#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_৫১
তোড়া রেয়ান্স এর কেবিনে ঢুকেই সোজা গিয়ে রেয়ান্স এর কোলে বসে পড়ে। রেয়ান্স পেপারে সাইন করছিলো। কিন্তু তোড়ার এমন তার কোলে বসে পড়তে সে মুখ তুলে তাকায় তোড়ার দিকে। তোড়া ততক্ষণে তাকে জড়িয়ে তার বুকে মুখ গুঁজে চোখ বন্ধ করে নিয়েছে। রেয়ান্স হাতের থেকে পেন টেবিলে রেখে দু হাত দিয়ে তোড়া কে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। তোড়ার নিজের মধ্যে হতে থাকা এতক্ষণ এর অস্থিরতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে রেয়ান্স এর সংস্পর্শে এসে। রেয়ান্স তোড়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তোড়া কে শান্ত করতে থাকে। রেয়ান্স বুঝতে পারে তোড়া কোনো ব্যাপার নিয়ে অস্থির হয়ে আছে। রেয়ান্স এর মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়াতে তোড়ার অস্থিরতা কেটে যায় এবার সে অনুভব করে রেয়ান্স এর উষ্ণ স্পর্শ ।
-“ঠিক আছো এখন? রেয়ান্স তোড়ার মাথায় নিজের ঠোঁট ছুয়ে বলে ওঠে।
-” হুম….। তোড়া আরো একটু গভীর ভাবে জড়িয়ে বলে ওঠে।
-“আচ্ছা শাহীন আর রাই কোথায়? রেয়ান্স তোড়া কে স্বাভাবিক করতে বলে ওঠে।
-” উম ওরা বাইরে আছে। দুজন একসাথে। তোড়া বলে ওঠে।
-“আচ্ছা তো তুমি কি কিছু বলতে চাও? রেয়ান্স তোড়ার উসখুস করতে দেখে বলে ওঠে।
-“হুম । বলেই তোড়া মাথা উঁচু করে সোজা হয়ে বসে।
তোড়া কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে রেয়ান্স এর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। রেয়ান্স এর শান্ত চেহারা এই চোখে তার জন্য একরাশ ভালোবাসা দুশ্চিন্তা ফুটে আছে। তোড়া দু হাত দিয়ে রেয়ান্স এর মুখ তুলে ধরে ঠোঁটে আলতো করে ঠোঁট ছুয়ে দেয় রেয়ান্স কোনো বাঁধা দেয় না সে চুপচাপ থেকে তোড়ার ভালোবাসার স্পর্শ গ্রহণ করছে। তোড়া রেয়ান্স এর থেকে সরে এক পলক রেয়ান্স এর মুখের দিকে তাকিয়ে নোমান করা কাজ গুলো রেয়ান্স এর সামনে তুলে ধরছে। সব কথা বলা শেষ হতেই তোড়া রেয়ান্স এর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে মুখের ভাব পাল্টে গেছে। চোখ মুখ কঠিন হয়ে গেছে। তোড়া বুঝতে পারছে রেয়ান্স রেগে যাচ্ছে হয়তো এখুনি নোমান কে সামনে পেলে আস্ত বাঁচিয়ে রাখবে না।
তোড়া রেয়ান্স কে শান্ত করতে দু হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে তোড়া রেয়ান্স এর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। শুষে নিতে থাকে রেয়ান্স এর মধ্যে জ্বলে ওঠা রাগ। রেয়ান্স নিশ্চুপ থাকলেও তোড়ার তাকে শান্ত করার কথা মাথায় আসলে সেও আসতে আসতে শান্ত হতে থাকে তোড়ার স্পর্শে ।
-“নোমান সোমানি ওকে তো আমি ছাড়বো না আমার জীবনের দিকে হাত বাড়িয়েছে। রেয়ান্স দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।
-” তুমি ওকে কিছু করবে না। তোড়া বলে ওঠে।
-“মানে? রেয়ান্স ভ্রু কুঁচকে তোড়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
-” ওকে যা করার আমি করবো। ও আমার শিকার। ওকে বুঝতে হবে ও কার দিকে হাত বাড়িয়েছে। তোড়া রুক্ষ ভাবে বলে ওঠে।
-” আমি তোমার পাশে আছি। রেয়ান্স তোড়ার কপালে চুমু খেয়ে বলে ওঠে।
-” তুমি আমার পাশে থাকলেই হবে আর কিছু চাইনা। সবাই লড়াই আমি হাসতে হাসতে জিতে নেবো। তোড়া বলে ওঠে।
-“আচ্ছা তোমার ম্যানেজার কৃতী সাক্সেনার হিস্ট্রি এতে পেয়ে যাবে। রেয়ান্স টেবিল থেকে একটা ফাইল তুলে ধরে বলে ওঠে।
রেয়ান্স এর কথা শুনে তোড়া রেয়ান্স এর দিকে ভ্রু উঁচু করে তাকায়। রেয়ান্স বুঝতে পারে তোড়া কি বুঝতে চাইছে।
-” আরে বাবা আমাকে রাই বলেনি তবে তুমি একটা কথা ভুলে যাচ্ছ আমি এই ইন্ডাস্ট্রিতে যা জানতে চাই মুহূর্তের মধ্যে জেনে যাই। এটা আমার কাছে কোনো কঠিন ব্যাপার নয়। আর তুমি হলে আমার ওয়াইফি আমার জীবনের একটা মূল্যবান অংশ তোমাকে আমার থেকে আলাদা করে দিলে আমি কিছুই থাকবো না। তাই তোমার ব্যাপারে প্রতি মুহূর্তের আপডেট আমার কাছে থাকে। এটুকু অধিকার তো আমার আছে তাইনা? রেয়ান্স তোড়ার দিকে তাকিয়ে শেষের কথা গুলো বলে ওঠে।
-“হুম….। বলে তোড়া আবারো রেয়ান্স এর বুকে মাথা গুঁজে দেয়।
রেয়ান্স তোড়া কে তার দু হাতের মধ্যে জড়িয়ে রেখেই মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। তোড়া টায়ার্ড থাকার দরুন ও মাথার থেকে সমস্ত চিন্তা সরে গিয়ে রেয়ান্স এর উষ্ণ স্পর্শ পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে যায়। তোড়ার ভারী নিঃশ্বাস অনুভব করতেই রেয়ান্স বুঝতে পারে তোড়া ঘুমিয়ে গেছে। রেয়ান্স হাত বাড়িয়ে অতি সাবধানে চেয়ার এর পিছন থেকে তার খুলে রাখা কোট তুলে নিয়ে তোড়ার গায়ে মুড়ে দেয়। তোড়া ও ঠান্ডা রুমের মধ্যে হালকা উষ্ণতা পেয়ে আরো গুটিয়ে গিয়ে রেয়ান্স বুকের মাঝে ঢুকে যায় দু হাত দিয়ে রেয়ান্স কে আকড়ে ধরেই ঘুমে ডুবে থাকে।
রেয়ান্স তোড়া কে কোলে রেখেই তার কাজ করতে থাকে। রুমের মধ্যে সোফা ও আছে তবে ওখানে শুইয়ে দিতে গেলে যদি তোড়ার ঘুম ভেঙ্গে যায় তাই রেয়ান্স তোড়া কে তার কোলে রেখেই কাজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সব কিছুর আগে তার জীবনে এখন একটাই নাম সেটা হলো তার ওয়াইফি তোড়া। তাই তোড়া কে বাদ দিয়ে রেয়ান্স কোনো কিছু করার চিন্তা ও করে না। সে অফিসে আছে বা তার অফিসে কেউ আসতে পারে এটা তার কাছে কোনো ম্যাটার করে না তাদের কে এই অবস্থায় কেউ দেখলেও তার কিছু যায় আসেনা। সেতো পুরো দুনিয়ার সামনে বলতে চায় সে তোড়া কে ভালোবাসে পুরো দুনিয়ার সামনে তাদের বিয়ে টা অ্যানাউন্স করতে চায় এতে তার কোনো বাধা নেই শুধু তোড়ার ইচ্ছা পূরণের জন্য সে আটকে আছে।
কিছুক্ষণ পরেই শাহীন রুমে এসে বস আর ম্যাডাম দেখে কিছু ক্ষণ থমকে দাঁড়ালে ও তার পরেই আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। কারণ সে এতদিনে জেনে গেছে তার বস তোড়া কে কতটা ভালোবাসে । তাই সেও নিজের কাজে লেগে পড়ে।
রেয়ান্স এর কেবিনে একের পর এক স্টাফ আসছে আর তাদের রুক্ষ রাগী বস কে কোনো মেয়ের সাথে এই ভাবে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে তারা কখনো কল্পনা ও করতে পারিনি তারা স্বচক্ষে এমন দৃশ্য দেখবে বলে। কিন্তু তারা কিছু বলতে পারে না। যেমন রেয়ান্স এর কেবিনে আসছে তেমনই কাজের কাজ করে বেরিয়ে যাচ্ছে। এক মুহুর্ত থমকে দাঁড়ালে ও কোনও কথা বলার সাহস নেই। কেউ কোনো কথা বলতে পারে না যে যার কৌতুহল নিজের মধ্যে চেপে রেখেই ফিরে যেতে হচ্ছে।
অফিসে যে নিজেরদের মধ্যে কোনো কথা বলবে সেই রুলস ও নেই কাজ ছাড়া কেউ বাড়তি কথা বলতে পারবে না আর বস কে নিয়ে তো একদমই না। তাই যে যার নিজের নিজের সাথে কথা বলতে পারে। আর আর ইন্টারন্যাশনাল এর পুরো তেইশ তলা অফিসে ছড়িয়ে গেছে এই খবর সবাই নিজেদের মধ্যে কৌতুহল নিয়ে রেখেছে। পুরো অফিস জুড়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তাদের বসের কোলে কোনো মেয়ে কে দেখে তাও ওই ভাবে। তাদের যে বস সব সময় স্ট্রিক্ট রুক্ষ রাগী নিজের অ্যাটিটিউড নিয়ে থাকে তাকে কোনো দিন কোনও মেয়ের সাথে দেখবে ভাবতে পারিনি। তাদের মধ্যে এখন একটাই কৌতুহল একটাই জানার ইচ্ছা কে এই মেয়ে যে এই ভাবে সাহস দেখাতে পারে। তোড়া মুখ রেয়ান্স এর বুকের মধ্যে গুঁজে থাকার জন্য স্পষ্ট কেউ তার মুখ দেখতে পাইনি। তাই কেউ চিনতে ও পারিনি যে এখন কার নিউ কমার টপ মডেল তোড়া দেওয়ান এটা।
সারা অফিস জুড়ে গুঞ্জন শুরু হলেও যাদের নিয়ে এই গুঞ্জন তারা একদম শান্ত হয়ে আছে তোড়া রেয়ান্স এর বুকে ঘুমিয়ে আছে। আর রেয়ান্স তার কাজে ডুবে আছে। তার এদিকে এইসব নিয়ে কোনো যায় আসে না তাদের কে নিয়ে কি কথা হচ্ছে না হচ্ছে। কারণ একটাই এই অফিসের মধ্যে যাই হয়ে যাক না কেনো কোনো কথা বাইরে যাবে না। আর কোনো খবর বাইরে লিক হলে তার জন্য দু লাখ টাকা ও চাকরি নিয়ে টানাটানি আছে। আর আর.আর ইন্টারন্যাশনাল থেকে বহিষ্কার হওয়া মানে আর কোনো কোম্পানিতে চান্স পাবে না। তাই এই সাহস কেউ দেখাবে না। তাই সে নিজের মত কাজ করতে থাকে। আজ সে নিজের অফিসে হলেও এটা তো জানাতে পেরেছে তার জীবনের সাথে কেউ জড়িয়ে আছে। থাক না কিছু অজানা বিষয় যা সময়ে এর সাথে সবাই জানতে পারবে। ততদিন তারা এই কৌতুহল নিয়ে কাটিয়ে দিক।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে……
#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_৫২
সকাল সকাল লর্ড রেজেন্সির বাইরে এসে পৌঁছে গেছে কৃতী। আজ থেকেই সে তোড়ার ম্যানেজার এর দায়িত্ব পালন করবে। তবে লর্ড রেজেন্সি তে আসলে ও বাড়ির ভিতরে ঢুকতে পারিনি। গার্ড ভিতরে ফোন করে দিয়ে তাকে বাইরে ওয়েটিং রুমে বসিয়ে রেখেছে । আগের দিন রাতেই রাই এসএমএস করে তোড়ার বাড়ির অ্যাড্রেস দিয়ে দিয়েছিলো। আর তার পর থেকেই কৃতী অবাক হয়ে আছে। লর্ড রেজেন্সি তে থাকা ব্যাক্তি কোনো সাধারণ কেউ হবে না এমনিতেও এই এলাকায় ঢোকা ও খুব একটা সুবিধার নয়। এখানে যে কয়েকজন থাকে তারা এই সমাজের খুবই গন্য মান্য লোক। আর সেখানে কিনা তোড়া লর্ড রেজেন্সি তে থাকে ভাবা যায়।
কৃতী চারদিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। ও যে বাড়ির বাইরে ওয়েটিং রুমে বসে আছে সেটা এমনি বাইরের ফ্ল্যাট বা একটু বড়লোক বাড়ির যেমন ডেকরেট করা থাকে তেমন। জানালা থেকে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখে সামনেই গার্ডেন সেখানে নানা রকম ফুলে ভরা আছে। ও ঢোকার মুখেই দেখে ছিল সোজা রাস্তা চলে গেছে একদম বাড়ির মুখের গেটের কাছে তবে ঢোকার মুখের কিছুটা সামনেই ফাউনটেন্ট বানানো আছে। কৃতী চারদিকে বসে বসে সৌন্দর্য উপভোগ করছে। সে শুনে ছিল তোড়া বড় বাড়ির মেয়ে দেওয়ান পরিবার থেকে বিলং করে কিন্তু এত বড়লোক জানা ছিলোনা।
রাই ও তার গাড়ি নিয়ে চলে আসে লর্ড রেজেন্সি। তবে এখান থেকে তাদের যাত্রা শুরু এক সাথেই হবে। রাই গাড়ি থেকে আরো একটা গাড়ি দেখতে পেয়ে ওখানে থাকা সিকিউরিটি কে জিজ্ঞেস করতে জানতে পারে কৃতী এসেছে। তাই ও আর কোনো কথা না বলেই সোজা বাড়ির ভিতরে ঢুকে যায়। তার এই বাড়িতে অবাধ বিচরণ। কোথাও যেতে তার বাঁধা নেই। প্রথমত সে তোড়ার বান্ধবী আর তার উপরে সে আবার তোড়ার পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট। আর যেহেতু প্রথম থেকেই রেয়ান্স রাই কে তোড়ার বান্ধবী কাম অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে পছন্দ করে তাই তার কোনো বাঁধা নেই।
তোড়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছে । তবে রেডি হচ্ছে বললে ভুল হবে সে এখন নিজের মনে মুচকি মুচকি হাসছে। চুল গুলো সাইট পনিটৈইল বাধা। ঠোঁটে লাইট পিঙ্ক কালার এর লিপস্টিক হালকা করে ঠোঁটের উপর বুলিয়ে নেয়। সাথে মুখে রয়েছে মানানসই মেকআপ। রেয়ান্স এতক্ষণ রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তোড়ার কান্ড দেখে যাচ্ছে সে স্টাডি রুমে ছিল কিছুক্ষণ আগেই রুমে এসেছে কিন্তু ভিতরে ঢুকতে গিয়েই তোড়া কে দেখে থেমে গেছে। সে জানে তোড়া কেনো এখন ওই ভাবে নিজের মনে হাসছে। তবে তোড়ার লিপস্টিক লাগানো দেখে সে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না তোড়ার ওই লিপস্টিক লাগানো ঠোঁট সব সময়ে ওকে চুম্বক এর মত আকর্ষণ করে। তাই সে ধীরে ধীরে রুমের ভিতরে ঢুকে পিছনে থেকে তোড়া কে জড়িয়ে ধরে তোড়ার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে দেয়। তোড়া আয়নায় তাকাতে দেখে রেয়ান্স তার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে রেখেছে সে জানে এখন কি হতে চলেছে। আর হলো ও ঠিক তাই। রেয়ান্স তোড়া কে হ্যাচকা টানে সামনে এনে তোড়ার ঠোঁটের মাঝে নিজের জায়গা করে নেয়। শুষে নিতে থাকে তোড়ার অধরসুধা। তোড়া ও রেয়ান্স এর সাথে সমান তালে রেসপন্স দিতে থাকে। আর রেয়ান্স তো এখন ইচ্ছে মত তোড়ার ঠোঁট নিয়ে খেলতে শুরু করেছে। এমনিতেই তোড়ার ঠোঁট তাকে পাগল করে দেয় আর লিপস্টিক লাগালে তো কোনো কথা নেই। তোড়া হালকা করে তার চোখ খুলতে তার চোখ সামনে আয়নার দিকে চলে যায়। যেখানে তাদের দুজন এর অবয়ব ফুটে আছে। তোড়া এক দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে আছে। যেহেতু তোড়া আয়নার দিকে ঘুরে আছে আর রেয়ান্স হালকা পিছন করে আছে তাই রেয়ান্স এর পাগলামি গুলো নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছে আয়নার মধ্যে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে কিভাবে রেয়ান্স তার ঠোঁটের মাঝে মেতে আছে। প্রায় কুড়ি মিনিট পরেই তোড়ার শ্বাস আটকে আসতে শুরু করলে রেয়ান্স তার ইচ্ছা না হলেও ঠোঁটের মাঝে থেকে সরে আসে। তোড়া কে নিজের বুকে মাঝে জড়িয়ে নিয়ে ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিতে থাকে।
তোড়া রেয়ান্স এর বুকের থেকে সরে এসে রেয়ান্স এর মুখের দিকে তাকায়। রেয়ান্স এর ঠোঁটের একদিকে লাল হয়ে ফুলে গেছে। এটা দেখতে তোড়ার হেসে ফেলে। তার উপর পাগলামি করলো রেয়ান্স আর কেটে গেলো তার নিজের। তোড়া শেষের দিকেই রেয়ান্স এর ঠোঁটে কামড়ে নিয়েছিলো আর যার জন্য রেয়ান্স এর ঠোঁটের এই অবস্থা। রেয়ান্স তোড়ার উপর পাগলামি করলে ও সে কখনই তোড়ার উপর কোনো দাগ করে দেয় না যেহেতু তোড়া একজন মডেল তাই তার উপরে কোনো রকম দাগ থাকা প্রবলেম হয়ে যাবা আর তাছাড়া ও সে জেনে বুঝে তোড়া কে কখনোই হার্ট করতে পারবে না। তোড়ার হাসি দেখে রেয়ান্স সামান্য ভ্রু কুঁচকে নেয়। তারপরেই ঘুরে দাঁড়ায় আয়নার সামনে। সে জানত এটাই হয়েছে তোড়ার হাসি দেখেই বুঝে গেছিলো। আর এটা তার কাছে কোনো নতুন নয় প্রায় তোড়া এরকম দাগ তার উপরে ছেড়ে দেয়। তোড়া হাতে ওয়েন্টমেন্ট নিয়ে রেয়ান্স এর ঠোঁটে লাগিয়ে দেয়। এখনও তার ঠোঁটের কোনায় হাসি ফুটে আছে। রেয়ান্স তোড়ার মাথায় একটা উষ্ণ স্পর্শ দিয়ে তোড়া কে সাথে নিয়েই বেরিয়ে যায়। লিভিং রুমে আসতে দেখে রাই বসে আছে। সাথে শাহীন ও একজন নিজের ফাইল এর মধ্যে মুখ গুঁজে আছে তো রাই নিজের ফোনের মধ্যে। দেখে মনে হচ্ছে দুজন দুই মেরুর মানুষ।
তোড়া রেয়ান্স আসতেই রেয়ান্স এর সাথে শাহীন আর তোড়ার সাথে রাই বেরোয় তবে তোড়া আর রাই আগে বেরোয় যেহেতু বাইরে কৃতী বসে আছে তাই। তোড়া এক্ষুনি কৃতী কে রেয়ান্স এর ব্যাপারে কিছু জানাতে চায় না। সে এখন কাউকে বিশ্বাস করে না সহজে আর কাজের জায়গায় তো একদমই না। তোড়া আর রাই বাইরে আসতেই কৃতীর সাথে গাড়িতে করে বেরিয়ে যায়। কৃতী গাড়ি ড্রাইভ করছে তার পাশে রাই বসে আছে আর পিছনে তোড়া ।ওদের বেরিয়ে যেতেই রেয়ান্স আর শাহীন ও বেরিয়ে যায় বাড়ি থেকে।
তোড়া এক দৃষ্টিতে কৃতীর দিকে দেখতে থাকে। সে এত ঝড় এর উপর দিয়ে গেছে যে এখন মানুষ দেখেই বুঝতে পারে তার ভিতরে কি আছে বাইরে কি।
-“কৃতী তোমাকে কয়েকটা কথা বলে দেই। যেহেতু তুমি আমার ম্যানেজার সেহেতু তোমাকে আমার কাছে লয়্যাল থাকতে হবে। আমার কিছু বটম লাইন আছে। সেগুলো যতক্ষণ না কেউ ক্রস করছে ততক্ষণ আমি তার সাথে কিছু করিনা কিন্তু সেটা ক্রস করলে তাকে আমি ছেড়ে দেই না যতক্ষণ না তার ক্যারিয়ার শেষ হচ্ছে। আশা করি তুমি আমার কথা বুঝতে পেরেছ। তোড়া শান্ত অথচ দৃঢ় কন্ঠে বলে ওঠে।
তোড়ার কথা গুলো এতক্ষণ কৃতী মন দিয়ে শুনছিলো। আর রাই বাইরের দিকে মুখ করে হেসে ফেলে।
-“ইয়েস মিস তোড়া। কৃতী বলে ওঠে।
-” কৃতী আমাকে মিস তোড়া বলতে হবে না তুমি আমাকে রাই এর মত তোড়া বলেই ডাকতে পারো। তোড়া বলে ওঠে।
তোড়ার কথায় কৃতী হালকা হেসে মাথা নাড়ে। তোড়ার কথা শেষ হতে রাই কৃতীর সাথে গল্পের ঝুড়ি খুলে বসে। তোড়া রাই এর বক বক শুনেই হেসে ফেলে সে খুব ভালো করেই জানে রাই কথা না বলে থাকতে পারে না আর সে খুব তাড়াতাড়ি সবার সাথে মিশে যেতে পারে। আর তোড়া ও রাই আর কৃতী কে নিয়ে কোনো ভেদাভেদ রাখতে চাইনি তাই সে কৃতী কে তার নাম ধরেই ডাকতে বলেছে।
তোড়া জানালার দিকে মুখ করে হেলান দিয়ে বসে আছে। চোখ বন্ধ করতে তার কালকের কথা মনে পড়ে যায় সাথে সাথেই তার মুখে ঠোঁটের কোনায় হাসির রেখা ফুটে ওঠে।
“” আগের দিন রেয়ান্স এর অফিসে ঘুমিয়ে যেতেই অফিসের মধ্যে হাল চাল শুরু হয়ে গিয়েছিলো। অফিসে কাজ শেষ করেই রেয়ান্স তোড়া কে ঘুম থেকে না ডেকে কোলে তুলে নেয়। যেহেতু এই অফিসে তার আলাদা লিফ্ট আছে যাতে অফিসের স্টাফ এলাও না আর যেটা সরাসরি তার কেবিনে খোলে। রেয়ান্স তোড়া কে কোলে নিয়েই লিফ্টে উঠে যায়। এদিকে হালকা নাড়াচাড়া হতে তোড়ার ঘুম ভেঙ্গে যায়। পিট পিট করে তাকিয়ে দেখে সে রেয়ান্স এর কোলে আছে কিন্তু তার মনে হচ্ছে সে যেনো নিচের দিকে চলে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি করে রেয়ান্স গলা জড়িয়ে ধরে চারিদিকে দেখতে থাকে। রেয়ান্স তোড়ার কান্ড দেখে হেসে ফেলে।
-“ঘুম হয়ে গেছে? রেয়ান্স বলে ওঠে।
-” হুম…। তোড়া বলে ওঠে।
-“আমার লিফ্টে আছি ভয় নেই। রেয়ান্স মুচকি হেসে তোড়ার নাকে নাক ঘষে বলে ওঠে।
লিফ্টে থেকে নেমেই বেসমেন্ট এর পার্কিং এর কাছে এসে গাড়িতে উঠে পড়ে শাহীন ড্রাইভিং বসে আছে। রেয়ান্সরা বসতেই কার স্টার্ট করে দেয়। এদিকে গেটের মুখে অফিসের স্টাফ দের মেলা লেগে আছে। রেয়ান্স এর কোলে মেয়েটা কে দেখার জন্য। কিন্তু এতই কি সোজা তোড়া কে দেখা। তোড়া চারিদিকে এতো কোলাহল দেখেই রেয়ান্স এর দিকে প্রশ্ন হীন চোখে তাকায়। রেয়ান্স তোড়ার চাহনি দেখেই মুচকি হেসে তোড়ার নাক টিপে দেয়।
-“এইসব তোমাকে দেখার জন্য হয়েছে। রেয়ান্স মুচকি হেসে বলে ওঠে।
-” মানে আমাকে দেখার জন্য কিন্তু কেনো? তোড়ার বিস্ময় নিয়ে বলে ওঠে।
-“তুমি যে আমার কোলে বসেই ঘুমিয়ে গেছিলে আমার কেবিনে। আর স্টাফ এসে তোমাকে আমার কোলে তোমাকে ঘুমাতে দেখে নিয়েছিলো তাই। এখন আর কি করা যাবে বল তারা তো জানতেই চাইবে না তাদের বস এর মাথা কোন মেয়ে ঘুরিয়ে দিলো। রেয়ান্স হাসতে হাসতে বলে ওঠে।
তোড়া রেয়ান্স এর কথা শুনে লজ্জা পেয়ে যায়। তার মনে পড়ে সে রেয়ান্স এর কোলে ঘুমিয়ে গেছিলো ।আর সবাই তাকে ওই অবস্থায় দেখে নিয়েছিলো ভাবতেই সে লজ্জা পেয়ে যায় সাথে রেয়ান্স এর টিজ করে বলা কথা শুনে সে রেয়ান্স এর বুকে মুখ লুকিয়ে নেয়। শাহীন ও সামনে বসে ওদের কথা শুনতে শুনতে হেসে ফেলে।
তোড়া এতক্ষণ কালকের কথা গুলো মনে করে মুচকি মুচকি হেসে যাচ্ছিলো। গাড়ির ব্রেক করতে সে ভাবনা থেকেই বেরিয়ে আসে। বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখে ওশিয়ান স্টার গ্রুপে চলে এসেছে। সাথে সাথে তার মুখের ভাব ভঙ্গি পাল্টে যায়।
.
.
.
.❤️❤️❤️
. চলবে….
#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana (Saba)
#পর্ব_৫৩
তোড়া গাড়ি থেকে নেমে রাই ও কৃতীর সাথে কোম্পানির ভিতরে চলে যায়। আজকে তোড়ার একটা আউটডোর শুট আছে তবে তার আগে মিস্টার নিমেষ এর সাথে কথা বলতে হবে তাই কোম্পানিতে আসা। তোড়া রাই আর কৃতী কে রেখে নিমেষ এর কেবিনে চলে যায়। এদিকে ওদের যে এতক্ষণ কেউ নজর বন্দি করছিলো সেটা কেউ খেয়াল করেনি বাইরে দাঁড়িয়ে রাই আর কৃতী নিজেদের মধ্যে ওদের আজকের প্ল্যান ডিসকাস করছে আর ওদের পিছন থেকে কেউ সবটাই শুনে নিচ্ছে সাথে সাথে তার মুখে ফুটে ওঠে একের পর এক ক্রূর হাসি।
তোড়া বাইরে আসতেই চারিদিকে আশে পাশে একবার দেখে নেয় তার ঠোঁটের কোণে আছে একটা বাঁকা হাসি। রাই আর কৃতীর কাছে গিয়ে বেরিয়ে পড়ে তাদের আজকের গন্তব্যে লাভাসা।
লাভাসা হ’ল ভারতের সর্বাধিক নতুন শহর এবং মুম্বইয়ের নিকটে আসন্ন হিল স্টেশন। লাভাসা ইতালীয় শহর পোর্টোফিনো ভিত্তিক। লাউসা সাতটি পাহাড়ের উপর নির্মিত পাঁচটি শহরের সংগ্রহ হিসাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে। পর্বতমালা লাউসাকে দেশব্যাপী মোটরসাইকেল চালকদের কাছে জনপ্রিয় স্থান হিসাবে পরিচিত । এটি মুম্বাইয়ের নিকটতম প্রশান্ততম হিল স্টেশন।
মুম্বাই থেকে যেতে চার ঘন্টা লাগবে। তবে তাদের আজকের গন্তব্যের জন্য রাই ও কৃতী ভীষণ ভাবে এক্সাইটেড হয়ে আছে। তারা তাদের শুট শেষ করেই পুরো জায়গা টা ঘুরতে পারবে এবং তার সাথে বিভিন্ন রাইড ও নিতে পারবে। তোড়া গাড়িতে বসেই ফোন থেকে রেয়ান্স কে এসএমএস করে দেয়। রেয়ান্স তার ওখানের হোটেল ও লোকেশন পাঠাতে বলেছিলো। তোড়া নিজের মাথা সিটে এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। তার ঠোঁটের কোণে ফুটে আছে একটা বাঁকা হাসি।
ওশিয়ান স্টার কোম্পানির বাইরে থেকে তোড়াদের গাড়ি বেরিয়ে যেতেই সাথে সাথে আরো একটা গাড়ি তাদের পিছু নেয় তবে দুরত্ব বজায় রেখে। যাতে কোনও ভাবে সন্দেহ না হয়।
————-
রেয়ান্স কনফারেন্স রুমে মিটিং করতে ব্যস্ত তার মধ্যে হঠাৎ তার ফোন এসএমএস টোন বেজে উঠতে সে মিটিং এর মধ্যেই ফোন চেক করে সাথে সাথে মনের মধ্যে খুশির ঝিলিক বয়ে যায় তবে সেটা মুখে ফুটে ওঠে না। মিটিং রুমে বাকি লোকজন অবাক চোখে মুখ হা করে রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে আছে । যেনো মনে হচ্ছে তাদের সামনে কোনও এলিয়েন দাঁড়িয়ে আছে বা ভূত দেখছে এমন চমক খেয়ে গেছে। ওদের পাশে দাঁড়িয়ে শাহীন মুচকি মুচকি হাসছে বাকিদের অবস্থা দেখে সে বুঝতে পেরেছে নিশ্চয়ই এটা ম্যাডাম এর এসএমএস হবে। সে তো তার স্যার এমন আশিক রূপ দেখে আসছে কিন্তু বাকিদের দেখে তার হাসি পেয়ে যাচ্ছে।
রেয়ান্স ফোন রেখে সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে সবাই তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। সে বুঝতে পেরেছে সবাই কি বোঝাতে চাইছে। মিটিং রুমে কোনো ফোন এলাও না এটা রেয়ান্স এর নিজের তৈরী রুলস আর যদি কেউ সেটা করে তাহলে তাকে তক্ষনি বাইরে বের করে দেয়া হবে। আর সেখানে রেয়ান্স নিজেই ফোন চেক করছে এই রিয়্যাকশান তো স্বাভাবিক না।
রেয়ান্স সবার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে টেবিলে জোরে একটা আওয়াজ করতেই সবার ঘোর কেটে যায় সাথে সাথে আবারো সবাই মনোযোগ হয়ে যায়। রেয়ান্স সবার দিকে একটা কিলার লুক দিয়ে আবারো মিটিং কন্টিনিউ করে। আর সবার এই অবস্থা দেখে শাহীন উল্টো দিকে মুখ করে মুখে হাত চাপিয়ে হাসি কন্ট্রোল করতে থাকে।
প্রায় আধা ঘন্টা পর মিটিং রুম থেকে বেরিয়ে শাহীন কে ইন্সট্রাকশন দিতে শুরু করে রেয়ান্স।
-“শাহীন আজকে সব মিটিং অনলাইন ফিক্সড করো। আর এখানের বাকি কাজ অঙ্কন কে হান্ডওভার করো এবং কালকে ও সমস্ত কাজ ওকে ঠিক ভাবে বুঝিয়ে দাও। রেয়ান্স বলে ওঠে।
-” স্যার আপনি কি কোথাও যাচ্ছেন ? শাহীন অবাক হয়ে বলে ওঠে।
-“হ্যাঁ.. তবে শুধু আমি নয় তুমি ও যাচ্ছো আমার সাথে। আর এখন বেশি প্রশ্ন বিচিত্রা নিয়ে না বসে যেগুলো বললাম কুইক করে ফেলো। রেয়ান্স কঠিন ভাবে বলেই কেবিনে ঢুকে যায়।
শাহীন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ হতভম্বের মত তার মাথায় এখনও কিছু ঢুকছে না হঠাৎ করে কি হলো আর কোথায় বা যাবে সেটা সে এখনও বুঝতে পারছে না। কেবিনের ভিতর থেকে রেয়ান্স এর হুঙ্কার ভরা আওয়াজ তার ঘোর কাটিয়ে দেয় সাথে সাথে সে দৌড় লাগায়।
————–
মুম্বাই আর.সিটি মল এর ভিতরে প্রায় তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের প্রো ম্যাক্স শুরু হয়ে গেছে। চারিদিকে লোকজনের ভিড় ঘিরে আছে তাদের ।কিন্তু সেদিকে তাদের কোনো ধ্যান নেই তারা তো আছে তাদের মধ্যে ঝগড়া নিয়ে। মল স্টাফ তাদের থামাতে নিয়েও তাদের ঝগড়া আর হুমকির জন্য কিছু বলতে পারিনি শেষে ওখানেই মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।
তামিম আর লেখা দুজন দুজনের দিকে হাত উঁচিয়ে রেখে জোরে জোরে চিৎকার করছে। দুজন এর বন্ধু গণ তাদের থামাতে পারছে না। তাদের দুজন কে দুই দিকে থেকে শুধু ধরে আছে না হলে এতক্ষণ হয়তো চুলোচুলি কামড়াকামড়ি বেঁধে যেতো।
লেখা কলেজ থেকে তার বন্ধুদের সাথে শপিং করতে এসেছিল আর তামিম ও এসেছিল তার বন্ধুদের সাথে। কিন্তু হঠাৎ করেই লেখা লাফাতে লাফাতে এসে তামিম এর গায়ের উপর পড়ে যায়। আর তারপরেই থেকে শুরু হয় তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ প্রো ম্যাক্স।
-“এই জেবিএল এর মত গলা বন্ধ করো তোমার জন্য কেউ এখানে কান পাততে পারছে না। তামিম হাত দেখিয়ে বলে ওঠে।
-” এই লাল বান্দর টিউবলাইট হ্যারিকেন নিজের মুখ বন্ধ করো নাহলে আমি সূচ দিয়ে সেলাই করে দেবো। লেখা তামিম এর দিকে তেড়ে গিয়ে বলে ওঠে।
-“এই দুই ফুট চার ইঞ্চি নাকি আমার মুখ সেলাই করবে চার চোখো ডাবল ব্যাটারি আগে নিজের চোখ ঠিক করে হাঁটতে শেখো তার আমার মুখ সেলাই করতে আসবে। দেখে তো মনে হয় এখনই দুধে ভাতে রয়ে গেছো আবারো তোমাকে হাঁটি হাঁটি পা পা শেখাতে হবে হাত ধরে। তামিম লেখার দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে তাচ্ছিল্য ভাবে হেসে বলে ওঠে।
-“এই ইঁদুর ছুঁচো ঠিক করে কথা বলতে জানে না আবার এসেছে আমাকে হাঁটি হাঁটি পা পা শেখাতে আগে নিজের বুলি ঠিক করো তোমাকে দেখে তো মনে হয় তুমি এখনো দাঁত ফোকড়া বাচ্চা রয়ে গেছো এখনও কথা বলতে জানো না তোমাকে আগে প্রথম থেকে কথা বলা শেখাতে হবে। লেখা তামিম এর মুখের ওপর হাত তুলে বলে ওঠে।
তামিম তার নাক বরাবর হাত পেয়ে আর লেখার এতক্ষণ এর ফালতু কথা শুনে রেগে যায় যদি ও সেও এতক্ষণ কথা শোনাতে বাকি ছিলোনা কিন্তু দোষ তো তার ছিলোনা এই মেয়েটা তো ব্যাং এর মত লাফাতে লাফাতে তার গায়ের উপর পড়েছে কোথায় স্যরি বলে কেটে পড়বে তা নয় সেখান থেকে উল্টো পাল্টা বলে যাচ্ছে বলে কিনা টিউবলাইট দাঁড়াও দেখাচ্ছি তোমার মজা মনে মনে তামিম ভেবে নিয়ে লেখার মুখের দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে দেয় এদিকে তখনও লেখা নিজের মত করে বক বক করে চলেছে। তামিম তার মুখের সামনে আসা হাত টা কে দেখে নিয়ে একটা আঙুল মুখে পুরে নিয়ে কুট করে কামড় বসিয়ে দেয়। যদিও জোরে কামড় দেই নি তবে হালকা কামড় দিয়ে মুখের মধ্যে ধরে রেখেছে।
লেখা এতক্ষণ নিজের খেয়ালে বকর বকর করে গেলেও হঠাৎ করে আঙুলে কামড় অনুভব করতেই সামনে তাকিয়ে দেখে তার আঙুল তামিম এর মুখের মধ্যে। শুধু কামড় দিয়ে ধরে রাখলেও হতো কিন্তু তার থেকে ও বেশি কিছু শুরু করে দিয়েছে। লেখা তামিম এর দিকে তাকাতেই সে এক চোখ টিপে দেয়। আর লেখার শরীরের মধ্যে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায় তার নিজের মধ্যে কেমন একটা শিহরন অনুভব হয়। তামিম লেখার আঙুল কামড়ে ধরে রেখে সেটাকে জিভ দিয়ে চুষতে থাকে। তারা ঝগড়ার মধ্যে দিয়ে শুরু করলেও হঠাৎ করে এরকম একটা পদক্ষেপ নেয়ার পর দুজনই স্তব্ধ হয়ে যায়। দুজন অনুভব করে একটা আলাদা নতুন অনুভূতির যার সাথে এর আগে তারা দুজন পরিচিত হয়নি।
দুজন পাশের তাদের বন্ধুদের ডাকে তাদের ঘোর কেটে যায় লেখা তামিম এর মুখের থেকে জোর করে তার আঙুল ছাড়িয়ে নিয়ে এক পলক তামিম এর মুখের দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে ওখানে থেকে পালিয়ে যায়। তার গাল দুটো লাল হয়ে গেছিল আর মুখে ফুটে উঠেছিলো লজ্জার আভা যেটা তামিম এর চোখ এড়িয়ে যায়নি। তামিম ও লেখার যাওয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার ঠোঁটের কোনো ফুটে উঠেছে মুচকি হাসি হাত চলে গেছে সোজা বুকের ওপরে। তাদের এই অবস্থা দেখে ওখানে থাকা জনগণ এতক্ষণ বিরক্ত হলেও শেষে তাদের অবস্থা দেখেই হাসতে থাকে। সবার হাসির আওয়াজ পেয়ে তামিম ও মাথা চুলকিয়ে ওখান থেকে বেরিয়ে যায়।
.
.
.
.❤️❤️❤️
. চলবে…..
ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন…… ।