গ্যাংস্টার লাভ পর্ব-৩৩+৩৪

0
795

#গ্যাংস্টার_লাভ
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
#পার্ট_৩৩

অনি: কি শুনলি তুই ?
রেহান : পরে বলছি আগে চল

রেহান গাড়ি চালিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যায়। দুইজন গাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখি মিহাদ দাড়িয়ে আছে ।

মীহাদ : তাহলে এতক্ষণে আসার টাইম হলো
রেহান : কি অবস্থা ?
মিহাদ: চিৎকার করে তো মাথা শেষ করে দিলো
রেহান : চল

রেহান অনি আর মিহাদ ভিতরে গিয়ে একটা অন্ধকার রুমে ঢুকলো । এখনো চিৎকারের আওয়াজ আসছে

রেহান : এত চিৎকার কেনো করছিস অন্যকে কষ্ট দেওয়ার আগে মনে থাকে না

লোকটা কাপা কাপা ঠোঁটে বলে

লোকটা : কে আপনি আমাকে এখানে কেনো আনছেন ছেড়ে দিন
রেহান : ছেড়ে দেবো তবে আমাদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দে তাহলে ছাড়বো
রাইহান: কি প্রশ্ন ?
রেহান: রিহা তুলে নিয়ে যেতে চাইছিলি কেনো ?
রাইহান : রিহা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তাই বাসায় পৌঁছে দিতে চাইছিলাম

অনি লবণ নিয়ে কাটা জায়গায় ছিটিয়ে দেয় আর রাইহান ব্যাথায় কুকড়ে উঠে ।

রেহান : ভালোভাবে বলে দে তাহলে আর এত কষ্ট পেতে হবে না
রাইহান : আমি সত্যি জানি না আমাকে শুধু ওকে তুলে নিয়ে যেতে বলেছিল
রেহান : কে বলেছিল ?
রাইহান : অন্তরা
রেহান : কিসের জন্য কিছু জানিস ?
রাইহান : না রিহা কে আমি লাইক করতাম কিন্তু ও married জানার পর ওর থেকে দূরে সরে আসি অন্তরা আমাকে বলে ও আপনার সাথে সুখী না আমি যেনো ওকে উদ্ধার করি আমি রাজি হয়নি কিন্তু অন্তরা আম্মু আমাকে বলে যে রিহাকে আপনার কাছ থেকে বাঁচাতে তার জন্য ওকে সবার কাছে খারাপ বানাতে হবে পরে আপনি ডিভোর্স দিলে ওকে নিয়ে অনেক দূরে চলে যেতে আর অন্তার সাথে আপনার বিয়ে হবে বিশ্বাস করুন আমি খারাপ ভেবে কোনো কিছু করিনি (ব্যাথায় কুকড়ে)

রেহান অনিকে ইশারা করে ডক্টর ডাকতে বলে। অনি রেহান এর ইশারা অনুযায়ী ডক্টর এনে রাইহান কে অন্য রুমে নিয়ে যায়।

মিহাদ : মানুষ এত টা খারাপ কি করে হতে পারে আমার ভাবতে ও ঘৃণা লাগছে ছি তুই রিহা কে এখান থেকে নিয়ে যা
রেহান : এত সহজে না যারা আমার রিহা কে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাইছিল তাদের তো এর শাস্তি পেতেই হবে ওদের শাস্তি রেহান দেবে না #গ্যাংস্টার_রেহান দেবে
মিহাদ : তুই কি করতে চাইছিস বল তো
রেহান : তেমন কিছু না রহস্যের সমাধান করতে চাইছি (ডেভিল স্মাইল দিয়ে)

অনি এসে বলে
অনির্বাণ : তো কি ঠিক করলি?
রেহান : কি নিয়ে?
অনি : বাসায় কবে যাবি
রেহান : খেলা যখন শুরু হইছে শেষ না করে কি করে হয়
অনি : মানে কি তুই রিহা কে এই বিপদে রাখবি
রেহান : কিসের বিপদ খেলা তো হবে ঢাকায় গিয়ে
অনি : তোর কথা আমার মাথায় ঢুকছে না
রেহান : আমার ও
মিহাদ : যেতে হলে কিন্ত আজ বা কাল যেতে হবে লকডাউন তো জানিস
রেহান : হুম চল এখন বাসায় যেতে হবে রিহা জেগে গেলে আমার খবর শেষ আর রাইহান এর দিকে নজর রাখিস সুস্থ হলে আমায় খবর দিস
মিহাদ : তুই চিন্তা করিস না
অনি : এখন আসি
রেহান : সাবধানে থাকিস
মিহাদ : হুম

রেহান আর অনি বিদায় নিয়ে চলে ।

ওরা বাসায় পৌঁছে যে যার রুমে যায় । রেহান দরজা খুলে দেখে রিহা খাটের উপর বসে আছে।

রেহান : কিহলো তোমার ঘুম ভেংগে গেছে ?
রিহা : আপনি কোথায় গিয়েছিলেন?
রেহান : কোথায় না এই সামনে ছিলাম
রিহা : মিথ্যে কেনো বলেন আপনার গাড়ি ছিল না
রেহান : হুম আমি একটু বাইরে গিয়েছিলাম ঘুম আসছিলো না তো তাই একটু বেড়াতে গিয়েছিলাম সন্ধ্যা থেকে তো অনেক ঘুমালাম
রিহা : একা কেনো গেলেন আমাকে নিলে কি হতো ?
রেহান : তুমি তো ঘুমাচ্ছিলে
রিহা : তাই বলে কি ডাকা যেত না

রেহান বুঝে যায় এখন ওর সাথে কথা বললে নির্ঘাত ঝগড়া বাঁধবে তাই কিছু না বলে শুয়ে পরে।

রিহা : একি আপনি শুয়ে পড়লেন কেনো উঠুন আমি কিছু বলছি তো
রেহান : রিহা ঘুম পাচ্ছে ঘুমাও
রিহা : আর কত ঘুমাবো

রেহান কিছু বলে না রিহা কিছুক্ষণ চুপ থেকে উঠে বাথরুমে যায়। রেহান একবার দেখে আবার শুয়ে পড়ে। রিহা বাথরুম থেকে ওযু করে নামাজ আদায় করে।

রেহান রিহাকে দেখে সে ও তাহাজুতের নামাজ পড়তে বসে।

কিকুক্ষণ পর ফজরের আযান দেয়। দুইজন ফজরের নামাজ আদায় করে।

দুইজন নামাজ শেষ করে একে অপরকে কে দেখে হাসে । রেহান শুয়ে পড়ে আর রিহা ছাদে যায় সূর্য দেখতে

সকাল বেলা ফজরের নামাজ পড়ে বাইরে একটু হাটাহাটি করলে মন টা ফ্রেশ থাকে আর সারাদিন খুব ভালো লাগে।

রিহা কিকুক্ষন হাটাহাটি করে ঘরে যায়। রেহান তো বেঘোরে ঘুমাচ্ছে । রিহা কি মনে করে বাইরে গিয়ে দুই কাপ কফি নিয়ে আসে রেহান কে ডাকতে যাবে তার আগে রুশা আসে।

রুসা: কি করিস ?
রিহা : কিছু না তুই হটাৎ
রুশ : ছাদে চল ও কফি

বলে রিহার হাত থেকে একটা কফির মগ নেয়। আর রিহা কে টানতে টানতে ছাদে নিয়ে যায় ।

রিহা : কিহলো এভাবে টানাটানি করছিস কেন?
রুশ: চুপ কর তো দেখ পরিবেশটা কি সুন্দর।
রিহা : হুম (চারিদিক তাকিয়ে) এখন বল কি বলবি
রুশ : কাল কি হইছিলো ? (কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে)

রিহা কালকের সব ঘটনা খুলে বলে । রুশ তো মাথায় হাত দিয়ে পড়ে

রুশ : এত কিছু হলো আচ্ছা তোর কি মনে হয় এটা ভুল করে
রিহা : একদম না
রুশ : তাহলে এখন কি করবি ?
রিহা : খুঁজতে হবে আসল রহস্য
রুশ : ওকে তো আজ থেকে শুরু করা যাক তার আগে কিছু শাস্তি দিবি না
রিহা : আসল অপরাধী বের করি তারপর না হয় দেখা যাবে কি করা যায় ।
রুশ : ওকে

দুইজন আরো অনেক গল্প করতে লাগলো।

এদিকে
রেহান ঘুমিয়ে আছে আর ওর পাশে অন্তরা বসে রেহান কে দেখছে । অন্তরা আনমনে নিজের হাত রেহান এর মুখে দিতেই রেহান হাত নিয়ে বুকে ধরে। অন্তরা কিছুটা কেপে উঠে।

রেহান চোখ খুলে তাকাতেই লাফিয়ে উঠে অন্তরা ও দূরে সরে যায়।

রেহান : তুমি এখানে (ভ্রু কুচকে)
অন্তরা : না মানে আসলে
রেহান : কি আমতা আমতা করছ (ধমক দিয়ে)
অন্তরা : আম্মু ডাকছিল তো তাই আমি এখন যাই

অন্তরা চলে যেতে গেলে রেহান ডাক দেয়

রেহান : দাড়াও খালামণি এখন ডাকছিল
অন্তরা : হুম

বলে আর না দাড়িয়ে চলে যায়। রেহান ফ্রেশ হয়ে। ওর খালামনির রুমে যায়।

গিয়ে দেখে কেউ নেই রেহান এই সুযোকে পুরো ঘর সার্চ করে। কিন্ত কিছু পায় না শেষে আলমারি খুলতে গেলে লক করা।

রেহান আর না পেরে খাটে বসে থাকে । হটাৎ ওর চোখ যায় সান সেটের উপর রাখা একটা বক্স এর দিকে । দেখে মনে হচ্ছে অনেক পুরনো কিন্ত রোজ পরিষ্কার করা হয়।

রেহান ওটা নামিয়ে খুলতে গেলে লক করা । তালা ভেংগে ফেলে। বক্স টা খুলে দেখে অনেকগুলো ছোট মানুষ এর জামা কাপড় । দেখে বুঝা যাচ্ছে এটা অন্তরার। রেহান দেখে অনেক গুলো ছবি সব অন্তরার ।

রেহান থুয়ে দিতে গেলে দেখে একটা ফ্যামিলি ছবি । রেহান সব দেখে রেখে দেয়।

রেহান বক্সটা নিজের জায়গায় রেখে বেরিয়ে আসতে গেলে দেখে রাইসা খান দরজায় দাড়িয়ে আছে। রেহান কিছুটা অপুস্তু হয়ে যায় ।

রাইসা খান : রেহান তুই এখানে ?

নিজেকে সাভাবিক করে
রেহান : হা খালামণি অন্তরা বললো তুমি ডাকছিল এসে দেখি কেউ নেই wait করছিলাম পরে ভাবলাম বাইরে আছো তাই
রাইসা খান : ওহ আচ্ছা আমি ডাকছিলাম সকাল থেকে তো দেখা করলি না তাই আর কি
রেহান : ঘুমিয়েছিলাম অন্তরা গিয়ে ডেকে আনলো।
রাইসা খান : অন্তরা কিন্ত সেই ছোট বেলার মত আছে আগে ও যেমন তুই বলতে পাগল ছিল এখন ও

রেহান বিনিময়ে মুচকি হাসি দিলো।

রেহান : আচ্ছা আমি এখন যাই
রাইসা খান : আচ্ছা ঠিক আছে

রেহান ওখানে থেকে এসে যেনো হাফ ছেড়ে বাচল।

ঘরে এসে দেখে রিহা নেই

রেহান : কি বেপার সকাল বেলায় কোথায় গেলো রুশার সাথে আছে মনে হয়।

রেহান কাউকে একটা ফোনে করে।

রেহান : হুম একটা কাজ আছে
….
রেহান : একজনের ছবি দিচ্ছি তার সব ডিটেলস আমার চাই
…..
রেহান : তাড়াতাড়ি হয়ে গেলে ভালো হয়

রেহান ফোনে কেটে একটা ডেভিল স্মাইল দেয় । ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে বসে

এদিকে
রুশ আর রিহা রাইসা খান এর ঘরে উকি মারে। রাইসা খান বসে আছে ।

ওরা কিছুক্ষণ উকি মারে।

রুশ : এভাবে উকি মেরে কিছু হবে না ওই বুড়ি বের হবে না
রিহা : তো এখন কি করবো
রুশ : চল আগে খেয়ে আসি

রিহা আর একটু উকি মেরে রুশ এর সাথে যায়।

খাবার সময় সবাই বসে খাচ্ছে ।

রেহান : আমি একটা কথা বলতে চাই
রাইসা খান : হা বল কি বলবি
রেহান : আমাদের ফিরে যেতে হবে অনেক দিন তো আসলাম আর ওই দিকটা ও সামলাতে হবে
মাইশা চৌধুরী : আমি ও তাই ভাবছিলাম অনেক দিন তো হলো

রিহা চিৎকার দিয়ে উঠে।

রিহা : নাআআ

সবাই ভ্রু কুচকে তাকায়।

রেহান : কি হলো এভাবে চিৎকার দিলে কেনো?
রিহা : না মানে বলছিলাম কি আর কিছু দিন

রিহার শেষ করার আগেই বলে

অন্তরা : আমি ও রিহার কথায় রাজি
রুশ : হুম এটাই ভালো হবে

রেহান : আমি একবার বলেছি তো বলেছি

কথাটা বলে রেহান উঠে যায় ।
রুশ : এখানে কি করছিস যা ওকে বুঝা

রিহা আর কথা না বাড়িয়ে রুমে যায়। রুমে গিয়ে কিছু বলার আগেই রেহান বলে

রেহান : আমি এই নিয়ে কথা বলতে চাইছি না গুছিয়ে নাও

রিহা বলতে যাবে তার আগেই রাইসা খান আসে।

রাইসা খান : রেহান আমি বলছিলাম কি
রেহান : খালামণি আমাদের যাওয়া দরকার
রাইসা খান : এতদিন পর তোমার সাথে দেখা আর এখন চলে যাবে
রিহা : চলে গেলে তো সব খেলা শেষ (আনমনে)

রেহান আর রাইসা খান ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে ।

রেহান : কি বললে?

চলবে

#গ্যাংস্টার_লাভ
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
#পার্ট_৩৪

রিহা আমতা আমতা করে বলে

রিহা : কই কিছু না তো আপনি বেশি শুনলেন ওসব বাদ দিন আর কিছু দিন থাকি

রাইসা খান ও সহমত পোষণ করে।

রাইসা খান : হা রিহা ঠিক বলছে
রেহান : খালা মনি আমি এই নিয়ে কোনো কথা বলতে চাইনা আমি জেনে বুঝে আমার স্ত্রীর বিপদ ডেকে আনতে পারি না

রাইসা খান তো ভয় পেয়ে যায়।

রাইসা : মানে? কিসের বিপদ ?(আমতা আমতা)
রেহান : বিপদ নয় তো কি একবার পানিতে পরে যাওয়া আর একবার রাইহান না কে, সে তো ওর পিছনে পড়ে গেছে আমি এখানে আর থাকতে পারবো না
রাইসা খান : তোর কি কারোর উপর সন্দেহ হয়
রেহান : কার উপর হবে রাইহান ছেলেটার নজর আমার ঠিক লাগছে না
রাইসা খান : আরে ওর কথা বাদ দে আমরা তো এখানে সব নিজেদের লোক
রেহান : খালামণি প্লিজ আমরা আজ বের হচ্ছি এটাই ফাইনাল

রাইসা খান কিছু বলার আগেই মাইশা চৌধুরী এসে বলে

মাইশা চৌধুরী : অনেক দিন তো হলো আর কত দিন এবার আমাদের যাওয়া উচিৎ। আর দুলাভাই এর তো আসার নাম নেই অন্য এক সময় এসে ঘুরে যাবানে এখন আমাদের যেতে দে । রিহা সব গুছিয়ে নে
রিহা : মামনি

রিহার কথা না শুনে মাইশা চৌধুরী চলে যায় । রিহা সব গুছাতে লাগে রাইসা খান কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে চলে যায়।

রিহা সব গুচাচ্ছে আর রাগে ফুসছে । রেহান রিহাকে জড়িয়ে ধরে।

রিহা : ছাড়ুন তো
রেহান : বাবা কি রাগ এত রাগ শরীরের জন্য ঠিক না মিসেস রেহান চৌধুরী
রিহা : যান তো গুছাতে দেন

রেহান রিহা কে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে

রেহান : তুমি যেটা ভাবছো সেই সব আমি জেনে ছাড়বো তোমাকে কষ্ট করতে হবে না তুমি শুধু আমাকে দেখ
রিহা : মানে ?
রেহান : মানে হলো এখন থেকে তুমি নিজের আমার এর আমার ছোট পরিবারের কথা ভাববে বুঝছো
রিহা : আপনার ভাবার হলে আপনি ভাবেন
রেহান : চুপ সব সময় এত কথা বলো কেনো যত কথা বলো তত আদর করলে তো হয়
রিহা : কেনো আপনার আদর করার লোকের কি অভাব পড়ছে যান না নিজের গার্লফ্রেন্ড এর কাছে
রেহান : তুমি যা করছো তাহলে সত্যি সত্যি একটা গার্লফ্রেন্ড বানাতে হবে বুঝছি
রিহা : কি
রেহান : কিছু না তো

রেহান রিহার গালে হাত দিয়ে ঠোটের দিকে এগুতে লাগে। এক পর্যায়ে ঠোটের সাথে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।

রিহা কোনো বাধা ছাড়া রেহান এর শার্ট ধরে। তখনই রুশ এর কথায় দুইজন দুইজন কে ছেড়ে দেয়

রুশ : সরি আমি কিছু দেখিনি

রিহা লজ্জা পেয়ে বাথরুমে চলে যায় রেহান মাথায় হাত দিয়ে চুলকাচ্ছে । রুশ একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায় ।

রেহান ব্যাগ গুছাতে লাগে । রিহা ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রেহান এর সব গুছানো শেষ । রিহা তো তাকাতে পারছে না আজকাল রেহানকে আর আগের মত অসহ্য লাগে না মনে হয় রেহান পাশে থাকলে আর কিছু লাগবে না রিহার । কেমন অদ্ভুত অনুভূতি হয় রিহা অনেক দণ্ডের মধ্যে আছে রিহার সাথে কি হচ্ছে সে নিজে ও বুঝতে পারছে না

এসব আনমনে ভাবতে ভাবতে হটাৎ ওর চোখ দরজায় যায় । সাদা রঙের উড়না দেখা যাচ্ছে। রিহার বুঝতে বাকি হইলো না এটা কে

রেহান এর ডাকে রিহার হুস ফেরে

রেহান : তাড়াতাড়ি রেডী হয়ে নাও
রিহা : হুম কিন্ত আপনি এবার থেকে যেনো অমন কিছু করবেন না বুঝছেন
রেহান : আর আমি কি করে জানবো
রিহা : তাইবলে সব সময়
রেহান : সব সময় কই তুমি তো দুরেদুরে থাকো

রিহা : আচ্ছা তাই (বলে গলা জড়িয়ে ধরে)

রেহান ও কোমর জড়িয়ে ধরে

রেহান : হুম তাই তো আজকাল ম্যাডাম এর সব কিছু কেমন অন্য রকম লাগছে ভাবছি তোমার ইচ্ছা খুব তাড়াতাড়ি পূরণ করবো
রিহা : কি ইচ্ছা (ভ্রু কুচকে)
রেহান : কেনো সেদিন তো বললে আমার বেবি চাই বেবি চাই
রিহা : আমি কখন বললাম
রেহান : মেলা থেকে আসার সময় শুধু আমাকে বললে তো হতো কিন্ত তুমি সবার সামনে বললে বাহ তাহলে তোমার ইচ্ছা পূরণ তো করতেই হবে

বলে রিহার দিকে কিছুটা ঝুঁকে পরে । তখনই অন্তরা হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ে। রেহান রিহাকে ছেড়ে দাড়ায়

রিহা : আর আপু তুমি কোনো দরকার ?
অন্তরা : না রেহান এর সাথে কথা ছিল
রিহা : ওহ নক করে তো আসবে
অন্তরা : রেহান আমি আর আম্মু ও তোমাদের সাথে যাবো

রেহান কিছু না বলে একটা ডেভিল স্মাইল দেয়। রিহার রাগ তো সেই লেভেলে গেছে

রিহা : কুত্তী হারামী একটু ও আমার জামাই কে একা ছাড়া যায় না মা মেয়ে মিলে আমার ভালো জামাই এর পিছনে পড়েছিস আমি থাকতে তোরা আমার জামাই কে আমার কাছ থেকে নিতে পারবি না হু তোকে তো আমি দেখে নেবো বাসায় যেতে দে তোর আর তোর ডাইনি মার কি করি শুধু দেখ (মনে মনে)

অন্তরা : আমরা রেডী হয়ে আছি তোমরা রেডী হয়ে নাও

রিহা কিছু না বলে একটা শার্ট বের করে রেহান এর হাতে দেয় অন্তরা ও বলে

অন্তরা : রেহান এটা পড় তোমাকে খুব মানাবে (অন্য একটা শার্ট বের করে)

রেহান একবার অন্তরার দিকে তাকাচ্ছে তো একবার রিহার দিকে । রিহা রেহান এর হাতে চিমটি কাটে

রেহান : আহহহ
অন্তরা : কিহলো

রিহা চোখ রাঙিয়ে তাকায়
রেহান : না কিছু না আমি রেডী হব তুমি বাইরে যাও
অন্তরা : এটা পড় প্লিজ

অন্তরা বাইরে যায় রিহা ও বকতে বকতে বাইরে যায় ।

রিহা : কি মেয়ে অন্যের বরের উপর নজর দেয় এটাকে বিয়ে কেনো দেয়না মত বয়স হইছে । সব আমার জিনিসের উপর নজর এটাকে একটা শিক্ষা দিতে হবে
রুশ : কাকে শিক্ষা দিবি আবার
রিহা : কাকে আবার k k h কে
রুশ : সেটা আবার কে?
রিহা : অন্তরা
রুশ : k k h মানে কি ?
রিহা : কূত্তি কামিনী হারামী

রুশ হা
রিহা : মাছি ঢুকবে এখন গাড়ির কাছে চল ।
রুশ : তোকে নিয়ে আর পারি না

দুইজন গাড়ির কাছে এসে দেখে মাইশা চৌধুরী আর রাইসা খান আছে ।

একটু পর অনি নামলো তারপর অন্তরা । রেহান এর জন্য সবাই অপেক্ষা করছে ।

রেহান আসতেই রিহা মুখ অফ অন্তরা তো সেই খুশি । রেহান অন্তরার দেওয়া শার্ট পড়েছে । রিহা তো রাগে জ্বলছে ।

রিহা : পানি দে তো
রুশ : কি করবি
রিহা : মাথায় দিয়ে ঘুম পড়বো (রেগে)
রুশ : রাগছিস কেনো দিচ্ছি

রুশ পানি দিতে রিহা পানি মুখে নেয় পরে রেহান কাছে আসতেই সব পানি রেহান এর শার্ট এ ফেলে দেয়

অন্তরা : এটা তুমি কি করলে ?
রিহা : সরি রেহান বুঝতে পারিনি রুশ একটা কথা বললো পানি পড়ে গেলো সরি
অন্তরা : তুমি একটু
মাইশা চৌধুরী : থাক না যা রেহান শার্ট চেঞ্জ করে নে

মাইশা চৌধুরী বেগ থেকে শার্ট বের করে দিকে রেহান সেটা পরে। রিহা তো সেই খুশি । অন্তরা তো জ্বলছে।

সবার থেকে বিদায় নিয়ে ওরা গাড়িতে উঠে। অনেক কিছু নেওয়ার ফলে গাড়িতে সবাই ধরছে না । তাই একজনের কোলে আরেক জন বসবে।

রেহান ড্রাইভ করছে পাশে অন্তরা বসে। অনি কোলে রুশ বসছে । রাইসা খান একা আর মাইশা চৌধুরীর কোলে রিহা বসেছে ।

সবাই এভাবে বসে যাচ্ছে জাগা কম থাকায় । রিহা তো রাগে ফুসছে অন্তরা বার বার রেহান এর দিকে তাকাচ্ছে । রেহান লুকিং গ্লাস এ রিহা কে একবার দেখছে তো মুচকি হাসছে । রিহা সামনে বসতে গেলে রিহার আগে অন্তরা বসে । রাইসা খান ও বলে ওখানে বসতে

রিহার অসহ্য লাগছে। শহরের রাস্তায় আসতে রিহা গাড়ি দাড়াতে বলে

রেহান : কি হলো

রিহা কিছু না বলে গাড়ি থেকে নেমে পড়ে।

রাইসা খান : এই মেয়ের আবার কি হলো
মাইশা চৌধুরী :কিহলো রিহা
রিহা : মামনি এভাবে কষ্ট করে যাওয়ার কোনো মানে হয় না আমি ক্যাব বুক করছি এখুনি চলে আসবে রুশ তুই কি যাবি ।
রেহান : কি পাগলামি করছো গাড়িতে উঠ
মাইশা চৌধুরী : রিহা তুই কিছু চিনিস না কখন কি হয়
রিহা : মামনি আমরা ক্যাব এ যাবো আর আজকাল GPS থাকলে পথ চেনা লাগে না
অন্তরা : আর রিহা উঠে পরো মাঝ রাস্তায় কি শুরু করছো
রিহা : মামনি তোমার কষ্ট হচ্ছে আমি জানি আর আমি ক্যাব যেতে পারবো আমার লোকেশন অন থাকবে তোমরা দেখতে পারবে রুশ তুই কি যাবি

রুশ তাড়াতাড়ি নেমে পড়ে ।

রেহান : অনি তুই গাড়ি চালা আমি ওদের নিয়ে আসছি
রিহা : কোনো দরকার নেই আমরা যেতে পারবে আপনি আপনার কাজ করেন

রেহান বুঝতে পারে রিহা অনেক কষ্ট পাইছে । রেহান অনিকে ইশারা করে

অনি : আমি যাচ্ছি তোমাদের সাথে
রিহা : হুম তাড়াতাড়ি আসুন ওই যে ক্যাব চলে আসছে

রিহা আর কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে ক্যাব উঠে পড়ে। রেহান রিহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে

রাইসা : যাক বাবা বাচা গেলো
মাইশা চৌধুরী : রেহান যা হলো ঠিক হলো না
রাইসা খান : কি ঠিক হয়নি এতে ওর কি দোষ
মাইশা চৌধুরী : তুই বুঝবি না রেহান তুই তো জানিস মেয়েটা কেমন

রেহান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে গাড়ি চালায়। রেহান just পরীক্ষা করতে চাইছিল রিহা ওকে ভালোবাসতে শুরু করছে কি না সেই জন্য শার্ট পরে না কিন্ত এতে রিহা এত কষ্ট পাবে রেহান বুঝতে পারেনি । বাড়ি গিয়ে আগে ওর রাগ ভাঙ্গতে হবে নাহলে যে কি হবে

রেহান গাড়ির স্প্রিড বাড়িয়ে দেয়।

কয়েক ঘন্টার মধ্যে চলে আসে। বাসায় এসে দেখে ওরা কেউ আসেনি রেহান ফ্রেশ হয়ে অপেক্ষা করতে থাকে।

ভালোবাসার মধ্যে ঝগড়া ,দুষ্টুমি ,রাগারাগি থাকবেই নাহলে ভালোবাসা জমবে কি করে । এর জন্য আবার কেউ গালি দিয়ে না

2 ঘণ্টা পর ওরা ফিরে আসে। রেহান খুশি হয়ে যায়। রুশ আর অনি আসছে রিহা নেই। রেহান দরজার কাছে যায় কিন্ত কাউকে পায় না

রেহান : অনি রিহা কোথায়?
অনি :রিহা ওর আব্বুর বাসায় গেছে ওর আব্বুকে খুব মনে পড়ছিল
রেহান : কি ও আমাকে না জানিয়ে
মাইশা চৌধুরী : আমাকে বলেছে একটু আগে ফোন করেছিলো । ওর আব্বু ব্যাবসার কাজে এখানে আসছে তাই রিহা দেখা করতে গেছে।
রেহান : অ্যাড্রেস টেক্সট করে দাও। আমি রিহাকে আনতে যাচ্ছি

রেহান আর কিছু না বলে বেরিয়ে যায়।

রেহান খুব ভালো করে বুঝতে পারছে রিহা কতটা অভিমান করেছে । ছোট বেলার মত । রেহান এর সাথে ঝগড়া করলে ফুফুর বাসায় চলে যেত আর রেহান ওর আব্বুকে নিয়ে রিহাকে আনত ।

রেহান গাড়ির চালাচ্ছে তখনই ওর ফোনে টেক্সট আসে । রেহান অ্যাড্রেস অনুযায়ী যায়

চলবে