#তুমি আসবে বলে
#নুসাইবা ইভানা
পর্ব-২৬
কি যে এক অবস্থা সেই কখন থেকে আরহা একের পর এক ড্রেস চেঞ্জ করছে, কখন শাড়ি, কখনো গাউন, কখনো লেহেঙ্গা, কখনো স্কাট, তবে একটাও মন মতো হচ্ছে না। সূর্যি মামা পশ্চিম আকাশে পালাই পালাই করছে। হলদে রাঙা আলোতে চারপাশ আলোকিত করে নিজের বিদায়ের সংবাদ জানান দিচ্ছে। নীলু বিরক্ত হয়ে বললো তুই এখনো ড্রেস সিলেকশন করতে পারলিনা সাতটায় কন্সার্ট আজ আর যেতে হবে না তুই ড্রেস চেঞ্জ করতে করতে সূর্য অস্ত যেয়ে নতুন সূর্য উদিত হবে। তুই চেঞ্জ করতে থাক আমি ঘুমিয়ে পরি। আর ফোন করে জানিয়ে দেই তুই আজকে যাচ্ছিস না।
– কোথায় আমাকে সাহায্য করবে তা না করে উল্টো মাজা নিচ্ছ বলো না কোন ড্রেসটা পরবো!
– তুই আগে বল কি পরে যাবি
– ইচ্ছে ছিলো শাড়ি পড়ার তবে শাড়ি যদি সামলে রাখতে না পারি!
– তবে শাড়িই পর ওইদিন যে রেডি শাড়ি কিনে আনলাম বেবি পিংক আর গোল্ডেন কালারের মিশ্রণে ওইটা পর, ইউনিক লাগবে৷
– শুধু শুধু আমার এতো টাইম ওয়েস্ট করলে আগে বলে দিলেই হতো। যাই এক্ষুনি চেঞ্জ করে আসি।
আরহা ওয়াশরুমে যেতেই নীলু হেসে ফেলে বলে, পাগলি মেয়ে একটা আজকে নিশ্চয়ই ছোট সাহেব আসবে তাই নিজেকে সুন্দর করে তোলার এতো ব্যস্ততা। আসলে আমরা সব সময় নিজের প্রিয় মানুষের জন্য নিজেকে বিশেষ ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করি! তখন ইচ্ছে করে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেখতে যেনো আমাকেই লাগে! নীলুর ভাবনার মাঝেই আরহা বেড় হয়ে আসলো। আরহাকে বেশ সুন্দর মানিয়েছে শাড়িটায়। নীলু বললো, বাহ মনে হচ্ছে এই শাড়ীটা শুধু তোর জন্য তৈরি করা হয়েছে।
-সত্যি ভালো লাগছে তো?
– না মিথ্যে ভালো লাগছে।আমার কথা তো আর বিশ্বাস হবে না তোর আশিক যখন হা করে তাকিয়ে থাকবে তখন যদি বিশ্বাস হয়।
– হইছে এতো বেশি বেশি বলতে হবে না। যাও তুমিও রেডি হও
– আমি রেডি আছি তুই আয় আমি ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বলছি।
সামিরা নিজের বাসায় এসে চিৎকার করে কাদঁছে আর বলছে, তুই শুধু আমার মেঘ তোকে অন্য কারো হতে দেবো না। তুই শুধু আমার। কখন, কি ভাবে এতো কিছু হয়ে গেল আমি বুঝতেই পারলাম না। আমার চোখের সামনে তুই অন্য কারো হতে পারিস না। তোকে ফিরে আসতে হবে আমার কাছে। তোকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না আমি। ম*রে যাবো আমি ম*রে*ই যাবো। আশেপাশে তাকিয়ে কিছু খুঁজতে লাগলো সামিরা। কিছু কিছু সময় মানুষ জ্ঞান শূন্য হয়ে যায়। সে কি করছে সে সম্পর্কে বিন্দু মাত্র ধারনা তার থাকেনা। ড্রয়ারে থেকে একটা চকচকে ছু*ড়ি বের করে আনলো নিজের বা’হাতে ধা*র*লো ছু*ড়ি দিয়ে হাতের কবজির র*গ কে*টে৷ ফেললো, সাথে সাথে হাত থেকে লাল র*ক্ত পরে ফ্লোর ভিজে যেতে লাগলো। চোখে কেমন আধার নেমে আসছে চোখ দুটো বন্ধ করার আগেও বলল, আমি তোকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না মেঘ
কিছু ঘন্টা পূর্বে……..
দেখা তোর বউ কে,আজকে তোকে দেখাতেই হবে কথায় কথায় বউ, বউ করিস। সামিরা আর ইমতিহান দুজনেই মেঘের সাথে মজা করছে। উভয়ের ধারনার বাহিরে ছিলো মেঘ এমন কিছু বলবে।
– আরে বলছি, বলছি, তবে রাগ করতে পারবি না।
– ইমতিহান হেসে দিয়ে বলে কিসের রাগ, তোর বউকে দেখে খুশি হবো রাগ করবো কেনো। ইমতিহান ভাবছে মেঘ মজা করছে।
সামিরা বলল, কত বছর ধরে অপেক্ষা করছি তাড়াতাড়ি দেখা। সামিরা ভাবছে হয়তো তার কথাই বলবে, যেহেতু বাংলাদেশে মেঘের পরিচিত তেমন কেউ নেই। তাই মেঘকে জেঁকে ধরেছে।
– মেঘ নিজের মোবাইল থেকে একটা পিক বের করে ওদের সামনে ধরলো।
ইমতিহান বোকার মতো তাকিয়ে আছে, সামিরা যেনো পাথুরে মূর্তি এই মূহুর্তে ঠিক কি রিয়েক্ট করবে তা যেনো ভুলে গেছে। ছবিতে একটা মেয়ে পার্পল কালারের কূর্তি পরা।
ইমতিহান বললো, তুই আমাদের বোকা পেয়েছিস একটা পিক অনলাইন থেকে কালেক্ট করে দেখাবি আর আমি বিশ্বাস করবো!
– তুই চিনতে পারিসনি এটা কে?
– কেনো চেনার কথা ছিলো নাকি!
– হুম কথা ছিলো যাইহোক এই মেয়েটা হলো মিসেস মেঘ চৌধুরী।
– তাই তা এর পরিচয় কি!
– আমি তাকে ভালোবাসি এটাই তার পরিচয়, সে মেঘের হৃদয়ের রানী এটাই তার পরিচয়।
– ভাই তুই সিরিয়াস না মানে
– শোন এই পিচ্চি সুইট মেয়েটা আমার বউ তোদের ভাবি, এখন শুধু এতোটুকু জেনে রাখ বাকি কথা আস্তে আস্তে জেনে যাবি।
মেঘ আর ইমতিহান নিজের মধ্যে কথায় এতোটাই মগ্ন যে কখন সামিরা উঠে গেছে সেই খেয়াল নেই। মেঘ যখন দেখলো সামিরা দরজা দিয়ে বের হচ্ছে তখন ডেকে বললো, কিরো তুই কোথায় যাচ্ছিস!
সামিরা সামনের দিকে তাকিয়ে থেকেই বলে, একটা ইম্পর্টেন্ট কাজ করতে হবে তোরা থাক আমি আসছি। নিজের চোখের পানি কাউকে দেখানোর মতো মেয়ে সামরি নয়। তাই চোখের জল লুকিয়ে চলে গেলো।
ইমতিহান বললো, মনে হয় সামিরা বিষয়টা মানতে পারেনি! তাই চলে যাচ্ছে।
– ওকে মেনে নিতে হবে।
– তুই কি সত্যি বলছিস এই মেয়ে তোর বউ
– না মিথ্যে বলছি, আমার বউ তো তোর শালী
– কিহহহহহ তার মানে এটা আরহা!
– কেনো তুই এর আগে ওকে আর দেখিসনি
– আরে রিলেশনের প্রথমে একবার দেখেছিলাম, ভুল করে প্রশংসা বেশি করে ফেলছি এর জন্য তোর ভাবি আর দেখায়নি।
মেঘ হাসতে হাসতে বলে মেয়েদের এই জেলাসি দেখতে ভালোই লাগে। আর একটা কথা কি জানিস
আমাদের বিয়েটা ছয় বছর আগে হয়ে গেছে।
– ভাই তুই আর কিছু বলিস না কখন জানি হার্ট এটাক করি, একের পর এক অবাক করা তথ্য দিচ্ছিস। তুই আর উপর ওয়ালা জানে মিথ্যে বলছিস নাকি সত্যি।
-ওয়েট তোকে প্রমাণ দেখাচ্ছি, মেঘ নিজের মোবাইল বের করে আরহার নাম্বারে কল করলো, রিং হতে হতে কেটে গেলো রিসিভ হলো না। মেঘ টেক্সট করলো, বিবিজান ফোন রিসিভ না করলে এরপর যা হবে তাতে আমার দোষ দিতে পারবেন না।
– এবারও রিসিভ করলো না আরহা, টেক্সট করলো,আহারে আমি তো ভয় পেয়েছি আপনার কথা শুনে, ধরবো না ফোন দেখি কি করতে পারেন।
মেঘ আবার টেক্সট করলো, আমি ভালোবাসতে জানিনা, কিভাবে ভালোবাসে তাও জানানেই, তবে যেদিন তুমি প্রথম বার আমাকে কামড়ে দিয়েছিলে আই থিং সেদিন তোমার বিষাক্ত দাঁত দিয়ে আমার শরীরে ভালোবাসার ইনজেকশন পুশ করেছিলে। এখন সেই অপরাধের শাস্তি হিসেবে তোমার উচিৎ আমাকে ভালোবাসা। মিস বাঘিনী।
আরহা রিপ্লাই করলো, এক কামড়ে যার এই অবস্থা তার আমাকে ভালোবাসার ক্ষমতা নেইে,কারণ বাঘিনীর ভালোবাসা,পেতে হলে এরকম আরো অনেক সহ্য করতে হবে, মিস্টার জিরাফ।
ইমতিহান বলল, কিরে তুই প্রমান দেখানোর কথা বলে কাকে টেক্সট করছিস, দেখা তো।
– তোর দেখতে হবে না।
– দেখা তোকে দেখাতেই হবে। অনেক জোড়াজুড়ি করে মেঘের মেসেজ দেখে ইমতিহান হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
– এতে হাসির কি আছে! হাসি থামা বলছি।
– সিরিয়াসলি ভাই, তুই কি ভেবে এরকম প্রপোজ করলি! তোকে আমার শালী কেনো এরকম প্রপোজ দেখে যে কেউ রিজেক্ট করবে।
– কোথায় দু’টো মিষ্টি লাইন বলে প্রপোজ করবি তানা করে উল্টো রাগিয়ে দিয়েছিস। শুধু পড়া লেখা করলে হয় না মাঝে মাঝে প্রেম টেমও করতে হয়!
– আর একটাও বেশি কথা বললে ভাবিকে ফোন করে বলে দেবো কি ভাবে মেয়েদের সাথে ফ্লাটিং করতি।
– কিসের মধ্যে কি টানছিস। ওই আধ পাগল এমনিতেই ছোট একটা রিয়েক্ট নিয়ে সুনামি বাধিঁয়ে দেয় আর এসব শুনলে ভুমিকম্প ঘটাবে।
– তবে যাই বলিস এই মেয়েদের ঠিক বুঝতে পারলাম না। এরা কি চায়!আর কি করে নিজেরাও জানেনা। মাঝখান থেকে আমার মতো মাসুম ছেলেদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরায়।
ইমতিহান গান শুরু করলো নিজেকে সে ভাবে ভিক্টোরিয়া পার যায় বলো কি করিয়া। মেঘ গেয়ে উঠলো ঘোরালো নাকে দঁড়ি দিয়া পারা যায় বলো কি করিয়া। এমন সময় মেঘের ফোনটা সশব্দে বেজে উঠলো, ফোন রিসিভ করতেই কিছু সময় পর মেঘের হাত থেকে ফোনটা পরে গেলো।
#চলবে
#তুমি_আসবে বলে
# নুসাইবা ইভানা
পর্ব -২৭
আরহা আজ ঠিক টাইমে পৌঁছাতে পারবে না অলরেডি সাতটা পার হয়ে গেছে তবুও জ্যামে বসে আছে। সেই টেক্সটের কথা ভেবে মিটিমিটি হাসছে আরহা। রাতের ঢাকা দেখতে বেশ লাগে আলো আধারের খেলা। কেউ সফলতা নিয়ে হাসি মুখে নিজের গন্তব্যে পৌঁছে তো কেউ বিফল হয়ে ফের নতুন ভোরের অপেক্ষা করে নতুন ভাবে লড়াই করার। কারো বিলাসী জীবন তো কারো রাস্তার ঝুপড়িতে দিন পার।অদ্ভুত এই শহরে সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। কারো সময় নেই অন্য কারো খোঁজ নেয়ার। এখানকার সম্পর্কগুলো বেশির ভাগ প্রয়োজনের প্রিয়জন। এই ইট পাথরের নগরীর মানুষগুলো হৃদয় কেমন ইট, পাথরের মতো। আরহার ভাবনার মাঝেই ফোনটা বেজে উঠলো রিসিভ করতে কেউ মিষ্টি কন্ঠে সুধালো, আর কতক্ষণ লাগবে? কন্ঠ শুনে বুঝতে বাকি নেই এটা প্রান্ত, আরহা উত্তর দিলো জ্যামে আটকে আছি সঠিক বলতে পারছি না।
নীলু বললো,আমি আগেই বলেছিলাম আজ তুই ঠিক টাইমে পৌঁছাতে পারবি না। হলো তো আমার কথাটা
– আপুই জিজুকে কল করো তো জিজু কখন আসবে জিজ্ঞেস করো।
– ফোন করব কেনো আসতে হলে এমনি আসবে। ডেকে আনবো কেনো! সারাদিন ভালোবাসি বললেই কি ভালোবাসা হয়! ছোট ছোট আবদার না বলতেই পূরণ করতে পারলে তবেই না বুঝবো ভালোবাসে। দেখলিনা ছোট সাহেব কি সুন্দর এখনো মনে রেখেছে তোর হলুদ গোলাপ পছন্দ।
– মনে রেখেছে না ছাই আমি যে পোস্ট করেছিলাম, কোন এক ভোরে এক গুচ্ছ হলদে রাঙা গোলাপ হাতে তোমার আগমন হোক আমার হৃদয়ে। প্রভাতের প্রথম প্রহরে দেখা হোক তোমার সাথে। তুমি হলদে আভা মাঝে আমার হৃদয়ে ছড়িয়ে দাও। তোমার ভালোবাসায় ছড়িয়ে দাও আমার হৃদয়ে লাল হলদে আভা। সেটা দেখেই এসব করেছে।
– তবে যাই বলিস এই পোস্ট তুই একবছর আগে করেছিস!তার মানে ছোট সাহেব কত মনযোগ দিয়ে তোর প্রোফাইলের টাইমলাইন চেক করেছে।
– এতেই ইমপ্রেস হয়ে তাকে জড়িয়ে ধরবো, নাচতে নাচতে বলবো ভালোবাসি।
– সেটা কখন বললাম শুধু বলতে চাইছিলাম
– কিছু বলতে হবে না। আমাকে যা কষ্ট দিয়েছে এবার বুঝুক, আমার জীবন তেজপাতা করে দিয়েছে তার জীবন আমি আম পাতা করে দেবো।
– কি যে বলিস তুই নিজেই হয়তো জানিস না।
– জানতে হবে না। আমাকে আগুনের মতো জ্বালিয়েছে এবার আমি মরিচের মতো পোড়াবো।
– তোদের কিছুই আমি বুঝিনা বাপু এই শ্রবণ মাস তো এই ভাদ্র মাস।
– এভাবে চলতে চলতেই একদিন বসন্ত আসবে।
মেঘ কান থেকে ফোনটা নামিয়ে নিয়ে বলে সামরিরা সু*ই*সা*ই*ড করেছে, আমাদের এক্ষুনি যেতে হবে। সিটি হসপিটাল। অবস্থা নাকি ক্রিটিকাল। কথা না বাড়িয়ে দু’জনেই দ্রুত চলে আসলো সিটি হসপিটালে। আসতে আসতে প্রায় দু’ঘন্টা সময় লেগেছে। ততক্ষণে সামিরাকে কেবিনে সিফট করা হয়েছে। দ্রুত হসপিটালাইস করাতে তেমন কোন সমস্যা হয়নি।
সামিরার মা’বললো,বাবা এমন কি হলো বলতো,হুট করে এতো বড় একটা স্টেপ নিলো! আমার একটা মাত্র মেয়ে ওর কিছু হলে আমি কি নিয়ে বাচঁবো?
– আন্টি আপনি নিজেকে সামলে নিন আমরা সামিরার সাথে কথা বলে দেখছি, ওরমতো শিক্ষিত সচেতন মেয়ে এরকম একটা কাজ করবে ভাবতে পারিনি। কোন সমস্যা হলে অবশ্য তার সমাধান আছে মৃ*ত্যু সব কিছুর সমাধান হতে পারে না। ইমতিহান কথা গুলো বললো,মেঘ নিশ্চুপ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে, মেঘ জানতো সামিরা তাকে পছন্দ করে তবে এটা জানা ছিলো না এতোটা ভালোবাসে। মেঘর কাছে ভালোবাসার ব্যাখ্যাটা ভিন্ন,কেউ ভালোবাসলে তাকে সম্মান করতে হয়। কারণ অনেকে হয়তো এই ভালোবাসাটাও পাচ্ছে না। আমি কাউকে ভালোবাসি তার মানে এটা নয় বিপরীত পাশের মানুষটাও আমাকে ভালোবাসবে। তবে তার ভালোবাবাসর প্রতি সম্মান থাকতে হবে। হয়তো বিনিময়ে তাকে ভালোবাসা দেয়া যাবেনা। তবে তার প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। মেঘের প্রচুর খারাপ লাগছে, মনে হচ্ছে সামিরাকে আরো আগেই তার বিয়ের ব্যপারে বলা উচিৎ ছিলো। তাহলে হয়তো আজ এইদিনটা দেখতে হতো না। আবার রাগ হচ্ছে সমািরার উপর একজন বোধসম্পন্ন মানুষ কি ভাবে সু*ই*সা*ই*ডের মতো জঘন্য কাজ করতে পারে!
বেশ খানিকক্ষণ আগেই জ্ঞান ফিরেছে সামিরার। সবাই একে,একে দেখা করে এসেছে। তবে মেঘ যায়নি দরজার বাহিরেই দাঁড়িয়ে আছে। ইমতিহান বললো, কিরে তুই দেখা করবি না!
– আমি দেখা তো করবো তবে নিজের রাগ সংযত করতে পারবো কিনা!এর জন্য যাচ্ছি না। ওর মতো প্রাপ্ত বয়স্ক, শিক্ষিত মেয়ের দ্বারা এরকম একটা কাজ আশা করিনি। এসব করে টিনেজাররা। যারা বাস্তবতা সম্পর্কে এখনো বুঝে না। আবেগের বশে এরকম ভুল তারা করে কিন্তু!
– যা দেখা করে আয়, আর হ্যঁ অবশ্য নিজের রাগকে কন্ট্রোল করে যাবি ওর শারীরিক, মানসিক অবস্থার কথা চিন্তা করে।
মেঘ ধীর পায়ে কেবিন প্রবেশ করলো, সামিরা মেঘকে দেখে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। মেঘ একটা চেয়ার টেনে সামিরার বেডের পাশে বসলো, নিজের রাগকে সংযত করে শান্ত স্বরে বললো, এদিকে তাকা
সামিরা আলতো হাতে চোখের জলটুকু মুছে নিয়ে তাকালো।
মেঘ শান্ত স্বরে বললো, ভালোবাসা নাকি বন্ধুত্ব কোন সম্পর্ক তোর কাছে বেশি ইম্পরট্যান্ট!
নাকি কোনটার মূল্য তোর কাছে নেই! চুপকরে না থেকে উত্তর দে?
সামিরা কিছুই বলছে না, সে নিজেই এখন বুঝতে পারছে কতবড় ভুল সে কি করতে যাচ্ছিলো
মেঘ বললো চুপ করে আছিস কেনো বল, জানি এই প্রশ্নের উত্তর তুই দিতে পারবি না। আচ্ছা একটা কথা
বলতো আমাকে, নিজের জীবনের কোন মূল্য নেই!
হতেই পারে যাকে আমি ভালোবাসি সেই মানুষটা আমাকে ভালোবাসেনা।
হতে পারে ভালোবাসার মানুষটার সাথে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে কোন কারনে, বা অকারণেই। তাই বলে সু*ই*সা*ই*ড করতে হবে ?
কই যখন নিজেদের বাবা,মা, একান্ত কাছের মানুষ মারা যায় তখন তো কেউ সুইসাইড করে না। পৃথিবীতে তাদের চেয়েও ভালোবাসার মানুষ আছে নাকি! তাহলে দু’দিনের পরিচয় আর ভালোবাসার জন্য নিজের জীবন শেষ করে দিতে হবে!
তবেই তুই নিজেকে প্রেমিকা বলে প্রমাণ করতে পারবি।তারচেয়ে ভালোবাসার মানুষের ভালোবাসার জন্য অথবা তার ভালো থাকার জন্য তার থেকে দূরে যেয়ে তুই খুব সহজেই প্রমাণ করতে পারতি তুই সত্যি কারের একজন ভালোবাসার মানুষ।খুব ভাগ্য থাকলে না ভালোবাসার মানুষের ভালোবাসার মানুষ হওয়া যায়।
আমি ভালোবাসি মানে ভালোবাসি। সে ভালোবাসলেও ভালোবাসি, না বাসলেও ভালোবাসি। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো তোর সাথে আমার সম্পর্কটা বন্ধুত্বের, তোর আমার প্রতি ফিলিংস থাকলেও আমার কোনদিন তোকে নিয়ে ফ্রেন্ডের চেয়ে বেশি কিছু মনে হয়নি। ভালোবাসাটা জোড় করে হয়না চাইলেই কাউকে ভালোবাসা যায় না।
সামিরা মৃদু স্বরে বললো, আসলে তার সাথে ভালোবাসাটানঅসাধার হয়,যাকে পাওয়াটা ভাগ্যে নেই। এই যে দেখ তোকে এতো করে চাওয়ার পরেও নিজের করে পাওয়া হলো না। অথচ কোন ভাগ্যবতী হয়তো তোকে না চাইতেও পেয়ে গেলো। আচ্ছা মেঘ আমি কেন সেই সৌভাগ্যবতী হলাম না!
– আমার তো মনে হচ্ছে এখন আমি দুর্ভাগা তোর এতো দামী ভালোবাসার মর্যাদা দিতে পারলাম না।
– আচ্ছা হইছে এতো তেল দিতে হবে না তেলের দাম বেড়ে গেছে তোর জন্য আরো বাড়বে। আচ্ছা সেই সৌভাগ্যবতী মেয়েটাকে দেখতে চাই।
– সুস্থ হয়ে ওঠ তাড়াতাড়ি তারপর তোকে নিয়ে যাবো তার কাছে।
– তবে মনে রাখিস আমার চেয়ে তোকে সে বেশি ভালোবাসতে পারবে না। মিলিয়ে নিস।
মেঘ মনে মনে বললো, সে হয়তো তোর যে হাজার গুন বেশি ভালোবাসে আমায়, নাহলে এতো অন্যায় করার পরেও এভাবে প্রথম অনুভবেই জড়িয়ে ধরতো না। তার চোখের পানির প্রতি ফোঁটায় তার ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।আমি হাজর জনম চেষ্টা করেও হয়তো তার মতো করে তাকে ভালোবাসতে পারবো না।
মেঘকে বেখেয়ালি দেখে সামিরা বললো, কিরে কি ভাবছিস!
– তেমন কিছু না আচ্ছা তুই রেস্ট নে আমি সকালে আবার আসবো।
– আমার প্রশ্নের উত্তর দিলিনা কিন্তু
– উত্তর দেয়ার কি আছে, সময় হলে তুই নিজেই দেখতে পারবি।
– তার মানে তোর মনে হয় আমার চেয়ে ওই মেয়ে তোকে বেশি ভালোবাসবে।
– ওই মেয়ে না, মিসেস মেঘ
– বিয়ে করলি কবে?
– সুস্থ হয়, পরে জানতে পারবি।
মেঘ উঠে চলে যেতেই সামিরা চোখ বন্ধ করে জোড়ে নিশ্বাস নিলো।
মেঘ বাহিরে এসে ইমতিহানকে বললো, আমাকে এক্ষুনি যেতে হবে বড্ড লেট হয়ে গেলো।
#চলবে
#তুমি_আসবে বলে
#নুসাইবা ইভানা
পর্ব-২৮
রাতের নিস্তব্ধতা বিদীর্ণ করে কানে ভেসে আসছে দু’একটা দূরপাল্লার বাসের আওয়াজ দু’একটা নিশাচর পাখির কোলাহল। আরাহা প্রচন্ড মন খারাপ হলে এই চৌধুরী বাড়ির বাগানে এসে সময় কাটায়। যদিও শহরের মধ্যে এটা একটা ভূতের বাড়ির মতো গাছগুলো বেশ বড় বড় হয়ে জঙ্গলে পরিনত হয়েছে। ভাঙাচোরা পোড়া বাড়ি সাথে পোকামাকড়ের আওয়াজ পরিবেশটাকে আরো বেশি ভুতের করে তুলেছে। সেদিকে কোন খেয়াল নেই। নিজের মতো কেঁদেই যাচ্ছে। খুব করে নিজেকে তৈরি করেছিলো যার জন্য সেই মানুষটাই আসলো না। তার মানে আমার প্রতি তার কোন গুরুত্ব নেই! ভালোবাসা তো দূরে থাক। চোখের কাজল লেপটে এখন তাকেই এই ভূত নগরীর ভূত মনে হচ্ছে। বিড়বিড় করে বলছে, কেনো আসলেনা আপনি?এই ভালোবাসেন আমায়! মেঘলা আকাশ যে কোন সময় ঝুম বৃষ্টি নামমে। দারোয়ান এসে বলে গেলো, ম্যাম আপনি বাসায় চলে যান, মনে হচ্ছে প্রচুর বৃষ্টি নামবে।
– আপনি নিজের কাজ করুন কাকা আমাকে একটু একা থাকতে দিন।
মেঘ বের হয়ে কখন থেকে আরহাকে কল করেই যাচ্ছে, প্রতিবার রিং হয়ে কেটে যাচ্ছে রিসিভ হচ্ছে না। অনেক গুলো টেক্সট করলো কোন কাজ হলো না। সেগুলোর কোন রিপ্লাই আসলো না। মেঘের রাগ হচ্ছে প্রচুর আরে একবার আমার কথাটা তো শুনবে। না কথা বললে বোঝাবো কি ভাবে আসলে কি হয়েছে!
মেঘের সেদিনের কথা মনে পরে গেলো যখন আরহা বারবার করে বলছিলো আমার কথাটা একবার শুনুন, একবার আমাকে বলতে দিন। কই সেদিন তো আমি তার কোন কথাই শুনিনি। আমি কি ভাবে এতো নিষ্ঠুর হতে পারলাম! নিজের ফোন বের করে ইমতিহানের কাছ থেকে নীলুর নাম্বার নিলো, নীলুকে কল করলো
রিং হচ্ছে।
নীলু আরহাকে খুঁজছে কন্সার্ট থেকে এসে কোথায় গেলো মেয়েটা ফোনটাও সাথে নেয়নি!কনসার্ট থেকে ফিরে নীলু ফ্রেশ হতে যায় সব কিছু স্বাভাবিক ছিলো, কিন্তু ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আরহা নেই। পুরো বাড়ি খুঁজেও কোথাও পেলো না। নিজের ফোনের টন শুনে সাথে সাথে রিসিভ করলো কোন ভুমিকা ছাড়াই মেঘ বললো, নীলু আমি মেঘ, আরহা কোথায়?
আজ আর নীলু নিজের রাগ সংযত করতে পারলো না
সেটা যেনে আপনার কি দরকার! কেনো ফিরে এসেছেন আমাদের জীবনে? আবার নতুন করে কি চাই আপনার! একবার কষ্ট দিয়ে মন ভরেনি তাই না আবার নতুন করে কষ্ট দিতে এসেছেন, প্লিজ প্লিজ দয়া করে আমাদের বাঁচতে দিন চলে যান আমাদের জীবন থেকে।
– কি হয়েছে এভাবে কেনো বলছো।
– তো কিভাবে বললে চলে যাবেন? আপনার পায়ে পরতে হবে। যা বলবেন তাই করবো তাও চলে যান নতুন করে বাচ্চা মেয়েটার জীবনে কোন ঝড় বয়ে আনবেন না। বলেই নীলু ফোনটা কেটে দিলো।
ততক্ষণে ঝুম বৃষ্টি নেমে গেছে আরহা এখনো একি ভাবে বসে আছে। কোন হেলদোল নেই।
মেঘের হৃদয়ে এই মূহুর্তে কি অবস্থা তা হয়তো কাউকে বোঝানো সম্ভব নয়। মেঘের ফোনটা সশব্দে বেজে উঠলো মেঘ রিসিভ করে কানে ধরতেই ওপাশের কথা শুনে শুধু বললো আসছি!
আরহা বৃষ্টিতে ভিজে একাকার তবু একি ভাবে বসে আছে দৃষ্টি তার মাটির দিকে। হয়তো বলতে চাইছে আমাকে তোমার নিচে নিয়ে নাও এখানে আমার দম আটকে আসছে। আর পারছি না। আগামীকাল আরহার মায়ের মৃত্যু বার্ষিকী কি এক কপাল আমার চাইলেো মায়ের কবর দেখতে পারবো না। এবার চিৎকার করে বললো,আমাকে কেনো নিয়ে গেলেনা আম্মু। হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকানোর আলোতে নিজের পাশে কারো ছায়া দেখতে পেলো। এই মূহুর্তে ভয় বলতে আরহার কিছু নেই, অন্য সময় হলে হয়তো ভূত, ভূত বলে, চিৎকার করতো। বসা অবস্থায় পেছন ফিরে দেখলো বৃষ্টি কারনে ঠিক ভাবে তাকাতে পারছেনা।হালকা আলো আসছে গেটের কাছের লাইট থেকে আবছা আবছা দেখা যাচ্ছে মানুষটাকে। আধো আলোতেও সমানে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটিকে চিন্তে অসুবিধা হয়নি। আরহা কোনমতে উঠে হাঁটা শুরু করলো, ভেজা শাড়ী লেপ্টে আছে শরীরে। দু’কদম হাঁটতেই মেঘ আরহাকে একটানে নিজের বুকের উপর নিয়ে আসলো, এক হাত আরহার কোমরে আরহা মৃদু কেঁপে উঠলো। মেঘ কাতর স্বরে বললো, তুমি কি আমাকে ভালোবাসো? আরহা উত্তর না দিয়ে মেঘের কাছ থেকে সরে আসতে চাইলো। তবে মেঘের শক্তির কাছে পেরে উঠলো না। মেঘ হাত দিয়ে আরহার কপালে লেপ্টে থাকা চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে নিজের সাথে আর একটু মিশিয়ে নিয়ে বললো বলো, তুমি কি আমাকে ভালোবাসো? আরহা চুপ। মেঘ আরহাকে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটা শুরু করলো বাড়ির দিকে। আরহা অস্পষ্ট স্বরে বললো, কোথায় যাচ্ছেন। মেঘ কোন কথার উত্তর না দিয়ে গাড়িতে বসিয়ে নিজে ড্রাইভিং সিটে বসে ড্রাইভ করছে। দু’জনের মাঝেই পিনপতন নীরবতা। গাড়ি থামিয়ে আবার কোলে তুলে নিলো আরহাকে।
– কি হচ্ছেটা কি! ছাড়ুন আমাকে আমি বাসায় যাবো
– এখন থেকে এটাই তোমার বাসা যত রাগ, অভিমান, অভিযোগ আছে এখানে থেকেই করবে।
আরহাকে নিজের রুমে নিয়ে গেলো কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে ড্রয়ারে থেকে একটা ট্রাউজার আর টিশার্ট দিয়ে বললো, যাও চেঞ্জ করে আসো!
আরহা ওঠে এসে মেঘের সামনে দাঁড়িয়ে বলে, আমি কিছুতেই আপানার সাথে থাকবোনা,আমি এক্ষুনি চলে যাবো।
মেঘ আরহা গালে হাত রেখে বলে, তুমি চাইলে আজ আমাকে মে*রে ফেলতে পারো, বা অন্য যে কোন শাস্তি দিতে পারো তবুও তোমাকে ছাড়বো না। কথাটা শেষ করেই জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে। দুজনেই ভেজা। আরহার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বেড়ে গেছে কয়েকগুন। সেভাবেই ধরে রাখলো খানিকক্ষণ।আলতো করে কপালে চুমু দিয়ে বলে, তুমি নিজে চেঞ্জ না করলে আমি করিয়ে দেই বিবিজান। মেঘের কথা শুনে এক ঝটকায় মেঘের থেকে দূরে সরে আসলো।
আরহা ভেবে পায়না কে বলবে এই ভদ্র চেহারার আড়ালে এমন একটা অভদ্র মানুষ রয়েছে।
– এভাবে তাকিয়ে না থেকে চেঞ্জ করে আসো। আর না হলে….
আরহা কোন কথা না বলে ট্রাউজার আর টিশার্ট নিয়ে এক দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।
মেঘ দাঁড়িয়ে মিটিমিটি হাসছে কাবার্ড থেকে ড্রেস নিয়ে নিজেও চেঞ্জ করে নিলো। কিচেনে যেয়ে পাস্তা বানিয়ে নিয়ে আসলো। সাথে দু’টো ব্লাক কফি। রুমে এসে আরহাকে কোথাও দেখছেনা। খাবারের ট্রে টেবিলে রেখে, আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজতে লাগলো, ওয়াশরুমের দরজাও তো খোলা, খুঁজতে খুঁজতে চোখ গেলো জানালার পর্দার দিকে, মনে হচ্ছে পর্দার পেছনে কেউ আছে। মেঘ একটু রসিকতা করে বললো, তোমাকে না মানে আপনাকে কি একটু বেশি হট লাগছে! ভাবছেন আপনাকে দেখে যদি নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পারি?
মেঘের লাগামহীন কথা শুনে আরহা লজ্জাবতী পাতার ন্যায় নুয়ে গেলো।
মেঘ ধীরে ধীরে আরহার সামনে যেয়ে দাঁড়ালো, দুজনের মাঝে পার্থক্য শুধু পর্দা। মেঘ হাত বাড়াতেই আরহা সরে আসতে চাইলো তবে পারলো না। দু’পাশে হাত রেখে মেঘ বললো,ম্যাডাম সাতাশ বছর ধরে নিজেকে কন্ট্রোল করছি লন্ডনের মতো একটা দেশে থেকেও। আর তোমার মতো চড়ুই পাখিকে দেখে কন্ট্রোল লেস হয়ে যাবো!
আরহার মেজাজটাই হট হয়ে গেলো। পর্দার আড়াল থেকে বেড়িয়ে এসে বলে, কি কখন থেকে কন্ট্রোল কন্ট্রোল করছেন! মাথায় আর কিছু আসে না নাকি। হাতির মতো শরীর বানিয়েছেন আমার এইটুকু শরীরে হাতির পোশাকে কেমন বিদঘুটে দেখাচ্ছে।
মেঘ আরহার পা থেকে মাথা পর্যন্ত ভালো ভাবে দেখে হাসতে হাসতে বলে, দারুণ লাগছে তো আমার বউটাকে। মনে হচ্ছে চুরি করে কারো ড্রেস পরেছে।
আরহা কথার উত্তর না দিয়ে অন্য দিকে ঘুরে দাঁড়ালো।
মেঘ আরহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো, আপনাকে আমি আপনি বলবো নাকি তুমি!
আরহা বললো, আপনার কি মনে হয় এতোকিছুর পরেও আমি আপনার সাথে থাকবো?
মেঘ আরহাকে ছেড়ে দিয়ে বলে, তুমি আমার কাছ থেকে এখনো মুক্তি চাও?
#চলবে