গ্রামের পিচ্চি বউ পর্ব :- ০৩ এবং ০৪

0
1833

গল্প :- গ্রামের পিচ্চি বউ
পর্ব :- ০৩ এবং ০৪
লেখিকা :- বাবুনি
.
.
.
-:”আমি নিজেই নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছি না এত কিউট মানুষ কিভাবে হতে পারে__
না একে মানুষ বললে ভুল হবে স্বর্গীয় অপ্সরা ..পরির মতো একটা মেয়ে… যেমন চেহারা তেমন দুধেবরন গায়ের গড়ন…
বেশ সুন্দর মেয়ে টা …. কেউ একবার তাকালে চোখ ফেরাতে ইচ্ছে করবে না তার থেকে…
মেহেদী ও হলুদ পাড়ের শাড়ি টা যেন ওর জন্য ই তৈরি হয়েছে… শাড়ি টা তার সুন্দর্য কে যেন দীগুন বাড়িয়ে দিয়েছে…
(আমি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি…) ঠিক তখনই আব্বুর ডাকে ঘোর কাটল আমার…
আব্বু:কি রে এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছিস কেন …? এদিকে আয়…
আমি :একটু লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে আব্বুর পাশে গিয়ে বসলাম…
আব্বু: আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলেন একটু দূরে সাবার মাঝ থেকে…
আমি: হতচকিত হয়ে বললাম কি ব্যাপার আব্বু তুমি কি কিছু বলবা…?
আব্বু: বাবা রাফসান তকে একটা কথা রাখতে হবে .. আমাকে কথা দে রাখবি আমার গা ছুঁয়ে…
আমি:আগে বল তুমি কি বলবা ,কি কথা রাখতে হবে…?
আব্বু:দেখ বাবা তুই আমাদের এক মাত্র ছেলে…তর কোন ইচ্ছা আমি আজ পর্যন্ত অপূর্ণ রাখিনি.. তুই আমাকে কথা দে আজ আমার একটা ইচ্ছা পূরণ করে দিবি…
আমি: আচ্ছা আব্বু আমি কথা দিলাম এই তুমার গা ছুঁয়ে তুমার কথা রাখবো…এখন বল কি কথা…?
আব্বু:আমি আমার বন্ধুর সাথে প্রমিজ করছিলাম তর বউ বানিয়ে নিবো তার মেয়ে কে…তখন তুই অনেক ছোট ছিলি ..আর ও ওর মেয়ে টা ও তর চাইতে ছোট ছিলো ..আজ তুই ও বড় হয়েছিস আর মেয়ে টা ও অনেক বড় হয়ে গেছে..আমি চাই আমি বেঁচে থাকতে আমার বন্ধুর সাথে করা ওয়াদা টা পূর্ণ করে যেতে… তুই তো জানিস আমার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে একবার .. কখন কি হয়ে যায় তার ঠিক নেই… তাই আমি তকে না জানিয়েই তর বিয়ে ঠিক করেছি আমার বন্ধুর মেয়ে রুমকির সাথে.. আর এই জন্যই তোকে ওদের বাসায় নিয়ে আসছি…আমি জানি তকে হুট করে কিছু না বলে সব ঠিকঠাক করে ফেলাটা মনে হয় আমার ঠিক হয় নি … কিন্তু কি করব বল তর এখন বিয়ে করার কোন ইচ্ছা নেই আমি তা জানি .. তাই তকে মিথ্যা কথা বলে নিয়ে আসছি… কারণ আমার বিশ্বাস আমার ছেলে আমার কথার অবাধ্য হবে না.. আমার সম্মানের কথা সে ভাববে…এখন তর উপর নির্ভর করছে আমার মান_ সম্মান তুই রাজি হয়ে যা বাবা…?
আমি:কি বলব ঠিক বুঝতে পারছি না..
আম্মু ও পাশে এসে দাঁড়াল বলল তুই আমাদের কথা ভেবে রাজি হয়ে যা বাবা..
মেয়ে টা যেমন দেখতে তেমন লক্ষী.তর সাথে খুব মানাবে..
আমি:আর কিছু না ভেবেই বললাম আচ্ছা তুমরা যা ভালো ভাবো তাই করো..তুমাদের খুশিতে ই আমি খুশি…
আম্মু আব্বু আমাকে জরিয়ে ধরলো… (তাদের মুখে তৃপ্তির হাসি)
আমি আমার আম্মু আব্বুর মুখের হাসি টা দেখার জন্য সব করতে পারবো..
.
.
#Part :- 04
.
.
-: “আমি আমার না বলা ভালোবাসার কথা বলতে পারবো না ….(আমার আম্মু আব্বুর মুখের দিকে তাকিয়ে)
আমার আর বলা হয়ে উঠবে না কখনো ঐ সীমা তুমাকে আমি ও ভালোবাসতাম খুব..
(বুকের ভেতর থেকে বড় এক দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো..)
মেয়ে টা আমার পি এ ..
অনেক ভালো মনের মেয়ে ও ওর জন্য ই আমি অফিসের সব কাজ ঠিকমত করতে পারতাম অনেক হেল্প করত.. কোন সমস্যায় পড়লে পাশে থেকে উৎসাহ দিত.. অবশ্যই এটা ওর দায়িত্ব পালন এর মধ্যে পড়ে.. তবুও আমায় অনেক পছন্দ করে সেটা আমি বুঝতে পারি.. হয়তো ভালো ও বাসে ..বাট বলে নি কখনো হয়ত বলার সাহস পায় না .. সত্যি কথা বলতে বলবে কি ভাবে আমি ও যে ওরে বলি নি কখনো..আমার ও যে ওরে একটু একটু করে ভালো লাগতে শুরু হয়েছিল.. যাই হোক এসব নিয়ে এখন আর ভাবলে কি হবে… কারণ আজ আমার মেহেদী কাল বিয়ের কাজ টা ও হয়তো সম্পূর্ণ হয়ে যাবে.. আমি আমার আব্বুর কথার অবাধ্য হতে পারবো না .. যদি আমি এখন বিয়ে তে মত না দেই .. আব্বুর মান_সম্মান কিছু ই থাকবে না ..আর আব্বুর যদি কিছু হয় আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবো না.. না আর মাথা কাজ করছে না…
(আব্বু ডাকলেন আমাকে …)
আমি ঐ দিকে গেলাম..
আব্বু আমাকে একটা সোফায় বসতে বললেন.. (পাশে ই অপ্সরা বসে আছে ..) আমার হঠাৎ ঐ দিকে চোখ গেল..
একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি.. মেয়ে টার বয়েস যে অনেক কম তা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল..এত কম বয়সে স্বামী-সংসার কি ভাবে মেনে নেবে মেয়ে টা.? অনেক কিছু মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে আমার..
হঠাৎ দুটি মেয়ে এসে আমার পাশে এসে বসল ..
বলল দুলাভাই কিতা দেখরা এলা ..আমরার বান্ধবীরে বিয়ার আগে এলা দেখলে চৌখ লাগি যাইবো ..
আমি: (আমার ঘুর কাটলো ওদের কথায়) একটু লজ্জা পেলাম..
(ওরা বললো আমার হাত দিতে মেহেদী পড়িয়ে দিবে.. আমাকে আর রুমকি কে..)
আমি বাধ্য ছেলের মতো হাত বাড়িয়ে দিলাম ..
ওরা মেহেদী পড়াচ্ছে আর অনেক গল্প করছে আমার সাথে..
আমি কিছু কিছু কথা না বুঝতে পারলে ও ..যা বুঝলাম তার উত্তর দিলাম..(কথা বলতে বলতে বুঝলাম অনেক ভালো মনের গ্রামের মানুষ গুলো..)
যাই হোক আমার হঠাৎ চোখ গেল রুমকির দিকে ..(ভাবছি কত পিচ্চি মেয়ে টা ও না কি আমার বউ হবে ..হাসি পাচ্ছে ভীষণ..)যাক মন টা ই ভালো হয়ে গেলো ওর মুখের দিকে তাকিয়ে..এই টা ভেবে যে অনেক ফাইজলামি করা যাবে পিচ্চি বলে ক্ষেপানো যাবে মাঝে মধ্যে..
মেয়ে টার অনেক ঘুম পাচ্ছে নিশ্চয়ই ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারছি..(চোখ বন্ধ করে আছে)
মেহেদী পড়ানো শেষ হলে এক সাথে দুজনকে নামাজ পড়ানো হলো..এই টা না কি গ্রামের নিয়ম বিয়ের আগের রাতে নামাজ আদায় করতে হয়..যাই হোক নামাজ পড়া শেষ হলে.. রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম ওর কথা ভেবে ভেবে..(অনেক রাত হয়ে গেছে চোখের পাতায় ঘুম নেমে আসলো ..)সকালে ঘুম থেকে উঠি আম্মুর ডাকে ..
উঠে দেখি যা তাতে আমার চোখ কপালে উঠে গেল..
.
.
চলবে……………..