#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:২২
রাহি: তুমি না দেশের বাহিরে চড়ে যাচ্ছিলে,এখানে কিভাবে আসলে আর জানলে কি করে আমি এখানে?
খালা : তাইতো তুই জানলি কি করে?
রিফাত: তোমাদের সব প্ল্যান ঠিক ছিলো কিন্তু কাল তোমরা সবচেয়ে বড় ভুল করে ফেলছো।
সিয়াম : মানে?
রিফাত: মানে কাল মধ্যরাতে যখন আমি মন খারাপ করে বেলকনিতে দাড়িয়ে ছিলাম তখন দেখি বাসার মেন গেইট দিয়ে কেউ বাসায় আসছে। কে আসছে তা দেখার জন্য রুমে থেকে বের হয় নিচে আসার জন্য। তখনি সিড়িতে দাড়িয়ে তোদের কথা গুলো শুনতে পায় আর আমার সামনে তোদের মুখোশ খুলে যায়। তখনি আমি জানতে পারি আমার রাহি কোথাও যায়নি তোরা আমার রাহিকে কিডন্যাপ করে আটকে রাখছিস। আমার রাহডকে কই আছে তা জানার জন্যই সকালে অন্য দেশে চলে যাবার নাটক করে বাসা থেকে বের হয়। তার কিছু সময় পর তোর মা (রিফাতের খালা)বাসা থেকে বের হয়.। তোর মা বাসা থেকে বের হবার পর আমি অয়ন ও তার দল তোর মায়ের পিছু নেয় আর এখানে এসে হাজির।
রাহি: ওরে ফাজিল ছেলে,আমার কলিজা,আমার গুলুগুলু।
এই বলে রাহি রিফাতকে জরিয়ে ধরে।
রিফাত: সব ঠিক আছে,কলিজা,ফাজিল সব বুঝলাম কিন্তু গুরুগুলু কি?
রাহি: এইটা তো পালোপেসে বলছি।[দাতঁ কেলিয়ে বলে]
রিফাত: পালোপেসে আবার কি?
রাহি: হায়রে গাঁধা ভালবেসে ভালবেসে।
রিফাত: আচ্ছা।
রাহি : এখন বুঝছো।
তখন রিফাত রাহির নাক টেনে বলে
রিফাত: হুমমম রে আমার শয়তানি বুঝছি।
অয়ন: এতো ভালবাসা দেখে জ্বলতাছি। কবে যে আমার ভালবাসা হবে এমন।
রাহি: এমন করে বলেন কেন আপনার ও তো আছে।
অয়ন: কই…
রাহি: পুতুল কে ফোন দিবো।
অয়ন: নাহ…..
রিফাত: পুতুলটা আবার কে?
রাহি: তোমার অফিসে জব করে সেই মেয়েটা অয়ন ভাইয়ার গার্লফ্রেন্ড।
রিফাত: হারামি আমাকে একটু বললি ও না।
অয়ন: সময় পায়নি রে।
রাহিদের কান্ড দেখে সিয়াম,রিফাতের খালা,রিতা রাগে ফুসছে।
সিয়াম: তোদের নাটক বন্ধ কর।
রিফাত : আহারে….
রাহি: এই যা আমি তো একটা কথা ভুলে গেছি।
রিফাত: কি?
রাহি : আসলে….আসলে….
রিফাত: আসলে আসলে কি…
রাহি: তোমার বাবা-মাকে ও এই মহিলা খুন করছে।
রাহির কথা শুনে রিফাত এক পা পিছনে চলে যায়।
রিফাত: রাহি তুমি এসব কি বলছো,আমার বাবা-মা তো গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গেছে।
রাহি: না, সেই এক্সিডেন্ট এই মহিলা করিয়েছিলো। আমি যা বলছি সব সত্যি বলছি। সব কথা আমি নিজে কানে শুনছি।
রাহির কথা শুনে রিফাত রাগ হয় আর তাড়াতাড়ি তার খালার কাছে গিয়ে জোরে গলা চেপে ধরে বলে…
রিফাত: তুই এতো লোভী। সম্পতির লোভে আমার মা-বাবাকে মেরে ফেরেছিস। তুই এমনি আামার মায়ের কাছে টাকাে,সম্পতি চাইলে আমার মা তোকে দিয়ো দিতো।কিন্তু তুই লোভে আপন বোন আর তার জামাই কে মেরে ফেললি আমাকে এতিম করে দিয়েছিস। তোকে তো আমি মেরেই ফেলবো।
রাহি আর অয়ন রিফাতকে সেখান থেকে সরায়।
রিফাতের খালা হাত দিয়ে গলা ধরে কাশতে থাকে।
সিয়াম: আমার মা কে মারতে চাস তুই, তোকে আমি মেরে ফেলবো।
রিফাত: তোর মাকে মারতে চাইসি তাই তোর এতো কষ্টে হয়ছে তাহলে আমার কি করা উচিত তুই বল। [জোরে ধমক দিয়ে বলে]
রাহি: রিফাত শান্ত হও,। এমন পাগলামো করো না।
রিফাত: এই মহিলার আপন বোন ছিলো আমার মা।
রিফাতের খালা: কে বলছে তোর মা আমার আপন বোন।
রিফাত: মানে…
রিফাতের খালা: তোর মা আমার বাবার ১ম বউয়ের সন্তান। ১ম বউ মারা যাবার পর আমার মাকে বিয়ে করে।
আমি আগে থেকেই তোর মাকে সহ্য করতে পারতাম না তার মাঝে বাবা ও বেশি সম্পতি ওর নামে করে দেয়। সম্পতির জন্যই ওকে অনেক সহ্য করছি।
রিফাত: আমার মন বলতাছে তোরে খুন করে ফেলি।
অয়ন: তোর কিছু করতে হবে না। আমাদের কাছে দিয়ে দেয় দেখ ওদের কি অবস্থা করি।
রাহি: ভাইয়া আমি কয়টা দিন রেখে দেয়। আমাদের সাথে এতো বাজে গেম খেলার শখ মিটাবো ওদের।
অয়ন: আচ্ছা যেদিন আমাদের হাতে দিবেন বইলেন।
রাহি: আচ্ছা।
অয়ন: এখন আসি তাহলে।
রিতা: আপনি এইটা কি করছেন। আমাদের নিয়ে যান। রাহি: তুই চুপপ থাক না হলে তোরে খুন করবো।
এরপর রিতা চুপ হয়ে যায়।
অয়ন আর তার দল সেখান থেকে চলে আসে।
রিফাত: কি করবে এদের সাথে।
রাহি: আজ থাক কাল থেকে শুরু হবে।
এরপর রাহি পাঁচজন বডিগার্ড সেখানে রেখে রিফাতের সাথে বাসায় চলে আসে।
রাহি আসার সময় বডিগার্ডদের বলে আসে সিয়াম,রিতা আর খালাকে সারাদিন কোনো খাবার দিবে না, সন্ধ্যার পর দুটো রুটি আর পানি দিবে।
রাহি আর রিফাত বাসার ভিতরে এসে দারোয়ানের গালে ঠাস ঠাস চড় মারে।
রিফাত: তুই টাকার লোভে আমাদের সাখে এমন করেছিস এর শাস্তি তুই পাবি।
এরপর রিফাত তার একটা বডিগার্ড দিয়ে দারোয়ানকে সিয়ামদের যেখানে রাখছে সেইখানে পাঠায় দেয়।
রাহি আর রিফাত বাসার ভেতরে যায়। দুজনকে এক সাথে দেখে সবাই অবাক।
রিফাতার দাদু আর বুলি দদুজন ড্রইংয় রুমে বসে ছিলো রাহি আর রিফাতকে এক সাথে দেখে তারা অবাক হয়ে যায়।
দাদু: তোমরা দুজন একসাথে কি ভাবে? রিফাত তুমি তো অন্যদেশে চলে যাবে তাই সকালে বের হলে তাহলে রাহিকে কোথা থেকে নিয়ে আসলে।
রিফাত: সব বলবো আগে তুমি সোফায় বসো।
দাদু সোফায় বসার পর রিফাত সব কিছু দাদুকে বলে।
সককিছু শুনে দাদু অবাক।
দাদু: মানুষ এতো নিচে নামতে পারে জানতাম।ওর কঠিন শাস্তি হয় যেনো।
রাহি আর রিফাত দাদুর সাথে সব কথা বলে তাকে শান্ত করে দুজনে ফ্রেশ হবার জন্য নিজেদের রুসে চলে যায়।
রাতে….
রাহি রিফাতের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে।
রাহি: আমাকে রিফাত মাফ করে দিয়ো। তোমাকে অনেক দুঃখ -কষ্ট দিয়েছি। আমি কখনো আর তোমার বিশ্বাস ভাঙ্গবো না।
রিফাত: এখন এতো বিশ্বাস করছো তার মানে এখন অন্যমেয়েদের সাখে ঘুরতে গেলে কেউ বললে ও তুমি বিশ্বাস করবা না।
রাহি: কোন খারাপ কাজ করলে তোকে মেরে আসি মরে যাবো কিন্তু তোকে আর ছারবো না।
এরপর রাহি রিফাতকে জোরে চেপে ধরে ঘুমিয়ে যায়।
রিফাত ও রাহির কপালে চুমু দিয়ে ওকে জরিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে…
রাহির ডাকা ডাকিতে রিফাতের ঘুম ভাঙ্গে।
রিফাত: অনেকদিন পর মায়াবতীর কন্ঠে আমার ঘুম ভাঙ্গলো।
রাহি: তোমার চা।
রিফাত: তোমারর সাথে কি কথা ছিলো।
রাহি: মনে আছে
এরপর রাহি চায়ের কাপ থেকে এক চুমুক খেয়ে দেয়।
রিফাত: এখনন ঠিক আছে। আমার মনে একটা কথা আসছে।
রাহি: বলো।
রিফাত:
ভোরের কুয়াশার আবরনের চাদরে….
ঘাস ফুলে জমা শিশির বিন্দুর কনায়..
পা ভিজিয়ে হাটবো দুজন।
হাতে হাত রেখে,
কথা হবে মনের গহীনের ও গহীন অনুভূতি থেকে।
ছুয়ে যাবে ভালবাসার পরশ তোমার আমার মনে হালকা শীতল বাতাসে।
কুয়াশায় ঢাকা নিরব পরিবেশে বসে রবো ভালবাসায় তোমার কাধে আমার মাথা রেখে।
রাহি: বাবাহ্।আমার কবি সাহেব দারুন হইছে।
রিফাত: বিনিময়ে একটা চুমু দাও।
রাহি তারপর কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে
রাহি: তাড়াতাড়ি ওঠে ফ্রেশ হয়ে রেড়ি হও আমাদের শয়তানদের শাস্তি তিতে যেতে হবে।
রিফাত : আচ্ছা।
সিয়ামের সামনে রাহি বাঁশের লাঠি হাতে করে তাড়িয়ে আছে আর তখনি রিফাত….
চলবে…