জন্য দুনিয়ার সব সুখ এনে দিতে রাজি কিন্তু তাকে অন্য কারো হাতে তুলে দিতে রাজি নই। এর চেয়ে আমি তাকে নিজ হাতে মেরে তার সাথে নিজেকে শেষ করে নিজেকে একজন আর্দশ হাসবেন্ড মনে করব………
আনহার ইহানের কথার আগা মাথা কিছুই খুজে পাচ্ছে না। ইহান কি বলতে চাইছে তাই বুঝতে পারছে না আনহা………
ইহান: এই নিন আনহা…… [ খুব ধারালো একটা ছুড়ি??? এগিয়ে দিয়ে ]
আনহা ইহানের দিকে তাকিয়ে আছে অবাক চোখে…….
ইহান: কিহল মিস আনহা…. সরি মিসেস. ইহান….. ধরুন ছুড়িটা। আর শেষ করুন নিজেকে। আপনার জন্য 2nd option আমার বেশি পছন্দ…..
আনহা:………
ইহান: কাজটা আমি করতাম। কিন্তু কি করব আমি তো আপনাকে নিয়ে বাচতে চাই কিন্তু আপনি চান মরতে তবে তাই তবে…..
আনহা:……..
ইহান: কিহল আনহা পারবেন নাকি….. না পারলে বলুন….. আমি এগুলো রেখে দেই। তবে একটা কথা মনে রাখবেন আপনি যাই করেন আদ্র কেন কারো কাছেই আপনি যেতে পারবেন না….. আপনার সারাজিবনের প্রতিটি মুহূর্ত আপনাকে আমার সাথেই কাটাতে হবে। সেটা সেচ্ছায় বা জোর করে…….
আনহা:………
ইহান: এইখানেও আপনার জন্য ২টি অপশন।
১ হয় আপনাকে আমার সাথে সারাজীবন স্বামী -স্ত্রীর মত থাকবেন নয়ত
২. নিজেকে শেষ করবেন……
এখন বলুন কোনটা চান………….,
,
,
,
,
,
তারপর আনহা গিয়ে ইহানের হাত থেকে ছুড়িটা নিয়ে নেয়……
আনহা: তোর সাথে থাকার চেয়ে নিজেকে শেষ করে মরে যাওয়াই ভালো। তাই আমারো তোর দেওয়া 2nd option টাই বেশি পছন্দ…….
ইহান আনহার কথায় একটুও অবাক হয় না। শুধু বাকা ঠোঁটে হাসি দেয়। কারন ইহান খুব ভালো করেই জানে আনহা এটাই করবে।
ইহান: হুমম করুন…. আমিও তাই চাই। নিজের স্ত্রীকে আরেকজনের কাছে দেখার চেয়ে তার মৃত্যু দেখাই ভালো…… তাহলে কাজ শুরু করুন….
[ বলে ইহান সোফায় বসে পরে। আর আনহার যেন ইহানের কথায় প্রচন্ড অপমান বোধ হচ্ছে। এসব কথা শোনার চেয়ে মৃত্যুটাই ভালো….. এসব ভেবেই চোখ বন্ধ করে ধারালো ছুড়িটা আনহা নিজের বাম হাতের শিরার উপর রাখে। আর ইহান সোফায় বসে আনহার কাহিনিগুলো দেখেতে থাকে……..
আনহা হাতে ছুড়িটা ছোয়াতেই চামড়া থেকে চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পরতে থাকে। আর ইহান দেখতেই থাকে।
ইহান: আমিও দেখতে চাই আমাকে পিছু ছাড়াতে কি করতে পারেন আপনি।
আনহা চোখ বন্ধ করে এক নিশ্বাস নিয়ে ছুড়িটা শিরার উপর টান দিতে ধরলেই ইহান উঠে খুব দ্রুত আনহার হাত থেকে ছুড়িটা ফেলে দিয়েই আনহার ঠোঁট জোরা নিজের দখলে নিয়ে খুব শক্ত করে আনহাকে জড়িয়ে ধরে……. ঘটনার আকস্মিকতায় আনহা কিছু বুঝতে পারে না শুধু এইটুকু ছাড়া যে সে এখন অন্য কারো দখলে…..
বেশ কিছুক্ষন পর ইহান আনহাকে ছেড়ে ওর চোখের দিকে তাকায়…. আনহা নিজের চোখ বন্ধ করে আছে…… এইটা দেখে ইহান আনহার ভেজা চোখে পরশ বুলিয়ে দেয়।
ইহান: আপনি ভাবলেন কি করে ইহান তার #আপনিময়?তুমির কিছু হতে দেবে…..
এইটা শুনে আনহা ওর দিকে তাকায়……
ইহান: সত্যি বলছি আপনাকে মেরে ফেলব। কিন্তু তখন যখন দেখব আপনি আমার নন…. কিন্তু এখন সব দিক দিয়ে আপনি আমার আনহা। তাই নিজের সবচেয়ে প্রিয় জিনিসের ক্ষতি করার মত বোকা আর যাই হোক আমি নই আনহা….. [ আনহার পুরো মুখে ভালোবাসার পরশ বুলয়ে ]
আনহা কি করবে আনহার কি করা উচিত কিছুই বুঝতে পারছে না আনহা। ইহান ওকে পাথর বানিয়ে দিয়েছে।
ইহান: আপনি বসুন আমি খাবার খাইয়ে দিচ্ছি।
ইহান খাবার মেখে আনহার সামনে ধরলেই আনহা নিজের মুখ ফিরিয়ে নেয়। এইটা দেখে ইহান রেগে গিয়েও শান্ত হয়ে যায়। তারপর তাচ্ছিল্যের হাশি দিয়ে বলে……
ইহান: আপনি কি চান আনহা আমি এমন কিছু করি যা আপনার খারাপ লাগুক। আমি চাইনা এমন কিছু করতে যদি আপনি আমাকে বাধ্য না করেন তবে…..
আনহা:….. [ নিচের দিকে তাকিয়ে কাদছে ]
ইহান: খেয়ে নিন আনহার…. ???
আনহা:…….
ইহান: খেয়ে নিন [ ধমক দিয়ে ]
ইহানের ধমকে আনহা কেপে উঠে….. তারপর আর কথা বাড়িয়ে কাদতে কাদতে খেয়ে নেয়। খাওয়া শেষে প্লেটের অবশিষ্ট খাবার ইহান খেয়ে নেয়।
ইহান: আসলেই বউয়ের ভাগের খাওয়ার জিনিসের মজাই আলাদা…..
তখনি আনহার মোবাইলের রিংটোন বেজে উঠে। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে আদ্রোর কল। আনহা ইহানের দিকে তাকায় আরেকবার মোবাইলের দিকে। আনহা রিসিভ বাটনে দিতেই ইহান ওর ফোন কেড়ে নেয়……
আনহা: আমার মোবাইল…..
ইহান মোবাইলটা নিয়ে একটা আছাড় মারে। মুহূর্তেই তা গুড়ো হয়ে যায়।
ইহান: যাহহহ ভেঙে গেল। সে যাই হোক আপনার আর মোবাইলের দরকার কি তাই বলুন। আপনার হাসবেন্ডকে কল দিতে হবে না সে ঠিক সময় মত তার বউয়ের টানে চলে আসবে। আর যদি খুব বেশি ভালোবাসার কথা বলার শখ জাগে তা জমিয়ে রাখবেন আমি আসলে তা আমাকে বলবেন। আর বাবার বাড়িতে না হয় হাসবেন্ড এর মোবাইল দিয়ে কল দিলেন। আমার সবকিছুই তো আপনার….. আর যদি কোথাও যাওয়ার হয় তবে আমি নিয়ে যাব….. আর আমাকে না বলে বাড়ির বাইরে এক পা পরলে তার পরিনতি কি হবে তার কল্পনাও করতে পারবেন না আপনি।
আনহা: তুই কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি করছিস???
ইহান: তুই নয় তুমি…. আমি চাই আমার বউ আমাকে তুমি করে বলুক। আর বাড়াবাড়ি…. সেটা এখনো করিনি কিন্তু এবার করব…
আনহা: ইহান……
ইহান: হুসসস…. [ আনহার ঠোঁটে আঙুল রেখে বুড়ো আঙুল দিয়ে স্লাইড করে। ] এখনো কিছুই হইনি……..
আনহা: আমি আগেই বলেছি…….
ইহান: একটা কথা আনহা। আপনার মতে আমি টিচার স্টুডেন্ট এর সম্পর্ক অপমান করছি। কিন্তু আপনি তো স্বামী-স্ত্রীর পবিত্র সম্পর্ককে অপমানিত করছেন। আমি ছোট হলেও আপনার হাসবেন্ড তো তাই বলছি আমি না হয় পাপী তাই পাপ করেছি। কিন্তু আপনি তো শিক্ষক হয়েও যদি আমার মত ভুল করেন তাহলে আপনি তো আমার চেয়েও খারাপ হয়ে যাবেন।
আনহা:…………..
ইহান: আমি তো তাও যাকে ভালোবাসি তার সাথেই খারাপ করেছি আর তাকেই বিয়ে করেছি কিন্তু আপনি স্বামী থাকার পর যদি এসব করেন তবে।???
আনহা:…….
ইহান: সে যাই হোক আশা করব আপনি আপনার সন্মান আমার কাছে বজায় রাখবেন। আপনাকে খারাপ কিছু না বলার কারন আমি আপনাকে সন্মান করি। আর এটা জেন সবসময় বজায় থাকে……
ইহানের এই কথা শুনে আনহা ওর দিকে তাকায়। জোর না করেও যে কাউকে শুধু কথার মাধ্যমে কোনোকিছুর জন্য বাধ্য করা যায় ইহানকে না দেখলে হয়ত আনহার এটা জানাই হত না………….
ইহান: এবার লক্ষী মেয়ের মত ঘুমাবেন। আমার পিচ্চি বউ…..কুকি….. [ আনহার গাল টেনে ]
ইহান আনহাকে শুইয়ে দেয়। তারপর ওর শরীরে কাথা দিয়ে ওর খুব কাছে গিয়ে বসে। ইহানকে দেখে আনহা ওপাশ ফিরে শুয়ে চোখ বন্ধ করে থাকে…….
এইটা দেখে ইহান বাকা হেশে বলে…..
ইহান: এটা করলে তো হবে না। বিয়ে করেছি কি এমনি এমনি….
[ বলেই আনহাকে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। তারপর শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে ]
ইহান: শক্ত করে এইভাবে বুকে জড়িয়ে রাখার জন্য বুঝলেন। [ গাড়ে একটা কিস করে ]
আনহা:……
ইহান: I love you Anha…..
আনহা:………
ইহান: আজ এর উওর না পেলেও একদিন ঠিক এর উওর হ্যা হবে দেখে নিবেন। সেদিন আর আপনার কাছে আমার আর আপনার এই সম্পর্কের কোনোকিছুই অস্বাভাবিক মনে হবে না। বরং আপনি নিজেই সবটা মেনে নিয়ে আমাকে কাছে টেনে নিবেন….. নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসবেন আমাকে……. [ আনহার চুলে হাত বুলাতে বুলাতে ]
আনহা শুধু একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে……
তারপর আনহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরে……….
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
এভাবেই দেখতে দেখতে কেটে যায় প্রায় ৩ মাস…… এই কয়দিনে ইহান আনহাকে যতবার নিজের কাছে টানতে চেয়েছে আনহা ততবার নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে……. ইহান হাজার চেয়েও আনহার সাথে নিজের সম্পর্কটা স্বাভাবিক করতে পারেনি। ইহান আনহাকে জোর করে এখানে না রাখলেও আনহা ইহানের কথায় বাধ্য হয়েই ওর সাথে থাকছে……
আনহার একটাই কথা সে ইহানের সাথে থাকবে না। আর ইহান ও আনহাকে ছাড়বে না। যার কারনে ওদের সম্পর্কের কোনো উন্নতি না ঘটলেও একে অপরের থেকে দুরত্বটা অনেক বেড়েছে। কিন্তু আনহার প্রতি ইহানের ভালোবাসা, কেয়ার & শ্রদ্ধা একটুও কমেনি। কারন ইহান আনহাকে ভালোবাসার চেয়েও সন্মান করে বেশি। আর আনহা ইহানের ভালোবাসায় বাধা না পরলেও নিজের প্রতি ইহানের এই সন্মানের জন্য ওর ওকে ছেড়ে যেতে পারছে না…………………
হঠাৎ একদিন আনহার শরীরটা খারাপ করে সকাল থেকে বমি বমি হতে থাকে…. কিন্তু ইহানকে কিছু বলে না।
ইহান অফিস থেকে বাড়ি এসে রুমে যেতেই আনহার আবার বমি আসে। ও দৌড়ে ওয়াসরুমে যায়। ওয়াসরুম থেকে বের হলে ইহান বেশ চিন্তিত হয়ে আনহার কি হয়েছে জানতে চায়। আনহা কিছু বলতে যাবে তখনি মাথা ঘুরে পরে যায়।
ইহান আনহার পরে যাওয়া দেখে পাগলের মত করতে থাকে………
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আনহার জ্ঞান ফিরতেই আনহা নিজেকে হসপিটালের বেডে আবিষ্কার করে। পাশে খুব চিন্তিত হয়ে বসে আসে ইহান। আনহার জ্ঞান ফেরাতে ও যেন প্রান ফিরে পেয়েছে।
ইহান: আপনি ঠিক আছেন আনহা। কোথাও কষ্ট হচ্ছে নাতো আপনার??? কি হয়েছে আপনার কোথায় কষ্ট হচ্ছে বলুন আমাকে………. [ কাপা গলায় ]
তখনি ডক্তর আসে……..
ডাক্তার: Relax Mr. Ahmad….. ওনি একদম ঠিক আছে…. আপনারা আমার সাথে কেবিনে আসুন……
তারপর ইহান আর আনহা দুজনে ডাক্তারের কেবিনে যায়……
ডাক্তার: ওনি কি হয় আপনার মি. অয়ন…..
ইহান: আমার ওয়াইফ…..
ডাক্তার: Oh I see….. এই বয়সেই বিয়ে করছেন। আপনি খুব বেশি ফাস্ট মি. অয়ন…..
ইহান: মানেটা বুঝলাম না। আমার ওয়াইফের কি হয়েছে।
ডাক্তার: লাভ ম্যারেজ তাই না।
ইহান: জি…. মানে…..
ডাক্তার: বুঝতেই পারছি দুজনেই কম বয়সি তার উপর বিয়ে করেছেন লাভ মেরেঞ্জ। মুচকি হেশে…..
এইটা শুনে আনহা অবাক হয়ে ইহানের দিকে তাকায়….. ইহান একটু মুচকি হাসে….
ইহান: জি….. বুঝতেই পারছেন। দুজন দজনকে খুব ভালোবাসি তাই দুরে থাকতে না পেরে বিয়ে করে নিয়েছি….[ কিছুটা লজ্জা নিয়ে ]
ইহানের এমন কথায় আনহা অগ্নি চোখে ওর দিকে তাকায়…..
ডক্টর: হুমম সমবয়সী মেয়ের সাথে প্রেম করলে যা হয় আর কি.।।।।
আনহা: এইযে কে বলেছে আমি ও……
ইহান: জি ঠিক বলেছেন। অতিরিক্ত বেশি ভালোবাসি তাই। কিন্তু বউতো রাগ করার জন্যই.।।।।
ডক্টর: গুড……
ইহান: আচ্ছা ডক্টর আনহার হয়েছে কি…..
ডক্টর: ওনি একা নয় আপনার ও কিছু হতে চলেছে…..
ইহান: মানে…..
ডক্টর: কংগ্রাচুলেশনস….. আপনার ওয়াইফ কনসিভ করেছে….. আপনি বাবা হতে চলেছেন………
কথাটা শুনে ইহান আর আনহা দুজনেই নির্বাক হয়ে যায়। একে অপরের মুখের দিকে তাকায়…….
ডক্টর: আপনারা কি খুশি নন। না মানে আপনাদের বয়স তো বেশি না তাই আরকি। এখনি কি বেবি নিতে চান…..
এইটা শুনে ইহান ডক্টরের মুখের দিকে তাকায়……..
ইহান: আমি বাবা হতে চলেছি…. [ কাপা কন্ঠে ]
ডক্টর: হুমম ???
ইহান গিয়েই ডাক্তারকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়। তারপর ডাক্তারকেই কোলে তুলে নাচা শুরু করে….. ইহানকে ছাড়াতে ডাক্তারের ঘাম ছুটে যায়….. ইহান গিয়ে পাগলের মত পুরো হাসপাতালের সবাইকে জানায় সে বাবা হতে চলেছে….. পুরো হাসপাতালের সবাইকে মিষ্টি আনিয়ে বকশিস দেয়……
ইহান: আমি বাবা হতে চলেছি…. [ আনন্দে আত্নহারা হয়ে ]
আনহা অবাক চোখে ইহানকে দেখতে থাকে। যে ছেলেকে বাচ্চা হয়েও বাচ্চামি করেনি কোনোদিন। আজ সে নিজে বাবা হওয়ার কথা শুনে বাচ্চামি করছে। যেন পৃথিবীতে সে একাই বাবা হচ্ছে…….
ইহান গিয়েই আনহাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়…. তারপর আনহার কপালে, গালে পুরো মুখে চুমো একে দেয়…..
ইহান: আনহা আপনি নিজেও জানেন না আপনি আজ আমাকে কত বড় খুশির সংবাদ দিয়েছেন। আমি বাবা হতে চলেছি। আপনি মা হবেন। আমাদের ছোট্ট সংসারে ছোট্ট একটা বেবি আসবে আনহা…. [ আনহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করে ]
আনহা নিজের অজান্তেই ইহানকে জড়িয়ে ধরে। কি বলবে বুঝতে পারছে না। যার থেকে দুরে চলে যাওয়ার জন্য আনহার এত প্রচেষ্টা তার অংশই কিনা আনহা তার নিজের মধ্যে ধারন করছে………
আনহা: [ কি করব আমি। না ইহানকে নিজের স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারছি আর না ওকে ছেড়ে যেতে পারছি। আর এখন কি করব??? এই বেবির কথা শুনে ইহান যতটা খুশি হয়েছে কিভাবে আমি ওর খুশিটাকে ওর থেকে কেড়ে নেব…….. ]
ইহান: Thank you so much আমাকে এত বড় একটা খুশি দেবার জন্য………
,
,
,
,
,
,