তুমিময় আসক্তি পর্ব-১৩

0
1183

#তুমিময়_আসক্তি
#কলমে_আলো_ইসলাম

“১৩”

–” রাশেদ মিয়ার কথায় দোলার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়। দোলা কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে যাবে এমন সময় বাড়ির দরজা খটখট করার শব্দ হয়। রাশেদ মিয়া ও দোলার দৃষ্টি সেদিকে নিবদ্ধ হয়।

– এই সময় আবার কে আসলো বলে দোলা ওড়না টা ভালো করে মাথায় টেনে নিয়ে বলে, তুমি চা’টা শেষ করো বাবা আমি দেখছি।

– রোকন আর তানিয়া ড্রয়িং রুমে বসে পকোড়া খাচ্ছে আর ফোনে গেম খেলছে। রোকন তানিয়ার ফোন নিয়ে খেলছে আর তানিয়া সেটা দেখছে। অনবরত দরজায় যে খটখট শব্দ হয়ে যাচ্ছে সেদিকে তাদের ভ্রুক্ষেপই নেই। দোলা ওদের ক্রস করে গিয়ে দরজা খুলতেই হা হয়ে যায়। অবাকের শেষ চুড়ায় অবস্থান করে যেনো দোলা। বিষ্ময় ভরা দৃষ্টি নিয়ে সামনে তাকিয়ে আছে রসগোল্লার ন্যায় চোখ করে।

– রুদ্র মুখটা গম্ভীর করে হাতে মিষ্টি আর ফলের প্যাকেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দরজার ওইপাশে। দোলা যেনো এখনো নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। বারবার চোখ ডলা দিচ্ছে৷ কিন্তু না সে ঠিকই দেখছি। রুদ্রই দাঁড়িয়ে আছে৷

– কি সমস্যা তোমার। এইভাবে আর কতখন দাঁড়িয়ে থাকব বাইরে থমথমে গলায় বলে রুদ্র। দোলা যেনো একটা ঘোরের মধ্যে আছে এখনো। চোখ মুখে বিষ্ময়ের ছাপ রেখেই সরে দাঁড়ায় দোলা। রুদ্র প্যাকেট গুলো হাতে নিয়ে ভেতরে ঢুকতেই সামনে রাশেদ মিয়া পড়ে। রাশেদ মিয়া রুদ্রকে দেখে বেজায় খুশি হোন।

– ছোট সাহেব আপনি? আনন্দিত গলায় বলে তিনি।
– রুদ্র একটু হাসার চেষ্টা করে বলে কেমন আছো আঙ্কেল? রুদ্রর কথায় রাশেদ মিয়া বেশ খোশ মেজাজে উত্তর দেয়।

– রুদ্র এখনো প্যাকেট গুলো হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ আসলে কোথায় রাখবে বুঝতে পারছে না। এই দিকে দোলা এখনো যেনো রুদ্রর আসার শকড কাটিয়ে উঠতে পারছে না। রাশেদ মিয়া রুদ্রর ব্যাপার টা বুঝতে পেরে বলে আমাকে দিন প্যাকেট গুলো ছোট সাহেব বলে হাত বাড়িয়ে দেয় তিনি।

– রুদ্র রাশেদ মিয়ার হাতে প্যাকেট গুলো দিয়ে সামনে থাকা বেতের চেয়ারে বসে পড়ে। রুদ্র এইটুকুতে যেনো হাঁপিয়ে গেছে। নিজ হাতে মিষ্টি ফল কিনেছেন তিনি আজ। রুদ্রর এই সম্পর্কে তো কোনো আইডিয়া নেই৷ শ্বশুর বাড়ি প্রথম আসতে হলে কি কি লাগে কিছুই ধারণা নেই তার। তারপরও সে নিজ জ্ঞ্যানে নিয়ে এসেছে মিষ্টি আর ফল৷ কারণ সাধারণত এইগুলো নিয়ে যাওয়া যায় কোথাও গেলে এটা রুদ্র বেশ জানে।

– কি রে দোলা৷ এইভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো। যা জামাইয়ের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা কর। এইগুলো নিয়ে যা ভেতরে চাপা কন্ঠে বলে কথা গুলো। এরপর দোলার হাতে দেয় প্যাকেট গুলো।
— এই দিকে দোলার চেয়েও দ্বিগুণ অবাক এবং বিষ্ময় চোখে তাকিয়ে আছে রোকন আর তানিয়া। রুদ্র আসা পর্যন্ত তারা একই ভাবে তাকিয়ে আছে রুদ্র দিকে।

– রুদ্র বসে গলার টাই’টা একটু ঢিলে করে দেয়। তার ভীষণ গরম লাগছে যেনো। রুদ্র এসি খোজার জন্য এদিক ওদিক তাকাতেই তানিয়া আর রোকনের দিকে নজর যায়।

– কি ব্যাপার তানু, এমন ভুত দেখার মতো করে তাকিয়ে আছিস কেনো?
– রুদ্রর কথায় তানিয়া মুখটা ফ্যাকাসে করে বলে আমাকে একটু চিমটি কাটবি রোকন। কথাটা বলেই হাত বাড়িয়ে দেয় তানিয়া রোকনের দিকে। রোকনও আনমনে তানিয়ার হাতে জোরে চিমটি কাটে৷ এতে তানিয়া জোরে চিৎকার করে উঠে।

– শাট আপ তানু। কি হচ্ছে এই গুলো। এমন ষাঁড়ের মতো চিৎকার করছিস কেনো? আর কি সমস্যা তোদের। আমাকে দেখে কি রাক্ষস মনে হচ্ছে নাকি অন্য গ্রহের প্রাণী মনে হচ্ছে তোদের।

– যাক এতদিনে স্বীকার করলে তাহলে মুখ ফসকে বলে দেয় তানিয়া। কথাটা বলে তানিয়া মুখ চেপে ধরে। আর রোকন বড় বড় চোখ করে তাকায় তানিয়ার দিকে।

– রুদ্র তো তানিয়ার কথায় কিহ বলে চিৎকার করে উঠে।
— হায় আল্লাহ এ আমি কি বলে ফেললাম৷ রাক্ষসের সামনে তার নাম নিয়ে ফেলেছি মনে মনে বলে তানিয়া।

– না না ব্রো কিছু না। তুমি এই সময় হঠাৎ কিছু না বলে , তাই একটু অবাক হয়েছি আর কি। কিন্তু তুমি যে আসবে না বলেছিলে ব্রো। তাহলে হঠাৎ চলে আসলে যে৷ বউকে মিস করছিলে বুঝি রসিকতা নিয়ে বলে তানিয়া।

– রুদ্র আগের ন্যায় দ্বিগুণ ধমকে বলে শাট আপ তানু৷ দিন দিন বড্ড বেহায়া হয়ে যাচ্ছিস৷ আমি তোর বড় ভাই এটা ভুলে যাচ্ছিস তুই?

– রুদ্র ধমকে তানিয়া মুখটা মলিন করে বসে থাকে৷ রোকন তো ভয়ার্ত চেহারায় বসে আছে৷ এক ছুটে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে তার৷ কিন্তু সেটাও পারছে না যদি রুদ্র বকা দেয় সেটা ভেবে। রোকন রুদ্রর মেজাজকে ভীষণ ভয় পাই। যদিও সামনে থেকে কখনো দেখিনি রুদ্র বা তার মেজাজ কিন্তু রোকন যতটুকু শুনেছে রুদ্রর ব্যাপারে তাতেই ওর মনে রুদ্রর জন্য একটা আলাদা ভয়ের জায়গা তৈরি হয়ে গেছে।

— রুদ্র এবার স্বাভাবিক হয়ে রোকন’কে উদ্দেশ্য করে বলে কি যেনো নাম তোমার?
– রোকন মিয়ে যাওয়া কন্ঠে বলে রোকন।
– ওহ.. পড়াশোনা ঠিকঠাক চলছে তো? রুদ্রর কথার প্রতি উত্তরে রোকন জাস্ট মাথা নাড়ায়।

– তো এখন এখানে কি করছো যাও পড়তে বসো। আড্ডা দিলে চলবে৷ পড়াশোনা করতে হবে তো ভালো করে। জীবনে বড় হতে হলে পড়াশোনা করতে হবে অনেক ভালো ভাবে বুঝেছো?
– রোকন এবারও মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ। তাতে রুদ্র মুচকি হেসে বলে গুড বয়৷ তো এখন যাও পড়তে বসো পরে আড্ডা দেবো আমরা ওকে?
– রোকন যেনো হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। একটু সময় নেয়না সে স্থান থেকে প্রস্থান নিতে। তানিয়া তো অসহায় ফেস করে তাকিয়ে আছে রুদ্রর দিকে। তানিয়া উঠে যেতে যাবে তখনই দোলা আসে হাতে নাস্তার ট্রে নিয়ে।

– রাশেদ মিয়া বাজারে চলে গেছেন ইতি মধ্যে। রুদ্র এসেছে তাই ভালো মন্দ তো দেওয়া লাগবে তার সামনে। যত হোক জামাই বলে কথা।

– “”” দোলা এখনো কৌতুহলী হয়ে রুদ্র দিকে তাকিয়ে আছে। রুদ্র ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বসে চা খাচ্ছে।

– তানিয়া দোলার হাত ধরে টেনে সাইডে নিয়ে বলে বউমনি, ব্যাপার টা কি হলো বলো তো? ব্রো এখানে হঠাৎ। আমার না ব্যাপারটা ঠিক হজম হচ্ছে না।

– সেতো আমারও হচ্ছে না তানিয়া। তোমার ভাইয়া এখানে আসবে আমি তো ভাবতে পারিনি৷ তবে যাই হোক উনি এসেছে এর জন্য আমি কৃতঙ্গ উনার কাছে৷ আমার বাবার মুখটা দেখেছো৷ উনাকে আসতে দেখে কত খুশি হয়েছেন। আমার আর কিছু চাওয়ার নেই উনার থেকে।

– “” কেউ যেনো ভাবে না আমি তার জন্য এখানে এসেছি। যদি এটা ভাবে তাহলে সে এখনো বোকার স্বর্গে বাস করছে বলতে হয়৷ আমি এসেছি ড্যাডের কথা রাখতে এবং রাশেদ আঙ্কেলের সম্মানের কথা ভেবে৷ এর বেশি কিছু না বলে রুদ্র আবার নাস্তা করায় মনোযোগ দেয়।

– আসলে রুদ্র কেনো চলে আসলো সে নিজেও জানে না। দোলা নাই তাতে যেনো বাড়িটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছিলো তার কাছে। এইতো ক’দিন হলো দোলার যাওয়া ওই বাড়িতে৷ আর এই কদিনে দোলা রুদ্রকে এত জ্বালিয়েছে যে সব জায়গা এখনো রুদ্র দোলাকে উপলব্ধি করে। তাই দোলার অনুপস্থিতি রুদ্র ঠিক মেনে নিতে পারেনি৷ যার জন্য তার এখানে ছুটে আসা। আবার দোলার প্রতি যে, সে দুর্বল হচ্ছে বা হয়েছে এটা ভাবলেও ভুল হবে ভাবনা। কিন্তু রুদ্র কেনো এমন করলো এটা যে জানে না এটা নিশ্চিত।

–” রাশেদ মিয়া বাজার করে নিয়ে এসেছে অনেক আগে। রুদ্রর পছন্দ অনুযায়ী সব রান্না হবে তিনি বলে দিয়েছেন দোলাকে। তানিয়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আপেল চিবুচ্ছে আর দোলা রান্না করছে। রুদ্র ইলিশ মাছ খেতে ভীষণ ভালবাসে৷ তাই রাশেদ মিয়া বাজার থেকে বড় দেখে একটা ইলিশ মাছ নিয়ে এসেছে৷ দোলা সেটা কষিয়ে রান্না করছে৷

– বউমনি একটা কথা বলব? তানিয়ার কথায় দোলা রান্নার দিকে চোখ রেখেই বলে হুম বলো।

– আমার কি মনে হয় জানো? দোলা এবার তানিয়ার দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে কি?

– ব্রো না তোমার প্রেমে পড়ে গেছে। তানিয়ার মুখে এই কথা শুনে দোলা লজ্জায় লাল হয়ে উঠে। গালে তার লজ্জার লাল আভা ফুটে উঠে। মুখে দারুণ একটা মুচকি হাসি৷ কিন্তু পরোক্ষে সেটা আবার মিলিয়ে যায়। একটা আফসোসের নিশ্বাস ত্যাগ করে করুণ স্বরে বলে সেটা কখনোই হওয়ার নয় তানিয়া। তোমার ভাইয়া হয়তো কখনোই আমাকে মন থেকে মেনে নিতে পারবে না। হয়তো মেয়েদের প্রতি তার অসম্মান, অবজ্ঞা দূর হবে কিন্তু আমাকে স্ত্রী হিসেবে কখনো মানবে না। কথাটা বলতে দোলার চোখ ভরে আসে। দোলা চোখের পানিটা চোখের মধ্যে নিঃশেষ করে রান্নায় মনোযোগ দেয়।

— উহু আমি তা মানি না। দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সাথে বলে উঠে তানিয়া।
– তুমি যেমন মিষ্টি একটা মেয়ে তো, তোমাকে উপেক্ষা করার সাধ্যি কারো নেই৷ তাই ব্রো ও পারবে না। তবে আমি যদি ছেলে হতাম না ব্রোর থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নিতাম বলে হেসে উঠে তানিয়া। তানিয়ার এমন অদ্ভুত কথায় দোলাও জোরে হেসে উঠে।

– রাতে খাবার শেষ করে যে যার ঘরে যায়। রুদ্র তো এসে বিপাকে পড়ে গেছে। একে তো দোলার ঘরটা ছোট। তাতে কোনো সোফা নেই ঘরে৷ আবার প্রচন্ড গরম পড়ছে। একটা এসির ব্যবস্থাও নেই এখানে। রুদ্র এসি ছাড়া কখনো থাকেনি৷ তাই এখানে এসে তার বেশ ভালো রকম অসুবিধা হচ্ছে।

– দোলা সব কিছু গুছিয়ে ঘরে এসে দেখে রুদ্র পায়চারি করছে ঘরের মধ্যে। গায়ের শার্ট টা উপরে উস্কখুস্ক হয়ে আছে৷ চুল গুলো এলোমেলো হয়ে। রুদ্র যে গরমে ছটফট করছে এটা দোলা বেশ উপলব্ধি করতে পেরেছে।

– দোলাকে দেখে রুদ্র বলে, এটা ঘর নাকি কিচেন রুম? এর থেকে আমাদের কিচেনটাও অনেক বড়।আর রুমে একটা সোফা নেই কেনো? আমি ঘুমাবো কোথায়?
–” আমরা গরিব মানুষ ছোট সাহেব। আমাদের জন্য এটাই অনেক সুখের। আমাদের ঘরটা ছোট হলেও আমরা প্রাণ খুলে হাসতে জানি, হৃদয় জুড়ে সুখের অনুভূতি। হয়তো আপনাদের মতো বিলাসিতা আমাদের নেই কিন্তু ভালোবাসা, মায়া ভরপুর আছে।

– থাক হয়েছে। তোমাকে আর নীতিবাক্য শোনাতে হবে না৷ আমার ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দাও৷ আমি ঘুমাবো৷ ড্যাডের জন্য এত ঝামেলা আমার। আগে যদি জানতাম এত কিছু হবে কখনোই তোমাকে বিয়ে করতে রাজী হতাম না।

– দোলা রুদ্রর কথা গা মাখে না। কারণ দোলা এখন এই কথায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে। রুদ্র তো কথায় কথায় একটা কথা বলে। তাই দোলা আর সেভাবে ভাবেনা কথাটা নিয়ে। প্রথম প্রথম অনেক খারাপ লাগতো অবশ্য। এখন যে লাগে না তা নয়। কিন্তু এখন সয়ে গেছে তার। দোলা কিছু না বলে রুদ্রর জন্য বিসানা করে দেয়। দোলার খাট’টার পরিসর বেশি নয়। তবে দুজন শোয়া যাবে। কিন্তু গায়ের সাথে গা লাগবে। দোলা চিন্তায় পড়ে যায় কি করবে। তার সাথে যদি একটু টাচ করে তাহলে তো রুদ্র খেপে যাবে আবার। দোলা দাঁড়িয়ে চিন্তা ভাবনা করছে রুদ্র বিরক্ত নিয়ে দোলার দিকে তাকিয়ে আছে।

– দোলাকে পাশ কাটিয়ে রুদ্র এসে শুয়ে পড়ে কিন্তু রুদ্র শোয়ার সাথে সাথে পিঠে লাগে। রুদ্র আউচ বলে উঠে বসে বিসানায় হাত দিয়ে দেখে সব জায়গা।

– এটা বিসানা নাকি অন্য কিছু। এত শক্ত কি করে হয় বিসানা।

– দোলা অসহায় চোখে তাকায় রুদ্রর দিকে।
– কেনো যে আসতে গেলাম এখানে কথাটা বলে রুদ্র আবার শুয়ে পড়ে পাশ ফিরে। এইদিকে দোলা বেচারা কোথায় ঘুমাবে এই চিন্তায় শেষ।

.. কিছুখন পর দোলা দেখে রুদ্র ঘুমিয়ে গেছে৷ দোলা আস্তে আস্তে খাটের উপর উঠে এক পাশে শুয়ে পড়ে গুটিশুটি মেরে। রুদ্র সাথে যেনো তার ছোঁয়া না লাগে সে জন্য নড়াচড়াও করে না। একটু পর রুদ্র নড়ে উঠে। দোলা রুদ্রর নড়াচড়া দেখে চোখ মুখ খিচে থাকে। মনে মনে বলে রুদ্র যেনো জেগে না উঠে কিন্তু দোলাকে অবাক করে দিয়ে রুদ্র দোলার দিকে ফিরে দোলাকে জড়িয়ে নেয় একহাতে। এটা যে রুদ্র ঘুমের মধ্যে করেছে দোলা জানে৷

– দোলা সাবধানে রুদ্র দিকে ফিরতে দোলার মুখ আর রুদ্রর মুখ খুব কাছাকাছি হয়ে যায়। দুজনের নিশ্বাস দুজনের উপর আছড়ে পড়ছে। দোলা মোহিত নয়নে রুদ্রকে দেখছে কাছ থেকে। কিন্তু রুদ্রর তো কোনো হেলদোল নেই৷ সে ঘুমে বিভোর। সারাদিনে কাজ করায় সে বড্ড ক্লান্ত ছিলো৷ তার উপর এখানে আসার জন্য তাকে বাজার ঘোরা লেগেছে৷ সব মিলিয়ে রুদ্র অনেক ক্লান্ত ছিলো। যার ফলে শুয়ে পড়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে যায়।
– রুদ্র ঘুমের মধ্যে দোলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আরো কাছে টেনে নেয়৷ বেচারা দোলা তো সেই বিপাকে পড়ে গেছে এবার৷ রুদ্রর থেকে চাইলেও আর ছাড়াতে পারবে না সে নিজেকে। তারপরও দোলা চেষ্টা করে নিজেকে রুদ্রর থেকে মুক্ত করার৷ কিন্তু দোলা ব্যর্থ হয়।

– এখন কি হবে। রাক্ষস টা যদি সকালে উঠে আমাকে তার এত কাছে দেখে তাহলে নিশ্চিয় কুরুক্ষেত্র বাধিয়ে দেবে। ধুর এখানে ঘুমাতে আসাটাই ভুল হয়েছে।

– কিছুখন চিন্তা ভাবনা করার পর এক সময় দোলাও ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। দুটি বিপরীত মানুষ অজান্তে আবদ্ধ আজ।

– চলবে…