দোটানা ২ পর্ব-২৯+৩০

0
659

#দোটানা ২
#লেখিকা_আরোহী_নুর
#পর্ব_২৯

নিধী আর কথা মিলে সায়ানকে খাবার খাইয়ে এই মাত্র কক্ষের বাইরে গেলো তারপর আরুশি রুমে প্রবেশ করলো সায়ানের ওষুধ নিয়ে, সায়ানকে ওষুধ খাইয়ে আরুশি চলে যেতে নিলে তার হাত পাকড়াও করলো সায়ান,আরুশি স্বাভাবিক দৃষ্টিতে তাকালো ওর দিকে,আশ ভরা স্বরে বললো সায়ান।

ভালোবাসো আমায় তাই এতো খেয়াল রাখছো তাই না?আমি জানি আরুশি তুমি আমাকে ভালোবাসো শুধু ওই তিক্ত অতীত তোমাকে আমার কাছ থেকে দূর করছে,একবার জীবনে চলে আসো সব তিক্ততা মুছে দিবো আমি।

আরুশি স্বাভাবিক ভাবে সায়ানের হাত ছাড়ালো অতঃপর নরম স্বরে বললো।

রেস্ট করো সায়ান তোমার রেস্টের প্রয়োজন,হাতের কাছে ফোন আছে কোনো প্রয়োজন হলে ফোন করো আমায় চলে আসবো।

আর কোনো কথা না বলে আরুশি চলে যেতে নিলে দরজার সামনে আয়ানকে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় পেলো।ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে ওদের পানে,আরুশি কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না বরং পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।আয়ান এই প্রথম নরম স্বরে সায়ানের সাথে কথা বললো।

কেমন আছিস সায়ান?কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো তোর?

আরুশি পাশে থাকলে কখনো কোনো সমস্যা হতেই পারে না আমার।

কথাটা তীরের মতো বিধলো আয়ানের বুকে,ব্যাথানুভুতি বুকে জমা হলেও স্বাভাবিক ভাবেই বললো।

হ্যাঁ আরুশি তো এখন শুধু তোরই পাশে।ভেবে হাসি পায়….দেখ না আমরা দুজন দেখতে একইরকম হলেও দুজনের ভাগ্য কতোটা আলাদা,যেখানে তোর টা সৌভাগ্য আর আমার টা দূর্ভাগ্য।

কথাটা বলে চলে গেলো আয়ান।

দেখতে দেখতে কেটে গেলো পাঁচটা দিন,এই পাঁচ দিন আরুশি সায়ানের খুব খেয়াল রেখেছে,তবে সায়ানের সাথে আলাদা করে কোনো কথা বলে নি,কিন্তু আরুশির এমন খেয়াল করা সায়ানের মনে ওর জন্য ভালোবাসার একটা আশের সৃষ্টি করেছে,আরুশিকে ফিরে পাবার এক তীব্র আশা জন্ম নিয়েছে তার মনে– অপরদিকে আরুশিকে হারানোর ভয় ধীরে ধীরে বাড়ছে আয়ানের মনে,যা জ্বালিয়ে শেষ করে দিচ্ছে তার মন,এ পাঁচ দিন যে আরুশি ওর পাশেও আসে নি একবার, না তো তাকিয়েছে তার দিকে,খোঁজও নেই নি আয়ানের, আয়ান আরুশিকে শুধু সায়ানের খেয়াল নিতে দেখেছে,যা আয়ানের মনে জন্ম দিয়েছে একরাশ অভিমান আর অসহায়ত্বের,নাওয়া খাওয়া ভুলে গেছে আয়ান,অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে,দুদিন ধরে নিজেকে রুমে বন্ধি করে রেখেছে,ঘুমের সাথে যেনো তার সব সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে।বুক টা খা খা করছে ওর,চোখ দিয়ে বিনা বাধায় গড়াচ্ছে নোনাজল,পারছে না আর সহ্য করতে আরুশির দূরত্ব, এই যন্ত্রনা চাইতে এক ঝটকায় মরণ টাও ওর জন্য ভালোই হতো,এই দুদিনে কাউকেই রুমে আসতে দেয় নি আয়ান না তো কারো সাথে কোনো কথা বলতে চেয়েছে। মা বাবা সবাই ওকে নিয়েও এখন চিন্তায় মশগুল।বর্তমানে চিৎ হয়ে বিছানায় শুয়ে আছে আয়ান।হঠাৎ দরজায় টোকা পরলে খেয়াল করলো না আয়ান সেদিকে কারন বর্তমানে কাউকেই সে পাশে চায় না,তবে পরক্ষণেই আরুশির কন্ঠ ভেসে এলো তার কানে।

দরজা খুলুন স্যার আমি এসেছি,আরুশি।

আরুশির গলার স্বর শুনে ভিতরটা জুড়িয়ে গেলো আয়ানের,না চাইতেও সারা দিতে হলো তাকে আরুশির ডাকে, উঠে এসে দরজা খুলে দিলে আরুশি খাবার নিয়ে ওর রুমে ঢুকলো, আয়ান নির্বাক ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে রইলো সেখানে আরুশির পানে দৃষ্টি স্থির রেখে,আরুশি আয়ানের বিছানার পাশে খাবার রেখে আয়ানের কাছে এসে ওর হাত ধরে ওকে টেনে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে ভাত মাখলো অতঃপর এক লোকমা ওর মুখের সামনে ধরলো।আয়ান নির্বাক হয়ে এখনও তাকিয়ে আছে আরুশির পানে,আরুশি এবার বললো।

নিন খেয়ে নিন।

খিদে নেই খাবো না।

খাবো না বললেই হলো?কি হাল করেছেন নিজের এসব?কেমন শুকিয়ে গেছেন,চোখের তলায় কালি পরেছে আপনার,খেতেও তো দেখতে পাওয়া যা না আপনাকে কি হয়েছে আপনার বলেন তো?নিজেকে বন্ধি করে কেনো রেখেছেন?

তারমানে তুমি এই কদিন আমার দিকেও নজর রেখেছিলে?

আপনার কি মনে হয় আমি পাষাণ?

কথাটা বলার পর পরই আয়ান ঝাপটে ধরলো আরুশিকে অতঃপর হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলো।

তুমি পাষাণ না আরুশি, তুমি পবিত্র,তুমি সরল,তুমি ভালো,তুমি আমার প্রাণ আমার সবকিছু।আমি পারবোনা আরুশি তোমাকে ছাড়া থাকতে,আমি পারছি না তোমাকে সায়ানের পাশে সহ্য করতে।আমার ভিতরটা পুড়ে যাচ্ছে আরুশি,আমি বাঁচবো না তোমাকে না পেলে,আমি যে তিলে তিলে মরে যাবো।আমি বাঁচবো না।

আয়ানের কথাগুলো আরুশির চোখেও জল ভরে দিলো,তবে তা বয়ে পরার আগেই মুছে নিলো আয়ানের অগোচরে, তারপর আয়ানকে ছাড়িয়ে ওর চোখের জ্বল মুছে দিয়ে শক্ত ভঙ্গিতে বললো।

কেনো দূর্বল পরছেন আপনি?আপনার মতো শক্ত আর গম্ভীর মানুষকে এই কান্না এমন কারো জন্য দূর্বল হয়ে পরা শোভা দেয় না,দেখেন সবসময় তো তা জরুরি না যে, যে যা চাইবে তা সে পেয়ে যাবে।দেখেন কেউ কাউকে ছাড়া মরে না,শুধু বাঁচা মুশকিল হয়ে পরতে পারে,তবে নিজে চাইলে সে বাঁচা সহজও করা যায় হয়তো তার জন্য অনেক অধ্যবসায় আর ধৈর্যের প্রয়োজন হয়।প্লিজ আপনি নিজেকে এভাবে শেষ করে দেবেন না।নিজেকে শক্ত রাখুন।

পারবো না আরুশি,যেখানে তুমিই আমার দূর্বলতা সেখানে শক্ত হওয়ার কথা ভাবাও দূরুহ।প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না।

জবাবে আরুশি আর কিছু বললো না উঠে ছোটে চলে গেলো সেখান থেকে।আয়ান ছুঁড়ে ফেলে দিলো খাবারের প্লেট।

বিকেল বেলায় আরুশি ছাঁদের এক প্রান্তে বসে গান তুলেছে আপন মনে,গান এমন একটা জিনিস যা লোক খুশিতেও গাইতে পারে আর কষ্টেও,আরুশিও যে আজ গানের মাধ্যমে পরিবেশে তার মনের ব্যাথানুভুতি প্রকাশ করছে।

ভালোবাসি না…….তবু বাধ্য,
মন মানে না………সেও ব্যার্থ।

মন আকাশে শুধু ধোঁয়াশা……..
আছি আলোর অপেক্ষায়,

দোটানায় দোটানায় দোটানায়…..
মন যায় চলে যায় দোটানায়।

দোটানায় দোটানায় দোটানায়…..
মন যায় চলে যায় দোটানায়।

গানটা গাওয়ার পর আরুশি বেশ খনিক সময় শান্ত ভঙ্গিতে পরিবেশ দ্বিধার করলো,অতঃপর উঠে দাঁড়ালো।মনে মনে নিয়ে নিয়েছে খুব বড় সিদ্ধান্ত। এটাই এখন একমাত্র যুক্তিযুক্ত পন্থা বলে মনে হচ্ছে আরুশির কাছে।এদিকে পরিবারের সবাই চিন্তিত বিষয়টা নিয়ে,সায়ানের হুট করে সুইসাইড করার চেষ্টা করা,আয়ানের হঠাৎ নিজেকে এভাবে বন্ধি করে নেওয়া কোনোটাই কারো বোধগম্যে আসছে না।সবারই মনে হচ্ছে হোক না হোক বিষয়টা আরুশিকে নিয়ে,নিধী যে সন্দেহ করেছিলো তাই এখন সত্যতেও আন্দাজ করতে পারছে,তবে এমতাবস্থায় উনাদের কি করণীয় তা কেউ ভেবে পাচ্ছে না।

এদিকে আরোহী বড় কিছু প্লান করে নিয়েছে,আয়ানকে পাওয়ার জন্য ও যেকোনো কিছু করতে পারে।তবে একা ও কিছুই করতে পারবে না তেমন ভালোয় জানে সে।তাই সুইটিকেও সামিল করেছে এসবে,যেহেতু সুইটিরও সায়ানকে চাই।ওরা দুজন বড় কিছু ভেবে নিয়েছে,আজ রাতেই আরুশির একটা ব্যবস্থা করবে দুজন।

রাত ৩ টা,বাড়ির সবাই গভীর ঘুমে,আরুশি এই সুযোগটা কাজে লাগাবে আজ,সামনাসামনি কাউকে বলে চলে যাওয়ার মতো ক্ষমতা নেই ওর তাই লুকিয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে আজ সে।আয়ান সায়ানের রুমে নতুন করে যাওয়ার কোনো মানসিকতা নেই আরুশির,লুকিয়ে দাদা দাদী আর বাবা মায়েদের রুমে ঢুকে তাদের পায়ে সালাম করে দোয়া নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো চোখের জল ফেলে,যায়ান যাকে নিজের ছোটো ভাইয়ের মতোই দেখেছে তার রুমেও ঢুকতে চেয়েছিলো ওকে একবার দেখে যাওয়ার জন্য,তবে ওর রুম ভিতর দিক দিয়ে বন্ধ থাকায় তা আর করে উঠতে পারে নি আরুশি।এবার সারা ঘর শেষবারের মতো একবার দেখে নিলো আরুশি,অল্প কয়েকদিনে এই বাড়ির সাথেও যে কতো ভালোবাসার সম্পর্ক জড়িয়ে গেছে আরুশির।আরুশি সাথে আলাদা কিছুই নেয় নি শুধু নিজের নিয়ে আসা জিনিস নিয়ে ঘর থেকে বেরুতে যাবে তখনি কেউ একজন পিছন থেকে ওর নাকে রুমাল চেঁপে ধরলো। নিজেকে ছাড়াতে গিয়েও অল্পক্ষণে অজ্ঞান হলো আরুশি।
সুইটি আরোহীকে বলতে লাগলো।

এবার এই ফকিন্নিকে কি করবো বলো তো আরোহী?একে তো শুধু অজ্ঞান করলে আমাদের কাজ হবে না,তবে এর খুন করবো কিভাবে?

আরে আমাদের কিছু করতে হবে না, এই বাড়ির একদম পিছনে একটা স্টোর রুম আছে যেখানে কাউকে তেমন আসা যাওয়া করতে দেখি না,ওই রুমে এখন কিছু আর রাখা হয় না তাই,এজন্য ভাবছি একে ওখানে বন্ধ করবো,চৌধুরী বাড়ির রুমগুলোর ব্যাপারে তো তুমি জানোই ,সব রুম এভাবে বানানো যাতে ভিতরের আওয়াজ বাইরে না আসে সে হিসেবে এই ফকিন্নি ভিতরে যতোই চেঁচামেচি করুক না কেনো এর আওয়াজ বাইরে আসবে না আর এ না খেয়ে দেয়ে ওখানেই পঁচে মরবে আর এভাবে দোষটাও কোনো মতে আমাদের ঘাড়ে আসার চান্স নাই।

হুম তুমি ঠিকই বলেছো,আর তাছাড়া সায়ান বলেছিলো এর শ্বাসকষ্ট,তাই ইনহেলার ব্যতীত এ বেশিক্ষণ এমনিতেই বাঁচবে না বন্ধ ঘরে।চলো এবার একে টেনে বদ্ধ কুটিরে নিয়ে যাই।হা হা হা।

চলো চলো হা হা।

আরোহী সুইটি আরুশিকে স্টোররুমে বন্ধ করে আরুশির প্যাক করা ব্যাগ সরিয়ে ফেলে যাতে সবাই মনে করে ও চলে গেছে।

চলবে……….

#দোটানা ২
#লেখিকা_আরোহী_নুর
#পর্ব_৩০

সাত সকালে ঘুম ভাঙলো সায়ানের,বর্তমানে সে সম্পূর্ণ সুস্থ,ফ্রেস হয়ে বেড়িয়ে এলো ওয়াসরুম থেকে তখন নিজের টেবিলের একটা গ্লাসের নিচে একটা কাগজ পেলো ভাজ করা,কাগজটা খুলে দেখলো ওটা আরুশির লিখে যাওয়া একটা চিঠি।

সায়ান,

সবকিছুর সমাধান যেমন প্রাণ দিয়ে হয় না তেমন জোর করে ভালোবাসাটাও আদায় করা যায় না।আমি তোমাকে ভালোবাসি না সায়ান,তবে এখন ঘৃণাও করি না।ক্ষমা করে দিয়েছি আমি তোমায়,কিন্তু আমার মনে তুমি যে জায়গায় ছিলে তা হারিয়ে গেছো,সেই জায়গাটা আমি চাইলেও তোমায় আর ফিরিয়ে দিতে পারবো না।তোমার জন্য ঘৃণা এতো পরিমাণ বেড়ে গেছিলো যে তা ভালোবাসাটাকেও শেষ করে দিয়েছে।তুমি তো আমার ভালোবাসা জোর করে আদায় করেছিলো,তোমার আমার পিছন পরা আমার ভালো লাগতো আর তোমার পাগলামোতে তোমাকে ভালোবাসতে বাধ্য হয়েছিলাম আমি,তবে তাকে হয়তো ভালোবাসাও বলা চলে না সায়ান,কারন জোরাজোরির সম্পর্কে একটা টান সৃষ্টি হতেই পারে তবে ভালোবাসা যে জোরাজোরির কোনো সম্পর্ক নয়,ভালোবাসা তো মুক্ত বিহঙ্গের মতো যাতে কখনোই কোনো জোর চলে না।তাই জোর করে তুমি আমার মনের একটা টান আদায় করে নিলেও ভালোবাসা আদায় করতে পারো নি তা আমি তুমি আমাকে ছেড়ে দেওয়ার পর বুঝতে সক্ষম হয়েছি।আমি তোমায় ভালোবাসি না সায়ান,আর এখন তো আর তোমাকে ভালোবাসাটা সম্ভবও নয় আমার পক্ষে কারন আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি,আমার এই মুক্ত মন আর কারো জোরাজোরিতে থাকতে চায় নি বরং সঠিক একজন মানুষের ধারপ্রান্ত নিতে চায়,তার বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় নিজে থেকে,তবে আমি যে তাতেও ব্যার্থ।প্লিজ তুমি নিজের সাথে খারাপ কিছু করো না সায়ান,জীবন অনেক সুন্দর, তোমার মা-বাবা পরিবার তোমায় খুব ভালোবাসেন আর তুমি শুধু একটা মেয়ের ভালোবাসার কাছে ব্যার্থ হওয়ায় ওই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার মানুষগুলোকে কষ্ট দিবে?এমনটা মোটেও ঠিক না সায়ান,আমি চলে যাচ্ছি অনেক দূরে,ভালো থেকো সবসময় দোয়া করি।আর যদি আমাকে সত্যিই ভালোবেসে থাকো তবে কখনো আর আত্নহত্যা করার কথা দ্বিতীয়বার ভেবো না দয়া করে।

আরুশি……..

একই ঘটনা আয়ানের সাথেও ঘটলো।আয়ানের সারারাত ঘুম না হলেও শেষ রাতে একটু চোখ লেগেছিলো তবে খুব ভোরেই আবার ঘুম ভেঙে গেলো।তখন ফ্রেস হয়ে এসে টেবিলের এক কোনে একটা চিঠি পেলো।এই চিঠিতে লিখা।

মি.স্যার……. অহ সরি মি.এ্যরোগেন্ট,
আপনাকে না ওই এ্যরোগেন্ট রূপেই যথেষ্ট মানায়,ঘুমরো হনুমানের মতো সারাদিন যে বসে থাকেন তেমনই।এই কান্না,কারো জন্য দূর্বল হয়ে পরা,কাজ কর্ম ছেড়ে কাবির সিং হয়ে ঘুরে বেড়ানো একদম শোভা দেয় না আপনাকে।মোটেও কাঁদবেন না কখনো,আপনাকে একদম ভালো দেখায় না কাঁদলে, তাই বলে দিলাম কাঁদবেন না।আর আরেকটা কথা জানতে চেয়েছিলেন না যে আমি আপনার জীবনে আসতে চাই কি না,তবে জবাবটা হলো এই যে আমিও আপনাকে ভালোবাসি,আপনার সাথে জীবনের বাকি অংশ পার করতে চাই,আপনার জীবনের সাথে নিজের জীবন জরিয়ে নিতে চাই।তবে তা মোটেও সম্ভব নয়।আমি এখানে এসেছিলাম শুধু সায়ানের থেকে নিজের প্রতিশোধ নিতে তবে এখানে এসে নিজের মনটাও হারাবো জানতাম না।কিন্তু চাইলেও আমি আপনার সাথে থাকতে পারবো না স্যার।কারন সায়ানও আমায় ভালোবাসে আর আমার আপনার সাথে থাকা মানে ওকে ব্যাথায় সারাজীবন পোড়ানো,আর আমি কখনো চাইবো না আমার জন্য আপনারা ভাইয়েদের সম্পর্ক আরও খারাপ হোক,পরিবারে অশান্তি নামুক,সায়ান নিজের জীবন শেষ করে দেক,তাই আমি সবার কাছ থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছি। ভালো থাকবেন।আর ভালো একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করে নিবেন,এটা মনে রাখবেন কারো জন্য জীবন আটকে থাকে না তাই কারো অপেক্ষায় জীবনে না এগুনোর চিন্তাটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না ।বয়স তো আর কম হচ্ছে না মি.এ্যারোগেন্ট,বিয়েটা করেই নিবেন আশা করি।চলি….

আপনার আরুশি……

চিঠিগুলো পরার পর দুই ভাই নিজেদের আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না।দুজনই ছোটে গেলো আরুশির রুমে আরুশি আরুশি বলে,দুজন প্রায় একসাথেই আরুশির রুমে ঢুকলো,সায়ান একটু আগে আসলে আয়ান ওর একটু পরে আসলো কারন চিঠিটা ও দেরিতে হাতে পেয়েছিলো,এসে দেখলো সায়ান আরুশির বেডে মাথা নিচু করে বসে আছে হাতে চিঠি, চোখ দিয়ে পানি গড়াচ্ছে তার,আয়ান আশেপাশে চোখ হাঁটালো,আরুশি কোথাও নেই,রুমটা ফাঁকা,হঠাৎই আয়ানের চোখ গেলো আরুশির বিছানার এক পাশে সেখানে একটা মহিলার ছবি রাখা,দূর থেকে মহিলাটিকে অনেকটা চেনা মনে হলে কৌতুহলবশত ছবিটার পাশে গেলো,ছবিটা হাতে নিয়ে তাতে চোখ বুলিয়ে হতবাক হলো আয়ান।আচমকা কন্ঠে বলে উঠলো।

রুবিনা খালা!

নামটা শুনে সায়ানও বিচলিত হয়ে মাথা উঠালে আয়ানের হাতে ছবিটা দেখতে পেলো,উঠে গিয়ে ছবিটা হাতে নিয়ে চমকালো সায়ানও।রুবিনা খালার ছবি আরুশির রুমে কি করছে?আয়ান সায়ান একে ওপরের দিকে অবাকত্ব নিয়ে তাকালো।

রুবিনা খালার ছবি আরুশির রুমে কি করে সায়ান?

আমারও তো একই প্রশ্ন আয়ান,রুবিনা খালার ছবি এখানে কি করে আসলো?তারমানে কি আরুশিই আমাদের আরুশি।আমার খুব ভালো করে মনে আছে আরুশি আমাকে একবার নিজের মায়ের নাম রুবিনা বলেছিলো।তবে আমি তা নিয়ে তেমনভাবে ভাবি নি।

হ্যাঁ আরুশির সব সার্টিফিকেটে মায়ের স্থানে রুবিনা খাতুন লিখা,তবে আমিও তা নিয়ে অন্যভাবে ভাবি নি।তারমানে আরুশি আমাদের হারিয়ে যাওয়া আরুশি।

আয়ান সায়ানের বলা কথাগুলো স্পষ্ট কানে যায় নিধীর,ও তখন আরুশিকে ডাকতে ওর কক্ষে এসেছিলো কিন্তু এসে এমন কিছু শুনবে তা ওর জানা ছিলো কই।কথাটা শুনে আঁতকে উঠলো নিধী।

আরুশি,ও আমার আরুশি।আমার আরুশি কোথায়?ওর রুম ফাঁকা কেনো?ও সত্যিই আমার আরুশি তাই না।চোখ দিয়ে অজোরে পানি পরতে শুরু হয়েছে নিধীর,এতোদিন পর হারিয়ে যাওয়া মেয়ের খবর পেয়ে পাগলপ্রায় অবস্থা ওর,বিচলিত হয়ে আয়ানের কাছে এসে ছবিটা হাতে নেয়,এইতো সেই রুবিনা যে তার কলিজার টুকরোকে নিয়ে পালিয়েছিলো।

উনিশ বছর আগে যখন আরুশির বয়স ছয় তখন বাড়িতে আয়ান সায়ান আর আরুশিকে বিদেশ পাঠিয়ে পড়ালেখা করানোর কথা বার্তা চলছিলো।তবে তারা যথেষ্ট বড় হলে পাঠানো হবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আর আরুশিকে নিধী নিজে থেকে দূরে কোথাও পাঠাবে না বলেই দিয়েছিলো।আরুশি দেশে থেকেই পড়ালেখা করবে,নিজের একমাত্র মেয়েকে নিজের থেকে কোথাও দূর করতে চাই নি নিধী।তবে এতো কিছু বাড়ির কাজের লোকেরা জানতো না,ওরা জানতো যে ওদের তিনজনকেই বিদেশ পাঠানো হবে হয়তো,রুবিনা খালাও এই বাড়িতেই কাজ করতেন।হাশেম ড্রাইবার এর স্ত্রী ছিলো সে,সেও ওদের বাড়ির ড্রাইবার ছিলো।তবে বেশ কয়েকদিন যাবত হাশেম রুবিনার সম্পর্ক ভালো চলছিলো না।হাশেম পরকীয়ায় জরিয়ে গেছিলো,কারনবশত অনেক জগড়া ঝাটির পর হাশেম রুবিনাকে জোর করে তালাক দিয়ে অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করে। কথাটা নিহান নিরবের কানে গেলে উনারা হাশেমকে কাজ থেকে বের করে দেন আর রুবিনার সম্পূর্ণ দায়ভার তারা নেয়।রুবিনা আরুশির জন্মের আগ থেকেই এই বাড়িতে কাজ করতো,আরুশির জন্মের পর থেকেই রুবিনার সাথে তার আলাদা এক সম্পর্ক গড়ে উঠে।রুবিনা কখনো মা হতে পারবে না আর স্বামীর সাথে দন্দের একমাত্র কারন ছিলো রুবিনার মা না হওয়া,আরুশির পরিচর্যায় রুবিনা নিধীর মতোই কখনো কোনো কমতি রাখতো না।আরুশিকে নিজের মেয়ের মতোই মনে করতো।ধীরে ধীরে আরুশির প্রতি রুবিনার টান বাড়তেই থাকে,স্বামী চলে যাওয়ার পর সে টান আরও বেড়ে যায়।আরুশির প্রতি একপ্রকার আসক্ত হয় সে।আর যখন শুনে আরুশিকে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হবে তখন ওর মন ঘাবড়ে উঠে।আরুশিকে হারানোর ভয় হতে থাকে তার।ভয়টা ধীরে ধীরে এমন দিকে গড়াতে থাকে যেনো সকল সৎ জ্ঞান বিলুপ্তি পায় রুবিনার।মাথায় শুধু ঘুরতে থাকে আরুশিকে বুকে আগলে রেখে বেঁচে থাকার আকাঙ্খা। তাই আর দুদিক বিবেচনায় নেই নি সে।
একদিন আরুশি আয়ান সায়ানের সাথেই খেলছিলো,তখন আয়ান সায়ানের মধ্যে ঝগড়া বাধে আরুশি কার সাথে খেলবে তা নিয়ে,আয়ান বলে তার সাথে তো সায়ান বলে তার সাথে অতঃপর আরুশি বিরক্ত হয়ে কারো সাথে খেলবে না বলে লুকিয়ে পরে বাড়ির পিছন দিকে সে সুযোগ কাজে লাগায় রুবিনা,আরুশিকে অনেকগুলো চকলেট দিবে বলে নিজের সাথে করে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়,গার্ডরাও এতে মাথা তেমন ঘামায় নি যেহেতু বাড়ির কাজের লোক।কিন্তু সেদিন আর আরুশিকে নিয়ে ফিরে আসে নি রুবিনা।চলে যায় অনেক দূরে।আরুশির খোঁজ না পেলে বাড়ির সিসি ক্যামেরা আর গার্ডদের থেকে রুবিনার কথা জানা যায়। তবে রুবিনার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।রুবিনা হাশেমের সাথে পালিয়ে এসেছিলো,হাশেমের গ্রামের বাড়ির ঠিকানা পাওয়া গেলেও রুবিনার বাবার বাড়ি বা কোনো আত্মীয়ের খোঁজ পাওয়া যায় নি।পুলিশ আর বাবারা মিলে অনেক খোঁজ নেওয়ার পরও আরুশির খোঁজ মিলে নি।১৯ বছর ধরেই ওদের খোঁজ জারি আছে,তবে রুবিনা তখন আরুশিকে নিয়ে ওর একমাত্র ভাইয়ের বাড়িতেই উঠে।ওর ভাই ছোটো একটা গ্রামে পরিবার নিয়ে বাস করতেন।আরুশিকে নিয়ে সেখানেই উঠে রুবিনা।বোন পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে যেহেতু ভাই কোনো খোঁজ নেন নি সে হিসেবে রুবিনার আরুশিকে নিজের মেয়ে বলে দাবি করতে কোনো সংকোচ হলো না।এদিকে আরুশিকে ভুলিয়ে ভালিয়ে রুবিনা সবকিছু ওর মোতাবেক করিয়ে নিয়েছিলো।আরুশি মা বাবার কাছে আসার আবদার করলেও রুবিনা ওকে সে আবদারগুলো কখনো কারো সামনে করতে দেয় নি না তো সত্যতা বলতে দিয়েছে।আস্তে আস্তে আরুশি নিজের মা বাবাকে ভুলে রুবিনাকেই নিজের মা মানতে শুরু করে যেহেতু ও অনেক ছোটো ছিলো,রুবিনা কখনো আরুশিকে কোনো ছবিও উঠতে দেয় নি যদি আরুশিকে ওর পরিচিত কেউ দেখে ফেলে সে ভয়ে।মানুষের ঘরে কাজ করে মা মেয়ের ভরণ পোষন করতো রুবিনা তবুও কথা শুনতে হতো ভাবির,কোনো কথা তবে গায়ে মাখতো না সে।

বর্তমানে নিধী আরুশিকে না পেয়ে পাগলের মতো চিৎকার করছে,এতোসময়ে সবার কাছে বিষয়টা জানাজানি হয়ে গেছে।আয়ান সায়ান আর নিরব বেড়িয়েছে আরুশির খোঁজে, নিহান কথা আর বাকিরা মিলে নিধীকে সামালছে।নিধী পাগলের মতো কান্না করছে।

আমার মেয়েকে এনে দাও তোমরা।আমি আমার মেয়েকে চাই।

শান্ত হও নিধী আয়ান সায়ান আর ভাইয়া ওকে খুঁজতে বেড়িয়েছেন,তুমি দেখো ঠিকই ওকে খুঁজে পেয়ে যাবো আমরা।

কিভাবে খুঁজে পেয়ে যাবো আমরা?কিভাবে? ১৯ বছর খোঁজার পরও তো তুমি কিছু করতে পারো নি,অবশেষে আমার মেয়েটাকে আল্লাহ আমার কাছে ঠিকই পাঠিয়েছিলেন তবে আজ আবারও এই তোমার জন্যই আমি আমার মেয়েকে হারিয়ে ফেললাম।কতো করে বলেছিলাম ডিএনএ টেস্ট করাতে তবে তুমি তা মানলে কই।চলে গেলো না আমার মেয়েটা।চলে গেলো না।আবারও বুক খালি হয়ে গেলো আমার।আল্লাহ আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দাও নয়তো আমার প্রাণ নিয়ে নাও মালিক,আমি আর বাঁচতে চাই না আমার কলিজার টুকরোকে ছাড়া।

নিধী ও তো শুধু তোমার মেয়ে না আমারও মেয়ে,ওকে হারানোর যন্ত্রণা আমার বুকেও সমান।ভেঙে পরো না,আল্লাহ ঠিকই আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকাবেন।

নিধীকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে কথাগুলো বললে নিধীও ব্যাকুল হয়ে জড়িয়ে ধরে নিহানকে আর শব্দ করে কাঁদতে থাকে।নিধীরও যে শান্তির একমাত্র ঠাই নিহানের বুকেই।

হঠাৎই একজন কাজের লোক সেই স্টোররুমের দিকে গেলো, লোকটা নিজেরই কিছু জিনিস সেখানে রেখেছিলো তাই ওগুলো আনতে গিয়েছিলো,তখন স্টোররুমের দরজা খুলে আরুশিকে সেখানে পরে থাকতে দেখে চিৎকার করে উঠে সে।আরুশির এখনও জ্ঞান ফিরে নি।রাতে যেমনটা আরোহী সুইটি ওকে ফেলে রেখে গেছিলো ঠিক সেভাবেই পরে আছে এখনও,সবাই এসে ওকে পেয়ে সস্তির নিশ্বাস ফিরে পেলো।নিধী নিহান নিজেদের প্রাণ ফিরে পেলো।আরুশিকে উঠিয়ে নিয়ে তার জ্ঞান ফিরানো হলো,ডাক্তার এসে ওর চেক আপ করে বলে গেলেন ও একদম ঠিক আছে।ছবিটা সম্পর্কে আরুশিকে জিজ্ঞেস করলে ও বললো এটা ওর মায়ের ছবি ,তখন আরুশি ভুলবশত রুবিনার ছবি ওর বিছানায় রেখে গেছিলো।অতঃপর নিধী আরুশিকে সবকিছু খুলে বললো,নিধীর কথাগুলো শুনে আরুশির বিশ্বাসই হচ্ছিল না তখন সেই ১৯ বছর আগের সিসিটিভি ফুটেজ ওকে দেখানো হয় যা তারা সংরক্ষণ করে রেখেছিলো নিজেদের কাছে,তাছাড়া আরুশির ছোটোবেলার সাথে সম্পর্কিত কিছু জিনিসপত্র আর ঘটনার সাথে আরুশির আবারও পরিচয় করালে তার অনেক কিছুই মনে পরলো,বিশেষ করে আয়ান সায়ানের ওকে নিয়ে ঝগড়া করা।ওর বাবা মায়ের ওর প্রতি ভালোবাসা,কাটানো সুন্দর মুহুর্তগুলো।তৎক্ষনাৎ বাবা মা বলে নিধী নিহানকে জড়িয়ে ধরলো আরুশি।

এদিকে ফোন করে নিরব সায়ানকে সবকিছু খুলে বলা হলে ওরাও ছোটে আসে বাড়িতে।সায়ান এসেই আরুশিকে ঝাপটে ধরে তার হালচাল জিজ্ঞেস করতে শুরু করে।আরুশি ওকে ছাড়িয়ে স্বাভাবিক ভাবে বলে ও ঠিক আছে।তখন রাতের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আরুশি জানায় পিছন থেকে কেউ ওর মুখে কিছু চেঁপে ধরলে সে জ্ঞান হারায় তবে ও কাউকে দেখে নি।সেই আলোকে ঘরের হল রুমের সিসিটিভি ফুটেজ চালু করলে উক্ত মুহুর্তে আরোহী সুইটির সকল কার্যক্রম দেখা যায়।অতঃপর রুক্ত চড়ে সায়ানের মাথায় সাথে বাকি সবারও।তারপর সুইটি আর আরোহীকে প্রমাণ সহিত পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে আসে সায়ান নিরব নিহান।ওদের উপর এক্সট্রা চার্জ লাগায় তারা যাতে প্রচেষ্টা সায়ানেরই বেশি ছিলো।সুইটি আরোহী যাতে জেল থেকে বের না হতে পারে সব ব্যবস্থা করে নিয়েছে তারা।

এদিকে আয়ান ঝরের বেগে গাড়ি ছোটাচ্ছে কোথাও যদি তার বাঁচার সম্ভাবনা খুঁজে পায়।আরুশির চিন্তায় ভুলবশত ফোন বাড়িতে রেখে এসেছে তাই কেউ যোগাযোগ করতে পারছে না ওর সাথে,এদিকে আরুশির চেহারা বার বার ভেসে উঠছে আয়ানের কান্নায় ভরে উঠা ঝাপসা চোখে।কোনোরুপ চোখ মুছে মুছে ড্রাইব করছে সে।মনে উঠছে বার বার আরুশির বলা কথাগুলো,আরুশি ওকে ভালোবাসে তবে তার সাথে থাকবে না আর আরুশি,ওকে ছেড়ে চলে গেছে আরুশি,মনে ধরা দিয়েছে ভয় যদি আর আরুশিকে খুঁজে না পায় তবে কি সে বাঁচতে পারবে।উক্ত চিন্তা যেনো আয়ানের বাঁচার আশাই কমিয়ে দিলো,হাত পা কেমন স্থির হতে শুরু করলো তার,জলে চোখগুলো অনেকটা ঝাপসা হয়ে উঠেছে হাতগুলো তা মুছতেও এবার আর সায় দিয়ে উঠছে না।ঝাপসা হয়ে আসা চোখে বেশ দূর থেকে একটা ট্রাক এগিয়ে আসতে দেখতে পাচ্ছে আয়ান তবে কেনো যেনো হাতে শক্তি পাচ্ছে না নিজেকে বাঁচিয়ে নেওয়ার।অবশেষে ট্রাকটা তার অনেক কাছে চলে আসে আর প্রবল ধাক্কায় আয়ানের গাড়ি ছিটকে ফেলে দেয়।

রক্তাক্ত অবস্থায় গাড়ির ভিতর পরে আছে আয়ান,নিভে যাওয়া চোখে ভেসে উঠছে আরুশির সাথে কাটানো মুহুর্তগুলো,কাঁপতে থাকা কন্ঠে শুধু নাম নিলো আরুশির অতঃপর জ্ঞান হারালো।

চলবে………