প্রতিশোধ পর্ব-১৫ এবং শেষ পর্ব

0
354

#প্রতিশোধ
#শিখা
#পর্ব_১৫_শেষ

জ্ঞান ফিরতে নিজেকে হসপিটালের বেডে পাই,

পাশে আব্বু আর ফয়সাল আছে..

ফয়সাল আমায় তোমাকে কিছু বলার ছিলো, আমার না লায়লা তোমাকে কিছু বলবে

ফয়সাল লাকে ভিতরে নিয়ে আসে

ম্যাডাম মাথা নিচু করেছিল আর এমন লাগছিল খুব ভয় পেয়ে আছে

আমিঃ বলেন কি বলতে চান আপনি?

লায়লা: আমি আসলে বলতে চাই শুভ আসলে কে ছিল? কেনই বা মেয়েদের সহ্য করতে পারতো না, আমি বলতে চাইনি কিন্তু ফয়সাল আমাকে বাধ্য করেছে এখানে আসতে..

আমি: ক্লিয়ারলি বলবেন? আপনি কি বলতে চান?

লায়লা: আমি আর শুভ একসাথে বড় হয়েছি? শুভ আমার পাশের বাসাতেই থাকতো শুভ তার বাবা-মার একমাত্র সন্তান ছিল..
ছোট থেকেই শুভ তার বাবা-মার আদর পায়নি, শুভর মা কখনোই তাকে আদর করতো না, সবসময় বাবার আদরই পেতো..
শুভর বাবা অনেক গরীব ছিলো। ঠিকমতো শুভর মার দেখাশোনা করতে পারতো না, তাই ওর মা অনেক ছেলের সাথে সম্পর্ক করতো, একেক দিন একেকটা ছেলেকে নিয়ে আসতো বাসায়, শুভ এসব দেখেই বড় হয়েছে…

যখন একটু বুঝের হয়, তখন শুভ তার মাকে এসব করতে মা না করে, কিন্তু শুভর মা কিছুই বোঝেনা,তার টাকার দরকার ছিল টাকার জন্য সব করতে পারতো…

একদিন স্কুল থেকে এসে দেখে শুভর মা তার বাবাকে মেরে পালিয়ে গেছে, শুভর ভিতরে এটা ঢুকে যায় শুভ তার মাকে খুঁজে বের করে আর তাকে হত্যা করে..

পুলিশ কাস্টাডিতে নেওয়া হয় শুভকে,জেল থেকে বের হয়ে শুভ সর্বপ্রথম আমার কাছে আসে, আর আমি তখন এটা বলে চুপ হয়ে যায়

ফয়সালঃ সব বল চুপ হয়ে গেলে কেন?

লায়লা: আমি তখন অনেক ছেলের সাথে রিলেশন করতাম, তাদের টাকা মেরে খেতাম.. তাই আমিও শুভকে আমার দলে যোগ করে শুভ অনেক সুন্দর ছেলে ছিল তাই খুব সহজে মেয়েরা তার পাগল হয়ে যেত কিন্তু শুভ সত্যি সত্যি একটা মেয়ের প্রেমে পড়ে যায়…

কিন্তু মেয়টাও ধোকা দিয়ে অন্য একটা ছেলের সাথে চলে যায়, এরপর থেকে ওর প্রতিশোধ নেওয়ার নেশা উঠে যায়, একের পর এক হত্য চালায় শুভ আমি অবশ্য সব জানতাম, আমি মেয়েদের খুঁজে বের করে দিতাম, কারণ আমার টাকার প্রয়োজন ছিলো, খুঁজে খুঁজে টাকা ওয়ালা মেয়েদের বের করতাম, আর সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতাম।
ধরে নিয়ে আসতো প্রথমত ভালোমতো কথা বলতো, তারপর মেয়েরা গললেই সব টাকা আমি নিতাম,আর ওকে নিয়ে শুভ মেরে ফেলতো..

আমি: আমার মাকে শুভ কিভাবে চিন তো?আর ধোকা বাজদের মারলে তোমায় কেন মারে নাই?

লায়লা:কারন শুভ আমার সত্য জানতো না,আর ওটা তোমার না আমার মা ছিল, আর সে আমাদের টিমের লিডার ছিল।
মা তোমার বাবাকে বিয়ে করেছিল শুধু টাকার লোভে কিন্তু বিয়ের পরে জানতে পারে সবকিছু তোমার নামে, তাই এত বছর তোমাকে সহ্য করে গেছে..
কিন্তু যখনই শুভর বিষয়টা সামনে আসে তখনই মা প্ল্যান করে তোমাকে রাস্তা থেকে সরাতে হবে।
আর তোমার নামে যত মিথ্যা ছিল সব শুভ কে বলে..

কিন্তু ফয়সাল কিভাবে যেন সব জানতে পেরে যায়, আর শুভকে সব বলে দেয় এরপর থেকেই শুভ পাল্টে যায়, আর তোমার যত্ন নেওয়া শুরু করে আস্তে আস্তে শুভ সব ছেড়ে যেতে চাচ্ছিল..

এরপর মা তোমাকে নিজের রাস্তা থেকে সরানোর প্ল্যান করে এটা ভেবেই তোমার বাবাকে কিডন্যাপ করে কিন্তু সেখানেও শুভ পৌঁছে যায়..

ফয়সালঃ হয়েছে আর কিছু বলতে হবে না বাকিটা আমি বলছি,..

লায়লাকে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায়..

ফয়সালঃ আমি গোয়েন্দা বিভাগে চাকরি করি, আমি দুই বছর ধরে শুভর সাথে বন্ধুত্ব করেছিলাম, ওর খবর জানতে, শুভ অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক জড়িয়ে ছিল আর এরপর থেকে সেই মেয়েদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না…
একদিন রাতে ড্রাংক অবস্থায় শুভ আমাকে প্রায় সব কথা বলেছিল, তাই আমি তোমার বিষয়টা জানিয়েছিলাম, যাতে তোমার উপর অত্যাচার না হয়..

আমি অবশ্য তখনই শুভকে আটকাতে পারতাম কিন্তু আমার মাস্টারমাইন্ড কে জানার দরকার ছিলো আর সেটা ছিল তোমার মা আই মিন লায়লার মা….
সেটাও আমি আজকেই জানি তাও শুভ নিজে বলেছিলো

ছোটবেলার বিষয়টা শুভকে সাইকো করে দিয়েছিলো তাই আমি চাচ্ছিলাম শুভকে কোন ভালো সাইক্রেটিসকে দেখাতে কিন্তু এর আগেই সব শেষ হয়ে গেল..
লায়লা আর লায়লার মা শুভর এই উইকনেছটা কাজে লাগিয়ে ছিলো

আব্বু আমার কাঁধে হাত রেখে আর বলে আমরা এখান থেকে অনেক দূরে চলে যাবো, আর আমি তো খুব যত্ন নেব না এখন থেকে…

আমি স্তব্ধ হয়ে যাই,কিছু বলার ভাষা ছিলো না আমার,জীবনটা ৫ মাসের ভিতরে কত কি দেখালো আমায়…

সমাপ্ত