গোধূলি বেলায় প্রেম পর্ব-২৬+২৭

0
3410

#গোধূলি_বেলায়_প্রেম
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-২৬|

“এই ঠান্ডার মধ্যে এখানে বসে বসে কি করছেন?”
সাদিব এক ধ্যানে আকাশের দিকে চেয়ে ছিলো।ঠান্ডার মধ্যে শীতল কন্ঠস্বর শুনে সাদিব চমকে যায়।পরক্ষণেই বুঝতে পারে এতা রীতির কন্ঠ।সাদিব বিরবির করে বলছে,
“দিয়েছিলো তো ভয় পাইয়ে।এই মেয়ে কোথাও আমায় শান্তি দিবেনা।”
সাদিব নিজের ঘাবড়ে যাওয়া মুখটা স্বাভাবিক করে রীতির দিকে ঘুরে।রীতির গায়ে জ্যাকেট,মাথার ওড়না দিয়ে গলা পর্যন্ত পেচানো।এক কথায় ওড়না দিয়ে মাথা,কান,গলা ঢেকে ফেলেছে।হাতে একটা লেডিস চাদর।

সাদিব উঠে দাড়িয়ে রীতিকে গম্ভীর গলায় বললো,
—-“তার আগে বলো তুমি এতো রাতে এখানে কি করছো?”

সাদিবের গম্ভীর কন্ঠস্বর শুনে রীতির সব গুলিয়ে যাচ্ছে।
—-“না মানে বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম হটাৎ আপনাকে দেখতে পেলাম ঠান্ডায় বসে আছেন।”

সাদিব ভ্রু কুচকে বললো,
—-“তো? আমাকে দেখেছো বলেই আসতে হবে?”

রীতি দ্রুত মাথা নাড়িয়ে বললো,
—-“না।”
তারপর নিজ মনেই জিভে কামড় দিলো।
সাদিব রীতির মুখে না শুনে ভেতরে ভেতরে রেগে যাচ্ছে।কিন্তু রীতির সামনে প্রকাশ করছে না।
সাদিব মনে মনে বলছে,
“না? এতো সহজে না বলে দিলে?জোর খাটিয়ে বলতে পারতে হুম আসতে হবে একশত বার আসবো।কিন্তু তার বদলে না?”

রীতি সাদিবের মুখের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বললো,
—–“আসলে আপনাকে ঠান্ডায় বসে থাকতে দেখে চাদর নিয়ে এসেছি।নিন।”

রীতি চাদরটা সাদিবের দিকে এগিয়ে দিলো।সাদিব রীতির চাদরের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে বিল্ডিংয়ের দিকে এক পলক তাকালো।তারপর রীতির হাত ধরে টানতে টানতে অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছে।বাড়ির ডান কোনার দিকে একটা বড় আমগাছ আছে।সেখানে কিছুটা ঘন জঙ্গল।রীতি বুঝতে পারছেনা সাদিব ওইদিকে কেনো নিয়ে যাচ্ছে।না চাইতেও রীতি ভয় পেয়ে যাচ্ছে।তবে রীতি সাদিবকে বাধা দিচ্ছে না।

সাদিব আম গাছের সামনে গিয়ে রীতিকে গাছের সাথে মিশিয়ে দাড় করালো।তারপর সাদিব কিছুটা দূরত্ব রেখে দাড়ালো।
রীতি ডানে বায়ে চেয়ে সোজা হয়ে দাড়াতে চাইলে সাদিব বললো,
—–“এভাবেই দাড়াও।তাহলে কেউ দেখবে না।কেউ যদি বারান্দায় এসে দাড়াতো আর আমাদের দিকে চোখ পড়লে অন্যরকম কিছু ভাবতো।তাই এদিকে নিয়ে এসেছি।বারান্দা থেকে এপাশটা দেখা যায়না।নিচের কেউ দেখলেও তোমাকে দেখতে পাবেনা।গাছের সাথে দাড়িয়ে থাকো।”

রীতি সাদিবের কথামতো ওভাবেই দাঁড়িয়ে থাকলো।
কিছুক্ষণ দুজনের মধ্যেই পিনপতন নীরবতা।সাদিব দু’হাতের সাহায্যে দু’হাতের তালু ঘষছে।
নীরবতা ভেঙে রীতি বললো,
—-“চাদরটা নিন।ঠান্ডা লাগছে তো।”

সাদিব রীতির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিলো।রীতির পিলে চমকে গেলো সাদিবের দৃষ্টি দেখে।সাদিব প্রচন্ড মাত্রায় রেগে আছে।এখনো ওর রাগ কমেনি।
—-“কেনো এসেছো হা?তোমাকে বলেছি আমার জন্য চাদর নিয়ে এসো।আর এতো রাতে বারান্দায় কি করছিলে?”

রীতি দ্রুত বললো,
—-“না মানে ঘুম আসছিলো না।”

—-“কেনো?তোমার কেনো ঘুম আসবেনা?তোমার তো দিব্যি ঘুম আসার কথা।”

রীতি সাদিবের দিকে ভ্রু কুচকে বললো,
—-“আপনি আমাকে বকেন নি?আবার জিজ্ঞেস করছেন কেনো ঘুম আসছেনা?আজব পাব্লিক।আমার এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে।”

রীতি নাক ফুলিয়ে কথাগুলো বলে চাদর হাতে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।সাদিব রীতির হাত ধরে ফেললো।রীতি থমকে দাড়িয়ে যেতেই সাদিব রীতির হাত ছেড়ে দিয়ে বললো,
—-“একজন মানুষকে কাছে থাকতেই মূল্য দেও,হারিয়ে গেলে তালাস করোনা।কে বলতে পারে,কোনো একদিন পুরো শহর তন্নতন্ন করেও তার তালাস পেলেনা।”

রীতি ফ্যালফ্যাল করে সাদিবের দিকে চেয়ে রইলো।সাদিবের কথার অর্থ বুঝার চেষ্টা করছে।
সাদিব রীতির ফ্যালফ্যাল দৃষ্টির দিকে চেয়ে বললো,
—-“চলো।যাওয়া যাক।”
সাদিব সামনে সামনে হাটছে রীতি পেছনে।

রীতি ভাবছে,
“আমি কি হীরে পেয়ে পায়ে ঠেলছি?কোনো একদিন তো তাকেই খোজেছি।আমার অভিমানের পালা কি শেষ হওয়া উচিত না?এই অভিমানের পালা-বদলে তাকে হারিয়ে ফেলবো না তো?”
রীতি নিজ মনে কথাগুলো ভাবছে।
সাদিব সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।রীতি ভেবে নিয়েছে আজ সাদিবকে বলে দেবে।কিন্তু সাহস করতে পারছেনা।ফেব্রুয়ারীর ঠান্ডা ওয়েদারেও নার্ভাসনেসে মুখ গরম হয়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে মুখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে।
আর গলাও কেমন শুকিয়ে যাচ্ছে।রীতিকে এতো স্লো হাটতে দেখে সাদিব পেছনে ঘুরে।পেছনে ঘুরে দেখে যে রীতি
বেখেয়ালিভাবে হেটে চলেছে।
সাদিব দাঁড়িয়ে গেলো।রীতিও সাদিবের থেমে যাওয়া দেখে থেমে গেলো।

রীতি থতমত হয়ে সাদিবের দিকে তাকালো।
সাদিব ভ্রু উঁচিয়ে বললো,
—-“কি এতো ভাবছো বলো তো?
উস্টা খেয়ে পড়ে গেলে বুঝবে শীতে ব্যথা পাওয়ার মজা।তুমি তো আবার হুটহাট পড়ে যাওয়া কিংবা কিছু ফেলে দিতে ভালোবাসো।”

রীতির সাদিবের খুচা মারা কথা শুনে সাদিবকে উস্টা মারতে ইচ্ছে করছে।রীতি নাক মুখ কুচকে সাদিবের দিকে তাকালো।
রীতি সাদিবের দিকে চেয়ে বললো,
—-“আমি কিছু বলতে চাই।”

রীতির মুখে কিছু বলতে চাই লাইনটা শুনে সাদিবের শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল প্রবাহ বয়ে গেলো।
সাদিব স্নিগ্ধ হেসে বললো,
—-“আমি তো তাই শুনতে চাই।”

রীতির সাদিবের দিকে তাকিয়ে এতোক্ষণের জমানো সাহস ফুস হয়ে গেলো।রীতি আর কিছু বলতে পারছেনা।কেমন কাচুমাচু করছে।গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।রীতি গলায় হাত দিয়ে ঢোক গিলছে।এতো কঠিন কঠিন পরীক্ষা দিয়েছে কখনো এমন মনে হয়নি।আজ এই থ্রি ম্যাজিক্যাল ওয়ার্ড বলতে যতটা না ভয়,দ্বিধা কাজ করছে।

সাদিবের আর তর সইছেনা।রীতিকে চুপ থাকতে দেখে বললো,
—-“কিছু বলতে চাইছিলে?”

—-“হ্যা মানে..আমি বলতে পারছিনা।গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।পানি খাওয়া প্রয়োজন।”

রীতির কথা শুনে সাদিব দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—-“তুমি এখন পানি শূন্যতায় ভুগছো?কিন্তু দুঃখের কথা তুমি পানি শূন্যতায় ভুগলেও আমি তোমাকে পানি এনে দিতে পারবোনা।সরি।”

সাদিব সিড়ি বেয়ে উঠছে।রীতিও সাদিবের পেছনে পেছনে উঠছে।আর নিজেকে গালাগাল দিচ্ছে।কেনো বলতে পারছেনা? সাদিব তো সেদিন নির্দ্বিধায় সবটা বলে দিলো।
সাদিব আর রীতি দোতলার সিড়িতে।সাদিব নিজেদের ফ্ল্যাটের দরজার দিকে তাকালো।

রীতি পেছনে থেকে বললো,
—-“দাড়ান!”

সাদিব দাড়িয়ে গিয়ে বললো,
—-“আবার কি হলো?”

রীতি চোখ বন্ধ করে এক নাগাড়ে বললো,
—-“আসলে আমি যেটা বলতে চাইছি সেটা হলো..(রীতি চোখ খোলে অসহায় ভাবে বললো পারছিনা বলতে কি করবো?)

সাদিব রীতির ফেস দেখে ফিক করে হেসে ফেললো।
রীতি গাল ফুলিয়ে সাদিবের হাসি হজম করছে।
—-“আপনি মজা করছেন?আমার অসহায়তা নিয়ে মজা করছেন?বলবো না আমি কিছু।”

সাদিব পিন্স মেরে বললো,
—-“তুমি পারবেও না।বড় বড় কথা বলে লাভ নেই।”

রীতির ইগোতে বেশ লেগেছে।তাই সিদ্ধান্ত নিলো আজ বলবেই।
—-“আমি বড় বড় কথা বলছি?আপনি দাড়ান এখানে,আমি এখুনি বলবো।”

সাদিব দুহাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে রীতির সামনে।
রীতি জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে সাদিবের দিকে তাকালো।তারপর জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বললো,
—-“আমি…!
আমি আসলেই বলতে পারছিনা।ধ্যাৎ।”

রীতি কিছু না বলে দ্রুত সিড়ি দিয়ে উঠছে।সাদিব পেছনে থেকে মিনমিন করে বললো,”আসলেই পারবেনা।”

রীতি তিনতলায় নিজেদের ফ্ল্যাটের গেটের সামনে গিয়ে থামলো।সাদিবের দিকে ঘুরে হাত কচলাতে লাগলো।
সাদিব বললো,
—-“দাড়িয়ে আছো কেনো? ভেতরে যাও।”

রীতি হুম বলে দরজা খুলল।সাদিবের দিকে তাকিয়ে শুকনো হেসে ভেতরে গেলো।ভেতরে গিয়ে দরজা লক করার জন্য দরজা কিছুটা বন্ধ করে বললো,
“শুভ রাত্রি”
রীতি দরজা আরো চাপিয়ে দিচ্ছে।এখন আর সাদিবকে দেখা যাচ্ছে না।সাদিবও রীতিকে দেখছে পাচ্ছেনা।সাদিব সিড়ির রেলিঙ ধরে নিচে নামার জন্য পা বাড়ালে পেছনে থেকে রীতির কন্ঠ শুনতে পায়।
সাদিব পেছনে ঘুরে।
রীতি দরজা ফাক করে মাথা বের করে সাদিব বলে ডেকে উঠে।
সাদিব রীতির দিকে তাকিয়ে আছে রীতি কি বলবে জানার জন্য।

রীতি মুচকি হেসে বললো,
“আমি আপনাকে ভালোবাসি।”
তারপরই দরজা বন্ধ করে দেয়।এক সেকেন্ডও দেরি করে নি।সাদিব রীতির কথা শুনে ওভাবেই দাড়িয়ে আছে নির্বাক।কি হয়ে গেলো বুঝতে কয়েক সেকেন্ড লেগে গেলো সাদিবের।রীতি ওকে ভালোবাসি বলেছে অবশেষে।সাদিব যেনো ওই জায়গা থেকে নড়তে পারছেনা।থমকে দাড়িয়ে আছে।
রীতি দরজা বন্ধ করে দরজায় হেলান দিয়ে বুকে হাত দিয়ে দাড়িয়ে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।
সাদিবকে অবশেষে বলেই ফেললো মনের কথা।লজ্জায় মরে যাচ্ছে রীতি। দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো।
সাদিব মুচকি হেসে নিজের ফ্ল্যাটের দিকে গেলো।
সাদিবের মনে হচ্ছে রীতিকে ও পেয়ে গেছে আজীবনের জন্য।
“অবশেষে আমি পেয়েছি আমার প্রিয়তমাকে।”

সাদিব শুয়ে এপাশ ওপাশ করছে বিছানায় কিন্তু ঘুম আসছেনা।শেষে সাদিব হাল ছেড়ে দিলো।আজ আর ওর ঘুম হবেনা।সাদিব ফেসবুকে টু মারলো।রীতির নামের পাশে সবুজ বাতি জ্বলছে।সাদিব মুচকি হাসলো।
রীতিরও না ঘুমের অসুখ হয়েছে।দুজন দুজনার অসুখে অসুস্থ।

.

পাখির কিচিরমিচির শব্দে রীতির ঘুম ভাঙলো।কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে নিজেই জানেনা।রীতি শুয়ে শুয়ে গতকাল রাতের কথা ভাবছে।ওসব কথা ভাবতেই রীতি নিজের দুহাতে নিজের মুখ ঢেকে নিলো।
সাদিবের সামনে গিয়ে দাঁড়াবে কি করে?
সাদিব কি বলবে?এসব ভাবতেই লজ্জায় কুকড়িয়ে যাচ্ছে।

সাদিবের ঘুম ভাঙতেই অভিকে নিজের বুকের উপরে আবিষ্কার করলো।
—-“কিরে মামা সকাল সকাল আমার উপর কি করিস?”

অভি সরু চোখ করে বললো,
—-“মামা,তুমি আমাকে ছাড়াই পিকনিক করেছো?তুমি খুব পঁচা।আমাকে ঘুম পাড়িয়ে বাড়িতে রেখে গেছো।”

—-“আরে ব্যাটা আমি রাখিনি।রেখেছে তোর পঁচা আন্টি।”

অভি ভাবার ভঙ্গিতে বললো,
—-“কে সেই চশমা আন্টি?”

সাদিব সাবিহাকে ফাসাতে চেয়েছিলো।কিন্তু অভি তো রীতিকে ভেবে নিয়েছে।
সাদিবের মাথায় চট করে একটা বুদ্ধি এলো।
—-“হ্যা,ওই চশমা আন্টিই তোকে রেখে গেছে।চল চশমা আন্টিকে বকে আসি।”

—-“হ্যা চলো।”

সাদিব উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে অভিকে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো রীতিদের ফ্ল্যাটের দিকে।

রীতি চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে আর টিভিতে নিউজ দেখছে।সকাল সকাল কলিং বেল বেজে উঠতেই রীতির কপালে বিরক্তি রেখা ফুটে উঠে।কেননা দরজা ওকেই খোলতে হবে।বাড়ির একমাত্র বেকার মেয়ে।বাবা অফিসের জন্য রেডি হচ্ছে,রিমন স্কুলের জন্য আর মা নাস্তা বানাচ্ছে।
রীতি চায়ের কাপ রেখেই দরজা খোলে।বাইরে সাদিব আর অভি দাড়িয়ে আছে।রীতি সাদিবকে দেখে চমকে গেলো।

চলবে…….

#গোধূলি_বেলায়_প্রেম
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-২৭|

সাদিব রীতকে পাত্তা না দিয়ে অভির হাত ধরে রীতিকে পাশ কাটিয়ে ভেতরে ঢুকে গেলো।রীতি তখনো দরজার সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।
এই সকাল সকাল সাদিব কি করতে এসেছে?কেনো এসেছে?আর অভিকেও সাথে নিয়ে এসেছে।
রীতির ভয় হচ্ছে সাদিব না উল্টো পাল্টা কিছু বলে দেয়।ওর বাবা এখনো বের হয়নি বাড়িতে আছে।
রীতির মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে।মনে মনে আল্লাহ আল্লাহ করছে।
রীতির মা রান্নাঘর থেকে উকি দিয়ে সাদিব আর অভিকে দেখে।

রীতির মা হাসিমুখে বললো,
—-“আরে সাদিব যে,সাথে অভি বাবুও আছে দেখছি।”

সাদিব সৌজন্যতার হাসি দিয়ে বললো,
—-“আন্টি সরি সকাল সকাল ডিস্টার্ব করার জন্য।কিন্তু কি করবো অভি আমাকে অনেক জ্বালাচ্ছিলো তাই নিয়ে এলাম।ওর জন্য ভালো করে ঘুমাতে পর্যন্ত পারলাম না।”

সাদিব কথা শেষ করতেই অভি সাদিবের হাত ধরে জোরে টান দিলো।সাদিব নিচু হয়ে বসে।রীতি আর রীতির মা ওদের কান্ড দেখছে।

অভি ফিসফিস করে বললো,
—-“মামা,চশমা আন্টিকে বকবে না?”

সাদিব ফিসফিস করে বললো,
—-“এখন বকলে তোর চশমা আন্টির মা আমাদের দুজনকে বেধে রাখবে।তখন আমাদের কে বাচাবে?এখন চুপ থাক।পরে বকে দেবো।”

অভি রীতির মায়ের দিকে তাকালো।রীতির মায়ের হাতে চামচ।মাত্রই তিনি রান্নাঘর থেকে এসেছেন।আসার সময় সবজি নাড়ার চামচ হাতেই নিয়ে এসেছেন।অভি গোল গোল চোখ করে রীতির মাকে দেখছে আর তার হাতের চামচ।
রীতি আর রীতির মা একে অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করছে।অভির এভাবে তাকিয়ে থাকা ওদের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে।
অভি মামার দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে “ওকে” বললো।
সাদিব আবারো উঠে দাড়াতেই রীতির মা বললো,
—-“কোনো সমস্যা? কি যেনো বলছিলে অভির ব্যাপারে।”

—-“অভি চাইছে আমি যেনো রীতিকে খুব করে বকে দেই।”

রীতি সাদিবের কথা শুনে ভ্রু কুচকে তাকালো।আর রীতির মা অবাক হয়ে বললো,
—-“কিহ??কেনো?”

সাদিব মাথা চুলকে বললো,
—-“আসলে আন্টি হয়েছে কি গতকাল রাতে অভি রীতির কাছে ছিলো আর রীতির কোলেই ঘুমিয়ে পড়ে তাই পিকনিক পুরোটা পায়নি।বিরিয়ানিও খেতে পারেনি।আমি ঘুমিয়ে ছিলাম,ঘুমের মধ্যেই বুকে চাপ অনুভব করি।আর চোখ খোলে তখন দেখি ও আমার বুকের উপর।কারণ জিজ্ঞেস করতেই বলে ওকে কেনো ঘুম পাড়িয়ে বাড়িতে রেখে গিয়েছি।আর ওর ধারণা রীতি ওকে ঘুম পাড়িয়েছে তাই আমাকে বলেছে আমি যেনো রীতিকে বকে দেই।তাই..।”
এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে সাদিব শ্বাস নিলো।

রীতির মা পুরো ঘটনা শুনে হেসে ফেললো তারপর বললো,
—-“তা বকে দেও।”

রীতি মায়ের দিকে তাকালো অবাক চোখে।অভি সাদিবের হাত ধরে টানছে আর বলছে,
—-“মামা, চশমা আন্টিকে বকে দেও।চশমা আন্টির মা পারমিশন দিয়েছে তো।”

সাদিব পড়েছে বিপদে।ও রীতিকে কি করে বকতে পারে?এটা তো শুধু বাহানা ছিলো।সাদিব অসহায় ফেস করে রীতির দিকে তাকালো।রীতির মা হাসতে হাসতে রান্না ঘরে চলে গেলো।

রীতি মায়ের যাওয়া দেখে সাদিবের সামনে এসে নাক ফুলিয়ে চোখ সরু করে বললো,
—-“আপনি আমাকে বকতে এসেছেন?”

সাদিব ফিসফিসিয়ে বললো,
—-“উহু,তোমাকে দেখার তীব্র অসুখ হয়েছিলো আর সে অসুখ থেকে বাচার ওষুধের জন্য বাহানা খোজতে হলো।”

রীতি সাদিবের থেকে দু কদম দূরে সরে গেলো।
অভি দুজনের ফিসফিসানি কথা না শুনে বললো,
—-“তোমরা কি বলছো?”

সাদিব অভির চুল এলোমেলো করে রীতির দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললো,
—-“তোর চশমা আন্টিকে বকে দিয়েছি।”

অভি খুশি হয়ে বললো,
—-“তাহলে চলো।”

—-“হ্যা চল।”
সাদিব রীতির মাকে বললো,
—-“আন্টি আসছি।”

রীতির মা দরজা দিয়ে উকি দিয়ে বললো,
—-“নাস্তা করে যাও।”

—-“না আন্টি অন্য দিন আসবো।”

—-“হ্যা তুমি তো শুধু বলো আসবো।আসো তো না।এক কাপ চা পর্যন্ত খাওনা।”

সাদিব প্রতিউত্তরে মৃদু হাসলো।আর রীতির দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বললো,
—-“আসবো একেবারে জামাই হয়েই আসবো।তারপর জামাই আদর খাবো।”

রীতির মায়ের দিকে তাকিয়ে বিদায় মূলক হাসি দিলো।
রীতি দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলো।সাদিব বাইরে গিয়ে রীতিকে বললো,
—-“গতকাল রাতে তুমি বাচ্চাদের মতো টুকি দিলে কেনো?তুমি কি টুকি টুকি খেলছিলে?তাহলে অভির সাথে খেলো।”

রীতি আমতা আমতা করে বললো,
—-“আমি টুকি টুকি খেলিনি।আমি কিছু বলেছিলাম।”

সাদিব না জানার ভান করে মাথা চুলকে বললো,
—-“কি বলছিলে?কিছু বলেছিলে?”

রীতি হতাশ হলো।মুখ কালো করে বললো,
—-“না।”

তারপর দরজা বন্ধ করে দিলো।সাদিব একা একা হাসছে।
রীতি ভাবছে,
“তাহলে কি সাদিব শুনেনি আমি যে ওকে ভালোবাসি বলেছি?যদি সত্যিই না শুনে তাহলে?আমি এতো কষ্ট করে লজ্জা সরমের মাথা খেয়ে ভালোবাসি বললাম তার কি হবে?এখন আমার কি হবে?আবারো বলতে হবে?কিন্তু কিভাবে বলবো?আমার যে এতো সাহস নেই।উফফ বাবা কি বিপদে পড়লাম।”

সাদিব অভিকে কোলে তুলে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেলো।সাবিহা হাই তুলতে তুলতে ড্রয়িংরুমে এসে দেখে অভি আর সাদিব খেলছে।সাবিহা সাদিবকে দেখে বললো,
—-“ভাই এতো সকাল সকাল কোথায় থেকে এলে?”

—-“রীতিদের বাড়ি থেকে।”

সাবিহা সোফায় বসতে বসতে বললো,
—-“বাহ! ভাই তো দেখছি আমি বউ পাগলা হবে।সকাল সকাল গার্লফ্রেন্ডের বাড়ি গিয়ে হাজির।গার্লফ্রেন্ডের মা ঝাড়ু নিয়ে দৌড়ানি দেয়নি?”

—-“নাহ,শ্বাশুড়ি মা নাস্তা করে আসতে বলেছিলো।কিন্তু আমি নেহাৎ ভদ্র ছেলে তাই চলে এসেছি।”

—-“উম,বুঝলাম তা ভ্যালেন্টাইন ডে প্ল্যান কি?”

—-“কোনো প্ল্যান নেই।”

সাবিহা মনে মনে বলছে,বেশ মিলেছে।রীতি আপুও যেমন নিরামিষ আমার ভাইও তেমন।নিউ কাপল এদের নাকি ভ্যালেন্টাইন ডে নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই।

রীতি ভেবেছিলো সাদিব সারাদিনে অন্তত একবার ফোন করবে।কিন্তু না সাদিব রীতির ভাবনায় পানি ঢেলে দিয়েছে।পুরো দিন কেটে গিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেছে।সাদিবের দেখা নেই।রীতি রাতের অপেক্ষা করছে নিশ্চয় রাতে সাদিব ফোন দিবে কিংবা মেসেজ করবে ভ্যালেন্টাইন ডে উইশ করার জন্য।

রাত ১২টা রীতি ফোন হাতে অপেক্ষা করছে সাদিবের মেসেজের।কিন্তু ১২টা ১০বেজে যাওয়ার পরেও সাদিবের কোনো মেসেজ নেই।রীতি হতাশ হলো।তারপর ফেসবুকে গিয়ে সাদিবের ইনবক্স চেক করলো।সাদিব অনলাইনে আছে।কিন্তু রীতিকে উইশ করেনি।রীতি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো।অন্য বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে টাইম পাস করলো ততক্ষণে সাদিব অফলাইন।রীতি আশা ছেড়ে দিলো।যদিও রীতির কাছে ভ্যালেন্টাইন ডে স্পেশাল কিছু নয়।তবুও কেনো জানি ইচ্ছে করছে সাদিব একটা বার বলুক।

রীতির ফোনের ভাইব্রেশনে রীতির পিঠের নিচে তীব্র ভাবে কম্পিত হচ্ছে।রীতি নড়ে চড়ে চোখ মুখ কুচকে পিঠের নিচ থেকে ফোনটা বের করলো।ফোনটা হাতে নিয়ে আধো আধো চোখ খোলে ফোনের স্কিনে সাদিবের নাম্বার দেখতে পেলো।রীতি রিসিভ করার আগে ফোনের স্কিন থেকে টাইম দেখে নিলো।সকাল ৫টা ৪০বাজে।এই ভোর বেলা কেনো ফোন দিয়েছে সে কারণ উদঘাটন করতে না পেরে রীতি ফোন রিসিভ করলো।ফোন রিসিভ করতেই সাদিব বললো,
—-“১০মিনিটের মধ্যে ছাদে যাবে।সেখানে বড় একটা বক্স পাবে।দ্রুত যাও।”
তারপর সাদিব ফোন কেটে দিলো।
রীতি কানে ফোন নিয়ে তব্দা খেয়ে রইলো।

.

রীতি পা টিপে টিপে ছাদে উঠে।ছাদের দরজা খোলা।ছাদে পা দিতেই ঠান্ডাটা বেড়ে গেলো।চারদিকে হালকা কুয়াশা।রীতি চাদরটা ভালো করে জড়িয়ে নিয়ে বক্স খোজার কাজে লেগে গেলো।তবে এর জন্য বেশী ঝামেলা পোহাতে হয়নি।
রীতি কয়েক কদম এগুতেই আলিশান এক বক্স দেখতে পেলো।রীতি বক্সের সামনে গিয়ে দাড়ালো।বক্সটা রীতির কোমড় সমান।রীতি এত বড় বক্স দেখে হা করে আছে।
এই বক্সে কি আছে রীতি ভেবে পাচ্ছেনা।বক্সের উপর একটা চিরকুট।
রীতি চিরকুট খোলে দেখে তাতে লিখা বক্সটা খোলো।

রীতি বক্সটা আস্তে আস্তে খোলতে শুরু করলো।বক্সটা খোলার সাথে সাথেই কতগুলো বেলুন বেরুতে শুরু করলো।রীতি দ্রুত পেছনে সরে গেলো।বেলুন গুলো নিজ থেকে বেরিয়ে উপরে যেতে লাগলো।লাল-নীল বিভিন্ন রঙের বেলুন উড়ছে।রীতি অপলক চেয়ে বেলুনগুলোর উড়ে যাওয়া দেখছে।বেলুনগুলো উড়তে উড়তে রীতির চোখের আড়ালে চলে গেলো।রীতি বক্সের কাছে গিয়ে আবারো উকি দিলো।বক্সের ভেতরে একটা র‍্যাপিং করা বক্স।একটা কার্ড।রীতি কার্ডটা বের করে খুলল।রঙিন কাগজে হাতে বানানো কার্ড।রীতি কার্ড খোলে দেখলো তাতে লেখা-

“হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন ডে।আমার কাছে ভালোবাসা মানে এক অদ্ভুত মূল্যবান অনুভূতি যা মনের মাঝে শুধু একজনের জন্যই অনুভব হবে।একজনের জন্যই হৃদপিণ্ডের গতি বেড়ে যাবে।হৃদ স্পন্দনে শুধু তার নামই থাকবে।একজনের মুখই চোখের সামনে ভেসে উঠবে।সে হবে খুবই স্পেশাল।সেটা বিশেষ কোনো নিদিষ্ট দিনে নয় প্রতিদিন,প্রতি মুহুর্তে।তবুও আমি আজ তোমাকে উইশ করলাম তোমার ইচ্ছে পূরণ করতে।ভালোবাসি।”

রীতি র‍্য্যাপিং করা প্যাকেট খোলে কয়েকটা বই পেলো।রীতি মুচকি হেসে বইয়ের উপরে হাত বুলালো।

রীতি বাড়িতে গিয়েই বই খোলে বসেছে।বইয়ের প্রথম পাতায় লেখা,
“চশমা রাণী,বই পেয়ে আবার আমাকে ভুলে যেওনা।সব ভুলে বইয়ের ভেতরে ঢুকে যেওনা।পড়ার ফাকে ফাকে আমাকে মনে করো।”
রীতি ফিক করে হেসে ফেললো।রীতি বুঝেনা রীতিকে সাদিব এখনো চশমা রাণী কেনো বলে?রীতি তো এখন আর চশমা পড়ে না।
রীতি বই রেখে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
রীতি ভাবছে সাদিব ওকে ভালো সারপ্রাইজই দিয়েছে।ভাবেনি সাদিব এমন কিছু করবে।

.

রীতি আজ বিকেলে ছাদে গিয়েছে।ছাদে দিয়া,সাবিহা সবাই আছে।সাবিহা অনেকক্ষণ গল্প করার পর বললো,
—-“আপু আজ দেরি করে যাবে।সন্ধ্যার দিকে যাবে।”

রীতি প্রশ্ন করলো,
—-“কেনো?”

সাবিহা বললো,
—-“আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে।চলো আজ একটু বেশি আড্ডা দেই।”

—-“না গো মা বকবে।”

সন্ধ্যা হতেই রীতি চলে যেতে চাইলো।সাদিব তখনই ছাদে আসে আর রীতিকে বাধা দেয়।
—-“এখন যেতে হবেনা।পরে যাবে।সন্ধ্যা নামলেই ফানুশ উৎসব করবো।”

রীতি আমতা আমতা করে বললো,
—-“ঠিক আছে।”

দিয়া এসে রীতিকে কনুই দিয়ে মেরে বললো,
—-“আমরা বললাম তখন না না করলো আর এখন যেই সাদিব ভাই বললো তখন ঠিক আছে।কি ভালোবাসা রে বাবা।”

রীতি দিয়ার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকাচ্ছে।
সাদিব মুচকি হেসে গিটারে সুর তুলছে।

.

চারদিকে অন্ধকার রাজ করছে।ছাদে আলো জ্বলে উঠেছে।সমবয়সীরা সবাই হাসি-আনন্দে মেতে উঠেছে।সবাই ফানুশ উড়াচ্ছে।রীতি,দিয়া আর সাবিহা একসাথে দাড়িয়ে গল্প করছে আর ফানুশ উড়ানো দেখছে।আলোরা রীতির মুখে খেলা করছে সাদিব দূর থেকে রীতিকেই দেখছে।ছাদের লাইট অফ করে দিলো।সাদিব হাতের ভাজ খোলে রীতির কাছে গিয়ে রীতিকে অন্যপাশে নিয়ে গেলো।
তারপর রীতিকে ছেড়ে ফানুশ হাতে নিয়ে তাতে আগুন জ্বালিয়ে রীতিকে বললো ধরতে।
রীতি আর সাদিব দুজন একসাথে ফানুশ উড়ানোর জন্য হাতে নিলো।

সাদিব রীতির দিকে চেয়ে বললো,
“আমাদের ভালোবাসার আলোয় আলোকিত হোক এই উড়ন্ত ফানুশ।”
রীতি মুচকি হাসলো।সাদিব আর রীতি একসাথে ফানুশ উড়ালো।
রীতি উড়ন্ত ফানুশের দিকে চেয়ে আছে আর সাদিব রীতির দিকে।
সাদিব আশেপাশে একবার দেখে পেছন থেকে রীতিকে জড়িয়ে ধরলো।সাদিবের আচমকা আক্রমনে রীতি ফ্রিজড হয়ে গেলো।সাদিবের গরম নিশ্বাস ঘাড়ে পড়ছে।শরীরে যেনো রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।রীতির হৃদয়ে আলোড়ন তুলছে।সারা শরীরে অদ্ভুৎ শিহরণ বয়ে যাচ্ছে।
সাদিব রীতির কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
“আরেকবার বলোনা…”

রীতি কাপা কাপা গলায় বললো,
—-“কিইইহ?”

—-“ভালোবাসি।”

রীতি আমতা আমতা করছে।
—-“আমি বলতে পারবোনা।একবার বলেছি আর পারবোনা।আমার লজ্জা করে।”

সাদিব রীতিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বললো,
—-“ওরে আমার লজ্জাবতী লতিকা রে।উহু লজ্জাবতী লতিকা নয় লজ্জাবতী রীতিকা।”

রীতি লজ্জা মাখা মুখে বললো,
—-“আর কত নাম দিবেন আপনি আমায়?”

—-“তোমায় তো এখনো হাজারো নাম দেওয়া বাকি।ভালোবেসে তোমায় হাজারো নাম দেবো।চলো তোমাকে দিয়ে আসি।নয়তো আমার শাশোমা আমার নিরীহ বউটাকে বকবে।”

রীতি সাদিবের মুখে বউ শব্দটা শুনে আবারো লজ্জা পেলো।

সাদিব রীতিকে ওদের ফ্ল্যাটে দিয়ে এলো।সাদিবের ফোনে ভয়েস ম্যাসেজ এসেছে।সাদিব ওপেন করার আগেই মুচকি হাসলো।ও জানে রীতি কি রেকর্ড করে পাঠিয়েছে।যে কথাটা শোনার জন্য সাদিব হাজারো বাহানা বানাতে পারে।যে কথাটা সাদিবের ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি ফোটাতে পারে।যে কথাটা শুনলে মনে হয় এই পৃথিবীর সেরা মানবীকে পেয়ে গেছে।

চলবে…..!