#নাহিদা ইসলাম
#পরিণীতা
#পর্ব ১৩
২৫.
পরিণীতা গাড়িতে ই ঘুমিয়ে পড়েছে। অর্ণব এক হাত দিয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়েছে অন্য হাত দিয়ে ড্রাইভ করছে। মেয়েটা এতো ঘুম পাগল কেনো??সব মেয়েরা ই কী এমন ঘুম পাগল হয় নাকি।।
গাড়িটি গেইটের ভেতরে প্রবেশ করলো, অর্ণব গাড়ি থেকে নেমে পরীকে কোলে নিয়ে ভেতরে ডুকলো। দরজা খোলা রেখে ই বিমলা বাসায় চলে গেছে। তাই ডুকতে আর অসুবিধা হলো না।
পরীকে নিয়ে সোজা নিজের রুমে শুইয়ে দেয়। অর্ণবকে পরী জড়িয়ে ধরে আছে ছাড়ছে না। কিছুক্ষন পরিণীতা দিকে তাকিয়ে অনমনে হাসে অর্ণব।পরীকে আস্তে করে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে অর্ণব ফ্রেশ হতে চলে যায়।
অর্ণব থ্রি কোয়ার্টার একটা পেন্ট পড়া, আর সাথে একটা টি -শার্ট। প্রত্যেকদিন রাতে এটা ই পড়ে।। মুখ মুছতে মুছতে রুমে প্রবেশ করে বুঝতে পারে ভারি শাড়ী প্লাস গয়নায় পরীর ঘুমাতে সমস্যা হচ্ছে।
এখন যদি পরীকে হেল্প করতে যায় পরে আবার আমাকে কী না কী ভাববে। এটা ভেবে ই অর্ণব সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লো। চাইলে পড়তো পরীকে একা ছেড়ে আমি অন্য রুমে ঘুমাতে। কিন্তু পরীকে তো আর চোখের সামনে দেখতে পাবে না।
চোখ বন্ধ করতে ই পরীর নাড়াচাড়ার শব্দ হচ্ছে। শাড়ি পরে ঘুমাতে মনে হয় কষ্ট হচ্ছে তাই অর্ণব আস্তে আস্তে গিয়ে জুয়েলারিগুলে আগে খুলে তারপর উপর থেকে শুধু শাড়িটা খুলে আবার শুইয়ে দিয়ে এসে পড়ে। নিজের জায়গায় এসে শুয়ে পড়ে।
পরের দিন সকালে,
পরীর ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে জোরে চিৎকার করে উঠে। জোরে চিৎকার শুনে অর্ণব এর ঘুম ভেঙ্গে যায়।
–আরে এতো জোরে কেউ চিৎকার করে নাকি। তোমাকে কী কেউ মেরেছে।
–আপ আপনি কী করছেন এটা।
–কী করলাম।
–সিনেমার মতো আমাকে একা পেয়ে আমার সর্বনাশ করে ফেলেছেন।
–কী বলছো এসব।
পরী কিছু না বলে ই কান্না করতে লাগলো।
–আপনি এতো লুচু আগে জানতাম না।এএএএএ।
–হোয়াট। স্টপ। তোমার শাড়ি পরে ঘুমাতে সমস্যা হচ্ছিল তাই আমি শুধু শাড়িটা খুলে পাশের টেবিলে রেখেছি।
–আমার যা ইচ্ছে তা হক আপনার সমস্যা কী।
–এই জন্য ই মানুষ এর উপকার করতে নেই।
এটা বলে ই অর্ণব ওয়াশরুমে ডুকে পড়লো। জানে পরী এখন অযথা ই ঝগড়া করবে।
২৬.
অর্ণব অফিসে চলে যায়। রাত হতে ই পরী নিজের ফোনটা অন করে। চার্জ শেষ ছিলো গতরাতে তাই এখন চার্জে দিয়ে ফোন খুললো,
ফোন অন করে ই পরী থ হয়ে আছে। অর্ণব এর ৫০+ মেসেজ।।।।
সবগুলো মেসেজের শেষে একই প্রশ্ন ছেলেটা কে আর পরী কি বিয়ে করে ফেলেছে নাকি। মেসেজ দেখে ই বুঝা যাচ্ছে পিকগুলো আদিকে কেমন পুড়িয়েছে।
এতোদিনে আদি বুঝবে পেয়ে হারানোর কষ্ট যে কী পরিমানের।।।
ফোন অন করার সাথে সথে আবার আদির নম্বর থেকে কল আসলো।
কয়েক বার কেটে দেওয়ার পর ও বার বার কল দিচ্ছে আদি। মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে ই কলটা রিসিভ করলাম।
–পরী তোমার সাথে এটা কে।
–আপনাকে বললে আমার লাভ??
–তোমার সাথে আমার লাভ লসের কোনো হিসেব না পরী।
–হে আপনার রূপবতী বউ কোথায়।
–কে আমার বউ??
–ইরা আপু। আপনি তো আমার জিজু হন।
–পরীহহহ।
–স্টপ মিস্টার অদ্যিত চৌধুরী, গালার আওয়াজ নিচে।
–কেনো কী করবি তুই। তুই তো নষ্ট মেয়ে নয় হয় কি দুদিন ও লাগেনি আরেকটা জুটিয়ে নিয়েছিস।
–একটা প্রভাত আছে জানেন তো খেতে না পারলে আঙ্গুর ফল টক। আপনার বেলায় ও তার থেকে ব্যাতিকরম কিছু ই নয়।
–ভালো কথা শিখে গেছো দেখছি। নিজেকে অনেক চেঞ্জ করে ফেলেছো।
–হে মরিচাকার পেছনে ছুটেছিলাম এতো দিন তাই বোকা ছিলাম।
বলে ই কারো পায়ের আওয়াজ শুনে কল কেটে দিলাম।
–টিয়াপাখি চলো,,,
–কোথায়।
–চলো ই না স্বপ্নের দেশে।
–আদিক্ষেতা??
–তাই বুঝি। ইচ্ছে করে যাবে নাকি আমি জোর করে নিয়ে যাবো ঐটা বলো।
পরী আদির কথা ভাবতে চায় না আর না গেলে ও অর্ণব জোর করবে তাই পরী রেডি হতে চলে গেলো।
বেশকিছুক্ষন পর পরী রেডি হয়ে নিচে এলো,
সাদা আর গোলাপি কম্বিনেশন এ একটা থ্রি পিছ পড়ে নিলো সাথে মেচিং জুয়েলারি।অর্ণব ও পরীর সাথে মিলিয়ে সাদা শার্ট ই পড়েছে।।।
নিজে হেটে যাবে বাকি কোলে করে নিবো।
অর্ণব এর কোনো কথার উওর না দিয়ে ই পরী গিয়ে গাড়িতে বসলো।
–অ টিয়াপাখি তুমি শুনতে কী পাও আমি ডাকি তোমায়।
অর্ণব গাড়ি চালাতে চালাতে হেসে হেসে পরীকে এভাবে রাগাচ্ছে।
পরী ও রেগে লুচির মতো ফুলছে।।।।
—
অর্ণব একটা মেলার মধ্যে এনে গাড়িটা রাখে। নিজের হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে পরীর হাতের আঙ্গুলগুলো ডুকিয়ে হাতটা শক্ত করে ধরে হাটতেছে আর পরীকে বিভিন্ন জিনিস দেখাচ্ছে।
হঠাৎ পরী আদিকে দেখতে পায়। পরীর দিকে ই দ্রুতগতীতে আসছে। কী হবে এখন যদি আদি অর্ণব এর সামনে এসে যায়। ভয়ে পরীর চোখমুখ লাল হয়ে আছে।
চলবে