#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(২৫)
হুডিওয়ালা অজ্ঞাত সে জন উঠেই আঁখির উপর আবার আক্রমণ করতে আসলো হাতে থাকা ছু*রি দিয়ে, ছুরিঘাত করার আগেই আঁখি তার হাত ধরে একটা মোচড় দিল যাতে ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠে ছুরিটা ছেড়ে দিল সে, আঁখি তাকে বেশ জোরালো কয়েকটা ঘুষি আর লাথি দিল,অজ্ঞাত জন আঁখির গায়ে একটাও আঁচড় দিয়ে উঠতে সক্ষম হলো না,বরং আঁখির সাথে পেরে না ওঠে মুখ থুবড়ে মাটিতে পরল।এবার হাতের পাশে লাঠি পেয়ে আবার আঁখির উপর আক্রমণ করতে গেলে আঁখি লাঠিটাও ধরে নেয়,তারপর সেই লাঠি কেড়ে নিয়ে তার পিঠ বরাবর প্র*হা*র করলে আবারও মুখ থুবড়ে পরে গেল সে,আঁখি এগিয়ে গিয়েই তার মাথা মাটির সাথে চেঁপে ধরে ওপর হাতে তার এক হাত পিছন দিক দিয়ে মুড়ে ধরে এবার কর্কশ গলায় বলল।
কে তুই?আমার সাথে কেন লাগতে এসেছিস?লাগতে আসবি ভালো কথা ক্ষমতা দেখে তো আসবি!শুধু শুধু মা*র খেলি,এবার বল কে তুই?আমাকে কেন মা*র*তে এসেছিস?
কিছুই বলল না সে জন,অজ্ঞাত ব্যক্তির হুডিটা অনেক আগেই মাথা থেকে সরে গেছে,চুল খোঁপা করা যাতে কাঠি লাগানো,আঁখি এবার তার চুল বেশ জোরে মুঠো করে ধরল।
বল কে তুই?নইলে এখনই সব চুল ছিঁড়ে ফেলব,এতো মা*র*ব যে নিজেকেই ভুলে যাবি,বল কে তুই কে?বল?বলবি না তো ঠিক আছে,এখনই তোর মুখোশ খুলে দেখছি তুই কোন ক্ষেতের মূলা।
আঁখি তাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে এবার তার মুখোশ খোলার চেষ্টা করলে সে তাকে ধাক্কা দিয়ে উঠে পালাতে শুরু করে,আঁখিও বেশ গতিতে তাকে ধাওয়া করল,আঁখির সাথে দৌঁড়ে পেরে উঠারও ক্ষমতা সে জন কুলিয়ে উঠতে পারছে না,আঁখি তার অনেক পাশে এসে তাকে ধরার জন্য হাত বাড়ালে তার খোঁপাতে তার হাত যায়,এক টান দিলে তার খোঁপার কাটা সহিত কিছু চুল আঁখির হাতে চলে আসে,কিন্তু সে জন অন্ধকারে কোথাও মিলিয়ে যায় প্রাণ বাঁচিয়ে।
আজ রিদিকা আসলো ডাক্তারের কাছে,একাই এসেছে,নিজের শরীরের এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে সে আদ্রিশকে জানাতে চায় না বর্তমানে কিছু,বড্ড ভয় হয় তার আদ্রিশকে হারিয়ে ফেলার,যে আদ্রিশ তার প্রাণের প্রিয়া আঁখির উপর রিদিকাকে নিয়ে এলো সামান্য বাচ্চার দোহাই দিয়ে তাকে নিয়ে কীভাবে কোনো সুযোগ নিবে রিদিকা!আদ্রিশ আজ দু’দিন হলো একটা কাজে শহরের বাহিরে গেছে সে সুযোগে ডাক্তারে চলে আসলো রিদিকা,ডাক্তার তাকে চেক আপ করে কিছু টেস্ট করানোর জন্য দিলেন,সে টেস্টগুলো করে বসে রইল রিপোর্টের জন্য।এবার তার রিপোর্ট দেখে বেশ চিন্তিত হলেন ডাক্তার,ডাক্তারের দুরাশাগ্রস্থ চেহারা দেখে অস্থিরতা আরও বেড়ে গেল রিদিকার।জিজ্ঞেস করল ডাক্তারকে।
″কি হয়েছে ডাক্তার?কি সমস্যা দেখলেন আমার?″
″দেখুন মিসেস রিদিকা রাহমান, আপনার কোনো রোগ হয় নি,বরং আপনার শরীরে এক ধরনের ভাইরাস পাওয়া গেছে।″
″হোয়াট! ভাইরাস?কিন্তু আমার শরীরে ভাইরাসের উৎপত্তি কীভাবে হলো?″
″সেটা উৎপত্তি হয় নি,বরং সেটা আপনার শরীর অব্দি পৌঁছানো হয়েছে।এই ভাইরাসের বিষয়ে আমি এখন তেমন কিছু বলতে পারব না কারণ ভাইরাসটা নতুন ধরনের একটা ভাইরাস,আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি এটা মনুষ্য সৃষ্টি, যা কোনো মাধ্যম ব্যতীত আপনার শরীরে প্রবেশ করে নি।উক্ত ভাইরাস আপনার শরীরের কর্মক্ষমতা নষ্ট করে দিচ্ছে।″
″এখন আমার কী করণীয় আছে ডাক্তার?কী হবে আমার?″
″আরে ঘাবড়াবেন না,ভাইরাসটা এখন আপনার শরীরে অল্প পরিমাণে আছে, আমি কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি আপনি সেগুলো সেবন করুন,আর আপনার ব্যবহার্য সকল পুরাতন পন্য বদলে ফেলুন সেগুলো থেকেও সমস্যা হতে পারে,আমাকে ভাইরাসটা নিয়ে একটু রিসার্চ করতে হবে,এটা সম্পর্কে ভালোভাবে জানার পরই আপনাকে যথেষ্ট কোনো পথ্য আমি দিতে পারব।
আঁঁখি কাঠিটা হাতে নিয়ে অনেক্ষণ ধরে তাকিয়ে আছে,কাঠিটা কোথাও যেন দেখেছে আঁখি,খুব খেয়াল করে হয়ত তখন দেখে নি নয়ত আঁখির স্মৃতি খুবই প্রখড় মনে করে নিত মুহুর্তেই,তবুও মস্তিষ্কে প্রচুর জোর দিয়ে ভাবছে,তাকে সেই অজ্ঞাত জন পর্যন্ত পৌঁছাতেই হবে,তাকে যে বড্ড প্রয়োজন আঁখির,কিন্তু হঠাৎ খেয়াল করল
আঁখি দেরি হচ্ছে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য,তাই ওটা রেখে দিলো একটা ড্রয়ারে তারপর কাভার্ড থেকে পরার জন্য কাপড় বের করবে তখনই কাভার্ডের একটা থাকের উপর চোখ গেল,নীল রঙের রেপিং পেপারে আবৃত বাক্স,মনে পরল ওটা আঁখির জন্মদিনে আদৃত দিয়েছিল,আঁখি সেটা সেই যে রেখেছিল এখনও খোলার কথা মনে নেই।এবার বাক্সটা হাতে নিয়ে খুলে নিল।ভিতর থেকে বেড়িয়ে এলো কালো রঙের একটা কাতান শাড়ি, অদ্ভুত সুন্দর তার কাজ,এক কালার শাড়িটার সোনালি রঙের পাইর,আঁচলের দিকে হালকা কাজ,কালো শাড়ি বলতেই আঁখির ভালোলাগার একটা বড় অংশ,উপহারটা দেখে বেশ খুশি হলো আঁখি,বাক্সে একটা চিরকুটও পেল সে।চিরকুটটা উঠিয়ে পরতে লাগল সেটা।
মিস প্যারা
তোমাকে কালো শাড়িতে বেশ মানায়,কালো রঙের শাড়ি যেন তোমার জন্যই বানানো হয়।আসলেই সৌভাগ্যবান হবে সে শাড়ি যা চড়বে তোমার গায়,সৌন্দর্য তোমার বাড়িয়ে দিবে বহুগুণ, এতটা গুছিয়ে কথা বলতে জানিনা, জানো তো খুব ভালো করেই তুমি,চেষ্টা করলাম শুধু মাত্র সাথে চাহিদাও অল্প,একদিন গায়ে জড়িয়ে নিও এই সৌন্দর্য, হয়ত আকাশের চাঁদটাও হার মানবে সেদিন তোমায় রূপে,তোমার রূপের তেজে ঈ*র্ষা*ন্বি*ত হয়ে হয়ত লুকাবে সে সেদিন মেঘাতলে।
চোখা নাকওয়ালা।
চিরকুটটা পরে আঁখি হেসে দিল,চোখা নাকওয়ালা ডাকটা আঁখি প্রায় ডাকত আদৃতকে,যাতে বিরক্ত হতো আদৃত খুব,চেঁচিয়ে উঠত কখনও কখনও আর আঁখি তাকে উত্তপ্ত করে মজা নিত।কখনও আদৃত– আঁখির বা অন্য কোনো নারীর প্রশংসা করে নি,আজ তার মুখে নিজের জন্য প্রসংশা শুনে কি প্রতিক্রিয়া করবে ভেবে পাচ্ছে না।
″স্যার আজ কয়েকদিন থেকেই এতো খোঁজ নিয়েও আমরা প্রমত্ত অঙ্গনা সম্পর্কে তেমন কোনো সন্ধান পেলাম না।এদিকে ইশানা আর রিয়াদের দু’টো ফোনই আমরা পা*বে*র পিছনের জঙ্গল থেকে পেলাম,কিন্তু দু’জনের লা*শ তো আলাদা দুই স্থানে ছিল,কিছুই তো বুঝে ওঠা যাচ্ছে না।″
″ব্যপারটা খুব সিম্পল, ইশানার সাথে অ*বৈ*ধ সম্পর্কে ছিল রিয়াদ,সে রাতে তারা একসাথে ছিল পা*বে,সাথে প্রমত্ত অঙ্গনাও ওদের উপর নজর রাখছিল তখন,সুযোগ বুঝে সে সেখানের একটা বন্ধ রুমে ইশানাকে মে*রে ফেলে রাখে,অতঃপর তার ফোন দিয়ে রিয়াদকে ইশানা সেজে পাব এর পিছনের দিকটায় আনিয়ে নিয়ে তাকেও প্রানে মা*রা*র প্রচেষ্ঠা করে, কিন্তু রিয়াদ হয়ত কোনোরুপ নিজেকে বাঁচাতে জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে মেইন রোডে উঠতে গিয়েছিল, তখন নিজে থেকে বেখেয়ালে নয়ত প্রমত্ত অঙ্গনার ধাক্কায় গাড়ির নিচে এসে যায় রিয়াদ।আর তারপর তো প্রমত্ত অঙ্গনা হাসপাতালে এসেই তাকে মা*র*তে সক্ষম হয়।″
″কিন্তু স্যার প্রমত্ত অঙ্গনা হাসপাতালে কিভাবে প্রবেশ করল?কারণ হাসপাতালের সামনের সিসিটিভি দিয়ে তো ওকে প্রবেশ করতে দেখা যায় নি।″
″ও হাসপাতালের সামনা দিয়ে প্রবেশ করে নি,এদিকে গেলে ধরা পরার সুযোগ বেশি ছিল হয়ত তাই,খুব সম্ভবত হাসপাতালের পিছনের দিক দিয়ে কোনোরকম দেয়ালের দিকটায় চড়ে হাসপাতালে প্রবেশ করেছে।সে যেই হোক খুব দক্ষ একজন।একে তো আমার স্যালুট করতে মন চাইছে,এতো নিখুঁত আর দক্ষতার সাথে হয়ত আজ অব্দি কোনো অপরাধীই পার পেয়ে যেতে পারে নি।তবে তাকে তো আমি ধরবই।কিন্তু তার আগে আমাদের নকল প্রমত্ত অঙ্গনা সম্পর্কে জানতে হবে,আর তাকে খোঁজে বের করতে হলে আমাদের ৪ বছর আগের সেই দু’টি খুন সম্পর্কে আবারও সন্ধান করতে হবে,আগা থেকে শুরু করলে গোড়ায় তাড়াতাড়িই পৌঁছাব ইনশাআল্লাহ। খু*ন দু’টো যশোর জেলায় হয়েছিল,আজ সন্ধ্যায় আমি দু’জন কনস্টেবল নিয়ে যশোরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হব,তুমি এদিকটার খেয়াল রেখ।″
আজ হাসপাতালে আদৃত আসে নি,কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে আঁখির,কাজের ফাঁকে তো আদৃতের সাথেই তার আড্ডা জমে থাকত দিনভর,গম্ভীর সে লোকটা বেশি কথা বলতে না জানলেও আঁখির বকবকানি তো শুনত সারাদিন,মাঝে মধ্যে আঁখির সাথে মগ্ন হতো তার অতি গম্ভীর কিছু আলাপচারিতায়, বেশ ভালোই লাগে আখির তা।আদৃতকে দেখলেই যেন মনে হয় সে আবারও সেই ছয় বছর আগে ফিরে গেছে,তাই হুট করে আজ তার না আসা কেমন জানি এক খালিলাগা অনুভুতি জন্ম দিলো আঁখির মনে,ফোন দিবে আদৃতকে তখনই আদৃতের ফোন আসল।
″আরে ডা.সাহেব কোথায় আপনি?″
″আর বলো না অল্প জ্বর আসাতে মা ঘর বন্ধী করেছে আমায়।এমন বন্ধ অবস্থায় না আমি আমি হার্ট অ্যাটাক করে মা*রা যাই।″
″আরে কি যে বলেন?আপনি ভাগ্যবান যে আপনার পাশে আপনার মা-বাবা আছেন আপনাকে দেখাশোনা করার জন্য,আপনাকে ভালোবাসা দেওয়ার জন্য।আমার তো এমন অবস্থা যে ঘরে ম*রে পরে থাকলেও কর্মচারী দেখাশোনা ব্যতীত আহ্লাদ করে যে কেউ বুকে টেনে নিবে এমন কেউ নেই।″
″এভাবে বলো না আঁখি, দেখবে আশরাফ স্যার আর আহিল একদিন ঠিকই তোমায় মেনে নিবে।তুমি নিরাশ হয়ো না প্লিজ।″
″হুম, ভালো থাকুন রাখি কাজ আছে,নিজের খেয়াল রাখবেন কিন্তু।″
″হুম,বাই,তুমিও নিজের খেয়াল রেখো।″
আহিল তখন আঁখির কেবিনে এসেছিল কিছু কাজে আঁখির বলা কথাগুলো স্পষ্ট শুনতে পেল সে,যাতে এক মুহুর্তেই বুক হাহাকারে ভরে গেল তার বোনের জন্য।আঁখি ফোন রেখে দেখতে পেল আহিলকে।
″আরে ভাইয়া তুই?কোনো কাজে এসেছিস?″
″ডা.আঁখি আমি আপনার সিনিয়র স্যার বলে ডাকবেন আশা করি।″
″বয়েই গেছে আমার তোকে স্যার ডাকতে,আমি তোকে ভাইয়া বলব, কারণ তুই আমার ভাইয়া,আর তুই করেও বলব,কি করবি করে নিস।″
″আপনি কিন্তু বে*য়া*দ*বি করছেন ডা.আঁখি।″
″কি দেখেছিস তুই বে*য়া*দ*বির,সবকিছু আমিই করি উনারা কিছু করেন না,বাপ ছেলে বুড়ো বয়সে ঢং করতে শিখেছে,আমাকে সামনে থেকে জুনিয়র বলে অপদস্ত করবে আর আমার জন্মদিনে লুকিয়ে আমার কেবিনে এসে গিফট রেখে যাবে।″
এই রে এর কেবিনে গিফট রেখেছিলাম এ কিভাবে জানল!আর বাবাও একি কান্ড করলেন!যতই বলুক না কেনো বাবা আঁখিকে কখনও পর করতে পারবেন না।
কি ভাবছিস ভাইয়া এটাই তো আমি কিভাবে জানলাম?আরে ভাইয়া আমি তোর ছোট হতে পারি কিন্তু বুদ্ধিতে তোর নানি,আমার কেবিনের সামনের সিসিটিভি তো আর এমনি লাগানো হয় নি।বাপ ছেলে কীভাবে লুকিয়ে ধিমি পায়ে এসেছিল।হা হা হা হা।
আঁখি খিল খিল করে হেসে উঠলে আহিল আর দাঁড়ালো না সেখানে,জানে এখানে থাকলে ধরা পরবে সে আঁখির কাছে,আঁখি যে তাকে হাসিয়ে এবং মানিয়েই ছাড়বে,তাই বেগতিক পায়ে চলে গেল,আঁখি এখনও হাসছে।
″শুনছ শুভ্রতা আজ আমাদের একাউন্টে আঁখি ২ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছে,বলল আগামীতে আরও পাঠাবে, আমি মানা করলেও মানল না,বলল আমাদের কিছু লাগলে ওকে বলতে।মেয়েটা যখন থেকে জীবনে এসেছে আমাদের শুধু দিয়েই যাচ্ছে, মানুষ এতোটাও ভালো হয় কখনও তাকে না দেখলে বুঝতামই না,কোনোদিনও হয়ত তার ঋণ শোধ করার তৈফিক জুটিয়ে ওঠতে পারব না।″
″ঋণ শোধ করার কথা বাদই দেও,এখন তো ওর সাথে কথাটাও বলে ওঠার পরিস্থিতি রয়ে যায় না,দম বন্ধ লাগে আমার আদিল,প্লিজ কোনোমতে এখান থেকে নিয়ে চলো।″
″আর একটু অপেক্ষা করো,আমি সবকিছু ঠিক করে দিব,বর্তমানে এই টাকার কথা যাতে মা ব্যতীত আর কারো কানে না যায়।″
চলবে…
#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(২৬)
সন্ধ্যা নেমেছে মাত্র,আদ্রিশ ঘরে প্রবেশ করল,আজ দু’দিন পর ঘরে ফিরল সে,ঘরে প্রবেশ করতেই কর্মচারী রহিমা একটা খাম এনে দিলো আদ্রিশের হাতে।
ছোলটো সাহেব এটা একটা লোক এসে দিয়ে গেল,বলল আপনি ছাড়া কাউকে না দিতে।
আদ্রিশ খামটা হাতে নিলে রহিমা চলে গেল,খামটার ভিতর দু’টো রিপোর্ট দেখতে পেল আদ্রিশ,বুঝতে পারল হাসপাতাল থেকে আসছে,প্রথম রিপোর্টটা উন্মুক্ত করে পড়ার পর আদৃত বাকরুদ্ধ হয়ে গেল,হাত পা তার মুহুর্তেই কেমন কাঁপতে লাগল,পলকেই যেন তার মাথায় আকাশ টা ভেঙে পরল।না,এ কীভাবে হতে পারে!কীভাবে মেনে নিবে সে এতো বড় সত্য!না, এ তো হতে পারে না!আদ্রিশ অক্ষম হতে পারে না!বাবা হবার সক্ষমতা নেই কথাটা কি করেই কোনো পুরুষ সহজে মেনে নিতে পেরে যায়।বাবা হবার কারণ দেখিয়েই তো জীবনে রিদিকাকে আনল আদ্রিশ,তবে সে আজ নিজেই অক্ষম তাতে কি করে মন মানাবে রিপোর্টটা কি মিথ্যে?কী করে হতে পারে তাও!আদ্রিশের খুব ভালো করে মনে আছে রিদিকাকে বিয়ে করে নিয়ে আসার আগের দিন আঁখি আর আদ্রিশ দু’জনই একটা হাসপাতালে নিজেদের টেস্ট করাতে গিয়েছিল,আর্জেন্ট কাজের বাহানা দিয়ে রিপোর্ট আনার তাড়া আদ্রিশ দেখায় নি সেদিন, রিদিকাকে বিয়ে করার একটা সুযোগ যে তার চাইছিল তাই আঁখির রিপোর্টের অপেক্ষা করে নি,তারপর তো আর সেই রিপোর্টগুলোর কথা মাথায়ই আনে নি আদ্রিশ,কিন্তু আজ হঠাৎ হাসপাতাল থেকে রিপোর্টগুলো কে পাঠাল!
তখনই আঁখির কল আসলো আদ্রিশের ফোনে,আদ্রিশ ঝটপট ফোন উঠাল,আঁখি আদ্রিশকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বলল।
কি ব্যপার উকিল সাহেব?নিশ্চয়ই সুখবর পেয়েছেন?খুশি হননি খবরটা পেয়ে,আপনার না বাবা ডাক শোনার খুব ইচ্ছে ছিল,তাই তো রিদিকা নামক সুন্দরী রমণীকে ঘরে এনেছিলেন রাত কাটানোর জন্য,যাতে নিজেরও শরীরের নতুন চাহিদা পুরণ হয় আর বাবা ডাক শোনার শখটাও মিটে,যাক শরীরের চাহিদা তো পুরণ করেই নিলেন তবে বাবা ডাক শোনার চাহিদার এবার কি হবে বেবি?হা হা হা হা।
আদ্রিশ কিছুই বলছে না,পাথরের ন্যায় দাঁড়িয়ে শুনে যাচ্ছে আঁখির বলা তাচ্ছিল্য বাণী,আঁখি আবারও বলল।
তুমি কী করে ভুলে গেলে আদ্রিশ আমি একজন ডাক্তার?সেদিন টেস্ট করানোর পর অল্পসময়েই আমার কাছে রিপোর্ট চলে এসেছিল,তুমি তো ফালতু তাড়া দেখিয়ে চলে এসেছিলে,আমি যখন রিপোর্টে দেখলাম তুমি বাবা হতে পারবে না তখন কতটা খারাপ লেগেছিল আমার তা শুধু আমি জানি তবে খারাপ লাগাটা নিজের জন্য ছিল না ছিল তো শুধু তোমার জন্য,ভেবেছিলাম আমি কথাটা কখনও তোমাকে জানাব না,তোমাকে ভালোবেসে বুকে আগলে রেখে পার করব সারাটা জীবন,নাই বা শোনলাম কখনও মা ডাক, কিন্তু তোমার তো সে ভালোবাসার প্রয়োজন ছিল না।প্রয়োজন ছিল নতুন চাহিদার,যাক পুরণ করলে তো,তোমাকে বেশি কিছু বলব না, তোমার জন্য আমার তরফ থেকে রইল পাঁচ বালতী সমবেদনা,হা হা হা হা,আর হ্যাঁ তুমি কি দুইটা রিপোর্টই দেখেছ?না দেখলে দেখে নাও নিচে থাকা রিপোর্টাও,আরশিয়া আনজুম আঁখি ইজ পার্ফেক্ট ফর হেবিং এ চাইল্ড,বর্তমানে তোমার চুপসে যাওয়া চেহারাটা দেখার ইচ্ছেটা চাঁপা দিয়ে রাখতে পারছি না,সত্যিই খুব মজা হতো চেহারাটা একবার দেখতে পেলে,কিন্তু কি করব বলো তোমার মতো ল*প্ট*টের চেহারা দেখার রুচি আর আমার নেই।বাই বেবি ভালো থেকো,কেমন।
আঁখি ফোনটা রেখে দিয়ে প্রশান্তির একটা নিশ্বাস ছাড়ল,উজ্জ্বল হাসি মুখে টাঙিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখতে লাগল,কতোদিন পর আজ নিজের চেহারায় সত্য সুখের হাসি দেখে ভালোই লাগল তার।
খামের অন্য রিপোর্টটা খুলে পড়তেই আদ্রিশের চোখ বেয়ে গড়িয়ে পরল কিছু জল,আঁখি সত্যিই মা হবার জন্য পুরোপুরি সক্ষম।
আঁখি আদৃতকে দেখতে তার বাড়ি যাবে বলে মন মানিয়ে নিল,কতদিন হয় মির্জা হাউজে যায় না যেখানে একসময় পরেই থাকত সারাদিন আদৃতের ধান্দায় আঁখি,আজ আবার যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো,আজ কেন জানি বড্ড ইচ্ছে করল তার শাড়ি পরতে,গতকাল নিজেই একটা শাড়ি কিনেছিল দেখতেই ভালো লাগায় তাই ওটাই পরে নিল,চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে চোখে কাজল টেনে ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দিয়ে বেড়িয়ে আসল,চুরি পরে নিল কিছু,যাওয়ার পথে হঠাৎ একটা দোকানে শুভ্রতা আর রিহানকে দেখতে পেলে গাড়ি থামাতে বলল আঁখি ড্রাইবারকে,অতঃপর গাড়ি থেকে নেমে ছুটে গেলো দোকানের ভিতর, নিজের ঠিক সামনে হঠাৎ আঁখিকে দেখতে পেয়ে শুভ্রতা আঁখিকে জড়িয়ে ধরল কিছু না বলেই,আঁখিও তাকে জরিয়ে ধরল হাসিমুখে। অনেকদিন পর আপনজন বলতে কাউকে পেয়ে আঁখি অনেকটা আবেগপ্রবণও হয়ে উঠল।আহ্লাদী স্বরে বলল।
″অনেক মিস করি আপু আমি তোমায়। ″
″আমিও মিস করি আমার পাগলি বোনটাকে।″
″এবার আঁখি শুভ্রতাকে ছাড়িয়ে বেশ অভিমানী হয়ে বলল।″
″তাই বুঝি?তবে ফোন করলে উঠাও না কেনো?প্রথম প্রথম তো কতো কথা বলতে সারাদিন আমার সাথে কিন্তু এ ক’দিন থেকে একদম ফোন করই না আর আমি ফোন করলে ধরো না,এমনটা কেনো করছ?রাগ করেছ আমার উপর?
আঁখির কথায় শুভ্রতা বেশ হকচকিয়ে উঠল, আমতা আমতা করে বলল।
″আসলে, আসলে এখন কাজে সময় পাই না,তাছাড়া রিহানকেও পড়াই স্কুল যাবে তো সামনের বছর থেকে,আচ্ছা আমি চলি রাত হয়ে গেছে বাড়ি ফিরতে হবে,আজ আদিল জরুরি কাজে আছে তাই কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নিতে এসেছিলাম আমি।চলি,ভালো থেকো।″
″এ কি আপু?চলে যাবে কেন?এতদিন পর আমার সাথে দেখা হলো,ভালো করে কথাও বলবে না?
″কাজ আছে আঁখি,অন্যদিন সময় করে ফোন করব নে,চলি এবার। ″
″আপু কি হয়েছে বলো আমায়?এমন করছ কেনো তুমি?″
″কই কিছু হয় নি তো।″
″আমি জানি আপু কিছু হয়েছে,বলো আমায়?″
″আরে আঁখি তুমি শুধু শুধুই অতিরিক্ত ভাবছ,কিছুই হয় নি,চলি আমি।″
কথাগুলো বলতে বলতেই হুটহাট পায়ে রিহানকে কোলে নিয়ে বেড়িয়ে গেল শুভ্রতা,ভালো করে রিহানকে আদরটাও করতে দিল না।
শুভ্রতার এমন আচরণে আঁখির বেশ খটকা লাগল,শুভ্রতা কেমন জানি আঁখিকে এড়িয়ে যেতে চাইছে কিন্তু কেন?
″আর একটু খেয়ে নে বাবা আমার।″
″মা আর খেলে আমি বমি করব।″
″ওকে করে নিস,মা আছি তো পরিষ্কার করার জন্য,তবুও খেয়ে নে বাবা আমার,দেখ না জ্বরে মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে দিনে দিনেই।″
″আন্টি,ছাড়েন শুধু শুধু ওকে জোর করছেন কেন?সুস্থ হলে এমনিতেই খেতে পারবে।″
″হ্যাঁ আর তার আগে আমার ছেলে শুকিয়ে ভুঁ*ত হয়ে তোমার দলে চলে যাক।″
″আমার দল মানে?″
″শেওড়া গাছের পে*ত্নী*দে*র দলে তো ভুঁতই থাকবে।″
বিড়বিড়িয়ে বললেন শায়েলা মির্জা,কথাটা আর কেউ না শুনলেও আদৃত শুনে নিল,রিংকি আবার জিজ্ঞেস করল।
″কি যেন বললেন আন্টি।″
″আরে রিংকি তুমি খাওয়াতে মন দাও তো,মা এমনিই বলছিল।″
মায়ের দিকে আঁড়চোখে তাকিয়ে বলল আদৃত,শায়েলা মির্জা মুচকি হেসে গেলেন।
তখনই কলিংবেলটা বেজে ওঠলে কর্মচারী রুবাইয়াত দরজাটা খুলে দিল, দরজার সামনেই আঁখিকে দেখতে পেল সবাই,আঁখিকে শাড়ি পরিহিত দেখে আদৃত যতটা মুগ্ধ হয়ে তখন দেখছিল ততটাই অবাক হয়ে দেখছিল বাকি সবাই।আদৃতের মা তো এক প্রকার বাকরূদ্ধ হয়ে গেছেন,আদৃতের জন্য হাতে যে লোকমাটা মাখিয়ে নিয়েছিলেন সেটাও হাত থেকে পরে গেল,তাড়াহুড়োয় হাত ধুয়েই ছুটে গেলেন আঁখির কাছে,ঝাপটে ধরলেন তাকে।কান্না করে দিলেন পলকেই।
এতবছর পর আজ মনে পরল তোর এই মায়ের কথা?
শায়েলা মির্জার এমন ছোঁয়া আঁখির কোমল হৃদয়ে আঘাত করে গেল,আবেগি হয়ে জবাব দিলো সেও।
″ভুলটার পরিমাণ এতো ছিল যে কারো কাছ থেকে ক্ষমা পেয়ে ওঠব ভাবতেও পারি নি।″
″পাগল মেয়ে আমার,মা বাচ্চার সাথে রাগ করে থাকতে পারে না কি!ঘরে আয়,আজ তোকে আর কোথাও যেতে দিব না।″
আঁখি ঘরে আসতেই ইশিকা এসে আঁখিকে জড়িয়ে ধরল?
″কেমন আছিস?আমাকেও ভুলে গেছিলি?″
″সরি রে।″
″থাপ্পড় দিব যদি আবারও সরি বলেছিস তো।″
ইশিকার কথায় আঁখি হাসল,এবার আরিয়ান মির্জা বললেন।
″কেমন আছো মা?″
″এইত আঙ্গেল আলহামদুলিল্লাহ।″
″কেমন আছো লাভ গুরু?″বলল সিয়াম।
″এইত আছি যেভাবে ছিলাম।″
″তা আপনার কি অবস্থা ডা.সাহেব,হটাৎ করে জ্বর বাঁধালেন কেমনে?″
″আর বলিস না ছেলেটার উপর কুনজর পরেছে তাই অসুখ নামছে না।″
আরচোখে রিংকির দিকে তাকিয়ে বললেন শায়েলা মির্জা,আঁখি জিজ্ঞেস করল।
″ও কে?ওকে তো চিনলাম না।″
″আমি রিংকি,আদৃতের ক্লোজ ফ্রেন্ড।″
আরে না না এতো ক্লোজও না,দূরের ফ্রেন্ড,অনেক দূর থেকে এসেছে,আমেরিকা থেকে,তুই ওসব নিয়ে ভাবিস না,আমি তো আদৃতকে বিয়ে করাব ভাবছি জানিস,ওর জন্য বউ দেখছি,একদম তোর মতো কেউ,তুই হলেও চলবে।শেষের কথা একদম হালকা করে বললেন শায়েলা মির্জা।
″কি বললে তুমি মামুনি?″
″আরে মা তুমি কী আমার বিয়ের কথা ছাড়া আর কিছু পাও না?ও এতদিন পর বাড়ি এসেছে ওকে এমনিই দাঁড় করিয়ে রাখবে?″
″আরে না মা তুই বস,আমি খাবার আনি কতদিন হয় তোকে মুখে তুলে খাওয়াই না।″
″না মামুনি আমি এখন কিছু খাব না।″
″কী বলে পাগলি মেয়ে আমার,আগে আসলে মামুনির হাতে খাবে বলে পাগল করত,আর আজ আমি তোকে না খাইয়ে ছাড়ব ভেবেছিস?″
অতঃপর শায়েলা মির্জা আঁখিকে খাওয়ার টেবিলে বসিয়ে তার জন্য খাবার বাড়তে লাগলেন,আদৃতও এবার পাশের চেয়ারে এসে বসল,বাকিরা নিজেদের অবস্থানে বসলেন।আদৃত আঁখির দিকে বিমোহিত দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে বার বার যা রিংকি খেয়াল করছে খুব প্রখরভাবে,যাতে বড্ড জ্বা*লা*পো*ড়া অনুভূতি হচ্ছে তার মনে।ইশিকা এদিকে সিয়ামকে কানে কানে বলল।
″দেখো না সিয়াম আজ এতটা বছর পর ভাইয়ার চেহারাতে সেই খুশি সেই ভালোলাগা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যেমনটা সেই ছয় বছর আগে আঁখিকে দেখলে ভাইয়ার চেহারাতে ভেসে ওঠত।″
″জানোই তো তুমি, আদৃত আঁখিকে কতটা ভালোবাসত,আর এখনও বাসে,কিন্তু আঁখির মনোভাব তো আমরা এখনও জানি না,আমার তো ভয় হচ্ছে আদৃতকে নিয়ে,যদি এবারও আঁখিকে পেতে ব্যর্থ হয় তবে না আবার নিজের সাথে কিছু করে বসে।″
″এমনটা বলো না তুমি,দেখবে আল্লাহ সব ঠিক করে দিবেন।″
রিদিকা ভাবতে ভাবতে পেরেশান,কে করল তার সাথে এমনটা!বাড়িতে এসেই পুরাতন সকল ব্যবহার্য জিনিস ফেলে দিয়ে নতুন করে আনিয়েছে,কিন্তু চিন্তা তো মাথা থেকেই নামছে না কে করল এমনটা?আবার যে করবে না তার কি নিশ্চয়তা আছে,কিন্তু তার ব্যবহার্য জিনিসে কে ই বা কিছু মেশাবে আর কেমনে?ঘরের মানুষ ব্যতীত বাইরের কারো সাথেই তো রিদিকার তেমন কোনো মেলামেশা নেই।তার মানে কি আদিল, শুভ্রতা বা মায়ের মধ্যে কেউ তার বিরুদ্ধে কিছু ষড়যন্ত্র করে চলছে।ব্যপারটা কি আদ্রিশকে জানাবে সে?না,ভয় হচ্ছে তার বড্ড,পরে যদি আদ্রিশ তাকে নিজের অযোগ্য মনে করে ছেড়ে দেয়।আয়নাতে চুল আঁচড়ে আনমনে ভেবে যাচ্ছে রিদিকা কথাগুলো,বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে আদ্রিশ,মাঝে মধ্যে আরচোখে দেখছে রিদিকাকে,মনে চলছে হরেক চিন্তা, নিজের অযোগ্যতা সম্পর্কে কি রিদিকাকে তার জানানো উচিৎ?কি করবে সে ভেবে কূল পাচ্ছে না।
″শুভ্রতা আঁখির সাথে আমার কথা হয়েছিল,আমি চাইছি ওর দেওয়া টাকা দিয়ে নিজেই একটা ব্যবসা খুলি,আমার একটা বন্ধু আছে তাছাড়া আঁখি বলেছে তার কাছেও একজন লোক আছে যে এমন ব্যবসা করতে চায়,আমরা তিনজন মিলে শেয়ারে একটা ব্যবসা খুলব,তারপর ব্যবসা বড় হলে আমরা নিজেরা নিজেদের ব্যবসা আলাদা করে নিতে পারব।″
″অভাগী টা কতই না করছে আমাদের জন্য,আর আমরা চেয়েও ভালো ব্যবহারটা তার সাথে করে ওটতে পারছি না।″
″কী হলো শুভ্রতা তুমি কাঁদছ কেনো?″
″আজ আঁখিকে পেয়েছিলাম, কিন্তু ধরা পরার ভয়ে আর ওর কথা চিন্তা করে পালিয়ে এসেছি ওর কাছ থেকে চুরের মতো,বেশি কথাও বলি নি।″
″কি করবে বলো?আমরা যে নিরুপায়,কিন্তু খুব বেশি দিন থাকব না,চিন্তা করো না।″
″হুম,তা আঁখির সাথে তোমার যোগাযোগ আছে কেউ জানে না তো?″
″না না,আমি সম্পূর্ণ লুকিয়ে কথা বলছি ওর সাথে।″
″হুম।″
আঁখির মুখে খাবার তুলে দিলেন শায়েলা মির্জা,আঁখির চোখ ভরে উঠল সুখের জলে,কতদিন পর এভাবে মায়ের আদর পেল সে।শায়েলা মির্জা ওপর হাতে তার চোখ মুছে বললেন।
″কাঁদছিস কেন পাগলি?″
″এতবছর পর আমার দ্বিতীয় মাকে যে আবার ফিরে পেলাম আমি।″
″হয়েছে আর ইমোশনাল করতে আসিস না আমায়,পরে কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলে গেলে দেখতে আমায় বিশ্রি লাগবে″
কথাটা শুনে সবাই হু হু করে হেসে দিল।
চলবে…