#পরিণীতা
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ২০
৩৯.
ইরা গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে। পরী বেশ জোরে ই থাপ্পড়টা মারে। তাও চোখ বড় বড় করে পরীর দিকে তাকিয়ে আছে। দেখে বেশ রাগ হচ্ছে পরীর
–চোখের সামনে থেকে যা নয়তো আরো একটা দিবো।
–পরী তোর সাহস অনেক হয়ে গেছে তুই ইরাকে থাপ্পড় মেরেছিস।আমি থাপ্পড় টা যেমন কষ্ট পেয়েছি তোর তার থেকে চারগুণ কষ্ট আমি তোকে দিবো পরী। অর্ণব এর জন্য তোর এতো সাহস বেড়েছে তাই না। তোর অর্ণবকে ই যদি আমি তোর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেই তো কী হবে ভাবতে পারছি। তোর সংসার টা শেষ করে দিবো।
–এই মেয়ে তোকে তো আমি পরীর কাজ থেকে রান্না শিখে নিতে পাঠিয়েছি। এখন দেখছি শিখতে এসে ভাঙ্গার প্লান করছিস। তা কার সংসার ভাঙ্গা কথা বলছিস।
—না মা তেমন কিছু না।
কথা বলছিলাম পরীর সাথে এই মহিলা আবার কোথা থেকে আসলো, অসহ্যকর আদি শুধু আমার হাতে নেই নয়তো এইসবগুলোকে বুঝাতে পারতাম কতো ধানে কতো চাল। পরীকে পরে দেখে নিবো আগে ই অনিতা চৌধুরীকে থামাই। যা ই হক শেষের কথা শুনেছে পুরো কথা শুনলে তো এখন ই৷ আমি শেষ ছিলাম।
–এই ইরা কী ভাবছিস তুই চেহেরা তো শুধু মুলার মতো বানিয়েছিস, কাজ কর্মে তো নাই। অর্ণব এর দাদিমা আসছে। বেশ ঝাঁজালো মহিলা সে, কাজ আদব কায়দা। না জানলে এই বাসা থেকে বের ও করে দিতে পারে।
–কেনো মা। এখানে আসার কী দরকার।
ইরার এমন কথায় বেশ রেগে অনিতা বেগম উওর দেয়।
–ছেলের বাসায় মা আসবে না নাকি।
–ঠিক আছে মা।
–হে হয়েছে, যাও এখন দুজনের কাজে দুজনে সাহায্য করবে।
বলে ই অনিতা বেগম চলে গেলেন। পরী খাবারগুলো দ্রুত টেবিলে দিয়ে রুমে চলে যায়। রুমে গিয়ে দেখে অর্ণব ফোনে কথা বলছে।
অর্ণবকে কথা বলতে দেখে পরী ওয়াশরুম চলে যায় ফ্রেশ হতে।।
–আদির মা একটু শুনে যাও তো।
অনিতা চৌধুরী রাগান্বিত হয়ে আসাদ চৌধুরী দিকে তাকিয়ে আছেন।
–এমন ভয়ংকর ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।
–অর্ণব কী আমার ছেলে না।
–হুম তোমার বড়, ছেলে।
–তাহলে সব সময় আদির মা বলো কেনো। অর্ণব এর মা বললে কী মুখে ব্যাথা লাগে।
কী বলবো সবাই ই তো আমাকে অর্ণব এর মা বলে মানতে পারে না। ছেলেটা ও তো আমার সাথে বেশি কথা বলে না। আমাকে কেনো আমার ছেলের থেকে পৃথক করে রাখো। আদির থেকে আমি অর্ণবকে বেশি ভালোবাসি। বুঝো না কেনো তোমারা।
কান্না করতে করতে কথাগুলো বললো অনিতা বেগম।
–ভুল হয়ে গেছে অনিতা প্লিজ এমন করে কেঁদো না।
বলে ই হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে শান্ত করতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন আসাদ চৌধুরী।
৪০.
সকলে ঘুম থেকে উঠে অর্ণব এর মুখের দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে পরী। খুব সুন্দর লাগছে, অর্ণব জেগে থাকলে চোখের দিকে তাকাতে ও লজ্জা লাগে।
এই মানুষটার জন্য ই এতো সুখে আছে পরী।
হঠাৎ ইচ্ছে করছে অর্ণবের ঠোট জোড়ায় আলতো করে চুমু দিতে আবার ভাবছে যদি অর্ণব উঠে যায় তাহলে তো বিষন লজ্জা পেতে হবে।
ঘুমিয়ে আছে আলতো করে দিয়ে দূরে চলে আসবো তাহলে তো আর বুঝতে পারবে না। এসব ভেবে। অর্ণব এর ঠোট দুটো আলতো করে চুমু খেতে গেলে অর্ণব পরীর ঠোট জোড়া নিজের আয়েতে নিয়ে নেয়।
অর্ণবের পিঠে কয়েক দফা মার পড়ছে। পরীর এমন করতে দেখে অর্ণব পরীর হাত দুটো নিজরে হাতে বন্ধি করে ছেড়ে দেয়। পরী লজ্জায় অর্ণবের বুকে মুখ লুকায়।।।
–লুকিয়ে লুকিয়ে দেখার বিচার করলাম। কী ভেবে ছিলে টিয়া পাখি আমি কিছু বুঝবো না।
–আপনি অনেক খারাপ।
অর্ণব এর বুকে মুখ রেখে ই বলে। অর্ণব দুহাত দিয়ে জড়িয়ে নিয়েছে পরীকে।
–তাহলে তো আরো খারাপ হতে হয়ে।
এটা বলে ই পরীর পেটে হাত দিতে ই পরী ধাক্কা দিয়ে উঠে ওয়াশরুম চলে যায়।
–টিয়াপাখি কদিন আমার থেকে এভাবে পালিয়ে থাকবে।
—-
অনিতা চৌধুরী নাস্তা তৈরি করছে, কাজের লোকগুলো সুন্দর করে পুরো বাসা পরিষ্কার করে সাজাচ্ছে কারন আজকে অর্ণব এর দাদিমা আসবে। উনি সব কিছু পরিপাটি পছন্দ করেন।।।
মা আমি আপনাকে সাহায্য করি।
পিছনে ফিরে দেখে পরী দাড়িয়ে আছে।
–তুই এখানে এসেছিস কেনো যা গিয়ে দেখ অর্ণব এর কী লাগবে।
–উনার কিছু লাগবে না। আমি আপনাকে সাহায্য করি।
এটা বলে ই পরী কাজে হাত দিলো।
–মা আজকে তো অনেক কাজ তাহলে আমাকে ডাকেননি কেনো।
–এমনিতে ও তোরা দুজন অনেক কাজ করিস তারপর আবার সকাল সকাল ডাকতে চাইনি। পরী খেয়াল করলাম তোর হাতে চুড়ি নাই কোনো গহনা নাই। কেনো পরী।।
–মা আমার এতো গহনা পড়তে ভালো লাগে না।
–অর্ণব এর দাদিমা এগুলো পছন্দ করে না। যা গিয়ে সব পড়েনে। শাড়ি ঠিক করে পড়ে মাথায় কাপড় দিয়ে রাখিস। বুঝিস ই তো আগের দিনের মানুষ।
—-
–তোকে আর কতো বলবো আমার আশেপাশে আসবি না। তোর জন্য আমি আমার পরীকে হারিয়েছি।
–আদি আমি তোমার বিয়ে করা বউ আমার সামনে বার বার পরীর নাম কেনো নেও।
–পরীকে আমি ভালোবাসি।
–তাহলে আমাকে বিয়ে করলে কেনো। এতো পরী পরী করলে পরীকে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দিবো।
চলবে