#তুমি_প্রেম_আমার❤️
#part:16💘
#Writer: #TanjiL_Mim❤️
.
.
🍁
“আকাশ আর মেঘলার মাঝ বরাবর একটা পর্দা রাখা হলো’!!তারপর পর্দার দুই দিকে বসানো হলো মেঘলা আর আকাশকে’!!তারপর কাজী আকাশ ভাইয়ার কাছে গিয়ে বিয়ে পড়াতে শুরু করলেন’!!
*
“এদিকে আমি আর রিতু দাঁড়িয়ে আছি চুপটি করে কেমন জেনো খুব কষ্ট লাগছে আমার কিছুক্ষন পর আপু চলে যাবে আমাদের ছেড়ে ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে ভীষণ’!!তারপরও মুখে হাসি রেখে সবটা দেখে যাচ্ছি আমি’!!এমন সময় রিতু মাথা একটা টোকা দিয়ে বলে উঠলঃ
——-“আচ্ছা আরুশ আর আরিয়ান এত সহজে টাকাটা দিয়ে দিল মাঝখানে কোনো খাপলা নেই তো’!
——-“মানে??
——-“টাকাগুলো বের করে দেখ তো সব ঠিক আছে কিনা’!!
“রিতু কথা শুনে টাকাগুলো ওর কাছে দিলাম ও গুনে দেখলো সব ঠিক আছে'”!!তারপর আবারও বিয়ে পড়ানোর দিকে মনোযোগ দিলাম’!!
”এদিকে কাজী আকাশকে কবুল বলতে বললেন আকাশ ভাইয়াও ছোট্ট শ্বাস ফেলে বললঃ
——কবুল”
“কাজী সাহেব তারপর চলে গেলেন আপুর কাছে’!!আবারো বিয়ে পড়াতে শুরু করলেন উনি”!!
“আবারো রিতু মাথায় টোকা মেরে বললোঃ
——-“দোস্ত এখন নেক্সট প্লান কি????
——“কিসের প্লান”!
——“লে খুকি ভুলে গেলি বরের জুতা চুরি করতে হবে না’!!
“রিতুর কথা শুনে অবাক বললামঃ
——“হুম এই বলে আমরা চললাম আকাশ ভাইয়ার ঠিক পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম’!!
“আকাশ ভাইয়ার পাশে বসে আছে আরিয়ান তারপর আরুশ তারপর আরো কিছু ছেলে মেয়ে’!!এখন কথা হলো এতগুলো জুতোর মধ্যে বরের জুতো কোনটা’!!
“আমি কোনো কিছু না ভেবেই এক জোড়া জুতো নিয়ে নিলাম’!!তারপর দৌড়’!!
“এদিকে রিতুও সেইম জিনিস ভেবে অন্য আরেক জোড়া জুতো নিয়ে দিল দৌড়’!!
“এদিকে বিয়ে কাজ চলছে ওদিকে আমরা জুতো লুকাতে ব্যস্ত’!!
“এদিকে আরিয়ান কিছু বুঝতে পেরে পিছনে তাকালো মীম আর রিতুকে দৌড়াতে দেখে অবাক হলো সে’!!আশেপাশে তাকিয়ে তেমন কিছু দেখতে না পেয়ে সে আবার মনোযোগ দিল বিয়েতে’!!
“কাজী সাহেব মেঘলাকে বললোঃ
——বলো মা কবুল”!
“পাক্কা ১০ মিনিট সময় নিয়ে বললো কবুল’!!
“তারপরও সবাই মোনাজাত করে বিয়ে সম্পন্ন করল আকাশ আর মেঘলার’!!খাওয়া দাওয়া যেহেতু আগেই হয়ে গেছে তাই আর কিছুক্ষনের মধ্যেই বিদায় দেওয়া হবে আকাশ আর মেঘলাকে’!!
“ছাদ থেকে এক প্রকার দৌড়ে নিচে চলে আসলাম আমি আর রিতু’!!কিন্তু নিচে এসে অবাক হলাম আমি আর রিতু কারন আকাশ ভাইয়া দিব্যি তার পায়ে জুতো পড়ে দাঁড়িয়ে আছেন’!!কিন্তু কি করে পারলো এতটুকু সময়ের মধ্যে জুতোর মেনেজ করতে’!!
“আমি আর রিতু একে অপরের দিকে তাকিয়ে বললামঃ
——-“এটা কি হলো”!!
——“কি করে বলব’!!
——-“আচ্ছা যদি আকাশ ভাইয়ার জুতো আকাশ ভাইয়ার পায়েই থাকে তাহলে আমরা যে দু জোড়া জুতো নিলাম সেটা কাঁদের’!!
*
“এদিকে আরিয়ান আর আরুশ বসে আছে কারণ তারা তাদের জুতো খুঁজে পাচ্ছে না’!!তাই তারা এদিক ওদিক খোঁজাখোজি করছে’!!আরুশ বললঃ
——দোস্ত আমার জুতো গেল কোথায়??
——–আমারটাও পাচ্ছি না’!!
“হর্ঠাৎই আরিয়ান তখনকার মিম আর রিতু দৌড়ানোর কথা মনে পড়ে গেল তার’!!মুহূর্তেই সে বুঝতে পারল এটা কাদের কাজ’!!তবে কথা হলো বরের জুতো না নিয়ে বরে ভাই আর বন্ধুর জুতো নিয়ে গেল’!!অদ্ভুত তো!!আরিয়ান আরুশের দিকে তাকিয়ে বললোঃ
——“আমি মনে হয় বুঝে গেছি এটা কাঁদের কাজ!!!
“আরুশ আগ্রহের সাথে বললোঃ
——কাঁদের????
——–কাদের আবার “ঝাঁঝ বতী লবঙ্গ” আর “পঁচা পান্তা ভাতের”
“আরুশ অবাক হয়ে বললো
——–“কি??কিন্তু আমাদের জুতো কেন???হিসাব অনুযায়ী ভাইয়ার জুতো নেওয়ার কথা ছিল না’!!এই বলে আরিয়ান আর আরুশ খালি পায়ে পা বারালো মীম আর রিতুর দিকে’!!!
*
এদিকে আমি আর রিতু একে অপরের হাত কচলাচ্ছি’!!ঠিক বুঝতে পারছি না কাদের জুতো নিলাম আমরা’!!এমন সময় দেখলাম “ভাঙা টেপ রেকর্ডার” আর “ফাটা ডিসপ্লে” আমাদের দিকে একটা রাগী লুক নিয়ে এদিকে আসছে তাদের পায়ে দেখলাম জুতো নেই এইবার বুঝে গেছি আমরা ভুল করে কাদের জুতো নিয়ে গেছি’!!আমি রিতুর দিকে তাকিয়ে বললামঃ
——–“দোস্ত ভাগ তাড়াতাড়ি আমরা ভুল করে “ফাটা ডিসপ্লে” আর “ভাঙা টেপ রেকর্ডারের” জুতো নিয়ে আসছি এই বলে দুজনে দু-দিকে দৌড়’!!আমি দৌড়ে ছাঁদের দিকে আর রিতু একটা রুমের দিকে’!!
*
আমাদের এভাবে দৌড়াতে দেখে আরুশ বলে উঠলঃ
—–“দোস্ত ওরা পালিয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি ধর’!!
“তারপর আরকি আরিয়ান “ঝাঁঝ বতী লবঙ্গের” দিকে দৌড় দিল’!!আর আরুশ “পঁচা পান্তা ভাতের” দিকে’!!
__________________________________________
“রিতু লেহেঙ্গা ধরে দৌড়াচ্ছে আর তার পিছনে দৌড়াচ্ছে আরুশ আর বলছেঃ
——–“পঁচা পান্তা ভাত দাঁড়াও বলছি আমার জুতো দিয়ে যাও’!!
“রিতু আরুশের দিকে তাকিয়ে একটা ভেংচি কেটে বললঃ
——-“দিবো না খালি পায় বাড়ি যান “ফাটা ডিসপ্লে” এই বলে দৌড়াচ্ছে’!!
———-“এটা কেমন কথা খালি পায়ে যাবো মানে জুতো তো দিতেই’!!এই বলে সেও দৌড়াচ্ছে রিতুর পিছন পিছন’!!
“এক পর্যায়ে রিতু দৌড়াতে দৌড়াতে একটা রুমের ভিতর গিয়ে ঢুকলো’!!এদিকে আরুশও এসে ঢুকলো রুমের ভিতর’!!রুমে ঢুকেই দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিল আরুশ”!!
“রিতু দরজা বন্ধ করা দেখে পুরোই ঘাবড়ে গেল’!!যা এখন কোথায় যাবো’!!
“এদিকে আরুশ রিতুর ঘাবড়ে যাওয়া মুখ দেখে হেঁসে বললোঃ
——–এখন কোথায় যাবে “পঁচা পান্তা ভাত”!!
“রিতু ঘাবড়ে গিয়ে বললো
——–“একদম কাছে আসবেন না ”ফাটা ডিসপ্লে’!!
“আরুশ শয়তানি হাসি দিয়ে বললোঃ
——-“ঠিক আছে আমার জুতো দিয়ে দেও আমি চলে যাবো’!!
“এদিকে রিতু আরুশের সাথে কথা বলতে বলতে পুরো রুম ঘুরতে ঘুরতে দরজা কাছে আসবে এমন সময় আরুশ রিতুর হাত ধরে দিল একটান’!!সাথে সাথে রিতু হর্ঠাৎ এমনটা হওয়াতে তাল সামলাতে না পেরে পরল আরুশের বুকে’!!আরুশ কিছু একটা ভেবে রিতুকে নিয়ে শুয়ে পরল বিছানায়’!!হর্ঠাৎ এমনটা হওয়াতে রিতু ভয় পেয়ে তার চোখ বন্ধ করে ফেলেছে’!!
“এইমুহূর্তে রিতু বিছানার উপর তার উপর আরুশ’!!আরুশ রিতুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল’!!তারপর রিতুর কানের কাছে নিজের মুখটা নিয়ে এসে বললোঃ
——“এখন কোথায় পালাবে “পঁচা পান্তা ভাত”!!!
“রিতু তার চোখ খুলে বললোঃ
——“আমায় যেতে দিন “ফাটা ডিসপ্লে”!!
——“যেতে তো দিবো তার আগে জুতো টা দেও’!!তবে একটা কথা বলো আকাশ ভাইয়ার জুতো না নিয়ে আমার জুতো নিলে কেন????
——-“আরে ভুল করে হয়ে গেছে তো????
——–“তা বাদ দেও আগে আমার জুতো দেও’!!
——-“দেবো না জুতা’??
——-“ও দেবে না তাহলে তো মনে হচ্ছে তোমার সাথে এখন কিছু একটা করতে হবে’!!
“রিতু ঘাবড়ে গিয়ে বললো
——-“কি করবেন??
——–“তা তো দেখতেই পাবে এই বলে আরুশ রিতুর অনেক কাছে এগোতে লাগল’!!
——-“এদিকে আরুশের এমন কাজ দেখে চোখ বন্ধ করে নিলো রিতু’!! আরুশ রিতুর কাছে আসতে আসতে এতটাই কাছে চলে আসল যে তার নিশ্বাসের শব্দ রিতু শুনতে পাচ্ছে’!!
“এদিকে আরুশের নিশ্বাস এসে রিতুর ঘাড়ে পরাতে পুরে কেঁপে উঠছে রিতু’!!অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যাচ্ছে তার ভিতর’!!হর্ঠাৎ রিতু কি মনে চেঁচিয়ে বললঃ
——-“দিয়ে দিবো জুতো ছেড়ে দিন আমায়’!!
“”এদিকে আরুশ রিতুর কথা শুনে ওর উপর থেকে হালকা উঠে মুচকি হাসল’!!
__________________________________________
*
“ছাঁদের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি আমি’!!আর আমার ঠিক সামনেই কিছু টা দূরে দাঁড়িয়ে আছে আরিয়ান’!!
“কিছুক্ষণ আগে……..
“লেহেঙ্গা ধরে দৌড়াতে দৌড়াতে ছাঁদে চলে এসেছি আমি এদিকে আমার পিছন পিছন আরিয়ানও চলে এসেছে’!!এই মুহুর্তে মহা বিপদে পড়ে গেলাম আমি’!!
“হর্ঠাৎ আরিয়ান বলে উঠলঃ
——-“কি হলো “ঝাঁঝ বতী লবঙ্গ” আর দৌড়াবে না’!!আচ্ছা একটা কথা বলো তো ভাইয়ার জুতা রেখে আমার জুতা নিলে কেন????
“আরিয়ানের কথা শুনে আমার নিজেই লজ্জা লাগছে কার জুতো নিবো ভেবেছিলাম আর কার জুতো নিয়ে এসেছি’!!মাথা নিচু করে আরিয়ানকে বললামঃ
——“ওটা তো ভুল করে হয়ে গেছে”!!
“আমার কথা শুনে আরিয়ান হাসল’!!হর্ঠাৎ মনে হলো এই সুযোগ ছাঁদ থেকে বেরিয়ে আসার’!!যেই ভাবা সেই কাজ’!!লেহেঙ্গাটা ধরে যেই না দৌড় দিতে যাবো সাথে সাথে আরিয়ান টান মেরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলেন’!!
“ওনার এমন কাজে পুরো হা হয়ে গেলাম আমি’!!আরিয়ান আর মুখটা আমার কাছে এনে বললেনঃ
—–“নিজেকে খুব চালাক মনে করো “ঝাঁঝ বতী লবঙ্গ”
“আরিয়ানের কথা শুনে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম আমিঃ
——-“মনে করার কি আছে আমি তো তাই”
“আমার কথা শুনে আরিয়ান হেঁসে দিয়ে বললোঃ
——“তা তো দেখতেই পেরেছি বরের জুতো রেখে বরের ভাইয়ের জুতো নিয়ে এসেছো’!!এই বলে আরো উচ্চ স্বরে হেঁসে দিল আরিয়ান’!!
“এদিকে আমার রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে’!!
“আরিয়ান তার হাসি থামিয়ে বললোঃ
——“যাক যা হয়েছে হয়েছে এখন জুতো দিয়ে দেও নিচে সবাই অপেক্ষা করছে হয়তো’!
——–“না দিবো না????খালি পায় যান??
“আরিয়ান আবারো হেঁসে বললোঃ
——–“তাই নাকি ওকে তাহলে এইবার দেখো আমি কি করি???
——“কি করবেন আমি’!!(ঘাবড়ে গিয়ে)
——-কি করব ফাঁকা ছাদের ভিতর শুধু তুমি আর আমি আছি’!!এখন একটা ছেলে আর একটা মেয়ে একসাথে থাকলে কি করতে পারে বলে তো’!!
“আরিয়ানের কথা শুনে শুঁকনো ঢোক গিললাম আমি’!!
“আরিয়ান আর কিছু না বলেই ঝুঁকে তাকালো আমার দিকে সাথে সাথে চিল্লিয়ে বললাম আমিঃ
——“দিচ্ছি জুতো দিচ্ছি…….
“আরিয়ান আমার কথা শুনে মুচকি হেসে বললঃ
—–“এই না হলে ভালো মেয়ের মতো কথা’!!
“তারপর আরিয়ান কিছুটা সরে গেল আমার কাছ থেকে’!!এমন সময় ছাঁদে আসল আরুশ আর রিতু’!!এর কারন টা আমার জানা’!!কারন আমরা এ খানেই জুতো লুকিয়ে রেখে ছিলাম’!!ছাঁদের ভিতর লুকিয়ে রাখা জুতো গুলো দিয়ে দিলাম আরুশ আর আরিয়ানকে’!!তারপর তারা দুজনেই খুশি বললোঃ
—–“গুড র্গাল”!! তারপর দুই ফ্রেন্ড আমাদের দু’জনের দিকে চোখ টিপ মেরে হাসতে হাসতে চলে গেল’!!আর আমরা দুজন হাবলার মতো শুধু দেখেই গেলাম’!!
“কিছুক্ষণ পর নিজেরা নিজেদের গালাগালি দিয়ে নিজেদের স্বাভাবিক করে চলে আসলাম নিচে’!!
__________________________________________
*
“নিচে আসতেই দেখলাম আপু আম্মু আর আব্বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে’!!মুহুর্তে মনটা খারাপ হয়ে গেল আমার’!!তারপর আপুকে নিয়ে যেতে লাগল বাহিরে গেটের সামনে’!!
“গাড়ির কাছে আসতেই আপুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম আমি’!!আপুও কাঁদল আমাকে ধরে’!তারপর জোর করে আপুকে বসানো হলো গাড়িতে’!!আপু বসতেই আকাশ ভাইয়াও বসে পরলেন গাড়িতে তারপর গাড়ি চালাতে শুরু করলেন ড্রাইভার’!!
“তারপর সবাই একে একে গাড়িতে বসতে শুরু করল’!!তারপর একে একে সবাই চলে যেতে লাগল’ তাদের গাড়ির করে’!!
“এদিকে আম্মুও কাঁদছে প্রচুর’!!তারপর সবাই একে একে যেতে লাগলেন বাড়ির ভিতরে’!!আমি আর রিতুও এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে চললাম বাড়ির ভিতরে………..
.
.
.
*
“এদিকে আকাশ মেঘলার কান্না দেখে মেঘলাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললোঃ
——“আর কেঁদো না’!!
“ব্যস এভাবেই চলছে তারা তাদের গন্তব্যে……..
.
.
.
”এদিকে অন্য গাড়িতে বসে আছে হাসছে আরুশ আর আরিয়ান’!!তারা দু’জনেই “ঝাঁঝ বতী লবঙ্গ” আর “পঁচা পান্তা ভাতের” কাজে হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা করে ফেলেছে………..
“তারপর তারাও চললো তাদের গন্তব্যে……….
!
!
!
!
#চলবে……………
❤️[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ]❤️
#TanjiL_Mim❤️