না_চাইলেও_তুমি_আমার পর্ব-১৪

0
2682

#না_চাইলেও_তুমি_আমার
পর্বঃ ১৪
জাহান আরা

রুমে ঢুকতেই নিশানের চোখ গেলো বিছানার উপর,তারপর ফ্লোরে,তারপর নিষাদ আর চন্দ্রর উপর।
সবকিছু দেখে নিশানের মন খুশি হয়ে গেলো,চন্দ্র কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে তাকে দেখে।
মনে মনে হাসলো নিশান,তারপর রুম থেকে বের হয়ে গেলো মুচকি হাসি দিয়ে।

নিশান বের হতেই লিমন রুমের দরজা ভিতর থেকে আটকে দিলো।তারপর শুভ আর পলাশ মিলে হৈহৈ করে চেঁচিয়ে উঠে নিষাদ কে উপরে তুলে নিয়ে ঘুরতে লাগলো।
সবার অনবরত কথা,চিৎকারে,এরকম উল্লাসে চন্দ্র খানিকটা হকচকিয়ে গেলো।
এরা এরকম করছে কেনো বুঝতে পারছে না চন্দ্র।

বুঝতে পারলো কিছুক্ষণ পরেই যখন দেখলো সবাই নিষাদ কে নিচে নামিয়ে কোলাকুলি করছে আর কংগ্রাচুলেশনস জানাচ্ছে।
লজ্জায় চন্দ্র লাল হয়ে গেলো।

ময়ুখ জিজ্ঞেস করে,”দোস্ত,পারছস তো ঠিকমতো?”

“আরে আমি যে ভিডিও দিছি,ওগুলো দেখলে এমনিই পারবে।” বলেই পলাশ হেসে দেয়।

“আরে না,ফার্স্ট টাইম খুব বেশি পারবে না।” ময়ুখ প্রতিবাদ জানায়।

“কে বলছে পারবে না,অবশ্যই পারবে।” শুভ সাপোর্ট করে পলাশ কে।

“না,পারবে না,তুই কি বেশি জানস আমার চাইতে?” এবার লিমন ময়ুখ কে সাপোর্ট করে।

“না,তুই তো বেশি জানস….”

চন্দ্র যে একটা মেয়ে এখানে বসে আছে সেদিকে ওদের কারো খেয়াল নেই,চন্দ্রর ইচ্ছে করছে মাটি তে মিশে যেতে লজ্জায়,এরা এতো নির্লজ্জ কেনো!
একজন রাতে বউয়ের সাথে কি করেছে না করেছে তা নিয়ে ঝগড়াঝাটি শুরু করে দিছে ওরা নিজেরা নিজেরা।
হায়রে বন্ধুত্ব!

লজ্জা পেলেও চন্দ্রর ভীষণ ভালো লাগে ওদের বন্ডিং দেখে।

নিষাদ কিছুক্ষণ চুপ করে বন্ধুদের তামাশা দেখে,ঝগড়া করতে করতে ওরা একপর্যায়ে হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়।
একপর্যায়ে নিষাদ উঠে দাঁড়ায়,তারপর ওয়ারড্রব খুলে নিজের হকিস্টিক বের করে।বিসমিল্লাহ বলে সমানে পেটাতে শুরু করে আর বলে,”শালারা বেহায়া,বেশরমের দল,দেখছস আমার বউ বসে আছে এখানে,তোরা শুরু করছস কার সক্ষমতা কতো সেসব আলোচনা,বউ আমার,কি হইছে না হইছে তা আমার ব্যাপার,তোদের কে বলছে রাতে এসব ভিডিও দিতে আমাকে,কে বলছে এখানে এসব কথা তুলতে।”

কি হচ্ছে কেউ-ই বুঝতে পারে না প্রথমে,যখন বুঝে নিষাদ সবাইকে এলোপাথাড়ি মারতেছে,সবাই ভাবী বাঁচান বলে চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে বিছানা থেকে নেমে গিয়ে চন্দ্রর পাশে বসে,কেউ ফ্লোরে বসে।

হাত থেকে হকিস্টিক ফেলে দিয়ে,নিষাদ বিছানা থেকে নেমে গিয়ে চন্দ্রর হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় রুম থেকে,রুম থেকে বের হতেই তুরাগের সামনে পড়ে যায়।
তুরাগ কে দেখে চন্দ্রর ভীষণ ভয় হয়,এই লোকটা গতরাতে তার কতো বড় সর্বনাশ করতে চেয়েছিলো।
ভয়ে চন্দ্র নিষাদের হাত ছেড়ে দিয়ে নিষাদের পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়।

নিষাদের মাথায় রক্ত উঠে যায় তুরাগ কে দেখে,চন্দ্রকে রুমে যেতে বলে নিষাদ।এবার আর চন্দ্র নিষাদের অবাধ্য হয় না,বাধ্য মেয়ের মতো রুমে চলে যায়।
চন্দ্রকে রুমে দিয়ে নিষাদ রুম থেকে হকিস্টিক নিয়ে বের হয়।নিষাদকে এরকম রাগত ভাবে রুম থেকে বের হতে দেখে পলাশ,লিমন,শুভ,ময়ুখ ও বের হয়ে আসে পিছন পিছন।
তুরাগ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে,নিষাদ যে চন্দ্রর হাত ধরেছে সেটাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে তুরাগের।তাহলে কি নিষাদ চন্দ্রর সাথে ছিলো!

রুম থেকে বের হয়েই নিষাদ তুরাগের শার্টের কলার চেপে ধরে,তারপর পরই তলপেটে একটা লাথি বসায়।
আকস্মিক এই আক্রমণে তুরাগ হতভম্ব হয়ে যায়,লাথি খেয়েই ফ্লোরে পড়ে যায়।
নিষাদের বন্ধুরা কিছু বুঝতে না পেরে দৌড়ে এসে নিষাদ কে সরিয়ে নেয়,বারবার জিজ্ঞেস করে,কি হয়েছে,কেনো এরকম করছে নিষাদ।
নিষাদ শান্ত হতে পারে না,চিৎকার করে করে বলে তুরাগ গতরাতে কি করেছে।
নিষাদের কথা শেষ হতেই সবাই নিষাদ ‘কে ছেড়ে দিয়ে নিচে চলে যায়।
পেট চেপে ধরে ফ্লোরে শুয়ে আছে তুরাগ এখনো,উঠতে পারছে না।প্রচন্ড পেট ব্যথা করছে তুরাগের।

নিষাদ হকিস্টিক দিয়ে সমানে মারতে থাকে তুরাগ কে,তুরাগের চিৎকার শুনে সবাই ছুটে আসে। নিষাদ কে সরানোর চেষ্টা করে,কিন্তু পারে না কেউ।

চন্দ্র দরজার পাশে দাঁড়িয়ে ভয়ে কাঁপতে থাকে নিষাদের এই অগ্নিমূর্তি দেখে।
নিষাদ যে এতোটাই ক্ষেপে যাবে তা চন্দ্রর কল্পনাতেও ছিলো না।
চন্দ্র অবাক হয়,নিষাদ তাকে এতো ভালোবেসে ফেলেছে কবে!

নিশান সহ ৪-৫ জন মিলে নিষাদ কে টেনে সরিয়ে নিয়ে যায়,তখনই লিমন,পলাশ,শুভ,ময়ুখ উপরে আসে,হাতে মোটা ডাল নিয়ে।
নিষাদের থেকে তুরাগের এসব শোনার সাথে সাথে ৪জন দৌড়ে নিচে নেমে গেছে,বাবুর্চিরা রান্নার জন্য মোটা লাকড়ি এনেছে,সেখান থেকে ৪জন ৪টা ডাল নেয়।
নিষাদ কে সরিয়ে নিতেই তুরাগ ফ্লোর থেকে উঠতে যায়
তার আগেই বৃষ্টির মতো মার পড়তে থাকে তুরাগের গায়ে,নিষাদ ধাক্কা মেরে সবাইকে সরিয়ে দিয়ে এসে আবারও মারতে থাকে তুরাগ কে।নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয় তুরাগের,শেষ বার ও এরকম মার খেয়েছে বড় চাচা হাসনাত সাহেবের হাতে।

নিশান আটকায় না নিষাদ কে,অন্যকেউ ও আর আটকানোর সাহস পায় না।সবাই ভীত চোখে দেখছে।
তুরাগের মা একপাশে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে,কেউ কান দেয় না।

নিশান এদিক ওদিক তাকিয়ে চন্দ্রকে দেখতে পায় দরজার পাশে দাঁড়ানো।
চন্দ্রকে রুমে ঢুকতে বলে নিশান।
চন্দ্র কাঁপতে কাঁপতে রুমে ঢুকে।

চন্দ্রর ভীত মুখের দিকে তাকিয়ে নিশান কিছু জিজ্ঞেস করবে না ভাবে,কিন্তু ঘটনা কি ঘটেছে তা না জেনে স্বস্তি পাচ্ছে না দেখে জিজ্ঞেস করেই ফেলে,”নিষাদ তুরাগ কে কেনো এরকম মারছে চন্দ্র,তুরাগ কি তোমার সাথে কোনো অসভ্যতা করেছে?”

চন্দ্র শিউরে উঠে,জল এতোদূর গড়াবে তা ভাবনাতেও ছিলো না চন্দ্রর,ভয়ে কথা আসে না গলা দিয়ে।

চন্দ্রকে চুপ থাকতে দেখে নিশান অনেকটা সাহস দেওয়ার ভঙ্গিতে বলে,”চন্দ্র,আমাকে ভয় পেও না,আমি তোমারও ভাই,তোমার বোনের হাজব্যান্ড,তুমি আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী।”

ছোট ভাইয়ের স্ত্রী কথাটা শুনে চন্দ্রর মুখ আরো ফ্যাকাসে হয়ে যায়। তারমানে নিষাদ নিশান ভাইকে ও বলে দিয়েছে!
উনি যদি আপাকে বলে দেয়?
আপাকে তো বলবেই উনি,আর আপা বাসায় জানাবে।
ভাবতেই চন্দ্রর গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়,কি হবে তার এবার?
কোন কুক্ষণে সে কাজী অফিস গেলো!

চন্দ্রর মনে কি চলছে নিশান বুঝতে পারে,তাই আবারও বলে,”ভয় পেতে হবে না তোমায়,তোমার আপা বা অন্য কেউ কখনোই জানবে না তোমাদের বিয়ের কথা।খুব শীঘ্রই আমি তোমাদের বাসায় প্রস্তাব পাঠাবো,কেউ কখনো জানবে না তোমাদের বিয়ে আগেই হয়েছে। এবার আমাকে বলো তুরাগ কি করেছে? ”

নিশানের কথা শুনে স্বস্তি পায় চন্দ্র,তারপর সব বলে নিশান কে। শুনতে শুনতে নিশানের চোয়াল শক্ত হয়ে যায়,নিশান বুঝতে পারে গতরাতে তাহলে কিছুই হয় নি,নিজের ভাইকে চেনে নিশান।চন্দ্রর অনুমতি ছাড়া কিছুই করবে না।
দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে নিজেদের রুমে যায়,বের করে আনে একটা মোটা ডান্ডা।
তারপর এসে যোগ দেয় নিষাদদের সাথে।

চন্দ্রর ভয়ে কলিজা শুঁকিয়ে গেছে,প্রচন্ড পানি পিপাসা পেয়েছে,নিজের চোখে এরকম করে কাউকে মার খেতে দেখে নি চন্দ্র,ভায়োলেন্স চন্দ্রর সহ্য হয় না,মারামারি,রক্তপাত দেখলে অসুস্থ হয়ে পড়ে তাই,অথচ আজ নিজের চোখের সামনেই দেখছে কেউ একজন মার খাচ্ছে তাও তার নিজের জন্য,পুরো শরীর কাঁপতে থাকে চন্দ্রর।

রাত্রি নিচে শ্বশুর শাশুড়ির রুমে বসে আছে,উপর থেকে চিৎকার চেচামেচি শুনছে অনেকক্ষণ ধরেই।রাত্রির শ্বশুর হাসনাত সাহেব আমলে নিচ্ছেন না সেসব।
রাত্রির কেমন ভয় হচ্ছে,কি হচ্ছে একবার যদি দেখে আসতে পারতো,কিন্তু লজ্জায় যেতে পারছে না শ্বশুর শাশুড়ির সামনে থেকে।
নির্লিপ্তভাবে চন্দ্রর শাশুড়ি মনোয়ারা পানের বাটা থেকে পান নিয়ে পান সাজিয়ে হাসনাত সাহেবের হাতে তুলে দেন।ওনারা যেনো কানে শুনে না এরকম লাগছে তাদের দেখে।

একটু পরেই ঝড়ের বেগে রুমে প্রবেশ করে তুরাগের মা,এই মহিলা কে দেখে রাত্রির রাগ হলো,এই মহিলা গতরাতে তাকে অনেকগুলো উল্টোপাল্টা প্রশ্ন করেছে।

তুরাগের মা এসেই কান্না শুরু করে,হাসনাত সাহেবের পায়ের কাছে বসেই বলে,”ভাইজান,ও ভাইজান আপনার পায়ে ধরি,আমার তুরাগকে আপনার ২ ছেলে মেরে ফেলতেছে পিটিয়ে,ভাইজান আপনি একটু ওদের থামান,আল্লাহর দোহাই লাগে একটু আসেন।”

রাত্রি চমকে উঠে এই কথা শুনে,নিশান মারামারি করছে উপরে!
সে কি একবার যাবে উপরে?
মন মানছে না রাত্রির,উঠে দাঁড়ায় উপরে যেতে।

রাত্রি উঠে দাঁড়াতেই হাসনাত সাহেব গমগমে গলায় বলে উঠে,”এখানে বসো বৌমা,তোমার ওসবে কান দিতে হবে না।”
তারপর তুরাগের মা তাহিরার দিকে তাকিয়ে বলে,”তুরাগ নিশ্চয় কোনো অপরাধ করেছে,আমার ছেলেদের আমি চিনি তাহিরা,বিনা কারণে কাউকে ফুলের টোকা দেওয়ার মানুষ ওরা না,আবার কেউ অন্যায় করলে তাকে ছেড়ে দেওয়ার মানুষ ও ওরা না,সে যতোই আপন হোক,তুমি বললে আমি অবশ্যই যাবো উপরে,কিন্তু ভেবে দেখো তুরাগের অপরাধের কথা শুনে হয়তো আমি আরো রেগে যাবো,কে জানে নিশান কে হয়তো বলে বসতে পারি থানায় নিয়ে যেতে তুরাগ কে।”

শ্বশুরের কথা শুনে রাত্রি ভীষণভাবে চমকায়,কেমন ঠান্ডা
গলায় উনি এই কথা বলছেন।ছেলেদের উপর এতোটাই বিশ্বাস ওনার যে গিয়ে দেখার ও প্রয়োজন মনে করলেন না উপরে!
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাত্রি।
এদের কে বুঝে উঠতে তার অনেক সময় লাগবে।

হাসনাত সাহেবের কথা শুনে তাহিরা বেগম চুপ করে গেলেন,রাত্রি বুঝতে পারলো তার শ্বশুরের কথার উপর আর কারো কথা চলবে না।মুহূর্তের জন্য রাত্রি হাসনাত সাহেবের মধ্যে নিজের বাবার ছায়া দেখতে পেলো যেনো।

তুরাগকে আধমরা করে ছাড়ে সবাই।তারপর ধরাধরি করে নিচে নামায়,তুরাগের সেন্স নেই ততক্ষণে আর।
হাসপাতালে নিয়ে যায় নিশান নিজেই।নিষাদ গিয়ে বাবার রুমে ঢুকে।
নিষাদের দিকে তাহিরা বেগম ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকায়।নিষাদ সেদিকে ফিরেও তাকায় না,সোজা গিয়ে বাবার পাশে বসে।
হাসনাত সাহেব আদুরে গলায় জিজ্ঞেস করে,”উপরে কি হয়েছে রে নিশা,তুরাগকে কেনো মেরেছিস ২ভাই মিলে,এখনো দুষ্টুমি করিস না-কি তোরা ২ভাই?
ভেরি ব্যাড নিশা,ইউ আর এ নটি বয়।”

রাত্রি আরো অবাক হয় হাসনাত সাহেবের কথা শুনে।তার ছেলেরা একজনকে মেরে এসেছে অথচ তিনি কেমন আদর করে কথা বলছেন তাদের সাথে।

নিষাদ উঠে কানেকানে তার বাবাকে কিছু বলে।শুনেই তিনি তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে।লাফিয়ে বিছানা থেকে নামে জিজ্ঞেস করে,” তুরাগ কই এখন,আমার লাঠি কই,জানোয়ারের এতো বড় সাহস!
চরিত্র আজও ঠিক করতে পারে নি,ওকে এবার আমি খুন করেই ফেলবো ”

“ভাইয়া তুরাগ কে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।”

“ও সুস্থ হয়ে ফিরে আসলে আমি ওকে আরেক দফায় পেটাবো,কালাম কে বল আমার লাঠি বের করতে।”

রাত্রি তাহিরা বেগমের দিকে তাকায়,তিনি কিছু বলছেন না আর।মনোয়ারা বেগমের থেকে পান নিয়ে বসে বসে পান চিবুচ্ছেন।
রাত্রির কেমন যেনো অদ্ভুত মনে হয় এদের সবাইকে। এই কোন পরিবারে আসলো সে!

নিশান ফিরে আসে আধঘন্টার মধ্যে,তারপর রাত্রিকে নিয়ে উপরে আসে।নিষাদ ও চলে যায় রুমে।
চন্দ্র কেমন কাঁপছে বসে বসে,রুম থেকে বাহিরে বের হওয়ার সাহস ও পাচ্ছে না।
নিষাদকে রুমে ঢুকতে দেখে আচমকা উঠে গিয়ে জড়িয়ে ধরে,তারপর হুহু করে কান্না শুরু করে নিষাদের বুকে,গোঙাতে গোঙাতে বলে,”কেনো এরকম করলেন আপনি,এতো মার মারলেন,আমার ভীষণ ভয় করছে,আপনি এতো হিংস্র হলেন কি করে।”

নিষাদের কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায় চন্দ্রকে বুকে পেয়ে,কোনো কথা না বলে চন্দ্রকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বুকে,চন্দ্র কান্না করতে থাকে নিষাদ বাঁধা দেয় না।যতো বেশি কান্না করে ততো লাভ নিষাদের সে জানে,বেশীক্ষণ এরকম জড়িয়ে ধরে রাখতে পারবে চন্দ্রকে সে।
চন্দ্রর চুলে নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ শুঁকে নিষাদ,কাঁদতে কাঁদতে নিষাদের টি-শার্ট ভিজিয়ে দেয় চন্দ্র।

ময়ুখ এসে রুমে ঢুকতেই চন্দ্র নিষাদ কে ছেড়ে ছিটকে সরে যায়,তারপর এক দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
চন্দ্র বের হয়ে যাওয়ার পর নিষাদ অগ্নি দৃষ্টিতে তাকায় ময়ুখের দিকে,চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,”শালা,দিলি তো এরকম একটা রোমান্টিক মোমেন্ট নষ্ট করে,প্রথমবারের মতো আমার বৌ আমাকে নিজ থেকে জড়িয়ে ধরলো আর তুই এসে কাবাবে হাড্ডি হয়ে গেলি,আসার আর সময় পেলি না?”

ময়ুখ ও উঁচু গলায় জবাব দেয়,”তুই শালা দরজা খোলা রেখে বউয়ের সাথে রোমান্স করতে গেলি ক্যান,আমাদের সিংগেলদের কষ্ট হয় না এসব দেখলে?”
তারপর দুজনেই হাহা করে হেসে উঠে।

চলবে…???