#আষাঢ়ে_শ্রাবণের_বর্ষণ
#মাইশাতুল_মিহির
[পর্ব-৩৮]
স্নিগ্ধ ভোরের আলো মিটমিট করে ফুটছে। কাঠের বিশালাকৃতি জানালা দিয়ে দূরের ছোট বড় অসংখ্য পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সবুজের অরণ্যে মেঘের হাতছানি। চারিদিকে সারি সারি পাহাড় আর মাঝে মাঝে সাদা তুলোর মত মেঘমালা উড়ে বেড়াচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে শীতল বাতাস। চোখ দুটো বন্ধ করে এক টানে লম্বা একটা নিশ্বাস নিলো দীবা। আবারো চোখ খোলে সামনে তাকিয়ে দূর দূরান্তের ছোট-বড় পাহাড় ও টিলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলো। চারদিকে সবুজ চা বাগানের রূপ সূর্যোদয়ের পাশাপাশি ফুটে উঠছে। সব কিছুই মুগ্ধকর চোখেমুখে অবলোকন করছে দীবা। পরনে শুধু আবরারের সাদা একটা শার্ট যা দীবার হাঁটু পর্যন্ত। শার্টের গলা বড় হওয়ায় কাধের এক পাশে পরে উন্মুক্ত হয়ে আছে উজ্জ্বল ফরশা গলা। তাই শীতল বাতাসের কারণে গায়ে ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে তার। নিজের দুই হাত বুকে গুঁজে শীত কমানোর প্রয়াস করছে সে। বেশ কিছুক্ষণ পর পিছন থেকে আবরার নিজের গায়ের চাদড় দিয়ে দীবাকে জড়িয়ে ধরলো। কোমড় জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে থুতনি রেখে বাহিরে তাকালো আবরার। দীবার ঠোঁটে স্মিতি হাসি রেখে বললো, ‘এখানের ভিউ টা সুন্দর না?’
আবরার দীবার গালে নিজের নাক ঘেঁষে কোমলায়ন কন্ঠে শুধাল, ‘হুম। কিন্তু তার থেকেও তুমি বেশি সুন্দর।’
মৃদু শব্দ তুলে হেসে উঠলো দীবা। আবরার দীবাকে তার দিকে ঘুরালো। দীবার কপালে আলতোভাবে চুমু খেয়ে নরম গলায় বললো, ‘রাতটা আমার জন্য অনেক স্পেশাল ছিল।’
লজ্জাভূতি হলো দীবা। গাল লাল হয়ে এলো তার।ঠোঁটে ঠোঁটে চেঁপে মাথা নত করে ফেললো। আবরার এগিয়ে এসে আরেকটু নিবিড় হলো দীবার সাথে। এক হাত কোমড়ে জড়িয়ে অপর হাত দীবার গালের পাশে গলায় রেখে আবারো বললো, ‘তুমি, তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমার জন্য স্পেশাল। আমি আমার প্রতিটা সকাল তোমার সঙ্গে শুরু করতে চাই। দিনের শুরু থেকে শেষ অব্দি তোমাকে পাশে পেতে চাই। তুমি আমার রক্তের সাথে মিশে গেছো দীবা। তোমাকে ছাড়া থাকা কখনোই সম্ভব না। তুমি চলে গেলে আমি ম’রে….”
কথাটা সম্পূর্ণ হতে দিলো না দীবা। তার আগেই এক হাতে আবরারের মুখ ধরে থামিয়ে ফেললো। শেষার্ধ কথাটা উপলব্ধি করতে পেরেই হৃদপিন্ড কেঁপে উঠেছে তার। নিশ্বাস ভারি হয়ে এসেছে তাৎক্ষনাৎ। পরিচয় অল্প সময়ের হলেও সারাজীবনের পথচলা একইসঙ্গে। এই অল্পসময়েই আবরারকে নিজের মনে জায়গা করে দিয়েছে দীবা। এখন আবরারকে ছাড়া তার নিজের পক্ষেও বেঁচে থাকা সম্ভব না। তাই ভয় এসে হানা দিল মনে। কাঁপা কাঁপা দুই হাতে আবরারের দুই গাল স্পর্শ করলো দীবা। মাথাটা একটু এগিয়ে আবরারের উষ্ঠধয়ে নিজের উষ্ঠধয় ছোঁয়াল। গভীর ভাবে একটা চুমু খেয়ে মৃদু গলায় আশ্বাস দিয়ে শুধাল, ‘আমি কখনোই আপনাকে ছেড়ে যাবো না।’
আবরার মৃদু গলায় পূর্ণরায় জানতে চাইলো, ‘সত্যি?’
দীবা মাথা উপর নিচ নাড়িয়ে “হ্যাঁ” বুঝালো। তার উত্তর শুনে খুশি হলো আবরার। নিস্প্রভ চেহারায় শুকিয়ে যাওয়া উষ্ঠধয়ে সন্তুষ্টির হাসি ফুটে এলো। খুশিতে আত্মহারা হয়ে দীবাকে কোলে তুলে নিলো। হকচকিয়ে গেলো দীবা। পরে যাবার ভয়ে আবরারের গলা দুই হাতে শক্ত করে ধরলো। মৃদু আর্তনাদ করে বলে উঠলো, ‘কোলে নিয়েছেন কেন? পরে যাবো প্লিজ নামান।’
নামালো না আবরার। দীবাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে দীবার কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো, ‘ফিল সামথিং স্পেশাল!’
_____________________
স্নিগ্ধ ভোরের আলো চোখে পরতেই পিটপিট করে তাকালো রিমি। ঘুমটা বেশ ভালো হয়েছে। গতকাল রাতে মাথাটা একটু ঝিমঝিম করেছিলো। পুরো রাতে আড়ামে ঘুমানোর কারণে মাথাটা এখন হালকা লাগছে। আড়মোড় ভেঙ্গে জানালার দিকে তাকালো। বিছানায় শুয়ে থেকেই কাঠের জানালা দিয়ে বাহিরের অপরূপ পরিবেশ দেখা যাচ্ছে। স্মিতি হাসলো রিমি। বালিশের পাশ থেকে মোবাইল বের করলো। হোয়াটসঅ্যাপের নোটিফিকেশন দেখে চেক করে দেখলো অভ্র বেশ কিছু ছবি পাঠিয়েছে। গতকাল রাতে অভ্র আর আরিয়ান মিলে বারান্দায় বসে জমিয়ে আড্ডা দিয়েছে। সঙ্গে ছিলো গিটার। ওই মুহূর্তে কয়েকটা ছবি তুলেছিলো যা রিমির হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে। সব গুলো ছবিই দেখলো রিমি। ছবি গুলোর মাঝে অভ্রের একটা সিঙ্গেল ছবি যেখানে অভ্র গিটার হাতে নিয়ে প্রাণোচ্ছল হাসি দিয়ে তুলেছে। ছবিটা সেভ করে নিলো রিমি। সর্বশেষে একটা ছবি দেখলো। সেটা অর্ধগোলকাকৃতি চাঁদের ছবি। ছবিটা দিয়েই অভ্র ম্যাসেজে লিখেছে,
“আজকের চাঁদের থেকেও অধিক সুন্দর আমার প্রেমিকা। তাকে এখন বড্ড মিস করছি।’
ম্যাসেজটা দেখে মুচকি হাসলো রিমি। মোবাইলটা পাশে রেখে সিলিংয়ের দিকে তাকালো এক দৃষ্টিতে। ভাবলো অভ্রকে নিয়ে। অভ্র তাকে প্রেমিকা বলে সম্মোধন করলো? ভাবতেই ভালোলাগা কাজ করলো মনে। উফফ! লোকটা এতো কিউট কেন? একবার দেখলে চোখ ফিরাতে ইচ্ছে করে না। আচ্ছা অন্য মেয়েরাও তার মতো অভ্রের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে? ক্রাশ খায়? প্রশ্ন দুটো তার মাথায় আসতেই ধড়ফড়িয়ে শুয়া থেকে উঠে বসলো রিমি। সে এভাবে উঠায় নুরার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলো। তাই বিরক্তিতে চোখমুখ কুঁচকে সাদা কাথাটার ভিতরে গিয়ে বললো নুরা, ‘উফফ রিমোটের বাচ্চা নড়াচড়া করবি না।’
হতভম্ব রিমি। অভ্রের দিকে অন্য মেয়েরা তাকায়? ভাবতেই কেমন হিংসে হলো তার। রাগ হলো প্রচুর। অস্থির মনে নুরাকে ঠেলে উঠাতে চাইলো, ‘এই নুরা? নুরা? উঠ না।’
নুরা প্রথমে উঠতে চাইলো না। কাথা দিয়ে মুখ ঢাকতে চাইলে রিমি আবারো টেনে ধরে ডাকলো। অবশেষে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত বিরক্তিকর চোখেমুখে শুয়া থেকে উঠে বসলো নুরা। বসেই রিমির হাতটা ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে বললো, ‘কি হইছে? ভ্যা ভ্যা করতেছোস কেন?’
রিমি অধীক আগ্রহ নিয়ে অস্থির কন্ঠে প্রশ্ন করলো, ‘সাপোজ তোর বফের দিকে কেউ তাকায়। তাকায় মানে ক্রাশ টাশ সব খায়। তাহলে কি করবি তুই?’
অসন্তুষ্টির চোখে রিমির দিকে তাকালো নুরা। মারাত্মক লেভেলের রাগের কারণে দাঁতে দাঁত পিষে ঝাঁঝালো গলায় বলে উঠলো, ‘এই বা/লের প্রশ্নের লাইজ্ঞা আমারে ডাইকা তুলছোস? তোর বুদ্ধি কি বাথটাবের ডুইবা ম:র:ছে? আজাইরা কথাবার্তা কই খুঁইজা পাস তুই?’
নুরার রাগের প্রতি গুরুত্ব দিলো না রিমি। নিজের প্রশ্নের উত্তরের আশায় তাড়া দিয়ে বললো, ‘বল না তখন কি করতি?’
নুরা বালিশ ঠিক করতে করতে রাগি গলায় উত্তর দিলো, ‘কি আর করতাম? হয় মাইয়া গুলার চুল ছিঁ:ড়:তাম। নাহয় সুন্দর হওয়ার অপরাধে বফরে ঝা:ড়তাম।’
কথাটা বলেই লম্বা হাই তুলে ধপাস করে শুয়ে পরলো নুরা। রিমি কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে নুরার কথাটা ভাবলো। তারপর কি থেকে কি মনে পরতেই চটজলদি বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালো। গলায় ফ্লাস্ক পেঁচিয়ে তড়িঘড়ি করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। রিমি রুম থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার আভাস পেতেই তাৎক্ষনাৎ চোখ খুলে তাকালো নুরা। সজাগ হলো তার ঘুমন্ত মস্তিষ্ক। বিস্মিত হয়ে উঠে বসলো তাৎক্ষনাৎ। মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খেলো। হঠাৎ-ই ঘুম থেকে উঠে তাকে এমন প্রশ্ন করলো কেন রিমি? বফের দিকে অন্য কেউ তাকালে তার কি? ভাবতেই চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে গেলো নুরার। রিমির বফ আছে? বসে থাকলো না তার মন। রিমি কোথায় গেলো জানার জন্য দ্রুত বিছানা থেকে নেমে পরলো। তাড়াহুড়ো করার কারণে গলায় ফ্লাস্ক পরতে ভুলে গেছে। পরনে সাদা টপ শার্টটা পরেই দ্রুততার সঙ্গে পা বাড়ালো রুমের বাহিরে।
অভ্র আর আরিয়ানের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো রিমি। দৌড়ে আসায় হাঁপিয়ে উঠেছে সে। নিজেকে স্বাভাবিক করে দরজায় টোকা দিলো একটা। সাড়া না পেয়ে আরো কয়েকবার টোকা দিলো। ভিতর থেকে কোনো প্রকাশ শব্দ না পেয়ে দরজা ধা:ক্কা দিতেই খোলে গেলো। দরজা খুলতেই দেরি করলো না রিমি। গটগট পায়ে ভিতরে ঢুকে পুরো রুম, ওয়াশরুমে তাল্লাসি লাগালো অভ্রের। অভ্রের বোধহয় আজ ভাগ্যটা ভালো ছিলো। তাই ভোর হতে না হতেই আরিয়ানকে সঙ্গে নিয়ে বেড়িয়ে গেছে। যদি না বাহিরের যাবার প্ল্যান করতো, তাহলে রিমির রা:গ ঝা:ড়া চুপচাপ সহ্য করতো।
রিমির পিছনে পিছনে দৌড়ে আসায় নুরা নিজেও হাঁপিয়ে উঠেছে। কোমড়ে দুই হাত রেখে হাঁপাতে হাঁপাতে বলে উঠলো, ‘এখানে আসছোস কেন?’
রিমি আশেপাশে দেখে নুরার দিকে তাকিয়ে রাগে কপাল কুঁচকে বললো, ‘রুম ফাঁকা কেন? অভ্র আরু ভাই কোথায়?’
‘আশ্চর্য! তুইও ঘুমিয়ে ছিলি আমিও ছিলাম। তুই জানিস না তো আমি কিভাবে জানবো? আমাকে জিজ্ঞেস করছিস কেন? দুইজন তো এমনিতেই সারাদিন ঘুরেবেড়ায়। তো কি হয়েছে?’
‘তুই বুঝবি না।’ বলে নুরার পাশ কাটিয়ে চলে গেলো রিমি। আহাম্মক হয়ে গেলো নুরা। ভ্যাবলার মতো রিমির চলে যাবার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। রিমির এমন অদ্ভুত আচরণের কারণে কি? বিশ্লেষণ করতে হবে। আগে দীবা আসুক তারপর। তাই ব্যাপার টা নিয়ে ঘাঁটালো না সে। কিন্তু রিমির উপর থেকে নজর সড়াবে না। কখনোই না।
_____________________
সকালের নাস্তার সময় অদ্ভুত এক কান্ড ঘটলো বাড়িতে। সবাই যা আশা করেছিলো তার থেকেও বেশি বিস্ময়কর ব্যাপার ঘটালো বাড়ির কর্মচারী সকলে। রাজকীয় আমেজের বিশালাকৃতির বাড়ির ভিতরে ঢুকার পর কম বেশি সবাই ঘুরে ঘুরে দেখছে। তাই বাড়ির ভিতরে থাকা মার্ভেল পাথরের বিশাল বড় ডাইনিং টেবিলটা কারোর নজরে এড়ালো না। টেবিলটা এতোই বড় যে এখানে কমপক্ষে বিশ থেকে পঁচিশজন লোক এক সঙ্গে খেতে পারবে। কিন্তু এতো বড় টেবিল থাকতে সকালের নাস্তা কিনা সবার রুমে রুমে দিয়ে গেলো তারা? বিস্মিত হলেও কেউ প্রকাশ করলো না। সবার রুমে নাস্তা পৌঁছে দেবার দায়িত্ব কর্মচারী আনিসুরের কাধে পরলো। দায়িত্ব মোতাবেক সকলের রুমে নাস্তা পৌঁছে দেবার পর সর্বশেষে আবরারের রুমে সামনে আসলো। ভদ্র ভাবে রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে দরজায় কড়া নাড়ালো। কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর আবরার রুমের দরজা খুললো। খয়ের দিয়ে পান খাওয়ার ফলে লাল হয়ে যাওয়া বিদঘুটে দাঁত বের করে হাসলো আনিসুর মিয়া। বয়স বোধহয় পঞ্চাশের উর্ধ্বে। তার এই বিদঘুটে হাসি আবরার পছন্দ না করলেও ভদ্রতার খাতিরে নিজেও দাঁত কেলিয়ে হাসলো। আনিসুর মিয়া হাতে থাকা নাস্তার ট্রে টা দেখিয়ে দিয়ে বললো, ‘বাজান। এই নেন আপনের নাস্তা।’
আবরার লোকটার থেকে চোখ সরিয়ে নাস্তার ট্রে-টার দিকে দৃষ্টি রাখলো। মনে মনে খুশি হলো এই ভেবে যে দীবার সঙ্গে একসাথে নাস্তা করতে পারবে। পারসোনাল ভাবে আরো সময় কাটাতে পারবে। তাই মৌনতার সঙ্গে ঠোঁটে নম্র হাসি রেখে ট্রে টা ধরলো। লোকটা সালাম দিয়ে চলে যেতে নিলেই রুমের ভিতরে তাকাতেই চোখ বড় বড় করে তাকালো। তার এমন চাহনী দেখে ভ্রুঁ জোড়া কুঁচকালো আবরার। চোখের চাহনী ফলো করে নিজেও পিছু ফিরে তাকালো।
মাত্রই ওয়াশরুম থেকে গোসল করে চুল মুছতে মুছতে বেড়িয়েছে দীবা। লোকটাকে তার দিকে এভাবে তাকাতে দেখে ভড়কে গেলো। হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো কেবল। আনিসুর মিয়ার এমন রিয়েকশনের কারণ বুঝতে বাকি আবরারের। তাই স্বাভাবিক রইলো। আনিসুর মিয়া প্রকাণ্ড রকমের বিস্মিত হয়ে অস্ফুটিত কন্ঠে বলে উঠলো, ‘এই মাইয়া আফনের ঘরে কি করতাছে? হায় আল্লাহ। এই গুলা কি নাউজুবিল্লা কাম কারবার। ছিঃ বিয়ার আগে!’
বলেই নাক কুঁচকালো আনিসুর মিয়া। তার থেকে এমন কুৎসিত কথাবার্তা শুনে রাগান্বিত হলো আবরার। চোয়াল শক্ত করে প্রত্যুত্তর করলো, ‘আমার বউ লাগে চাচা। সাবধানে কথা বলবেন।’
এবার যেন অবাকের চড়ম পর্যায়ে চলে গেছে আনিসুর। আবরারের কথা শুনে তার মাথায় ডাব পরেছে এমন একটা রিয়েকশন দিলো। ফ্যালফ্যাল করে আবরারের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘আফনে কবে বিয়া করছেন? আমি আপনের মেলা গান হুনছি। কিন্তু বিয়ার খবর পাইলাম না ক্যান?’
আবরার নিরবে দাঁতে দাঁত চিবিয়ে বললো, ‘নাস্তা দিয়ে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনি এখন আসতে পারেন।’
বলেই দরজা টা লাগিয়ে দিলো। দীবা এখনো আহাম্মকের মতো ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। আবরার অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবে নাস্তার প্লেট বিছানায় রেখে দীবাকে প্রশ্ন করলো, ‘গোসল শেষ?’
দীবা মাথা নাড়িয়ে “হ্যাঁ” বুঝালো। আবরার নাস্তার দিকে ইশারা করে বললো, ‘খেয়ে নাও।’ বলে ওয়াশরুমে গেলো গোসল করতে। দীবা একবার নাস্তার দিকে তাকিয়ে আরেকবার ওয়াশরুমের দরজার দিকে তাকালো। লোকটাকে ছাড়া সে একা একা খাবে? আবরার আসলেই নাহয় এক সাথে নাস্তা করবে। তাই আগে নিজেকে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিলো। ভিজা চুল গুলো আবরারের টাওয়াল দিয়ে মুছতে লাগলো।
চলমান….